28-09-2020, 06:52 PM
অঙ্কন, “তাহলে শুনি তোমার বয় ফ্রেন্ডের কথা।”
অঙ্কন বিছানায় উঠে বসে, পায়েলের সাথে কথা বলতে বলতে ওর প্যান্টের ভেতরে লিঙ্গ টানটান হয়ে যায়। পায়েলের সাথে গল্প করতে করতে, মানস চক্ষে পায়েলের নধরকান্তি দেহ পল্লবের কথা চিন্তা করে অঙ্কন। ওর দিদির এ্যালবাম থেকে বেশ কয়েক দিন আগে লুকিয়ে আনা পায়েলের একটা ফটো দেখে রোজ রাতে বিনিদ্র রজনী কাটাত অঙ্কন। রোজ রাতে ভাবত নিজের প্রেয়সী হিসাবে। পায়েল মাঝে মাঝে ওদের বাড়িতে থাকলে ছোটো হাফ প্যান্ট আর হাত কাটা টপ পরে থাকত। পায়েলের নধর কোমল পাছার দুলুনি দেখে থাকতে পারত না অঙ্কন। রাতে কোনদিন ব্রা পড়ত না পায়েল, হাঁটা চলার সময়ে স্তনের দুলুনির সাথে নধর গোলগাল পাছার দুলুনি দেখে উন্মাদ হয়ে যেত। নিজের রুমের নিভৃতে একাকী পায়েলের নধর লাস্যময়ী অঙ্গ মানস চক্ষে উলঙ্গ করে সঙ্গমে রত হত অঙ্কন।
সেই শুরু ওদের কথা কাহিনীর, তবে শুধু ফোনে কথা বলা ছাড়া এগোতে পারেনি অঙ্কন। পায়েল জানত যে অঙ্কনের সাথে ওর প্রেমের সম্পর্ক কোনদিন সম্ভব নয়, তাই পায়েল ইচ্ছে থাকলেও কোনদিন নিজের মনের কথা বলেনি। এর মাঝে একদিন রাতে গল্প করতে করতে পায়েল ওকে অগ্নিহোত্রীর কথা জানায়। সেদিন বেশ দুঃখ পেয়েছিল অঙ্কন, মনের মধ্যে জমা আগুন ফেটে বের হবার যোগাড় হয়েছিল। ঈর্ষা বোধ করেছিল ওই না দেখা অগ্নিহোত্রীর উপরে। সেদিনের পরে বেশ কয়েকদিন অঙ্কন আর পায়েলের সাথে অভিমান করে কথা বলেনি। তবে পায়েলের সাথে বেশ কয়েকদিন পরে আবার কথা শুরু হয়। অঙ্কন ক্ষমা চেয়ে নেয় আর পায়েল হেসে সেই সব কথা ভুলে যায়। পায়েল তখন অগ্নিহোত্রীর প্রেমে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। অঙ্কন শুধু ওদের প্রেমের গল্প শুনে যেত চুপ করে, বুক জ্বলে গেলেও কিছু বলতে পারত না।
দেবায়ন, অঙ্কনের কথা শুনে হেসে ফেলে বলে, পায়েলের মতন মেয়েকে দেখলে মরা সাপ পর্যন্ত ফনা তুলে দাঁড়িয়ে যাবে। অঙ্কন সেই কথা শুনে হেসে দেয়। দেবায়ন জিজ্ঞেস করে কি করে তাহলে অগ্নিহোত্রীর কবল থেকে পায়েলকে ছাড়িয়ে নিজের করে নিল।
অঙ্কন পরবর্তী ঘটনা বলতে শুরু করে। অগ্নিহোত্রী প্রচন্ড ইতর প্রকৃতির ছেলে, আসলে অগ্নিহোত্রী আর বিনয়ের মনমালিন্য কোনদিন ঘটেনি। অগ্নিহোত্রী পায়েলকে ফাঁসানোর জন্য নাটক করেছিল। বিনয় আর অগ্নিহোত্রীর মতলব আসলে অন্যকিছু ছিল, যেটা পায়েল ঠিক মতন জানে না। অগ্নিহোত্রী ওকে জানায় যে ডালহৌসিতে কোন এক্সপোর্ট কোম্পানিতে চাকরি করে। বেশ কিছুদিন অগ্নিহোত্রী পায়েলের সাথে বি.বা.দি বাগে দেখা করে। সঙ্গিতাদি পায়েলকে সাবধান করার পরে, পায়েল একবার অগ্নিহোত্রীর অফিস দেখতে চায়। আসলে বিনয়ের এক বন্ধু ডালহৌসিতে চাকরি করত, সেই অফিস দেখিয়ে অগ্নিহোত্রী বলে যে ওখানে চাকরি করে। পায়েল খুব খুশি হয়, একদিন পায়েল অগ্নিহোত্রীকে ওর বাড়ির কথা, বাবার কথা সব জানিয়ে বলে যে ওকে বিয়ে করতে হলে পালিয়ে বিয়ে করতে হবে। অন্ধ হয়ে গিয়েছিল পায়েল, দেখতে পায়নি অগ্নিহোত্রীর আসল চেহারা।
অগ্নিহোত্রী ওকে জানায় যে পায়েলকে নিয়ে পালিয়ে যেতে রাজি আছে। পায়েল বেশ খুশি, বাড়ি থেকে পালাবে। যেদিন পায়েল পালাবে, তার আগের দিন রাতে অঙ্কনের সাথে অনেক গল্প করে। অঙ্কনকে জানিয়েছিল যে পায়েল পালাবে। সেদিন অঙ্কন নিজেকে সামলে রাখতে পারেনি। ফোন ছেড়ে খুব কেঁদেছিল পায়েলের জন্য। সকালেই কলেজের নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরে। দিদির সাথেই বেড়িয়েছিল পায়েল কিন্তু মাঝ পথে নেমে যায়। গাড়ি কলেজে চলে যাবার পরে পায়েল অগ্নিহোত্রীকে ফোনে জানিয়ে দেয় যে পালানোর জন্য তৈরি। অগ্নিহোত্রী জিজ্ঞেস করে যে পায়েল বাড়ি থেকে কিছু নিয়ে এসেছে না খালি হাতে বেড়িয়ে পড়েছে। পায়েল অত শত ভাবেনি। অগ্নিহোত্রীর সাথে পালাবার খুশিতে শুধু মাত্র কয়েকটা জামাকাপড় আর কলেজের ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছিল। অগ্নিহোত্রী পায়েলকে শিয়ালদা স্টেসানের ওভারব্রিজের নিচে দাঁড়াতে বলে। পায়েল ওর কথা মতন ওভারব্রিজের নিচে অগ্নিহোত্রীর জন্য অপেক্ষা করে। বেশ কিছুক্ষণ পরে অগ্নিহোত্রী ওর সাথে দেখা করে, পায়েল ওকে দেখে বেশ খুশি। বুক ভরে শ্বাস নেয়, মুক্তির স্বাদ, স্বাধীনতার বাতাস, কে জানত ওর কপালে কি অদৃষ্ট অপেক্ষা করছে। পায়েল আর অগ্নিহোত্রী রাজাবাজারের দিকে হাঁটতে শুরু করে। অগ্নিহোত্রীকে জিজ্ঞেস করাতে উত্তর দেয় যে ওরা বম্বে পালিয়ে যাবে আর সেখানে অগ্নিহোত্রীর কোন এক বন্ধু আছে সে ওকে একটা কাজ দেবে। রাজাবাজারে আসার পরে অগ্নিহোত্রী পায়েলকে একটা গাড়িতে উঠতে বলে। গাড়ি দেখে পায়েলের সন্দেহ হয়, সেই সাথে অদুরে দাঁড়িয়ে থাকা বিনয় আর তার সাথে বেশ কয়েকটা ছেলেকে দেখতে পায় পায়েল। রাগে দুঃখে অপমানে পায়েলের চোখ ফেটে জল চলে আসে, অগ্নিহোত্রীর মুখোশ ছিঁড়ে কুটি কুটি হয়ে যায় পায়েলের সামনে। রাজাবাজার মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে পায়েলকে জোর করে গাড়িতে তুলতে পারে না অগ্নিহোত্রী। পায়েল, অগ্নিহোত্রীর গালে সপাটে এক চড় কষিয়ে বলে প্রতারক, নীচ। দিদির কথা, সঙ্গিতাদির কথা ওর অনেক আগেই শোনা উচিত ছিল।
