30-09-2020, 11:19 PM
পর্ব বারো (#7)
বিল্ডিং থেকে নিচে নেমেই সামনের মাঠের পুজোর মন্ডপে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক লোকের চোখ চলে গেল ঋতুপর্ণার দিকে। পাশে আদি নেই, গাড়ি আনতে বেসমেন্টে গেছে। কয়েক জন চেনা পরিচিত মহিলাদের সাথে দেখা হয়ে গেল ঋতুপর্ণার। ওর সাজের আগুনে অনেক্র চোখ ঝলসে গেল। পরিচিতদের মধ্যে কাকলি কাছে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে, “বের হচ্ছ নাকি?” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল, “হ্যাঁ”। অন্য একজন মহিলা পাশ থেকে বলল, “এই কার সাথে যাচ্ছও?” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে ওদের সকলের কৌতূহলে জল ঢেলে উত্তর দিল, “ছেলের সাথে বের হচ্ছি।” আসল খবর কে আর জানে, ঋতুপর্ণা যে আদির প্রেমে দেহ বল্লরী শিক্ত করে প্রেম সাগরে নিমজ্জিত। অন্য একজনে অবিশ্বাসের গলায় জিজ্ঞেস করল, “ছেলের সাথে? ধুত।” কানের কাছে ফিসফিস করে বলল, “সুপর্ণার কাছে শুনলাম যে তুমি নাকি...” সুপর্ণার তাহলে সারা পাড়া গল্প করে বেড়িয়েছে। কথাটা জানতে পেরেই ঋতুপর্ণা একটু রেগে গেল, কিন্তু সেই রাগ কপট হাসির পেছনে লুকিয়ে বলল, “না না, ছেলে বড় হয়েছে এই বয়সে কি আর সেই সব করা যায় নাকি।” কেউ একজন উত্তর দিল, “তোমার আর বয়স। তোমাকে না বড্ড হিংসে হয়। এই পোড়া রূপ থাকলে আমি সারা কোলকাতা চড়িয়ে খেতাম।” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে বারেবারে গাড়ি বের হওয়ার জায়গার দিকে তাকায়। কখন আদি গাড়ি নিয়ে বের হবে আর এদের হাত থেকে নিস্তার পাবে। ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে উত্তর দিল, “তোমরা কোলকাতা চষে বেড়াও আমি আমার ছেলে নিয়েই থাকি।”
আদি গাড়ি বের করে মাকে ডাক দিল। আদির গলা পেয়ে ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে গাড়ির দরজা খুলে মৃদু ধমক দিল ছেলেকে, “গাড়ি বের করতে এত সময় লাগে নাকি? আমি ...” মিনিট পাঁচেকের বিরহে কাতর হয়ে উঠেছিল ঋতুপর্ণার প্রান, হাঁপিয়ে উঠেছিল ছেলেকে না দেখতে পেয়ে। গাড়িতে উঠেই ক্লাচ দিয়ে ছেলেকে পেটাতে শুরু করে দিল, “আমি নিচে গেলে কি ক্ষতি হত?”
মায়ের হাতের মিষ্টি মধুর মার খেয়ে আদি আর হাসি থামাতে না পেরে বলল, “ইসস তুমি না। চল চল আর পেটালে কিন্তু আমিও ...” বলেই ঋতুপর্ণার কবজি মুচড়ে ধরে বুকের ওপরে চেপে মায়ের কোমল পীনোন্নত স্তনের গভীর বক্ষ বিভাজিকার ওপরে নিবদ্ধ করে নিচু গলায় বলল, “মুচড়ে দেব...” ছেলের আগুনে চাহনি ওর ঊরু জোড়ায় আগুন ধরিয়ে দিল, কি মুচড়ে দেবে। স্তনের বোটা নুড়ি পাথরের মতন কঠিন হয়ে গেল। আদি চোয়াল চেপে মায়ের মুখের দিকে এগিয়ে বলল, “হাত।”
ঋতুপর্ণার গলা বয়ে হিসসস করে উঠল এক অজানা শব্দ। হাত মুচড়ে আদির হাত থেকে ছাড়িয়ে ওর বুকে পিঠে এলো পাথারি ছোট ছোট চড় মেরে বলে, “ধ্যাত শয়তান গাড়ি চালা।”
আদিও গাড়ি চালাতে শুরু করে দিল। ছোট মারুতি গাড়ি, কেবিন ছোট হওয়ার ফলে ওদের মাঝের ব্যাবধান অনেক কম। গাড়ির কাঁচ উঠানো তাই আদির সারা শরীর ভরে ভর ক্রএ এলো মায়ের মিষ্টি উষ্ণতা। চলন্ত গাড়ির দুলুনির মাঝে মাঝেই ঋতুপর্ণার ভারি কোমল স্তন জোড়া দুলে দুলে ওঠে। ছেলের বহমান শ্বাস আর উশখুসানি ভীষণ ভাবে উপভোগ করে ঋতুপর্ণা। মাঝে মাঝে নিচের ঠোঁট দাঁতের মাঝে নিয়ে দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে চোখের মণি এক করে নেয়। চোখের উষ্ণ ভাষা, তুই না বড্ড শয়তান। ওই ভাবে কেন দেখছিস রে আমার দিকে? বুঝতে পারিস না ওই চোখের আগুনে পুড়ে মরে যাচ্ছি।
ভিড় ভর্তি রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে এক নামকরা পুজো প্যান্ডালের সামনে এসে দাঁড়াল আদি। মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “কি নামবে এইখানে?”
ঋতুপর্ণা একবার ভিড় ভর্তি প্যান্ডেলের দিকে তাকিয়ে দেখে মুচকি হেসে উত্তর দিল, “ঠাকুর দেখতে বেড়িয়েছি নামবো না কেন? কিন্তু গাড়ি কোথায় রাখবি?”
