Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.19 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
পাপ কাম ভালবাসা
“আমাদের বাড়ি একদম গোঁড়া, জেঠু পুরানো দিনের মানুষ, বাবাকে হয়ত কিছু বুঝালেও বুঝবে কিন্তু জেঠুকে বুঝিয়ে ওঠা অসম্ভব। কাকার কথা কেউ কানে নেয় না বললেই চলে। আমি কাকিমাকে সব কথা জানিয়েছিলাম, কিন্তু কাকিমার কথা কেউ ধরতব্যের মধ্যে আনেনা। মাকে বলেছিলাম যে আমি যদি অন্য ধর্মের কাউকে ভালোবাসি তাহলে আমার বাড়ি কি সেই সম্পর্ক মেনে নেবে? মা এক কথায় মানা করে দিয়েছিল আমাকে। বলেছিল মায়ের ঠাকুর ঘরে ভিন্ন ধর্মের মেয়ের প্রবেশ নিষেধ। বাবাকে অথবা জেঠুকে জানাবার প্রশ্ন ওঠে না। একাত্তরে আমার ঠাকুরদাকে নাকি '.েরা মেরে ফেলে দিয়েছিল, সেই রাগ আজ পর্যন্ত বুকে পুষে রেখেছে। ওদিকে জারিনা এখন ওর বাবার কাছে আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে কিছুই জানায় নি। জারিনার মা কিছুটা জানেন তবে আন্টি কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।

আব্বাজানকে একদিন না একদিন জানাতে হবে, সেইদিনের আশঙ্কা দিন গুনছে জারিনা। জারিনা জানে ভালো ভাবে যে আঙ্কেলকে জানালে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে, জারিনা প্রস্তুত সেই বিশ্বজুদ্ধ সামাল দিতে। সব মিলিয়ে, আমার বাড়ি নাকচ করে দিয়েছে এক প্রকার আর ওইদিকে হয়ত আঙ্কেল জানলে কি হবে সেটা জানা নেই।”
 
উনবিংশ পর্ব (#03)
ধিমান মাথা চুলকে বলে, “শালা, তুই বাল একটা প্রেম করেছিস। হ্যাঁ গল্প শুনে মনে হচ্ছে প্রেম কাহিনী হচ্ছে একদম। লুকিয়ে চুরিয়ে প্রথম দেখা, লুকিয়ে চুরিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়া, আর বড় কথা হচ্ছে বাড়ির সাথে যুদ্ধ। আমি শালা তার মানে ঠিক মতন প্রেম করে উঠতে পারলাম না আর। ঋতুপর্ণাকে একটা বন্ধুর পার্টিতে দেখলাম, তারপরে সেই বন্ধুকে বললাম যে বাল একটু লাইন করিয়ে দে। ব্যাস, ঋতু প্রথম দেখাতেই গলে গেছিল তাই ঋতুকে কাবু করতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। বাবা মা জানে ঋতুর কথা, বাবার একটু আপত্তি আছে কারন ঋতু নার্স, মায়ের একদম চোখের মণি হয়ে গেছে ঋতু। বাবাকে বশ করতে বিশেষ বেগ পেতে হবে না। অইদিকে ঋতুর পরিবারের দিক থেকে বিশেষ বেগ পেতে হবে না আশা করা যায়। ওর বাবা নেই, ওর মা জানেন আমাদের ব্যাপার। ওর মায়ের সাথে দেখা হয়েছে একবার আমার। আমাদের একদম নির্জলা, নির্ভেজাল প্রেম। কোন টানাপড়েন নেই, সোজা সরল গাড়ি একদম হাইওয়ে দিয়ে হাঁকিয়ে চলেছে।”
দেবায়ন হো হো করে হেসে বলে, “ভাই আমার অবস্থা এক। কলেজের প্রথম দিনে শালা হুমড়ি খেলাম অনুপমাকে দেখে।”
ধিমান, “শালা তুই একা না বে, অনেকে সেদিন হুমড়ি খেয়েছিল অনুপমাকে দেখে। বাল, তুই হাত মেরে নিলি।”
অনুপমা ভুরু কুঁচকে হেসে বলে, “বাল ছেঁড় তোরা, আমার পেছনে কলেজের অর্ধেক কেন শালা সারা কোলকাতা আমার পেছনে। এবারে সবাই যে যার মনের মানুষ পেয়ে গেছে, ব্যাস আবার কি। এবারে তনিমার একটা হিল্লে হলে হয়।”
দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “তুমি কি আমাদের গল্প বলতে শুরু করে দিলে নাকি?”
