29-09-2020, 04:16 PM
একবিংশ পর্ব (#05)
দেবায়ন একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বলে, “এতটাই কৃত্রিম যখন ব্যাপার স্যাপার তাহলে তুমি লাইট বন্ধ করে শুয়ে পর।”
অনন্যার চোয়াল শক্ত হয়ে যায় দেবায়নের কথা শুনে, “দেমাক দেখাচ্ছ আমাকে? আমি তোমার কেনা বাঁদি নই মিস্টার বসাক।”
দেবায়নের কিছু যায় আসে না। ওর যেটা পাওয়ার সেটা ও পেয়ে গেছে, এই নারী মাংসের প্রতি একটু দুর্বলতা ছিল কিন্তু একদম কৃত্রিম সম্বন্ধে যেতে নারাজ। জানে যে অনন্যা ওর রুমে পয়সার বিনিময়ে এসেছে, চাইলে ওকে সামনের বিছানায় ফেলে যেমন ইচ্ছে তেমন করে সম্ভোগ করতে পারে। কিন্তু দেবায়নের মনে বাধা পায়। এর চেয়ে সুখকর ওর বান্ধবীরা, যার সাথে মনের মিল থাকে। যেখানে ব্যাবসা নয় পরস্পরের খুশির জন্য, আনন্দের জন্য মেতে ওঠে শরীরের খেলায়। দেবায়ন সোফা থেকে উঠে কোট খুলে আলমারিতে রাখে, জামা আর টাই খুলে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে একটা তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যায়। অনন্যা চুপচাপ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। দেবায়ন বাথরুমে ঢুকে, ঘাড়ে মুখে হাতে জেল লাগিয়ে পরিষ্কার হয়ে বেড়িয়ে আসে।
রুমের লাইট নিভিয়ে, অনন্যা ততক্ষণে ছোটো আলো জ্বালিয়ে বিছানায় বসে। নাইট গাউন খুলে শুধু মাত্র স্লিপ পরে। পাতলা স্লিপের ভেতর দিয়ে গাড় রঙের ব্রা দেখা যায়, সেই সাথে হাল্কা রঙের প্যান্টির দাগ স্পষ্ট। পা মুড়ে বসে থাকার ফলে সুগোল পাছার আকার অবয়াব স্পষ্ট বোঝা যায়। মসৃণ দুই সুগোল থাইয়ের শেষে বক্র পায়ের গুলির মসৃণ ত্বকে আবছা রুমের আলো পিচ্ছিল খেয়ে পরে। মাথার চুল ঘাড়ের উপরে দিয়ে সামনে এলিয়ে দিয়েছে। বুকের দিকে চোখ যেতেই শরীরের রক্ত চঞ্চল হয়ে যায়। সুগোল স্তন জোড়া, ছোটো আঁটো ব্রার মধ্যে বাঁধা পরে যেন ছটফট করছে ছাড়া পাবার জন্য। দেবায়ন অনন্যাকে একবার আপাদমস্তক দেখে। প্যান্টের ভেতরে শিথিল লিঙ্গ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। দেবায়ন তোয়ালেটা সোফার উপরে ছুঁড়ে দিয়ে, বিছানার এক পাশে বসে পরে। অনন্যা পেছন থেকে ওর গলা জড়িয়ে কানের লতির উপরে ছোটো একটা কামড় লাগিয়ে দেয়। চমকে ওঠে দেবায়ন, পিঠের উপরে অনন্যার নরম তুলতুলে স্তন জোড়া পিষে সমতল হয়ে যায়। অনন্যার হাত দুটি সামনের দিকে এসে দেবায়নের বুকের উপরে নেচে বেড়ায়। নরম আঙুলগুলো গেঞ্জি ভেদ করে ওর চওড়া বুকের রক্তে ঝড় তুলে দেয়।
অনন্যা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, “তুমি এত ঠাণ্ডা কেন? এসো না কাছে।”
দেবায়ন ওর ডান হাত মুখের কাছে ধরে ছোটো চুমু খেয়ে বলে, “তোমার খুব তাড়া আছে বলে মনে হচ্ছে, কি ব্যাপার?”
অনন্যা, “ধুর, তুমি না। তোমার কি আমাকে ভালো লাগেনি?”
দেবায়ন হাসিতে ফেটে পরে, “তুমি পাগল হলে নাকি? তুমি ভারী সুন্দরী, নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছি না যে তুমি আমার কাছে। জানো, লনে দাঁড়িয়ে নিজেকে চিমটি কেটে ছিলাম, বড় ব্যাথা লাগলো, বুঝলাম যে জেগে আছি।”
অনন্যা, “কি যে বল না তুমি। বড্ড বেশি মেয়েদের মন নিয়ে খেলতে পারো দেখছি।”
দেবায়ন, “না, সত্যি বলছি।”
অনন্যা ওর কাঁধে মাথা রেখে গায়ের উপরে ঢলে পরে মিষ্টি কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “এমন ঠাণ্ডা মানুষ দেখিনি বাবা। কি চলছে বলত তোমার মনের মধ্যে? গার্লফ্রেন্ডের কথা মনে পড়ছে, তাই তুমি টেন্সড নাকি?”
দেবায়ন হেসে বলে, “না সে চিন্তা আমার নেই।”
অনন্যা, “সত্যি কথা একটা বলবে আমাকে? জানি যে ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করা আমাদের উচিত নয়, তাও একটু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে।”
দেবায়ন, “কতটা ব্যাক্তিগত সেটা না জেনে কি করে বলি যে প্রশ্নের উত্তর দেব কি দেব না। আচ্ছা জিজ্ঞেস করো।”
অনন্যা, “তুমি কে? নিবেদিতা ম্যাম আমাকে আর তনুজাকে বলছিল তোমাকে একটু নজরে রাখতে। আমি ইচ্ছে করে তনুজাকে ওই জার্মান ভদ্রলোকের কাছে পাঠিয়ে দিলাম। ডিনারের সময় থেকে দেখছি, তুমি একটু ছাড়া ছাড়া ছিলে, বিশেষ কারুর সাথে মেশনি। তোমার কথাবার্তা শুনে মনে হয় না তুমি এন.আর.আই, তুমি খোদ এই বাংলার ছেলে তাও তোমাকে খুশি করতে নিবেদিতা ম্যাম যেন একটু তৎপর। কি ব্যাপার?”
হাজার প্রশ্নের সম্মুখীন দেবায়ন, সঠিক উত্তর দেবার আগে প্রশ্ন করে অনন্যাকে, “নিবেদিতা ম্যাম তোমাকে এত সব বলেছে?”