আদি মাথা চুলকে এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখে, কোথাও তিল ধারনের জায়গা নেই। এদিকে সন্ধ্যে সাতটা বাজে, এই সময়ে গাড়ি রাখা আর ঠাকুর দেখা দুটোই দুঃসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু মাতৃ আদেশ, ঠাকুর দেখাতেই হবে না হলে প্রানের প্রিয়তমা হয়ত মুখ ব্যাজার করে সারা রাস্তা ওর মুন্ডপাত করবে।
আদি ভেবে চিন্তে উত্তর দেয়, “আচ্ছা তুমি নেমে লাইনে দাঁড়াও আমি দেখি কোথাও একটা গাড়ি পার্ক করে আসছি।”
ছেলেকে ছেড়ে দেবে, বড্ড ব্যাথা পেল ঋতুপর্ণা। ব্যাথিত কণ্ঠে আদিকে বলল, “তুই গাড়ি পার্ক কর ততখন আমি গাড়িতে বসেই থাকি তারপরে না হয় একসাথেই লাইনে দাঁড়াবো।”
মায়ের ব্যাথিত নয়ন দেখে আদির ভীষণ হাসি পেয়ে যায়। নরম গাল টিপে মাকে আদর করে বলে, “আচ্ছা চল দেখা যাক কোথায় একটু পারকিঙ্গের জায়গা পাওয়া যায়।”
গাড়ি চালিয়ে এদিকে ওদিকে পারকিঙ্গের জায়গা খোঁজে, শেষ পর্যন্ত একটা অন্ধকার গলির মধ্যে গাড়ি ঢুকিয়ে দিল আদি। ঋতুপর্ণা হাঁ হাঁ করে উঠল, এখান থেকে গাড়ি কি করে বার করবে। আদি মাকে আসস্থ করে বলে, ব্যাক করে ঠিক ভাবে গাড়ি বের করে নেবে। গাড়ি পার্ক করে মা আর ছেলে বেড়িয়ে এলো। গলির মুখে বেশ কয়েকটা ছেলের জটলা। সেই দেখে আদির বিশেষ সুবিধের মনে হল না। আর তার ওপরে ঋতুপর্ণা যে ধরনের লাস্যময়ী ঢঙ্গের শাড়ি পড়েছে তাতে যেকোন পুরুষের চিত্ত বিচলিত হতে বাধ্য। আদি গাড়ি লক করে মায়ের পাশে দাঁড়াতেই, ঋতুপর্ণা প্রানপন শক্তি দিয়ে আদির বাজু আঁকড়ে ধরে ওই ছেলে গুলোর দিকে ইশারা করে দেখাল। আদি মাথা দুলিয়ে আসস্থ করে মাকে, কিছু হবে না, আমি আছি। ছেলের পিঠের পেছনে এক প্রকার লুকিয়ে চুপচাপ হাঁটতে শুরু করে দিল ঋতুপর্ণা। ছেলে আছে সুতরাং ভয় কিসের, কিন্তু জটলা সঙ্খায় বেশি আর গলিটাও বেশ অন্ধকার। আদি মাকে আগলে নিয়ে কোন রকমে ওই বকাটে ছেলেদের পাশ কাটিয়ে বেড়িয়ে এলো। কয়েক পা চলার পরে ওদের কানে সিসের আওয়াজ আর বেশ কিছু ইতর মন্তব্য ভেসে এলো। আদি মায়ের কাঁধ শক্ত করে ধরে নিজের বুকের কাছে আড়াল করে পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখল ওই ছেলে গুলোর দিকে। সুটের হাতা গুটিয়ে কঠিন, হাত মুঠো করে হাতের পেশি ফুলিয়ে দিল। ওর রক্ত চক্ষু দেখে বেশ কয়েকজনের আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল।
ছেলের হাত শক্ত করে চেপে ধরে আদিকে শান্ত করে বলল ঋতুপর্ণা, “ছেড়ে দে, ওদের নিয়ে মাথা গরম করিস না। চল ঠাকুর দেখে আসি।”
মায়ের পিঠের শেষ প্রান্তে হাত রেখে নিজের দেহের কাছে ঘন করে জড়িয়ে ধরে হাঁটতে হাঁটতে বলল, “যত্ত সব উটকো পাব্লিক, শালা এদের জ্বালায় ঠাকুর দেখতে যাওয়া যায় না।”
ভীষণ ভিড় ঠেলে মন্ডপে ঠাকুর দেখতে দেখতে প্রায় এক ঘন্টা লেগে গেল ওদের। পুজোর প্যান্ডেলে অহেতুক কোন অঘটন ঘটল না। ভিড় ঠেলে বেড়িয়ে এসে ঋতুপর্ণা সত্যি ঘামিয়ে যায়। ভেতরে লোকজনের এত ভিড় আর এত গরম যে ওর ঘাম দিয়ে দিল। বাহুমুল ভিজে ব্লাউজের সাথে চেপটে গেল আঠার প্রলেপের মতন। ঠেলাঠেলিতে বহুবার আদির পিঠের সাথে, বাজুর সাথে ওর স্তন, ওর সারা অঙ্গ পিষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেদিকে অবশ্য কারুর খেয়াল ছিল না, তখন শুধু মাত্র আদিকে সম্বল করে কোনরকমে ঠাকুর দেখে বেড়িয়ে আসতে পারলে বাঁচে।
বেড়িয়ে এসেই ঋতুপর্ণা আদির ওপরে ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “এত ভিড়ে নামতেই হত? কোন ফাঁকা প্যান্ডালে ঠাকুর দেখলে হত না।”
মায়ের বকুনি খেয়ে আদি থমকে যায় উলটে মাকে ধমকে বলে, “ঠাকুর দেখতে যাওয়ার বায়না কে করেছিল? আমি না তুমি?” গাড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে ছোট ছেলের মতন মায়ের কাছে আবদার করে, “মা আইস্ক্রিম খাবো। প্লিস।”
ঋতুপর্ণা চোখ বড় বড় করে সাবধান করে বলে, “ঠাণ্ডা লেগে যাবে বাবা।”
