26-09-2020, 08:02 PM
বাড়িতে খাওয়ার পরে বিকেলে তোর বাড়িতে।”
দেবায়নের বুঝতে অসুবিধে হয় না যে রাতে পায়েল অনুপমার বাড়িতে থাকবে। দেবায়নের কামুক বুক চঞ্চল হয়ে ওঠে, পার্টির রাতে উদ্দাম যৌন ক্রীড়ায় পায়েলের সাথে মন ভরে সম্ভোগ সহবাস করে উঠতে পারেনি। রাতে পায়েল কে নিয়ে অনুপমা আর দেবায়ন প্রান ভরে সম্ভোগ সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারবে। দেবায়নের কামুক দৃষ্টি বারেবারে পায়েলের নধর দেহপল্লবের উপরে ঘোরাফেরা করে। অনুপমা আগে থেকেই পায়ালের বাবা মায়ের মানসিকতা দেবায়ন কে জানিয়ে দিয়েছিল, তাই পায়েলের সাথে দেবায়ন বিশেষ কিছু মন্তব্য করে না।
ষষ্ঠদশ পর্ব (#03)
অনুপমা বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে পায়েলের বাড়িতে দুপুরের খাওয়া সেরে ওরা বাড়ি ফিরবে। পারমিতা মেয়ের আব্দার শুনে রাজি হয়ে যায়। অনুপমা বাড়ির কথা দেবায়নকে জানায়, পায়েল নেচে ওঠে অনুপমার কথা শুনে। দেবায়ন পায়েলে আর অনুপমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে জানিয়ে দেয় যে রাতে দুই জনকে ঘুমাতে দেবে না। মায়ের চোখের আড়াল করে পায়েল দেবায়নের গালে চাটি মেরে জানিয়ে দেয় যে অনুপমাকে ছুঁতে দেবে না। এইভাবে বেশ কিছু খুনসুটি মারামারির সাথে গল্প গুজব চলে, দেবায়ন অনুপমার কথা মত রক্ষণশীল ব্যাবহার করে পায়েলের মায়ের সামনে।
ওদিকে দেবায়নের পারমিতার সামনে দাঁড়ানোর মতন অবস্থা নেই। অনুপমার বাড়ির কথা মনে পরতেই পারমিতার ম্লান চেহারা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। গতরাতের পারমিতার কাতর ভালোবাসার নিবেদন কানে বেজে ওঠে, অনুপমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেবায়নের প্রান কেঁদে ওঠে। বুদ্ধিসত্বা লোপ পায় যতবার পারমিতার কথা মনে পরে আর সেইসাথে প্রেয়সীর বুক ভরা ভালোবাসার কথা মনে পরে।
দুপুরে খাবার পরে পায়েল অনুপমা আর দেবায়ন অনুপমার বাড়িতে ফিরে আসে। সারা রাস্তা পায়েল আর অনুপমার কিচিরমিচির শুনতে শুনতে দেবায়নের মাথা খারাপ হয়ে যাবার যোগাড়। অনুপমার বাড়ির দিকে যেতে যেতে মাঝে মাঝে পায়েল অঙ্কনের কথা জিজ্ঞেস করে। অঙ্কন বাড়িতে আছে জেনে পায়েলের চোখ চকচক করে ওঠে। অনুপমার চোখ সেই অভিব্যাক্তি এড়িয়ে গেলেও দেবায়নের চোখে সেই খুশির অভিব্যাক্তি ধরা পরে যায়। দেবায়ন কথা বাড়ায় না পায়েলের চোখের চমক দেখে, তবে কিছু একটা সন্দেহ মনের মধ্যে জেগে ওঠে। দুই বান্ধবীকে দেখে দেবায়নের মনে ভেতরে খই ফোটে, রাতে একসাথে দুইজনকে নিয়ে সম্ভোগ সঙ্গম খেলায় মত্ত হবে। হাঁটার তালেতালে চোখের সামনে পায়েলের নধর গোলগাল পাছা দুলুনি দেখে দেবায়নের বারেবারে মনে হয় দুই হাতে ধরে চটকে দিতে। মনের সেই অদম্য ইচ্ছেটাকে সংবরণ করে অনুপমা আর পায়েলের পেছন পেছন হাটে।
বাড়িতে ফিরেই অনুপমা আর পায়েলকে একসাথে দেখে পারমিতা মিচকি হাসি দেয়। পায়েলের জানা নেই যে পারমিতা সব ঘটনা জানে। পারমিতার সাথে মেয়ের চোখে চোখে কথা হয়ে যায়। পারমিতা মিচকি হেসে জানিয়ে দেয় যে রাতে তাড়াতাড়ি খাবার পরে যেন সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চলে যায়। পায়েলের গলার আওয়াজ শুনে অঙ্কন নিজের ঘর ছেড়ে নিচে নেমে আসে। পায়েলকে দেখে অঙ্কনের চেহারায় হাসি ফুটে ওঠে। দেবায়ন বুঝে যায় যে অঙ্কন হয়ত মনে মনে পায়েলকে চায়, কিন্তু পায়েল ওর দিদির বান্ধবী, ওর চাইতে অনেক বড়, সেই জন্য হয়ত অঙ্কন সরাসরি পায়েলকে মনের কথা খুলে বলতে পারছে না। পায়েলের চেহারা অঙ্কনকে দেখে খুশিতে ভরে ওঠে। অনুপমা একবার অঙ্কনের দিকে তাকায় একবার পায়েলের দিকে তাকায়। দুইজনের চোখের তারার ঝিলিক দেখে দেবায়নের সাথে চোখের ইঙ্গিতে জানিয়ে দেয় যে ওর ভাই পায়েলের রুপে ঘায়েল। দেবায়ন ইঙ্গিতে অনুপমাকে জানায় যে এই ব্যাপার আগে থেকে দেবায়ন অনুধাবন করেছিল। দুইজনে কথা বাড়ায় না, চুপচাপ সময়ের অপেক্ষায় থাকে। বসার ঘরে বসে গল্পগুজবে সময় কেটে যায় চারজনের। কিছুপরে দেবায়ন টিভি খুলে বসে পরে, অঙ্কন একটু বিরক্ত বোধ করে দেবায়নের উপরে কিন্তু দেবায়ন অনেক বড় তাই দেবায়নকে কিছু বলতে সাহস করে না। দেবায়নকে ছেড়ে পায়েল আর অনুপমা উপরে নিজের ঘরে চলে যায়। বিকেলের দিকে অঙ্কন বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে বেড়িয়ে যায়।