অনন্যা, “হ্যাঁ বাবা। তুমি কি মানুষ না? অন্য কেউ হলে এতক্ষণে একটা শট হয়ে যেত।”
দেবায়ন হেসে বলে, “আমি তাহলে সাধারন মানুষ নই, আমি ভুত।”
অনন্যা অভিমান করে দেবায়নের বাজুতে কিল মেরে বলে, “ধুর ব্যাঙ, তুমি বসে বসে নাড়াও আমি ঘুমাতে যাই। কালকে ম্যাম কিছু জিজ্ঞেস করলে বলে দেব যে একদম ঠাণ্ডা মানুষের কাছে পাঠিয়েছে।”
দেবায়ন, “বেশ তো ঘুমিয়ে পরো তুমি, কে বারন করেছে তোমাকে?”
অনন্যা কাতর কণ্ঠে দ্বিতীয় বার জিজ্ঞেস করে, “এই প্লিস বল না, তুমি আসলে কে? তোমার মাথায় কি চলছে?”
অনন্যার কথা শুনে দেবায়ন বুঝে যায় নিবেদিতা জানতে চায় দেবায়নের আসল অভিপ্রায়, তাই শিখিয়ে পাঠিয়েছে অনন্যাকে। দেবায়ন মুখ খুলতে নারাজ, যা বলার সেটা সরাসরি নিবেদিতাকে পরে জানাবে। উলটে অনন্যাকে প্রশ্ন করে, “তোমার কথা একটু শুনি। তোমার অভিনেত্রী হওয়া, এই আলোর চমকানি আর তুমি পারমিতা কাকিমাকে কি করে জানো?”
অনন্যা ম্লান হেসে বলে, “সে অনেক বড় গল্প। আমার কথা জেনে কি করবে? গল্প লিখবে নাকি?”
দেবায়ন, “বড্ড মেকানিকাল উত্তর। তুমি যেমন জানাতে চাও না তেমনি আমিও জানাতে চাই না। শুধু এইটুকু জেনে রাখো, আমি মিস্টার সেনের বিজনেস পার্টনার নই। আমি সামান্য একজন ছেলে।”
অনন্যা ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে, “হু, তুমি বললে আর আমি মেনে নিলাম। সেদিন সেন স্যারের সাথে * স্তানে বসে ডিনার করছিলে। আজকে এই বিজনেস মিটিঙ্গে উপস্থিত। আবার নিবেদিতার ম্যামের নেক নজর তোমার উপরে। তুমি সামান্য বটে!”
অনন্যা অনুনয়ের সুরে বলে, “এই প্লিস এই রকম করো না। মিবেদিতা ম্যাম জানলে খুব খারাপ হবে।”
দেবায়ন বুঝতে পারেনা হটাত অনন্যার সুর বদলে কেন গেল। ও জিজ্ঞাসু চোখে অনন্যার দিকে তাকিয়ে থাকে। অনন্যা ওর কোল ঘেঁষে হাতের উপরে হাত রেখে আব্দার জড়ানো কণ্ঠে ডাকে, “প্লিস এসো না।”
দেবায়ন চেপে ধরে অনন্যাকে, “মাদামোয়েজেল, এটা বড় কৃত্রিম ব্যাপার স্যাপার হয়ে যাচ্ছে। এই রকম সম্পর্কে শুধু পেট ভরে মন ভরে না।”
অনন্যা ওর কাছ থেকে একটু সরে বসে, “ভালোবাসা করতে আসিনি এখানে মিস্টার।”
দেবায়ন, “জানি, কিন্তু শুধু তোমাকে জড়িয়ে শুয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এতটা মেকানিকাল আমি হতে পারিনি এখন। তার চেয়ে ভালো দুই জনে সারা রাত গল্প করে কাটিয়ে দেই। তুমি এক সুন্দরী অভিনেত্রী, আমি কোলকাতার এক সামান্য নগন্য ছেলে। তোমার এই চকমকে জীবনের কথা জানতে বড় ইচ্ছে করছে।”
অনন্যার গলা একটু আহত হয় উত্তর দেবার সময়ে, “হুঁহ, এই চকমকে জীবন। এই আলোর পেছনে অনেক অন্ধকার বুঝলে দেবায়ন।”
দেবায়ন ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। অনন্যা একটু দুরে সরে বুকের উপরে বালিশ চেপে বলতে শুরু করে, “আমি বিগত পাঁচ বছর ধরে পারমিতা ম্যামকে চিনি। আমি জামশেদপুরের মেয়ে। আমার আসল নাম অনন্যা নয়, এই আলোর জগতে, এই চকমকির জগতে এসে আমার নাম অনন্যা হয়। আমি ছিলাম, সুলেখা বোস। এখানে এসে হয়ে গেলাম অনন্যা বাসু। কলেজে থাকতেই মডেলিং করার খুব শখ ছিল। গায়ের রঙ একটু চাপা হলেও সবাই আমাকে সুন্দরী বলত। সবাই বলত আমাকে নাকি মালাইকা আরোড়ার মতন দেখতে। কলেজে থাকতে কয়েকটা মডেলিং করেছিলাম। রঙ একটু চাপা কিন্তু ছোটোখাটো স্থানিয় বিজ্ঞাপন পেয়ে যেতাম। ওইখানে একটা স্থানিয় বিজ্ঞাপন শুট করার সময়ে এক ফটোগ্রাফার, সুমন নাম, আমাকে দেখে। আমার অঙ্গি ভঙ্গি দেখে তাঁর পছন্দ হয়, সে আমার মাথায় বড় মডেল হওয়ার ভুত ঢুকিয়ে দেয়। বাবা মাকে বলতে বাবা আমাকে মেরে বকে চুপ করিয়ে দিল। মায়ের খুব শখ, মেয়ের নাম হবে, মেয়েকে সবাই দেখবে। আমি নেচে উঠলাম মায়ের সম্মতি পেয়ে। পাঁচ বছর আগে, সবে উনিশে পা দিয়েছি। সুমন আমাকে আর মাকে নিয়ে কোলকাতা চলে এল। কলেজের গন্ডি পার হতে পারলাম না আর, চলে এলাম কোলকাতায় মডেল হব বলে।”
অনন্যা চোখের কোল মোছে আঙুল দিয়ে। দেবায়ন বলে, “ছাড়ো আর জানতে চাই না। তোমার চোখে জল সেটা ঠিক মানতে পারছি না।”
অনন্যা বলে, “একটু শুনবে না? সবাই আমার রুপ দেখে, আলোর চমকানি দেখে। আমাকে ছুঁতে চায়, ধরতে চায়, কোলে পেতে চায়। একটু সেই আলোর নিচের অন্ধকার দেখতে চাইবে না?”