অঙ্কন সেদিন কলেজে যায়নি। সকালে কলেজ যাবার নাম করে মাঠের একপাশে লুকিয়ে ছিল। পায়েল আর দিদি বাড়ি থেকে বের হবার পরেই একটা ট্যাক্সি নিয়ে ওদের গাড়ির পেছনে অনুসরণ করে। মাঝ পথে পায়েল নেমে যেতেই, ট্যাক্সি দুরে দাঁড় করায় অঙ্কন। ট্যাক্সি ড্রাইভার হতভম্ব হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল তার কারন। অঙ্কনের মাথায় শুধু শেষ বারের মতন পায়েলকে দেখার আকাঙ্ক্ষা প্রবল ভাবে জেগে উঠেছিল। ড্রাইভারকে বলে যে যত টাকা লাগে দেবে কিন্তু ওকে অপেক্ষা করতে হবে একটু। ড্রাইভার দাঁড়িয়ে থাকে, কিছু পরে পায়েল আরেকটা ট্যাক্সি চেপে শিয়ালদা চলে আসে। অঙ্কন ওর পেছন পেছন শিয়ালদা আসে। ট্যাক্সি থেকে নেমে পায়েল হারিয়ে যায় ভিড়ে, অঙ্কন পাগল হয়ে যায় পায়েলকে দেখতে না পেয়ে। একবার ভাবে যে পায়েলকে একটা ফোন করে বলে দেয় ওর মনের কথা, কিন্তু যদি পায়েল ওর প্রেম নিবেদন নাকচ করে দেয় তাহলে, সেই ভয়ে ফোন করে না। কিছু পরে দেখে একটা ছেলের সাথে পায়েল রাজাবাজারের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। দূর থেকে পায়েলকে অনুসরণ করে সব দেখে।
অগ্নিহোত্রীকে চড় মারার পরে কাঁদতে কাঁদতে পায়েল রাস্তা পার করে, ঠিক তখন অঙ্কন ট্যাক্সি নিয়ে ওখানে পৌঁছে যায়। অঙ্কনকে দেখে পায়েল ভেঙ্গে পরে। ট্যাক্সিতে উঠে অঙ্কনকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে পায়েল।
অঙ্কন পায়েলকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আই লাভ ইউ পায়েলদি, আমি তোমাকে বড় ভালোবাসি পায়েলদি।”
পায়েল জল ভরা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বলে, “জানতাম অনেকদিন ধরে, যে তুই আমাকে ভালবাসিস। দুইজনে অন্ধ ছিলাম। তুই যার ভয়ে আমাকে বলিসনি সেই এক ভয়ে আমি ও তোকে বলিনি কোনদিন।”
অঙ্কন পায়েলকে জড়িয়ে ধরে বলে, “না গো পায়েলদি, আমি অন্ধ নয়, আমি অনেকদিন ধরে তোমাকে দেখে এসেছি। আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি শুধু বলতে পারিনি দিদির ভয়ে আর তোমার ভয়ে। যদি নিবেদন করতাম আর তুমি যদি নাকচ করে দাও তাহলে সেই ধাক্কা হয়ত সহ্য করতে পারতাম না। সেই কারনে আর মুখ ফুটে বলতে পারলাম না তোমাকে।”
বিংশ পর্ব (#04)
অঙ্কন পায়েলকে জড়িয়ে ধরে বলে, “না গো পায়েলদি, আমি অন্ধ নয়, আমি অনেকদিন ধরে তোমাকে দেখে এসেছি। আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি শুধু বলতে পারিনি দিদির ভয়ে আর তোমার ভয়ে। যদি নিবেদন করতাম আর তুমি যদি নাকচ করে দাও তাহলে সেই ধাক্কা হয়ত সহ্য করতে পারতাম না। সেই কারনে আর মুখ ফুটে বলতে পারলাম না তোমাকে।”
পায়েল নিজেকে ছাড়ানোর কোন চেষ্টা করেনি। অঙ্কনের আনকোরা আলিঙ্গনে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল। বড় লোকের ছেলে অঙ্কন, উপহার পাওয়ার লোভে অনেক মেয়েরাই ওর কাছে এসেছে। কলেজে থাকতে বেশ কয়েক জন মেয়ের সাথে ছোটো খাটো শরীর নিয়ে খেলা, টপের উপর দিয়ে স্তনে আদর করা, চুমু খাওয়া এই সব করা হয়ে গেছে অঙ্কনের। কিন্তু যাকে ভালোবাসে, যাকে বুকে পেতে এতদিন ইচ্ছুক ছিল তাকে শেষ পর্যন্ত জড়িয়ে ধরে অঙ্কনের শরীরে বিদ্যুতের ঝটকা লাগে। নরম তুলতুলে শরীর ওর শক্ত আলিঙ্গনের মাঝে গলে যায়। পায়েল ওর জামার কলার ধরে ওর মুখের দিয়ে চেয়ে থাকে আর দুই জনের উষ্ণ শ্বাস পরস্পরের মুখ মন্ডলে ভালোবাসার প্রলেপ ছড়িয়ে দেয়।
পায়েল গভীর ভাবে অঙ্কনের হাসি হাসি চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিল, “শেষ পর্যন্ত যা ভয় করছিলাম সেটাই হল। আমি শেষ পর্যন্ত আমার প্রানপ্রিয় বান্ধবীর ভাইয়ের প্রেমে পড়লাম।”
দুইজনেই হেসে ফেলে।
ট্যাক্সি ড্রাইভার জিজ্ঞেস করে কোথায় যেতে চায়। পায়েল আর অঙ্কন পরস্পরের মুখ চাওয়াচায়ি করে বলে শিবপুর বোটানিকাল গার্ডেন যেতে চায়। ট্যাক্সি ড্রাইভার হেসে জিজ্ঞেস করে যে এতক্ষণ ধরে ট্যাক্সি ধরে রেখেছে, ভাড়া দেবার মতন টাকা ওদের আছে? অঙ্কন হাত খরচের জন্য অনেক টাকা পায়, শেষ হয়ে গেলে ওর ব্যাঙ্ক ওর দিদির পার্স আছেই। টাকার কথা চিন্তা করতে বারন করে দেয় অঙ্কন, ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বলে যে, শিবপুরে গিয়ে ওরা ভাড়া মিটিয়ে ট্যাক্সি ছেড়ে দেবে।
ট্যাক্সি চলতে শুরু করে। পায়েলকে জড়িয়ে ধরে অঙ্কন বলে, “আর কোনদিন পালাবার মতলব করবে না, তাহলে আমি মারা যাবো।”
পায়েল ম্লান হেসে বলে, “উভয় সঙ্কটে পড়েছিরে। যদি তোর দিদি জানতে পারে, তাহলে আমাদের অবস্থা সঙ্গিন করে তুলবে। আর যদি পালাই তাহলে দেবায়ন যা ছেলে, মাটির নীচ থেকে আমাদের খুঁজে বের করে নিয়ে আসবে। কিন্তু আমাকে পালাতে হবেই, মাকে ওই নরক থেকে বের করে আনতে হবে।”
পায়েল জানে, অনুপমা আর দেবায়ন মিলে সূর্য আর মনিদিপার কি অবস্থা করেছিল। দুইজনের অনেক বুদ্ধি আর সেই সাথে দেবায়নের সাথে পেরে ওঠা অসম্ভব। অঙ্কন চিন্তায় পরে যায়। পায়েল ওকে, ছোটো ভাইয়ের মতন জড়িয়ে ধরে বলে, “তুই এত চিন্তা করিস না। কাউকে জানাব না এখুনি আমাদের ব্যাপার। আমার পালানো এখন ক্যান্সেল। বি.এস.সি.র পরে আমি পড়াশুনা চালিয়ে যাবো যতদিন না তোর পড়াশুনা শেষ হয়। আমার পড়াশুনা চলাকালীন আশা করি আমার বাবা আমাকে বিয়ে দেবে না আর যদি জোর করে দেয় তাহলে তখন না হয় তোর দিদির আর দেবায়নের শরণাপন্ন হওয়া যাবে। তুই কলেজ শেষ কর, ততদিনে তোর দিদি আর দেবায়নকে কিছু বুঝিয়ে রাজি করান যাবে। এবার থেকে আমি আর বিশেষ তোর বাড়িতে যাবো না, গেলেও আমরা খুব সাধারন ব্যাবহার করব যাতে কারুর সন্দেহ না হয়। যা কিছু করার বাড়ির বাইরে।”