বেশ কিছু সময় টিভি দেখার পরে দেবায়নের মেয়েদের কথা মনে পরে। দেবায়ন উপরে উঠে অনুপমার ঘরের দরজা খুলে ঢুকে দেখে দুই মেয়ে তখন গল্পে ব্যাস্ত। পায়েল অনুপমার বিছানার উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে, হাঁটু দুটি ভাঁজ করে দোলাচ্ছে। পায়েলের পরনের স্কার্ট হাঁটু ছেড়ে উপরে উঠে গেছে, পুরুষ্টু থাই অধিকাংশ অনাবৃত হয়ে গেছে। মোটা গোল গোল দুই থাইয়ের উপরে নধর গোলগাল পাছার উপরে চোখ যায় দেবায়নের। বিকেল থেকে ওই দুই পাছার চটকানোর খুব ইচ্ছে করছিল। পার্টির দিনে ঠিক ভাবে পায়েলের নধর দেহপল্লব নিয়ে খেলা করা যায়নি, সেদিন সবাই মত্ত উন্মাদের মতন একে অপরের সাথে সহবাস সঙ্গমে লিপ্ত ছিল। কার লিঙ্গ কোন যোনিতে কখন ঢুকেছে তার কোন ঠিক ছিলনা। আজ রাতে প্রেয়সিকে সাথে নিয়ে পায়েলের সাথে মনের আশ মিটিয়ে সহবাসে লিপ্ত হতে পারবে। ভাবতে ভাবতে দেবায়নের প্যান্টের ভেতরে লিঙ্গ ছটফট করতে শুরু করে দেয়। দরজা খোলার আওয়াজ পেতেই অনুপমা দেবায়নের দিকে তাকায়, দেবায়ন চোখ টিপে অনুপমাকে চুপ করে থাকতে ইশারা করে। পা টিপে টিপে বিছানার কাছে গিয়ে পায়েলের উপরে হুমড়ি খেয়ে পরে দেবায়ন। দেবায়নের কঠিন পেশি বহুল দেহের নিচে পরে পায়েল চেপটে যায় বিছানার সাথে।
পায়েল চমকে উঠে দেবায়নকে ঠেলে পিঠের থেকে নামিয়ে দিতে চেষ্টা করে। দেবায়নের ঊরুসন্ধি পায়েলের নধর তুলতুলে নরম পাছার উপরে চেপে বসে। দেবায়ন পায়েলের পিঠের উপরে ঝুঁকে পায়েলের গালে ছোট্ট চুমু খেয়ে বলে, “ডারলিং আজ রাতে তোকে প্রান ভরে আদর করব।”
পায়েলের স্কার্ট উপরে উঠিয়ে নগ্ন পাছার খাঁজে দেবায়ন লিঙ্গ চেপে ধরে। পায়েলের ছটফটানির ফলে লিঙ্গের চাপ পাছার উপরে বেড়ে যায়, সেই সাথে দেবায়নের লিঙ্গের কঠিনতা বেড়ে ওঠে। উত্তপ্ত লিঙ্গের পরশে পায়েলের শরীরের রোম রোম জেগে ওঠে।
অনুপমা ধাক্কা মেরে দেবায়নকে পায়েলের পিঠের উপর থেকে ফেলে দিয়ে বলে, “এই ছাড় ওকে, অনেক শয়তানি করেছিস ওকে নিয়ে। আর জানিস একটা দারুন খবর আছে।”
পায়েলের পিঠের উপর থেকে পরে যেতেই পায়েল দেবায়নের বুকে পেটে চড় মারতে শুরু করে দেয়। দেবায়ন পায়েলের হাত ধরে বিছানায় চিত করে শুইয়ে দেয়। পায়েল দেবায়নের চাপের নিচে পরে ছটফট করে, সেই সুযোগে দেবায়ন পায়েলের উপরে চেপে যায়। পায়েলের নরম স্তন জোড়া দেবায়নের প্রসস্থ বুকের নিচে পিষে সমান হয়ে যায়। দেবায়ন ঝুঁকে পরে পায়েলের মুখের উপরে, পায়েলের চোখ দেবায়নের চোখের ওপরে স্থির হয়ে যায়। পায়েল নিজেকে দেবায়নের আলিঙ্গন থেকে বাঁচানোর জন্য পিঠে মারতে শুরু করে। দেবায়ন হেসে জানিয়ে দেয় ওর নরম হাতের মার দেবায়নের বেশ ভালো লাগছে।
দেবায়ন অনুপমাকে জিজ্ঞেস করে, “কি রে কি খবরের কথা বলছিস? পায়েলের নতুন প্রেমিক গজিয়েছে নাকি এই কদিনে?”
অনুপমা পায়ের গাল টিপে আদর করে বলে, “ভাইয়ের দিকে নজর আমার বান্ধবীর।”
দেবায়ন পায়েলের উপরে চাপ দিয়ে বিছানার সাথে পিষে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি রে আমার শালার দিকে নজর। উম্মম কিন্তু তোর থেকে অনেক ছোটো অঙ্কন।”
পায়েল বাধা দেয়, “না না, একদম মিথ্যে কথা। অনু সব বানিয়ে বানিয়ে বলছে।”
অনুপমা, “সোনা মণি, তুমি কি ভাব আমি কিছু বুঝি না? রাস্তা থেকে জিজ্ঞেস করতে করতে আসছিস, অঙ্কন কেমন আছে, অঙ্কন কি বাড়িতে আছে? এসে পর থেকে দেখছি অঙ্কনের সাথে বেশ গল্প, তোকে দেখে অঙ্কন নিচে নেমে এল। কই শ্রেয়া অথবা তনিমা এলে অঙ্কন আসে না? তোর আর অঙ্কনের মধ্যে সত্যি কিছু একটা চলছে?”
পায়েল অস্বিকার করে, “নারে বাবা, আমি জানি অঙ্কন আমার চেয়ে অনেক ছোটো। এত ছেলে থাকতে আমি কেন অঙ্কনের পেছনে পড়তে যাব রে? তোর ভালো বান্ধবী বলে অঙ্কনের আমাকে ভালো লাগতেই পারে, তাই বলে প্রেম, একদম না।”
দেবায়ন পায়েলের থাইয়ের মাঝে চাপ দিয়ে থাই ঢুকিয়ে দেয়। দেবায়নের শরীরের শক্তির কাছে পায়েল একদম পুতুল, দেবায়নের থাই পায়েলের উরুসন্ধির উপরে ঘষে যায়। পায়েল বাধা দিতে গিয়েও দেবায়নকে বাধা দিতে অক্ষম হয়।
অনুপমা পায়েল আর দেবায়নের পাশে শুয়ে জিজ্ঞেস করে, “ওকে ঠিক আছে মেনে নিলাম তোর কথা। তবে কোনদিন যদি ভাইকে মনে ধরে তাহলে যেন আমাকে জানাস। লুকিয়ে প্রেম করতে যাস না।”
পায়েল কোনোরকমে হাত ছাড়িয়ে দেবায়নকে মারতে শুরু করে দেয়। মারতে মারতে অনুপমাকে জানায়, “হ্যাঁ রে বাবা হ্যাঁ। তোদের না জানিয়ে কি করে বাঁচব বলতে পারিস। যেদিন কাউকে মনে ধরবে সেদিন তোরা দুই জনে সব থেকে আগে জানবি। এবারে আমাকে এই শয়তানটার হাত থেকে ছাড়া।”
অনুপমা, “তোদের কুত্তা বিল্লির মতন মারামারি দেখতে বেশ লাগছে। তোরা কি এখুনি শুরু করতে চলেছিস?”
