28-09-2020, 10:29 PM
চারপাশ ঘন অন্ধকারে ঢাকা। গাড়ি তির বেগে খালি রাস্তা ধরে নেমে চলেছে। গাড়ির জানালা খোলা, ভেতরের লাইট বন্ধ। কিছুক্ষণ পরেই ঠাণ্ডা বাতাসে ঋতুপর্ণার মন হারিয়ে যায় এক অচিন পুরে। গাড়িতে ওঠার সময়ে মা ছেলে পেছনের সিটে নিজেদের মাঝে একটু ব্যাবধান নিয়েই বসেছিল কিন্তু ঘুমের আবেশ চোখে লাগতেই আদি মায়ের পাশ ঘেঁষে বসে। ঋতুপর্ণা একমনে জানালার বাইরে অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল অতীতে। সুভাষকে মন প্রান দিয়েই ভালবেসেছিল, কিন্তু তার দাম সুভাষ দিল না। প্রেমের আসল অর্থের সমাধান খুঁজতে বেড়িয়েছিল ওর ফাঁকা বুক। কাকে ভালোবাসে ঋতুপর্ণা, ভালোবাসার আসল অর্থ কি। শুধু কি দেহের টান, যার খিদের জ্বালায় প্রদীপের বিছানায় ধরা দিয়েছিল। কিন্তু সেখানেও প্রতারনা ছাড়া আর কিছু পেল না। মাথা ঝাঁকা দিয়ে হেসে ফেলে মনে মনে। ছেলের দিকে তাকিয়ে দেখল ঋতুপর্ণা। ইসস নিশ্চয় ঘুম পেয়েছে, এই ভাবে ঢুলছে।
“এই বাবা, মাথায় বাড়ি লাগবে ত। এইদিকে আয়।” ঋতুপর্ণা ছেলেকে ডাকে।
গতকাল থেকে চোখের পাতা এক করতে পারেনি। ঠাণ্ডা বাতাসে শরীর একদম ছেড়ে দিয়েছে। মায়ের ডাকে ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে মাকে তারপরে বাধ্য ছেলের মতন মায়ের পাশে সরে আসে। ছেলের গালে মাথায় হাত বুলিয়ে ঋতুপর্ণা বলে, “আয় কোলে মাথা রেখে শুয়ে পর।”
আদি ঘুম ঘুম চোখে হেসে জিজ্ঞেস করে, “তোমার ঘুম পাচ্ছে না, মা?”
ঋতুপর্ণা ওর উস্কোখুস্কো চুলে বিলি কেটে আদর করে বলে, “না এখন আর ঘুম পাচ্ছে না। তুই ঘুমা, এয়ারপোর্ট এলে তোকে তুলে দেব।”
আদি আর কথা না বাড়িয়ে, বাচ্চা ছেলের মতন মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। ইসস, এই ঠাণ্ডা বাতাসে ছেলের না ঠাণ্ডা লেগে যায়। এই ভেবে শাড়ির আঁচল ছেলের শরীরের ওপরে দিয়ে ঢেকে দিল। ঋতুপর্ণার এক এক করে মনে পরে আগের কথা। রোজ সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগে ছেলে এইভাবে ওর কোলে মাথা রেখে কিছুক্ষণ তন্দ্রা নেবে, একটু জড়িয়ে আদর করবে তারপরে বিছানা ছাড়বে। এই পনেরো দিনে সেই পরশ পায়নি ঋতুপর্ণা। পনেরো দিন নয়, যেন পনেরো বছর কেটে গেছে এর মাঝে।
ছেলের মাথা কোলে চেপে ধরে চুপচাপ বসে থাকে। আদির ছোট বেলার কথা মনে পরে যায়, বুকের পাঁজর কেটে একমাত্র ছেলেকে হোস্টেলে পাঠিয়েছিল। তারপরে ওর জীবনে ধস নেমে আসে। ডিভোর্স দিতে দ্বিধা করেনি সুভাষ সেই সাথে ওদের থাকার জন্য বিশাল বাড়িটা দিয়েছিল। বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নিতে চায়নি, শর্ত ছিল কোনোদিন ছেলেকে সুভাষের কাছে আসত দেবে না। সুভাষ বেঁকে বসেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছিল এক মায়ের অপার মমতার কাছে। আজ আর কোন পুরুষের প্রতি বিশ্বাস নেই, কোলকাতা ফিরে গিয়ে নিজের কলেজ আর বাড়িতে নাচের ক্লাস নিয়েই পরে থাকবে আর থাকবে ছেলে। কাছের মানুষ বলতে কমল দা আর বৌদি, তা ছাড়া বাকিরা যারাই ওর দিকে তাকায় সবার চোখে যেন এক চাহিদা। একা এক নারীর দ্বারা ছেলে মানুষ করা বড় কষ্টকর। ফিরে গিয়ে সব থেকে আগে প্রদীপের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে কিন্তু ওর সামনে যেতেই ঘৃণা বোধ করে। দেড় লাখ টাকা এখুনি কোথা থেকে যোগাড় করবে। ওইদিকে আদির পড়াশুনা, কলেজ। যদিও পরের দিকে সুভাষ ছেলের পড়াশুনার খরচ দিত। প্রথমে নিতে চায়নি, কিন্তু যখন আদি হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরে বারবার সুভাষের কথা জিজ্ঞেস করত তখন সঠিক উত্তর দিতে পারত না। তারপরে একদিন বাবার কাছে যাবে বলে বাড়ি থেকে পালাবার উদ্যোগ নেয়। সেদিন খুব কেঁদেছিল ঋতুপর্ণা, ছেলে ছাড়া ওর আর কেউ নেই। বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের কাছে হার মেনে সুভাষকে ফোন করেছিল। ওদের মাঝের বরফ যদিও বিন্দুমাত্র গলেনি তবে তারপর থেকে সুভাষ আদির পড়াশুনার খরচ জুগিয়ে গেছে।
