26-09-2020, 07:37 PM
ঋতুপর্ণা ছেলের চোখের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে, সত্যি বলছে না মিথ্যে বলছে। ছেলে বড় হয়েছে, সম্প্রতি ছেলের আচরনে অনেক বদল হয়েছে। যেমন ভাবে ওর সাথে কথা বলে, ওকে জড়িয়ে ধরে মনে হয় ওর ছেলে নয় অন্য এক সুপুরুষ ওকে জড়িয়ে ধরে আছে। প্রায় নয় দশ বছর আগে কেনা ওই তুঁতে রঙের বেনারসি, সুভাষ থাকতে দুই এক বার শাড়িটা পড়েছিল। ব্লাউজে শুধু মাত্র দুটো দড়ি, নিজে থেকে বাঁধা যায়না তাই আর পরা হয়ে ওঠেনি। তবে হয়ত এইবারে ছেলের সাহায্যে ওই শাড়ি পড়তে হবে। ছেলের সাথে খুনসুটি মারামারি এটা ওদের রোজ নামচা, তবে এতটা হয়ত এর আগে প্রশ্রয় দেয়নি ঋতুপর্ণা। সেদিনের বৃষ্টি ভেজা হাওয়া যেন আদি আর ঋতুপর্ণাকে এক নতুন অর্থ জানাতে এসেছে ওদের মা আর ছেলের সম্পর্কের।
তাই কিঞ্চিত অবিশ্বাসের সাথে জিজ্ঞেস করে, “সত্যি বলছিস’ত নাকি...”
আদি সঙ্গে সঙ্গে মাথা ঝাঁকিয়ে উত্তর দেয়, “কি যে বল না তুমি। নাও নাও শাড়ি কিনতে হলে কিনে ফেলো।”
সুন্দর পাতলা ফিনফিনে শাড়িটা শেষ পর্যন্ত ছেলের আবদারে কিনে ফেলে ঋতুপর্ণা, কিন্তু কোথায় পরে বের হবে। এই সব শাড়ি পরে মহিলারা বিশেষ করে পার্টিতে যায় কিন্তু সুভাষের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে কোনোদিন কোন পার্টিতে যায়নি। যদি প্রদীপ কোনোদিন ওকে নিয়ে কোন পার্টিতে যায় তাহলে এই শাড়ি পরবে। দোকান থেকে বেড়িয়ে, চারপাশের লোক দেখতে দেখতে আবার পথ চলা। এইবারে ছেলের জন্য একটা জিন্স আর শার্ট না হয় একটা সুট কিনতে হয়। দুই বছর আগে, কলেজে যখন ঢুকেছিল তখন একটা ক্রিম রঙের সুট কিনে দিয়েছিল, এইবারে ছেলে এক টগবগে যুবক হয়ে গেছে, একটু গাড় রঙের সুটে ওকে আরো বেশি মানাবে। ছেলেকে নিয়ে সুটের দোকানে ঢুকতে যাবে তখন আদি জানায় আগে মায়ের জিন্স টপ কিনতে হবে তবে সুট কিনবে।
আদি নাছোড়বান্দা, মাকে জিন্সে দেখতে চায়। শেষ পর্যন্ত আদিকে নিয়ে ঋতুপর্ণা একটা মেয়েদের আধুনিক পোশাকের দোকানে ঢুকে পরে। ম্যানেকুইন গুলো সব ছোট ছোট ড্রেস পরা, কেউ ছোট স্কারট কারুর গায়ে কাঁচুলি মার্কা টপ, কেউ জিন্সের ক্যাপ্রি পরা, কারুর ওপরে ছোট চাপা পার্টি পোশাক। বয়স কম হলে ঋতুপর্ণা এক নিমেষে ওই পোশাক কিনে ফেলত। কিন্তু ছেলে বড় হয়েছে ভেবেই ঋতুপর্ণার মনে একটু লজ্জা একটু বাধার সঞ্চার হয়।
আদি এদিক ওদিকে তাকিয়ে ম্যানেঙ্কুইন গুলো দেখে। পুতুল গুলো হটাত করে ওর রূপসী সুন্দরী লাস্যময়ী মায়ের রূপ ধারন করে নেয়। কোন পোশাকে মায়ের নরম কিঞ্চিত মেদযুক্ত পেট দেখা যাচ্ছে সেই সাথে সুগভীর নাভি, কোন পোশাকে মায়ের সুগোল পাছা জোড়া সম্পূর্ণ দেখা যাচ্ছে, পার্টি পোশাকে মায়ের রোমহীন পুরুষ্টু ঊরু যুগল সম্পূর্ণ অনাবৃত হয়ে গেছে, চাপা জিন্সের ক্যাপ্রিতে মায়ের সুগোল পাছা জোড়ার আকার পরিষ্কার ফুটে উঠেছে। ছোট টপের ভেতর থেকে মায়ের ভারী সুডৌল স্তন যুগলের অনেকটাই উন্মুক্ত হয়ে গেছে। আদির মাথা গুলিয়ে যায় মাকে এই সব ছোট পোশাকে দেখে। যদিও আদি কোনোদিন মাকে এইসব ক্ষুদ্র পোশাকে অথবা নগ্ন রূপ দেখেনি তাও মানস চক্ষে মাকে এই পোশাকের মধ্যে একে ওর লিঙ্গ কঠিন হয়ে নড়াচড়া করতে শুরু করে দেয়। মাথা ঝাঁকিয়ে আদি মাথার ভেতর থেকে মায়ের এই রূপ বের করে দিয়ে অন্য দিকে তাকায়।
দোকানি ঋতুপর্ণাকে জিজ্ঞেস কি ধরনের জিন্স কিনতে চায়। কোমরের সাইজ জিজ্ঞেস করলে উত্তরে ঋতুপর্ণা বলে, “তিরিশ তবে...”