পায়েল রগেমেগে বলে, “ধুত, শালা এই শয়তান টা আমাকে ছাড়লে তো? পার্টির দিনে আমার পাছা যেমন ভাবে খামচা খামচি করেছিল তার শোধ আজকে নেব।”
দেবায়ন হেসে বলে, “ঠিক আছে ছেড়ে দিলাম। রাতে এর শোধ নেব ভালো মতন।” বলে পায়েল কে ছেড়ে দেয়।
পায়েল মিচকি হেসে জানিয়ে দেয় রাতে কাছেই আসতে দেবে না। অনুপমা হেসে ফেলে দেবায়ন আর পায়েলের কথা শুনে। কিছুক্ষণ নিজেদের মধ্যে মারামারি করে তিনজনে নিচে নামে।
পারমিতা একবারের জন্যেও নিচে নামে না, যতক্ষণ ওরা গল্প করে। বিকেলের চা পর্যন্ত নিজের ঘরে বসে খায়। মিস্টার সেন বাড়িতে ছিলেন না, দুপুরের পরে কাজে কোথাও বেড়িয়েছিলেন। সন্ধ্যের পরে বাড়িতে ফিরে দেবায়নের সাথে কথা বলতে বলতে একটু ড্রিঙ্ক করা হয়। মিস্টার সেন আসার পরে পারমিতা নিচে নেমে আসেন। মায়ের থমথমে চেহারার পেছনে কি লুকিয়ে আছে কিছুতেই ধরতে পারে না অনুপমা। পারমিতা বুদ্ধিমতী, নিচে নেমে সবার সাথে বেশ গল্প গুজবে মেতে ওঠে, থমথমে অভিব্যাক্তি ঢেকে দেয় হাসি খুশিতে। শুধু মাত্র দেবায়নের সঙ্গে কথা বলার সময়ে বেশ মেপে কথা বলে। রাতের খাবার সময়ে পারমিতা আর দেবায়ন কাউকে বুঝতে দেয় না ওদের ভেতরের দ্বন্দ। দুইজনে দু’জনাকে আড় চোখে জরিপ করে যায়। পারমিতা আর দেবায়নের মাঝে দুর্ভেদ্য প্রাচীর অলঙ্ঘনীয় হয়ে ওঠে। দেবায়নের চোখে চোখ পড়লে পারমিতা চোখ নামিয়ে নেয় অথবা অন্যদিকে সরে যায়।
কি করনীয় এই অবস্থায়, এটা ভেবে দেবায়ন চিন্তায় পড়ে যায়। এই সময়ে যদি দেবায়ন বাড়ি ছেড়ে চলে যায় তাহলে অনুপমার মনের মধ্যে সন্দেহের বীজ বেড়ে উঠবে। এই প্রাচীর কিছু করে লঙ্ঘন করে ভাঙ্গতে হবে, কিন্তু সবার সামনে পারমিতার সাথে খলাখুলি কথা বলার অবকাশ পায়না। অনুপমা জানেনা গত রাতের ঘটনা, পারমিতা অথবা দেবায়ন কেউ জানায়নি যে গতরাতে ওর দুইজনে চুটিয়ে সম্ভোগ সহবাসে লিপ্ত হয়েছিল আর শেষ পর্যন্ত পারমিতা দেবায়নের প্রেমে পরে গেছে।
ষষ্ঠদশ পর্ব (#04)
পারমিতার হাসির পেছনের হৃদয়ের প্রবল দ্বন্দ দেবায়নের চোখ এড়াতে পারে না কিছুতেই। রাতের খাবার পরে নিত্য দিনের মতন মিস্টার সেনের সাথে দেবায়ন নিচে বসে ড্রিঙ্ক করে কিছুক্ষণ। পারমিতা মাথা ধরার আছিলায় নিজের ঘরে চলে যায়। অনুপমা আর পায়েল জানিয়ে দেয় যে ওরা তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাচ্ছে। অনুপমার চোখের দুষ্টু হাসি দেখে দেবায়ন সব বুঝতে পারে। মিস্টার সেন টিভিতে বেশ মজে গেলে সিগারেট ধরাবার অছিলায় দেবায়ন উপরে চলে আসে। দেবায়ন উপরে উঠে অনুপমার ঘরের দিকে পা বাড়ানোর সময়ে দেখে যে পারমিতা চুপচাপ বিছানায় শুয়ে একটা মেয়েদের ম্যাগাজিন পড়ছে। দেবায়ন ধির পায়ে পারমিতার দরজায় টোকা মারে। পারমিতা দরজার দিকে তাকিয়ে স্থম্ভিত হয়ে যায়। কাঁপা গলায় আসার কারন জিজ্ঞেস করে। পারমিতার বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যায় দেবায়নের চেহারা দেখে।
দেবায়ন, “একটু আসতে পারি, কিছু কথা ছিল।”
পারমিতা নিচু কণ্ঠে জবাব দেয়, “কি ব্যাপার দেবায়ন?”
“হ্যান্ডসাম” এর জায়গায় নিজের নাম শুনে সব পরিষ্কার হয়ে যায় দেবায়নের, পারমিতা হৃদয়ের প্রাচীর। দেবায়ন দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, “আমি কি বাড়ি থেকে চলে যাবো?”
পারমিতা ঠাণ্ডা গলায় জিজ্ঞেস করে, “কেন? অনু কি কিছু বলেছে তোমাকে?”
দেবায়ন, “অনুর সাথে আমার মনোমালিন্য কেন হতে যাবে? সকাল থেকে তুমি যে রকম ব্যাবহার করছ তাতে অনুর মনে সন্দেহ হয়েছে। তাই বলছি, যে আমি কি তোমার চোখের সামনে থেকে চলে যাব?”
পারমিতা মাথা নিচু করে বলে, “তুমি যা ভাল বোঝো তাই কর দেবায়ন।”
দেবায়ন ধির পায়ে ঘরের ভেতরে ঢোকে। পারমিতার দেহের রক্ত শুকিয়ে যায়, নিচে স্বামী বসে, উপরে নিজেদের ঘরে ছেলে মেয়ে আছে। বুকের মধ্যে হাপর টানে, ধিরে ধিরে বিছানার উপরে উঠে বসে পারমিতা, দেবায়নের মুখের দিকে তাকাতে গিয়েও তাকাতে পারেন। দেবায়নের দৃষ্টি পারমিতার শুষ্ক চেহারার উপরে নিবদ্ধ। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে পারমিতার সামনে দাঁড়ায়। পারমিতা চোখ বন্ধ করে প্রমাদ গোনে। দেবায়ন বিছানার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে পারমিতার হাতে হাত রাখে। উষ্ণ হাতের পরশে পারমিতার দেহ কেঁপে ওঠে, চোখের পাতা ভিজে ওঠে।
দেবায়ন পারমিতার হাত মুঠি করে নিয়ে বলে, “মিমি” ডাক শুনে পারমিতা দুই চোখ চেপে বন্ধ করে দেয়, চিবুক বুকের উপরে নেমে আসে। দেবায়ন বলে, “মিমি, গতরাতে তুমি চলে যাবার আগে যে কথাগুলো বলেছিলে, সেগুলো আমি শুনেছি।”
পারমিতা কি বলবে কিছু বুঝে পায় না, হৃদয় কেঁপে ওঠে, দেবায়ন কি বলতে চলেছে। পারমিতার চোখের পাতা ভিজে চোখের কোল জলে ভরে আসে, ঠোঁট জোড়া তিরতির করে কেঁপে ওঠে। দেবায়ন বলে, “মিমি, আমি জানি তোমার হৃদয়ের অভিপ্রায়।”
পারমিতা জল ভরা চোখে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে কাঁপা কণ্ঠে অস্ফুট কেঁদে ওঠে, “না…”
দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে জানায় “হ্যাঁ।”
পারমিতা জিজ্ঞেস করে, “তুমি ঘুমিয়ে পরেছিলে দেবায়ন।”
দেবায়ন, “না মিমি, ঘুম আসতে গিয়েও এলনা শেষ পর্যন্ত।”
পারমিতা কেঁদে ফেলে, “আমি হতভাগী দেবায়ন, জীবনে কিছুই পেলাম না। আমার স্বামীর ভালোবাসা আমি পেলাম না, আমার মেয়ে আমাকে খারাপ চোখে দেখে। এমন সময়ে তুমি এলে একটা আলো নিয়ে, পথ দেখালে, টেনে তুললে। কিন্তু হৃদয় বড় অবুঝ দেবায়ন…”
দেবায়নের হাতের উপরে টপ টপ করে পারমিতার চোখের জল পরে, দেবায়ন ঠাণ্ডা কণ্ঠে পারমিতাকে বলে, “মিমি, অনু তোমাকে ফিরে পেয়েছে, অনুর ভালোবাসা তুমি নিজের মতন করে অর্জন করে নিও। কিন্তু মিমি, আমার ভালোবাসা শুধু মাত্র অনুপমা, তুমি যা চাও সেটা আমি তোমাকে দিতে পারি না। দুজনের ভালোর জন্য বলি, মন থেকে অইসব মুছে পরিবার সংসার নিজের মতন করে গুছিয়ে নাও। এখন তোমার সাথে অনুর সম্পর্ক ভালো হয়ে গেছে, গত রাতের মিস্টার সেনের কথাবার্তা শুনে মনে হল তিনি সব ভুলে তোমাকে আর তার এই পরিবারকে কাছে টেনে নেবেন। আমি চাই তুমি সেই পুরানো মিমি হয়ে যাও, সেই জম্মুর মিমি।”
পারমিতা, “কি করে দেবায়ন? আমার ভালোবাসার নামে তুমি ডাক দিয়েছ। সোমেশের কাছে যে আমি মিতা হয়ে গেছি, সোমেশ আমাকে মিমি বলে ডাকে না, দেবায়ন। তুমি আমার চোখের সামনে থাকবে সবসময়ে আর তোমার ভালোবাসার কথা বারেবারে মনে যাবে, আমি কি করব দেবায়ন? আমি তোমাকে দুরে যেতে বলতে পারিনা, কাছে আসতে বলতে পারি না। আমি নিজের কাছে হেরে গেছি দেবায়ন। গতকাল একবার মনে হয়েছিল আমি নিজেই সব ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাই। অনুকে দেখার জন্য তুমি আছো, কিন্তু ছেলেটার জন্য বুক কেঁপে উঠল আমার। অঙ্কনকে ছেড়ে যেতে পারলাম না।”
দেবায়ন, “মিমি, আমি যদি এখন তোমার মন রক্ষার্থে বলি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি তাহলে অনেক বড় মিথ্যে বলা হবে। মিমি, তুমি হারিয়ে যেও না আমাদের কাছ থেকে। আমি তোমাকে ভালোবাসি সেটা সত্যি কিন্তু সেই ভালোবাসা আর অনুর ভালোবাসার মাঝে অনেক তফাত আছে। তুমি অনুপমার জায়গা নিতে পার না মিমি। তুমি আমার কাছেই থাকবে, কিন্তু অনুর জায়গা সবসময়ে আমার বুকের বাম দিকে থাকবে।”
পারমিতা দেবায়নের হাত নিজের গালে চেপে কেঁদে ফেলে, “আমি জানি, তাই নিজেকে বড় পাপী মনে হয়েছে। আমি মেয়ের ভালোবাসা কেড়ে নিতে পারিনা দেবায়ন, সেই পাপ বোধে সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। গতরাতে আমি ঘুমাতে পারিনি, দেবায়ন।”
পারমিতার গালে আদর করে হাত বুলাতে বুলাতে দেবায়ন বলে, “আমি জানি মিমি, এই বন্ধ দরজার পেছনে তুমি সারারাত কেঁদেছিলে, আমি শুনেছি তোমার কান্না মিমি।”
পারমিতা, “আমি কি করব একটু বলে দিতে পার, দেবায়ন। মন যে একদম মানতে চাইছে না কাল থেকে।”
দেবায়ন পারমিতার মাথা নিচে টেনে কপালে চুমু খেয়ে বলে, “তোমাকে না আমি মিমি বলে ডেকেছি?”