পুব আকাশে রঙ লেগে গেছে। ঘড়ি দেখল ঋতুপর্ণা, সাড়ে ছ’টা বাজে। পথ আর বেশি নেই, গাড়ি পাহার ছেড়ে নেমে এসেছে। ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে উত্তর পায় যে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই এয়ারপোর্ট পৌঁছে যাবে।
আদির চুলে বিলি কেটে জাগিয়ে তোলে, “উঠে পর, এয়ারপোর্ট এসে গেছে।”
প্রতি দিনের সকালের মতন মায়ের কোমর জড়িয়ে ঘুম ঘুম আদুরে গলায় আদি বলে, “আর পাঁচ মিনিট প্লিস।”
হেসে ফেলে ঋতুপর্ণা, “ওকে বাবা শুধু পাঁচ মিনিট।” চোখের কোনায় এক চিলতে জল জমে আসে আদির কথা শুনে।
তন্দ্রা অবস্থাতেই কোলের মধ্যে নাক মুখ ঘষে দেয় আদি। শক্ত করে মায়ের কোমর জড়িয়ে নরম পেটের ওপরে আদর করে দেয়। আলতো এক চাঁটি মেরে ঋতুপর্ণা আদিকে তুলে দিয়ে বলে, “এই কি করছিস রে দুষ্টু...”
আদি ঘুমের ঘোরে ভুলেই গিয়েছিল যে অরা গাড়িতে। ঘুম ভাঙতে বুঝতে পেরে মায়ের কোল থেকে ধরমর করে মাথা উঠিয়ে নেয়। আড়ামোড়া খেয়ে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলে, “ইসস একটু ঘুমাতে দিলে না।”
স্নেহ ভরে ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে, “এই ত একটু পরেই এয়ারপোর্ট, তারপরেই বাড়ি। একেবারে বাড়িতে গিয়ে লম্বা হয়ে ঘুমিয়ে পরিস আমি আর তোকে জাগাব না।”
কিছুক্ষণের মধ্যেই এয়ারপোর্ট এসে গেল। চেক ইন আগে থেকেই করে রেখেছিল আদি তাই বেশি দেরি না করে সিকিউরিটি চেক হয়ে গেল। আদিকে জোর করে অয়াশ রুমে পাঠিয়ে দিল মুখ ধুয়ে আসার জন্য। ইসস ছেলেটা এখন ঘুমে ঢুলছে, বড় কষ্ট হল সেই দেখে।
প্লেনে উঠে ঋতুপর্ণা ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, “এই কয়দিনে কে কে এসেছিল রে?”
আদি সবার কথা জানালো, কলেজের শিক্ষিকারা, সোসাইটির বেশ কয়েকজন। তিস্তা মাঝে মাঝেই আসত দেখা করতে। সেই শুনে ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে আদিকে জিজ্ঞেস করে, “বড্ড বেশি তিস্তা তিস্তা করা হচ্ছে, কি ব্যাপার।”
লজ্জা পেয়ে যায় আদি, “না না, এই শুধু একটু বন্ধুত্ত তা ছাড়া আর কিছু নয়।”
তিস্তাকে ভালো ভাবেই চেনে ঋতুপর্ণা তাই অবিশ্বাস ভরা চাহনি নিয়ে ছেলের দিকে তাকিয়ে হেসে জিজ্ঞেস করে, “তা বন্ধুত্তটা কত গভীর একটু শুনি না।”
লজ্জায় কান গরম হয়ে যায় আদির। লজ্জায় কান গরম হয়ে যায় আদির, মায়ের দিকে না তাকিয়ে উত্তর দেয়, “না বলব না। তুমি ও ত মাঝে মাঝেই তোমার বন্ধু প্রদীপ বাবুর কাছে যাও।”
ঋতুপর্ণা যে সন্দেহ করেনি সেটা নয়। তিস্তার পারটিতে যে ভাবে আদি আর তিস্তা এক ঘন আলিঙ্গনে বেঁধে ছিল তাতেই সন্দেহ হয়েছিল কিন্তু ভেবেছিল যেহেতু তিস্তার একটা বয় ফ্রেন্ড আছে সেহেতু হয়ত তিস্তা ওর ছেলের দিকে হাত বাড়াবে না। কিন্তু আদির লজ্জা দেখে সন্দেহ দূর হয়ে যায়। বুকের ভেতরটা কিঞ্চিত হিংসে কিঞ্চিত ভয়ে রিরি করে ওঠে।
আদির গালে হাত রেখে নিকের দিকে টেনে ধরে বলে, “ওকে বাবা। তবে দেখিস বেশি দূর যেন এগোস না। ওর একটা বয় ফ্রেন্ড আছে, পরে যেন কেঁদে কেটে ...”