ঋতুপর্ণার হয়ে আদি উত্তর দেয়, “বেশ সুন্দর একটা টাইট জিন্স আর ক্যাপ্রি দেখান।নীল রঙ অথবা সাদা রঙের হলে আরো ভালো হয়।”
ঋতুপর্ণা ভুরু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকিয়ে কুনুইয়ের খোঁচা মেরে ফিসফিস করে বলে, “বাড়ি চল, একবার তোকে হাতের কাছে পাই সুদে আসলে এর প্রতিশোধ নেব দেখে নিস।” মিষ্টি মৃদু ব্যাথায় আদি ককিয়ে ওঠে।
প্রেমিক যুগলের ইয়ার্কি মজার খেলা দেখে দোকানি মিচকি হেসে একটার পর একটা জিন্স দেখাতে শুরু করে। দোকানি কি আর জানে এই যুগলের আসল সম্পর্ক? আদির চাপাচাপিতে ঋতুপর্ণা দুটো জিন্স কিনে নিল একটা নীল একটা কালো, দুটো জিন্সের ক্যাপ্রি কেনা হল একটা সাদা অন্যটা ঘিয়ে রঙের। দোকানিকে ওদের বলল, পাশে ট্রায়াল রুম আছে সেখানে জিন্স পরে দেখতে পারে। কিন্তু আদি নারাজ, এই সব শপিং মলের ট্রায়াল রুমে অনেক সময় লুকানো ক্যামেরা রাখা থাকে।
তাই ঋতুপর্ণা চাইলেও জিন্স পরে দেখতে চাইলেও আদি মানা করে দেয়, “বাড়ি গিয়ে পরবে এইখানে পড়ার দরকার নেই। যদি ফিটিং না হয় তাহলে ফেরত দেওয়া যাবে।”
ঋতুপর্ণা জিজ্ঞেস করে, “কেন রে কি হল? যদি বাড়ি গিয়ে দেখি হচ্ছে না তাহলে আবার আসতে হবে।”
ঝাঁঝিয়ে ওঠে আদি, “সে আসা যাবে খানে কিন্তু এই ট্রায়াল রুমে তোমাকে ট্রাই করতে হবে না।” দোকানিকে জিজ্ঞেস করে আদি, “যদি ফিটিং না হয় তাহলে কিন্তু ফেরত দিয়ে যাবো।”
দোকানি মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ বলে। চারখানা জিন্স, বেশ কয়েকটা টপ আর ফ্রিল শার্ট কেনা হয়। এইবারে ঋতুপর্ণা ছেলেকে নিয়ে সুটের দোকানে ঢোকে। ছেলের জন্য একটা দামী রেমন্ডের ছাই রঙের সুট কেনে ঋতুপর্ণা। অনেকদিনের ইচ্ছে ছেলে একটা চকচকে ছাই রঙের সুট পরুক। আদিকে ট্রায়াল রুমে ঢুকিয়ে সেই সুট পড়িয়ে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দেখে। নিস্পলক নয়নে ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে ঋতুপর্ণা। ওর কোলের ছেলে আর ছোটটি নেই, সুট পরে এক যুবক দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে মিচকি হেসে ওকে যেন ডাক দেয়। সুট ছেড়ে আবার নিজের জিন্স আর শার্ট পরে বেড়িয়ে আসে আদি।
মিষ্টি হেসে আলতো মাথা দোলায় ঋতুপর্ণা, “তোকে ভীষণ হ্যান্ডসাম লাগছিল ওই সুটে। এইবারে তোর জন্য কয়েকটা ডিজাইনার শার্ট কিনলে কেমন হয়?”
মায়ের কাছে হ্যান্ডসাম আখ্যা পেয়ে বুকের ভেতরটা সঙ্গে সঙ্গে নেচে ওঠে। ওই লাল ঠোঁটের মিষ্টি মাদকতাময় হাসি ছোট কালো তিল আদিকে মাতাল করে দেয়। সুট কিনে দোকান থেকে বেড়িয়ে মাকে বলে, “শার্ট অনেক আছে চল বাড়ি যাই। অনেক দেরি হয়ে গেছে।”
ঋতুপর্ণা এইবারে মুখ ভার করে নেয়, “কেন ডিজাইনার শার্ট পড়তে আপত্তি কোথায়?”
মায়ের দিকে ঝুঁকে আদি বলে, “একটু কান পাতো, বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে।”
সত্যি’ত এতক্ষণে জমাট শপিং মলের লোকের ভিড়ে বৃষ্টির আওয়াজ ওর কানেই যায়নি। এইদিকে রাত সাড়ে ন’টা বেজে গেছে। বৃষ্টির জন্য মলের ভেতরে লোকজনের ভিড় যেন আরো উপচে পড়েছে। যাদের কেনাকাটা হয়ে গেছে তারা বের হতে পারছে না, যারা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল ট্যাক্সির অথবা বাসের অপেক্ষায় তারাও মলে এসে আশ্রয় নিয়েছে। ভিড়ের থেকে আগলে একপাশে মা আর ছেলে দাঁড়িয়ে পরে। আদির হাতে কেনাকাটার ব্যাগ আর ছাতা, ঋতুপর্ণার চেহারায় উদ্বেগ ফুটে ওঠে, এই বৃষ্টি মাথায় করে বাড়ি ফিরবে কি করে, ভাগ্যিস ওদের গাড়ি আছে তাই বাঁচোয়া। ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে ওর বাজু শক্ত করে ধরে এক নিরাপত্তার হাওয়া ওর মনে দোলা দেয়। এই ভিড়ে একা নয় ঋতুপর্ণা। মায়ের দেহের উত্তাপ আদির ঋজু কাঠামোতে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগে না, কারন বাজুর ওপরে মায়ের কোমল স্তন জোড়া পিষে গেছে। মা হয়ত অজান্তেই এইভাবে ওর পাশে সেটে দাঁড়িয়ে কিন্তু তাও মাকে দেখে আদির কেমন যেন মনে হয়।
