14-09-2020, 03:38 PM
১৯ পর্ব
“অমিত স্যারের কোম্পানী দুটি এককভাবে রোহিত স্যার ভোগ করছেন। তো এটার আইনগত ভিত্তি কি?”
“অমিতের পাওয়ার অব এটর্নী দেয়া আছে। ঠাকুর মা থাকা অবস্থাতেই এটা করা হয়েছিল অমিত আমেরিকা যাবার আগে।”
“ধরুণ অমিত স্যার আজ মারা গেলেন। তাতে কোম্পানী দুটির কি হবে? বা তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার কে হবেন?”
“অমিতের কোন উইল আছে কিনা আমি জানি না। না থাকলে বিধি মোতাবেক কোম্পানী সকল ভাইবোনের মাঝে ভাগ হয়ে যাবে।”
“আপনার কি ধারণা অমিত স্যার সম্পত্তি বিরোধের শিকার না কোন অপরাধী চক্র এর পেছনে কাজ করছে?”
“বুঝতে পারছি না। দুটোই হতে পারে আবার কোনটাও না হতে পারে।”
“মনি শংকর স্যারের শ্যালক, তথা কথিত সাধুপুরুষ সিধু, তার সম্পর্কে বলেন।”
“তেমন কিছু জানি না। তবে বদ টাইপের লোক। ইউনিয়নের সাথে যোগসাজস আছে। টেরোরিস্টদের সাথেও হাত আছে। কোম্পানীর জন্য ক্ষতিকর।”
“যদি এমন হয় রায় পরিবারের কেউ ফেসে যান, আপনার কি ভুমিকা হবে?”
“অমিতের আততায়ীদের শাস্তি পেতে হবে। সেটা যেই হোক।”
“আপনি সাবধানে থাকবেন। আপনার ডার্ক ব্লু গাড়িটা আইডেন্টিফাইড হয়ে গেছে।”
“শুধু তোমার কাছে না সবার কাছে?”
“আপাততঃ আমার, যে কোন মূহুর্তে অন্যরাও জেনে যাবে।”
“ধন্যবাদ ব্যাটা সতর্ক করার জন্য।”
অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটা চোখের সামনে নিয়ে খুব তীক্ষ্ণ চোখে তাকালেন আর এম ও মেয়েটার দিকে। তার পর বললেন, “আগে কোথাও কাজ করেছ?”
“মেয়েটা ডানে বামে মাথা নাড়লো।”
“প্র্যাকটিকেল এক্সপিরিয়েন্স ছাড়া কাজ করা খুব কঠিন।”
“আমি শিখে নেবো স্যার।”
“হুম।
মালিক হলে কত আনাড়িকেই না চাকুরী দেয়া যায়। মনে মনে বিরক্ত হলেও আর এম ও আর কিছু বলার সাহস পেল না। মালিকের আত্মীয় বলে কথা। ডিরেক্টর বাবু তাকে আগেই ফোনে জানিয়েছিলেন তার গ্রামের কোন এক গরীব আত্মীয়ের মেয়েকে নার্সের চাকুরী দিয়েছেন। আজ রাতেই যে কোন সময় আসতে পারে মেয়েটা। আজ থেকেই ডিউটিতে বহাল করে দেয়া ভাল।
সুব্রত চলে যাবার পর অঞ্জলী বেশ ভাবনায় পড়ে গিয়েছিল। সে যে অমিতকে ফলো করছে সেটা সুব্রত জেনে গেছে। তার মানে এখন তাকে অন্য পথ ধরতে হবে। সে হাসপাতালের পরিচালকের নাম্বার খোজেঁ বের করলো। ঠাকুরমার প্রাইভেট সেক্রেটারী হিসাবে অনেক উপরতলার মানুষদের সাথে যোগাযোগ ছিল তার। কৌশলটা ঠাকুরমা শিখিয়েছিলেন। এ পৃথিবীতে কোন কিছুই মাগনা নয়। আজ যার উপকার করছো, লিখে রাখ; সময় সুযোগমত চেয়ে নেবে। এই হাসপাতাল আধুনিকায়নে অর্থ সংকটে ছিলেন মালিক পক্ষ। ঠাকুরমার গ্যারান্টিতে ব্যাংক লোন পায় তারা। বিষয়টা নোট করা আছে অঞ্জলীর কাছে। ফোনে পরিচালককে পেয়েই প্রসংগটা উত্থাপন করলো অঞ্জলী সুকৌশলে। তারপর একটা চাকুরী চাইল নার্সের। আশ্বস্ত করলো এই বলে যে তার নার্সিং প্রশিক্ষণ আছে। কাজ চালাতে কোন সমস্যা হবে না। আশ্রম ছেড়ে নার্সের চাকুরী কেন প্রয়োজন এ প্রশ্নের কোন জবাব অঞ্জলী দিল না। শুধু বললো, “আপনি অপারগ হলে আমি অন্য কোথাও ট্রাই করবো।”