অঙ্কন হেসে বলে, “জানো পায়েলদি, বড় কাউকে প্রেম করে মজা আছে। নিজেকে বিশেষ চিন্তা ভাবনা করতে হয়, বেশির ভাগ চিন্তা ভাবনা সেই করে। বেশ মিষ্টি আদর খাওয়া যায়।”
পায়েল ওর গালে ছোট্ট থাপ্পড় মেরে বলে, “ফাজিল ছেলে, শুধু আম খেলে কাজে দেবে? গাছে একটু জল দেওয়া চাই তো।”
সেদিন আর কলেজ যাওয়া হলনা অঙ্কনের। পায়েলের মুখের হাসি দেখে সব ভুলে গেল অঙ্কন। দুইজনে ট্যাক্সি চেপে বোটানিক্যাল গার্ডেন পৌঁছায় ঠিক দুপুরের দিকে। সারাটা রাস্তা দুইজনে হাত ধরে পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে বসে থাকে, যেন হারিয়ে যাওয়া মানিক খুঁজে পেয়েছে দুইজনে। বয়সের ব্যাবধান, পারিবারিক অসমানতা কাটিয়ে দুইজনে হারিয়ে যায়। বুকের ভেতরে দুরু দুরু, ওদের সব থেকে কাছের মানুষ, দিদি যদি জানতে পারে তাহলে তার মনের অবস্থা কি হবে।
গল্প করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়। অঙ্কন মিচকি হেসে চুপ করে বলে, ব্যাস এই শুরু ওদের প্রেমের। দেবায়ন মানতে রাজি নয়, আরও জানতে চায় কি হয়েছে। কবে প্রথম চুমু খেয়েছে পায়েলকে, শুধু চুম্বনে ক্ষান্ত ছিল না আরো কিছু হয়েছে পায়েল আর অঙ্কনের মাঝে। সেই কথা শুনে অঙ্কনের কান লাল হয়ে যায় লজ্জায়, মাথা নিচু করে পারলে বিছানার কোথাও লুকিয়ে যাবার চেষ্টা করে। দেবায়ন চেপে ধরে অঙ্কনকে, কারন দেবায়ন ভালো ভাবে জানে যে পায়েল কামুকি প্রকৃতির মেয়ে কিন্তু কয়েক মাস ধরে পায়েলের চরিত্রের যে পরিবর্তন ঘটেছে তাতে অত তাড়াতাড়ি নিশ্চয় পায়েল ধরা দেয়নি অঙ্কনের কাছে। আর অঙ্কনের প্রথম অভিজ্ঞতা জানতে বড় ইচ্ছুক দেবায়ন। অঙ্কন লজ্জায় পরে জানিয়ে দেয় যে আর কিছু হয়নি, শুধু মাত্র গল্প করত। বার কয়েক কোচিং পালিয়ে সিনেমা দেখতে গেছিল কিন্তু কোচিঙের স্যার বাড়িতে ফোন করে মাকে সব জানিয়ে দেওয়াতে সব পরিকল্পনা মাটি হয়ে যায়। তারপরে একদিন বাইকের জন্য বায়না ধরে। দিদির সাহায্যে শেষ পর্যন্ত বাইক কিনে দেয় ওর বাবা। বাইকে করে প্রতি শনি রবিবার কোলকাতার রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছে। একবার ব্যান্ডেল চার্চ পর্যন্ত গিয়েছিল ওরা দুইজনে।
দেবায়ন কিছুতেই মানতে রাজি নয় যে অঙ্কন পায়েল কে চুমু পর্যন্ত খায়নি। লাজুক অঙ্কন কি বলবে ভেবে পায় না। দিদির বন্ধু হিসাবে বরাবর দেবায়নকে খুব সমিহ করে চলে আর বলতে গেলে একটু ভয় পায় ওর চেহারা আর গলার আওয়াজের জন্য। দেবায়ন অভয় দিয়ে বলে যে সব কথা না জানালে ও কিছু করতে পারবে না। অগত্যা অঙ্কন ওর প্রেমের অভিজ্ঞতার খাতা খুলতে শুরু করে।
সেদিন বোটানিকাল গার্ডেনে যখন ওরা দুই জনে নামল ট্যাক্সি থেকে, তখন অঙ্কনের খুব লজ্জা করছিল। কাঁধে কলেজ ব্যাগ আর পরনে কলেজ ড্রেস, পাশে পায়েল। পাঁচ বছরের বয়সের ব্যাবধান ওর চেহারার প্রতি বাঁকে আঁকা, খুব লজ্জা করছিল পায়েলের পাশে হাঁটার। মনে হচ্ছিল যেন এক দিদি তার ভাইকে নিয়ে গাছ পালা দেখাতে এসেছে। পায়েল দুই হাতে ওর হাত ধরেছিল। বাজুর কাছে পায়েলের নরম স্তনের ছোঁয়ায় শরীর গরম হয়ে গেছিল অঙ্কনের। পায়েল ওকে যতবার স্বাভাবিক হতে বলে তত যেন আড়ষ্ট হয়ে ওঠে অঙ্কন। পায়েল রেগে বলে যে এইরকম ভাবে হাঁটলে কিন্তু ও চলে যাবে। প্রথম দিনেই পায়েল কে বাঁচিয়ে নিয়ে প্রেমে পরে যদি হাত ছাড়া হয়ে যায় কি করবে অঙ্কন। শেষ পর্যন্ত ভয়ে ভয়ে হাতে হাত রাখে, আঙ্গুলের সাথে আঙুল পেঁচিয়ে যায়। অঙ্কনের দেহের প্রত্যেক রোমকুপ জেগে ওঠে। এতদিন কত মেয়ের সান্নিধ্য পেয়েছে তবে ঠিক এমনটি কোনদিন মনে হয়নি অঙ্কনের।
হাঁটতে হাঁটতে নদীর ধারে চলে আসে দুইজনে। বড় বড় ঘাসের আড়ালে নদীর দিকে একটা ছোটো খালি জায়গা পেয়ে বসে পরে। পায়েলের পরনে একটা লম্বা স্কার্ট আর ঢিলে টপ ছিল। বাড়ি থেকে বেড়িয়ে দিদির কাছে এসে আর জামা কাপড় বদলানো হয়নি তাই আর ছোটো ড্রেস পড়তে পারেনি পায়েল। অঙ্কন অবশ্য বলেছিল যে পায়েল লম্বা স্কার্ট আর পুরো জিন্সে বেশি সুন্দরী দেখায়। সেই কথা শুনে পায়েল ছোটো পোশাক পড়া ছেড়ে দিয়েছিল তারপরে। দিদির আলমারিতে এখন পায়েলের ছোটো জামা কাপড় গুলো রাখা আছে, বাড়িতে নিয়ে গেলে ওর বাবা ওকে খুন করে দেবে।
পায়ের কাছে গঙ্গার জল, সামনে চওড়া নদী কুলুকুলু বয়ে চলেছে। দুইজনে পাশাপাশি বসে, পায়েলের হাতের উপরে হাত রেখে চুপ করে থাকে অনেকক্ষণ, কারুর মুখে কোন কথা নেই। পায়েল ওর হাত খানা মুঠি করে ধরে গালের কাছে নিয়ে যায়। নরম গালের হাতের স্পর্শে অঙ্কনের শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে। গালের ওপরে হাত ঘষে মিষ্টি করে অঙ্কনের দিকে তাকিয়ে থাকে পায়েল। লাল নরম ঠোঁট জোড়া অল্প ফাঁক করা, বড় বড় কাজল লাগানো চোখ যেন ওকে ডাক দেয়। অঙ্কন, বয়সের ব্যাবধান, দিদির সাবধান বানী ভুলে যায় ওই চোখের মুক আহ্বান শুনে।
পায়েল মিষ্টি হেসে ওর ঠোঁটের উপরে আঙুল রেখে বলে, “কি রে কি দেখছিস ই রকম ভাবে?”
অঙ্কনের কথা জড়িয়ে যায়, “তোমাকে দেখছি। তুমি ভারী সুন্দরী।”
পায়েল ওর হাত গালের উপরে চেপে বলে, “তাহলে পালাতে দিয়েছিলি কেন?”
অঙ্কন পায়েলের কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে, “পালাতে আর পারলে কই, সেই তো ধরে নিয়ে এলাম আমার কাছে।”
পায়েল হেসে বলে, “দুষ্টু ছেলে। অগ্নিহোত্রী যদি আমাকে নিয়ে চলে যেত তাহলে কি করতিস? আঙুল চুষতিস তুই?”