আদি লজ্জায় লাল হয়ে যায়, “আরে বাবা, যাও ত। তুমি কথাটা কোথা থেকে কোথায় নিয়ে চলে গেলে।” একটু থেমে বলে, “আচ্ছা জানো, তোমার এক্সিডেন্টের কথা শুনে বাবা দৌড়ে এসেছিল।”
বিশ্বাস হল না এটা, “মানে” ঋতুপর্ণা ছেলেকে প্রশ্ন করে।
আদি উত্তরে বলে, “হ্যাঁ মা, তোমার এক্সিডেন্টের কথা শুনেই বাবা এসেছিল। হস্পিটালের সব খরচ সব কিছু বাবাই দিয়েছে।”
ঋতুপর্ণা একটু রেগে যায়, “কেন একাউন্টে কি টাকা ছিল না।”
আদি মাকে খান্ত করে বলে, “আরে সেই কথা নয় মা। আসলে সেই সময়ে মাথা একদম কাজ করছিল না। কি করব কার কাছ থেকে সাহায্য চাইব কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না তাই বাবাকে ফোন করেছিলাম। তারপরে ” একটু থেমে গেল আদি। মনে পরে গেল বাবার কথা, মনে পরে গেল আদির আর ঋতুপর্ণার আসল পরিচয়। চোখ জোড়া জ্বালা করে উঠল। মাকে যদি সব কথা বলে দেয় তাহলে মা হারিয়ে যাবে, আবার হয়ত বড় ধাক্কা খাবে। এতদিন যখন বাবা এই সত্য লুকিয়ে রেখেছে তখন বাকি জীবন এই সত্য লুক্কায়িত থাক।
ঋতুপর্ণা প্রশ্ন করে, “তারপরে কি?”
আদি মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “তারপরে আর কি। তুমি কাউকে চিনতে পারলে না। বাবাকে দেখা মাত্রই চেঁচিয়ে উথলে, দেখতে পর্যন্ত চাইলে না, দুরদুর করে তাড়িয়ে দিলে। বড্ড দুঃখ পেয়ে ফিরে গেল।”
ঋতুপর্ণা চোয়াল শক্ত করে চিবিয়ে উত্তর দেয়, “কি দরকার ছিল তোর বাবাকে ডাকার। আমি কি মরে গিয়েছিলাম?”
আদি আমতা আমতা করে বলে, “না মানে একা একা বড় অসহায় ফিল করছিলাম।”
ঋতুপর্ণা বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে। নিচে ছোট ছোট গ্রাম গঞ্জ, চারপাশে মেঘের ভেলা। শরত এসে গেছে, সামনে পুজো। সত্যি সুভাষের সাথে পালিয়ে বিয়ে করে আত্মীয় সজ্জনের কাছ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। এই শহর কোলকাতা ছাড়িয়ে অনেকদুরে ওদের বাড়ি। সুভাষের সাথে পালিয়ে আসার পরে কোনোদিন আর সেই বাড়ি মুখো হয়নি এমনকি ডিভোর্সের পরেও বাড়ি মুখো হতে পারেনি। একা একাই জীবনের সাথে এই দুনিয়া এই সমাজের সাথে লড়াই করে গেছে। তবে কি সুভাষ এখন ওকে ভালোবাসে, না কি শুধু মাত্র ছেলের অসহায় অবস্থা দেখে এসছিল।
একটানা গুনগুন আওয়াজে কান ধরে গেছে। কোলকাতা পর্যন্ত একদম চুপ ছিল ঋতুপর্ণা। প্লেন ধিরে ধিরে নামতে শুরু করে দিতেই তন্দ্রা ভাব কেটে গেল ঋতুপর্ণার। ছেলের দিকে তাকিয়ে দেখল একবার। হাঁ করে সিটে মাথা রেখে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে সেটার খেয়াল ছিল না। আদির কাঁধে আলতো ধাক্কা মেরে তুলে দেয়। চোখ ডলে মায়ের দিকে তাকিয়ে একটু হাসে আদি। ঋতুপর্ণা প্রতি উত্তরে অল্প হেসে জানিয়ে দেয় যে কোলকাতা এসে গেছে।
এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ি পর্যন্ত বেশ চুপচাপ ছিল দুইজনে। বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় বারোটা বেজে গেল। সোসাইটি তে গাড়ি ঢুকতেই ঋতুপর্ণার মনে হয় নিজের পুরানো হারিয়ে যাওয়া জীবনে ফিরে এসেছে। আকাশে পোজা তুলোর মেঘ, বাতাসে আগমনীর গানের সুর।
সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়ে আদি মাকে জিজ্ঞেস করে, “একবার ডাক্তারের কাছে গেলে হত না?” ঋতুপর্ণা মাথা দুলিয়ে সায় দেয়। মায়ের এই অতিরিক্ত চুপ করে থাকা ওর বুক জ্বালিয়ে দেয়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকেই মাকে জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে বলবে একটু। সেই কখন থেকে গুম মেরে বসে আছ।”
রাগত দৃষ্টি নিয়ে ছেলের দিকে তাকায় ঋতুপর্ণা, “কিছু হয়নি। স্নান সেরে রেস্ট নে আমি দেখি আলুভাতে বানিয়ে দি। তারপরে না হয় ডাক্তারের কাছে যাওয়া যাবে।”
মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের কোমরে হাত রেখে প্রশ্ন করে, “কি হয়েছে না বললে আমি সরব না।”
ভুরু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে, “কি হয়েছে মানে? সুভাষকে ফোন করাটা কি খুব দরকার ছিল।” ওর চিকিতসার খরচ সুভাষ দিয়েছে জানতে পারার পর থেকেই মন বিষিয়ে ছিল। ছেলের হটাত করে কত্রিত্ত্ব ফলানো দেখে আরো বেশি রেগে যায়। চেঁচিয়ে ওঠে আদির ওপরে, “আমাদের একাউন্টে কি টাকা ছিল না নাকি আমরা বানের জলে ভেসে গিয়েছিলাম।”
মাকে এইভাবে হটাত করে রেগে যেতে দেখে আদি থম মেরে যায়। মাথা চুলকে আমতা আমতা করে বলে, “না মানে, আমি নিতে চাইনি। বাবা দিয়ে দিল।” মুখ কাঁচুমাচু করে মায়ের হাত ধরে বিনয় করে বলে, “মা গো প্লিস রেগে যেও না। আমি সেই সময়ে কি করব, কোথায় যাবো কিছুই বুঝতে পারিনি।” মায়ের রাগ কমাতে হবে, ডাক্তার বলে দিয়েছিল যে মায়ের যাতে মানসিক চাপের সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে। মাকে জড়িয়ে ধরে আদো আদো গলায়, “এই ভাবে রেগে গেলে আমি যাই কোথায় বল ত। আর দেখো এইভাবে রেগে যাওয়া কিন্তু তোমার শরীরের পক্ষে একদম ভালো নয়।”
হটাত করে রেগে যাওয়াতে মাথাটা ঘুরে যায় ঋতুপর্ণার। হটাত করে টলতে শুরু করে দেয়। ভাগ্যিস আদি ওকে জড়িয়ে ধরেছিল না হলে টলে পরে যেত। ছেলের আদুরে গলা শুনে শেষ পর্যন্ত ঋতুপর্ণার রাগ কমে আসে, “আচ্ছা ঠিক আছে। তাড়াতাড়ি স্নান সেরে ফেল। আমি প্রেসার কুকারে ততক্ষণে আলুভাতে ভাত বসিয়ে দেই।”
আদি তাড়াতাড়ি নিজের ঘরে ঢুকে গেল। গত কাল থেকে চোখের পাতা এক করেনি। গায়ে ঠাণ্ডা জল পড়তেই সারা শরীর জুড়িয়ে এলো। স্নান সারতে সারতে বারেবারে মায়ের নগ্ন রূপ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ঠাণ্ডা জলের ধারা কিছুতেই আদির রক্তের উত্তাপ কমাতে পারেনা। মায়ের উলঙ্গ রূপের আগুনে ঝলসে যায় আদির বুক। সারা শরীরের রক্ত জমে ওঠে ওর লিঙ্গে। ঠাণ্ডা জল উপেখা করে মুহূর্তের মধ্যে টান টান হয়ে দাঁড়িয়ে যায় ওর বিশাল লিঙ্গ। দপদপ করে ওঠে সারা শরীর। দাঁতে দাঁত পিষে অবৈধ কামনাকে দমিয়ে নিজেকে দংশন করে। কামনার দেবী নয় ওর মা, ওর মা সুন্দরী ঋতুপর্ণা ভালোবাসার এক নারী। বেশি খন এইভাবে শাওয়ারের নিচে দাঁড়ালে উগ্র কামনার আগুন জ্বলে উঠবে তাই কোনরকমে তাড়াতাড়ি স্নান সেরে বেড়িয়ে আসে। হস্পিটালে ফোন করে ডাক্তারের সাথে এপয়েনমেন্ট সেরে ফেলে। বিকেলের দিকে মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে, অর্থাৎ এই বেলা আর তিস্তার সাথে দেখা করা যাবে না। একটু ছোঁয়া পেলে বড় ভালো হত, গত কাল রাত থেকেই লিঙ্গটা লম্বা বাঁশের মতন দাঁড়িয়ে। হাত দিয়ে কাজ সারার পরেও কিছুতেই দমানো যাচ্ছে না এই দামাল শাল গাছটাকে। আদির চাই এক কোমল নারী দেহ আর শিক্ত তপ্ত নারী যোনি যার মধ্যে নিজের বিশাল পুরুষাঙ্গ ঢুকিয়ে উথাল পাথাল সঙ্গম করে বুকের জ্বালা আর দেহের রস মেটাবে।