ছেলেকে বলে ঋতুপর্ণা, “কখন বাড়ি পৌঁছাবো ঠিক নেই তার চেয়ে ভালো এইখানে কোন রেস্তুরেন্তে খেয়ে যাই।” আদি মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানায়, বাইরে খেয়ে নিলেই ভালো। বৃষ্টি মাথায় করে বাড়ি পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাবে। বাড়ি গিয়ে আবার মা রান্না বসাবে তারপরে রাতের খাবার সে অনেক হ্যাপা।
মা আর ছেলে একটা বড় রেস্তুরেন্তের দিকে হাঁটা লাগায়। ভিড় বাঁচিয়ে কখন যে আদির বাম হাত ঋতুপর্ণার ডান হাত মুঠি করে ধরে নিয়েছে সেটা দুইজনের মধ্যে কেউ টের পায় না। হাতের তালুর সাথে হাতের তালু মিশে যায়, মায়ের চাঁপার কলির মতন নরম পাঁচ আঙ্গুলের সাথে ছেলের শক্ত আঙ্গুল পেঁচিয়ে যায়। আঙ্গুলে সাথে আঙ্গুল পেঁচিয়ে, হাতে হাত দিয়ে সদ্য প্রেমে বিভোর দুই প্রেমিক যুগলের মতন চলতে চলতে রেস্তুরেন্তে ঢুকে পরে আদি আর ঋতুপর্ণা।
বেশ সাজানো গুছানো চিনে খাবারের রেস্টুরেন্ট। ঋতুপর্ণা চাইনিজ খেতে খুব ভালোবাসে তাই মাঝে মাঝেই বাড়িতে হাক্কা নুডুলস অথবা থুপ্পা তৈরি হয় আর তার সাথে চিকেন মাঞ্চুরিয়ান অথবা ফ্রাইড প্রন আর ফ্রেস চিকেন সুপ। একটা কোনার টেবিলে পাশাপাশি বসে পরে, আদির বাম দিকের চেয়ারে ঋতুপর্ণা বসে। ঋতুপর্ণার ঠিক পাশে একটা বিশাল কাঁচের জানালা। মায়ের সাথে রেস্তুরেন্তে খাওয়া মানে শুধু পেটের জন্য খাওয়া আজেকেও সেই এক ব্যাপার। কিন্তু এই রেস্টুরেন্ট একটু ভিন্ন ধরনের, বেশ সুন্দর পরিবেশ, মৃদু আলোয় আলোকিত চারপাশ। টেবিলের মাঝখানে একটা ছোট ফুলদানিতে দুটো গোলাপ রাখা, যদিও এতরাতে সেই জোড়া গোলাপ বেশ শুকিয়ে গেছে। একদিকের বিশাল কাঁচের জানালায় বৃষ্টির ছাঁট এসে লাগছে, সামনের রাস্তায় গাড়ির আলোয় আর ছাতা মাথায় লোকেরা। বৃষ্টি দেখে ঋতুপর্ণার মন কেমন করে ওঠে, এই বৃষ্টি ভেজা রাত্রে কোন পুরুষের সান্নিধ্য গায়ে মাখাতে তৎপর হয়ে ওঠে। প্রথম বার ওর স্বামী সুভাষের সাথে প্রেমের মিলনের কথা মনে পড়তেই দেহের রোমকূপ খাড়া হয়ে যায়।
আদি মেনু কার্ড দেখে মাকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার পছন্দের খাবার অর্ডার দেই না অন্য কিছু খাবে?”
হারিয়ে গিয়েছিল ঋতুপর্ণা, ছেলের গলা শুনে সম্বিত ফিরিয়ে নিয়ে এসে উদাস কণ্ঠে বলে, “হ্যাঁ ওই হাক্কা নুডুলস আর চিলি চিকেন নিয়ে নে। একটা প্লেট নিলেই হবে আমি রাতে বেশি খাবো না।”
মায়ের কাঁধে আলতো ধাক্কা মেরে মিচকি হেসে আদি বলে, “কেন কেন, মিস্টার বিশ্বাসের জন্য ডায়টিং করছ নাকি?”
কিঞ্চিত লজ্জা পেয়ে যায় ঋতুপর্ণা, “না রে, বেশি খেলে বদ হজম হয়ে যাবে। আর জানিস ত আমি রাতে বেশি খাই না।” রাতের বেলা ঋতুপর্ণার খাদ্য স্যালাড অথবা এক গেলাস দুধ আর ফল। বিকেলে নাচের ক্লাসের পরে বেশ ভারী খাবার খেয়ে নেয় কিন্তু রাতে বেশি খায় না একদম। এর ফলে ওর দেহে মেদ জমেনি কোনোদিন।
ওয়েটার ডেকে অর্ডার দিয়ে মায়ের সাথে গল্প করতে বসে আদি, “তোমার কলেজ কেমন চলছে?”
ঋতুপর্ণা মাথা দোলায়, “বেশ ভালো। আজকালকার ছেলে মেয়ে গুলো সব উচ্ছন্নে চলে গেছে।” বলেই হেসে ফেলে, “এই সেদিন ক্লাস নাইনের দুটো মেয়ে নাকি একে অপরকে চুমু খেয়েছে সেই নিয়ে কি তুলকালাম। করিডোরে যে সারভিলেন্স ক্যামেরা লাগানো ছিল তাতে ধরা পড়েছে।”
আদি হেসে ফেলে, “আজকের যুগের ছেলে মেয়েদের মানসিক অনুভুতি উন্নতি করছে তাহলে বল।”
ছেলের সাথে যৌনতা নিয়ে কখন এর আগে আলোচনা করেনি। কিন্তু সেদিন যেন ওদের সীমানা হারিয়ে যাচ্ছিল বারেবারে, প্রথমে ওই শাড়ির দোকানে, তারপরে জোর করে ওকে জিন্স কেনাল। তবে এই কলেজের ব্যাপার ঠিক যৌনতার আওতায় পরে না।
ঋতুপর্ণা বাঁকা হাসি হেসে বলে, “উন্নতি করছে না ছাই। মেয়ে দুটো নাকি আবার বুক ফুলিয়ে বলেছে যে ওরা দুইজনা দুইজনকে ভালোবাসে।”
আদি হেসে ফেলে, “ভালো ত, ভালোবাসা কি শুধু মাত্র এক নারী আর এক পুরুষের মধ্যে হবে? এমন কি কোথাও লেখা আছে নাকি? ভালোবাসা যে কোন দুইজনার মধ্যে হতে পারে, কোথাও স্নেহ মায়া মমতা, কোথাও তীব্র আকর্ষণ কোথাও শুধু মাত্র শারীরিক চাহিদা থাকে। গে লেসবিয়ান নিয়ে কত সিনেমা হয়ে গেছে তার খোঁজ রাখো?”