দেবায়ন, “তোমাকে আঘাত করতে চাই না, অনন্যা।”
অনন্যা, “শোনো না একটু। এই যে সুমনের কথা বলছিলাম। সুমন, প্রথমে আমাকে বলল যে একটা মডেলিং এজেন্সি তে ঢুকতে হবে, তাঁর জন্য প্রোফাইল বানাতে হবে। মা জিজ্ঞেস করল এই সব কি। সুমন মাকে বুঝিয়ে বলল যে, ছোটো ছোটো পোশাক পরে এদিক ফিরে ওদিক ফিরে ছবি তুলে একটা প্রোফাইল বানাতে হবে। মেয়ের মুখ দেখে ত আর মডেলিং হয় না, শরীরের প্রতি অঙ্গ, প্রতি ভাঁজ, আকার সব দেখিয়ে বড় মডেল হয়। প্রোফাইলের ছবি তলার জন্য সুমন আমাকে একটা ছোটো লাল রঙের ব্রা আর ছোটো লাল রঙের প্যান্টি হাতে ধরিয়ে দিল। আমার খুব লজ্জা করছিল। সুমন বলল যে এই সব লজ্জা করলে মডেল হওয়া যায় না। মডেল একটা নগ্ন দেহ, যারা র্যাম্পে হাঁটে তারা ব্রা পরে না। তাড়াতাড়ি ব্যাক স্টেজে গিয়ে কাপড় বদলাতে হয়। আমি অগত্যা দেখলাম যে সত্যি কথা। কত মডেল শুধু ব্রা প্যান্টির বিজ্ঞাপন দেয়, কেউ চাদরের কেউ সাবানের। ওদের গায়ে কি কাপড় থাকে। লজ্জা বিসর্জন দিয়ে পাশের ঘরে গিয়ে পোশাক পালটে এলাম। সুমন মাকে বলল যে ফটসুটের সময় থাকতে চায় না বাইরে বসতে চায়। সাথে থাকলে একটু জড়তা আসতে পারে মেয়ের মধ্যে, এই বুঝিয়ে মাকে বাইরে বসিয়ে দিল।”
কথা শুনতে শুনতে দেবায়নের চোয়াল শক্ত হয়ে যায় সুমনের উপরে। অনন্যা বলে, “সুমন আমাকে ওর স্টুডিও তে নিয়ে গিয়ে ছবি তুলতে শুরু করে দিল। সুলেখা এদিকে ঘুরে দাঁড়াও, সুলেখা একটু পাছা উঁচু করে দাঁড়াও, সুলেখা একটু কোমরে হাত দিয়ে পা দুটো ফাঁক করে দাঁড়াও, সুলেখা ব্রার হুক খুলে শুধু কাপ দুটো বুকের কাছে আলতো করে ধরে পা ছড়িয়ে বসে যাও। এই রকম ভাবে অনেক কটা ছবি তুলল আমার। আমি লজ্জার মাথা খেয়ে সুমনের সামনে এই দেহ ছড়িয়ে দিলাম। মাঝে মাঝে এসে আমার বুকে পাছায় হাত দিয়ে আমাকে দেখিয়ে দিল কি ভাবে দাঁড়াতে হবে, কি ভাবে বসতে হবে। প্রথম প্রথম আড়ষ্ট হয়ে গেছিলাম। সুমন বলল, এই রকম আড়ষ্ট হলে কাজে দেবে না। আমি বললাম, প্রথম প্রথম একটু হবেই। সুমন বলল, ধিরে ধিরে ঠিক হয়ে যাবে। আমাকে জামা কাপড় পড়তে বলে দিয়ে বাইরে চলে গেল মায়ের সাথে কথা বলতে। মাকে বলল যে একটু সময় লাগবে। আমার প্রোফাইল নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েকটা এজেন্সিকে দেখাবে, তাদের সাথে কথা বলবে। মা বলল, ঠিক আছে। সুমন মাকে বলল যে আমাকে কোলকাতায় থাকতে হবে। আমার এক কাকার বাড়ি হেদুয়াতে। সুমন বলল এইসব কাজে বাড়িতে না থেকে যদি পেয়িং গেস্ট থাকা যায় তাহলে ভালো। কারন সবাই এই মডেলিং ভালো চোখে নাও দেখতে পারে। আর কাজের জন্য হয়ত কখন অনেক রাতে বাড়ি ফিরতে হবে হয়ত কোন কোন দিন রাতে ফিরল না। তখন বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে পারে। মা আমাকে ভাবতে বলল। আমি বললাম, এখানে কারুর সাথে পেয়িং গেস্ট থেকে যাবো।”
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “তুমি সুমনের কথা মেনে নিলে?”
অনন্যা, “আমি তখন উড়ছিলাম। চোখের সামনে মডেলিং করার স্বপ্ন, নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন। সুমন আমাকে ওর এক বান্ধবী, রাখীর, সাথে আলাপ করিয়ে দিল কয়েক দিন পরে। নাগেরবাজারে থাকত রাখী, আমি ওর বাড়িতে উঠলাম। সেও মডেলিং করে, সুমন ওকে মডেলিংয়ে ঢুকিয়েছে। দিন যায়, সপ্তাহ চলে যায়। কোন মডেলিং এজেন্সির কাছ থেকে আমি ডাক পাই না। রোজ দিন আমি সুমনকে জিজ্ঞেস করি, কি কারুর কাছে গেছিলে আমার প্রোফাইল নিয়ে। সুমন আমাকে বলে, হ্যাঁ বেশ কয়েকটা এঞ্জেন্সিকে দিয়েছি। একটু অপেক্ষা কর ঠিক সময়ে ডাক আসবে। কিন্তু ডাক আর আসে না। রাখী একদিন রাতে আমাকে বলল, দ্যাখ সুলেখা, এই লাইনে শুধু সুন্দরী মুখ হলে চলবে না অথবা তোর দেহ কত সুন্দর সেটা হলে চলবে না। তুই কতটা সেক্সি আর তোর ভেতরে কতটা সেক্স আছে সেটাই কাজে লাগে। এই যে মডেলিং এজেন্সি গুলো, এদের ম্যানেজারদের খুশি করতে হবে। তুই যদি ওদের বিছানা গরম করতে পারিস, তাহলে ওরা তোকে ওদের এজেন্সিতে নেবে। তারপরে আছে প্রবল কম্পিটিশান। নাম আর কাজ টিকিয়ে রাখতে হলে তোকে বিভিন্ন লোকেদের হাতে রাখতে হবে। এখানে সবাই দেহ খোঁজে, সবাই তোকে ছুঁতে চাইবে, আদর করতে চাইবে। আমি বুঝে গেলাম, মডেলিং করতে হলে আমাকে ওদের বিছানা গরম করতে হবে।”
