14-09-2020, 02:46 PM
(This post was last modified: 14-09-2020, 02:56 PM by Kolir kesto. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
১৭ পর্ব
ম্যাগী রান দুটি একত্রে চেপে বার বার অমিতের বাড়ার সাইজ অনুভব করতে চাইছে। আর এমন মাইনকা চিপায় পড়ে অমিতের বাড়া যেন রাগে ফুসছে। তেড়ে ফুড়ে দুনিয়াটা একাকার করে দিতে চাইছে স্পেনিয়ার্ড ষাড়ের মত। ম্যাগীর পরনে এখনও প্যান্টিটা রয়েছে। ভিজে জবজবে হয়ে গেছে এটা। অমিতের চোষণ আর মর্দনে যোনীতে বান ডেকেছে ম্যাগীর। কান দুটি দপ দপ করে জ্বলছে। ইচ্ছে করছে আখাম্বা বাড়াটাকে গোগ্রাসে গিলে ফেলে। কিন্তু ম্যাগী পাকা খেলোয়াড়। সে জানে মাছকে কিভাবে খেলিয়ে বড়শিতে গাথতে হয়। অমিতের খোলা বুকে নিপলস দুটোকে খামছে ধরে ম্যাগী। এটা পুরুষদের বেশ উত্তেজিত করে।
অমিত শোয়া থেকে ম্যাগীকে বুকে নিয়েই উঠে বসলো। তার পর কোলের উপর তুলে নিয়ে সটান দাড়ালো মেঝের উপর। পলকা শরীরটা মাথার উপর তুলে শূণ্যে পাক খাওয়ালো। ম্যাগীর মনে হলো সে যেন শিশু পার্কের চড়কিতে চড়ে পাক খাচ্ছে। একটুও বাঁধা দিল না। শুধু দু হাতে গলা জড়িয়ে ধরে উপভোগ করলো অমিতের আদর। ঘোরানো শেষ হলে অমিত ম্যাগীকে দাড়ঁ করালো মেঝের উপর। রসে ভেজা প্যান্টিটার দুপাশে আংগুল ঢুকিয়ে নিতম্ব থেকে নামিয়ে দিল। পা গলিয়ে বের করে নিল।প্যান্টিটা ছুড়ে ফেলে খানিকটা পিছিয়ে গেল অমিত। যেন শিকারের আগে শিকারী তার শিকার জরীপ করছে। সম্পূর্ণ নিরাভরণ হতেই দু’হাতে চোখ ঢাকলো ম্যাগী। হাজার হলেও পুরুষের মুগ্ধ দৃষ্টির সামনে যে কোন মেয়ে লজ্জা পেতে বাধ্য। কাছে এসে আলতো করে চোখের উপর থেকে হাত দুটো সরিয়ে দিল। দুই হাতের তালু দিয়ে মূখটাকে দুপাশ থেকে ধরে সরাসরি তাকালো চোখের দিকে। আবেগ আর মায়াভরা চাহনী। ম্যাগীর বুক ভরে গেল সুখের আতিশয্যে। বছরের পর বছর ধরে এরকম আবেগময় আদরের অপেক্ষায় ছিল ম্যাগী। তার ঠোট দুটি তির তির করে কাঁপছে। অমিতের আগ্রাসী ঠোট নেমে এল ম্যাগীর কম্পমান ঠোটের উপর।
চুমোয় চুমোয় পাগল হয়ে যাবার দশা হলো ম্যাগীর। বুকটাকে এমন ভাবে দলাই মালাই করছে যে মনে হচ্ছে গোড়া থেকে না ছিড়ে যায়। শক্ত হাতের চাপে ব্যাথা ব্যাথা সুখ। দুই ঠোটের মাঝে নিপল নিয়ে মাথাটা বিদ্যুতের গতিতে এপাশ ওপাশ করতে থাকে অমিত। এমন আগ্রাসী সাকিং সহ্য করতে পারেনা ম্যাগী। উহ আহ চীrকার শুরু করে। অমিত থামে না। এক সময় সারা শরীর ঝাকুনি দিয়ে স্থির যায় ম্যাগী। তার জল খসে গেছে।