অঙ্কন, “কেন? দেবায়ন দা’র শরণাপন্ন হতাম। দিদি আর দাদার কাছে সব কিছুর ওষুধ আছে।”
পায়েল হেসে বলে, “জানি রে তোর দিদি আর দেবায়নের কথা।”
অঙ্কনের কথার অর্থ ভিন্ন ছিল। ঠিক জানে না তবে যেদিন দেবায়ন ওর মাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিল সেদিনের পর থেকে মায়ের স্বভাবে বাবার স্বাভাবে অনেক পরিবর্তন দেখেছে। মা আর বাড়ির বাইরে বিশেষ যায় না, গেলেও নিজের গাড়ি নিয়ে অফিসে যায় আর বিকেলের আগেই বাড়ি ফিরে আসে। ওর দিদি আর মায়ের মধ্যে ছোটো বেলা থেকে যে ব্যাবধান দেখে এসেছে সেটা সম্প্রতি অনুপস্থিত। পায়েল জানে, দেবায়ন সূর্য আর মনিদিপার সাথে কি করেছিল।
সেদিন আর চুমু খাওয়া হল না। পায়েল ওর বাড়ির কথা, বাবা মায়ের কথা, অগ্নিহোত্রীর কথা সব খুলে বলে। সব কিছু বলার পরে পায়েল বেশ খানিকক্ষণ চুপ করেছিল অঙ্কনের অভিব্যাক্তি দেখার জন্য। অঙ্কন পায়েলের কাঁধে হাত রেখে জড়িয়ে ধরে বলেছিল যে সময় হলে ওকে এই সব পাঁকের থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসবে। পায়েল তারপরে বলে ওর বিগত উশ্রিঙ্খল জীবনের কথা। পায়েল বলতে চেয়েছিল যে ওর অনেক বয়ফ্রেন্ড ছিল আর তাদের সাথে পায়েল কি কি করেছে। অঙ্কন বলেছিল যার সাথে যা করেছে সেইগুলো সব অতীত। অঙ্কন কিছু শুনতে নারাজ, অঙ্কন বলে আর ওর অতীত জেনে কাজ নেই। পায়েলের বর্তমান, পায়েলের ভবিষ্যৎ সুন্দর করে তুলবে বলে প্রতিজ্ঞা করে অঙ্কন। পায়েল ছলছল চোখে জড়িয়ে ধরেছিল অঙ্কনকে, ভেবে পায়নি ঠিক কি বলবে। গল্পে অনেক সময় কেটে যায়। অতীতের সব কিছু ভুলে হাসিতে মেতে ওঠে পায়েল। পায়েলকে সেদিন বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে কোচিং চলে যায় অঙ্কন।
তারপর থেকে মাঝে মাঝে পায়েলের সাথে ঘোরা। কলেজ কলেজের দিন গুলোতে বিশেষ ঘুরতে মানা করে দিয়েছিল পায়েল, তাই আর কলেজ পালানো হয় না। তবে শনি রবিবার ওদের একদম নিজেদের। দিদি আর দেবায়ন শনি রবিবার সকাল থেকে কম্পিউটার ক্লাসে ব্যাস্ত থাকে। পায়েল ওর বাড়িতে বলে যে অনুপমার বাড়িতে যাচ্ছে, তাই ওর বাবা মা নিষেধ করেনি। অঙ্কনের কথা ওর মা জানত যে গরিমার সাথে বেড়াতে যাবে ছেলে, তাই সেখানেও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। সবার চোখে ধুলো দিয়ে সবার নাকের নীচ দিয়ে চুটিয়ে প্রেম করে গেছে।
সেদিন ছিল শনিবার, আকাশ সকাল থেকে মুখ গোমড়া করে বসে। দিদি কম্পিউটার ক্লাসে বেড়িয়ে যাবার পরেই পায়েলের ফোন আসে, বলে যে এই বৃষ্টিতে আর ঘুরতে গিয়ে কাজ নেই, বাড়িতে বসে আড্ডা মারবে। পায়েলের বাবা মা, কল্যাণী ওর মাসির বাড়িতে গেছে। ওর মাসতুতো দিদি বিয়ের জন্য ছেলে দেখা হচ্ছে, সেদিন ওর মাসতুতো দিদিকে দেখতে আসার কথা। পায়েল বৃষ্টির আছিলায় জ্বরের ভান করে সকাল থেকে বিছানায় পড়েছিল। বাবা মা বেড়িয়ে যাবার পরেই বাড়ি ফাঁকা দেখে পায়েলের মন নেচে ওঠে পেখম তোলা ময়ুরের মতন। ফাঁকা বাড়ি শুনে অঙ্কনের মন উতলা হয়ে ওঠে, মিলনেচ্ছুক হয়ে ওঠে প্রান। কয়েক মাস পেরিয়ে গেছে সেদিনের পর থেকে, কিন্তু ঠিক ভাবে চুমু খেয়ে উঠতে পারেনি দুইজনে। অঙ্কন তাড়াতাড়ি স্নান সেরে জামা কাপড় পরে মাকে বলে বেড়িয়ে যায়। ওইদিকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু, মা বারন করার আগেই বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরে।
পায়েলেকে কিছু উপহার দেওয়া হয়নি। গরিয়াহাটে গিয়ে একটা স্টোন অয়াসের লিভাইস কাপ্রি কেনে, সেই সাথে একটা দামী পারফিউম। মেয়েদের মন জয় করতে ওস্তাদ অঙ্কন। অনেক মেয়েদের উপহারের ছলে ভুলিয়ে স্তন, পেট নিয়ে খেলা করেছে, তবে পায়েল ভিন্ন। পায়েলের সাথে খেলা নয়, পায়েলের হৃদয় অর্জন করতে চায় অঙ্কন। কেনাকাটা সেরে বাইকে চড়ে পায়েলের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তুমুল বৃষ্টি মাথায় করে পায়েলের বাড়ি যখন পৌঁছায়, ততক্ষণে অঙ্কন কাক ভিজে হয়ে যায়।
দু’তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওর জন্য অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিল পায়েল। অঙ্কনকে বাড়ির গেট খুলে বাইক ঢুকাতে দেখে দৌড়ে নিচে নেমে আসে। কাক ভিজে অঙ্কনকে দেখে খিলখিল করে হেসে ফেলে পায়েল। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা পায়েলের দিকে চোখ যায় অঙ্কনের। পরনে শুধু একটা ছোটো হাতার কামিজ, নিচে চুড়িদার পড়েনি তাই কামিজ খানা দুই পুরুষ্টু থাইয়ের মাঝখান অবধি এসে আর নেই। নধর দুই থাইয়ের নিচে ফর্সা পায়ের গুলি। বুকের দিকে দৃষ্টি যেতেই ছ্যাঁক করে ওঠে অঙ্কনের বুক। দুই নরম তুলতুলে স্তন জোড়া কামিজের ভেতরে যেন ছটফট করে ওর দিকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কামিজের দুইপাশে কাটা, কোমরের একটু নীচ পর্যন্ত কাটা থাকার ফলে, থাইয়ের পাশ পুরো দেখা যাচ্ছে আর সেই সাথে গুরু নিতম্বের ফোলা নরম ভাব পরিষ্কার অনুধাবন করা যায়। অঙ্কন হাঁ করে দাঁড়িয়ে পায়েলের হাসি মুখ দেখে, মাথার চুল একটা পনি টেল করে মাথার পেছনে বাধা। একটা ছোটো চুলের গুচ্ছ, ডান গালের উপরে নেচে বেড়ায়। পায়েল ওর হাত ধরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে দুতলায় নিয়ে যায়। পায়েলের হাতে জিন্সের প্যাকেট আর পারফিউমের বাক্স ধরিয়ে দেয়। পায়েল ওইগুলো সোফার উপরে রেখে অঙ্কনের গলা জড়িয়ে ধরে বলে যে অইসব আনার কি দরকার ছিল। গলা জড়িয়ে ধরতেই, অঙ্কনের বুকে চেপে যায় পায়েলের নরম স্তন জরা। অঙ্কন আড়ষ্ট হয়ে যায় প্রেমিকার বাহুডোরে বদ্ধ হয়ে।
পায়েল ওর মাথার চুলে আঙুল ডুবিয়ে ঝাঁকিয়ে বলে, “তুই একদম ভিজে গেছিস দেখছি। পাগল ছেলে, সোজা বাড়ি থেকে এখানে চলে আসা উচিত আর তুই কি আমার জন্য এই সব কিনতে গেলি? আমি চেয়েছিলাম নাকি তোর কাছে?”
অঙ্কন মাথা ঝাঁকিয়ে চুলের জল পায়েলের সারা মুখের উপরে ছিটিয়ে বলে, “বাঃরে, কিছু একটা আনতে হয় তাই আনলাম। খালি হাতে আসলে কি আর ভালো লাগত, বল?”