“এই বাবা, মাথায় বাড়ি লাগবে ত। এইদিকে আয়।” ঋতুপর্ণা ছেলেকে ডাকে।
গতকাল থেকে চোখের পাতা এক করতে পারেনি। ঠাণ্ডা বাতাসে শরীর একদম ছেড়ে দিয়েছে। মায়ের ডাকে ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে মাকে তারপরে বাধ্য ছেলের মতন মায়ের পাশে সরে আসে। ছেলের গালে মাথায় হাত বুলিয়ে ঋতুপর্ণা বলে, “আয় কোলে মাথা রেখে শুয়ে পর।”
আদি ঘুম ঘুম চোখে হেসে জিজ্ঞেস করে, “তোমার ঘুম পাচ্ছে না, মা?”
ঋতুপর্ণা ওর উস্কোখুস্কো চুলে বিলি কেটে আদর করে বলে, “না এখন আর ঘুম পাচ্ছে না। তুই ঘুমা, এয়ারপোর্ট এলে তোকে তুলে দেব।”
আদি আর কথা না বাড়িয়ে, বাচ্চা ছেলের মতন মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। ইসস, এই ঠাণ্ডা বাতাসে ছেলের না ঠাণ্ডা লেগে যায়। এই ভেবে শাড়ির আঁচল ছেলের শরীরের ওপরে দিয়ে ঢেকে দিল। ঋতুপর্ণার এক এক করে মনে পরে আগের কথা। রোজ সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগে ছেলে এইভাবে ওর কোলে মাথা রেখে কিছুক্ষণ তন্দ্রা নেবে, একটু জড়িয়ে আদর করবে তারপরে বিছানা ছাড়বে। এই পনেরো দিনে সেই পরশ পায়নি ঋতুপর্ণা। পনেরো দিন নয়, যেন পনেরো বছর কেটে গেছে এর মাঝে।
ছেলের মাথা কোলে চেপে ধরে চুপচাপ বসে থাকে। আদির ছোট বেলার কথা মনে পরে যায়, বুকের পাঁজর কেটে একমাত্র ছেলেকে হোস্টেলে পাঠিয়েছিল। তারপরে ওর জীবনে ধস নেমে আসে। ডিভোর্স দিতে দ্বিধা করেনি সুভাষ সেই সাথে ওদের থাকার জন্য বিশাল বাড়িটা দিয়েছিল। বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নিতে চায়নি, শর্ত ছিল কোনোদিন ছেলেকে সুভাষের কাছে আসত দেবে না। সুভাষ বেঁকে বসেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছিল এক মায়ের অপার মমতার কাছে। আজ আর কোন পুরুষের প্রতি বিশ্বাস নেই, কোলকাতা ফিরে গিয়ে নিজের কলেজ আর বাড়িতে নাচের ক্লাস নিয়েই পরে থাকবে আর থাকবে ছেলে। কাছের মানুষ বলতে কমল দা আর বৌদি, তা ছাড়া বাকিরা যারাই ওর দিকে তাকায় সবার চোখে যেন এক চাহিদা। একা এক নারীর দ্বারা ছেলে মানুষ করা বড় কষ্টকর। ফিরে গিয়ে সব থেকে আগে প্রদীপের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে কিন্তু ওর সামনে যেতেই ঘৃণা বোধ করে। দেড় লাখ টাকা এখুনি কোথা থেকে যোগাড় করবে। ওইদিকে আদির পড়াশুনা, কলেজ। যদিও পরের দিকে সুভাষ ছেলের পড়াশুনার খরচ দিত। প্রথমে নিতে চায়নি, কিন্তু যখন আদি হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরে বারবার সুভাষের কথা জিজ্ঞেস করত তখন সঠিক উত্তর দিতে পারত না। তারপরে একদিন বাবার কাছে যাবে বলে বাড়ি থেকে পালাবার উদ্যোগ নেয়। সেদিন খুব কেঁদেছিল ঋতুপর্ণা, ছেলে ছাড়া ওর আর কেউ নেই। বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের কাছে হার মেনে সুভাষকে ফোন করেছিল। ওদের মাঝের বরফ যদিও বিন্দুমাত্র গলেনি তবে তারপর থেকে সুভাষ আদির পড়াশুনার খরচ জুগিয়ে গেছে।