জোর করে অমিতের মূখটাকে বুক থেকে সরিয়ে দেয় ম্যাগী। তার কিছুটা বিরতি দরকার। সে দাড়ানো অবস্থাতেই কিছুক্ষণ অমিতের গায়ে হেলান দিয়ে বিশ্রাম নেয়। তার পর অমিতকে দাড় করিয়ে রেখে নিজে হাটু গেড়ে বসে তার সামনে। অমিতের ঠাটানো বাড়াটা একদম তার মূখের দিকে তাক করা। যেন কামান থেকে এখুনি গোলা ছুড়বে। উত্তেজিত বাড়াটাকে তার বিশাল মনে হয়। মাথার মুন্ডিটা এত সুন্দর যে তাকিয়ে থাকতেই ইচ্ছে করে। ম্যাগী প্রথমে গোড়ায় হাত চেপে ধরে। তার পর মুন্ডিটায় চুমু খায় আলতো করে। চার পাশে জিব বুলিয়ে ভিজিয়ে নেয়। তার পর পুরো মুন্ডিটা মূখের ভিতর নিয়ে দুই ঠোট খাজেঁর মাঝে চেপে ধরে। চাপ অক্ষুণ্ণ রেখে জিবের ডগা দিয়ে মুনডির ছিদ্রটা চাটতে থাকে। অমিত গো গো আওয়াজ তুলে। নাকের ফুটো বড় হয়ে যায়। নিঃশ্বাস ভারী আর দ্রুত হয়। চাটতে চাটতে বাড়াটাকে যথা সম্ভব গলার ভিতর নেবার চেষ্টা করে ম্যাগী। পুরোটা পেরে উঠে না। অমিতের মুন্ডি সরাসরি গলার পিছনে ধাক্কা খায়। বেইসটা চেপে ধরে দ্রুত মূখ উঠানামা করে ম্যাগী। ওকে মূখচোদা করতে অমিতের ভীষণ ভাল লাগে। এক সময় ঘরময় উমউম উমআম, হুমহুম শব্দ উঠে। অমিতের ক্লাইমেক্স চরমে উঠে। সে ম্যাগীকে সাবধান করে। মূখ সরিয়ে নিতে বলে। কিন্তু ম্যাগী সরায় না। দুই হাতে অমিতের কোমরের নীচটা ঝাপটে ধরে সে অমিত যাতে পিছিয়ে যেতে না পারে।
সময় আসন্ন হয়ে এলে অমিতেরও আর করার কিছুই থাকে না। সে দুই হাতে ম্যাগীর মাথার পিছনটা চেপে ধরে । তার পর সেকেন্ডে একশবার গতিতে ঠাপাতে থাকে তার মূখের ভিতর। ঠোটের কষা, গলা ছিড়ে যাবার দশা হয় ম্যাগীর্ । সে এখন আর ঠোট দিয়ে চাপ দিচ্ছে না। শুধু ঠোটটা আটকে রেখেছে চার পাশে। সাকিং করতেও শক্তি ব্যয় করছে না। সব করছে অমিত। সে শুধু অমিতকে জড়িয়ে রেখেছে। এক সময় মনে হলো অমিতের পাছার দাবনা দুটো শক্ত হয়ে গেছে। বাড়াটা মনে হল লোহার পাইপের চেয়েও শক্ত। হঠাত স্থির হয়ে গেল অমিত। তার পর মাল ছেড়ে দিল। বলকে বলকে বীর্য বেরিয়ে এল। এত তীব্র অর্গাজম আর এত মাল ম্যাগী কখনও দেখেনি। সব চেটে পুটে খেয়ে নিল। তার পর দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো মেঝের উপর।
মনি শংকর হিরো না ভিলেইন? খুব ধাঁধায় পড়ে গেল ম্যাগী। তার সাথে কাজ করছে আজ প্রায় দু সপ্তাহ হয়ে গেল। অসম্ভব সুন্দর আচরণ তার। স্টাফদের সাথে, বন্ধুদের সাথে, সামাজিক ক্ষেত্রেও। বিপরীত লিংগের প্রতি তার আকর্ষণ সুতীব্র। কাউকে পছন্দ হলে আর কোন কথা নেই। ছলে বলে তাকে ভোগ করতে হবে। মদের নেশায় আকন্ঠ ডুবে থাকে। আর তখন সে হয়ে যায় অমানুষ। রেসের মাঠে একের পর এক সম্পদ খুইয়ে চলেছে। মাঝে মাঝে এক আধবার জিতে যায়। আর এ নেশাটাই তাকে বার বার টেনে নেয় মাঠে। ব্যবসায় কোন মন নেই। দু’হাতে টাকা উড়ায়। সত্যিকারের জমিদারী চালচলন। শুধু জমিদারীটা নেই।
