Thread Rating:
  • 32 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
মহানগরের আলেয়া
দানা স্মিত হেসে বলে, "তাকে জানতে হবে না শুধু মাত্র কে যাচ্ছে সেই খবর দাও। তার পরের পরিকল্পনা আমার। আমি ঠিক খুঁজে চলে যাবো।"

নয়না ওকে বলে, "দানা, এই জায়গা খুব সাঙ্ঘাতিক। যেহেতু এই সমগম খুব গোপনে অনুষ্ঠিত হয় তাই এই ক্লাবের সদস্যেরা বেশ কড়া নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করে। এই ক্লাবের সদস্যরা সবাই সমাজের উচ্চবিত্ত প্রতিপত্তিশালী ধনী মানুষ। নিজেদের পরিচয় আর গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য অনেক কিছুই এরা করতে পারে। নিরাপত্তা রক্ষীরা সবাই বাইরে থেকে ভাড়া করে আনা। কালো পোশাকে হাতে খোলা বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ওদের এই জায়গার আশেপাশে কোন সন্দেহ ভাজন ব্যাক্তি দেখলে মেরে ফেলতে কুণ্ঠিত বোধ করবে না। সাবধান দানা।"

দানা মাথা দুলিয়ে বলে, "এই সমাগমে আমাকে যেতেই হবে নয়না। তুমি শুধু মাত্র এই খোঁজ লাগাও তোমার চেনাজানা কে এইবারের সমাগমে যাচ্ছে বাকিটা আমার ওপরে ছেড়ে দাও।"

নয়না প্রশ্ন করে, "কিন্তু এত বড় ঝুঁকি নিয়ে কেন যেতে চাইছো?"

দানা হিমশীতল কণ্ঠে জবাব দেয়, "দরকার আছে। এক নয় তুমি ফোন করে রাগিণীকে বল যে তুমি যাবে না হয় তুমি খবর লাগাও কে কে যাচ্ছে। তাদের সাথে একবার দেখা করা খুব জরুরি আমার।"

এই সমাগমে যাওয়ার মতন মানসিক অবস্থা নয়নার নেই কিন্তু দানাকে মানা করতে পারে না কিছুতেই। গত বারের মধ্যে যাদের নয়না চিনতে পেরেছিল তাদের এক এক করে ফোন করে। বেশির ভাগ ছেলে মেয়েদের এই বারে আমন্ত্রন জানানো হয়নি। প্রত্যেক বার যেমন এই ক্লাবের সমাগমের জায়গা বদল হয় ঠিক তেমনি দুই তিন বছর অন্তর অন্তর ছেলে মেয়েদের বদলে দেওয়া হয়। একজন কে বেশি বার ডাকা হয়না কখন, তবে নয়না এবং বেশ কয়েকজন ব্যাতিক্রম, প্রায় আট নয় বার এই রেড এন্ড ব্লু ক্লাবের যৌন সমাগমে গেছে। অনেক ফোন করা পরে শেষ পর্যন্ত এক উঠতি টিভি অভিনেত্রী, রিচা দত্ত নয়নাকে খবর দেয় তাকে এই ক্লাবে ডাকা হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, বিকেল চারটে নাগাদ ওর বাড়ির সামনে একটা গাড়ি আসবে আর সেই গাড়িতে করে ওকে নিয়ে যাওয়া হবে। এর চেয়ে বেশি আর কিছু জানে না। রিচা দত্তের জন্য এইবার প্রথম, একটু ভয় ভয় করছে কিন্তু ওই সমাগমের জন্য ওকে অনেক টাকা দেওয়া হচ্ছে। জানায় এক রাতের জন্য ওকে কুড়ি লাখ টাকা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে দশ লাখ দেওয়া হয়েছে আর বাকি টাকা পরেরদিন সকালেই ওর একাউন্টে চলে আসবে বলে কথা দিয়েছে।