পায়েল ওকে সোফার ওপরে বসিয়ে একটা তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছাতে মুছাতে বলে, “তুই এসে গেছিস আবার কি চাই আমার।”
অঙ্কন বিছানায় উঠে বসে, পায়েলের সাথে কথা বলতে বলতে ওর প্যান্টের ভেতরে লিঙ্গ টানটান হয়ে যায়। পায়েলের সাথে গল্প করতে করতে, মানস চক্ষে পায়েলের নধরকান্তি দেহ পল্লবের কথা চিন্তা করে অঙ্কন। ওর দিদির এ্যালবাম থেকে বেশ কয়েক দিন আগে লুকিয়ে আনা পায়েলের একটা ফটো দেখে রোজ রাতে বিনিদ্র রজনী কাটাত অঙ্কন। রোজ রাতে ভাবত নিজের প্রেয়সী হিসাবে। পায়েল মাঝে মাঝে ওদের বাড়িতে থাকলে ছোটো হাফ প্যান্ট আর হাত কাটা টপ পরে থাকত। পায়েলের নধর কোমল পাছার দুলুনি দেখে থাকতে পারত না অঙ্কন। রাতে কোনদিন ব্রা পড়ত না পায়েল, হাঁটা চলার সময়ে স্তনের দুলুনির সাথে নধর গোলগাল পাছার দুলুনি দেখে উন্মাদ হয়ে যেত। নিজের রুমের নিভৃতে একাকী পায়েলের নধর লাস্যময়ী অঙ্গ মানস চক্ষে উলঙ্গ করে সঙ্গমে রত হত অঙ্কন।
সেই শুরু ওদের কথা কাহিনীর, তবে শুধু ফোনে কথা বলা ছাড়া এগোতে পারেনি অঙ্কন। পায়েল জানত যে অঙ্কনের সাথে ওর প্রেমের সম্পর্ক কোনদিন সম্ভব নয়, তাই পায়েল ইচ্ছে থাকলেও কোনদিন নিজের মনের কথা বলেনি। এর মাঝে একদিন রাতে গল্প করতে করতে পায়েল ওকে অগ্নিহোত্রীর কথা জানায়। সেদিন বেশ দুঃখ পেয়েছিল অঙ্কন, মনের মধ্যে জমা আগুন ফেটে বের হবার যোগাড় হয়েছিল। ঈর্ষা বোধ করেছিল ওই না দেখা অগ্নিহোত্রীর উপরে। সেদিনের পরে বেশ কয়েকদিন অঙ্কন আর পায়েলের সাথে অভিমান করে কথা বলেনি। তবে পায়েলের সাথে বেশ কয়েকদিন পরে আবার কথা শুরু হয়। অঙ্কন ক্ষমা চেয়ে নেয় আর পায়েল হেসে সেই সব কথা ভুলে যায়। পায়েল তখন অগ্নিহোত্রীর প্রেমে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। অঙ্কন শুধু ওদের প্রেমের গল্প শুনে যেত চুপ করে, বুক জ্বলে গেলেও কিছু বলতে পারত না।
দেবায়ন, অঙ্কনের কথা শুনে হেসে ফেলে বলে, পায়েলের মতন মেয়েকে দেখলে মরা সাপ পর্যন্ত ফনা তুলে দাঁড়িয়ে যাবে। অঙ্কন সেই কথা শুনে হেসে দেয়। দেবায়ন জিজ্ঞেস করে কি করে তাহলে অগ্নিহোত্রীর কবল থেকে পায়েলকে ছাড়িয়ে নিজের করে নিল।
অঙ্কন পরবর্তী ঘটনা বলতে শুরু করে। অগ্নিহোত্রী প্রচন্ড ইতর প্রকৃতির ছেলে, আসলে অগ্নিহোত্রী আর বিনয়ের মনমালিন্য কোনদিন ঘটেনি। অগ্নিহোত্রী পায়েলকে ফাঁসানোর জন্য নাটক করেছিল। বিনয় আর অগ্নিহোত্রীর মতলব আসলে অন্যকিছু ছিল, যেটা পায়েল ঠিক মতন জানে না। অগ্নিহোত্রী ওকে জানায় যে ডালহৌসিতে কোন এক্সপোর্ট কোম্পানিতে চাকরি করে। বেশ কিছুদিন অগ্নিহোত্রী পায়েলের সাথে বি.বা.দি বাগে দেখা করে। সঙ্গিতাদি পায়েলকে সাবধান করার পরে, পায়েল একবার অগ্নিহোত্রীর অফিস দেখতে চায়। আসলে বিনয়ের এক বন্ধু ডালহৌসিতে চাকরি করত, সেই অফিস দেখিয়ে অগ্নিহোত্রী বলে যে ওখানে চাকরি করে। পায়েল খুব খুশি হয়, একদিন পায়েল অগ্নিহোত্রীকে ওর বাড়ির কথা, বাবার কথা সব জানিয়ে বলে যে ওকে বিয়ে করতে হলে পালিয়ে বিয়ে করতে হবে। অন্ধ হয়ে গিয়েছিল পায়েল, দেখতে পায়নি অগ্নিহোত্রীর আসল চেহারা।
অগ্নিহোত্রী ওকে জানায় যে পায়েলকে নিয়ে পালিয়ে যেতে রাজি আছে। পায়েল বেশ খুশি, বাড়ি থেকে পালাবে। যেদিন পায়েল পালাবে, তার আগের দিন রাতে অঙ্কনের সাথে অনেক গল্প করে। অঙ্কনকে জানিয়েছিল যে পায়েল পালাবে। সেদিন অঙ্কন নিজেকে সামলে রাখতে পারেনি। ফোন ছেড়ে খুব কেঁদেছিল পায়েলের জন্য। সকালেই কলেজের নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরে। দিদির সাথেই বেড়িয়েছিল পায়েল কিন্তু মাঝ পথে নেমে যায়। গাড়ি কলেজে চলে যাবার পরে পায়েল অগ্নিহোত্রীকে ফোনে জানিয়ে দেয় যে পালানোর জন্য তৈরি। অগ্নিহোত্রী জিজ্ঞেস করে যে পায়েল বাড়ি থেকে কিছু নিয়ে এসেছে না খালি হাতে বেড়িয়ে পড়েছে। পায়েল অত শত ভাবেনি। অগ্নিহোত্রীর সাথে পালাবার খুশিতে শুধু মাত্র কয়েকটা জামাকাপড় আর কলেজের ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছিল। অগ্নিহোত্রী পায়েলকে শিয়ালদা স্টেসানের ওভারব্রিজের নিচে দাঁড়াতে বলে। পায়েল ওর কথা মতন ওভারব্রিজের নিচে অগ্নিহোত্রীর জন্য অপেক্ষা করে। বেশ কিছুক্ষণ পরে অগ্নিহোত্রী ওর সাথে দেখা করে, পায়েল ওকে দেখে বেশ খুশি। বুক ভরে শ্বাস নেয়, মুক্তির স্বাদ, স্বাধীনতার বাতাস, কে জানত ওর কপালে কি অদৃষ্ট অপেক্ষা করছে। পায়েল আর অগ্নিহোত্রী রাজাবাজারের দিকে হাঁটতে শুরু করে। অগ্নিহোত্রীকে জিজ্ঞেস করাতে উত্তর দেয় যে ওরা বম্বে পালিয়ে যাবে আর সেখানে অগ্নিহোত্রীর কোন এক বন্ধু আছে সে ওকে একটা কাজ দেবে। রাজাবাজারে আসার পরে অগ্নিহোত্রী পায়েলকে একটা গাড়িতে উঠতে বলে। গাড়ি দেখে পায়েলের সন্দেহ হয়, সেই সাথে অদুরে দাঁড়িয়ে থাকা বিনয় আর তার সাথে বেশ কয়েকটা ছেলেকে দেখতে পায় পায়েল। রাগে দুঃখে অপমানে পায়েলের চোখ ফেটে জল চলে আসে, অগ্নিহোত্রীর মুখোশ ছিঁড়ে কুটি কুটি হয়ে যায় পায়েলের সামনে। রাজাবাজার মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে পায়েলকে জোর করে গাড়িতে তুলতে পারে না অগ্নিহোত্রী। পায়েল, অগ্নিহোত্রীর গালে সপাটে এক চড় কষিয়ে বলে প্রতারক, নীচ। দিদির কথা, সঙ্গিতাদির কথা ওর অনেক আগেই শোনা উচিত ছিল।