রোহিতের সাথে মনি শংকরের ভিতরে ভিতরে তীব্র দ্বন্ধ। বাইরে থেকে বুঝার উপায় নেই। এ সংঘাত স্বার্থের সংঘাত। তবে অমিতের সাথে সম্পর্কটা বুঝা সত্যি দুষ্কর । সে চাইছে অমিতের মিলটা যেন রোহিত একা ভোগ না করে। আবার সেটা করতে গিয়ে যা করছে তাতে অমিতের ক্ষতি হচ্ছে। সে যে অমিতের শুভাকাংখী নয় সেটাও পরিষ্কার।
প্রশ্ন হলো অমিতকে মেরে ফেললে কার লাভ? তাকে গুলি করার উদ্দেশ্য কি ভয় দেখানো না হত্যা করা? অমিত যদি মারা যায় সকল ভাইবোন সম্পত্তিটা সমান হারে পাবে। বেশী লস হলো রোহিতের। আবার বেঁচে থাকলে লাভও বেশী হলো রোহিতের যতদিন মিল তার দায়িত্বে আছে। সে ক্ষেত্রে মনি শংকর ধীরে ধীরে মিলটাকে ধ্বংস করে দেবে। রোহিতের পক্ষে সেটা সামাল দেয়া সম্ভন না। যদি অমিত নিজে দায়িত্ব বুঝে নেয় তবে সকলেরই লোকসান। তার মানে অমিতের উপস্থিতি সকলের জন্যই অস্বস্তিকর।
সবচে ভাল হয় এখানকার সহায়-সম্পদ যদি সে বিক্রি করে দিয়ে আমেরিকা ফিরে যায়। কিন্তু অমিত তা করবে না। পৈত্রিক সম্পদ সে বিক্রি করবে না। এতে বাপ-ঠাকুর্দা আর বিশেষ করে ঠাকুরমার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা হয়। আবার নিজে সে ব্যবসায়ী নয়, শিল্পপতি নয়। সে একজন বিজ্ঞানী। তার কাজ পড়াশুনা আর গবেষণা। কাজেই মিল ফ্যাক্টরী সে সামলাতেও পারবে না।
এসব বিবেচনা করে ম্যাগী তাকে একবার বলেছিল, “এসব মাথা থেকে মুছে ফেলে চলো আমেরিকা ফিরে যাই।” অমিত রাজী হয় নি।
“আমি কাপুরুষ না। কেউ আমার জানালা দিয়ে দুটো গুলি করলো আর আমি ইদুরের মত লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালাবো, তা হয় না? আমাকে এর শেষ দেখতে হবে।”
সবচে বড় কথা আজও অঞ্জলী মনের কোন হদীস করতে পারেনি অমিত! তার সাথে একটা শেষ বুঝপড়া তো তাকে করতেই হবে।
যখন বিপদ এল তখন ম্যাগীর কোন বিচার বিশ্লেষণই কাজে এল না। অমিতের প্রাক্তন কলেজে বিজ্ঞান ভবনের উদ্বোধন হবে। দেশের নামকরা সব মানুষদের দাওয়াত করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রী নিজে ভবন উদ্বোধন করবেন। সে উপলক্ষ্যে প্রাক্তন কৃতি ছাত্রদের একটা সংবর্ধনাও দেয়া হবে। অমিত এ কলেজের সেরা ছাত্রদের একজন। শুধু তাই নয় কিছু দিন আগেই বিকল্প জ্বালানী উদ্ভাবন বিষয়ক তার ও তার সহযোগী ডেনিস বিজ্ঞানীর যৌথ লেখাটি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। পত্রিকা টিভিতে একাধিক সাক্ষাতকার দিয়েছে অমিত। বলতে গেলে এখন সে রীতিমতো বিখ্যাত মানুষ।
ম্যাগী বার বার বারণ করেছিল। “দেখ এটা এমন একটা অনুষ্ঠান যেখানে আমি তোমার সাথে যেতে পারবো না। একা একা বিপদ হতে পারে।” কথাটা অমিতের অহমে লাগলো। একটা জলজ্যান্ত পুরুষ মানুষ নিজের দেশে একটা বিদেশী মেয়ের সাহায্য ছাড়া ঘর থেকে বেরুতে পারবে না এটা কেমন কথা?
