16-09-2020, 12:41 AM
২৮ পর্ব
এদিকে আমার ছোট ছেলে সহজ সরল অথচ প্রখর উপস্থিত বুদ্ধি,তার দরুণ কোম্পানির বড় বড় টেন্ডার গুলো অন্য কোম্পানি গুলোকে টপকে আমাদের কোম্পানিতে নিয়ে আসছে।এতে আমাদের কোম্পানি আরো ফুলে ফেপে উঠছে।তোমার দাদু আর আমি দুজনেই তার উপর খুব সস্তুষ্ট,এর ফলে আমার বড় ছেলে সিদ্ধার্থ সবার উপরে বসে থাকলেও সব জায়গাতে তোমার বাবার অগাথ যাতায়াত থেকে শুরু হলো সুনাম,খ্যাতি যেন ওর পিছু ছাড়ছেনা।মানুষ বলেনা কারো ভালো কেউ দেখতে পারেনা,সে যতোই নিজের লোক হোক,ঠিক তেমনি হলো আমার বড় ছেলে সামনে বা সরাসরি কিছু না বললেও তোমার বাবাকে ভাল চোখে দেখতে পেত না।সহজ সরল ছেলে আমার সেসবের ধার ধারতই না।
সেদিন আমি আমার ছোট বৌমার সব কথা শুনে নিজের চোখে তাদের রাত্রিমিলন দেখার চেষ্টা করি।একদিন গভীর রাতে আমি গোপনে তাদের মিলন দেখি আর দেখি হতাশা আর তোমার মায়ের চোখের জল ছাড়া কিছুই চোখে পরেনি।চিন্তাতে আমার নাওয়া খাওয়া যাবার অবস্থা,কি হবে ওর ভবিষ্যৎ।তুমি বা অঞ্জলী আজ যে সিদ্ধার্থ কে দেখছো,সে কিন্তু আগে এমন ছিলো না।সামনে ভালো সাজলেও আমার চোখে সে ফাঁকি দিতে পারেনি,রায় পরিবারে কোথায় কি হয় সেটা আমার চোখে ফাঁকি দেয়া সম্ভব না।সেটার প্রমাণ স্বরুপ বলি,তোমার বড় জেঠু মানে আমার বড় ছেলের সাথে আমার বিধবা মেয়ের যে একটা অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো এবং সেই কার্যের প্লান করেছিলো অঞ্জলী সেটাও আমি জানি।কিন্তু তাতে আমি রাগ করিনি অঞ্জলীর উপর কারণ আমার মেয়ে সুহাসিনী যে অঞ্জলীকে এই বাড়িতে থাকতে দেবার পক্ষে ছিলো না,সেটা আমি জানি,তাই অঞ্জলী নিজের জায়গা শক্ত করতেই এই কাজটা করেছে।তাই তার উপর আমার কোন রাগ নেই।
এতোটুকু পড়েই অঞ্জলী অপরাধীর মত অমিতের দিকে তাকালো।আমি সত্যি এটা করতে চাইনি কিন্তু কি করবো তুমি তো জানো পিসি কথায় কথায় কি সব বলতো।ঠাম্মি যখন তোমাকে মাফ করে দিয়েছে।সেখানে আমার কিছু বলার নেই অমিত বললো।তুমি পড়া শুরু করো।
একদিন রাতে রাজ শেখর মানে তোমার দাদু যখন প্রবল বিক্রমে আমাকে চিরে ফেলছে,তখন আমি আমার বড় ছেলের সাথে ছোট ছেলের সম্পর্ক কেমন আর তোমার মায়ের সাথের বিষয়টা বললাম।দেখো ছোটর যদি সন্তানাদি না হয়,তাহলে বৌমা কিন্তু সারা জীবন মুখ বুজে সহ্য নাও করতে পারে।আর আমরা যখন থাকবো না তখন নিঃসন্তান আমার ছেলেটা এমনি কষ্টে তো মরবেই,তার উপর বড় ছেলে কিন্তু ওকে সারাজীবন হেয় করে রাখবে তাই কোন একটা উপায় বের করো তুমি। একটা কথা বলে রাখি দাদু আজ যেমন এই বাড়িতে শুধু তুমি আমার খোঁজ নাও তখন ঠিক তোমার মতই ছিলো তোমার বাবা।