আদি বাচ্চা ছেলের মতন পা দাপিয়ে আবদার করা থামায় না, “না মা আইস্ক্রিম খাবো।”
কচি ছেলের মতন বায়না করতে দেখে বড্ড হাসি পেল ঋতুপর্ণার, ইসস এই একটু আগেই কি ভাবে ওর দিকে জুলুজুলু দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিল আর এখন দেখ, মনে হল যেন ক্লাস সিক্সে পাঠরতা এক বাচ্চা ছেলে। মিষ্টি হেসে আদিকে বলল, “যা দুটো আইস্ক্রিম নিয়ে আয় আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি।”
সামনেই একটা আইস্ক্রিমের ঠেলা দাঁড়িয়ে ছিল, আদি দৌড় দিল সেদিকে। পেছনে সেই ছেলেদের জটলা তখন পর্যন্ত ওইখানে বসে, সেদিকে খেয়াল করতে পারেনি ঋতুপর্ণা। আদি আইস্ক্রিম কিনে একটা মাকে ধরিয়ে দিল। চকোলেট কোন খেতে ঋতুপর্ণার খুব পছন্দ তাই আদি চকোলেট কোন কিনে এনেছে মায়ের জন্য। আইস্ক্রিম টপের ওপরে গোলাপি জিব দিয়ে চাটতে চাটতে এপাশে অপাশে চেয়ে দেখে। মা আর ছেলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হাতে হাত জড়িয়ে আইস্ক্রিম খাচ্ছে।
আশেপাশের কিছু লোকজনের চাহনি ওদের দিকে নিবদ্ধ, বিশেষ করে ঋতুপর্ণার অসামান্য রূপ যেন সবাই গিলে খাচ্ছে। ওর বুকের খাঁজের বেশির ভাগ ছোট আঁটো ব্লাউজ ঠেলে বেড়িয়ে এসেছে, সকলের চোখ ওই অনাবৃত বক্ষ বিদলনে নিবদ্ধ হয়ে যায়। কারুর চোখের ইতর দৃষ্টি ঋতুপর্ণার নিম্ন নাভী আর থলথলে তলপেটের ওপরে চড়ে বেড়ায়। আদির কানে আশপাশের নিচু গলার কয়েকটা ইতর মন্তব্য ভেসে আসে, “উফফ কি মাল মাইরি।” “সত্যি ছেলেটা ভাগ্য করে মাগি তুলেছে। ইসস মাই নয়ত যেন ডাব ঝুলছে।” “এই জম্পেশ মাল তৈরি করা মনে হয় ভগবান ছেড়ে দিয়েছে। কি ফিগার মাইরি, মাথা ঘুরে যায়।” “যা বলেছিস মাইরি, শাড়ি নয়ত যেন জরি দিয়ে জড়ানো, একদম কাতিল লাগছে।” “বলেছিস মাইরি, এইরকম কাউকে পেলে সত্যি প্রতিমা করে ঘরে সাজিয়ে রাখতাম।” “ধুস বোকাচোদা ঘরে সাজিয়ে রেখে কি হবে ভোগের মাল মাইরি। উফফফ কি কাতলা মাছের পেট রে...”
কথা গুলো দুইজনেরই কানে পৌঁছায়। আদির কান গরম হয়ে যায়, লজ্জায় ঘৃণায় ঋতুপর্ণার চোখ জোড়া জ্বালা জ্বালা করে ওঠে, আদির বুকের কাছে সেঁধিয়ে আহত কণ্ঠে বলে, “আর ভালো লাগছে না রে চল বাড়ি ফিরে যাই।”
আদি চোয়াল শক্ত করে পেছনের দিকে দেখে মাকে বলল, “তুমি গাড়িতে গিয়ে বস আমি ওদের দেখে আসছি।”
“না” মুখ চাপা দিয়ে আঁতকে উঠল ঋতুপর্ণা, “ওদের সাথে মারামারি করতে যাসনে। যদি তোর কিছু হয়ে যায়...” বলেই কেঁদে ফেলল।
মায়ের চোখে জল দেখে ভীষণ রেগে গেল আদি। চোয়াল চেপে মায়ের কাঁধে হাত দিয়ে বলল, “এই তোমার জন্যেই ওরা আস্কারা পেয়ে যায়। রাস্তার কুকুরের দিকে একবার যদি ঘুরে দাঁড়ানো যায় তাহলে কুকুর গুলো ঘেউ ঘেউ করা বন্ধ করে দেয়।”
আদি হাত ধরে টেনে ঋতুপর্ণা মিনতি করে, “ঘেও কুকুর কামড়াতে পারে আদি, আমার একটাই মানিক রে। কিছু হলে কি করব আমি। ওদের সাথে লাগতে হবে না চল চলে যাই আর ভালো লাগছে না।”
আদি দাঁত কিড়মিড় করে দুই পা ওই ছেলে গুলোর দিকে এগিয়ে যেতেই ওরা জটলা ভেঙ্গে দাঁড়িয়ে পরে। পাশ দিয়ে তখন একটা পুলিসের ভ্যান যাচ্ছিল, তার সাইরেন শুনে ছেলে গুলো আস্তে আস্তে সেখান থেকে সরে দাঁড়ায়। আদিও ঋতুপর্ণাকে আগলে গলির মধ্যে ঢুকে গাড়ি বের করে নিয়ে আসে। ঋতুপর্ণা চুপ, আদিও চুপ। ভিড় ভর্তি রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ এলোমেলো চালাল গাড়ি, কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য জানা নেই।
মায়ের থমথমে চেহারা আদির বুকে বড় বেজে ওঠে। মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে ইয়ার্কি মেরে বলে, “আচ্ছা বল না ওই মেয়েগুলো তোমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে কি বলছিল?”
অনেকক্ষণ পরে ছেলের গলা শুনে স্বস্তির শ্বাস নেয় ঋতুপর্ণা। লাল ঠোঁটের ডগায় হাসি ফুটিয়ে বাঁকা চোখে আদির দিকে তাকিয়ে বলে, “মেয়েলী কথাবার্তা তোকে কেন জানাতে যাবো রে?”