“সমকামী” “শারীরিক চাহিদা” কথাগুলো কানে যেতেই ঋতুপর্ণার কান কিঞ্চিত লাল হয়ে যায়। ছেলের দিকে মিচকি হেসে উত্তর দেয়, “সেটা ঠিক কিন্তু একটা মেয়ে অন্য মেয়ের প্রতি কি করে আকৃষ্ট হতে পারে?”
আদি হেসে বলে, “তার মানে তুমি মানো না যে একটা মেয়ে অন্য মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে।”
ঋতুপর্ণা অল্প মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়, “মানি না যে তা নয় তবে কোনোদিন এমন দেখিনি তাই বললাম। ইদানিং যা দিনকাল পড়েছে আর সাবানা আজমির ফায়ার দেখার পরে কি আর বলব বল।” বলেই হেসে ফেলে ঋতুপর্ণা।
আদি মাকে খোঁচা মেরে মজা করে জিজ্ঞেস করে, “কোনোদিন কোন মেয়েকে দেখে তোমার মনে হয়নি একটু...”
ঋতুপর্ণা ছেলের মুখে এই কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে টেবিলের তলা দিয়ে আদির জঙ্ঘার ওপরে জোরে একটা চাঁটি মারে, কিন্তু সেই চাঁটি আদির জঙ্ঘার বদলে ঊরুসন্ধির ওপরে গিয়ে পরে। মায়ের পাশে বসে বসে এতক্ষণ মায়ের সাথে “সমকামী” “লেসবিয়ান” নিয়ে আলোচনা করতে করতে আদির লিঙ্গ খানিক ফুঁসেছিল। মায়ের নরম হাতের চাঁটি সোজা ঊরুসন্ধির ওপরে পড়তেই লিঙ্গ আরো বেশি করে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। ঋতুপর্ণার হাতের তালুর নীচে আদির কঠিন লিঙ্গ চাপা পরে যায়। ক্ষণিকের জন্য ঋতুপর্ণার হাত অবশ হয়ে যায়। নরম হাতের তালুর নীচে ছেলের ভিমকায় লিঙ্গের পরশে ঋতুপর্ণার দেহে আচমকা এক বিদ্যুতের ঝিলিক খেলে যায়। ওর হাত ওর শরীর আর ওর বশে থাকে না, আপনা হতেই হাত আলতো করে মুঠি হয়ে যায় ছেলের ঊরুসন্ধির ওপরে। জিন্সের ওপর দিয়েই কঠিন উত্থিত লিঙ্গ একটু খানি চেপে ধরে। যদিও সবকিছু কয়েক স্কেন্ডের মধ্যে ঘটে যায়, কিন্তু মা আর ছেলে দুইজনে বুঝতে পারে কি ভুল ওরা করেছে। ঋতুপর্ণার মন না চাইলেও ওর হাত ঠিক ছেলের লিঙ্গের আকার অবয়াব মেপে ওর মনে ছবি এঁকে দেয়। মায়ের নরম হাতের স্পর্শে হটাত আদির কোমর উঁচিয়ে যায় চেয়ার থেকে, মায়ের হাতের ওপরে নিজের লিঙ্গ চেপে ধরতে উদ্যত হয় কিন্তু ততখনে লজ্জায় ঋতুপর্ণা হাত সরিয়ে নিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে।
ছেলের সাথে এক রোম্যান্টিক রেস্তুরেন্তে বসে সমকামী যৌন চর্চা করছে, মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি ওর? মায়ের সাথে ছেলের মাঝে মাঝেই নানা সিনেমা বিষয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। এই যেমন, সানি লিওন নাকি সিনেমায় নামবে তাই নিয়ে একদিন মায়ের সাথে বেশ চর্চা হয়ে গেল। আগেকার সিনেমায় চুমুর সিন এলেই দুটো ফুল দেখান হত আজকাল অভিনেতা অভিনেত্রীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে মুখের মধ্যে জিব ঢুকিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা শুধু চুমু খেয়ে যায়। শুধু কি চুম্বনে আটকে আছে, কত সিনেমায় খোলা পিঠের নায়িকা বসে থাকে, কোন সিনেমায় প্রায় উলঙ্গ নায়কের নীচে প্রায় উলঙ্গ নায়িকা শুয়ে। ওদের খাবার চলে আসে। আদির খুব খিধে পেয়েছিল তাই আর কথা না বাড়িয়ে খেতে শুরু করে। ছেলেকে ওইভাবে খেতে দেখে ঋতুপর্ণার মন গলে যায়। ইসসস এক কাপ চা ছাড়া ছেলেটা বিকেলে কিছুই খেয়ে বের হয়নি। ওর ভুল, একটু উপমা অথবা ডিমের টোস্ট করে দিলে হত।
বেশ খানিকক্ষণ টেবিল একদম চুপ কারুর মুখে কোন কথা নেই। পাশা পাশি বসে থেকে এত নিস্তব্ধতা ঋতুপর্ণাকে তাড়িয়ে বেড়ায় তাই ওই নিস্তব্ধতা কাটানোর জন্য ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে তোর ওই গার্ল ফ্রেন্ডের কি হল?”
আচমকা তনিমার কথা শুনে বিষম খায় আদি। খাওয়া ছেড়ে মাথা উঠিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে, “কি হবে আবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল।”
ঋতুপর্ণা মিচকি হেসে মজার ছলে ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, “তোর আবার ছেলে পছন্দ নয়’ত? কি জানি বাবা, শেষ পর্যন্ত একটা ছেলেকে বাড়ি এনে তুললি শেষ পর্যন্ত।”
আদি আর হাসি থামাতে পারে না, “কি যে বল না তুমি। না না ওই সব কিছু নয়, মনের মিল হয়নি তাই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল।” মৃদু ধ্যাতানি দিয়ে মাকে চুপ করিয়ে বলে, “তাড়াতাড়ি খাও ত দেখি। বৃষ্টি একটু ধরে এসেছে বাড়ি ফিরতে হবে।”
কাঁচের জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল ঋতুপর্ণা, বৃষ্টিটা একটু ধরে এসেছে। রাস্তায় লোক চলাচল বেড়ে গেছে। এতক্ষণ যারা দোকানের ভেতরে অথবা এই মলের ভেতরে বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করে দাঁড়িয়েছিল তারা সবাই ছাতা মাথায় বেড়িয়ে পড়েছে। ট্যাক্সি চলাচল বাসের আনাগোনা বেড়ে গেছে। তাড়াতাড়ি মা আর ছেলে খাওয়া শেষ করে রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে পরে। শপিং মলে লোকের ভিড় অনেক কমে গেছে। ঘড়ি দেখে আদি, রাত সাড়ে দশটা বাজে। পারকিঙ্গে এসে গাড়ি খুলে দুইজনে গাড়িতে উঠে পরে। পেছনের সিটে কেনাকাটা করা ব্যাগ গুলো রেখে দেয়।
তাই কিঞ্চিত অবিশ্বাসের সাথে জিজ্ঞেস করে, “সত্যি বলছিস’ত নাকি...”