“বিপদের ভয়ে আমি মূখে আংগুল দিয়ে চুপ করে ঘরে বসে থাকবো, এটা হয়? আর তুমি তো সারা জীবন আমার সাথে থাকবে না? তখন কি আমাকে চলতে হবে না? বাধা দিও না, আমাকে এখানে এটেন্ড করতেই হবে।”
অমিতের যুক্তি অকাট্য। অগত্যা কাঁধ ঝাকিয়ে চুপ করে গিয়েছিল ম্যাগী।
অমিতের শিক্ষকদের মাঝে মাত্র দুজন এখনও কলেজে আছেন। একজন বর্তমানে প্রিন্সিপাল। তিনি অমিতকে খুব সাদরে বরন করলেন। তার সাথে আরও দুজন প্রাক্তন ছাত্র অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। মন্ত্রী মহোদয় এলেন, ফিতা কাটলেন । তার পর স্বভাব সুলভ রাজনৈতিক বক্তৃতা দিয়ে বিদায় হলেন। অমিতও রওয়ানা হলো বড়দার শেভ্রোলে নিয়ে। সে নিজেই ড্রাইভ করছিলো। কলেজটা শহরের একেবারে শেষ প্রান্তে। মাঝ খানে কয়েক কিলোমিটার একদম ফাঁকা। দু পাশে গজারী বন। তার মাঝখান দিয়ে রাস্তা। কালো পীচ ঢালা আঁকাবাঁকা পথ। উপর থেকে দেখলে মনে হয় যেন একটা অলস অজগর শুয়ে আছে।
অমিত খুব সতর্ক হয়ে ড্রাইভ করছে। ম্যাগীর কথা মনে আছে তার। কিছুদূর আসতেই বুঝতে পারলো কেউ তাকে ফলো করছে। একটা ডার্ক-ব্লু গাড়ি। সে স্পীড বাড়ালো। পিছনের গাড়িও স্পীড বাড়ালো। সে আবার কমিয়ে দিল। পিছনের গাড়ি সাথে সাথে স্পীড কমিয়ে দিল। একটা ভদ্র দূরত্ব বজায় রাখছে সব সময়। এমন দূরত্ব যেখান থেকে অমিত গাড়ির ড্রাইভার বা প্যাসেন্জার কাউকে দেখতে পাচ্ছে না। একটু একটু নার্ভাস লাগছে তার। একবার ভাবলো ম্যাগীকে ফোন দেবে। কিন্তু অহমিকাবোধ তাকে থামিয়ে দিল। দেখতে দেখতে বন পথ পার হয়ে এল অমিত। একটু যেন হাপ ছাড়লো।
বন যেখানে শেষ হয়ে ঘন লোকালয় শুরু হয়েছে সেখানে রাস্তার উপর একটা জটলা দেখতে পেল অমিত। গাড়ির স্পীড কমাতে বাধ্য হলো। দূর থেকে হর্ন বাজাচ্ছে। কিন্তু লোক গুলির মাঝে সরে যাবার কোন লক্ষণ দেখলো না। তাদের পাশ কাটানোর জন্য গাড়িটাকে একদম রাস্তার কিনারায় নিয়ে এল সে। তাও বের হতে পারলো না। এক সময় বাধ্য হয়ে ব্রেক কষে থেমে গেল। মিররে তাকিয়ে দেখল পিছনের গাড়িটা উধাও। সামনের লোকগুলিকে স্থানীয় শ্রমিক মজুর টাইপের মনে হচ্ছে। কোন কিছু নিয়ে ঝগড়া করছে তারা। অমিতের দিকে কেউ ফিরেও তাকাচ্ছে না। তার পরও কোটের উপরের দুটো বোতাম খুলে দিল অমিত। শোল্ডার হোলস্টারে চাপ দিয়ে ল্যুগারটা স্পর্শ করলো। একটু যেন স্বস্তি পেল মনে।
লোকগুলি কিছুতেই রাস্তার উপর থেকে সরছে না। আবার তার দিকে কর্ণপাতও করছে না। ফলে বাধ্য হয়ে গাড়ির কাঁচ নামালো অমিত। কয়েকজন মূর্খ শ্রমিক এমন রাস্তা বন্ধ করে জটলা করছে এটা তার একটুও ভাল লাগলো না। বুঝতে পারলো নেমে ধমক দিতে হবে। হুইল লক করে বাম দিকের দরজা খুলে এক পা বাইরে দিয়েই বুঝলো চরম ভুল করেছে অমিত।