“না না মিস চ্যাটার্জি আমি তা বলিনি। নিশ্চই আপনার কোন প্রয়োজন আছে। আমি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারসহ আপনাকে আর এম ও ‘র কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
সেন্ট্রাল হাসপাতালের নার্স হিসাবে বহাল হয়ে গেল অঞ্জলী। নার্সের পোষাকে দারুণ লাগছে তাকে। মেকাপ নিয়ে মূখের আদলটাকে এমনভাবে পরিবর্তন করেছে যে কেউ তাকে চিনতে পারবে না। গলার স্বর পাল্টে ফেলেছে। সামনাসামনি কথা বললেও তাকে চেনা কষ্টকর হবে।
প্রতাপ হাজরাকে দেখেই থানার বড়বাবু অসহায় বোধ করতে লাগলেন।এটা মন্ত্রী মশায়ের চামচা।হেন মন্দ কাজ নেই যা সে করতে পারে না।ছিচকে সিধেল চোর থেকে রাজনৈতিক প্রশ্রয় পেয়ে আজ বেশ হোমড়া-চোমড়া হয়ে পড়েছে।ওর সবচে খারাপ দিক হলো ব্ল্যাক মেইলিং।নানা গোপন তথ্য যোগাড় করে সেটা দিয়ে ব্ল্যাক মেইল করে কাজ আদায় করে।আস্ত একটা হারামীর বাচ্চা।তবে মনে যাই থাকুক, মূখে তার অমায়িক হাসি। “আসুন আসুন প্রতাপ বাবু, তা বলুন কি সেবা করতে পারি?”
“বেশী তেলাবেন না বড় বাবু, প্রতি মাসে আপনাকে মাইনের দশগুণ টাকা আমরা দেই্।তো সে টাকা যোগাড় করতে আমাদেরওতো কিছু কাজ করতে হয় নাকি?”
“আমি ঠিক আপনার কথা বুঝতে পারছি না।”
“আমার লোকদের পিছনে আপনি বিনা নোটিশে পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছেন।তারা সাতজন লোককে আহত করেছে।তাও আপনি বুঝতে পারছেন না?”
“সত্যি আমি বুঝতে পারছি না প্রতাপ বাবু।আপনার লোকদের তাড়া করার কোন নির্দেশ আমি দিইনি।”
“তা হলে কি আকাশ থেকে পুলিশ এসেছিল?”
“ওয়েট ওয়েট, আমার নতুন একজন অফিসার আছে।রগ ত্যাড়া, দেখি তার কাজ কি না?”
বড় বাবু সুব্রতকে ডেকে পাঠালেন।সুব্রত এসে প্রতাপ হাজরাকে দেখেই যা বুঝার বুঝে নিল। কেউ না জানলেও সুব্রত’র ধারণা অঞ্জলী মিসই অমিতকে উদ্ধার করেছেন। কিন্তু প্রতাপ হাজরার লোকজন ধরে নিয়েছে এটা পুলিশের কাজ। আর বড় বাবুকে যেহেতু নিয়মিত ঘুষ দেয়া হয় তাদের কাজ নির্বিঘ্নে করার জন্য তাই এখন কৈফিয়ত চাইতে এসেছে। সুব্রত এসে স্যালুট করে দাঁড়িয়ে রইল। বড় বাবু প্রতাপ হাজরাকে দেখিয়ে বললেন, “ইনি প্রতাপ বাবু, মন্ত্রী বাহাদুরের খাস লোক। বড়ই প্রতাপশালী। দিন দুই আগে তাদের কোন লোককে পুলিশ বন পথে আক্রমণ করেছিল। তুমি জান ঘটনাটা?”