আদি সঙ্গে সঙ্গে মাথা ঝাঁকিয়ে উত্তর দেয়, “কি যে বল না তুমি। নাও নাও শাড়ি কিনতে হলে কিনে ফেলো।”
সুন্দর পাতলা ফিনফিনে শাড়িটা শেষ পর্যন্ত ছেলের আবদারে কিনে ফেলে ঋতুপর্ণা, কিন্তু কোথায় পরে বের হবে। এই সব শাড়ি পরে মহিলারা বিশেষ করে পার্টিতে যায় কিন্তু সুভাষের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে কোনোদিন কোন পার্টিতে যায়নি। যদি প্রদীপ কোনোদিন ওকে নিয়ে কোন পার্টিতে যায় তাহলে এই শাড়ি পরবে। দোকান থেকে বেড়িয়ে, চারপাশের লোক দেখতে দেখতে আবার পথ চলা। এইবারে ছেলের জন্য একটা জিন্স আর শার্ট না হয় একটা সুট কিনতে হয়। দুই বছর আগে, কলেজে যখন ঢুকেছিল তখন একটা ক্রিম রঙের সুট কিনে দিয়েছিল, এইবারে ছেলে এক টগবগে যুবক হয়ে গেছে, একটু গাড় রঙের সুটে ওকে আরো বেশি মানাবে। ছেলেকে নিয়ে সুটের দোকানে ঢুকতে যাবে তখন আদি জানায় আগে মায়ের জিন্স টপ কিনতে হবে তবে সুট কিনবে।
আদি নাছোড়বান্দা, মাকে জিন্সে দেখতে চায়। শেষ পর্যন্ত আদিকে নিয়ে ঋতুপর্ণা একটা মেয়েদের আধুনিক পোশাকের দোকানে ঢুকে পরে। ম্যানেকুইন গুলো সব ছোট ছোট ড্রেস পরা, কেউ ছোট স্কারট কারুর গায়ে কাঁচুলি মার্কা টপ, কেউ জিন্সের ক্যাপ্রি পরা, কারুর ওপরে ছোট চাপা পার্টি পোশাক। বয়স কম হলে ঋতুপর্ণা এক নিমেষে ওই পোশাক কিনে ফেলত। কিন্তু ছেলে বড় হয়েছে ভেবেই ঋতুপর্ণার মনে একটু লজ্জা একটু বাধার সঞ্চার হয়।
আদি এদিক ওদিকে তাকিয়ে ম্যানেঙ্কুইন গুলো দেখে। পুতুল গুলো হটাত করে ওর রূপসী সুন্দরী লাস্যময়ী মায়ের রূপ ধারন করে নেয়। কোন পোশাকে মায়ের নরম কিঞ্চিত মেদযুক্ত পেট দেখা যাচ্ছে সেই সাথে সুগভীর নাভি, কোন পোশাকে মায়ের সুগোল পাছা জোড়া সম্পূর্ণ দেখা যাচ্ছে, পার্টি পোশাকে মায়ের রোমহীন পুরুষ্টু ঊরু যুগল সম্পূর্ণ অনাবৃত হয়ে গেছে, চাপা জিন্সের ক্যাপ্রিতে মায়ের সুগোল পাছা জোড়ার আকার পরিষ্কার ফুটে উঠেছে। ছোট টপের ভেতর থেকে মায়ের ভারী সুডৌল স্তন যুগলের অনেকটাই উন্মুক্ত হয়ে গেছে। আদির মাথা গুলিয়ে যায় মাকে এই সব ছোট পোশাকে দেখে। যদিও আদি কোনোদিন মাকে এইসব ক্ষুদ্র পোশাকে অথবা নগ্ন রূপ দেখেনি তাও মানস চক্ষে মাকে এই পোশাকের মধ্যে একে ওর লিঙ্গ কঠিন হয়ে নড়াচড়া করতে শুরু করে দেয়। মাথা ঝাঁকিয়ে আদি মাথার ভেতর থেকে মায়ের এই রূপ বের করে দিয়ে অন্য দিকে তাকায়।
দোকানি ঋতুপর্ণাকে জিজ্ঞেস কি ধরনের জিন্স কিনতে চায়। কোমরের সাইজ জিজ্ঞেস করলে উত্তরে ঋতুপর্ণা বলে, “তিরিশ তবে...”
