20-09-2020, 11:51 PM
২৯ পর্ব
কফিতে চুমুক শেষে অঞ্জলী আবার পড়া শুরু করলো।তোমার তখন দুই বছর বয়স,তখন তোমার মা বাবা একটা গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা যায়।পুলিশও এটাকে এক্সিডেন্টই বলেছিলো।কিন্তু কেন জানি দাদুভাই আমার মনে হয়েছিলো এটা এক্সিডেন্ট না মাডার,যদিও এটা নিছকই আমার চিন্তা ভাবনা।তবুও আমার বড় ছেলের চালচলন চলাফেরায় এক অদ্ভুত পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলাম।আমি একদিন আমার বড় ছেলেকে সরাসরি এই প্রশ্ন করি,সে যথারীতি অস্বীকার করে আর বলে হা ছোট ভাইয়ের প্রতি রাগ তার আছে।এমন কি তাদের সন্তানের উপরেও মানে তুমি দাদু ভাই।কিন্তু ভাইকে মেরে ফেলবে এমন চিন্তা সে ভাবতেই পারেনা।কিন্তু এরপর সে যেটা বলে তাতে আমার আত্মা খাঁচা ছাড়া,তোমাকে যদি আমি এই রায় পরিবারের সম্পত্তি থেকে বিতারিত না করি,তাহলে সে যে কোন অঘটন ঘটাতেও পিছুপা হবেনা।তার কথা শুনে আমি ভীত হই কিন্তু সাহস না হারিয়ে আমার সমস্ত সম্পত্তি তোমার নামে উইল করি দাদুভাই কিন্তু তুমি ছোট তাই এমনটা করি যে তোমার ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত এগুলা আমি দেখাশোনা করবো,তার আগে যদি তোমার কোন ক্ষতি হয় তো এই সব সম্পত্তি একটা ট্রাষ্টের হাতে চলে যাবে দান হিসেবে।আর এভাবেই তোমাকে সুরক্ষা করি আমার বড় ছেলের হাত থেকে।তারপর তুমি তো সবই জানো দাদু ভাই,কিন্তু তুমি কারো কথা শুনতে না এমনকি আমাকেও ভয় করতে না,পড়াশোনা করতে চাইতে না। তখনি অঞ্জলী এলো আর তোমার দায় ভার নিলো। অঞ্জলীর চেষ্টায় তুমি পড়াশোনা শুরু করলে,আমিও চিন্তামুক্ত হলাম কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত যা চাইলে আমার কাছে সেটা তোমাকে দিলে তুমি দেশেই থেকে যেতে তাই,আবার শুভেন্দুও অঞ্জলীকে চাইছিলো আমার কাছে।এদিকে আমার বয়স হয়েছে,ছেলে মেয়েদের দিকটাও আমাকে দেখতে হতো তাই অনুষ্ঠান করে সবাইকে সবকিছু ভাগ করে দিই।সেদিন ইচ্ছা করে আমি অঞ্জলীকে তোমাকে দিয়নি,কারণ একেতো অঞ্জলী তোমার থেকে বয়সে বড়,তাই পরিবার থেকে আপত্তি করবে বিশেষ করে বড় ছেলে,তখন কি থেকে কি বেড়িয়ে যায়,আমি চাইনি কখনো যে আমার ছোটছেলে বৌমার শারীরিক আর চরিএ নিয়ে কোন কথা উঠুক।হয়ত তুমি না হলে অঞ্জলীর সাথে বিয়ে নিয়ে কেউ আপত্তি করতো না,আর একদিকে অঞ্জলী বিধবা ছিলো,তাছাড়া অঞ্জলী বুদ্ধিমান তাই ও তোমার সাথে থাকলে কেউ তোমাকে কিছু করতে পারবেনা।অপর দিকে অঞ্জলী কে পেলে তুমি দেশ ত্যাগ করতে না আর করলেও বার বার ছুটে আসতে দেশে তাই আমি কোন রিস্ক নিতে চাইনি।কারণ আমি জানতাম অঞ্জলী কে না পেলে তুমি দুঃখে আমার প্রতি রাগে আর দেশে আসবে না সেটা যেমন তোমার জন্য ভালো তেমনি তোমার ক্যারিয়ারের জন্যও ভালো তোমার বয়সও হবে মানুষকে চিন্তে পারবে,বাস্তব জীবনটা উপলব্ধি করবে।