“স্যার, আমাকে আর একটু ক্লিয়ার করতে হবে। বুঝতে পারছি না”
এবারে প্রতাপ হাজরা নিজে মূখ খুললেন, “দুই দিন আগে একজন লোকের সাথে আমার কয়েকজন কর্মচারীর বচসা হয়। তখন পুলিশ আমার কর্মচারীদের গুলি করেছে।”
“ভেরী স্যাড স্যার,” সুব্রত ইতোমধ্যে মোবাইল রেকর্ডার চালু করে দিয়েছে, “কার সাথে কি নিয়ে বচসা হয়েছিল স্যার?”
লোকটা এতটাই ডেসপারেট যে থানায় বসে নিজেদের অপরাধ সম্পর্কে কথা বলতে একটুও দ্বিধা করছে না।
“দেখুন, সব বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না। আমি এখানে জবানবন্দি দিতে আসিনি। আমার লোকদেরকে কে এবং কেন গুলি করা হয়েছে আমি জানতে চাইছি।”
“আমিও তো বিষয়টা বুঝার চেষ্টা করছি প্রতাপ বাবু। সারাদিন চোর-গুন্ডা ঠেংগাই। এর মাঝে কোন ঘটনার কথা বলছেন আমিতো সেটাই বুঝতে পারছি না।”
“আমাদের এক ক্লায়েন্টের প্রতিপক্ষ, নাম অমিত রায়। তাকে আমার ক্লায়েন্টের রাস্তা থেকে সরে যাবার জন্য ভয় দেখাচ্ছিল আমার লোকজন গজারী বনের পথে। সেখানে পুলিশ গুলি করে আমার লোকদের আহত করে।”
“আচ্ছা দাড়ান, দিন দুই আগে গজারী বনের শেষ মাথায় একজন লোককে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেদম পেটাচ্ছিল কিছু দুষ্কৃতকারী। দেখে মনে হয়েছিল তাকে মেরে ফেলবে। আমি বাধ্য হয়ে তাকে বাঁচানোর জন্য গুলি ছুড়ি। তারা কি আপনার লোক ছিল?”
“হ্যা আমার লোক ছিল। আমার ট্যাক্সের পয়সায় বেতন খাবেন, আমার গাটের টাকায় ঘুষ খাবেন আবার আমার লোকদের দুষ্কৃতকারী বলে গুলি করবেন এটা কেমন কথা হলো অফিসার?”
সুব্রতর ফর্সা মূখটা রাগে লাল টকটকে বর্ণ ধারণ করেছে। কিন্তু সে জানে এটা মাথা গরমের খেলা নয়। মাথা খাটানোর খেলা। এ ব্যাটা ঘুটি মাত্র। এ কে ব্যবহার করেই তার ক্লায়েন্টের কাছে পৌছাতে হবে। সে অসহায় ভংগী করে বড়বাবুর মূখের দিকে তাকালো। বললো,
“স্যার আমি কেমন করে বুঝবো এরা প্রতাপ বাবুর লোক। আমাকে আগে থেকে কেউ ইনফরম করেনি।”
বড় বাবু সুযোগটা লুফে নিলেন। বললেন, “দেখুন প্রতাপ বাবু, যা হয়েছে তা একটা ভুল বুঝাবুঝি মাত্র। আপনারা ক্ষমতার কাছাকাছি লোক। দেশের জনগণের মংগলের জন্য কাজ করতে গিয়ে কোথাও যদি আপনারা একটু কঠোর হন তো সেটা আমাদের আগে থেকে ইনফরম করা দরকার। আপনি সুব্রতকে আপনার কন্টাক্ট নাম্বারটা দিন। কারণ আমি মাঠে থাকি না। মাঠ দাবড়ে বেড়ায় সুব্রত।”
“ঠিক আছে অফিসার এর পর আর যেন এরকম ঘটনা না ঘটে।”
“অমিত স্যারের কোম্পানী দুটি এককভাবে রোহিত স্যার ভোগ করছেন। তো এটার আইনগত ভিত্তি কি?”