পারমিতা মাথা নাড়ে, “হ্যাঁ”
দেবায়ন, “তাহলে আমার সুন্দরী মিমি, মিষ্টি মিমি আমাকে আগের মতন হ্যান্ডসাম বলে ডাকবে আর মুখে হাসি নিয়ে থাকবে। আমাদের ভালোবাসা একটু অন্য রকমের হোক মিমি। দুঃখ পেয়োনা মিমি, তোমাকে বুকে রাখতে পারছিনা তবে মনের গভীরে তোমার স্থান থাকবে।”
পারমিতা জল ভরা চোখে ঠোঁটে হাসি টেনে বলে, “হ্যান্ডসাম…”
দেবায়ন হেসে পারমিতার নরম গালে হাত বুলিয়ে বলে, “এই ত আমার মিমি। এইরকম না হাসলে তোমার মেয়ে আমাকে প্রশ্ন বাণে জর্জরিত করে মেরে ফেলবে। সেই সকাল থেকে অনু আমাকে জিজ্ঞেস করে যাচ্ছে, মায়ের কি হল, মায়ের কি হল। আমি শেষ পর্যন্ত কথা ঘুরিয়ে, গত রাতের কাকুর কথা কোম্পানির কথা, অঙ্কনের কথা বলেছি নিজেকে বাঁচাতে আর তোমাকে বাঁচাতে।”
পারমিতা দেবায়নের কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে, “তুমি একটা পাগল ছেলে হ্যান্ডসাম।”
দেবায়ন মনেমনে বলে “মা মেয়ে দুইজনে এক পাগলের প্রেমে, কি যে করি এখন।”
দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে বলে, “কি আর করা যাবে বল। এবারে চোখ মুছে ঠোঁটে হাসি নিয়ে ঘর ছেড়ে বাইরে বের হও। আজ রাতে মিস্টার সেনকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দাও। আজকে বেশি ড্রিঙ্ক করতে দিও না, পারলে নিজের ঠোঁটের রসে মিস্টার সেনকে ডুবিয়ে দিও।”
পারমিতা চোখের জল মুছে মিষ্টি হেসে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “হ্যান্ডসাম তোমার কাছে সবার জন্য কিছু না কিছু ওষুধ আছে তাই না?”
দেবায়ন হেসে বলে, “যাদের সত্যি ভালো লাগে তাদের জন্য আমার কাছে ভালোবাসা আছে, যাদের ভালো লাগে না তাদের জন্য ওষুধ আছে। তুমি আমার মিষ্টি মিমি, তোমার জন্য ভালোবাসা সবসময়ে থাকবে। এবারে একটা দারুন লঞ্জারি পরে নাও, বেশ সেক্সি সাজ, ঠোঁটে গাড় লিপস্টিক, চোখের কোণে কাজল, গলায় হার কানে দুল। আর কাল রাতে আমাকে যেমন ম্যাসাজ করে দিয়েছিলে, ঠিক তেমনি মিস্টার সেনকে ম্যাসাজ করে দিও, আজ রাতে দুইজনে পাগল করে দুইজনকে মাতিয়ে দিও, ভেবে নিও তোমার সোমেশ আবার তোমার কাছে ফিরে এসেছে।”
পারমিতা, “যাও যাও, বেশি বোকো না। বড্ড ফাজিল হয়ে যাচ্ছ তুমি, হ্যান্ডসাম। আমি কি করব না করব সে ফিরিস্তি দিয়ে দিলে। আজ রাতে তোমার পোয়াবারো, দু’দুটো মেয়েকে নিয়ে রাত কাটাবে। ইসসস… ”
দেবায়ন উঠে দাঁড়িয়ে বলে, “হ্যাঁ যাই গিয়ে দেখি মেয়ে দুটো কি করছে। আমার ডার্লিং আমার খোঁজ না পেলে রেগে যাবে।”
পারমিতা বিছানা ছেড়ে দেবায়নের সামনে উঠে দাঁড়ায়, “এত কিছু বললে, একটু দাঁড়িয়ে দেখে যাবে না তোমার মিমিকে?”
পারমিতা দেবায়নকে জড়িয়ে ধরতে যায়, দেবায়ন দুই পা পেছনে সরে গিয়ে বলে, “না মিমি, আজকে তুমি শুধু মিস্টার সেনের। আজকের এই ভালোবাসার অধিকার আমার নেই, তোমাকে দেখার অধিকার আমার নেই। তুমি যাও মিমি, কালকের কথাবার্তা শুনে মনে হল মিস্টার সেন বদলে গেছে, নিজেকে ওর কোলে উজাড় করে দাও।”
পারমিতার চোখ দুটি চিকচিক করে ওঠে, ঠোঁটে মিষ্টি হাসি মাখিয়ে বলে, “তোমাকে বড্ড ভালোবাসি, তুমি যা বলবে আমি তাই করব হ্যান্ডসাম।”
পারমিতার কথা শুনে দেবায়ন প্রাণপণে নিজেকে আয়ত্তে রাখে। সামনে দাঁড়িয়ে অতীব সুন্দরী আকর্ষণীয় মহিলার চোখ আবার ওকে ডাকছে, এই ডাক উপেক্ষা করার মতন শক্তি যোগাড় করে দেবায়ন। দুই হাত মুঠি করে চোয়াল শক্ত করে হাসে পারমিতার চিকচিক করা চোখের দিকে তাকিয়ে। পারমিতা ঠোঁট কামড়ে দেবায়নের মুখের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে।
দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে বলে, “গুড নাইট মিমি, হ্যাভ আ প্যাসোনেট নাইট উইথ মিস্টার সেন। আমার দিকে আর ওই রকম ভাবে তাকিয়ো না, দোহাই মিমি।”
দেবায়ন আর বেশিক্ষন দাঁড়ায় না পারমিতার সামনে, দেবায়ন বুঝে গেছে পারমিতাকে ফিরিয়ে এনেছে কিন্তু বেশিক্ষন ওর চোখের সামনে দাঁড়ালে দুই জনে নিজেদেরকে সামলে রাখতে পারবে না।
দেবায়ন পারমিতার ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যায়, সামনে অনুপমার বন্ধ দরজার দিকে তাকায়। মাথার সব শিরা উপশিরা পারমিতাকে বুঝাতে বুঝাতে পেঁচিয়ে গেছে, সেই সাথে বুকের ভেতর টা একসময় পেঁচিয়ে যাবার উপক্রম হয়। বুক ভরে শ্বাস নেয় দেবায়ন, মাথার প্যাঁচানো অলিগলি থেকে নিজেকে মুক্ত করে।