তাই আমি এসব করেছিলাম দাদুভাই।কিন্তু সব সময় আমি তোমার খোঁজ রাখতাম,আর এটাও জানতাম অঞ্জলী শুভ কে বিয়ে করবে না কারণ ও তোমাকে ভালবাসে ঠিক আমার মত।তুমি চলে গেছ আজ সতেরো বছর,আমার আগেই আমার বড় ছেলে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে,খুব কষ্ট পেয়েছি দাদুভাই কোন মা তার সন্তানের চলে যাওয়া সহ্য করতে পারেনা,কিন্তু একদিকে স্বস্তি পেয়েছিলাম তোমার আর কোন শত্রু নেই।মানুষ যা ভাবে তাই হয়না সবসময়।আমার পরিবারের ভিতরের কিছু মানুষের ভিতর আমি এক বিশৃঙ্খলা লক্ষ্য করি তার মধ্যে অন্যতম আমার আরেক নাতী মনি শংকর,যে ভাই কিনা তোমাকে ছোট থেকে মাছের কাঁটা বেঁছে পাতে তুলে দিয়েছে,সেও মাঝে মাঝে গোপনে আমার আলমারীতে উঁকি দেয়,তারও ধারনা আমি আলাদা ভাবে গোপনে তোমাকে অগাধ সম্পত্তি দিয়ে দিয়েছি।এই সব দেখে এই হিংসার ভিতর তোমাকে আনতে চাইনি দাদুভাই তাই তোমার অভিমান ভাঙ্গিয়ে কখনো দেশে ফিরে আনার চেষ্টা করিনি।বরং এটা চেয়েছি যে তুমি যেখানে থাকো ভালো থেকো।আমায় ক্ষমা করো আমার রাজ শেখর,আমার বিদ্রোহী রাজ কুমার।তোমায় আমি অনেক ভালবাসি।
লাল ছোট ব্যাগটা দেখে হয়ত ভাবছো,কি আছে ওতে,তেমন কিছু না দাদুভাই ওটা আমাদের পূর্বপুরুষের কিছু অলংকার যেটা কিনা আমি আমার ছোট নাত বৌয়ের জন্য তুলে রেখেছিলাম,নিজের হাতে পরিয়ে দিবো বলে,সে শখ তো আর আমার পূরণ হলো না।তাই ওটা অঞ্জলীকে নিজে হাতে পরিয়ে দিয়ো,আমি জানি অঞ্জলী কে ছাড়া তুমি অন্য কাউকে নিজের করে নিবেনা। আর আমি এটাও জানি যে অঞ্জলী তোমার অপেক্ষাতেই বসে থাকবে,তাই তোমাদের ভালবাসার স্বীকৃতিস্বরুপ আমার পক্ষ থেকে এই উপহার গুলো।
তবে শোন দাদুভাই আমি বুঝতে পারছি রায় পরিবারে বাইরের শত্রুর আনাগোনা শুরু হয়েছে,কিন্তু তারা কারা আমি জানিনা বা কি তাদের উদ্দেশ্য,যদি জানতে পারি তো নিজেই তার প্রতিকার করবো।না হলে এই চিঠিতে লিখে যাবো।
আজকাল শরীরটা ভালো যাচ্ছে না দাদু ভাই,পরিবারের শত্রু গুলো কারা সেটাও জানতে পারিনি।আমি চাইনা তুমি দেশে আসো,কিন্তু যদি তুমি এসেই পরো তার জন্য তোমাকে সাবধান থাকতে হবে।তাই আমি এগুলো লিখে রেখে যাচ্ছি।আর রামলালের কাছে সূত্র!!আমি জানি তুমি আর অঞ্জলী এর মানে ঠিক বের করবে।যদি বেঁচে থাকি আরো যা জানতে পারবো লিখবো,না হলে এখানেই শেষ। এগুলো সব পড়া শেষে পুড়িয়ে ফেলো দাদুভাই।অঞ্জলী কাছে থাকলে পৃথিবীর কেউ তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আজ তোমায় বুকে জরিয়ে আদর করতে ইচ্ছা করছে গো আমার রাজ শেখর।কিন্তু উপায় যে নেই!
ভালো থেকো আমার বিদ্রোহী রাজকুমার আর ক্ষমা করো আমায়!!!!!