ঋতুপর্ণার হয়ে আদি উত্তর দেয়, “বেশ সুন্দর একটা টাইট জিন্স আর ক্যাপ্রি দেখান।নীল রঙ অথবা সাদা রঙের হলে আরো ভালো হয়।”
ঋতুপর্ণা ভুরু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকিয়ে কুনুইয়ের খোঁচা মেরে ফিসফিস করে বলে, “বাড়ি চল, একবার তোকে হাতের কাছে পাই সুদে আসলে এর প্রতিশোধ নেব দেখে নিস।” মিষ্টি মৃদু ব্যাথায় আদি ককিয়ে ওঠে।
প্রেমিক যুগলের ইয়ার্কি মজার খেলা দেখে দোকানি মিচকি হেসে একটার পর একটা জিন্স দেখাতে শুরু করে। দোকানি কি আর জানে এই যুগলের আসল সম্পর্ক? আদির চাপাচাপিতে ঋতুপর্ণা দুটো জিন্স কিনে নিল একটা নীল একটা কালো, দুটো জিন্সের ক্যাপ্রি কেনা হল একটা সাদা অন্যটা ঘিয়ে রঙের। দোকানিকে ওদের বলল, পাশে ট্রায়াল রুম আছে সেখানে জিন্স পরে দেখতে পারে। কিন্তু আদি নারাজ, এই সব শপিং মলের ট্রায়াল রুমে অনেক সময় লুকানো ক্যামেরা রাখা থাকে।
তাই ঋতুপর্ণা চাইলেও জিন্স পরে দেখতে চাইলেও আদি মানা করে দেয়, “বাড়ি গিয়ে পরবে এইখানে পড়ার দরকার নেই। যদি ফিটিং না হয় তাহলে ফেরত দেওয়া যাবে।”
ঋতুপর্ণা জিজ্ঞেস করে, “কেন রে কি হল? যদি বাড়ি গিয়ে দেখি হচ্ছে না তাহলে আবার আসতে হবে।”
ঝাঁঝিয়ে ওঠে আদি, “সে আসা যাবে খানে কিন্তু এই ট্রায়াল রুমে তোমাকে ট্রাই করতে হবে না।” দোকানিকে জিজ্ঞেস করে আদি, “যদি ফিটিং না হয় তাহলে কিন্তু ফেরত দিয়ে যাবো।”
দোকানি মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ বলে। চারখানা জিন্স, বেশ কয়েকটা টপ আর ফ্রিল শার্ট কেনা হয়। এইবারে ঋতুপর্ণা ছেলেকে নিয়ে সুটের দোকানে ঢোকে। ছেলের জন্য একটা দামী রেমন্ডের ছাই রঙের সুট কেনে ঋতুপর্ণা। অনেকদিনের ইচ্ছে ছেলে একটা চকচকে ছাই রঙের সুট পরুক। আদিকে ট্রায়াল রুমে ঢুকিয়ে সেই সুট পড়িয়ে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দেখে। নিস্পলক নয়নে ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে ঋতুপর্ণা। ওর কোলের ছেলে আর ছোটটি নেই, সুট পরে এক যুবক দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে মিচকি হেসে ওকে যেন ডাক দেয়। সুট ছেড়ে আবার নিজের জিন্স আর শার্ট পরে বেড়িয়ে আসে আদি।
মিষ্টি হেসে আলতো মাথা দোলায় ঋতুপর্ণা, “তোকে ভীষণ হ্যান্ডসাম লাগছিল ওই সুটে। এইবারে তোর জন্য কয়েকটা ডিজাইনার শার্ট কিনলে কেমন হয়?”
মায়ের কাছে হ্যান্ডসাম আখ্যা পেয়ে বুকের ভেতরটা সঙ্গে সঙ্গে নেচে ওঠে। ওই লাল ঠোঁটের মিষ্টি মাদকতাময় হাসি ছোট কালো তিল আদিকে মাতাল করে দেয়। সুট কিনে দোকান থেকে বেড়িয়ে মাকে বলে, “শার্ট অনেক আছে চল বাড়ি যাই। অনেক দেরি হয়ে গেছে।”
ঋতুপর্ণা এইবারে মুখ ভার করে নেয়, “কেন ডিজাইনার শার্ট পড়তে আপত্তি কোথায়?”
মায়ের দিকে ঝুঁকে আদি বলে, “একটু কান পাতো, বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে।”
সত্যি’ত এতক্ষণে জমাট শপিং মলের লোকের ভিড়ে বৃষ্টির আওয়াজ ওর কানেই যায়নি। এইদিকে রাত সাড়ে ন’টা বেজে গেছে। বৃষ্টির জন্য মলের ভেতরে লোকজনের ভিড় যেন আরো উপচে পড়েছে। যাদের কেনাকাটা হয়ে গেছে তারা বের হতে পারছে না, যারা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল ট্যাক্সির অথবা বাসের অপেক্ষায় তারাও মলে এসে আশ্রয় নিয়েছে। ভিড়ের থেকে আগলে একপাশে মা আর ছেলে দাঁড়িয়ে পরে। আদির হাতে কেনাকাটার ব্যাগ আর ছাতা, ঋতুপর্ণার চেহারায় উদ্বেগ ফুটে ওঠে, এই বৃষ্টি মাথায় করে বাড়ি ফিরবে কি করে, ভাগ্যিস ওদের গাড়ি আছে তাই বাঁচোয়া। ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে ওর বাজু শক্ত করে ধরে এক নিরাপত্তার হাওয়া ওর মনে দোলা দেয়। এই ভিড়ে একা নয় ঋতুপর্ণা। মায়ের দেহের উত্তাপ আদির ঋজু কাঠামোতে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগে না, কারন বাজুর ওপরে মায়ের কোমল স্তন জোড়া পিষে গেছে। মা হয়ত অজান্তেই এইভাবে ওর পাশে সেটে দাঁড়িয়ে কিন্তু তাও মাকে দেখে আদির কেমন যেন মনে হয়।
ছেলেকে বলে ঋতুপর্ণা, “কখন বাড়ি পৌঁছাবো ঠিক নেই তার চেয়ে ভালো এইখানে কোন রেস্তুরেন্তে খেয়ে যাই।” আদি মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানায়, বাইরে খেয়ে নিলেই ভালো। বৃষ্টি মাথায় করে বাড়ি পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাবে। বাড়ি গিয়ে আবার মা রান্না বসাবে তারপরে রাতের খাবার সে অনেক হ্যাপা।