কিছুদিন চিন্তা ভাবনা করেও যখন কোন সুরাহা হলো না,বৌমাকে বললাম ওকে ডাঃ দেখাতে বলতে,বৌমা নাকি সেটা আগেই বলেছে কিন্তু জমিদারী রক্ত যার শরীরে সে কি নিজের দোষ কখনো চোখে দেখে।তারপর একদিন আমিই তোমার দাদুকে বললাম তুমি দিবে একটা সন্তান!আমার কথা শুনে তোমার দাদু আমার দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেলো।কি বলছো তুমি ভেবে বলছো?এমন নিচ কাজ আমাকে করতে বলছো?তোমার দাদু রেগে গেল।তোমার কাছে বলতে লজ্জা নেই দাদুভাই মেয়েদের কাছে পুরুষ বধের এক কল আছে শুধু চাবি ঢুকিয়ে দিলেই হলো।আমিও তোমার দাদুকে চিৎ করে ফেলে দিয়ে কলের ভিতর চাবি দিলাম অমনি তোমার দাদু গলে বরফ হয়ে গেল।কলে দম দিতে দিতে তখন তাকে বুঝাতে লাগলাম, দেখো তুমি আমিতে ছিলে আমাকে ছাড়াই বাইরে বাইরে থেকেছো,আমি জানি এমন যন্ত্র নিয়ে কেউ শুধু শুধু বসে থাকে না।আর তুমি সেটা আমার কাছে স্বীকারও করেছো।আমি তাতে কোন আপত্তী করিনি।আর একটি বার তেমন করলে কি এমন ক্ষতি হবে।পুরানেও তো এমন কতো কাহিনী আছে!!দেখো তারা অন্য মেয়ে ছিলো,আর এ আমার বৌমা নিজের মেয়ের মত,তাছাড়া ওই দিনের পর তার সামনে আমি বা সেই কি করে মুখ দেখাবো।
সে ব্যবস্থা আমি করবো লক্ষীটি তুমি শুধু রাজী হয়ে যাও।না হলে আমাদের এই সুখের সংসারে ভাঙ্গন ধরবে।আজ যদি বৌমার কোন দোষ থাকতো তাকে বিদেয় করে নতুন বৌ আনতাম,কিন্তু দেখো সমস্যা আমাদের ছেলের,তাই সে উপায় নেই আর এমন লক্ষ্মী বৌমা যে কিনা স্বামীর আদর থেকে বঞ্চিত হয়েও মুখ বুজে আছে এমন মেয়ে কি আর পাবে।তাছাড়া রায় পরিবারের বংশধর হবে রায় পরিবারের বাইরের কারো ঔরসজাত সেটা আমি মেনে নিতে পারবো না।রাজ শেখর কিছুক্ষণ গভীর চিন্তা করে বললো আচ্ছা তাই হবে।কিন্তু বৌমা যেন জানতে না পারে এটা কার দ্বারা হচ্ছে।
আজ তোমায় বলতে কষ্ট হচ্ছে দাদু ভাই,তবুও বলছি তুমি তোমার বাবার না তোমার দাদুর অর্থাৎ রাজ শেখরের ঔরসজাত সন্তান।তারপর একদিন তোমার মাকে সব বুঝিয়ে বলি,কিন্তু কার দ্বারা এটা করা হবে সে ব্যাপারে কোন কিছু জানতে দিইনি।তোমার মা তো রীতিমত বিদ্রোহ করে বসে প্রথমে,পরে তাকে বুঝিয়ে বলি ভবিষ্যতের কথা তাছাড়া আমি শাশুড়ি হয়ে যখন অনুমতি দিচ্ছি তখন সমস্যা কোথায়।সব শেষে নিমরাজী হয়ে সম্মতি দেয় তোমার মা।
একদিন সময় বুঝে ইচ্ছা করে তোমার বাবাকে কোম্পানির একটা কাজে দূরে পাঠাই,আর সেদিন রাতে তোমার মাকে আমার ঘরে ডেকে নিই,তারপর তোমার মায়ের চোখ বেঁধে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আমি মাথার কাছে বসে থাকি।তারপর আর বর্ণনার অপেক্ষা থাকে না। তোমার দাদুর দ্বারা তার গর্ভ সঞ্চয় হয়।