হাসি মুখ দেখে আদি সব রাগ ভুলে যায়, “আচ্ছা বল কোথায় যাবে।”
ঋতুপর্ণা সামনের দিকে তাকিয়ে, কালো আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাসা ভাসা চোখে নিচু অস্ফুট কণ্ঠে বলে, “হারিয়ে যেতে চাই।”
গাড়ির আওয়াজে আদি ঠিক ভাবে মায়ের কথা শুনতে পেল না তাই আবার জিজ্ঞেস করে, “কোথায় যাবে বল? বাড়ি ফিরতে চাও না অন্য কোথাও যেতে চাও।”
বাড়ি ফিরতে একদম ইচ্ছে করছিল না ঋতুপর্ণার। অনেকদিন পরে এইভাবে পরিপূর্ণ রূপে, তনু মন প্রান ঢেলে নিজের কাঙ্খিত পুরুষের জন্য ঢেলে সাজিয়ে কেউ কি আর বাড়িতে ফিরতে চায়। এইভাবে দুইজনে একা একা গাড়ির নিভৃত অন্তরালে মনে হচ্ছে প্রেমিকের সাথে অভিসারে বেড়িয়েছে তীব্র সুন্দরী স্বর্গের অপ্সরা। নিষিদ্ধ প্রনয়ে জড়ানো হৃদয়ের ধমনীর মধ্যে ফুটন্ত রক্ত উথাল পাথাল হয়ে ইতস্তত বিচরন করছে।
আঁচল বুকের কাছ চেপে উত্তাল তরঙ্গায়িত স্তন জোড়া ঢেকে আদিকে বলে, “চল না একটা লং ড্রাইভে” বাকিটা ঠোঁটে এসে গলায় বসে গেল ঋতুপর্ণার... “শুধু আমি আর তুই। কি রে সোনা আমাকে নিয়ে যাবি যেখানে আমাদের কেউই চিনবে না। এই রাতের আঁধার আমাদের নিজের কালো চাদরে লুকিয়ে ফেলবে...”
আদি মায়ের মুক ভাসা অন্ধকার গাড়ির মধ্যে ঠিক বুঝতে পারল না, জিজ্ঞেস করল, “কোথায় যেতে চাও।”
ধ্যাত ছেলেটা কি কিছুই বোঝে না নাকি? মৃদু ধমক দিয়ে উঠল ঋতুপর্ণা, “জাহান্নুমে নিয়ে যা।”
আদি মুচকি হেসে মায়ের এই অভিমান ভরা লাল গালের লালিমা বড় উপভোগ করছিল। মাঝে মাঝে মায়ের দিকে তাকিয়ে মায়ের ভাসা ভাসা চোখের চাহনি দেখে হারিয়ে যাচ্ছিল। আদি মুচকি হেসে বলে, “এত সাধ করে প্রানের বান্ধবীকে নিয়ে বের হলাম আর সে কিনা বলে জাহান্নুমে যাবে।”
ঋতুপর্ণা আদির কাছে সরে কাঁধ ঘেঁষে বসে কানেকানে ফিসফিস করে বলল, “কোন গ্রামে যাই চল। সেখানের পুজো বেশ পবিত্র, লোকজনের ভিড় নেই।”
ঋতুপর্ণা ওর কাঁধ ছুঁয়ে পাশে বসতেই আদির বাজু ওর মায়ের স্তন বিভাজিকার মাঝে চেপে গেল। নরম তুলতুলে পীনোন্নত উত্তপ্ত স্তন জোড়া মাখনের মতন গলে গেল আদির বাজুর ওপরে। আদির ঊরু জোড়া কেঁপে উঠল মায়ের উষ্ণ ত্বকের পরশে। কানের কাছে মায়ের চুলের দোলা নাকের মধ্যে ভেসে এলো মায়ের গায়ের মিষ্টি মাতাল করা গন্ধ। মন্ডপে ঠাকুর দেখে ঋতুপর্ণা ঘামিয়ে গিয়েছিল, দেহের থেকে সেই ঘাম আর সেন্টের মাতাল করা গন্ধে আদি বুকের রক্ত উন্মত্ত হাতির মতন এলোপাথাড়ি ছুটে বেড়াতে লাগলো।
আদি কাঁপা গলায়, চিত্তের চাঞ্চল্য লুকিয়ে উত্তর দিল, “আচ্ছা তাই চল।”
আদির কথা শুনে ঋতুপর্ণার বুক নেচে উঠল। বড্ড গান গাইতে ইচ্ছে করে ঋতুপর্ণার, “কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, মনে মনে, মেলে দিলাম গানের সুরে এই ডানা মনে মনে।” উৎফুল্ল চিত্তে ছোট খুকির মতন চেঁচিয়ে উঠল, “উম্মম আমার সোনা ছেলে” বলেই আদির চুল আঁকড়ে গালে একটা ভিজে চুমু খেয়ে দিল।
ভিজে ঠোঁটের পরশে ধিকিধিকি করে জ্বলতে থাকা আগুন দাউদাউ করে উঠল আদির বুকে, ছোট একটা উফফ করে মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “রাতে খাবে কোথায়?”