“একদিন সুমন আর রাখী সেক্সে মজেছিল, আমি হটাত এসে যাওয়াতে ওদের বাধা পরে। রাখী আমাকে ডাকে ওদের সাথে সেক্স করার জন্য। আমি অবাক হয়ে যাই ওর কথা শুনে। কলেজে আমার সেই রকম কোন বয় ফ্রেন্ড ছিল না। আমি সেদিন পর্যন্ত ভার্জিন ছিলাম। রাখী আমাকে বলল, একদিন না একদিন তোকে করতেই হবে তাহলে সুমনের কাছে বাধা কোথায়? ওই তোকে এই জগতে নিয়ে এসেছে। তখন পর্যন্ত একটাও এজেন্সিতে কাজ পাইনি। আমি চুপচাপ সুমনের দিকে দেখলাম। সুমন বলল, এত কেন ভাবছ সুলেখা চলে এস আমাদের সাথে। তোমাকে অনেক বড় মডেল বানিয়ে দেব। রাখী আমাকে নিয়ে সুমনের কোলে বসিয়ে দিল। প্রথম সেক্সের অভিজ্ঞতা, না ভালো ছিল না। কিছুতেই যেন ভিজছিল না, আমি মন থেকে উত্তেজিত হতে পারছিলাম না। এত নিচে নামতে হবে ভাবিনি। সুমন ওর শক্ত, গরম নুনু যখন আমার ভেতরে ঢুকাল আমি ব্যাথায় ককিয়ে উঠলাম। রাখী আমাকে চেপে ধরেছিল আর সুমন সমানে জোরে জোরে আমাকে করে যাচ্ছিল। রেপ বলে মনে হয়নি আমার। ইচ্ছায় বল আর অনিচ্ছায় বল, আমার ভারজিনিটি দিয়ে দিলাম সুমনকে। সব শেষে রাখী আমার কানে কানে বলল, উপরে উঠতে হলে আগে নিচের দিকে নামতে হবে। আমি অইখানের রক্ত মুছে বাঁকা হেসে বললাম, আর কি করতে হবে। সেদিন রাতে বাবার কথা খুব মনে পড়েছিল, কিন্তু পিছিয়ে যাবার আর রাস্তা খোলা ছিল না। আমি তখন উড়তে ব্যাস্ত।”
অনন্যা একটা সিগারেট ধরায়, দুটো টান মেরে এস্ট্রে তে সিগারেট রেখে আবার বলতে শুরু করে, “তারপরে কি হল, বলি শোনো। ঠিক তাঁর দুই দিন পরেই আমার ডাক এল একটা মডেলিং এজেন্সি থেকে। একে একে ম্যানেজারদের বিছানা গরম করলাম আর বিভিন্ন কাজ পেলাম। ওরা আমাকে হাঁটতে চলতে, দাঁড়াতে বসতে সব শেখাল সেই সাথে আমি শিখলাম কি ভাবে পুরুষ মানুষকে বিছানায় খুশি করতে হয়। প্রতি মাসে এসাইন্মেন্ট থাকত না, টাকা কমে আসত। কিন্তু পার্টি, বন্ধু বান্ধবী কম ছিল না, খরচ খরচা কম হত না। কি করি, রাখীর কাছ থেকে ধার নিতাম। রাখী আমাকে বলল, তুই এক কাজ কর, এতদিন তুই এর তার সাথে রাত কাটিয়ে শুধু কয়েক হাজার টাকার এসাইন্মেন্ট পেতিস। তোকে আমি বাইরের ক্লায়েন্ট দিতে পারি, হোটেলে যাবি, রাতে কাটাবি। বেশ ভালো পয়সা পাবি। এক ঘন্টা একটা শটে পাঁচ থেকে সাত হাজার পেয়ে যাবি। দুই হাজার আমাকে দিয়ে দিস। পুরো রাতের জন্য পঁচিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা, মাক্সিমাম চারটে শট দিবি। টাকা আগে নিয়ে নিবি, তারপরে সেক্স। পৌঁছে গেলে আমাকে জানিয়ে দিবি। বড় হোটেল ছাড়া যাবি না। অবশ্য নিজে থেকে কিছু চেষ্টা করতে যাস না, এই র্যাকেট কিন্তু খুব নোংরা আর সাবধানে চলতে হয়। আমি বললাম, ঠিক আছে তুই যোগাড় করে দে। সেই শুরু হল এই মডেলিং আর এস্করট জীবন।”
“একদিন আমাকে রাখী বলল, এক ম্যাডামের সাথে বম্বে যেতে হবে, ম্যাডাম অনেক টাকা দেবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কত টাকা। রাখী বলল, তোকে না দেখে ম্যাডাম ঠিক টাকার কথা বলবে না। আমাকে রাখী নিয়ে গেল, হোটেল পার্কের কফি শপে। সেখানে পারমিতা ম্যামের সাথে দেখা। জানি না কেন, পারমিতা ম্যামকে দেখে আমার মন কেমন হয়ে গেল। পারমিতা ম্যাম আমাকে দেখে বলল, তোমার গায়ের রঙ চাপা, তোমাকে আমার ক্লায়েন্ট পছন্দ করবে না। আমার খুব খারাপ লাগলো, চোখে জল চলে এল। রাখী, পারমিতা ম্যামের উপরে রেগে গেল। আমাকে নিয়ে বেড়িয়ে এল কফিশপ থেকে। পারমিতা ম্যাম আমার দিকে তাকিয়ে ছিল, আমি দরজা দিয়ে বের হতে যাবো, এমন সময়ে ম্যাম আমাকে হাত নাড়িয়ে চুপচাপ ভেতরে আসতে ইঙ্গিত করে। আমি রাখীকে বাইরে দাঁড় করিয়ে ম্যামের কাছে এলাম। ম্যাম আমার নাম্বার নিয়ে বলল পরে আমার সাথে কথা বলবে। সেদিন অনেক রাতে ম্যামের ফোন এল আমার কাছে। আমাকে বলল, পার্ক হোটেলে বিকেলে দেখা করতে। আমি দেখা করলাম ম্যামের সাথে। ম্যাম আমাকে দেখে বলল, তোকে দেখে বড় মায়া লেগেছিল তাই কালকে ওইরকম আচরন করেছিলাম যাতে তুই রাখী কে ছেড়ে কিছু করে আমার কাছে আসিস। তোকে আমি অন্য একটা এজেন্সিতে কাজে লাগাব। ম্যাম আমাকে এই নাম দিল, তুই সুলেখা নয় তুই আজ থেকে অনন্যা বাসু। আমি ম্যামের হাত ধরে কেঁদে ফেলেছিলাম। পারমিতা ম্যামকে দেখে আমার মায়ের কথা মনে পরে গেছিল। আগের আমার সব ডিল রাখী করত, আমার হাতে আসত কোনবার দশ হাজার, কোনবার পনেরো হাজার। ম্যাম আমাকে বলল, তোকে আমি অভিনয়ে নামাব। তারপরে তুই যা ভালো বুঝিস সেটা করিস। পারমিতা ম্যামের এক চেনা ডাইরেক্টর ছিল টালিগঞ্জে। তাঁর কাছে আমাকে একদিন নিয়ে গেল। আমাকে সে বেশ কয়েকদিন প্রশিক্ষণ দিল। আমি মডেলিং ছেড়ে দিলাম এক প্রকার। সিনেমাতে এক্সট্রা রোল পেতাম। কিছু কথা থাকত কোন সময়ে, কোন সময়ে থাকত না।”