এভাবে সব কিছু ঠিকঠাক চলছিলো,কিন্তু কালো মেঘের ছায়া পরলো কিছুদিন পর।তোমার বাবা কিছুদিন পর নিজে থেকে কি ভেবেই ডাঃ এর কাছে যায় আর জানতে পারে তার অক্ষমতার কথা।ততোদিনে তুমি তোমার মায়ের পেটে বেড়ে উঠছো,এমনিতে তোমার বাবা চিন্তায় দিন পার করছিলো,কিন্তু তোমার মায়ের অবস্থা দেখে পাগল হয়ে গেলো।তোমার মাকে খারাপ মেয়ে ছেলে ভেবে শুরু করলো নতুন অশান্তি কিন্তু সেটা তাদের ঘরের চার দেওয়ালের মাঝেই সীমাবদ্ধ।আমি জানতে পেরে তোমার বাবা কে আমার ঘরে ঢাকলাম একদিন,তোমার বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পরলো।ছেলের এমন অবস্থা দেখে আমি তখন সত্যিটা বললাম তাকে শুধু কার দ্বারা সেটা বাদে।আর এটাও বলে দিলাম,বৌ এই ব্যাপারে কিছুই জানে না এমনকি সে রাজিও ছিলো না।তাই এই ব্যাপারটা চিরদিনের মতো গোপন রাখবে।আমার কথার উপর কোন কথা বলার সাহস ছিলো না তোমার বাবার। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর হয়ে যায় আর এক।দিন দিন তোমার বাবা ভেঙ্গে পরলেন।এর মধ্যে কিভাবে জানিনা তোমার বাবার যে সন্তান জন্ম দেবার ক্ষমতা নেই সেটা জেনে গেলো তোমার জেঠু সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরী।আর তোমার বাবাকে পরস্ত করার মারণ অস্ত্র হিসেবে সেটাই ব্যবহার করলো।কিন্তু সবই হচ্ছে নীরবে।ধীরে ধীরে তোমার বাবাকে মারছে।যাকে বলে Silent killing,সব দেখে তোমার জেঠুকে একদিন ডাকলাম,কিন্তু বুঝানোর জন্য ডেকে সে আমাকে রীতিমত হুমকি দিলো,যে বাইরের কারো সন্তান এই রায় পরিবারের উত্তরাধীকারি হতে পারেনা। আমিও অপারগ ছিলাম কি করে বলি যে এ সন্তান রায় পরিবারের বাইরের না,রায় পরিবারেরই।
তারপর কেটে গেছে কয়েকটা মাস সব দেখে তোমার দাদুর মত মানুষ ও ভেঙ্গে পরলো,ভাল করতে যেয়ে চোখের সামনে পরিবারের ভাঙন দেখতে হবে সেটা তিনি ভাবেননি।তাই চিন্তায় কষ্টে তুমি জন্মাবার দু'মাস আগে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।যাবার আগে আমি বলেছিলাম তুমি চলে গেলে কে দেখবে আমায়?উত্তরে বলেছিলেন কেন আমি তো আবার আসবো তোমার রাজ শেখর হয়ে।তাই তো দাদুভাই আমি তোমাকে মাঝে মাঝে রাজ শেখর বলতাম,কারণ তোমার ভিতর আমি সেই রাজ শেখরের জেদ,তেজ আর পরিক্রমা দেখেছিলাম,আমার প্রতি তোমার ভালবাসা,তাই সেদিন তোমাকে রাজ শেখরের স্থানে বসিয়ে তোমাকে মনের সাথে এই দেহখানও দান করেছিলাম!!