ঋতুপর্ণা তখন খুশিতে পাগল প্রায়, অনাবিল হাসির ছটা ছড়িয়ে উত্তর দিল, “যেখানে তুই খাওয়াবি।”
মায়ের উচ্ছ্বাস দেখে আদির মন প্রান গলে গেল, সত্যি নারীর এক অঙ্গে কত রূপ আর পাশে বসে এই রমণীর কথা আলাদা, কখন স্নেহময়ী মাতৃময়ী রূপে অবতারন করে, কখন কঠোর দেবী দুর্গা আবার কখন প্রণয়িনী উর্বশী। আদি স্মিত হেসে জানিয়ে দিল, “রাস্তায় কোন রেস্টুরেন্ট পেলে খাবার প্যাক করে নেব।”
ঋতুপর্ণা মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল, “আচ্ছা এখন চল।”
বিল্ডিং থেকে নিচে নেমেই সামনের মাঠের পুজোর মন্ডপে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক লোকের চোখ চলে গেল ঋতুপর্ণার দিকে। পাশে আদি নেই, গাড়ি আনতে বেসমেন্টে গেছে। কয়েক জন চেনা পরিচিত মহিলাদের সাথে দেখা হয়ে গেল ঋতুপর্ণার। ওর সাজের আগুনে অনেক্র চোখ ঝলসে গেল। পরিচিতদের মধ্যে কাকলি কাছে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে, “বের হচ্ছ নাকি?” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল, “হ্যাঁ”। অন্য একজন মহিলা পাশ থেকে বলল, “এই কার সাথে যাচ্ছও?” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে ওদের সকলের কৌতূহলে জল ঢেলে উত্তর দিল, “ছেলের সাথে বের হচ্ছি।” আসল খবর কে আর জানে, ঋতুপর্ণা যে আদির প্রেমে দেহ বল্লরী শিক্ত করে প্রেম সাগরে নিমজ্জিত। অন্য একজনে অবিশ্বাসের গলায় জিজ্ঞেস করল, “ছেলের সাথে? ধুত।” কানের কাছে ফিসফিস করে বলল, “সুপর্ণার কাছে শুনলাম যে তুমি নাকি...” সুপর্ণার তাহলে সারা পাড়া গল্প করে বেড়িয়েছে। কথাটা জানতে পেরেই ঋতুপর্ণা একটু রেগে গেল, কিন্তু সেই রাগ কপট হাসির পেছনে লুকিয়ে বলল, “না না, ছেলে বড় হয়েছে এই বয়সে কি আর সেই সব করা যায় নাকি।” কেউ একজন উত্তর দিল, “তোমার আর বয়স। তোমাকে না বড্ড হিংসে হয়। এই পোড়া রূপ থাকলে আমি সারা কোলকাতা চড়িয়ে খেতাম।” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে বারেবারে গাড়ি বের হওয়ার জায়গার দিকে তাকায়। কখন আদি গাড়ি নিয়ে বের হবে আর এদের হাত থেকে নিস্তার পাবে। ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে উত্তর দিল, “তোমরা কোলকাতা চষে বেড়াও আমি আমার ছেলে নিয়েই থাকি।”
আদি গাড়ি বের করে মাকে ডাক দিল। আদির গলা পেয়ে ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে গাড়ির দরজা খুলে মৃদু ধমক দিল ছেলেকে, “গাড়ি বের করতে এত সময় লাগে নাকি? আমি ...” মিনিট পাঁচেকের বিরহে কাতর হয়ে উঠেছিল ঋতুপর্ণার প্রান, হাঁপিয়ে উঠেছিল ছেলেকে না দেখতে পেয়ে। গাড়িতে উঠেই ক্লাচ দিয়ে ছেলেকে পেটাতে শুরু করে দিল, “আমি নিচে গেলে কি ক্ষতি হত?”
মায়ের হাতের মিষ্টি মধুর মার খেয়ে আদি আর হাসি থামাতে না পেরে বলল, “ইসস তুমি না। চল চল আর পেটালে কিন্তু আমিও ...” বলেই ঋতুপর্ণার কবজি মুচড়ে ধরে বুকের ওপরে চেপে মায়ের কোমল পীনোন্নত স্তনের গভীর বক্ষ বিভাজিকার ওপরে নিবদ্ধ করে নিচু গলায় বলল, “মুচড়ে দেব...” ছেলের আগুনে চাহনি ওর ঊরু জোড়ায় আগুন ধরিয়ে দিল, কি মুচড়ে দেবে। স্তনের বোটা নুড়ি পাথরের মতন কঠিন হয়ে গেল। আদি চোয়াল চেপে মায়ের মুখের দিকে এগিয়ে বলল, “হাত।”
ঋতুপর্ণার গলা বয়ে হিসসস করে উঠল এক অজানা শব্দ। হাত মুচড়ে আদির হাত থেকে ছাড়িয়ে ওর বুকে পিঠে এলো পাথারি ছোট ছোট চড় মেরে বলে, “ধ্যাত শয়তান গাড়ি চালা।”
আদিও গাড়ি চালাতে শুরু করে দিল। ছোট মারুতি গাড়ি, কেবিন ছোট হওয়ার ফলে ওদের মাঝের ব্যাবধান অনেক কম। গাড়ির কাঁচ উঠানো তাই আদির সারা শরীর ভরে ভর ক্রএ এলো মায়ের মিষ্টি উষ্ণতা। চলন্ত গাড়ির দুলুনির মাঝে মাঝেই ঋতুপর্ণার ভারি কোমল স্তন জোড়া দুলে দুলে ওঠে। ছেলের বহমান শ্বাস আর উশখুসানি ভীষণ ভাবে উপভোগ করে ঋতুপর্ণা। মাঝে মাঝে নিচের ঠোঁট দাঁতের মাঝে নিয়ে দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে চোখের মণি এক করে নেয়। চোখের উষ্ণ ভাষা, তুই না বড্ড শয়তান। ওই ভাবে কেন দেখছিস রে আমার দিকে? বুঝতে পারিস না ওই চোখের আগুনে পুড়ে মরে যাচ্ছি।
ভিড় ভর্তি রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে এক নামকরা পুজো প্যান্ডালের সামনে এসে দাঁড়াল আদি। মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “কি নামবে এইখানে?”
ঋতুপর্ণা একবার ভিড় ভর্তি প্যান্ডেলের দিকে তাকিয়ে দেখে মুচকি হেসে উত্তর দিল, “ঠাকুর দেখতে বেড়িয়েছি নামবো না কেন? কিন্তু গাড়ি কোথায় রাখবি?”