দেবায়ন, “সবাই যখন বলছে তাই একটু বলে দেই আর কি।”
পায়েল হেসে বলে, “সেদিন শালা বৃষ্টি না হলে বড় ভালো হত। তাড়াতাড়ি ট্যাক্সি পেয়ে যেতাম আর এরা দুইজনে আটি চুষত।”
অনুপমা পায়েলের মাথায় টোকা মেরে বলে, “আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছিল ও। আর কেন অপেক্ষা করতাম। সেদিন যদি কিছু না বলত তাহলে ট্যাক্সির নিচে চলে আসতাম।”
পরাশর, “ওকে ওকে ঠিক আছে, যে টুকু আছে সেই টুকু শুনি একটু।”
দেবায়ন, “যাই হোক সিঁড়িতে ধাক্কা খাওয়ার কথা কারুর অজানা নেই। তারপরে একটু বন্ধুত হল, তারপরে একদিন কফি হাউসে করলাম প্রোপস, ডারলিং একবারে গলে মোম। আমার মাকে কয়েক মাস আগে জানিয়েছি, মা অনু বলতে অজ্ঞান। আর কাকু কাকিমার এক অবস্থা, বাড়ির লোকের সাথে যুদ্ধ নেই, কথা কাটাকাটি নেই, একদম হাইওয়ে দিয়ে চলছে আমাদের প্রেমের গাড়ি। একটু এবর খাবড় না থাকলে ঠিক বোঝা যায় না যে হ্যাঁ প্রেম করছি।”
পায়েল চেঁচিয়ে বলে, “শালা তোর গল্প আমি সব জানি। তুই বাড়া আর বুক ফুলিয়ে কিছু বলতে যাস না।”
দেবায়ন পায়েলকে মিচকি হেসে বলে, “কেন সেদিন রাতে কি ডোজ ঠিক পড়েনি? আবার চাই নাকি?” অনুপমা, দেবায়নের বাজুতে চিমটি কেটে চুপ করে যেতে অনুরোধ করে।
গল্প করতে করতে সন্ধ্যে হয়ে যায়। বাড়ির উদ্দেশ্যে কিছু পরে সবাই রওনা দেয়। পথে যেতে যেতে অনুপমা পায়েলকে একবার অগ্নিহোত্রীর কথা জিজ্ঞেস করে। পায়েল সত্যি কথা বলে ফেলে, অনুপমাকে বলে যে অগ্নিহোত্রীর ব্যাপারে বিষদ কিছু জানা নেই তবে ওর পিসতুত দাদার বন্ধু হিসাবে ভালো লাগে এই মাত্র। পরিচয়ের পরের পর্বের দিকে এগোনোর আগে একবার অন্তত অগ্নিহোত্রীর ব্যাপারে সম্পূর্ণ জেনে নেবে।
পরাশরের সাথে দেবায়নের কথা হয়। পরাশর জানায় যে কিছু দিনের মধ্যে ঈদ, ঈদে জারিনার বাড়িতে জারিনার মা ওকে ডেকেছে। নিজেদের সম্পর্কের সম্বন্ধে কিছু কথাবার্তা বলতে চায় পরাশর, বুকের মধ্যে যুদ্ধের দামামা বাজছে তাও ভালোবাসা থেকে পিছিয়ে যাবার ছেলে নয়।
বাড়ি ফিরে অনুপমা দেখে যে ওর ভাই মুখ শুকনো করে বসে আছে। ভাইকে কারন জিজ্ঞেস করলে, অঙ্কন উত্তর দেয় যে একটা বাইকের বায়না ধরেছিল, বাবা বকে চুপ করিয়ে দিয়েছে। অনুপমা ভাইয়ের কথা শুনে হেসে ফেলে। মাকে জিজ্ঞেস করে বাইক না কিনে দেওয়ার কারন। পারমিতা জানায় যে অঙ্কনের ইদানিং পড়াশুনায় বিশেষ মন নেই। কোচিঙের স্যার নাকি একদিন পারমিতাকে ফোনে জানিয়েছে যে মাঝে মাঝে অঙ্কন কোচিঙয়ে আসে না। অনুপমা সব শুনে রেগে যায়। অঙ্কনকে খাবার পরে নিজের ঘরে নিয়ে যায়, জিজ্ঞেস করে কচিঙ্গে না যাবার কারন। মুখ দেখে অনুপমা বুঝতে পারে যে অঙ্কন প্রেমে পড়েছে। লাজুক হেসে অঙ্কন জানায় যে কয়দিন কোচিং যায় নি, সেই কয়দিন এক বান্ধবীকে নিয়ে সিনেমা দেখতে গেছিল। ভাইয়ের নতুন প্রেমের কথা শুনে অনুপমা উৎসুক হয়ে যায়। ভাইয়ের বান্ধবীর কথা জিজ্ঞেস করাতে, অঙ্কন জানায় যে কলেজের এক বান্ধবী, নাম গরিমা মিত্তল, মাড়োয়ারি মেয়ে। অনুপমা গরিমার ফটো দেখতে চাইলে, মোবাইলে একটা মেয়ের ফটো