পড়া থামিয়ে অমিতের দিকে তাকাতেই অমিত বললো হা ঠাম্মি সেদিন কেমন যেন ব্যবহার করছিলো,বার বার রাজ শেখর বলছিলো,কেষ্ট ঠাকুর বলছিলো, ওটাই আমার প্রথম আর শেষ ঠাম্মীর সাথে।আর কি পড়বো রাজ কুমার??কি আর পড়বে বলো,আজ নিজেকে নতুন করে জানছি।আমার যে জন্মের আগেই কপাল পোড়া অঞ্জলী। মন খারাপ করোনা রাজকুমার ভগবান যা করেন ভালোর জন্যই করেন।কিন্তু আমি ভাবছি এসব কথা ঠাম্মী তো না জানালেও পারতো তোমাকে।হা এটা অতি গোপন বিষয় তাই উনি এতো সিক্রেট ভাবে রেখেছে,কিন্তু এর সাথে তোমার বিপদের কি সম্পর্ক??আমিও তাই ভাবছি অঞ্জলী।আচ্ছা এক কাপ কফি আনতে পারবে।মাথাটা ধরছে একটু,খেতে খেতে না হয় বাকিটা পড়া যাবে হয়ত আরো কিছু জানা যাবে।কারণ ঠাম্মী বলছে ধাপে ধাপে পড়তে তাছাড়া আমি আজকেই এগুলা সব পড়ে শেষ করতে চাই।
অঞ্জলী কফি আনতে চলে গেলো,ফিরে আসলো একটু পর হাতে একটি মাএ কাপ!কি ব্যাপার তুমি খাবেনা??প্রশ্ন করলো অমিত!!অঞ্জলী বসতে বসতে বললো পরিমানে একটু বেশি করেই এনেছি!!ইঙ্গিতটা প্রথমে না বুঝলেও পরে ঠিকই ধরে ফেললো অমিত।তারপর নিজে কাপে একটা চুমুক দিয়ে কাপটা বাড়িয়ে দিলো অঞ্জলীর দিকে!!!!!
এদিকে আমার ছোট ছেলে সহজ সরল অথচ প্রখর উপস্থিত বুদ্ধি,তার দরুণ কোম্পানির বড় বড় টেন্ডার গুলো অন্য কোম্পানি গুলোকে টপকে আমাদের কোম্পানিতে নিয়ে আসছে।এতে আমাদের কোম্পানি আরো ফুলে ফেপে উঠছে।তোমার দাদু আর আমি দুজনেই তার উপর খুব সস্তুষ্ট,এর ফলে আমার বড় ছেলে সিদ্ধার্থ সবার উপরে বসে থাকলেও সব জায়গাতে তোমার বাবার অগাথ যাতায়াত থেকে শুরু হলো সুনাম,খ্যাতি যেন ওর পিছু ছাড়ছেনা।মানুষ বলেনা কারো ভালো কেউ দেখতে পারেনা,সে যতোই নিজের লোক হোক,ঠিক তেমনি হলো আমার বড় ছেলে সামনে বা সরাসরি কিছু না বললেও তোমার বাবাকে ভাল চোখে দেখতে পেত না।সহজ সরল ছেলে আমার সেসবের ধার ধারতই না।
সেদিন আমি আমার ছোট বৌমার সব কথা শুনে নিজের চোখে তাদের রাত্রিমিলন দেখার চেষ্টা করি।একদিন গভীর রাতে আমি গোপনে তাদের মিলন দেখি আর দেখি হতাশা আর তোমার মায়ের চোখের জল ছাড়া কিছুই চোখে পরেনি।চিন্তাতে আমার নাওয়া খাওয়া যাবার অবস্থা,কি হবে ওর ভবিষ্যৎ।তুমি বা অঞ্জলী আজ যে সিদ্ধার্থ কে দেখছো,সে কিন্তু আগে এমন ছিলো না।সামনে ভালো সাজলেও আমার চোখে সে ফাঁকি দিতে পারেনি,রায় পরিবারে কোথায় কি হয় সেটা আমার চোখে ফাঁকি দেয়া সম্ভব না।সেটার প্রমাণ স্বরুপ বলি,তোমার বড় জেঠু মানে আমার বড় ছেলের সাথে আমার বিধবা মেয়ের যে একটা অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো এবং সেই কার্যের প্লান করেছিলো অঞ্জলী সেটাও আমি জানি।কিন্তু তাতে আমি রাগ করিনি অঞ্জলীর উপর কারণ আমার মেয়ে সুহাসিনী যে অঞ্জলীকে এই বাড়িতে থাকতে দেবার পক্ষে ছিলো না,সেটা আমি জানি,তাই অঞ্জলী নিজের জায়গা শক্ত করতেই এই কাজটা করেছে।তাই তার উপর আমার কোন রাগ নেই।