দেবায়ন একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বলে, “এতটাই কৃত্রিম যখন ব্যাপার স্যাপার তাহলে তুমি লাইট বন্ধ করে শুয়ে পর।”
অনন্যার চোয়াল শক্ত হয়ে যায় দেবায়নের কথা শুনে, “দেমাক দেখাচ্ছ আমাকে? আমি তোমার কেনা বাঁদি নই মিস্টার বসাক।”
দেবায়নের কিছু যায় আসে না। ওর যেটা পাওয়ার সেটা ও পেয়ে গেছে, এই নারী মাংসের প্রতি একটু দুর্বলতা ছিল কিন্তু একদম কৃত্রিম সম্বন্ধে যেতে নারাজ। জানে যে অনন্যা ওর রুমে পয়সার বিনিময়ে এসেছে, চাইলে ওকে সামনের বিছানায় ফেলে যেমন ইচ্ছে তেমন করে সম্ভোগ করতে পারে। কিন্তু দেবায়নের মনে বাধা পায়। এর চেয়ে সুখকর ওর বান্ধবীরা, যার সাথে মনের মিল থাকে। যেখানে ব্যাবসা নয় পরস্পরের খুশির জন্য, আনন্দের জন্য মেতে ওঠে শরীরের খেলায়। দেবায়ন সোফা থেকে উঠে কোট খুলে আলমারিতে রাখে, জামা আর টাই খুলে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে একটা তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যায়। অনন্যা চুপচাপ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। দেবায়ন বাথরুমে ঢুকে, ঘাড়ে মুখে হাতে জেল লাগিয়ে পরিষ্কার হয়ে বেড়িয়ে আসে।
রুমের লাইট নিভিয়ে, অনন্যা ততক্ষণে ছোটো আলো জ্বালিয়ে বিছানায় বসে। নাইট গাউন খুলে শুধু মাত্র স্লিপ পরে। পাতলা স্লিপের ভেতর দিয়ে গাড় রঙের ব্রা দেখা যায়, সেই সাথে হাল্কা রঙের প্যান্টির দাগ স্পষ্ট। পা মুড়ে বসে থাকার ফলে সুগোল পাছার আকার অবয়াব স্পষ্ট বোঝা যায়। মসৃণ দুই সুগোল থাইয়ের শেষে বক্র পায়ের গুলির মসৃণ ত্বকে আবছা রুমের আলো পিচ্ছিল খেয়ে পরে। মাথার চুল ঘাড়ের উপরে দিয়ে সামনে এলিয়ে দিয়েছে। বুকের দিকে চোখ যেতেই শরীরের রক্ত চঞ্চল হয়ে যায়। সুগোল স্তন জোড়া, ছোটো আঁটো ব্রার মধ্যে বাঁধা পরে যেন ছটফট করছে ছাড়া পাবার জন্য। দেবায়ন অনন্যাকে একবার আপাদমস্তক দেখে। প্যান্টের ভেতরে শিথিল লিঙ্গ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। দেবায়ন তোয়ালেটা সোফার উপরে ছুঁড়ে দিয়ে, বিছানার এক পাশে বসে পরে। অনন্যা পেছন থেকে ওর গলা জড়িয়ে কানের লতির উপরে ছোটো একটা কামড় লাগিয়ে দেয়। চমকে ওঠে দেবায়ন, পিঠের উপরে অনন্যার নরম তুলতুলে স্তন জোড়া পিষে সমতল হয়ে যায়। অনন্যার হাত দুটি সামনের দিকে এসে দেবায়নের বুকের উপরে নেচে বেড়ায়। নরম আঙুলগুলো গেঞ্জি ভেদ করে ওর চওড়া বুকের রক্তে ঝড় তুলে দেয়।
অনন্যা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, “তুমি এত ঠাণ্ডা কেন? এসো না কাছে।”
দেবায়ন ওর ডান হাত মুখের কাছে ধরে ছোটো চুমু খেয়ে বলে, “তোমার খুব তাড়া আছে বলে মনে হচ্ছে, কি ব্যাপার?”
অনন্যা, “ধুর, তুমি না। তোমার কি আমাকে ভালো লাগেনি?”
দেবায়ন হাসিতে ফেটে পরে, “তুমি পাগল হলে নাকি? তুমি ভারী সুন্দরী, নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছি না যে তুমি আমার কাছে। জানো, লনে দাঁড়িয়ে নিজেকে চিমটি কেটে ছিলাম, বড় ব্যাথা লাগলো, বুঝলাম যে জেগে আছি।”
অনন্যা, “কি যে বল না তুমি। বড্ড বেশি মেয়েদের মন নিয়ে খেলতে পারো দেখছি।”
দেবায়ন, “না, সত্যি বলছি।”
অনন্যা ওর কাঁধে মাথা রেখে গায়ের উপরে ঢলে পরে মিষ্টি কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “এমন ঠাণ্ডা মানুষ দেখিনি বাবা। কি চলছে বলত তোমার মনের মধ্যে? গার্লফ্রেন্ডের কথা মনে পড়ছে, তাই তুমি টেন্সড নাকি?”
দেবায়ন হেসে বলে, “না সে চিন্তা আমার নেই।”
অনন্যা, “সত্যি কথা একটা বলবে আমাকে? জানি যে ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করা আমাদের উচিত নয়, তাও একটু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে।”
দেবায়ন, “কতটা ব্যাক্তিগত সেটা না জেনে কি করে বলি যে প্রশ্নের উত্তর দেব কি দেব না। আচ্ছা জিজ্ঞেস করো।”
অনন্যা, “তুমি কে? নিবেদিতা ম্যাম আমাকে আর তনুজাকে বলছিল তোমাকে একটু নজরে রাখতে। আমি ইচ্ছে করে তনুজাকে ওই জার্মান ভদ্রলোকের কাছে পাঠিয়ে দিলাম। ডিনারের সময় থেকে দেখছি, তুমি একটু ছাড়া ছাড়া ছিলে, বিশেষ কারুর সাথে মেশনি। তোমার কথাবার্তা শুনে মনে হয় না তুমি এন.আর.আই, তুমি খোদ এই বাংলার ছেলে তাও তোমাকে খুশি করতে নিবেদিতা ম্যাম যেন একটু তৎপর। কি ব্যাপার?”
হাজার প্রশ্নের সম্মুখীন দেবায়ন, সঠিক উত্তর দেবার আগে প্রশ্ন করে অনন্যাকে, “নিবেদিতা ম্যাম তোমাকে এত সব বলেছে?”