দেখায় অঙ্কন। মেয়েটা বেশ সুন্দরী, পাতলা আর ছিপছিপে গড়নের, মুখের গঠন ডিম্বাকৃতি, গায়ের রঙ বেশ ফর্সা। অনুপমার কাছে অঙ্কন বায়না ধরে যে বাবাকে বলে কয়ে ওকে বাইক দিয়ে হবে। অনুপমা জিজ্ঞেস করলে জানায় যে বাইকে গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে কোলকাতা ঘুরবে। অনুপমা হেসে ফেলে ছোটো ভাইয়ের কথা শুনে। অনুপমা সঙ্গে সঙ্গে রাতে দেবায়নকে ফোনে ভাইয়ের সব কথা জানিয়ে দেয়। দেবায়ন বলে যে ছেলে বড় হয়ে গেছে, নিজের মনের মতন সাথী খুঁজে পাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। এখন খেলা ধুলা করে বেড়াবে কিছু দিন, মন ভরে গেলে হয়ত নতুন সাথী খুঁজতে বেড়িয়ে যাবে।
কয়েকদিন পরে বাবাকে অনেক অনুরোধ করে অঙ্কনের জন্য বাইক কেনা হয়। বাইক পেয়ে অঙ্কন ভারী খুশি, সেই সাথে অনুপমা জানিয়ে দেয় যে, এবারে যেন পড়াশুনাতে মন দেয় আর যেন কোনদিন কোচিং পালিয়ে সিনেমা দেখতে না যায়। অনুপমা, মাকে একদিন রাতে জানায় যে ওর ভাই প্রেম করছে। সেই শুনে পারমিতা খুব খুশি, অঙ্কনকে বলে গরিমাকে বাড়িতে ডাকতে। উচ্চমাধ্যমিকে যাবার পরে অঙ্কনের বয়সের সাথে সাথে আচরনের অনেক পরিবর্তন ঘটে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কথা বলা। আগে শুধু দিদির সাথেই মন খুলে কথা বলতে পারত, মায়ের কাছে মন খুলে কথা বলার অবকাশ কোনদিন পায়নি। মায়ের মুখে গার্লফ্রেন্ডের কথা শুনে অঙ্কন জানিয়ে দেয় যে ভবিষ্যতে একদিন নিজের গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে বাড়িতে আসবে।
অনুপমা আর দেবায়নের জীবনে নিঃশ্বাস ফেলার অবকাশ বিদায় নেয়। মঙ্গলবার আর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যেন সাজ সাজ রব পরে যায়, সকালে উঠে কলেজে দৌড়ানো, তারপরে কম্পিউটার ক্লাস, অনেক রাত করে বাড়ি ফেরা। দেবায়নকে ওর মা জানিয়ে দিয়েছেন যে কম্পিউটার ক্লাসে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে, তাই টাকা একটু সঞ্চয় করে নিয়ে পুজোর আগে দেবায়নের জন্য বাইক কিনে দেবে। দেবায়ন বোঝে মায়ের কষ্ট, তাই বাইকের জন্য বেশি আব্দার করেনি। দেবশ্রী একদিন বিকেলে অফিস থেকে এসে বলে যে এক শুক্রবার অনুপমাকে নিয়ে বাড়িতে আসতে, অনেকদিন দেখা পায়নি হবু বৌমার। সেই শুনে দেবায়ন বেশ খুশি। দেবশ্রী, পারমিতাকে ফোনে জানিয়ে দেয় যে আগামী শুক্রবার অনুপমাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে, দিন দুই থাকবে দেবশ্রীর কাছে। রাতের বেলা দেবায়ন আর অনুপমা, ফোনে গল্প করে কাটিয়ে দেয়।
পরেরদিন বিকেলে কলেজের পরেই দুইজনে বাড়ি পৌঁছে যায়। সেদিন দেবশ্রী তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফেরে। হবু শ্বাশুরিকে দেখে অনুপমা বেশ খুশি। দেবশ্রী অনেকদিন অনুপমাকে দেখেনি তাই বেশ খুশি। অনুপমা আর দেবশ্রী রান্না ঘরে রান্নায় ব্যাস্ত। দেবায়ন বসার ঘরে বসে ওর জীবনের প্রধান দুই মহিলাকে দেখে।
অনুপমা মিচকি হেসে ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি দেখছ এমন ভাবে?”