“অমিতের পাওয়ার অব এটর্নী দেয়া আছে। ঠাকুর মা থাকা অবস্থাতেই এটা করা হয়েছিল অমিত আমেরিকা যাবার আগে।”
“ধরুণ অমিত স্যার আজ মারা গেলেন। তাতে কোম্পানী দুটির কি হবে? বা তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার কে হবেন?”
“অমিতের কোন উইল আছে কিনা আমি জানি না। না থাকলে বিধি মোতাবেক কোম্পানী সকল ভাইবোনের মাঝে ভাগ হয়ে যাবে।”
“আপনার কি ধারণা অমিত স্যার সম্পত্তি বিরোধের শিকার না কোন অপরাধী চক্র এর পেছনে কাজ করছে?”
“বুঝতে পারছি না। দুটোই হতে পারে আবার কোনটাও না হতে পারে।”
“মনি শংকর স্যারের শ্যালক, তথা কথিত সাধুপুরুষ সিধু, তার সম্পর্কে বলেন।”
“তেমন কিছু জানি না। তবে বদ টাইপের লোক। ইউনিয়নের সাথে যোগসাজস আছে। টেরোরিস্টদের সাথেও হাত আছে। কোম্পানীর জন্য ক্ষতিকর।”
“যদি এমন হয় রায় পরিবারের কেউ ফেসে যান, আপনার কি ভুমিকা হবে?”
“অমিতের আততায়ীদের শাস্তি পেতে হবে। সেটা যেই হোক।”
“আপনি সাবধানে থাকবেন। আপনার ডার্ক ব্লু গাড়িটা আইডেন্টিফাইড হয়ে গেছে।”
“শুধু তোমার কাছে না সবার কাছে?”
“আপাততঃ আমার, যে কোন মূহুর্তে অন্যরাও জেনে যাবে।”
“ধন্যবাদ ব্যাটা সতর্ক করার জন্য।”
অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটা চোখের সামনে নিয়ে খুব তীক্ষ্ণ চোখে তাকালেন আর এম ও মেয়েটার দিকে। তার পর বললেন, “আগে কোথাও কাজ করেছ?”
“মেয়েটা ডানে বামে মাথা নাড়লো।”
“প্র্যাকটিকেল এক্সপিরিয়েন্স ছাড়া কাজ করা খুব কঠিন।”
“আমি শিখে নেবো স্যার।”
“হুম।
মালিক হলে কত আনাড়িকেই না চাকুরী দেয়া যায়। মনে মনে বিরক্ত হলেও আর এম ও আর কিছু বলার সাহস পেল না। মালিকের আত্মীয় বলে কথা। ডিরেক্টর বাবু তাকে আগেই ফোনে জানিয়েছিলেন তার গ্রামের কোন এক গরীব আত্মীয়ের মেয়েকে নার্সের চাকুরী দিয়েছেন। আজ রাতেই যে কোন সময় আসতে পারে মেয়েটা। আজ থেকেই ডিউটিতে বহাল করে দেয়া ভাল।
সুব্রত চলে যাবার পর অঞ্জলী বেশ ভাবনায় পড়ে গিয়েছিল। সে যে অমিতকে ফলো করছে সেটা সুব্রত জেনে গেছে। তার মানে এখন তাকে অন্য পথ ধরতে হবে। সে হাসপাতালের পরিচালকের নাম্বার খোজেঁ বের করলো। ঠাকুরমার প্রাইভেট সেক্রেটারী হিসাবে অনেক উপরতলার মানুষদের সাথে যোগাযোগ ছিল তার। কৌশলটা ঠাকুরমা শিখিয়েছিলেন। এ পৃথিবীতে কোন কিছুই মাগনা নয়। আজ যার উপকার করছো, লিখে রাখ; সময় সুযোগমত চেয়ে নেবে। এই হাসপাতাল আধুনিকায়নে অর্থ সংকটে ছিলেন মালিক পক্ষ। ঠাকুরমার গ্যারান্টিতে ব্যাংক লোন পায় তারা। বিষয়টা নোট করা আছে অঞ্জলীর কাছে। ফোনে পরিচালককে পেয়েই প্রসংগটা উত্থাপন করলো অঞ্জলী সুকৌশলে। তারপর একটা চাকুরী চাইল নার্সের। আশ্বস্ত করলো এই বলে যে তার নার্সিং প্রশিক্ষণ আছে। কাজ চালাতে কোন সমস্যা হবে না। আশ্রম ছেড়ে নার্সের চাকুরী কেন প্রয়োজন এ প্রশ্নের কোন জবাব অঞ্জলী দিল না। শুধু বললো, “আপনি অপারগ হলে আমি অন্য কোথাও ট্রাই করবো।”