দেবায়নের বুঝতে অসুবিধে হয় না যে রাতে পায়েল অনুপমার বাড়িতে থাকবে। দেবায়নের কামুক বুক চঞ্চল হয়ে ওঠে, পার্টির রাতে উদ্দাম যৌন ক্রীড়ায় পায়েলের সাথে মন ভরে সম্ভোগ সহবাস করে উঠতে পারেনি। রাতে পায়েল কে নিয়ে অনুপমা আর দেবায়ন প্রান ভরে সম্ভোগ সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারবে। দেবায়নের কামুক দৃষ্টি বারেবারে পায়েলের নধর দেহপল্লবের উপরে ঘোরাফেরা করে। অনুপমা আগে থেকেই পায়ালের বাবা মায়ের মানসিকতা দেবায়ন কে জানিয়ে দিয়েছিল, তাই পায়েলের সাথে দেবায়ন বিশেষ কিছু মন্তব্য করে না।
ষষ্ঠদশ পর্ব (#03)
অনুপমা বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে পায়েলের বাড়িতে দুপুরের খাওয়া সেরে ওরা বাড়ি ফিরবে। পারমিতা মেয়ের আব্দার শুনে রাজি হয়ে যায়। অনুপমা বাড়ির কথা দেবায়নকে জানায়, পায়েল নেচে ওঠে অনুপমার কথা শুনে। দেবায়ন পায়েলে আর অনুপমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে জানিয়ে দেয় যে রাতে দুই জনকে ঘুমাতে দেবে না। মায়ের চোখের আড়াল করে পায়েল দেবায়নের গালে চাটি মেরে জানিয়ে দেয় যে অনুপমাকে ছুঁতে দেবে না। এইভাবে বেশ কিছু খুনসুটি মারামারির সাথে গল্প গুজব চলে, দেবায়ন অনুপমার কথা মত রক্ষণশীল ব্যাবহার করে পায়েলের মায়ের সামনে।
ওদিকে দেবায়নের পারমিতার সামনে দাঁড়ানোর মতন অবস্থা নেই। অনুপমার বাড়ির কথা মনে পরতেই পারমিতার ম্লান চেহারা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। গতরাতের পারমিতার কাতর ভালোবাসার নিবেদন কানে বেজে ওঠে, অনুপমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেবায়নের প্রান কেঁদে ওঠে। বুদ্ধিসত্বা লোপ পায় যতবার পারমিতার কথা মনে পরে আর সেইসাথে প্রেয়সীর বুক ভরা ভালোবাসার কথা মনে পরে।
দুপুরে খাবার পরে পায়েল অনুপমা আর দেবায়ন অনুপমার বাড়িতে ফিরে আসে। সারা রাস্তা পায়েল আর অনুপমার কিচিরমিচির শুনতে শুনতে দেবায়নের মাথা খারাপ হয়ে যাবার যোগাড়। অনুপমার বাড়ির দিকে যেতে যেতে মাঝে মাঝে পায়েল অঙ্কনের কথা জিজ্ঞেস করে। অঙ্কন বাড়িতে আছে জেনে পায়েলের চোখ চকচক করে ওঠে। অনুপমার চোখ সেই অভিব্যাক্তি এড়িয়ে গেলেও দেবায়নের চোখে সেই খুশির অভিব্যাক্তি ধরা পরে যায়। দেবায়ন কথা বাড়ায় না পায়েলের চোখের চমক দেখে, তবে কিছু একটা সন্দেহ মনের মধ্যে জেগে ওঠে। দুই বান্ধবীকে দেখে দেবায়নের মনে ভেতরে খই ফোটে, রাতে একসাথে দুইজনকে নিয়ে সম্ভোগ সঙ্গম খেলায় মত্ত হবে। হাঁটার তালেতালে চোখের সামনে পায়েলের নধর গোলগাল পাছা দুলুনি দেখে দেবায়নের বারেবারে মনে হয় দুই হাতে ধরে চটকে দিতে। মনের সেই অদম্য ইচ্ছেটাকে সংবরণ করে অনুপমা আর পায়েলের পেছন পেছন হাটে।
বাড়িতে ফিরেই অনুপমা আর পায়েলকে একসাথে দেখে পারমিতা মিচকি হাসি দেয়। পায়েলের জানা নেই যে পারমিতা সব ঘটনা জানে। পারমিতার সাথে মেয়ের চোখে চোখে কথা হয়ে যায়। পারমিতা মিচকি হেসে জানিয়ে দেয় যে রাতে তাড়াতাড়ি খাবার পরে যেন সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চলে যায়। পায়েলের গলার আওয়াজ শুনে অঙ্কন নিজের ঘর ছেড়ে নিচে নেমে আসে। পায়েলকে দেখে অঙ্কনের চেহারায় হাসি ফুটে ওঠে। দেবায়ন বুঝে যায় যে অঙ্কন হয়ত মনে মনে পায়েলকে চায়, কিন্তু পায়েল ওর দিদির বান্ধবী, ওর চাইতে অনেক বড়, সেই জন্য হয়ত অঙ্কন সরাসরি পায়েলকে মনের কথা খুলে বলতে পারছে না। পায়েলের চেহারা অঙ্কনকে দেখে খুশিতে ভরে ওঠে। অনুপমা একবার অঙ্কনের দিকে তাকায় একবার পায়েলের দিকে তাকায়। দুইজনের চোখের তারার ঝিলিক দেখে দেবায়নের সাথে চোখের ইঙ্গিতে জানিয়ে দেয় যে ওর ভাই পায়েলের রুপে ঘায়েল। দেবায়ন ইঙ্গিতে অনুপমাকে জানায় যে এই ব্যাপার আগে থেকে দেবায়ন অনুধাবন করেছিল। দুইজনে কথা বাড়ায় না, চুপচাপ সময়ের অপেক্ষায় থাকে। বসার ঘরে বসে গল্পগুজবে সময় কেটে যায় চারজনের। কিছুপরে দেবায়ন টিভি খুলে বসে পরে, অঙ্কন একটু বিরক্ত বোধ করে দেবায়নের উপরে কিন্তু দেবায়ন অনেক বড় তাই দেবায়নকে কিছু বলতে সাহস করে না। দেবায়নকে ছেড়ে পায়েল আর অনুপমা উপরে নিজের ঘরে চলে যায়। বিকেলের দিকে অঙ্কন বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে বেড়িয়ে যায়।