দেবায়ন, “কেন তোমাদের দেখতে দোষ আছে নাকি?”
দেবশ্রী হেসে বলে, “আজকে কিন্তু অনু আমার কাছে শোবে। ভুলেও বেড়াতে যাবার কথা ভাবিস না যেন।”
হেসে ফেলে দেবায়ন, “না না, তোমাদের দেখে মনে হচ্ছে কেউ তোমাদের আলাদা করতে পারবে না। এহেন অবস্থায় দুই সিংহীর মাঝে কেন এক ছোটো হরিণ শাবক নিজের প্রান দেয়?”
অনুপমা, “হ্যাঁ আর বলতে, তুমি হরিণ শাবক। তাহলে রাতে শুধু ঘাস খেয়ে থাকবে আর আমরা কষা মাংস আর লুচি খাবো।”
খাবার সময়ে দেবায়ন মাকে বলে, “মা, তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।”
দেবশ্রী ভুরু কুঁচকে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “আবার কি করলি তুই, না নতুন কিছু চাই তোর।”
দেবায়ন বলে, “না মা, এবারে প্রবলেম ঠিক আমার নয়। আমার এক বন্ধুর, পরাশর।”
অনুপমা দেবশ্রীকে বলে, “মামনি, তোমাকে কিছু একটা উপায় বের করতে হবে।”
দেবশ্রী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি উপায়, কি ব্যাপার। সব কথা শুনি আগে তারপরে বিচার করা যাবে।”
দেবায়ন বলতে শুরু করে, “মা, আমাদের এক বন্ধু আছে পরাশর। আমাদের সাথে পড়ে। সেই ছেলে একটা '. মেয়েকে ভালোবাসে। মেয়েটার নাম জারিনা, বেশ মিষ্টি দেখতে। মুশকিল হচ্ছে, পরাশরের বাড়িতে কেউ জারিনাকে মেনে নেবে না। ওইদিকে জারিনার বাড়িতে জারিনার মা একটু নরম হয়েছেন। ঈদের পরে পরাশর জারিনার বাড়িতে গিয়েছিল। জারিনার আম্মিজান পরাশর আর জারিনার সব কথা জানে, মন মানতে চাইলেও সমাজ আত্মীয় সজ্জন যে মানতে চায় না। জারিনার বাবাকে জারিনার মা কথার ছলে পরাশর আর জারিনার ব্যাপারে কিছু আচ আগে থেকে দিয়েছিলেন। জারিনার বাবা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন এহেন সম্পর্ক সম্ভব নয়। পরাশরকে বলেছেন যে মেয়েকে সেই ছেলেগুলোর হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে বলে যেন ভাবে না যে মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে। সেই কথা শুনে, পরাশর আর জারিনা খুব ভেঙ্গে পরে। জারিনা কান্নাকাটি জুড়ে দেয়, সেই সাথে আত্মহত্যার কথা বলে। মেয়ের মুখ দেখে ওর আব্বাজান কিছুটা নরম হন, কিন্তু জারিনার আব্বাজানের এক কথা, পরাশরকে ধর্মান্তরিত হতে হবে সেই সাথে জারিনার বাবা, পরাশরের পরিবারের সাথে কথা বলতে চায়। এখানে সমস্যা হচ্ছে যে, পরাশরের মা এক কথায় জানিয়ে দিয়েছে যে ভিন্ন ধর্মীর মেয়েকে বাড়ির বউমা করে আনতে নারাজ। কোন এক সময়ে পরাশরের ঠাকুরদাকে বাংলাদেশে '.েরা হত্যা করেছিল, সেই কথা নিয়ে আজো বসে আছে ওর বাবা জেঠা। পরাশর কি করবে কিছু ভেবে পাচ্ছে না।”
অনুপমা, “মামনি, তুমি আমাদের ডিকশনারি, তুমি কিছু উপায় বলে দাও।”
দেবশ্রী হেসে ফেলে, “তোরা দুইজনে কি সারা পৃথিবীর সমস্যার সমাধান করতে বেড়িয়েছিস?”