“না না মিস চ্যাটার্জি আমি তা বলিনি। নিশ্চই আপনার কোন প্রয়োজন আছে। আমি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারসহ আপনাকে আর এম ও ‘র কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
সেন্ট্রাল হাসপাতালের নার্স হিসাবে বহাল হয়ে গেল অঞ্জলী। নার্সের পোষাকে দারুণ লাগছে তাকে। মেকাপ নিয়ে মূখের আদলটাকে এমনভাবে পরিবর্তন করেছে যে কেউ তাকে চিনতে পারবে না। গলার স্বর পাল্টে ফেলেছে। সামনাসামনি কথা বললেও তাকে চেনা কষ্টকর হবে।
প্রতাপ হাজরাকে দেখেই থানার বড়বাবু অসহায় বোধ করতে লাগলেন।এটা মন্ত্রী মশায়ের চামচা।হেন মন্দ কাজ নেই যা সে করতে পারে না।ছিচকে সিধেল চোর থেকে রাজনৈতিক প্রশ্রয় পেয়ে আজ বেশ হোমড়া-চোমড়া হয়ে পড়েছে।ওর সবচে খারাপ দিক হলো ব্ল্যাক মেইলিং।নানা গোপন তথ্য যোগাড় করে সেটা দিয়ে ব্ল্যাক মেইল করে কাজ আদায় করে।আস্ত একটা হারামীর বাচ্চা।তবে মনে যাই থাকুক, মূখে তার অমায়িক হাসি। “আসুন আসুন প্রতাপ বাবু, তা বলুন কি সেবা করতে পারি?”
“বেশী তেলাবেন না বড় বাবু, প্রতি মাসে আপনাকে মাইনের দশগুণ টাকা আমরা দেই্।তো সে টাকা যোগাড় করতে আমাদেরওতো কিছু কাজ করতে হয় নাকি?”
“আমি ঠিক আপনার কথা বুঝতে পারছি না।”
“আমার লোকদের পিছনে আপনি বিনা নোটিশে পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছেন।তারা সাতজন লোককে আহত করেছে।তাও আপনি বুঝতে পারছেন না?”
“সত্যি আমি বুঝতে পারছি না প্রতাপ বাবু।আপনার লোকদের তাড়া করার কোন নির্দেশ আমি দিইনি।”
“তা হলে কি আকাশ থেকে পুলিশ এসেছিল?”
“ওয়েট ওয়েট, আমার নতুন একজন অফিসার আছে।রগ ত্যাড়া, দেখি তার কাজ কি না?”
বড় বাবু সুব্রতকে ডেকে পাঠালেন।সুব্রত এসে প্রতাপ হাজরাকে দেখেই যা বুঝার বুঝে নিল। কেউ না জানলেও সুব্রত’র ধারণা অঞ্জলী মিসই অমিতকে উদ্ধার করেছেন। কিন্তু প্রতাপ হাজরার লোকজন ধরে নিয়েছে এটা পুলিশের কাজ। আর বড় বাবুকে যেহেতু নিয়মিত ঘুষ দেয়া হয় তাদের কাজ নির্বিঘ্নে করার জন্য তাই এখন কৈফিয়ত চাইতে এসেছে। সুব্রত এসে স্যালুট করে দাঁড়িয়ে রইল। বড় বাবু প্রতাপ হাজরাকে দেখিয়ে বললেন, “ইনি প্রতাপ বাবু, মন্ত্রী বাহাদুরের খাস লোক। বড়ই প্রতাপশালী। দিন দুই আগে তাদের কোন লোককে পুলিশ বন পথে আক্রমণ করেছিল। তুমি জান ঘটনাটা?”