আদি মাথা চুলকে এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখে, কোথাও তিল ধারনের জায়গা নেই। এদিকে সন্ধ্যে সাতটা বাজে, এই সময়ে গাড়ি রাখা আর ঠাকুর দেখা দুটোই দুঃসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু মাতৃ আদেশ, ঠাকুর দেখাতেই হবে না হলে প্রানের প্রিয়তমা হয়ত মুখ ব্যাজার করে সারা রাস্তা ওর মুন্ডপাত করবে।
আদি ভেবে চিন্তে উত্তর দেয়, “আচ্ছা তুমি নেমে লাইনে দাঁড়াও আমি দেখি কোথাও একটা গাড়ি পার্ক করে আসছি।”
ছেলেকে ছেড়ে দেবে, বড্ড ব্যাথা পেল ঋতুপর্ণা। ব্যাথিত কণ্ঠে আদিকে বলল, “তুই গাড়ি পার্ক কর ততখন আমি গাড়িতে বসেই থাকি তারপরে না হয় একসাথেই লাইনে দাঁড়াবো।”
মায়ের ব্যাথিত নয়ন দেখে আদির ভীষণ হাসি পেয়ে যায়। নরম গাল টিপে মাকে আদর করে বলে, “আচ্ছা চল দেখা যাক কোথায় একটু পারকিঙ্গের জায়গা পাওয়া যায়।”
গাড়ি চালিয়ে এদিকে ওদিকে পারকিঙ্গের জায়গা খোঁজে, শেষ পর্যন্ত একটা অন্ধকার গলির মধ্যে গাড়ি ঢুকিয়ে দিল আদি। ঋতুপর্ণা হাঁ হাঁ করে উঠল, এখান থেকে গাড়ি কি করে বার করবে। আদি মাকে আসস্থ করে বলে, ব্যাক করে ঠিক ভাবে গাড়ি বের করে নেবে। গাড়ি পার্ক করে মা আর ছেলে বেড়িয়ে এলো। গলির মুখে বেশ কয়েকটা ছেলের জটলা। সেই দেখে আদির বিশেষ সুবিধের মনে হল না। আর তার ওপরে ঋতুপর্ণা যে ধরনের লাস্যময়ী ঢঙ্গের শাড়ি পড়েছে তাতে যেকোন পুরুষের চিত্ত বিচলিত হতে বাধ্য। আদি গাড়ি লক করে মায়ের পাশে দাঁড়াতেই, ঋতুপর্ণা প্রানপন শক্তি দিয়ে আদির বাজু আঁকড়ে ধরে ওই ছেলে গুলোর দিকে ইশারা করে দেখাল। আদি মাথা দুলিয়ে আসস্থ করে মাকে, কিছু হবে না, আমি আছি। ছেলের পিঠের পেছনে এক প্রকার লুকিয়ে চুপচাপ হাঁটতে শুরু করে দিল ঋতুপর্ণা। ছেলে আছে সুতরাং ভয় কিসের, কিন্তু জটলা সঙ্খায় বেশি আর গলিটাও বেশ অন্ধকার। আদি মাকে আগলে নিয়ে কোন রকমে ওই বকাটে ছেলেদের পাশ কাটিয়ে বেড়িয়ে এলো। কয়েক পা চলার পরে ওদের কানে সিসের আওয়াজ আর বেশ কিছু ইতর মন্তব্য ভেসে এলো। আদি মায়ের কাঁধ শক্ত করে ধরে নিজের বুকের কাছে আড়াল করে পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখল ওই ছেলে গুলোর দিকে। সুটের হাতা গুটিয়ে কঠিন, হাত মুঠো করে হাতের পেশি ফুলিয়ে দিল। ওর রক্ত চক্ষু দেখে বেশ কয়েকজনের আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল।
ছেলের হাত শক্ত করে চেপে ধরে আদিকে শান্ত করে বলল ঋতুপর্ণা, “ছেড়ে দে, ওদের নিয়ে মাথা গরম করিস না। চল ঠাকুর দেখে আসি।”
মায়ের পিঠের শেষ প্রান্তে হাত রেখে নিজের দেহের কাছে ঘন করে জড়িয়ে ধরে হাঁটতে হাঁটতে বলল, “যত্ত সব উটকো পাব্লিক, শালা এদের জ্বালায় ঠাকুর দেখতে যাওয়া যায় না।”
ভীষণ ভিড় ঠেলে মন্ডপে ঠাকুর দেখতে দেখতে প্রায় এক ঘন্টা লেগে গেল ওদের। পুজোর প্যান্ডেলে অহেতুক কোন অঘটন ঘটল না। ভিড় ঠেলে বেড়িয়ে এসে ঋতুপর্ণা সত্যি ঘামিয়ে যায়। ভেতরে লোকজনের এত ভিড় আর এত গরম যে ওর ঘাম দিয়ে দিল। বাহুমুল ভিজে ব্লাউজের সাথে চেপটে গেল আঠার প্রলেপের মতন। ঠেলাঠেলিতে বহুবার আদির পিঠের সাথে, বাজুর সাথে ওর স্তন, ওর সারা অঙ্গ পিষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেদিকে অবশ্য কারুর খেয়াল ছিল না, তখন শুধু মাত্র আদিকে সম্বল করে কোনরকমে ঠাকুর দেখে বেড়িয়ে আসতে পারলে বাঁচে।
বেড়িয়ে এসেই ঋতুপর্ণা আদির ওপরে ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “এত ভিড়ে নামতেই হত? কোন ফাঁকা প্যান্ডালে ঠাকুর দেখলে হত না।”
মায়ের বকুনি খেয়ে আদি থমকে যায় উলটে মাকে ধমকে বলে, “ঠাকুর দেখতে যাওয়ার বায়না কে করেছিল? আমি না তুমি?” গাড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে ছোট ছেলের মতন মায়ের কাছে আবদার করে, “মা আইস্ক্রিম খাবো। প্লিস।”
ঋতুপর্ণা চোখ বড় বড় করে সাবধান করে বলে, “ঠাণ্ডা লেগে যাবে বাবা।”