মহুয়ার দৌরাত্মে মাঝে মাঝে হিন্দি বাংলা টিভি সিরিয়াল দেখা হয়ে যায় আর মেয়ের আবদারে "কারতুন"। দানার হাতে টিভির রিমোট খুব কম থাকে। রুহির কাছ থেকে রিমোট চাইলে নাক মুখ কুঁচকে আদর করে বলে, "ইত্তু কারতুন তা-পয়ে দেব।" আর মহুয়ার সময়ে চাইলে, ঝাঁঝিয়ে ওঠে, "আমার সিরিয়াল গুলো দেখার সময়ে তোমার যত রিমোটের কথা মনে পড়ে যায় তাই না। তুমি যখন ওই বাঘ সিংহ দেখ তখন মানা করেছি? কি একটা লোক বন বাদারে ঘুরে বেড়ায় পচা উঠের মাংস খায়, জ্যান্ত টিকটিকির মাথা ছিঁড়ে খায়। মাগো অয়াক অয়াক, সেই সব তুমি গোগ্রাসে গিলতে পারো। কেমন ছেলে গো তুমি? এখন পাবে না একদম।" ব্যাস দানার টিভি দেখার যবনিকা পাত।

ছোট পর্দার উঠতি অভিনেত্রী রিচা দত্তকে, মহুয়ার দৌরাত্মে বেশ কয়েকটা টিভি সিরিয়ালে, পত্রিকায় দানা দেখেছে। একটা টিভি সিরিয়ালে নায়িকার বোনের চরিত্রে দেখেছে। লাস্যময়ী সুন্দরী বলা চলে, গায়ের রঙ ঈষৎ চাপা হলেও চোখ নাক বেশ তীক্ষ্ণ। আর পাঁচ খানা বাঙালিদের মতন গোলগাল চেহারা, নধর গোলগাল দেহের গঠন। বুক পাছা দুই বেশ বড় বড়, তবে কোনোদিন পোশাকের নীচে কি লুকিয়ে রেখেছে সেটা দেখার সুযোগ হয়নি। ঈষৎ মোটা ঠোঁট জোড়া দেখলে বড় চুমু খেতে ইচ্ছে করে আর যখন হাঁটে তখন পাছার দুলুনি দেখে মনে হয় এই একটু চাঁটি মেরে দেওয়া যাক। এই অভিনেত্রী গুলোর হাতে সারা বছর বিশেষ কাজ থাকে না, কোনোরকমে একটা সিরিয়ালে ছোট কোন চরিত্র করার পরে হয়ত আবার অনেকদিন বসে থাকতে হয়। কিন্তু ওদের কেতা দুরস্ত জীবন শৈলীর জন্য অর্থের প্রয়োজন আর তার তাগিদে অনেকেই রাতের বেলা এই মহানগরের বুকে বেড়িয়ে পরে শরীর প্রদান করতে। এক রাতে কুড়ি লাখ টাকার হাতছানি অনেকেই সামলাতে পারে না।

নয়না দানাকে সাবধান করে বলে, "কি করতে চলেছ এইবারে? সাবধানে যেও, আমন্ত্রন পত্র আর কার্ড ছাড়া ওইখানে যাওয়া মানে সাক্ষাৎ মৃত্যুর কবলে। লাল কার্ডের সদস্যেরা অনেক শক্তিশালী ব্যাক্তি, খুব কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়। তুমি কি করে যাবে, মাথায় কি কোন পরিকল্পনা আছে?"

দানা কিছু না জানিয়ে শুধু বলে, "সেটা তোমার জেনে দরকার নেই। তুমি শুধু রিচা দত্তের ঠিকানা আমাকে দাও।"







রেড এন্ড ব্লু ক্লাব (#০৪)

নয়না ওকে রিচা দত্তের বাড়ির ঠিকানা দিয়ে দেয়। যাওয়ার আগে নয়না ওর হাত ধরে বলে, "এতোদিন আসোনি কেন? আমার ওপরে রেগে আছো?"

দানার হাতা ওর গলা চেপে ধরার জন্য নিশপিশ করে ওঠে কিন্তু নিজেকে সামলে হিমশীতল কণ্ঠে নয়নাকে বলে, "না ঠিক রেগে নেই।"