অনুপমা বায়না ধরে, “না মামনি, কিছু একটা তোমাকে করতেই হবে। জারিনার বাবাকে কিছু করে বুঝাতে চেষ্টা করতে হবে আর সেই সাথে পরাশরের বাড়িকে। জারিনার বাবা কিছুটা নরম হয়েছেন, এবারে পরাশরের বাড়িকে কি করে নরম করা যায় সেটা বলে দাও।”
দেবশ্রী বলে, “কেন? যেমন ভাবে জারিনা ওর বাড়িকে নরম করেছে তেমনি ভাবে মানসিক চাপ দিয়ে পরাশর নিজের পরিবারকে চাপে ফেলুক।”
দেবায়ন, “মা, সে কাজ করা হয়ে গেছে। ওর বাবা আর জেঠা ওকে ত্যাজপুত্র করে দেবে বলেছে। অইসব আত্মহত্যার কথা ধোপে টেকেনি পরাশরের বাড়িতে। ওর কাকাও কিছু বুঝিয়ে উঠতে পারেনি ওর বাবা জেঠাকে।”
দেবশ্রী, “কাল একবার পরাশরকে বাড়িতে ডাক, আগে ওর সাথে কথা বলে দেখি। আর আমি একজন বাইরের মানুষ হয়ে কি মুখে দুই বাড়ির সাথে কথা বলব?”
দেবায়ন আর অনুপমা বেশ চিন্তায় পরে যায়। দুই পরিবারের সাথে যেচে কথা বলা ঠিক নয়, যেখানে দেবশ্রী দুই পরিবারের কাউকে চেনে না। দেবশ্রী জানিয়ে দেয় যে পরাশরের সাথে কথা বলে সব কিছু জেনে তবে কিছু একটা বিচার করবে। পরের দিন যথারীতি পরাশর, দেবায়নের বাড়িতে আসে। সেই সময়ে অনুপমা অথবা দেবায়ন, দুইজনেই কম্পিউটার ক্লাসে ছিল, তাই পরাশরের সাথে দেখা হয় না। বিকেলে বাড়িতে ফিরে দেবায়ন, মাকে পরাশরের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। দেবশ্রী জানায় যে বর্তমানে ওদের পড়াশুনাতে মন দেওয়া উচিত। সময় মতন সব ঠিক হয়ে যাবে।
অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “মামনি, কি করে ঠিক করবে তুমি?”
দেবশ্রী হেসে বলে, “পরাশরের মুখে সব কিছু শুনলাম। ওদের যৌথ পরিবার, ওর জেঠা বাড়ির কর্তা। ওর জ্যাঠা পুরানো দিনের মানুষ, শুনে মনে হল ভাঙ্গবে তবু মচকাবে না। ওর বাবাকে হয়ত বুঝান সম্ভব হবে, তবে মাথা ঠাণ্ডা করে কথা বলতে হবে। ওর কাকা ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইন্সপেক্টর হলে কি হবে, বাড়িতে ভিজে বেড়াল। ওর মায়ের আর ওর কাকিমার কথা বলা যেতে পারে শুধু হেঁসেল ঠ্যালা ছাড়া আর কিছু নয়। এমন যৌথ পরিবার এখন এই কোলকাতায় আছে। ওর জেঠুর সামনে নাকি কারুর মুখ ফোটে না। অনেক ভালো ভালো শাল গাছ আমার সামনে নুইয়ে পড়েছে। যেখানে ছলকপটে কাজ হয় না, সেখানে ভালোবাসা দিয়ে কাজ হয়। ভাবছি একদিন দুই বাড়িকে আমাদের বাড়িতে নেমতন্ন করব। কিন্তু তার আগে কোন এক আছিলায় তোদের মধ্যে কাউকে পি.জি হসপিটালে গিয়ে জারিনার বাবার সাথে পরিচয় করতে হবে। তোদের দুই জনের মধ্যে কেউ এগিয়ে গেলে তারপরে না হয় আমি ওর বাবার সাথে পরিচয় করতে পারব। তারপরে, পরিচয় বাড়লে জারিনার পরিবারকে বাড়িতে নেমন্তন্ন করতে অসুবিধে হবে না। এবারে পরাশরের বাড়ি কি করে যাওয়া যায়। দেবায়ন আশা করি ওদের বাড়িতে গেছে, তাই অনায়াসে একদিন ওদের ডেকে বাড়িতে খাওয়ান যায়। ওই দিনে জারিনার বাবা মা আর পরাশরের বাবা মায়ের সাথে এক সাথে কথা বলব। সামনা সামনি দুই অভিভাবককে বসিয়ে কথা বলে বুঝিয়ে দেখি।”
অনুপমা দেবশ্রীকে জড়িয়ে ধরে গালে চুমু খেয়ে বলে, “তোমার কাছে সব কিছুর সমাধান আছে, তাই না মামনি।”
দেবশ্রী হেসে বলে, “গত কাল থেকে অনেক তেল মেরেছিস, তাই ভাবলাম একটু চেষ্টা করে দেখি।”
দেবায়ন, “কিন্তু কি করে জারিনার বাবার সাথে পরিচয় হবে? সেটা একটু বলে দাও?”