বেশ কিছু সময় টিভি দেখার পরে দেবায়নের মেয়েদের কথা মনে পরে। দেবায়ন উপরে উঠে অনুপমার ঘরের দরজা খুলে ঢুকে দেখে দুই মেয়ে তখন গল্পে ব্যাস্ত। পায়েল অনুপমার বিছানার উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে, হাঁটু দুটি ভাঁজ করে দোলাচ্ছে। পায়েলের পরনের স্কার্ট হাঁটু ছেড়ে উপরে উঠে গেছে, পুরুষ্টু থাই অধিকাংশ অনাবৃত হয়ে গেছে। মোটা গোল গোল দুই থাইয়ের উপরে নধর গোলগাল পাছার উপরে চোখ যায় দেবায়নের। বিকেল থেকে ওই দুই পাছার চটকানোর খুব ইচ্ছে করছিল। পার্টির দিনে ঠিক ভাবে পায়েলের নধর দেহপল্লব নিয়ে খেলা করা যায়নি, সেদিন সবাই মত্ত উন্মাদের মতন একে অপরের সাথে সহবাস সঙ্গমে লিপ্ত ছিল। কার লিঙ্গ কোন যোনিতে কখন ঢুকেছে তার কোন ঠিক ছিলনা। আজ রাতে প্রেয়সিকে সাথে নিয়ে পায়েলের সাথে মনের আশ মিটিয়ে সহবাসে লিপ্ত হতে পারবে। ভাবতে ভাবতে দেবায়নের প্যান্টের ভেতরে লিঙ্গ ছটফট করতে শুরু করে দেয়। দরজা খোলার আওয়াজ পেতেই অনুপমা দেবায়নের দিকে তাকায়, দেবায়ন চোখ টিপে অনুপমাকে চুপ করে থাকতে ইশারা করে। পা টিপে টিপে বিছানার কাছে গিয়ে পায়েলের উপরে হুমড়ি খেয়ে পরে দেবায়ন। দেবায়নের কঠিন পেশি বহুল দেহের নিচে পরে পায়েল চেপটে যায় বিছানার সাথে।
পায়েল চমকে উঠে দেবায়নকে ঠেলে পিঠের থেকে নামিয়ে দিতে চেষ্টা করে। দেবায়নের ঊরুসন্ধি পায়েলের নধর তুলতুলে নরম পাছার উপরে চেপে বসে। দেবায়ন পায়েলের পিঠের উপরে ঝুঁকে পায়েলের গালে ছোট্ট চুমু খেয়ে বলে, “ডারলিং আজ রাতে তোকে প্রান ভরে আদর করব।”
পায়েলের স্কার্ট উপরে উঠিয়ে নগ্ন পাছার খাঁজে দেবায়ন লিঙ্গ চেপে ধরে। পায়েলের ছটফটানির ফলে লিঙ্গের চাপ পাছার উপরে বেড়ে যায়, সেই সাথে দেবায়নের লিঙ্গের কঠিনতা বেড়ে ওঠে। উত্তপ্ত লিঙ্গের পরশে পায়েলের শরীরের রোম রোম জেগে ওঠে।
অনুপমা ধাক্কা মেরে দেবায়নকে পায়েলের পিঠের উপর থেকে ফেলে দিয়ে বলে, “এই ছাড় ওকে, অনেক শয়তানি করেছিস ওকে নিয়ে। আর জানিস একটা দারুন খবর আছে।”
পায়েলের পিঠের উপর থেকে পরে যেতেই পায়েল দেবায়নের বুকে পেটে চড় মারতে শুরু করে দেয়। দেবায়ন পায়েলের হাত ধরে বিছানায় চিত করে শুইয়ে দেয়। পায়েল দেবায়নের চাপের নিচে পরে ছটফট করে, সেই সুযোগে দেবায়ন পায়েলের উপরে চেপে যায়। পায়েলের নরম স্তন জোড়া দেবায়নের প্রসস্থ বুকের নিচে পিষে সমান হয়ে যায়। দেবায়ন ঝুঁকে পরে পায়েলের মুখের উপরে, পায়েলের চোখ দেবায়নের চোখের ওপরে স্থির হয়ে যায়। পায়েল নিজেকে দেবায়নের আলিঙ্গন থেকে বাঁচানোর জন্য পিঠে মারতে শুরু করে। দেবায়ন হেসে জানিয়ে দেয় ওর নরম হাতের মার দেবায়নের বেশ ভালো লাগছে।
দেবায়ন অনুপমাকে জিজ্ঞেস করে, “কি রে কি খবরের কথা বলছিস? পায়েলের নতুন প্রেমিক গজিয়েছে নাকি এই কদিনে?”
অনুপমা পায়ের গাল টিপে আদর করে বলে, “ভাইয়ের দিকে নজর আমার বান্ধবীর।”
দেবায়ন পায়েলের উপরে চাপ দিয়ে বিছানার সাথে পিষে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি রে আমার শালার দিকে নজর। উম্মম কিন্তু তোর থেকে অনেক ছোটো অঙ্কন।”
পায়েল বাধা দেয়, “না না, একদম মিথ্যে কথা। অনু সব বানিয়ে বানিয়ে বলছে।”
অনুপমা, “সোনা মণি, তুমি কি ভাব আমি কিছু বুঝি না? রাস্তা থেকে জিজ্ঞেস করতে করতে আসছিস, অঙ্কন কেমন আছে, অঙ্কন কি বাড়িতে আছে? এসে পর থেকে দেখছি অঙ্কনের সাথে বেশ গল্প, তোকে দেখে অঙ্কন নিচে নেমে এল। কই শ্রেয়া অথবা তনিমা এলে অঙ্কন আসে না? তোর আর অঙ্কনের মধ্যে সত্যি কিছু একটা চলছে?”
পায়েল অস্বিকার করে, “নারে বাবা, আমি জানি অঙ্কন আমার চেয়ে অনেক ছোটো। এত ছেলে থাকতে আমি কেন অঙ্কনের পেছনে পড়তে যাব রে? তোর ভালো বান্ধবী বলে অঙ্কনের আমাকে ভালো লাগতেই পারে, তাই বলে প্রেম, একদম না।”
দেবায়ন পায়েলের থাইয়ের মাঝে চাপ দিয়ে থাই ঢুকিয়ে দেয়। দেবায়নের শরীরের শক্তির কাছে পায়েল একদম পুতুল, দেবায়নের থাই পায়েলের উরুসন্ধির উপরে ঘষে যায়। পায়েল বাধা দিতে গিয়েও দেবায়নকে বাধা দিতে অক্ষম হয়।
অনুপমা পায়েল আর দেবায়নের পাশে শুয়ে জিজ্ঞেস করে, “ওকে ঠিক আছে মেনে নিলাম তোর কথা। তবে কোনদিন যদি ভাইকে মনে ধরে তাহলে যেন আমাকে জানাস। লুকিয়ে প্রেম করতে যাস না।”
পায়েল কোনোরকমে হাত ছাড়িয়ে দেবায়নকে মারতে শুরু করে দেয়। মারতে মারতে অনুপমাকে জানায়, “হ্যাঁ রে বাবা হ্যাঁ। তোদের না জানিয়ে কি করে বাঁচব বলতে পারিস। যেদিন কাউকে মনে ধরবে সেদিন তোরা দুই জনে সব থেকে আগে জানবি। এবারে আমাকে এই শয়তানটার হাত থেকে ছাড়া।”
অনুপমা, “তোদের কুত্তা বিল্লির মতন মারামারি দেখতে বেশ লাগছে। তোরা কি এখুনি শুরু করতে চলেছিস?”