এতোটুকু পড়েই অঞ্জলী অপরাধীর মত অমিতের দিকে তাকালো।আমি সত্যি এটা করতে চাইনি কিন্তু কি করবো তুমি তো জানো পিসি কথায় কথায় কি সব বলতো।ঠাম্মি যখন তোমাকে মাফ করে দিয়েছে।সেখানে আমার কিছু বলার নেই অমিত বললো।তুমি পড়া শুরু করো।
একদিন রাতে রাজ শেখর মানে তোমার দাদু যখন প্রবল বিক্রমে আমাকে চিরে ফেলছে,তখন আমি আমার বড় ছেলের সাথে ছোট ছেলের সম্পর্ক কেমন আর তোমার মায়ের সাথের বিষয়টা বললাম।দেখো ছোটর যদি সন্তানাদি না হয়,তাহলে বৌমা কিন্তু সারা জীবন মুখ বুজে সহ্য নাও করতে পারে।আর আমরা যখন থাকবো না তখন নিঃসন্তান আমার ছেলেটা এমনি কষ্টে তো মরবেই,তার উপর বড় ছেলে কিন্তু ওকে সারাজীবন হেয় করে রাখবে তাই কোন একটা উপায় বের করো তুমি। একটা কথা বলে রাখি দাদু আজ যেমন এই বাড়িতে শুধু তুমি আমার খোঁজ নাও তখন ঠিক তোমার মতই ছিলো তোমার বাবা।
কিছুদিন চিন্তা ভাবনা করেও যখন কোন সুরাহা হলো না,বৌমাকে বললাম ওকে ডাঃ দেখাতে বলতে,বৌমা নাকি সেটা আগেই বলেছে কিন্তু জমিদারী রক্ত যার শরীরে সে কি নিজের দোষ কখনো চোখে দেখে।তারপর একদিন আমিই তোমার দাদুকে বললাম তুমি দিবে একটা সন্তান!আমার কথা শুনে তোমার দাদু আমার দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেলো।কি বলছো তুমি ভেবে বলছো?এমন নিচ কাজ আমাকে করতে বলছো?তোমার দাদু রেগে গেল।তোমার কাছে বলতে লজ্জা নেই দাদুভাই মেয়েদের কাছে পুরুষ বধের এক কল আছে শুধু চাবি ঢুকিয়ে দিলেই হলো।আমিও তোমার দাদুকে চিৎ করে ফেলে দিয়ে কলের ভিতর চাবি দিলাম অমনি তোমার দাদু গলে বরফ হয়ে গেল।কলে দম দিতে দিতে তখন তাকে বুঝাতে লাগলাম, দেখো তুমি আমিতে ছিলে আমাকে ছাড়াই বাইরে বাইরে থেকেছো,আমি জানি এমন যন্ত্র নিয়ে কেউ শুধু শুধু বসে থাকে না।আর তুমি সেটা আমার কাছে স্বীকারও করেছো।আমি তাতে কোন আপত্তী করিনি।আর একটি বার তেমন করলে কি এমন ক্ষতি হবে।পুরানেও তো এমন কতো কাহিনী আছে!!দেখো তারা অন্য মেয়ে ছিলো,আর এ আমার বৌমা নিজের মেয়ের মত,তাছাড়া ওই দিনের পর তার সামনে আমি বা সেই কি করে মুখ দেখাবো।