পুব আকাশে রঙ লেগে গেছে। ঘড়ি দেখল ঋতুপর্ণা, সাড়ে ছ’টা বাজে। পথ আর বেশি নেই, গাড়ি পাহার ছেড়ে নেমে এসেছে। ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে উত্তর পায় যে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই এয়ারপোর্ট পৌঁছে যাবে।
আদির চুলে বিলি কেটে জাগিয়ে তোলে, “উঠে পর, এয়ারপোর্ট এসে গেছে।”
প্রতি দিনের সকালের মতন মায়ের কোমর জড়িয়ে ঘুম ঘুম আদুরে গলায় আদি বলে, “আর পাঁচ মিনিট প্লিস।”
হেসে ফেলে ঋতুপর্ণা, “ওকে বাবা শুধু পাঁচ মিনিট।” চোখের কোনায় এক চিলতে জল জমে আসে আদির কথা শুনে।
তন্দ্রা অবস্থাতেই কোলের মধ্যে নাক মুখ ঘষে দেয় আদি। শক্ত করে মায়ের কোমর জড়িয়ে নরম পেটের ওপরে আদর করে দেয়। আলতো এক চাঁটি মেরে ঋতুপর্ণা আদিকে তুলে দিয়ে বলে, “এই কি করছিস রে দুষ্টু...”
আদি ঘুমের ঘোরে ভুলেই গিয়েছিল যে অরা গাড়িতে। ঘুম ভাঙতে বুঝতে পেরে মায়ের কোল থেকে ধরমর করে মাথা উঠিয়ে নেয়। আড়ামোড়া খেয়ে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলে, “ইসস একটু ঘুমাতে দিলে না।”
স্নেহ ভরে ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে, “এই ত একটু পরেই এয়ারপোর্ট, তারপরেই বাড়ি। একেবারে বাড়িতে গিয়ে লম্বা হয়ে ঘুমিয়ে পরিস আমি আর তোকে জাগাব না।”
কিছুক্ষণের মধ্যেই এয়ারপোর্ট এসে গেল। চেক ইন আগে থেকেই করে রেখেছিল আদি তাই বেশি দেরি না করে সিকিউরিটি চেক হয়ে গেল। আদিকে জোর করে অয়াশ রুমে পাঠিয়ে দিল মুখ ধুয়ে আসার জন্য। ইসস ছেলেটা এখন ঘুমে ঢুলছে, বড় কষ্ট হল সেই দেখে।
প্লেনে উঠে ঋতুপর্ণা ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, “এই কয়দিনে কে কে এসেছিল রে?”
আদি সবার কথা জানালো, কলেজের শিক্ষিকারা, সোসাইটির বেশ কয়েকজন। তিস্তা মাঝে মাঝেই আসত দেখা করতে। সেই শুনে ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে আদিকে জিজ্ঞেস করে, “বড্ড বেশি তিস্তা তিস্তা করা হচ্ছে, কি ব্যাপার।”
লজ্জা পেয়ে যায় আদি, “না না, এই শুধু একটু বন্ধুত্ত তা ছাড়া আর কিছু নয়।”
তিস্তাকে ভালো ভাবেই চেনে ঋতুপর্ণা তাই অবিশ্বাস ভরা চাহনি নিয়ে ছেলের দিকে তাকিয়ে হেসে জিজ্ঞেস করে, “তা বন্ধুত্তটা কত গভীর একটু শুনি না।”
লজ্জায় কান গরম হয়ে যায় আদির। লজ্জায় কান গরম হয়ে যায় আদির, মায়ের দিকে না তাকিয়ে উত্তর দেয়, “না বলব না। তুমি ও ত মাঝে মাঝেই তোমার বন্ধু প্রদীপ বাবুর কাছে যাও।”
ঋতুপর্ণা যে সন্দেহ করেনি সেটা নয়। তিস্তার পারটিতে যে ভাবে আদি আর তিস্তা এক ঘন আলিঙ্গনে বেঁধে ছিল তাতেই সন্দেহ হয়েছিল কিন্তু ভেবেছিল যেহেতু তিস্তার একটা বয় ফ্রেন্ড আছে সেহেতু হয়ত তিস্তা ওর ছেলের দিকে হাত বাড়াবে না। কিন্তু আদির লজ্জা দেখে সন্দেহ দূর হয়ে যায়। বুকের ভেতরটা কিঞ্চিত হিংসে কিঞ্চিত ভয়ে রিরি করে ওঠে।
আদির গালে হাত রেখে নিকের দিকে টেনে ধরে বলে, “ওকে বাবা। তবে দেখিস বেশি দূর যেন এগোস না। ওর একটা বয় ফ্রেন্ড আছে, পরে যেন কেঁদে কেটে ...”