পায়েল রগেমেগে বলে, “ধুত, শালা এই শয়তান টা আমাকে ছাড়লে তো? পার্টির দিনে আমার পাছা যেমন ভাবে খামচা খামচি করেছিল তার শোধ আজকে নেব।”
দেবায়ন হেসে বলে, “ঠিক আছে ছেড়ে দিলাম। রাতে এর শোধ নেব ভালো মতন।” বলে পায়েল কে ছেড়ে দেয়।
পায়েল মিচকি হেসে জানিয়ে দেয় রাতে কাছেই আসতে দেবে না। অনুপমা হেসে ফেলে দেবায়ন আর পায়েলের কথা শুনে। কিছুক্ষণ নিজেদের মধ্যে মারামারি করে তিনজনে নিচে নামে।
পারমিতা একবারের জন্যেও নিচে নামে না, যতক্ষণ ওরা গল্প করে। বিকেলের চা পর্যন্ত নিজের ঘরে বসে খায়। মিস্টার সেন বাড়িতে ছিলেন না, দুপুরের পরে কাজে কোথাও বেড়িয়েছিলেন। সন্ধ্যের পরে বাড়িতে ফিরে দেবায়নের সাথে কথা বলতে বলতে একটু ড্রিঙ্ক করা হয়। মিস্টার সেন আসার পরে পারমিতা নিচে নেমে আসেন। মায়ের থমথমে চেহারার পেছনে কি লুকিয়ে আছে কিছুতেই ধরতে পারে না অনুপমা। পারমিতা বুদ্ধিমতী, নিচে নেমে সবার সাথে বেশ গল্প গুজবে মেতে ওঠে, থমথমে অভিব্যাক্তি ঢেকে দেয় হাসি খুশিতে। শুধু মাত্র দেবায়নের সঙ্গে কথা বলার সময়ে বেশ মেপে কথা বলে। রাতের খাবার সময়ে পারমিতা আর দেবায়ন কাউকে বুঝতে দেয় না ওদের ভেতরের দ্বন্দ। দুইজনে দু’জনাকে আড় চোখে জরিপ করে যায়। পারমিতা আর দেবায়নের মাঝে দুর্ভেদ্য প্রাচীর অলঙ্ঘনীয় হয়ে ওঠে। দেবায়নের চোখে চোখ পড়লে পারমিতা চোখ নামিয়ে নেয় অথবা অন্যদিকে সরে যায়।
কি করনীয় এই অবস্থায়, এটা ভেবে দেবায়ন চিন্তায় পড়ে যায়। এই সময়ে যদি দেবায়ন বাড়ি ছেড়ে চলে যায় তাহলে অনুপমার মনের মধ্যে সন্দেহের বীজ বেড়ে উঠবে। এই প্রাচীর কিছু করে লঙ্ঘন করে ভাঙ্গতে হবে, কিন্তু সবার সামনে পারমিতার সাথে খলাখুলি কথা বলার অবকাশ পায়না। অনুপমা জানেনা গত রাতের ঘটনা, পারমিতা অথবা দেবায়ন কেউ জানায়নি যে গতরাতে ওর দুইজনে চুটিয়ে সম্ভোগ সহবাসে লিপ্ত হয়েছিল আর শেষ পর্যন্ত পারমিতা দেবায়নের প্রেমে পরে গেছে।
ষষ্ঠদশ পর্ব (#04)
পারমিতার হাসির পেছনের হৃদয়ের প্রবল দ্বন্দ দেবায়নের চোখ এড়াতে পারে না কিছুতেই। রাতের খাবার পরে নিত্য দিনের মতন মিস্টার সেনের সাথে দেবায়ন নিচে বসে ড্রিঙ্ক করে কিছুক্ষণ। পারমিতা মাথা ধরার আছিলায় নিজের ঘরে চলে যায়। অনুপমা আর পায়েল জানিয়ে দেয় যে ওরা তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাচ্ছে। অনুপমার চোখের দুষ্টু হাসি দেখে দেবায়ন সব বুঝতে পারে। মিস্টার সেন টিভিতে বেশ মজে গেলে সিগারেট ধরাবার অছিলায় দেবায়ন উপরে চলে আসে। দেবায়ন উপরে উঠে অনুপমার ঘরের দিকে পা বাড়ানোর সময়ে দেখে যে পারমিতা চুপচাপ বিছানায় শুয়ে একটা মেয়েদের ম্যাগাজিন পড়ছে। দেবায়ন ধির পায়ে পারমিতার দরজায় টোকা মারে। পারমিতা দরজার দিকে তাকিয়ে স্থম্ভিত হয়ে যায়। কাঁপা গলায় আসার কারন জিজ্ঞেস করে। পারমিতার বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যায় দেবায়নের চেহারা দেখে।
দেবায়ন, “একটু আসতে পারি, কিছু কথা ছিল।”
পারমিতা নিচু কণ্ঠে জবাব দেয়, “কি ব্যাপার দেবায়ন?”
“হ্যান্ডসাম” এর জায়গায় নিজের নাম শুনে সব পরিষ্কার হয়ে যায় দেবায়নের, পারমিতা হৃদয়ের প্রাচীর। দেবায়ন দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, “আমি কি বাড়ি থেকে চলে যাবো?”
পারমিতা ঠাণ্ডা গলায় জিজ্ঞেস করে, “কেন? অনু কি কিছু বলেছে তোমাকে?”
দেবায়ন, “অনুর সাথে আমার মনোমালিন্য কেন হতে যাবে? সকাল থেকে তুমি যে রকম ব্যাবহার করছ তাতে অনুর মনে সন্দেহ হয়েছে। তাই বলছি, যে আমি কি তোমার চোখের সামনে থেকে চলে যাব?”
পারমিতা মাথা নিচু করে বলে, “তুমি যা ভাল বোঝো তাই কর দেবায়ন।”
দেবায়ন ধির পায়ে ঘরের ভেতরে ঢোকে। পারমিতার দেহের রক্ত শুকিয়ে যায়, নিচে স্বামী বসে, উপরে নিজেদের ঘরে ছেলে মেয়ে আছে। বুকের মধ্যে হাপর টানে, ধিরে ধিরে বিছানার উপরে উঠে বসে পারমিতা, দেবায়নের মুখের দিকে তাকাতে গিয়েও তাকাতে পারেন। দেবায়নের দৃষ্টি পারমিতার শুষ্ক চেহারার উপরে নিবদ্ধ। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে পারমিতার সামনে দাঁড়ায়। পারমিতা চোখ বন্ধ করে প্রমাদ গোনে। দেবায়ন বিছানার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে পারমিতার হাতে হাত রাখে। উষ্ণ হাতের পরশে পারমিতার দেহ কেঁপে ওঠে, চোখের পাতা ভিজে ওঠে।
দেবায়ন পারমিতার হাত মুঠি করে নিয়ে বলে, “মিমি” ডাক শুনে পারমিতা দুই চোখ চেপে বন্ধ করে দেয়, চিবুক বুকের উপরে নেমে আসে। দেবায়ন বলে, “মিমি, গতরাতে তুমি চলে যাবার আগে যে কথাগুলো বলেছিলে, সেগুলো আমি শুনেছি।”
পারমিতা কি বলবে কিছু বুঝে পায় না, হৃদয় কেঁপে ওঠে, দেবায়ন কি বলতে চলেছে। পারমিতার চোখের পাতা ভিজে চোখের কোল জলে ভরে আসে, ঠোঁট জোড়া তিরতির করে কেঁপে ওঠে। দেবায়ন বলে, “মিমি, আমি জানি তোমার হৃদয়ের অভিপ্রায়।”
পারমিতা জল ভরা চোখে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে কাঁপা কণ্ঠে অস্ফুট কেঁদে ওঠে, “না…”
দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে জানায় “হ্যাঁ।”
পারমিতা জিজ্ঞেস করে, “তুমি ঘুমিয়ে পরেছিলে দেবায়ন।”
দেবায়ন, “না মিমি, ঘুম আসতে গিয়েও এলনা শেষ পর্যন্ত।”
পারমিতা কেঁদে ফেলে, “আমি হতভাগী দেবায়ন, জীবনে কিছুই পেলাম না। আমার স্বামীর ভালোবাসা আমি পেলাম না, আমার মেয়ে আমাকে খারাপ চোখে দেখে। এমন সময়ে তুমি এলে একটা আলো নিয়ে, পথ দেখালে, টেনে তুললে। কিন্তু হৃদয় বড় অবুঝ দেবায়ন…”
দেবায়নের হাতের উপরে টপ টপ করে পারমিতার চোখের জল পরে, দেবায়ন ঠাণ্ডা কণ্ঠে পারমিতাকে বলে, “মিমি, অনু তোমাকে ফিরে পেয়েছে, অনুর ভালোবাসা তুমি নিজের মতন করে অর্জন করে নিও। কিন্তু মিমি, আমার ভালোবাসা শুধু মাত্র অনুপমা, তুমি যা চাও সেটা আমি তোমাকে দিতে পারি না। দুজনের ভালোর জন্য বলি, মন থেকে অইসব মুছে পরিবার সংসার নিজের মতন করে গুছিয়ে নাও। এখন তোমার সাথে অনুর সম্পর্ক ভালো হয়ে গেছে, গত রাতের মিস্টার সেনের কথাবার্তা শুনে মনে হল তিনি সব ভুলে তোমাকে আর তার এই পরিবারকে কাছে টেনে নেবেন। আমি চাই তুমি সেই পুরানো মিমি হয়ে যাও, সেই জম্মুর মিমি।”
পারমিতা, “কি করে দেবায়ন? আমার ভালোবাসার নামে তুমি ডাক দিয়েছ। সোমেশের কাছে যে আমি মিতা হয়ে গেছি, সোমেশ আমাকে মিমি বলে ডাকে না, দেবায়ন। তুমি আমার চোখের সামনে থাকবে সবসময়ে আর তোমার ভালোবাসার কথা বারেবারে মনে যাবে, আমি কি করব দেবায়ন? আমি তোমাকে দুরে যেতে বলতে পারিনা, কাছে আসতে বলতে পারি না। আমি নিজের কাছে হেরে গেছি দেবায়ন। গতকাল একবার মনে হয়েছিল আমি নিজেই সব ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাই। অনুকে দেখার জন্য তুমি আছো, কিন্তু ছেলেটার জন্য বুক কেঁপে উঠল আমার। অঙ্কনকে ছেড়ে যেতে পারলাম না।”
দেবায়ন, “মিমি, আমি যদি এখন তোমার মন রক্ষার্থে বলি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি তাহলে অনেক বড় মিথ্যে বলা হবে। মিমি, তুমি হারিয়ে যেও না আমাদের কাছ থেকে। আমি তোমাকে ভালোবাসি সেটা সত্যি কিন্তু সেই ভালোবাসা আর অনুর ভালোবাসার মাঝে অনেক তফাত আছে। তুমি অনুপমার জায়গা নিতে পার না মিমি। তুমি আমার কাছেই থাকবে, কিন্তু অনুর জায়গা সবসময়ে আমার বুকের বাম দিকে থাকবে।”
পারমিতা দেবায়নের হাত নিজের গালে চেপে কেঁদে ফেলে, “আমি জানি, তাই নিজেকে বড় পাপী মনে হয়েছে। আমি মেয়ের ভালোবাসা কেড়ে নিতে পারিনা দেবায়ন, সেই পাপ বোধে সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। গতরাতে আমি ঘুমাতে পারিনি, দেবায়ন।”
পারমিতার গালে আদর করে হাত বুলাতে বুলাতে দেবায়ন বলে, “আমি জানি মিমি, এই বন্ধ দরজার পেছনে তুমি সারারাত কেঁদেছিলে, আমি শুনেছি তোমার কান্না মিমি।”
পারমিতা, “আমি কি করব একটু বলে দিতে পার, দেবায়ন। মন যে একদম মানতে চাইছে না কাল থেকে।”
দেবায়ন পারমিতার মাথা নিচে টেনে কপালে চুমু খেয়ে বলে, “তোমাকে না আমি মিমি বলে ডেকেছি?”