দেবশ্রী, “সব বুদ্ধি কি আমি দেব নাকি? যেমন করে পরাশর জারিনার বাড়িতে গেছে, ঠিক তেমন করে তোমাকে ওর বাড়ির লোকের সাথে পরিচয় করতে হবে।”
অনুপমা হেসে বলে, “চিন্তা নেই মামনি, পার্ক সার্কাস মোড়ে দাঁড়িয়ে আমি ওর ঠ্যাঙ ভেঙ্গে দেব, ব্যাস আবার কি। পরাশর সাথেই থাকবে, অগত্যা ওকে নিয়ে জারিনার বাড়িতে যেতেই হবে।”
সেই শুনে দেবায়ন অনুপমার চুল টেনে বলে, “মা এবারে তোমার বউমা কিন্তু আমার ওপরে চড়াও হচ্ছে। মারপিট করলে কিন্তু আমি ছেড়ে দেব না।” দুইজনে মারামারি শুরু করে দেয়।
দেবশ্রী মৃদু ধমক দিয়ে বলে, “ঠিক আছে, দেখা যাক, ওই ঠ্যাঙ ভাঙ্গতে হবে না। দেখি কাউকে পাই কিনা যে পি.জি হসপিটালে কাজ করে। তার মারফত একবার ডক্টর মিসবাউলের সাথে দেখা করে আসব।”
খাওয়া শেষ, দেবায়ন টিভি দেখতে ব্যাস্ত। মায়ের কড়া নির্দেশে অনুপমার ধারে কাছে যেতে পারেনি। গত রাতে ঘুমিয়ে যাবার পরে মায়ের রুমে উঁকি মেরেছিল দেবায়ন। যথারীতি, প্রেয়সীর অর্ধ নগ্ন শরীর দেখে ক্ষান্ত হয়ে থাকতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নিজের বিছানায় এসে, লুক্কায়িত বাক্স থেকে অনুপমা, পারমিতার প্যান্টি বের করে নাকের কাছে শুঁকে আত্মরতি করে ঠাণ্ডা করতে হয়েছে নিজেকে।
সেদিন অনুপমা একটা পাতলা স্লিপ গায়ে দিয়ে দেবায়নের কোল ঘেঁসে বসে টিভি দেখছিল। টিভির দিকে বিশেষ মন ছিল না অনুপমার, মন বড় আনচান করছিল একটু দেবায়নের সান্নিধ্য পাওয়ার। দেবশ্রীর রুমের দিকে তাকিয়ে লুকিয়ে দুই জনে পরস্পরের ঠোঁটের মাঝে বিলীন হয়ে যায়। চুম্বনে মর্দনে কামাগ্নি জ্বলে উঠতে বিশেষ সময় নেয় না, কিন্তু কিছু করার উপায় নেই। দেবশ্রী নিজের রুম থেকে অনুপমাকে ডাক দেয়, বলে যে সোমবার ওদের কলেজ আর দেবশ্রীর অফিস, সুতরাং তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে যাতে সকাল সকাল উঠতে পারে। অগত্যা অনুপমা, দেবায়নের কোল থেকে উঠে শুকনো মুখে দেবশ্রীর রুমে ঢুকে পরে। দেবশ্রী কিছু অফিসের কাজে ব্যাস্ত।
রাতে মামনিকে অফিসের কাজে ব্যাস্ত দেখে অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “তোমার অফিসে ইদানিং কি কাজ খুব বেড়ে গেছে?”
Like Reply


Messages In This Thread
RE: পাপ কাম ভালবাসা - by Mr Fantastic - 28-09-2020, 01:31 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)