অঙ্কন সেদিন কলেজে যায়নি। সকালে কলেজ যাবার নাম করে মাঠের একপাশে লুকিয়ে ছিল। পায়েল আর দিদি বাড়ি থেকে বের হবার পরেই একটা ট্যাক্সি নিয়ে ওদের গাড়ির পেছনে অনুসরণ করে। মাঝ পথে পায়েল নেমে যেতেই, ট্যাক্সি দুরে দাঁড় করায় অঙ্কন। ট্যাক্সি ড্রাইভার হতভম্ব হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল তার কারন। অঙ্কনের মাথায় শুধু শেষ বারের মতন পায়েলকে দেখার আকাঙ্ক্ষা প্রবল ভাবে জেগে উঠেছিল। ড্রাইভারকে বলে যে যত টাকা লাগে দেবে কিন্তু ওকে অপেক্ষা করতে হবে একটু। ড্রাইভার দাঁড়িয়ে থাকে, কিছু পরে পায়েল আরেকটা ট্যাক্সি চেপে শিয়ালদা চলে আসে। অঙ্কন ওর পেছন পেছন শিয়ালদা আসে। ট্যাক্সি থেকে নেমে পায়েল হারিয়ে যায় ভিড়ে, অঙ্কন পাগল হয়ে যায় পায়েলকে দেখতে না পেয়ে। একবার ভাবে যে পায়েলকে একটা ফোন করে বলে দেয় ওর মনের কথা, কিন্তু যদি পায়েল ওর প্রেম নিবেদন নাকচ করে দেয় তাহলে, সেই ভয়ে ফোন করে না। কিছু পরে দেখে একটা ছেলের সাথে পায়েল রাজাবাজারের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। দূর থেকে পায়েলকে অনুসরণ করে সব দেখে।
অগ্নিহোত্রীকে চড় মারার পরে কাঁদতে কাঁদতে পায়েল রাস্তা পার করে, ঠিক তখন অঙ্কন ট্যাক্সি নিয়ে ওখানে পৌঁছে যায়। অঙ্কনকে দেখে পায়েল ভেঙ্গে পরে। ট্যাক্সিতে উঠে অঙ্কনকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে পায়েল।
অঙ্কন পায়েলকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আই লাভ ইউ পায়েলদি, আমি তোমাকে বড় ভালোবাসি পায়েলদি।”
পায়েল জল ভরা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বলে, “জানতাম অনেকদিন ধরে, যে তুই আমাকে ভালবাসিস। দুইজনে অন্ধ ছিলাম। তুই যার ভয়ে আমাকে বলিসনি সেই এক ভয়ে আমি ও তোকে বলিনি কোনদিন।”
অঙ্কন পায়েলকে জড়িয়ে ধরে বলে, “না গো পায়েলদি, আমি অন্ধ নয়, আমি অনেকদিন ধরে তোমাকে দেখে এসেছি। আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি শুধু বলতে পারিনি দিদির ভয়ে আর তোমার ভয়ে। যদি নিবেদন করতাম আর তুমি যদি নাকচ করে দাও তাহলে সেই ধাক্কা হয়ত সহ্য করতে পারতাম না। সেই কারনে আর মুখ ফুটে বলতে পারলাম না তোমাকে।”
বিংশ পর্ব (#04)
অঙ্কন পায়েলকে জড়িয়ে ধরে বলে, “না গো পায়েলদি, আমি অন্ধ নয়, আমি অনেকদিন ধরে তোমাকে দেখে এসেছি। আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি শুধু বলতে পারিনি দিদির ভয়ে আর তোমার ভয়ে। যদি নিবেদন করতাম আর তুমি যদি নাকচ করে দাও তাহলে সেই ধাক্কা হয়ত সহ্য করতে পারতাম না। সেই কারনে আর মুখ ফুটে বলতে পারলাম না তোমাকে।”
পায়েল নিজেকে ছাড়ানোর কোন চেষ্টা করেনি। অঙ্কনের আনকোরা আলিঙ্গনে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল। বড় লোকের ছেলে অঙ্কন, উপহার পাওয়ার লোভে অনেক মেয়েরাই ওর কাছে এসেছে। কলেজে থাকতে বেশ কয়েক জন মেয়ের সাথে ছোটো খাটো শরীর নিয়ে খেলা, টপের উপর দিয়ে স্তনে আদর করা, চুমু খাওয়া এই সব করা হয়ে গেছে অঙ্কনের। কিন্তু যাকে ভালোবাসে, যাকে বুকে পেতে এতদিন ইচ্ছুক ছিল তাকে শেষ পর্যন্ত জড়িয়ে ধরে অঙ্কনের শরীরে বিদ্যুতের ঝটকা লাগে। নরম তুলতুলে শরীর ওর শক্ত আলিঙ্গনের মাঝে গলে যায়। পায়েল ওর জামার কলার ধরে ওর মুখের দিয়ে চেয়ে থাকে আর দুই জনের উষ্ণ শ্বাস পরস্পরের মুখ মন্ডলে ভালোবাসার প্রলেপ ছড়িয়ে দেয়।
পায়েল গভীর ভাবে অঙ্কনের হাসি হাসি চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিল, “শেষ পর্যন্ত যা ভয় করছিলাম সেটাই হল। আমি শেষ পর্যন্ত আমার প্রানপ্রিয় বান্ধবীর ভাইয়ের প্রেমে পড়লাম।”
দুইজনেই হেসে ফেলে।
ট্যাক্সি ড্রাইভার জিজ্ঞেস করে কোথায় যেতে চায়। পায়েল আর অঙ্কন পরস্পরের মুখ চাওয়াচায়ি করে বলে শিবপুর বোটানিকাল গার্ডেন যেতে চায়। ট্যাক্সি ড্রাইভার হেসে জিজ্ঞেস করে যে এতক্ষণ ধরে ট্যাক্সি ধরে রেখেছে, ভাড়া দেবার মতন টাকা ওদের আছে? অঙ্কন হাত খরচের জন্য অনেক টাকা পায়, শেষ হয়ে গেলে ওর ব্যাঙ্ক ওর দিদির পার্স আছেই। টাকার কথা চিন্তা করতে বারন করে দেয় অঙ্কন, ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বলে যে, শিবপুরে গিয়ে ওরা ভাড়া মিটিয়ে ট্যাক্সি ছেড়ে দেবে।
ট্যাক্সি চলতে শুরু করে। পায়েলকে জড়িয়ে ধরে অঙ্কন বলে, “আর কোনদিন পালাবার মতলব করবে না, তাহলে আমি মারা যাবো।”
পায়েল ম্লান হেসে বলে, “উভয় সঙ্কটে পড়েছিরে। যদি তোর দিদি জানতে পারে, তাহলে আমাদের অবস্থা সঙ্গিন করে তুলবে। আর যদি পালাই তাহলে দেবায়ন যা ছেলে, মাটির নীচ থেকে আমাদের খুঁজে বের করে নিয়ে আসবে। কিন্তু আমাকে পালাতে হবেই, মাকে ওই নরক থেকে বের করে আনতে হবে।”
পায়েল জানে, অনুপমা আর দেবায়ন মিলে সূর্য আর মনিদিপার কি অবস্থা করেছিল। দুইজনের অনেক বুদ্ধি আর সেই সাথে দেবায়নের সাথে পেরে ওঠা অসম্ভব। অঙ্কন চিন্তায় পরে যায়। পায়েল ওকে, ছোটো ভাইয়ের মতন জড়িয়ে ধরে বলে, “তুই এত চিন্তা করিস না। কাউকে জানাব না এখুনি আমাদের ব্যাপার। আমার পালানো এখন ক্যান্সেল। বি.এস.সি.র পরে আমি পড়াশুনা চালিয়ে যাবো যতদিন না তোর পড়াশুনা শেষ হয়। আমার পড়াশুনা চলাকালীন আশা করি আমার বাবা আমাকে বিয়ে দেবে না আর যদি জোর করে দেয় তাহলে তখন না হয় তোর দিদির আর দেবায়নের শরণাপন্ন হওয়া যাবে। তুই কলেজ শেষ কর, ততদিনে তোর দিদি আর দেবায়নকে কিছু বুঝিয়ে রাজি করান যাবে। এবার থেকে আমি আর বিশেষ তোর বাড়িতে যাবো না, গেলেও আমরা খুব সাধারন ব্যাবহার করব যাতে কারুর সন্দেহ না হয়। যা কিছু করার বাড়ির বাইরে।”