সে ব্যবস্থা আমি করবো লক্ষীটি তুমি শুধু রাজী হয়ে যাও।না হলে আমাদের এই সুখের সংসারে ভাঙ্গন ধরবে।আজ যদি বৌমার কোন দোষ থাকতো তাকে বিদেয় করে নতুন বৌ আনতাম,কিন্তু দেখো সমস্যা আমাদের ছেলের,তাই সে উপায় নেই আর এমন লক্ষ্মী বৌমা যে কিনা স্বামীর আদর থেকে বঞ্চিত হয়েও মুখ বুজে আছে এমন মেয়ে কি আর পাবে।তাছাড়া রায় পরিবারের বংশধর হবে রায় পরিবারের বাইরের কারো ঔরসজাত সেটা আমি মেনে নিতে পারবো না।রাজ শেখর কিছুক্ষণ গভীর চিন্তা করে বললো আচ্ছা তাই হবে।কিন্তু বৌমা যেন জানতে না পারে এটা কার দ্বারা হচ্ছে।
আজ তোমায় বলতে কষ্ট হচ্ছে দাদু ভাই,তবুও বলছি তুমি তোমার বাবার না তোমার দাদুর অর্থাৎ রাজ শেখরের ঔরসজাত সন্তান।তারপর একদিন তোমার মাকে সব বুঝিয়ে বলি,কিন্তু কার দ্বারা এটা করা হবে সে ব্যাপারে কোন কিছু জানতে দিইনি।তোমার মা তো রীতিমত বিদ্রোহ করে বসে প্রথমে,পরে তাকে বুঝিয়ে বলি ভবিষ্যতের কথা তাছাড়া আমি শাশুড়ি হয়ে যখন অনুমতি দিচ্ছি তখন সমস্যা কোথায়।সব শেষে নিমরাজী হয়ে সম্মতি দেয় তোমার মা।
একদিন সময় বুঝে ইচ্ছা করে তোমার বাবাকে কোম্পানির একটা কাজে দূরে পাঠাই,আর সেদিন রাতে তোমার মাকে আমার ঘরে ডেকে নিই,তারপর তোমার মায়ের চোখ বেঁধে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আমি মাথার কাছে বসে থাকি।তারপর আর বর্ণনার অপেক্ষা থাকে না। তোমার দাদুর দ্বারা তার গর্ভ সঞ্চয় হয়।
এভাবে সব কিছু ঠিকঠাক চলছিলো,কিন্তু কালো মেঘের ছায়া পরলো কিছুদিন পর।তোমার বাবা কিছুদিন পর নিজে থেকে কি ভেবেই ডাঃ এর কাছে যায় আর জানতে পারে তার অক্ষমতার কথা।ততোদিনে তুমি তোমার মায়ের পেটে বেড়ে উঠছো,এমনিতে তোমার বাবা চিন্তায় দিন পার করছিলো,কিন্তু তোমার মায়ের অবস্থা দেখে পাগল হয়ে গেলো।তোমার মাকে খারাপ মেয়ে ছেলে ভেবে শুরু করলো নতুন অশান্তি কিন্তু সেটা তাদের ঘরের চার দেওয়ালের মাঝেই সীমাবদ্ধ।আমি জানতে পেরে তোমার বাবা কে আমার ঘরে ঢাকলাম একদিন,তোমার বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পরলো।ছেলের এমন অবস্থা দেখে আমি তখন সত্যিটা বললাম তাকে শুধু কার দ্বারা সেটা বাদে।আর এটাও বলে দিলাম,বৌ এই ব্যাপারে কিছুই জানে না এমনকি সে রাজিও ছিলো না।তাই এই ব্যাপারটা চিরদিনের মতো গোপন রাখবে।আমার কথার উপর কোন কথা বলার সাহস ছিলো না তোমার বাবার। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর হয়ে যায় আর এক।দিন দিন তোমার বাবা ভেঙ্গে পরলেন।