নয়নার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সোজা রুহির কলেজে চলে যায় দানা। এতক্ষণে হয়ত ছুটি হয়নি, মহুয়া কি ওইখানে এক ভাবে দাঁড়িয়ে আছে নাকি? মহুয়া চুপচাপ একটা গাছের নীচে বসে তখন পর্যন্ত রুহির কলেজ ছুটি হওয়ার অপেক্ষা করছিল। মহুয়াকে ওই ভাবে বসে থাকতে দেখে দানার মন কেমন করে ওঠে। মনে হয় এক একা সুন্দরী যেন অধীর অপেক্ষায়। কলেজের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে অনেকক্ষণ প্রেয়সীকে দেখে যায়। শাড়ি সালোয়ার ছাড়া আর কোন পোশাক কোনোদিন পরে বের হয়না মহুয়া। দানার সাথে থাকার পরে, বাড়িতে শাড়ির দোকান। তুঁতে রঙের শাড়িতে ফর্সা মহুয়াকে আরো বেশি মাদকতাময় মনে হয়। প্রসাধনীর মাত্রা বরাবর একটু কম, কপালে ছোট টিপ, কানে দুল আর ঠোঁটে লিপস্টিক। খুব ইচ্ছে করলে চোখের কোনে হালকা কাজল লাগায়। মেয়েকে প্রথম বার কলেজে দিতে এসেছে তাই একটু সেজেই এসেছে। বড় বড় চোখের পাতা একটু ভিজে, মেয়েকে কাঁদতে দেখে নিজের চোখের জল সামলাতে পারেনি।

ওকে দেখতে পেয়েই চোখের কোল মুছে মিষ্টি হেসে জিজ্ঞেস করে নয়নার বাড়িতে কি কি হল। মহুয়াকে সব কিছু বলাতে মহুয়া পরামর্শ দেয়, রিচা দত্তের বাড়ির ওপরে নজর রাখতে। ওকে নিতে যে গাড়ি আসবে সেই গাড়িকে অনুসরন করলে দানা ঠিক জায়গায় পৌঁছে যাবে।

ছুটির ঘন্টা বাজতেই "ডাডা" আর "মাম্মা"র খোঁজে রুহি। ওদের দেখে রুহির কি অভিমান, মুখ ভার করে একবার ডাডাকে দুই ঘা কষিয়ে দেয় একবার মাম্মাকে দুই ঘা কষিয়ে দেয়।

আদো আদো কণ্ঠে নালিশ জানায়, "ক্লাসে কেন আসোনি? স্তুলে আর যাবো না।" মাথা ঝাঁকিয়ে মাম্মার গলা জড়িয়ে মুখ লুকিয়ে পড়ে থাকে, "আমি স্তুলে যাবো না।"

রুহির ছুটির পরে মহুয়া আর রুহিকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে দানা বেরিয়ে পড়ে। বুকের মধ্যে কি হবে কি হবে ভাব। দানার মুখে সব কিছু শোনার পরে মহুয়ার বুকের ধুকপুকানি শত গুন বেড়ে যায়। সাক্ষাৎ মৃত্যুর কবলে, ওই সমাগমে কেউ যদি ওকে চিনে ফেলে তাহলে নিরাপত্তা রক্ষী দ্বারা ওকে মেরে ফেলতে কুণ্ঠিত বোধ করবে না কেউই। সমাগমের সবাই উচ্চবিত্ত ক্ষমতাশালী পুরুষ আর নারীর মেলা, নিজেদের পরিচয় অতীব গোপন করেই এই তীব্র যৌন সঙ্গমে সবাই মেতে ওঠে।

বের হওয়ার আগে রুহি আর মহুয়াকে জড়িয়ে ধরে দানা। প্রেয়সী আর মেয়ের গায়ের উষ্ণতা নিজের বুকে মাখিয়ে নিয়ে বেড়িয়ে যায়। বাড়ি থেকে লাল কার্ড, মুখোশ, আমন্ত্রন পত্র, চাবি ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে নেয়। সব থেকে আগে, হিঙ্গল গঞ্জে গিয়ে শঙ্কর রমিজ আর বাকিদের ওর পরিকল্পনা বুঝিয়ে বলে। দানা একা রিচা দত্তের গাড়ি অনুসরন করবে। ওর পেছনে মনা ওর গাড়ি অনুসরন করবে। দলের বাকিরা সবাই শঙ্করের নির্দেশ মতন কাজ করবে। একবার দানা ওই সমাগমের ভেতরে ঢুকে গেলে বাকিদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না। সব থেকে বড় বিষয়, কোথায় এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে সেটাই কারুর জানা নেই। তাই আগে থেকে ওই জায়গায় চলে যাবে তার উপায় নেই।