অঙ্কন হেসে বলে, “জানো পায়েলদি, বড় কাউকে প্রেম করে মজা আছে। নিজেকে বিশেষ চিন্তা ভাবনা করতে হয়, বেশির ভাগ চিন্তা ভাবনা সেই করে। বেশ মিষ্টি আদর খাওয়া যায়।”
পায়েল ওর গালে ছোট্ট থাপ্পড় মেরে বলে, “ফাজিল ছেলে, শুধু আম খেলে কাজে দেবে? গাছে একটু জল দেওয়া চাই তো।”
সেদিন আর কলেজ যাওয়া হলনা অঙ্কনের। পায়েলের মুখের হাসি দেখে সব ভুলে গেল অঙ্কন। দুইজনে ট্যাক্সি চেপে বোটানিক্যাল গার্ডেন পৌঁছায় ঠিক দুপুরের দিকে। সারাটা রাস্তা দুইজনে হাত ধরে পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে বসে থাকে, যেন হারিয়ে যাওয়া মানিক খুঁজে পেয়েছে দুইজনে। বয়সের ব্যাবধান, পারিবারিক অসমানতা কাটিয়ে দুইজনে হারিয়ে যায়। বুকের ভেতরে দুরু দুরু, ওদের সব থেকে কাছের মানুষ, দিদি যদি জানতে পারে তাহলে তার মনের অবস্থা কি হবে।
গল্প করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়। অঙ্কন মিচকি হেসে চুপ করে বলে, ব্যাস এই শুরু ওদের প্রেমের। দেবায়ন মানতে রাজি নয়, আরও জানতে চায় কি হয়েছে। কবে প্রথম চুমু খেয়েছে পায়েলকে, শুধু চুম্বনে ক্ষান্ত ছিল না আরো কিছু হয়েছে পায়েল আর অঙ্কনের মাঝে। সেই কথা শুনে অঙ্কনের কান লাল হয়ে যায় লজ্জায়, মাথা নিচু করে পারলে বিছানার কোথাও লুকিয়ে যাবার চেষ্টা করে। দেবায়ন চেপে ধরে অঙ্কনকে, কারন দেবায়ন ভালো ভাবে জানে যে পায়েল কামুকি প্রকৃতির মেয়ে কিন্তু কয়েক মাস ধরে পায়েলের চরিত্রের যে পরিবর্তন ঘটেছে তাতে অত তাড়াতাড়ি নিশ্চয় পায়েল ধরা দেয়নি অঙ্কনের কাছে। আর অঙ্কনের প্রথম অভিজ্ঞতা জানতে বড় ইচ্ছুক দেবায়ন। অঙ্কন লজ্জায় পরে জানিয়ে দেয় যে আর কিছু হয়নি, শুধু মাত্র গল্প করত। বার কয়েক কোচিং পালিয়ে সিনেমা দেখতে গেছিল কিন্তু কোচিঙের স্যার বাড়িতে ফোন করে মাকে সব জানিয়ে দেওয়াতে সব পরিকল্পনা মাটি হয়ে যায়। তারপরে একদিন বাইকের জন্য বায়না ধরে। দিদির সাহায্যে শেষ পর্যন্ত বাইক কিনে দেয় ওর বাবা। বাইকে করে প্রতি শনি রবিবার কোলকাতার রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছে। একবার ব্যান্ডেল চার্চ পর্যন্ত গিয়েছিল ওরা দুইজনে।
দেবায়ন কিছুতেই মানতে রাজি নয় যে অঙ্কন পায়েল কে চুমু পর্যন্ত খায়নি। লাজুক অঙ্কন কি বলবে ভেবে পায় না। দিদির বন্ধু হিসাবে বরাবর দেবায়নকে খুব সমিহ করে চলে আর বলতে গেলে একটু ভয় পায় ওর চেহারা আর গলার আওয়াজের জন্য। দেবায়ন অভয় দিয়ে বলে যে সব কথা না জানালে ও কিছু করতে পারবে না। অগত্যা অঙ্কন ওর প্রেমের অভিজ্ঞতার খাতা খুলতে শুরু করে।
সেদিন বোটানিকাল গার্ডেনে যখন ওরা দুই জনে নামল ট্যাক্সি থেকে, তখন অঙ্কনের খুব লজ্জা করছিল। কাঁধে কলেজ ব্যাগ আর পরনে কলেজ ড্রেস, পাশে পায়েল। পাঁচ বছরের বয়সের ব্যাবধান ওর চেহারার প্রতি বাঁকে আঁকা, খুব লজ্জা করছিল পায়েলের পাশে হাঁটার। মনে হচ্ছিল যেন এক দিদি তার ভাইকে নিয়ে গাছ পালা দেখাতে এসেছে। পায়েল দুই হাতে ওর হাত ধরেছিল। বাজুর কাছে পায়েলের নরম স্তনের ছোঁয়ায় শরীর গরম হয়ে গেছিল অঙ্কনের। পায়েল ওকে যতবার স্বাভাবিক হতে বলে তত যেন আড়ষ্ট হয়ে ওঠে অঙ্কন। পায়েল রেগে বলে যে এইরকম ভাবে হাঁটলে কিন্তু ও চলে যাবে। প্রথম দিনেই পায়েল কে বাঁচিয়ে নিয়ে প্রেমে পরে যদি হাত ছাড়া হয়ে যায় কি করবে অঙ্কন। শেষ পর্যন্ত ভয়ে ভয়ে হাতে হাত রাখে, আঙ্গুলের সাথে আঙুল পেঁচিয়ে যায়। অঙ্কনের দেহের প্রত্যেক রোমকুপ জেগে ওঠে। এতদিন কত মেয়ের সান্নিধ্য পেয়েছে তবে ঠিক এমনটি কোনদিন মনে হয়নি অঙ্কনের।
হাঁটতে হাঁটতে নদীর ধারে চলে আসে দুইজনে। বড় বড় ঘাসের আড়ালে নদীর দিকে একটা ছোটো খালি জায়গা পেয়ে বসে পরে। পায়েলের পরনে একটা লম্বা স্কার্ট আর ঢিলে টপ ছিল। বাড়ি থেকে বেড়িয়ে দিদির কাছে এসে আর জামা কাপড় বদলানো হয়নি তাই আর ছোটো ড্রেস পড়তে পারেনি পায়েল। অঙ্কন অবশ্য বলেছিল যে পায়েল লম্বা স্কার্ট আর পুরো জিন্সে বেশি সুন্দরী দেখায়। সেই কথা শুনে পায়েল ছোটো পোশাক পড়া ছেড়ে দিয়েছিল তারপরে। দিদির আলমারিতে এখন পায়েলের ছোটো জামা কাপড় গুলো রাখা আছে, বাড়িতে নিয়ে গেলে ওর বাবা ওকে খুন করে দেবে।
পায়ের কাছে গঙ্গার জল, সামনে চওড়া নদী কুলুকুলু বয়ে চলেছে। দুইজনে পাশাপাশি বসে, পায়েলের হাতের উপরে হাত রেখে চুপ করে থাকে অনেকক্ষণ, কারুর মুখে কোন কথা নেই। পায়েল ওর হাত খানা মুঠি করে ধরে গালের কাছে নিয়ে যায়। নরম গালের হাতের স্পর্শে অঙ্কনের শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে। গালের ওপরে হাত ঘষে মিষ্টি করে অঙ্কনের দিকে তাকিয়ে থাকে পায়েল। লাল নরম ঠোঁট জোড়া অল্প ফাঁক করা, বড় বড় কাজল লাগানো চোখ যেন ওকে ডাক দেয়। অঙ্কন, বয়সের ব্যাবধান, দিদির সাবধান বানী ভুলে যায় ওই চোখের মুক আহ্বান শুনে।
পায়েল মিষ্টি হেসে ওর ঠোঁটের উপরে আঙুল রেখে বলে, “কি রে কি দেখছিস ই রকম ভাবে?”
অঙ্কনের কথা জড়িয়ে যায়, “তোমাকে দেখছি। তুমি ভারী সুন্দরী।”
পায়েল ওর হাত গালের উপরে চেপে বলে, “তাহলে পালাতে দিয়েছিলি কেন?”
অঙ্কন পায়েলের কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে, “পালাতে আর পারলে কই, সেই তো ধরে নিয়ে এলাম আমার কাছে।”
পায়েল হেসে বলে, “দুষ্টু ছেলে। অগ্নিহোত্রী যদি আমাকে নিয়ে চলে যেত তাহলে কি করতিস? আঙুল চুষতিস তুই?”