অনন্যা, “হ্যাঁ বাবা। তুমি কি মানুষ না? অন্য কেউ হলে এতক্ষণে একটা শট হয়ে যেত।”
দেবায়ন হেসে বলে, “আমি তাহলে সাধারন মানুষ নই, আমি ভুত।”
অনন্যা অভিমান করে দেবায়নের বাজুতে কিল মেরে বলে, “ধুর ব্যাঙ, তুমি বসে বসে নাড়াও আমি ঘুমাতে যাই। কালকে ম্যাম কিছু জিজ্ঞেস করলে বলে দেব যে একদম ঠাণ্ডা মানুষের কাছে পাঠিয়েছে।”
দেবায়ন, “বেশ তো ঘুমিয়ে পরো তুমি, কে বারন করেছে তোমাকে?”
অনন্যা কাতর কণ্ঠে দ্বিতীয় বার জিজ্ঞেস করে, “এই প্লিস বল না, তুমি আসলে কে? তোমার মাথায় কি চলছে?”
অনন্যার কথা শুনে দেবায়ন বুঝে যায় নিবেদিতা জানতে চায় দেবায়নের আসল অভিপ্রায়, তাই শিখিয়ে পাঠিয়েছে অনন্যাকে। দেবায়ন মুখ খুলতে নারাজ, যা বলার সেটা সরাসরি নিবেদিতাকে পরে জানাবে। উলটে অনন্যাকে প্রশ্ন করে, “তোমার কথা একটু শুনি। তোমার অভিনেত্রী হওয়া, এই আলোর চমকানি আর তুমি পারমিতা কাকিমাকে কি করে জানো?”
অনন্যা ম্লান হেসে বলে, “সে অনেক বড় গল্প। আমার কথা জেনে কি করবে? গল্প লিখবে নাকি?”
দেবায়ন, “বড্ড মেকানিকাল উত্তর। তুমি যেমন জানাতে চাও না তেমনি আমিও জানাতে চাই না। শুধু এইটুকু জেনে রাখো, আমি মিস্টার সেনের বিজনেস পার্টনার নই। আমি সামান্য একজন ছেলে।”
অনন্যা ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে, “হু, তুমি বললে আর আমি মেনে নিলাম। সেদিন সেন স্যারের সাথে * স্তানে বসে ডিনার করছিলে। আজকে এই বিজনেস মিটিঙ্গে উপস্থিত। আবার নিবেদিতার ম্যামের নেক নজর তোমার উপরে। তুমি সামান্য বটে!”
অনন্যা অনুনয়ের সুরে বলে, “এই প্লিস এই রকম করো না। মিবেদিতা ম্যাম জানলে খুব খারাপ হবে।”
দেবায়ন বুঝতে পারেনা হটাত অনন্যার সুর বদলে কেন গেল। ও জিজ্ঞাসু চোখে অনন্যার দিকে তাকিয়ে থাকে। অনন্যা ওর কোল ঘেঁষে হাতের উপরে হাত রেখে আব্দার জড়ানো কণ্ঠে ডাকে, “প্লিস এসো না।”
দেবায়ন চেপে ধরে অনন্যাকে, “মাদামোয়েজেল, এটা বড় কৃত্রিম ব্যাপার স্যাপার হয়ে যাচ্ছে। এই রকম সম্পর্কে শুধু পেট ভরে মন ভরে না।”
অনন্যা ওর কাছ থেকে একটু সরে বসে, “ভালোবাসা করতে আসিনি এখানে মিস্টার।”
দেবায়ন, “জানি, কিন্তু শুধু তোমাকে জড়িয়ে শুয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এতটা মেকানিকাল আমি হতে পারিনি এখন। তার চেয়ে ভালো দুই জনে সারা রাত গল্প করে কাটিয়ে দেই। তুমি এক সুন্দরী অভিনেত্রী, আমি কোলকাতার এক সামান্য নগন্য ছেলে। তোমার এই চকমকে জীবনের কথা জানতে বড় ইচ্ছে করছে।”
অনন্যার গলা একটু আহত হয় উত্তর দেবার সময়ে, “হুঁহ, এই চকমকে জীবন। এই আলোর পেছনে অনেক অন্ধকার বুঝলে দেবায়ন।”
দেবায়ন ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। অনন্যা একটু দুরে সরে বুকের উপরে বালিশ চেপে বলতে শুরু করে, “আমি বিগত পাঁচ বছর ধরে পারমিতা ম্যামকে চিনি। আমি জামশেদপুরের মেয়ে। আমার আসল নাম অনন্যা নয়, এই আলোর জগতে, এই চকমকির জগতে এসে আমার নাম অনন্যা হয়। আমি ছিলাম, সুলেখা বোস। এখানে এসে হয়ে গেলাম অনন্যা বাসু। কলেজে থাকতেই মডেলিং করার খুব শখ ছিল। গায়ের রঙ একটু চাপা হলেও সবাই আমাকে সুন্দরী বলত। সবাই বলত আমাকে নাকি মালাইকা আরোড়ার মতন দেখতে। কলেজে থাকতে কয়েকটা মডেলিং করেছিলাম। রঙ একটু চাপা কিন্তু ছোটোখাটো স্থানিয় বিজ্ঞাপন পেয়ে যেতাম। ওইখানে একটা স্থানিয় বিজ্ঞাপন শুট করার সময়ে এক ফটোগ্রাফার, সুমন নাম, আমাকে দেখে। আমার অঙ্গি ভঙ্গি দেখে তাঁর পছন্দ হয়, সে আমার মাথায় বড় মডেল হওয়ার ভুত ঢুকিয়ে দেয়। বাবা মাকে বলতে বাবা আমাকে মেরে বকে চুপ করিয়ে দিল। মায়ের খুব শখ, মেয়ের নাম হবে, মেয়েকে সবাই দেখবে। আমি নেচে উঠলাম মায়ের সম্মতি পেয়ে। পাঁচ বছর আগে, সবে উনিশে পা দিয়েছি। সুমন আমাকে আর মাকে নিয়ে কোলকাতা চলে এল। কলেজের গন্ডি পার হতে পারলাম না আর, চলে এলাম কোলকাতায় মডেল হব বলে।”
অনন্যা চোখের কোল মোছে আঙুল দিয়ে। দেবায়ন বলে, “ছাড়ো আর জানতে চাই না। তোমার চোখে জল সেটা ঠিক মানতে পারছি না।”
অনন্যা বলে, “একটু শুনবে না? সবাই আমার রুপ দেখে, আলোর চমকানি দেখে। আমাকে ছুঁতে চায়, ধরতে চায়, কোলে পেতে চায়। একটু সেই আলোর নিচের অন্ধকার দেখতে চাইবে না?”