মা আর ছেলে একটা বড় রেস্তুরেন্তের দিকে হাঁটা লাগায়। ভিড় বাঁচিয়ে কখন যে আদির বাম হাত ঋতুপর্ণার ডান হাত মুঠি করে ধরে নিয়েছে সেটা দুইজনের মধ্যে কেউ টের পায় না। হাতের তালুর সাথে হাতের তালু মিশে যায়, মায়ের চাঁপার কলির মতন নরম পাঁচ আঙ্গুলের সাথে ছেলের শক্ত আঙ্গুল পেঁচিয়ে যায়। আঙ্গুলে সাথে আঙ্গুল পেঁচিয়ে, হাতে হাত দিয়ে সদ্য প্রেমে বিভোর দুই প্রেমিক যুগলের মতন চলতে চলতে রেস্তুরেন্তে ঢুকে পরে আদি আর ঋতুপর্ণা।
বেশ সাজানো গুছানো চিনে খাবারের রেস্টুরেন্ট। ঋতুপর্ণা চাইনিজ খেতে খুব ভালোবাসে তাই মাঝে মাঝেই বাড়িতে হাক্কা নুডুলস অথবা থুপ্পা তৈরি হয় আর তার সাথে চিকেন মাঞ্চুরিয়ান অথবা ফ্রাইড প্রন আর ফ্রেস চিকেন সুপ। একটা কোনার টেবিলে পাশাপাশি বসে পরে, আদির বাম দিকের চেয়ারে ঋতুপর্ণা বসে। ঋতুপর্ণার ঠিক পাশে একটা বিশাল কাঁচের জানালা। মায়ের সাথে রেস্তুরেন্তে খাওয়া মানে শুধু পেটের জন্য খাওয়া আজেকেও সেই এক ব্যাপার। কিন্তু এই রেস্টুরেন্ট একটু ভিন্ন ধরনের, বেশ সুন্দর পরিবেশ, মৃদু আলোয় আলোকিত চারপাশ। টেবিলের মাঝখানে একটা ছোট ফুলদানিতে দুটো গোলাপ রাখা, যদিও এতরাতে সেই জোড়া গোলাপ বেশ শুকিয়ে গেছে। একদিকের বিশাল কাঁচের জানালায় বৃষ্টির ছাঁট এসে লাগছে, সামনের রাস্তায় গাড়ির আলোয় আর ছাতা মাথায় লোকেরা। বৃষ্টি দেখে ঋতুপর্ণার মন কেমন করে ওঠে, এই বৃষ্টি ভেজা রাত্রে কোন পুরুষের সান্নিধ্য গায়ে মাখাতে তৎপর হয়ে ওঠে। প্রথম বার ওর স্বামী সুভাষের সাথে প্রেমের মিলনের কথা মনে পড়তেই দেহের রোমকূপ খাড়া হয়ে যায়।
আদি মেনু কার্ড দেখে মাকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার পছন্দের খাবার অর্ডার দেই না অন্য কিছু খাবে?”
হারিয়ে গিয়েছিল ঋতুপর্ণা, ছেলের গলা শুনে সম্বিত ফিরিয়ে নিয়ে এসে উদাস কণ্ঠে বলে, “হ্যাঁ ওই হাক্কা নুডুলস আর চিলি চিকেন নিয়ে নে। একটা প্লেট নিলেই হবে আমি রাতে বেশি খাবো না।”
মায়ের কাঁধে আলতো ধাক্কা মেরে মিচকি হেসে আদি বলে, “কেন কেন, মিস্টার বিশ্বাসের জন্য ডায়টিং করছ নাকি?”
কিঞ্চিত লজ্জা পেয়ে যায় ঋতুপর্ণা, “না রে, বেশি খেলে বদ হজম হয়ে যাবে। আর জানিস ত আমি রাতে বেশি খাই না।” রাতের বেলা ঋতুপর্ণার খাদ্য স্যালাড অথবা এক গেলাস দুধ আর ফল। বিকেলে নাচের ক্লাসের পরে বেশ ভারী খাবার খেয়ে নেয় কিন্তু রাতে বেশি খায় না একদম। এর ফলে ওর দেহে মেদ জমেনি কোনোদিন।
ওয়েটার ডেকে অর্ডার দিয়ে মায়ের সাথে গল্প করতে বসে আদি, “তোমার কলেজ কেমন চলছে?”
ঋতুপর্ণা মাথা দোলায়, “বেশ ভালো। আজকালকার ছেলে মেয়ে গুলো সব উচ্ছন্নে চলে গেছে।” বলেই হেসে ফেলে, “এই সেদিন ক্লাস নাইনের দুটো মেয়ে নাকি একে অপরকে চুমু খেয়েছে সেই নিয়ে কি তুলকালাম। করিডোরে যে সারভিলেন্স ক্যামেরা লাগানো ছিল তাতে ধরা পড়েছে।”
আদি হেসে ফেলে, “আজকের যুগের ছেলে মেয়েদের মানসিক অনুভুতি উন্নতি করছে তাহলে বল।”
ছেলের সাথে যৌনতা নিয়ে কখন এর আগে আলোচনা করেনি। কিন্তু সেদিন যেন ওদের সীমানা হারিয়ে যাচ্ছিল বারেবারে, প্রথমে ওই শাড়ির দোকানে, তারপরে জোর করে ওকে জিন্স কেনাল। তবে এই কলেজের ব্যাপার ঠিক যৌনতার আওতায় পরে না।
ঋতুপর্ণা বাঁকা হাসি হেসে বলে, “উন্নতি করছে না ছাই। মেয়ে দুটো নাকি আবার বুক ফুলিয়ে বলেছে যে ওরা দুইজনা দুইজনকে ভালোবাসে।”
আদি হেসে ফেলে, “ভালো ত, ভালোবাসা কি শুধু মাত্র এক নারী আর এক পুরুষের মধ্যে হবে? এমন কি কোথাও লেখা আছে নাকি? ভালোবাসা যে কোন দুইজনার মধ্যে হতে পারে, কোথাও স্নেহ মায়া মমতা, কোথাও তীব্র আকর্ষণ কোথাও শুধু মাত্র শারীরিক চাহিদা থাকে। গে লেসবিয়ান নিয়ে কত সিনেমা হয়ে গেছে তার খোঁজ রাখো?”
“সমকামী” “শারীরিক চাহিদা” কথাগুলো কানে যেতেই ঋতুপর্ণার কান কিঞ্চিত লাল হয়ে যায়। ছেলের দিকে মিচকি হেসে উত্তর দেয়, “সেটা ঠিক কিন্তু একটা মেয়ে অন্য মেয়ের প্রতি কি করে আকৃষ্ট হতে পারে?”
আদি হেসে বলে, “তার মানে তুমি মানো না যে একটা মেয়ে অন্য মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে।”
ঋতুপর্ণা অল্প মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়, “মানি না যে তা নয় তবে কোনোদিন এমন দেখিনি তাই বললাম। ইদানিং যা দিনকাল পড়েছে আর সাবানা আজমির ফায়ার দেখার পরে কি আর বলব বল।” বলেই হেসে ফেলে ঋতুপর্ণা।
আদি মাকে খোঁচা মেরে মজা করে জিজ্ঞেস করে, “কোনোদিন কোন মেয়েকে দেখে তোমার মনে হয়নি একটু...”