এর মধ্যে কিভাবে জানিনা তোমার বাবার যে সন্তান জন্ম দেবার ক্ষমতা নেই সেটা জেনে গেলো তোমার জেঠু সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরী।আর তোমার বাবাকে পরস্ত করার মারণ অস্ত্র হিসেবে সেটাই ব্যবহার করলো।কিন্তু সবই হচ্ছে নীরবে।ধীরে ধীরে তোমার বাবাকে মারছে।যাকে বলে Silent killing,সব দেখে তোমার জেঠুকে একদিন ডাকলাম,কিন্তু বুঝানোর জন্য ডেকে সে আমাকে রীতিমত হুমকি দিলো,যে বাইরের কারো সন্তান এই রায় পরিবারের উত্তরাধীকারি হতে পারেনা। আমিও অপারগ ছিলাম কি করে বলি যে এ সন্তান রায় পরিবারের বাইরের না,রায় পরিবারেরই।
তারপর কেটে গেছে কয়েকটা মাস সব দেখে তোমার দাদুর মত মানুষ ও ভেঙ্গে পরলো,ভাল করতে যেয়ে চোখের সামনে পরিবারের ভাঙন দেখতে হবে সেটা তিনি ভাবেননি।তাই চিন্তায় কষ্টে তুমি জন্মাবার দু'মাস আগে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।যাবার আগে আমি বলেছিলাম তুমি চলে গেলে কে দেখবে আমায়?উত্তরে বলেছিলেন কেন আমি তো আবার আসবো তোমার রাজ শেখর হয়ে।তাই তো দাদুভাই আমি তোমাকে মাঝে মাঝে রাজ শেখর বলতাম,কারণ তোমার ভিতর আমি সেই রাজ শেখরের জেদ,তেজ আর পরিক্রমা দেখেছিলাম,আমার প্রতি তোমার ভালবাসা,তাই সেদিন তোমাকে রাজ শেখরের স্থানে বসিয়ে তোমাকে মনের সাথে এই দেহখানও দান করেছিলাম!!
পড়া থামিয়ে অমিতের দিকে তাকাতেই অমিত বললো হা ঠাম্মি সেদিন কেমন যেন ব্যবহার করছিলো,বার বার রাজ শেখর বলছিলো,কেষ্ট ঠাকুর বলছিলো, ওটাই আমার প্রথম আর শেষ ঠাম্মীর সাথে।আর কি পড়বো রাজ কুমার??কি আর পড়বে বলো,আজ নিজেকে নতুন করে জানছি।আমার যে জন্মের আগেই কপাল পোড়া অঞ্জলী। মন খারাপ করোনা রাজকুমার ভগবান যা করেন ভালোর জন্যই করেন।কিন্তু আমি ভাবছি এসব কথা ঠাম্মী তো না জানালেও পারতো তোমাকে।হা এটা অতি গোপন বিষয় তাই উনি এতো সিক্রেট ভাবে রেখেছে,কিন্তু এর সাথে তোমার বিপদের কি সম্পর্ক??আমিও তাই ভাবছি অঞ্জলী।আচ্ছা এক কাপ কফি আনতে পারবে।মাথাটা ধরছে একটু,খেতে খেতে না হয় বাকিটা পড়া যাবে হয়ত আরো কিছু জানা যাবে।কারণ ঠাম্মী বলছে ধাপে ধাপে পড়তে তাছাড়া আমি আজকেই এগুলা সব পড়ে শেষ করতে চাই।
অঞ্জলী কফি আনতে চলে গেলো,ফিরে আসলো একটু পর হাতে একটি মাএ কাপ!কি ব্যাপার তুমি খাবেনা??প্রশ্ন করলো অমিত!!অঞ্জলী বসতে বসতে বললো পরিমানে একটু বেশি করেই এনেছি!!ইঙ্গিতটা প্রথমে না বুঝলেও পরে ঠিকই ধরে ফেললো অমিত।তারপর নিজে কাপে একটা চুমুক দিয়ে কাপটা বাড়িয়ে দিলো অঞ্জলীর দিকে!!!!!
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!