পারমিতা মাথা নাড়ে, “হ্যাঁ”
দেবায়ন, “তাহলে আমার সুন্দরী মিমি, মিষ্টি মিমি আমাকে আগের মতন হ্যান্ডসাম বলে ডাকবে আর মুখে হাসি নিয়ে থাকবে। আমাদের ভালোবাসা একটু অন্য রকমের হোক মিমি। দুঃখ পেয়োনা মিমি, তোমাকে বুকে রাখতে পারছিনা তবে মনের গভীরে তোমার স্থান থাকবে।”
পারমিতা জল ভরা চোখে ঠোঁটে হাসি টেনে বলে, “হ্যান্ডসাম…”
দেবায়ন হেসে পারমিতার নরম গালে হাত বুলিয়ে বলে, “এই ত আমার মিমি। এইরকম না হাসলে তোমার মেয়ে আমাকে প্রশ্ন বাণে জর্জরিত করে মেরে ফেলবে। সেই সকাল থেকে অনু আমাকে জিজ্ঞেস করে যাচ্ছে, মায়ের কি হল, মায়ের কি হল। আমি শেষ পর্যন্ত কথা ঘুরিয়ে, গত রাতের কাকুর কথা কোম্পানির কথা, অঙ্কনের কথা বলেছি নিজেকে বাঁচাতে আর তোমাকে বাঁচাতে।”
পারমিতা দেবায়নের কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে, “তুমি একটা পাগল ছেলে হ্যান্ডসাম।”
দেবায়ন মনেমনে বলে “মা মেয়ে দুইজনে এক পাগলের প্রেমে, কি যে করি এখন।”
দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে বলে, “কি আর করা যাবে বল। এবারে চোখ মুছে ঠোঁটে হাসি নিয়ে ঘর ছেড়ে বাইরে বের হও। আজ রাতে মিস্টার সেনকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দাও। আজকে বেশি ড্রিঙ্ক করতে দিও না, পারলে নিজের ঠোঁটের রসে মিস্টার সেনকে ডুবিয়ে দিও।”
পারমিতা চোখের জল মুছে মিষ্টি হেসে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “হ্যান্ডসাম তোমার কাছে সবার জন্য কিছু না কিছু ওষুধ আছে তাই না?”
দেবায়ন হেসে বলে, “যাদের সত্যি ভালো লাগে তাদের জন্য আমার কাছে ভালোবাসা আছে, যাদের ভালো লাগে না তাদের জন্য ওষুধ আছে। তুমি আমার মিষ্টি মিমি, তোমার জন্য ভালোবাসা সবসময়ে থাকবে। এবারে একটা দারুন লঞ্জারি পরে নাও, বেশ সেক্সি সাজ, ঠোঁটে গাড় লিপস্টিক, চোখের কোণে কাজল, গলায় হার কানে দুল। আর কাল রাতে আমাকে যেমন ম্যাসাজ করে দিয়েছিলে, ঠিক তেমনি মিস্টার সেনকে ম্যাসাজ করে দিও, আজ রাতে দুইজনে পাগল করে দুইজনকে মাতিয়ে দিও, ভেবে নিও তোমার সোমেশ আবার তোমার কাছে ফিরে এসেছে।”
পারমিতা, “যাও যাও, বেশি বোকো না। বড্ড ফাজিল হয়ে যাচ্ছ তুমি, হ্যান্ডসাম। আমি কি করব না করব সে ফিরিস্তি দিয়ে দিলে। আজ রাতে তোমার পোয়াবারো, দু’দুটো মেয়েকে নিয়ে রাত কাটাবে। ইসসস… ”
দেবায়ন উঠে দাঁড়িয়ে বলে, “হ্যাঁ যাই গিয়ে দেখি মেয়ে দুটো কি করছে। আমার ডার্লিং আমার খোঁজ না পেলে রেগে যাবে।”
পারমিতা বিছানা ছেড়ে দেবায়নের সামনে উঠে দাঁড়ায়, “এত কিছু বললে, একটু দাঁড়িয়ে দেখে যাবে না তোমার মিমিকে?”
পারমিতা দেবায়নকে জড়িয়ে ধরতে যায়, দেবায়ন দুই পা পেছনে সরে গিয়ে বলে, “না মিমি, আজকে তুমি শুধু মিস্টার সেনের। আজকের এই ভালোবাসার অধিকার আমার নেই, তোমাকে দেখার অধিকার আমার নেই। তুমি যাও মিমি, কালকের কথাবার্তা শুনে মনে হল মিস্টার সেন বদলে গেছে, নিজেকে ওর কোলে উজাড় করে দাও।”
পারমিতার চোখ দুটি চিকচিক করে ওঠে, ঠোঁটে মিষ্টি হাসি মাখিয়ে বলে, “তোমাকে বড্ড ভালোবাসি, তুমি যা বলবে আমি তাই করব হ্যান্ডসাম।”
পারমিতার কথা শুনে দেবায়ন প্রাণপণে নিজেকে আয়ত্তে রাখে। সামনে দাঁড়িয়ে অতীব সুন্দরী আকর্ষণীয় মহিলার চোখ আবার ওকে ডাকছে, এই ডাক উপেক্ষা করার মতন শক্তি যোগাড় করে দেবায়ন। দুই হাত মুঠি করে চোয়াল শক্ত করে হাসে পারমিতার চিকচিক করা চোখের দিকে তাকিয়ে। পারমিতা ঠোঁট কামড়ে দেবায়নের মুখের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে।
দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে বলে, “গুড নাইট মিমি, হ্যাভ আ প্যাসোনেট নাইট উইথ মিস্টার সেন। আমার দিকে আর ওই রকম ভাবে তাকিয়ো না, দোহাই মিমি।”
দেবায়ন আর বেশিক্ষন দাঁড়ায় না পারমিতার সামনে, দেবায়ন বুঝে গেছে পারমিতাকে ফিরিয়ে এনেছে কিন্তু বেশিক্ষন ওর চোখের সামনে দাঁড়ালে দুই জনে নিজেদেরকে সামলে রাখতে পারবে না।
দেবায়ন পারমিতার ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যায়, সামনে অনুপমার বন্ধ দরজার দিকে তাকায়। মাথার সব শিরা উপশিরা পারমিতাকে বুঝাতে বুঝাতে পেঁচিয়ে গেছে, সেই সাথে বুকের ভেতর টা একসময় পেঁচিয়ে যাবার উপক্রম হয়। বুক ভরে শ্বাস নেয় দেবায়ন, মাথার প্যাঁচানো অলিগলি থেকে নিজেকে মুক্ত করে।