ঋতুপর্ণা ছেলের মুখে এই কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে টেবিলের তলা দিয়ে আদির জঙ্ঘার ওপরে জোরে একটা চাঁটি মারে, কিন্তু সেই চাঁটি আদির জঙ্ঘার বদলে ঊরুসন্ধির ওপরে গিয়ে পরে। মায়ের পাশে বসে বসে এতক্ষণ মায়ের সাথে “সমকামী” “লেসবিয়ান” নিয়ে আলোচনা করতে করতে আদির লিঙ্গ খানিক ফুঁসেছিল। মায়ের নরম হাতের চাঁটি সোজা ঊরুসন্ধির ওপরে পড়তেই লিঙ্গ আরো বেশি করে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। ঋতুপর্ণার হাতের তালুর নীচে আদির কঠিন লিঙ্গ চাপা পরে যায়। ক্ষণিকের জন্য ঋতুপর্ণার হাত অবশ হয়ে যায়। নরম হাতের তালুর নীচে ছেলের ভিমকায় লিঙ্গের পরশে ঋতুপর্ণার দেহে আচমকা এক বিদ্যুতের ঝিলিক খেলে যায়। ওর হাত ওর শরীর আর ওর বশে থাকে না, আপনা হতেই হাত আলতো করে মুঠি হয়ে যায় ছেলের ঊরুসন্ধির ওপরে। জিন্সের ওপর দিয়েই কঠিন উত্থিত লিঙ্গ একটু খানি চেপে ধরে। যদিও সবকিছু কয়েক স্কেন্ডের মধ্যে ঘটে যায়, কিন্তু মা আর ছেলে দুইজনে বুঝতে পারে কি ভুল ওরা করেছে। ঋতুপর্ণার মন না চাইলেও ওর হাত ঠিক ছেলের লিঙ্গের আকার অবয়াব মেপে ওর মনে ছবি এঁকে দেয়। মায়ের নরম হাতের স্পর্শে হটাত আদির কোমর উঁচিয়ে যায় চেয়ার থেকে, মায়ের হাতের ওপরে নিজের লিঙ্গ চেপে ধরতে উদ্যত হয় কিন্তু ততখনে লজ্জায় ঋতুপর্ণা হাত সরিয়ে নিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে।
ছেলের সাথে এক রোম্যান্টিক রেস্তুরেন্তে বসে সমকামী যৌন চর্চা করছে, মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি ওর? মায়ের সাথে ছেলের মাঝে মাঝেই নানা সিনেমা বিষয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। এই যেমন, সানি লিওন নাকি সিনেমায় নামবে তাই নিয়ে একদিন মায়ের সাথে বেশ চর্চা হয়ে গেল। আগেকার সিনেমায় চুমুর সিন এলেই দুটো ফুল দেখান হত আজকাল অভিনেতা অভিনেত্রীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে মুখের মধ্যে জিব ঢুকিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা শুধু চুমু খেয়ে যায়। শুধু কি চুম্বনে আটকে আছে, কত সিনেমায় খোলা পিঠের নায়িকা বসে থাকে, কোন সিনেমায় প্রায় উলঙ্গ নায়কের নীচে প্রায় উলঙ্গ নায়িকা শুয়ে। ওদের খাবার চলে আসে। আদির খুব খিধে পেয়েছিল তাই আর কথা না বাড়িয়ে খেতে শুরু করে। ছেলেকে ওইভাবে খেতে দেখে ঋতুপর্ণার মন গলে যায়। ইসসস এক কাপ চা ছাড়া ছেলেটা বিকেলে কিছুই খেয়ে বের হয়নি। ওর ভুল, একটু উপমা অথবা ডিমের টোস্ট করে দিলে হত।
বেশ খানিকক্ষণ টেবিল একদম চুপ কারুর মুখে কোন কথা নেই। পাশা পাশি বসে থেকে এত নিস্তব্ধতা ঋতুপর্ণাকে তাড়িয়ে বেড়ায় তাই ওই নিস্তব্ধতা কাটানোর জন্য ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে তোর ওই গার্ল ফ্রেন্ডের কি হল?”
আচমকা তনিমার কথা শুনে বিষম খায় আদি। খাওয়া ছেড়ে মাথা উঠিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে, “কি হবে আবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল।”
ঋতুপর্ণা মিচকি হেসে মজার ছলে ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, “তোর আবার ছেলে পছন্দ নয়’ত? কি জানি বাবা, শেষ পর্যন্ত একটা ছেলেকে বাড়ি এনে তুললি শেষ পর্যন্ত।”
আদি আর হাসি থামাতে পারে না, “কি যে বল না তুমি। না না ওই সব কিছু নয়, মনের মিল হয়নি তাই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল।” মৃদু ধ্যাতানি দিয়ে মাকে চুপ করিয়ে বলে, “তাড়াতাড়ি খাও ত দেখি। বৃষ্টি একটু ধরে এসেছে বাড়ি ফিরতে হবে।”
কাঁচের জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল ঋতুপর্ণা, বৃষ্টিটা একটু ধরে এসেছে। রাস্তায় লোক চলাচল বেড়ে গেছে। এতক্ষণ যারা দোকানের ভেতরে অথবা এই মলের ভেতরে বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করে দাঁড়িয়েছিল তারা সবাই ছাতা মাথায় বেড়িয়ে পড়েছে। ট্যাক্সি চলাচল বাসের আনাগোনা বেড়ে গেছে। তাড়াতাড়ি মা আর ছেলে খাওয়া শেষ করে রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে পরে। শপিং মলে লোকের ভিড় অনেক কমে গেছে। ঘড়ি দেখে আদি, রাত সাড়ে দশটা বাজে। পারকিঙ্গে এসে গাড়ি খুলে দুইজনে গাড়িতে উঠে পরে। পেছনের সিটে কেনাকাটা করা ব্যাগ গুলো রেখে দেয়।