16-09-2020, 03:01 PM
পর্ব #### ৫
৫(ক)
সন্ধার পর ফয়সাল আজ একটু হাসি মুখেই ফিরে আসে অফিস থেকে। গোসল করে, নাস্তা পানি খেয়ে মেয়ের সঙ্গেও হাসি ঠাট্টা করে। স্বামীর মনটা ভালো থাকলেও সন্দেহ দানা বাধে শান্তার মনে। চোখ সরু করে খুশীর কারনটা বুঝার চেষ্টা করে শান্তা। রাতে খাওয়ার টেবিলে ফয়সাল নিজেই খুলে বলে ব্যাপারটা।
“কাল খুলনা যেতে হবে আমায়,” ফয়সাল বলে তাকে। খেতে খেতে হাত থেমে যায় শান্তার।
“খুলনায় কেন?”
“তোমায় বলেছি না একটা নতুন ব্যাবসায় হাত দিয়েছি, ওটার একটা কনফারেন্স আছে।” ফয়সাল জানায়। “কাল অফিস থেকেই বিকেল বেলা বেড়িয়ে যাবো। পরদিন ছুটি নিয়েছি। তারপর দিন তো ওমনিতেই ছুটি আছে। রাতের মধ্যে ফিরে আসতে পারব,”
“ওহ...” কি বলবে ভেবে পায় না শান্তা।
“বাজার সাজার লাগলে বল, কাল সকালে করে দিয়ে অফিসে যাবো নি,”
“হ্যাঁ দিও,” শান্তা ছোট্ট করে জবাব দেয়। ওর আর খাওয়া গুলো নামতে চায় না গলা বেয়ে।
রাতের বেলা ফয়সালের সঙ্গে শুতে গেলে ফয়সাল আজ ওর দিকে ঘুরে শোয়। অন্ধকারে স্বামীর দিকে তাকিয়ে থাকে শান্তা। ফয়সালের হাতটা ওর বুকের উপর উঠে আসে। তারপর পাশ থেকে তাকে অনেকটা আলতো করে জড়িয়ে ধরে যেন ফয়সাল। শ্বাস দ্রুততর হয়ে উঠে শান্তার। কি হয়েছে আজ ফয়সালের? স্বামীর আদর কি পাবে আজ শান্তা?
“খুলনার কাজটা হয়ে গেলে - অনেক টাকা পেয়ে যাবো। চাকরিটা ছেড়ে দিবো তখন... পুরোদমে ব্যাবসায় নেমে যাবো,”
“কিসের ব্যাবসা?”
“তুমি বুঝবে না,” ফয়সাল এড়িয়ে যায়। তারপর চিৎ হয়ে শুয়ে পরে। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওর ভারী নিঃশ্বাস পড়ার শব্দ শুনতে পায় শান্তা। মনের গভীরে যে আশার প্রদীপটা জ্বলে উঠেছিলো, ওটা নিভে যায় মুহূর্তেই।
শান্তার ঘুম আসে না। ওর মাথায় নানান চিন্তা ভাবনা আসছে। খুলনায় যাবে ফয়সাল! একলা যাবে? নাকি কোন মেয়েকে নিয়ে যাবে? আসলেই কি ব্যাবসার কাজ? নাকি মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করতে যাবে? মধুচন্দ্রিমা করতে যাবে? শান্তা ঘুমাতে পারল না। আশ্চর্য সব স্বপ্ন দেখতে লাগলো। এক সময় মনে হল যেন ট্রেনে করে কোথাও যাচ্ছে শান্তা। দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক বাতাস। আর তখনই ফয়সাল এসে ওকে দরজা দিয়ে ঠেলে ফেলে দিলো। হুড়মুড় করে উঠে বসলো শান্তা। নাহ, স্বপ্ন ছিল ওটা। তখনো ভোর হয় নি। ঘেমে গেছে শান্তার পুরো শরীর। বিছানা থেকে নেমে বাথরুম ঘুরে এলো শান্তা। চোখে মুখে পানি দিয়ে আবার শুয়ে পড়লো।
রিয়ান খান