দেবায়ন, “তোমাকে আঘাত করতে চাই না, অনন্যা।”
অনন্যা, “শোনো না একটু। এই যে সুমনের কথা বলছিলাম। সুমন, প্রথমে আমাকে বলল যে একটা মডেলিং এজেন্সি তে ঢুকতে হবে, তাঁর জন্য প্রোফাইল বানাতে হবে। মা জিজ্ঞেস করল এই সব কি। সুমন মাকে বুঝিয়ে বলল যে, ছোটো ছোটো পোশাক পরে এদিক ফিরে ওদিক ফিরে ছবি তুলে একটা প্রোফাইল বানাতে হবে। মেয়ের মুখ দেখে ত আর মডেলিং হয় না, শরীরের প্রতি অঙ্গ, প্রতি ভাঁজ, আকার সব দেখিয়ে বড় মডেল হয়। প্রোফাইলের ছবি তলার জন্য সুমন আমাকে একটা ছোটো লাল রঙের ব্রা আর ছোটো লাল রঙের প্যান্টি হাতে ধরিয়ে দিল। আমার খুব লজ্জা করছিল। সুমন বলল যে এই সব লজ্জা করলে মডেল হওয়া যায় না। মডেল একটা নগ্ন দেহ, যারা র্যাম্পে হাঁটে তারা ব্রা পরে না। তাড়াতাড়ি ব্যাক স্টেজে গিয়ে কাপড় বদলাতে হয়। আমি অগত্যা দেখলাম যে সত্যি কথা। কত মডেল শুধু ব্রা প্যান্টির বিজ্ঞাপন দেয়, কেউ চাদরের কেউ সাবানের। ওদের গায়ে কি কাপড় থাকে। লজ্জা বিসর্জন দিয়ে পাশের ঘরে গিয়ে পোশাক পালটে এলাম। সুমন মাকে বলল যে ফটসুটের সময় থাকতে চায় না বাইরে বসতে চায়। সাথে থাকলে একটু জড়তা আসতে পারে মেয়ের মধ্যে, এই বুঝিয়ে মাকে বাইরে বসিয়ে দিল।”
কথা শুনতে শুনতে দেবায়নের চোয়াল শক্ত হয়ে যায় সুমনের উপরে। অনন্যা বলে, “সুমন আমাকে ওর স্টুডিও তে নিয়ে গিয়ে ছবি তুলতে শুরু করে দিল। সুলেখা এদিকে ঘুরে দাঁড়াও, সুলেখা একটু পাছা উঁচু করে দাঁড়াও, সুলেখা একটু কোমরে হাত দিয়ে পা দুটো ফাঁক করে দাঁড়াও, সুলেখা ব্রার হুক খুলে শুধু কাপ দুটো বুকের কাছে আলতো করে ধরে পা ছড়িয়ে বসে যাও। এই রকম ভাবে অনেক কটা ছবি তুলল আমার। আমি লজ্জার মাথা খেয়ে সুমনের সামনে এই দেহ ছড়িয়ে দিলাম। মাঝে মাঝে এসে আমার বুকে পাছায় হাত দিয়ে আমাকে দেখিয়ে দিল কি ভাবে দাঁড়াতে হবে, কি ভাবে বসতে হবে। প্রথম প্রথম আড়ষ্ট হয়ে গেছিলাম। সুমন বলল, এই রকম আড়ষ্ট হলে কাজে দেবে না। আমি বললাম, প্রথম প্রথম একটু হবেই। সুমন বলল, ধিরে ধিরে ঠিক হয়ে যাবে। আমাকে জামা কাপড় পড়তে বলে দিয়ে বাইরে চলে গেল মায়ের সাথে কথা বলতে। মাকে বলল যে একটু সময় লাগবে। আমার প্রোফাইল নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েকটা এজেন্সিকে দেখাবে, তাদের সাথে কথা বলবে। মা বলল, ঠিক আছে। সুমন মাকে বলল যে আমাকে কোলকাতায় থাকতে হবে। আমার এক কাকার বাড়ি হেদুয়াতে। সুমন বলল এইসব কাজে বাড়িতে না থেকে যদি পেয়িং গেস্ট থাকা যায় তাহলে ভালো। কারন সবাই এই মডেলিং ভালো চোখে নাও দেখতে পারে। আর কাজের জন্য হয়ত কখন অনেক রাতে বাড়ি ফিরতে হবে হয়ত কোন কোন দিন রাতে ফিরল না। তখন বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে পারে। মা আমাকে ভাবতে বলল। আমি বললাম, এখানে কারুর সাথে পেয়িং গেস্ট থেকে যাবো।”
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “তুমি সুমনের কথা মেনে নিলে?”
অনন্যা, “আমি তখন উড়ছিলাম। চোখের সামনে মডেলিং করার স্বপ্ন, নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন। সুমন আমাকে ওর এক বান্ধবী, রাখীর, সাথে আলাপ করিয়ে দিল কয়েক দিন পরে। নাগেরবাজারে থাকত রাখী, আমি ওর বাড়িতে উঠলাম। সেও মডেলিং করে, সুমন ওকে মডেলিংয়ে ঢুকিয়েছে। দিন যায়, সপ্তাহ চলে যায়। কোন মডেলিং এজেন্সির কাছ থেকে আমি ডাক পাই না। রোজ দিন আমি সুমনকে জিজ্ঞেস করি, কি কারুর কাছে গেছিলে আমার প্রোফাইল নিয়ে। সুমন আমাকে বলে, হ্যাঁ বেশ কয়েকটা এঞ্জেন্সিকে দিয়েছি। একটু অপেক্ষা কর ঠিক সময়ে ডাক আসবে। কিন্তু ডাক আর আসে না। রাখী একদিন রাতে আমাকে বলল, দ্যাখ সুলেখা, এই লাইনে শুধু সুন্দরী মুখ হলে চলবে না অথবা তোর দেহ কত সুন্দর সেটা হলে চলবে না। তুই কতটা সেক্সি আর তোর ভেতরে কতটা সেক্স আছে সেটাই কাজে লাগে। এই যে মডেলিং এজেন্সি গুলো, এদের ম্যানেজারদের খুশি করতে হবে। তুই যদি ওদের বিছানা গরম করতে পারিস, তাহলে ওরা তোকে ওদের এজেন্সিতে নেবে। তারপরে আছে প্রবল কম্পিটিশান। নাম আর কাজ টিকিয়ে রাখতে হলে তোকে বিভিন্ন লোকেদের হাতে রাখতে হবে। এখানে সবাই দেহ খোঁজে, সবাই তোকে ছুঁতে চাইবে, আদর করতে চাইবে। আমি বুঝে গেলাম, মডেলিং করতে হলে আমাকে ওদের বিছানা গরম করতে হবে।”