পা আর মাথা একই সাথে বের করেছিল সে। কেউ একজন ধাই করে একটা মুগুর চালালো মাথা লক্ষ্য করে। দূর্দান্ত রিফ্লেক্স এর কারণে মাথাটা সরিয়ে নিতে পারলেও কাধঁটা বাঁচাতে পারলো না। মনে হলো সব হাড় গুড়ো হয়ে গেছে। বাম হাতটা ঝুলছে কাধ থেকে যেন এখুনি খসে পড়বে। চোখে সরষে ফুল দেখল অমিত। ব্যাথায় নাক চোখ মূখ কুচকে গেল তার। পিস্তলের দিকে হাত বাড়াতে গিয়ে বুঝলো সময় নেই। মুগুরটা আবার নেমে আসছে। ততক্ষণে শরীরটা গাড়ি থেকে বের করে ফেলেছে সে। সাই করে সেধিয়ে গেল মুগুরধারীর বুকের সাথে। শূণ্যে বাতাস কেটে বেরিয়ে গেল মুগুর। ফলে ভারসাম্য হারালো মুগুরধারী। কাত হয়ে যাওয়া শরীরটাকে ডান হাত দিয়ে ধরলো। তারপর ছুড়ে মারলো গাড়ির উপর দিয়ে বনের ভিতর। একদম আক্ষরিক অর্থেই পাখির মত উড়ে গেল লোকটা। ততক্ষণে তাকে ঘিরে ফেলেছে জটলার লোকজন।
সবচে কাছের লোকটার চুল খামচি দিয়ে ধরলো অমিত। তার মাথাটাকে বেইস করে লাফ দিল ডান দিকে। যেন পোল ভোল্টার বুবকা উড়াল দিল আকাশে। পড়লো গিয়ে সবচে দূরে দাড়ানো লোকটার বুকের উপর পা দিয়ে। শূণ্যে ভাসার আগ মূহুর্তে চুল ধরা লোকটার মাথাটা ঝাকি দিল নীচের দিকে। গাড়ির কিনারায় মূখ থুবড়ে পড়লো সে। যার বুকের উপর পা দিয়ে পড়েছিল অমিত সে আর উঠে দাড়ালো না। অমিত সোজা হতে যাবে এমন সময় একটা পাথরের টুকরা এসে আঘাত করলো সরাসরি বুকের মাঝে। হুস করে সব বাতাস বেরিয়ে গেল। এলোমেলো হয়ে গেল সে। টলতে টলতে এগিয়ে এল গাড়ির দিকে। যেন নতুন হাটতে শিখেছে কোন বাচ্চা শিশু। দুপাশ থেকে চারজন লোক এসে অমিতের দুই হাত মুচড়ে ধরলো। তার পর ঠেসে ধরলো গাড়ির সাখে। সামনে থেকে আর একটা লোক ধারালো চা পাতি নিয়ে তেড়ে এল। থামলো এসে অমিতের পায়ের রেঞ্জের বাইরে। বাম হাতটা মোটেই নাড়াতে পারছে না অমিত। ডান হাত অক্ষত থাকলেও মুচড়ানো হাত দুটিতে ব্যাথা পাওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারলো না অমিত। চা পাতিওয়ালা তার বাম দিকে চা পাতি তুললো। এক কোপে গলা কাটবে। চোখে চোখ রেখে বললো, “গুড বাই অমিত স্যার।”