আদি বাচ্চা ছেলের মতন পা দাপিয়ে আবদার করা থামায় না, “না মা আইস্ক্রিম খাবো।”
কচি ছেলের মতন বায়না করতে দেখে বড্ড হাসি পেল ঋতুপর্ণার, ইসস এই একটু আগেই কি ভাবে ওর দিকে জুলুজুলু দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিল আর এখন দেখ, মনে হল যেন ক্লাস সিক্সে পাঠরতা এক বাচ্চা ছেলে। মিষ্টি হেসে আদিকে বলল, “যা দুটো আইস্ক্রিম নিয়ে আয় আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি।”
সামনেই একটা আইস্ক্রিমের ঠেলা দাঁড়িয়ে ছিল, আদি দৌড় দিল সেদিকে। পেছনে সেই ছেলেদের জটলা তখন পর্যন্ত ওইখানে বসে, সেদিকে খেয়াল করতে পারেনি ঋতুপর্ণা। আদি আইস্ক্রিম কিনে একটা মাকে ধরিয়ে দিল। চকোলেট কোন খেতে ঋতুপর্ণার খুব পছন্দ তাই আদি চকোলেট কোন কিনে এনেছে মায়ের জন্য। আইস্ক্রিম টপের ওপরে গোলাপি জিব দিয়ে চাটতে চাটতে এপাশে অপাশে চেয়ে দেখে। মা আর ছেলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হাতে হাত জড়িয়ে আইস্ক্রিম খাচ্ছে।
আশেপাশের কিছু লোকজনের চাহনি ওদের দিকে নিবদ্ধ, বিশেষ করে ঋতুপর্ণার অসামান্য রূপ যেন সবাই গিলে খাচ্ছে। ওর বুকের খাঁজের বেশির ভাগ ছোট আঁটো ব্লাউজ ঠেলে বেড়িয়ে এসেছে, সকলের চোখ ওই অনাবৃত বক্ষ বিদলনে নিবদ্ধ হয়ে যায়। কারুর চোখের ইতর দৃষ্টি ঋতুপর্ণার নিম্ন নাভী আর থলথলে তলপেটের ওপরে চড়ে বেড়ায়। আদির কানে আশপাশের নিচু গলার কয়েকটা ইতর মন্তব্য ভেসে আসে, “উফফ কি মাল মাইরি।” “সত্যি ছেলেটা ভাগ্য করে মাগি তুলেছে। ইসস মাই নয়ত যেন ডাব ঝুলছে।” “এই জম্পেশ মাল তৈরি করা মনে হয় ভগবান ছেড়ে দিয়েছে। কি ফিগার মাইরি, মাথা ঘুরে যায়।” “যা বলেছিস মাইরি, শাড়ি নয়ত যেন জরি দিয়ে জড়ানো, একদম কাতিল লাগছে।” “বলেছিস মাইরি, এইরকম কাউকে পেলে সত্যি প্রতিমা করে ঘরে সাজিয়ে রাখতাম।” “ধুস বোকাচোদা ঘরে সাজিয়ে রেখে কি হবে ভোগের মাল মাইরি। উফফফ কি কাতলা মাছের পেট রে...”
কথা গুলো দুইজনেরই কানে পৌঁছায়। আদির কান গরম হয়ে যায়, লজ্জায় ঘৃণায় ঋতুপর্ণার চোখ জোড়া জ্বালা জ্বালা করে ওঠে, আদির বুকের কাছে সেঁধিয়ে আহত কণ্ঠে বলে, “আর ভালো লাগছে না রে চল বাড়ি ফিরে যাই।”
আদি চোয়াল শক্ত করে পেছনের দিকে দেখে মাকে বলল, “তুমি গাড়িতে গিয়ে বস আমি ওদের দেখে আসছি।”
“না” মুখ চাপা দিয়ে আঁতকে উঠল ঋতুপর্ণা, “ওদের সাথে মারামারি করতে যাসনে। যদি তোর কিছু হয়ে যায়...” বলেই কেঁদে ফেলল।
মায়ের চোখে জল দেখে ভীষণ রেগে গেল আদি। চোয়াল চেপে মায়ের কাঁধে হাত দিয়ে বলল, “এই তোমার জন্যেই ওরা আস্কারা পেয়ে যায়। রাস্তার কুকুরের দিকে একবার যদি ঘুরে দাঁড়ানো যায় তাহলে কুকুর গুলো ঘেউ ঘেউ করা বন্ধ করে দেয়।”
আদি হাত ধরে টেনে ঋতুপর্ণা মিনতি করে, “ঘেও কুকুর কামড়াতে পারে আদি, আমার একটাই মানিক রে। কিছু হলে কি করব আমি। ওদের সাথে লাগতে হবে না চল চলে যাই আর ভালো লাগছে না।”
আদি দাঁত কিড়মিড় করে দুই পা ওই ছেলে গুলোর দিকে এগিয়ে যেতেই ওরা জটলা ভেঙ্গে দাঁড়িয়ে পরে। পাশ দিয়ে তখন একটা পুলিসের ভ্যান যাচ্ছিল, তার সাইরেন শুনে ছেলে গুলো আস্তে আস্তে সেখান থেকে সরে দাঁড়ায়। আদিও ঋতুপর্ণাকে আগলে গলির মধ্যে ঢুকে গাড়ি বের করে নিয়ে আসে। ঋতুপর্ণা চুপ, আদিও চুপ। ভিড় ভর্তি রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ এলোমেলো চালাল গাড়ি, কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য জানা নেই।
মায়ের থমথমে চেহারা আদির বুকে বড় বেজে ওঠে। মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে ইয়ার্কি মেরে বলে, “আচ্ছা বল না ওই মেয়েগুলো তোমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে কি বলছিল?”
অনেকক্ষণ পরে ছেলের গলা শুনে স্বস্তির শ্বাস নেয় ঋতুপর্ণা। লাল ঠোঁটের ডগায় হাসি ফুটিয়ে বাঁকা চোখে আদির দিকে তাকিয়ে বলে, “মেয়েলী কথাবার্তা তোকে কেন জানাতে যাবো রে?”