আদি লজ্জায় লাল হয়ে যায়, “আরে বাবা, যাও ত। তুমি কথাটা কোথা থেকে কোথায় নিয়ে চলে গেলে।” একটু থেমে বলে, “আচ্ছা জানো, তোমার এক্সিডেন্টের কথা শুনে বাবা দৌড়ে এসেছিল।”
বিশ্বাস হল না এটা, “মানে” ঋতুপর্ণা ছেলেকে প্রশ্ন করে।
আদি উত্তরে বলে, “হ্যাঁ মা, তোমার এক্সিডেন্টের কথা শুনেই বাবা এসেছিল। হস্পিটালের সব খরচ সব কিছু বাবাই দিয়েছে।”
ঋতুপর্ণা একটু রেগে যায়, “কেন একাউন্টে কি টাকা ছিল না।”
আদি মাকে খান্ত করে বলে, “আরে সেই কথা নয় মা। আসলে সেই সময়ে মাথা একদম কাজ করছিল না। কি করব কার কাছ থেকে সাহায্য চাইব কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না তাই বাবাকে ফোন করেছিলাম। তারপরে ” একটু থেমে গেল আদি। মনে পরে গেল বাবার কথা, মনে পরে গেল আদির আর ঋতুপর্ণার আসল পরিচয়। চোখ জোড়া জ্বালা করে উঠল। মাকে যদি সব কথা বলে দেয় তাহলে মা হারিয়ে যাবে, আবার হয়ত বড় ধাক্কা খাবে। এতদিন যখন বাবা এই সত্য লুকিয়ে রেখেছে তখন বাকি জীবন এই সত্য লুক্কায়িত থাক।
ঋতুপর্ণা প্রশ্ন করে, “তারপরে কি?”
আদি মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “তারপরে আর কি। তুমি কাউকে চিনতে পারলে না। বাবাকে দেখা মাত্রই চেঁচিয়ে উথলে, দেখতে পর্যন্ত চাইলে না, দুরদুর করে তাড়িয়ে দিলে। বড্ড দুঃখ পেয়ে ফিরে গেল।”
ঋতুপর্ণা চোয়াল শক্ত করে চিবিয়ে উত্তর দেয়, “কি দরকার ছিল তোর বাবাকে ডাকার। আমি কি মরে গিয়েছিলাম?”
আদি আমতা আমতা করে বলে, “না মানে একা একা বড় অসহায় ফিল করছিলাম।”
ঋতুপর্ণা বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে। নিচে ছোট ছোট গ্রাম গঞ্জ, চারপাশে মেঘের ভেলা। শরত এসে গেছে, সামনে পুজো। সত্যি সুভাষের সাথে পালিয়ে বিয়ে করে আত্মীয় সজ্জনের কাছ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। এই শহর কোলকাতা ছাড়িয়ে অনেকদুরে ওদের বাড়ি। সুভাষের সাথে পালিয়ে আসার পরে কোনোদিন আর সেই বাড়ি মুখো হয়নি এমনকি ডিভোর্সের পরেও বাড়ি মুখো হতে পারেনি। একা একাই জীবনের সাথে এই দুনিয়া এই সমাজের সাথে লড়াই করে গেছে। তবে কি সুভাষ এখন ওকে ভালোবাসে, না কি শুধু মাত্র ছেলের অসহায় অবস্থা দেখে এসছিল।
একটানা গুনগুন আওয়াজে কান ধরে গেছে। কোলকাতা পর্যন্ত একদম চুপ ছিল ঋতুপর্ণা। প্লেন ধিরে ধিরে নামতে শুরু করে দিতেই তন্দ্রা ভাব কেটে গেল ঋতুপর্ণার। ছেলের দিকে তাকিয়ে দেখল একবার। হাঁ করে সিটে মাথা রেখে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে সেটার খেয়াল ছিল না। আদির কাঁধে আলতো ধাক্কা মেরে তুলে দেয়। চোখ ডলে মায়ের দিকে তাকিয়ে একটু হাসে আদি। ঋতুপর্ণা প্রতি উত্তরে অল্প হেসে জানিয়ে দেয় যে কোলকাতা এসে গেছে।
এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ি পর্যন্ত বেশ চুপচাপ ছিল দুইজনে। বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় বারোটা বেজে গেল। সোসাইটি তে গাড়ি ঢুকতেই ঋতুপর্ণার মনে হয় নিজের পুরানো হারিয়ে যাওয়া জীবনে ফিরে এসেছে। আকাশে পোজা তুলোর মেঘ, বাতাসে আগমনীর গানের সুর।
সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়ে আদি মাকে জিজ্ঞেস করে, “একবার ডাক্তারের কাছে গেলে হত না?” ঋতুপর্ণা মাথা দুলিয়ে সায় দেয়। মায়ের এই অতিরিক্ত চুপ করে থাকা ওর বুক জ্বালিয়ে দেয়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকেই মাকে জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে বলবে একটু। সেই কখন থেকে গুম মেরে বসে আছ।”