অঙ্কন, “কেন? দেবায়ন দা’র শরণাপন্ন হতাম। দিদি আর দাদার কাছে সব কিছুর ওষুধ আছে।”
পায়েল হেসে বলে, “জানি রে তোর দিদি আর দেবায়নের কথা।”
অঙ্কনের কথার অর্থ ভিন্ন ছিল। ঠিক জানে না তবে যেদিন দেবায়ন ওর মাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিল সেদিনের পর থেকে মায়ের স্বভাবে বাবার স্বাভাবে অনেক পরিবর্তন দেখেছে। মা আর বাড়ির বাইরে বিশেষ যায় না, গেলেও নিজের গাড়ি নিয়ে অফিসে যায় আর বিকেলের আগেই বাড়ি ফিরে আসে। ওর দিদি আর মায়ের মধ্যে ছোটো বেলা থেকে যে ব্যাবধান দেখে এসেছে সেটা সম্প্রতি অনুপস্থিত। পায়েল জানে, দেবায়ন সূর্য আর মনিদিপার সাথে কি করেছিল।
সেদিন আর চুমু খাওয়া হল না। পায়েল ওর বাড়ির কথা, বাবা মায়ের কথা, অগ্নিহোত্রীর কথা সব খুলে বলে। সব কিছু বলার পরে পায়েল বেশ খানিকক্ষণ চুপ করেছিল অঙ্কনের অভিব্যাক্তি দেখার জন্য। অঙ্কন পায়েলের কাঁধে হাত রেখে জড়িয়ে ধরে বলেছিল যে সময় হলে ওকে এই সব পাঁকের থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসবে। পায়েল তারপরে বলে ওর বিগত উশ্রিঙ্খল জীবনের কথা। পায়েল বলতে চেয়েছিল যে ওর অনেক বয়ফ্রেন্ড ছিল আর তাদের সাথে পায়েল কি কি করেছে। অঙ্কন বলেছিল যার সাথে যা করেছে সেইগুলো সব অতীত। অঙ্কন কিছু শুনতে নারাজ, অঙ্কন বলে আর ওর অতীত জেনে কাজ নেই। পায়েলের বর্তমান, পায়েলের ভবিষ্যৎ সুন্দর করে তুলবে বলে প্রতিজ্ঞা করে অঙ্কন। পায়েল ছলছল চোখে জড়িয়ে ধরেছিল অঙ্কনকে, ভেবে পায়নি ঠিক কি বলবে। গল্পে অনেক সময় কেটে যায়। অতীতের সব কিছু ভুলে হাসিতে মেতে ওঠে পায়েল। পায়েলকে সেদিন বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে কোচিং চলে যায় অঙ্কন।
তারপর থেকে মাঝে মাঝে পায়েলের সাথে ঘোরা। কলেজ কলেজের দিন গুলোতে বিশেষ ঘুরতে মানা করে দিয়েছিল পায়েল, তাই আর কলেজ পালানো হয় না। তবে শনি রবিবার ওদের একদম নিজেদের। দিদি আর দেবায়ন শনি রবিবার সকাল থেকে কম্পিউটার ক্লাসে ব্যাস্ত থাকে। পায়েল ওর বাড়িতে বলে যে অনুপমার বাড়িতে যাচ্ছে, তাই ওর বাবা মা নিষেধ করেনি। অঙ্কনের কথা ওর মা জানত যে গরিমার সাথে বেড়াতে যাবে ছেলে, তাই সেখানেও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। সবার চোখে ধুলো দিয়ে সবার নাকের নীচ দিয়ে চুটিয়ে প্রেম করে গেছে।
সেদিন ছিল শনিবার, আকাশ সকাল থেকে মুখ গোমড়া করে বসে। দিদি কম্পিউটার ক্লাসে বেড়িয়ে যাবার পরেই পায়েলের ফোন আসে, বলে যে এই বৃষ্টিতে আর ঘুরতে গিয়ে কাজ নেই, বাড়িতে বসে আড্ডা মারবে। পায়েলের বাবা মা, কল্যাণী ওর মাসির বাড়িতে গেছে। ওর মাসতুতো দিদি বিয়ের জন্য ছেলে দেখা হচ্ছে, সেদিন ওর মাসতুতো দিদিকে দেখতে আসার কথা। পায়েল বৃষ্টির আছিলায় জ্বরের ভান করে সকাল থেকে বিছানায় পড়েছিল। বাবা মা বেড়িয়ে যাবার পরেই বাড়ি ফাঁকা দেখে পায়েলের মন নেচে ওঠে পেখম তোলা ময়ুরের মতন। ফাঁকা বাড়ি শুনে অঙ্কনের মন উতলা হয়ে ওঠে, মিলনেচ্ছুক হয়ে ওঠে প্রান। কয়েক মাস পেরিয়ে গেছে সেদিনের পর থেকে, কিন্তু ঠিক ভাবে চুমু খেয়ে উঠতে পারেনি দুইজনে। অঙ্কন তাড়াতাড়ি স্নান সেরে জামা কাপড় পরে মাকে বলে বেড়িয়ে যায়। ওইদিকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু, মা বারন করার আগেই বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরে।
পায়েলেকে কিছু উপহার দেওয়া হয়নি। গরিয়াহাটে গিয়ে একটা স্টোন অয়াসের লিভাইস কাপ্রি কেনে, সেই সাথে একটা দামী পারফিউম। মেয়েদের মন জয় করতে ওস্তাদ অঙ্কন। অনেক মেয়েদের উপহারের ছলে ভুলিয়ে স্তন, পেট নিয়ে খেলা করেছে, তবে পায়েল ভিন্ন। পায়েলের সাথে খেলা নয়, পায়েলের হৃদয় অর্জন করতে চায় অঙ্কন। কেনাকাটা সেরে বাইকে চড়ে পায়েলের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তুমুল বৃষ্টি মাথায় করে পায়েলের বাড়ি যখন পৌঁছায়, ততক্ষণে অঙ্কন কাক ভিজে হয়ে যায়।
দু’তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওর জন্য অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিল পায়েল। অঙ্কনকে বাড়ির গেট খুলে বাইক ঢুকাতে দেখে দৌড়ে নিচে নেমে আসে। কাক ভিজে অঙ্কনকে দেখে খিলখিল করে হেসে ফেলে পায়েল। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা পায়েলের দিকে চোখ যায় অঙ্কনের। পরনে শুধু একটা ছোটো হাতার কামিজ, নিচে চুড়িদার পড়েনি তাই কামিজ খানা দুই পুরুষ্টু থাইয়ের মাঝখান অবধি এসে আর নেই। নধর দুই থাইয়ের নিচে ফর্সা পায়ের গুলি। বুকের দিকে দৃষ্টি যেতেই ছ্যাঁক করে ওঠে অঙ্কনের বুক। দুই নরম তুলতুলে স্তন জোড়া কামিজের ভেতরে যেন ছটফট করে ওর দিকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কামিজের দুইপাশে কাটা, কোমরের একটু নীচ পর্যন্ত কাটা থাকার ফলে, থাইয়ের পাশ পুরো দেখা যাচ্ছে আর সেই সাথে গুরু নিতম্বের ফোলা নরম ভাব পরিষ্কার অনুধাবন করা যায়। অঙ্কন হাঁ করে দাঁড়িয়ে পায়েলের হাসি মুখ দেখে, মাথার চুল একটা পনি টেল করে মাথার পেছনে বাধা। একটা ছোটো চুলের গুচ্ছ, ডান গালের উপরে নেচে বেড়ায়। পায়েল ওর হাত ধরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে দুতলায় নিয়ে যায়। পায়েলের হাতে জিন্সের প্যাকেট আর পারফিউমের বাক্স ধরিয়ে দেয়। পায়েল ওইগুলো সোফার উপরে রেখে অঙ্কনের গলা জড়িয়ে ধরে বলে যে অইসব আনার কি দরকার ছিল। গলা জড়িয়ে ধরতেই, অঙ্কনের বুকে চেপে যায় পায়েলের নরম স্তন জরা। অঙ্কন আড়ষ্ট হয়ে যায় প্রেমিকার বাহুডোরে বদ্ধ হয়ে।
পায়েল ওর মাথার চুলে আঙুল ডুবিয়ে ঝাঁকিয়ে বলে, “তুই একদম ভিজে গেছিস দেখছি। পাগল ছেলে, সোজা বাড়ি থেকে এখানে চলে আসা উচিত আর তুই কি আমার জন্য এই সব কিনতে গেলি? আমি চেয়েছিলাম নাকি তোর কাছে?”
অঙ্কন মাথা ঝাঁকিয়ে চুলের জল পায়েলের সারা মুখের উপরে ছিটিয়ে বলে, “বাঃরে, কিছু একটা আনতে হয় তাই আনলাম। খালি হাতে আসলে কি আর ভালো লাগত, বল?”
পায়েল ওকে সোফার ওপরে বসিয়ে একটা তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছাতে মুছাতে বলে, “তুই এসে গেছিস আবার কি চাই আমার।”