হাসি মুখ দেখে আদি সব রাগ ভুলে যায়, “আচ্ছা বল কোথায় যাবে।”
ঋতুপর্ণা সামনের দিকে তাকিয়ে, কালো আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাসা ভাসা চোখে নিচু অস্ফুট কণ্ঠে বলে, “হারিয়ে যেতে চাই।”
গাড়ির আওয়াজে আদি ঠিক ভাবে মায়ের কথা শুনতে পেল না তাই আবার জিজ্ঞেস করে, “কোথায় যাবে বল? বাড়ি ফিরতে চাও না অন্য কোথাও যেতে চাও।”
বাড়ি ফিরতে একদম ইচ্ছে করছিল না ঋতুপর্ণার। অনেকদিন পরে এইভাবে পরিপূর্ণ রূপে, তনু মন প্রান ঢেলে নিজের কাঙ্খিত পুরুষের জন্য ঢেলে সাজিয়ে কেউ কি আর বাড়িতে ফিরতে চায়। এইভাবে দুইজনে একা একা গাড়ির নিভৃত অন্তরালে মনে হচ্ছে প্রেমিকের সাথে অভিসারে বেড়িয়েছে তীব্র সুন্দরী স্বর্গের অপ্সরা। নিষিদ্ধ প্রনয়ে জড়ানো হৃদয়ের ধমনীর মধ্যে ফুটন্ত রক্ত উথাল পাথাল হয়ে ইতস্তত বিচরন করছে।
আঁচল বুকের কাছ চেপে উত্তাল তরঙ্গায়িত স্তন জোড়া ঢেকে আদিকে বলে, “চল না একটা লং ড্রাইভে” বাকিটা ঠোঁটে এসে গলায় বসে গেল ঋতুপর্ণার... “শুধু আমি আর তুই। কি রে সোনা আমাকে নিয়ে যাবি যেখানে আমাদের কেউই চিনবে না। এই রাতের আঁধার আমাদের নিজের কালো চাদরে লুকিয়ে ফেলবে...”
আদি মায়ের মুক ভাসা অন্ধকার গাড়ির মধ্যে ঠিক বুঝতে পারল না, জিজ্ঞেস করল, “কোথায় যেতে চাও।”
ধ্যাত ছেলেটা কি কিছুই বোঝে না নাকি? মৃদু ধমক দিয়ে উঠল ঋতুপর্ণা, “জাহান্নুমে নিয়ে যা।”
আদি মুচকি হেসে মায়ের এই অভিমান ভরা লাল গালের লালিমা বড় উপভোগ করছিল। মাঝে মাঝে মায়ের দিকে তাকিয়ে মায়ের ভাসা ভাসা চোখের চাহনি দেখে হারিয়ে যাচ্ছিল। আদি মুচকি হেসে বলে, “এত সাধ করে প্রানের বান্ধবীকে নিয়ে বের হলাম আর সে কিনা বলে জাহান্নুমে যাবে।”
ঋতুপর্ণা আদির কাছে সরে কাঁধ ঘেঁষে বসে কানেকানে ফিসফিস করে বলল, “কোন গ্রামে যাই চল। সেখানের পুজো বেশ পবিত্র, লোকজনের ভিড় নেই।”
ঋতুপর্ণা ওর কাঁধ ছুঁয়ে পাশে বসতেই আদির বাজু ওর মায়ের স্তন বিভাজিকার মাঝে চেপে গেল। নরম তুলতুলে পীনোন্নত উত্তপ্ত স্তন জোড়া মাখনের মতন গলে গেল আদির বাজুর ওপরে। আদির ঊরু জোড়া কেঁপে উঠল মায়ের উষ্ণ ত্বকের পরশে। কানের কাছে মায়ের চুলের দোলা নাকের মধ্যে ভেসে এলো মায়ের গায়ের মিষ্টি মাতাল করা গন্ধ। মন্ডপে ঠাকুর দেখে ঋতুপর্ণা ঘামিয়ে গিয়েছিল, দেহের থেকে সেই ঘাম আর সেন্টের মাতাল করা গন্ধে আদি বুকের রক্ত উন্মত্ত হাতির মতন এলোপাথাড়ি ছুটে বেড়াতে লাগলো।
আদি কাঁপা গলায়, চিত্তের চাঞ্চল্য লুকিয়ে উত্তর দিল, “আচ্ছা তাই চল।”
আদির কথা শুনে ঋতুপর্ণার বুক নেচে উঠল। বড্ড গান গাইতে ইচ্ছে করে ঋতুপর্ণার, “কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, মনে মনে, মেলে দিলাম গানের সুরে এই ডানা মনে মনে।” উৎফুল্ল চিত্তে ছোট খুকির মতন চেঁচিয়ে উঠল, “উম্মম আমার সোনা ছেলে” বলেই আদির চুল আঁকড়ে গালে একটা ভিজে চুমু খেয়ে দিল।
ভিজে ঠোঁটের পরশে ধিকিধিকি করে জ্বলতে থাকা আগুন দাউদাউ করে উঠল আদির বুকে, ছোট একটা উফফ করে মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “রাতে খাবে কোথায়?”
ঋতুপর্ণা তখন খুশিতে পাগল প্রায়, অনাবিল হাসির ছটা ছড়িয়ে উত্তর দিল, “যেখানে তুই খাওয়াবি।”
মায়ের উচ্ছ্বাস দেখে আদির মন প্রান গলে গেল, সত্যি নারীর এক অঙ্গে কত রূপ আর পাশে বসে এই রমণীর কথা আলাদা, কখন স্নেহময়ী মাতৃময়ী রূপে অবতারন করে, কখন কঠোর দেবী দুর্গা আবার কখন প্রণয়িনী উর্বশী। আদি স্মিত হেসে জানিয়ে দিল, “রাস্তায় কোন রেস্টুরেন্ট পেলে খাবার প্যাক করে নেব।”
ঋতুপর্ণা মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল, “আচ্ছা এখন চল।”