ইতি,
"তোমার ঠাম্মী"
কফিতে চুমুক শেষে অঞ্জলী আবার পড়া শুরু করলো।তোমার তখন দুই বছর বয়স,তখন তোমার মা বাবা একটা গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা যায়।পুলিশও এটাকে এক্সিডেন্টই বলেছিলো।কিন্তু কেন জানি দাদুভাই আমার মনে হয়েছিলো এটা এক্সিডেন্ট না মাডার,যদিও এটা নিছকই আমার চিন্তা ভাবনা।তবুও আমার বড় ছেলের চালচলন চলাফেরায় এক অদ্ভুত পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলাম।আমি একদিন আমার বড় ছেলেকে সরাসরি এই প্রশ্ন করি,সে যথারীতি অস্বীকার করে আর বলে হা ছোট ভাইয়ের প্রতি রাগ তার আছে।এমন কি তাদের সন্তানের উপরেও মানে তুমি দাদু ভাই।কিন্তু ভাইকে মেরে ফেলবে এমন চিন্তা সে ভাবতেই পারেনা।কিন্তু এরপর সে যেটা বলে তাতে আমার আত্মা খাঁচা ছাড়া,তোমাকে যদি আমি এই রায় পরিবারের সম্পত্তি থেকে বিতারিত না করি,তাহলে সে যে কোন অঘটন ঘটাতেও পিছুপা হবেনা।তার কথা শুনে আমি ভীত হই কিন্তু সাহস না হারিয়ে আমার সমস্ত সম্পত্তি তোমার নামে উইল করি দাদুভাই কিন্তু তুমি ছোট তাই এমনটা করি যে তোমার ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত এগুলা আমি দেখাশোনা করবো,তার আগে যদি তোমার কোন ক্ষতি হয় তো এই সব সম্পত্তি একটা ট্রাষ্টের হাতে চলে যাবে দান হিসেবে।আর এভাবেই তোমাকে সুরক্ষা করি আমার বড় ছেলের হাত থেকে।তারপর তুমি তো সবই জানো দাদু ভাই,কিন্তু তুমি কারো কথা শুনতে না এমনকি আমাকেও ভয় করতে না,পড়াশোনা করতে চাইতে না। তখনি অঞ্জলী এলো আর তোমার দায় ভার নিলো। অঞ্জলীর চেষ্টায় তুমি পড়াশোনা শুরু করলে,আমিও চিন্তামুক্ত হলাম কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত যা চাইলে আমার কাছে সেটা তোমাকে দিলে তুমি দেশেই থেকে যেতে তাই,আবার শুভেন্দুও অঞ্জলীকে চাইছিলো আমার কাছে।এদিকে আমার বয়স হয়েছে,ছেলে মেয়েদের দিকটাও আমাকে দেখতে হতো তাই অনুষ্ঠান করে সবাইকে সবকিছু ভাগ করে দিই।সেদিন ইচ্ছা করে আমি অঞ্জলীকে তোমাকে দিয়নি,কারণ একেতো অঞ্জলী তোমার থেকে বয়সে বড়,তাই পরিবার থেকে আপত্তি করবে বিশেষ করে বড় ছেলে,তখন কি থেকে কি বেড়িয়ে যায়,আমি চাইনি কখনো যে আমার ছোটছেলে বৌমার শারীরিক আর চরিএ নিয়ে কোন কথা উঠুক।হয়ত তুমি না হলে অঞ্জলীর সাথে বিয়ে নিয়ে কেউ আপত্তি করতো না,আর একদিকে অঞ্জলী বিধবা ছিলো,তাছাড়া অঞ্জলী বুদ্ধিমান তাই ও তোমার সাথে থাকলে কেউ তোমাকে কিছু করতে পারবেনা।অপর দিকে অঞ্জলী কে পেলে তুমি দেশ ত্যাগ করতে না আর করলেও বার বার ছুটে আসতে দেশে তাই আমি কোন রিস্ক নিতে চাইনি।কারণ আমি জানতাম অঞ্জলী কে না পেলে তুমি দুঃখে আমার প্রতি রাগে আর দেশে আসবে না সেটা যেমন তোমার জন্য ভালো তেমনি তোমার ক্যারিয়ারের জন্যও ভালো তোমার বয়সও হবে মানুষকে চিন্তে পারবে,বাস্তব জীবনটা উপলব্ধি করবে।