“স্যার, আমাকে আর একটু ক্লিয়ার করতে হবে। বুঝতে পারছি না”
এবারে প্রতাপ হাজরা নিজে মূখ খুললেন, “দুই দিন আগে একজন লোকের সাথে আমার কয়েকজন কর্মচারীর বচসা হয়। তখন পুলিশ আমার কর্মচারীদের গুলি করেছে।”
“ভেরী স্যাড স্যার,” সুব্রত ইতোমধ্যে মোবাইল রেকর্ডার চালু করে দিয়েছে, “কার সাথে কি নিয়ে বচসা হয়েছিল স্যার?”
লোকটা এতটাই ডেসপারেট যে থানায় বসে নিজেদের অপরাধ সম্পর্কে কথা বলতে একটুও দ্বিধা করছে না।
“দেখুন, সব বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না। আমি এখানে জবানবন্দি দিতে আসিনি। আমার লোকদেরকে কে এবং কেন গুলি করা হয়েছে আমি জানতে চাইছি।”
“আমিও তো বিষয়টা বুঝার চেষ্টা করছি প্রতাপ বাবু। সারাদিন চোর-গুন্ডা ঠেংগাই। এর মাঝে কোন ঘটনার কথা বলছেন আমিতো সেটাই বুঝতে পারছি না।”
“আমাদের এক ক্লায়েন্টের প্রতিপক্ষ, নাম অমিত রায়। তাকে আমার ক্লায়েন্টের রাস্তা থেকে সরে যাবার জন্য ভয় দেখাচ্ছিল আমার লোকজন গজারী বনের পথে। সেখানে পুলিশ গুলি করে আমার লোকদের আহত করে।”
“আচ্ছা দাড়ান, দিন দুই আগে গজারী বনের শেষ মাথায় একজন লোককে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেদম পেটাচ্ছিল কিছু দুষ্কৃতকারী। দেখে মনে হয়েছিল তাকে মেরে ফেলবে। আমি বাধ্য হয়ে তাকে বাঁচানোর জন্য গুলি ছুড়ি। তারা কি আপনার লোক ছিল?”
“হ্যা আমার লোক ছিল। আমার ট্যাক্সের পয়সায় বেতন খাবেন, আমার গাটের টাকায় ঘুষ খাবেন আবার আমার লোকদের দুষ্কৃতকারী বলে গুলি করবেন এটা কেমন কথা হলো অফিসার?”
সুব্রতর ফর্সা মূখটা রাগে লাল টকটকে বর্ণ ধারণ করেছে। কিন্তু সে জানে এটা মাথা গরমের খেলা নয়। মাথা খাটানোর খেলা। এ ব্যাটা ঘুটি মাত্র। এ কে ব্যবহার করেই তার ক্লায়েন্টের কাছে পৌছাতে হবে। সে অসহায় ভংগী করে বড়বাবুর মূখের দিকে তাকালো। বললো,
“স্যার আমি কেমন করে বুঝবো এরা প্রতাপ বাবুর লোক। আমাকে আগে থেকে কেউ ইনফরম করেনি।”
বড় বাবু সুযোগটা লুফে নিলেন। বললেন, “দেখুন প্রতাপ বাবু, যা হয়েছে তা একটা ভুল বুঝাবুঝি মাত্র। আপনারা ক্ষমতার কাছাকাছি লোক। দেশের জনগণের মংগলের জন্য কাজ করতে গিয়ে কোথাও যদি আপনারা একটু কঠোর হন তো সেটা আমাদের আগে থেকে ইনফরম করা দরকার। আপনি সুব্রতকে আপনার কন্টাক্ট নাম্বারটা দিন। কারণ আমি মাঠে থাকি না। মাঠ দাবড়ে বেড়ায় সুব্রত।”
“ঠিক আছে অফিসার এর পর আর যেন এরকম ঘটনা না ঘটে।”
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!