“একদিন সুমন আর রাখী সেক্সে মজেছিল, আমি হটাত এসে যাওয়াতে ওদের বাধা পরে। রাখী আমাকে ডাকে ওদের সাথে সেক্স করার জন্য। আমি অবাক হয়ে যাই ওর কথা শুনে। কলেজে আমার সেই রকম কোন বয় ফ্রেন্ড ছিল না। আমি সেদিন পর্যন্ত ভার্জিন ছিলাম। রাখী আমাকে বলল, একদিন না একদিন তোকে করতেই হবে তাহলে সুমনের কাছে বাধা কোথায়? ওই তোকে এই জগতে নিয়ে এসেছে। তখন পর্যন্ত একটাও এজেন্সিতে কাজ পাইনি। আমি চুপচাপ সুমনের দিকে দেখলাম। সুমন বলল, এত কেন ভাবছ সুলেখা চলে এস আমাদের সাথে। তোমাকে অনেক বড় মডেল বানিয়ে দেব। রাখী আমাকে নিয়ে সুমনের কোলে বসিয়ে দিল। প্রথম সেক্সের অভিজ্ঞতা, না ভালো ছিল না। কিছুতেই যেন ভিজছিল না, আমি মন থেকে উত্তেজিত হতে পারছিলাম না। এত নিচে নামতে হবে ভাবিনি। সুমন ওর শক্ত, গরম নুনু যখন আমার ভেতরে ঢুকাল আমি ব্যাথায় ককিয়ে উঠলাম। রাখী আমাকে চেপে ধরেছিল আর সুমন সমানে জোরে জোরে আমাকে করে যাচ্ছিল। রেপ বলে মনে হয়নি আমার। ইচ্ছায় বল আর অনিচ্ছায় বল, আমার ভারজিনিটি দিয়ে দিলাম সুমনকে। সব শেষে রাখী আমার কানে কানে বলল, উপরে উঠতে হলে আগে নিচের দিকে নামতে হবে। আমি অইখানের রক্ত মুছে বাঁকা হেসে বললাম, আর কি করতে হবে। সেদিন রাতে বাবার কথা খুব মনে পড়েছিল, কিন্তু পিছিয়ে যাবার আর রাস্তা খোলা ছিল না। আমি তখন উড়তে ব্যাস্ত।”
অনন্যা একটা সিগারেট ধরায়, দুটো টান মেরে এস্ট্রে তে সিগারেট রেখে আবার বলতে শুরু করে, “তারপরে কি হল, বলি শোনো। ঠিক তাঁর দুই দিন পরেই আমার ডাক এল একটা মডেলিং এজেন্সি থেকে। একে একে ম্যানেজারদের বিছানা গরম করলাম আর বিভিন্ন কাজ পেলাম। ওরা আমাকে হাঁটতে চলতে, দাঁড়াতে বসতে সব শেখাল সেই সাথে আমি শিখলাম কি ভাবে পুরুষ মানুষকে বিছানায় খুশি করতে হয়। প্রতি মাসে এসাইন্মেন্ট থাকত না, টাকা কমে আসত। কিন্তু পার্টি, বন্ধু বান্ধবী কম ছিল না, খরচ খরচা কম হত না। কি করি, রাখীর কাছ থেকে ধার নিতাম। রাখী আমাকে বলল, তুই এক কাজ কর, এতদিন তুই এর তার সাথে রাত কাটিয়ে শুধু কয়েক হাজার টাকার এসাইন্মেন্ট পেতিস। তোকে আমি বাইরের ক্লায়েন্ট দিতে পারি, হোটেলে যাবি, রাতে কাটাবি। বেশ ভালো পয়সা পাবি। এক ঘন্টা একটা শটে পাঁচ থেকে সাত হাজার পেয়ে যাবি। দুই হাজার আমাকে দিয়ে দিস। পুরো রাতের জন্য পঁচিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা, মাক্সিমাম চারটে শট দিবি। টাকা আগে নিয়ে নিবি, তারপরে সেক্স। পৌঁছে গেলে আমাকে জানিয়ে দিবি। বড় হোটেল ছাড়া যাবি না। অবশ্য নিজে থেকে কিছু চেষ্টা করতে যাস না, এই র্যাকেট কিন্তু খুব নোংরা আর সাবধানে চলতে হয়। আমি বললাম, ঠিক আছে তুই যোগাড় করে দে। সেই শুরু হল এই মডেলিং আর এস্করট জীবন।”
“একদিন আমাকে রাখী বলল, এক ম্যাডামের সাথে বম্বে যেতে হবে, ম্যাডাম অনেক টাকা দেবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কত টাকা। রাখী বলল, তোকে না দেখে ম্যাডাম ঠিক টাকার কথা বলবে না। আমাকে রাখী নিয়ে গেল, হোটেল পার্কের কফি শপে। সেখানে পারমিতা ম্যামের সাথে দেখা। জানি না কেন, পারমিতা ম্যামকে দেখে আমার মন কেমন হয়ে গেল। পারমিতা ম্যাম আমাকে দেখে বলল, তোমার গায়ের রঙ চাপা, তোমাকে আমার ক্লায়েন্ট পছন্দ করবে না। আমার খুব খারাপ লাগলো, চোখে জল চলে এল। রাখী, পারমিতা ম্যামের উপরে রেগে গেল। আমাকে নিয়ে বেড়িয়ে এল কফিশপ থেকে। পারমিতা ম্যাম আমার দিকে তাকিয়ে ছিল, আমি দরজা দিয়ে বের হতে যাবো, এমন সময়ে ম্যাম আমাকে হাত নাড়িয়ে চুপচাপ ভেতরে আসতে ইঙ্গিত করে। আমি রাখীকে বাইরে দাঁড় করিয়ে ম্যামের কাছে এলাম। ম্যাম আমার নাম্বার নিয়ে বলল পরে আমার সাথে কথা বলবে। সেদিন অনেক রাতে ম্যামের ফোন এল আমার কাছে। আমাকে বলল, পার্ক হোটেলে বিকেলে দেখা করতে। আমি দেখা করলাম ম্যামের সাথে। ম্যাম আমাকে দেখে বলল, তোকে দেখে বড় মায়া লেগেছিল তাই কালকে ওইরকম আচরন করেছিলাম যাতে তুই রাখী কে ছেড়ে কিছু করে আমার কাছে আসিস। তোকে আমি অন্য একটা এজেন্সিতে কাজে লাগাব। ম্যাম আমাকে এই নাম দিল, তুই সুলেখা নয় তুই আজ থেকে অনন্যা বাসু। আমি ম্যামের হাত ধরে কেঁদে ফেলেছিলাম। পারমিতা ম্যামকে দেখে আমার মায়ের কথা মনে পরে গেছিল। আগের আমার সব ডিল রাখী করত, আমার হাতে আসত কোনবার দশ হাজার, কোনবার পনেরো হাজার। ম্যাম আমাকে বলল, তোকে আমি অভিনয়ে নামাব। তারপরে তুই যা ভালো বুঝিস সেটা করিস। পারমিতা ম্যামের এক চেনা ডাইরেক্টর ছিল টালিগঞ্জে। তাঁর কাছে আমাকে একদিন নিয়ে গেল। আমাকে সে বেশ কয়েকদিন প্রশিক্ষণ দিল। আমি মডেলিং ছেড়ে দিলাম এক প্রকার। সিনেমাতে এক্সট্রা রোল পেতাম। কিছু কথা থাকত কোন সময়ে, কোন সময়ে থাকত না।”