রাগত দৃষ্টি নিয়ে ছেলের দিকে তাকায় ঋতুপর্ণা, “কিছু হয়নি। স্নান সেরে রেস্ট নে আমি দেখি আলুভাতে বানিয়ে দি। তারপরে না হয় ডাক্তারের কাছে যাওয়া যাবে।”
মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের কোমরে হাত রেখে প্রশ্ন করে, “কি হয়েছে না বললে আমি সরব না।”
ভুরু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে, “কি হয়েছে মানে? সুভাষকে ফোন করাটা কি খুব দরকার ছিল।” ওর চিকিতসার খরচ সুভাষ দিয়েছে জানতে পারার পর থেকেই মন বিষিয়ে ছিল। ছেলের হটাত করে কত্রিত্ত্ব ফলানো দেখে আরো বেশি রেগে যায়। চেঁচিয়ে ওঠে আদির ওপরে, “আমাদের একাউন্টে কি টাকা ছিল না নাকি আমরা বানের জলে ভেসে গিয়েছিলাম।”
মাকে এইভাবে হটাত করে রেগে যেতে দেখে আদি থম মেরে যায়। মাথা চুলকে আমতা আমতা করে বলে, “না মানে, আমি নিতে চাইনি। বাবা দিয়ে দিল।” মুখ কাঁচুমাচু করে মায়ের হাত ধরে বিনয় করে বলে, “মা গো প্লিস রেগে যেও না। আমি সেই সময়ে কি করব, কোথায় যাবো কিছুই বুঝতে পারিনি।” মায়ের রাগ কমাতে হবে, ডাক্তার বলে দিয়েছিল যে মায়ের যাতে মানসিক চাপের সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে। মাকে জড়িয়ে ধরে আদো আদো গলায়, “এই ভাবে রেগে গেলে আমি যাই কোথায় বল ত। আর দেখো এইভাবে রেগে যাওয়া কিন্তু তোমার শরীরের পক্ষে একদম ভালো নয়।”
হটাত করে রেগে যাওয়াতে মাথাটা ঘুরে যায় ঋতুপর্ণার। হটাত করে টলতে শুরু করে দেয়। ভাগ্যিস আদি ওকে জড়িয়ে ধরেছিল না হলে টলে পরে যেত। ছেলের আদুরে গলা শুনে শেষ পর্যন্ত ঋতুপর্ণার রাগ কমে আসে, “আচ্ছা ঠিক আছে। তাড়াতাড়ি স্নান সেরে ফেল। আমি প্রেসার কুকারে ততক্ষণে আলুভাতে ভাত বসিয়ে দেই।”
আদি তাড়াতাড়ি নিজের ঘরে ঢুকে গেল। গত কাল থেকে চোখের পাতা এক করেনি। গায়ে ঠাণ্ডা জল পড়তেই সারা শরীর জুড়িয়ে এলো। স্নান সারতে সারতে বারেবারে মায়ের নগ্ন রূপ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ঠাণ্ডা জলের ধারা কিছুতেই আদির রক্তের উত্তাপ কমাতে পারেনা। মায়ের উলঙ্গ রূপের আগুনে ঝলসে যায় আদির বুক। সারা শরীরের রক্ত জমে ওঠে ওর লিঙ্গে। ঠাণ্ডা জল উপেখা করে মুহূর্তের মধ্যে টান টান হয়ে দাঁড়িয়ে যায় ওর বিশাল লিঙ্গ। দপদপ করে ওঠে সারা শরীর। দাঁতে দাঁত পিষে অবৈধ কামনাকে দমিয়ে নিজেকে দংশন করে। কামনার দেবী নয় ওর মা, ওর মা সুন্দরী ঋতুপর্ণা ভালোবাসার এক নারী। বেশি খন এইভাবে শাওয়ারের নিচে দাঁড়ালে উগ্র কামনার আগুন জ্বলে উঠবে তাই কোনরকমে তাড়াতাড়ি স্নান সেরে বেড়িয়ে আসে। হস্পিটালে ফোন করে ডাক্তারের সাথে এপয়েনমেন্ট সেরে ফেলে। বিকেলের দিকে মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে, অর্থাৎ এই বেলা আর তিস্তার সাথে দেখা করা যাবে না। একটু ছোঁয়া পেলে বড় ভালো হত, গত কাল রাত থেকেই লিঙ্গটা লম্বা বাঁশের মতন দাঁড়িয়ে। হাত দিয়ে কাজ সারার পরেও কিছুতেই দমানো যাচ্ছে না এই দামাল শাল গাছটাকে। আদির চাই এক কোমল নারী দেহ আর শিক্ত তপ্ত নারী যোনি যার মধ্যে নিজের বিশাল পুরুষাঙ্গ ঢুকিয়ে উথাল পাথাল সঙ্গম করে বুকের জ্বালা আর দেহের রস মেটাবে।