তাই আমি এসব করেছিলাম দাদুভাই।কিন্তু সব সময় আমি তোমার খোঁজ রাখতাম,আর এটাও জানতাম অঞ্জলী শুভ কে বিয়ে করবে না কারণ ও তোমাকে ভালবাসে ঠিক আমার মত।তুমি চলে গেছ আজ সতেরো বছর,আমার আগেই আমার বড় ছেলে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে,খুব কষ্ট পেয়েছি দাদুভাই কোন মা তার সন্তানের চলে যাওয়া সহ্য করতে পারেনা,কিন্তু একদিকে স্বস্তি পেয়েছিলাম তোমার আর কোন শত্রু নেই।মানুষ যা ভাবে তাই হয়না সবসময়।আমার পরিবারের ভিতরের কিছু মানুষের ভিতর আমি এক বিশৃঙ্খলা লক্ষ্য করি তার মধ্যে অন্যতম আমার আরেক নাতী মনি শংকর,যে ভাই কিনা তোমাকে ছোট থেকে মাছের কাঁটা বেঁছে পাতে তুলে দিয়েছে,সেও মাঝে মাঝে গোপনে আমার আলমারীতে উঁকি দেয়,তারও ধারনা আমি আলাদা ভাবে গোপনে তোমাকে অগাধ সম্পত্তি দিয়ে দিয়েছি।এই সব দেখে এই হিংসার ভিতর তোমাকে আনতে চাইনি দাদুভাই তাই তোমার অভিমান ভাঙ্গিয়ে কখনো দেশে ফিরে আনার চেষ্টা করিনি।বরং এটা চেয়েছি যে তুমি যেখানে থাকো ভালো থেকো।আমায় ক্ষমা করো আমার রাজ শেখর,আমার বিদ্রোহী রাজ কুমার।তোমায় আমি অনেক ভালবাসি।
লাল ছোট ব্যাগটা দেখে হয়ত ভাবছো,কি আছে ওতে,তেমন কিছু না দাদুভাই ওটা আমাদের পূর্বপুরুষের কিছু অলংকার যেটা কিনা আমি আমার ছোট নাত বৌয়ের জন্য তুলে রেখেছিলাম,নিজের হাতে পরিয়ে দিবো বলে,সে শখ তো আর আমার পূরণ হলো না।তাই ওটা অঞ্জলীকে নিজে হাতে পরিয়ে দিয়ো,আমি জানি অঞ্জলী কে ছাড়া তুমি অন্য কাউকে নিজের করে নিবেনা। আর আমি এটাও জানি যে অঞ্জলী তোমার অপেক্ষাতেই বসে থাকবে,তাই তোমাদের ভালবাসার স্বীকৃতিস্বরুপ আমার পক্ষ থেকে এই উপহার গুলো।
তবে শোন দাদুভাই আমি বুঝতে পারছি রায় পরিবারে বাইরের শত্রুর আনাগোনা শুরু হয়েছে,কিন্তু তারা কারা আমি জানিনা বা কি তাদের উদ্দেশ্য,যদি জানতে পারি তো নিজেই তার প্রতিকার করবো।না হলে এই চিঠিতে লিখে যাবো।
আজকাল শরীরটা ভালো যাচ্ছে না দাদু ভাই,পরিবারের শত্রু গুলো কারা সেটাও জানতে পারিনি।আমি চাইনা তুমি দেশে আসো,কিন্তু যদি তুমি এসেই পরো তার জন্য তোমাকে সাবধান থাকতে হবে।তাই আমি এগুলো লিখে রেখে যাচ্ছি।আর রামলালের কাছে সূত্র!!আমি জানি তুমি আর অঞ্জলী এর মানে ঠিক বের করবে।যদি বেঁচে থাকি আরো যা জানতে পারবো লিখবো,না হলে এখানেই শেষ। এগুলো সব পড়া শেষে পুড়িয়ে ফেলো দাদুভাই।অঞ্জলী কাছে থাকলে পৃথিবীর কেউ তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আজ তোমায় বুকে জরিয়ে আদর করতে ইচ্ছা করছে গো আমার রাজ শেখর।কিন্তু উপায় যে নেই!
ভালো থেকো আমার বিদ্রোহী রাজকুমার আর ক্ষমা করো আমায়!!!!!
ইতি,
"তোমার ঠাম্মী"
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!