রমিজ ওকে দুটো পিস্তল দিয়েছিল, কিন্তু পিস্তলে কাজ হবে না। নিশ্চয় ওই নিরাপত্তা রক্ষীরা ওর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নেবে আর একবার ভেতরে ঢোকার পরে শুধু মাত্র জাঙ্গিয়া আর মুখোশ পরে থাকতে হবে সেখানে পিস্তল গোঁজার কোন অবকাশ নেই। একটা অন্য গাড়িতে মনা ওকে অনুসরন করে। রিচা দত্তের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় দুইজনে। মনা বাকিদের ফোন করে সেই খানে ডেকে নেয়। অল্প কথায় জানিয়ে দেয় খুন খারাবি হয়ত হতে পারে, আর সেই সাথে এই গোপন সম্প্রদায়ের গোপন যৌন সঙ্গমের কথাও জানাতে ভোলে না। দুটো গাড়ি করে শঙ্কর আর রামিজ ওদের বেশ দূরে অপেক্ষা করে। পরিকল্পনা মাফিক, দানা রিচা দত্তের গাড়ি অনুসরন করবে আর মনা দানাকে অনুসরন করবে। সবাই শঙ্করের হুকুমের তালিম করবে।

বিকেলের পর থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। একটু পরেই রিচা দত্তের বাড়ির সামনে একটা গাড়ি এসে দাঁড়ায়। কিছু পরে রিচা দত্ত নীচে নেমে গাড়িতে উঠে বসে, সাথে কেউ নেই। দানা ঘড়ি দেখে বুঝে যায় চারটে বেজে গেছে এটা ওই রেড এন্ড ব্লু ক্লাবের গাড়ি। ওদের গাড়ি ছাড়তেই দানা ওকে অনুসরন করতে শুরু করে। মহানগর ছাড়িয়ে গাড়ি কিছুক্ষণের মধ্যেই দক্ষিণে নদীর মোহনার দিকে যাত্রা করে। ওদের গাড়ি পাশ কাটিয়ে আরো বেশ কয়েকটা দামী গাড়ি এগিয়ে যায়। গাড়ি গুলো দেখে দানা বুঝতে পারে সঠিক পথেই যাত্রা করছে। সবাই রেড এন্ড ব্লু ক্লাবের সদস্য। কারুর গাড়ি অবশ্য দানা চেনে না। কঙ্কনা আর নাসরিন হয়ত এই গাড়ি গুলোর একটায় থাকতে পারে।

বেশ কিছু দুর যাওয়ার পরে রিচার গাড়ি একটা গ্রামের পথ ধরে, সেই সাথে আরো বেশ কিছু গাড়ি গ্রামের পথ ধরে। কিন্তু কিছু গাড়ি সার বেঁধে বড় রাস্তা ধরে আরো দক্ষিনে চলে যায়। দানা উভয় সঙ্কটে পড়ে যায়, ঠিক কোনদিকে যাওয়া উচিত সেটা ভেবে পায় না। বড় রাস্তার ওপরে গাড়ি থামিয়ে একবার দক্ষিন দিকে দেখে একবার গ্রামের রাস্তার দিকে দেখে। শঙ্কর ওকে ফোন করে, দক্ষিনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলে, গ্রামের ভেতরে যে গাড়ি গুলো গেছে সেগুলো হয়ত নীল কার্ডের জন্য আর বাকি গাড়ি লাল কার্ডের সদস্যদের নিয়ে যাচ্ছে। শঙ্করের কথা মেনে দক্ষিনে গাড়ি চালানো শুরু করে দেয়। মনা গাড়ি নিয়ে গ্রামের ভেতরে ঢুকে পরে। বেশ কিছু দুর এগিয়ে যাওয়ার পরে দানা আবার আগের গাড়ি গুলোর দেখা পায়। ঠিক সেই সময়ে মনা ওকে ফোন করে জানায়, যে রিচা এবং আরও বেশ কয়েক জন ছেলে মেয়েকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটা বড় বাসে তোলা হয়েছে। বাসের চারপাশে বন্দুক ধারি কালো পোশাক পরা নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী। মনা আরো জানায়, বাসের সামনে পেছনে দুটো জিপে নিরাপত্তা রক্ষী বাসকে আগলে গ্রামের পথ ধরে দক্ষিনে মোহনার দিকে, কাবুলি ঘাটের দিকে যাত্রা শুরু করেছে। দানা ওকে ওই বাসের পিছু নিতে পরামর্শ দেয়। বাসের বেশ তফাতে মনা অনুসরন করে।

আর অন্য দিকে দানা বাকি গাড়ি গুলো অনুসরন করে কাবুলি ঘাটে পৌঁছে যায়। কাবুলি ঘাটে একটা ছোট সাদা রঙের লঞ্চ দাঁড়ানো। বাঁধানো ঘাটের কাছে বেশ কয়েকটা গাড়ি দাঁড়িয়ে। বাকি গাড়ি গুলো থেকে বেশ কিছু দূরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রথমে ওদের পর্যবেক্ষণ করে। কারন ওর কাছে লাল কার্ড আর নয়না এই লাল কার্ডের সদস্যদের বিষয়ে কোন আলোকপাত করতে পারে নি। একটা গাড়ি থেকে একজন পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব ভদ্রলোক ধোপ দুরস্ত সুট পরে, লাল মুখোশে চেহারা ঢেকে লঞ্চের দিকে এগিয়ে যায়। লঞ্চ থেকে দুই কালো পোশাক পরিহিত বন্দুক ধারি নেমে এসে ওই ভদ্রলোকের কাছে কিছু দেখতে চায়। দানা অত দুর থেকে বিশেষ কিছু বুঝতে পারে না তবে এইটুকু বুঝতে পারে ওকে ওই মুখোশ পড়তে হবে। গাড়িটা ধীরে ধীরে চালিয়ে লঞ্চের কাছে নিয়ে যায়। গাড়িতে বসেই একটা সিগারেট ধরিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বসে চারপাশ ভালো ভাবে নিরীক্ষণ করে। বুকের মধ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে। আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা বেড়ে ওঠে। যে কোন মুহূর্তে ঝড় জল অবশ্যাম্ভাবি। জলের মাঝে যদি এই সমগম অনুষ্ঠিত হয় তাহলে দানার পক্ষে ভালো। কারন মহেন্দ্র বাবুর কাছে থাকার সময়ে আড়াই মাসের মতন ঝড় জল মাথায় করে সমুদ্র যাত্রা করেছিল।

সিগারেট শেষ করে, পকেটে যা ছিল সবকিছু গাড়ির মধ্যে রেখে দেয়। লাল কার্ড, চাবি, মুখোশ আর আমন্ত্রন পত্র ছাড়া কিছুই সঙ্গে নেয় না। লাল মুখোশ পরে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে। ঠোঁট আর চোখে দুটো ফুটো তাছাড়া সম্পূর্ণ চেহারা লাল কাপড়ে ঢাকা। ওকে দেখতে পেয়েই লঞ্চ থেকে দুটো নিরাপত্তা রক্ষী হাসি হাসি মুখ অভ্যর্থনা জানাতে নেমে আসে। একজনের হাতে বন্দুক অন্য জনের হাতে ছোট ল্যাপটপ। বন্দুকধারী রক্ষী ওর কাছে এসে কোন কিছু জিজ্ঞেস না করেই হাত বাড়িয়ে দেয়। দানা বুঝতে পারে যে ওকে কার্ড দেখাতে হবে তাই বুক পকেট থেকে লাল কার্ড বের করে লোকটার হাতে ধরিয়ে দেয়। দ্বিতীয় রক্ষী ওর দিকে ল্যাপটপ খুলে একটা স্ক্রিন দেখিয়ে দেয়। সেইখানে লেখা "পাসওয়ার্ড"। দানা মাথা চুলকে সংখ্যা মনে করতে চেষ্টা করে। ওর দেরি দেখে দুই জন রক্ষী পরস্পরের দিকে একটু চাওয়াচায়ি করে। দানা স্মিত হেসে ল্যাপটপের বোতাম টিপে পাসওয়ার্ড দিয়ে দেয়। দুই রক্ষী ওর সাথে হাত মিলিয়ে ওকে লঞ্চে আসতে আহবান জানায়।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মহানগরের আলেয়া - by Mr Fantastic - 18-09-2020, 01:21 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)