চোখ বন্ধ করে ফেললো অমিত। মৃত্যু অনিবার্য। কাজেই হাত টানাটানি করে লাভ নেই। পেশীতে ঢিল দিল। চোখে ভাসলো ঠাকুরমার অনিন্দ সুন্দর মূখ, ম্যাগীর খুনসুটি, অঞ্জলীর অফুরান ভালবাসা আর বন্যার প্রগলভতা। মা-বাবার ঝাপসা স্মৃতিও খানিক উকি দিয়ে গেল মনে। শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য আর যৌবনের সকল সুখ স্মৃতিগুলিই তার মনে এল। কারো জন্য কিছু ফেলে রেখে গেল কি? না। কারো উপর কোন অভিমান অভিযোগ নেই। স্বর্গ অথবা নরক দেখা হলে বিধাতা পুরুষকে শুধু একটা কথাই জিজ্ঞেস করবে অমিত “সব কিছুই যদি দিলে তবে এমন অসহায় করে পৃথিবীতে পাঠালে কেন?” অমিত ভাবছে আর অপেক্ষা করছে কখন ঝপাত করে গলা কেটে মাথাটা লুটিয়ে পড়বে। কিন্তু ব্যাটা চাপাতি নিযে দাড়িয়ে আছে কেন? নাকি অমিত মরে গেছে আর মৃত্যুর পর এসব স্বপ্ন দেখছে!! হঠাrকরেই সময় যেন স্থির হয়ে গেছে। বিশ্ব চরাচরে কিছুই নড়ছে না সব স্থির। অমিতের মনে হলো সে যেন অনন্তকাল ধরে মৃত্যুর অপেক্ষা করে আছে।
তার পর এক সময় অনেক দূর থেকে একটা চীrকার ভেসে এলো। প্রথমে একজনের কন্ঠে তার পর অনেকের কন্ঠে। অমিত ভাবলো মৃত্যুর পর নিশ্চই আত্মীয়স্বজন কান্না কাটি করছে। সে চোখ মেললো্ । বাহ! পরজগত তো দেখি ইহ জগতের মতই। একই রকম গাছ পালা, মানুষজন, শব্দ আর কোলাহল। চাপাতিওয়ালার হাতে একটা ছিদ্র দেখা গেল। সেখান থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটছে। চাপাতি ছিটকে পড়েছে দূরে। দুই পাশের লোক গুলিকেও দেখা গেল অমিতের হাত ছেড়ে সবাই নিজ নিজ হাটুর নীচে হাত দিয়ে চীrকার করছে। ঘটনা কি ? যারা ওকে মেরেছে তারাই ওর জন্য কান্নাকাটি করছে? জগতের সব নিয়ম কানুন বদলে গেল নাকি? তারপর অনেক দূর থেকে ভেসে এল পুলিশের সাইরেনের শব্দ। সাথে সাথে লোকগুলি পড়িমড়ি করে ছুটে পালালো। আর তখনই তীব্র ব্যথায় ঝাকুনী খেল অমিতের শরীর। সম্বিত ফিরে এল তার।
নিশ্চই পিছন থেকে পুলিশ ওকে ফলো করছিল। দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণ করতে দেখে তাকে উদ্ধার করার জন্য গুলি করেছে। কিন্তু আশে পাশে তাকিয়ে কোন গাড়ি দেখতে পেল না অমিত। সাইরেনের শব্দটাও নেই। কাধ আর বুকে আগুন জ্বলছে। জ্ঞান হারাবার আগেই ওকে লোকালয়ে পৌছাতে হবে। গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হয়নি। কোন রকমে শরীরটাকে দরজা দিয়ে গলিয়ে স্টিয়ারিঙ হুইলে বসলো। লেফটহ্যান্ড ড্রাইভ। ডান হাত ভাল থাকায় কোন সমস্যা হলো না। কয়েক কিলো মিটার যেতেই প্রথম যে হাসপাতালটা পড়লো সেটার সামনে গাড়ি থামালো সে। গাড়ি থেকে নামতে নামতে বন্যাকে ফোন দিল। কেন দিল সে জানে না। হয়তো নাম্বারটা সামনে ছিল তাই। জ্ঞান হারাবার আগে মোবাইল মূখের সামনে নিয়ে শুধু হাসপাতালের নামটা উচ্চারণ করতে পারলো।
বন্যা কলেজ থেকে বাসায় ফিরছিলো । ছোট কাকুর একটা অসম্পূর্ণ কল পেয়ে যারপর নাই বিস্মিত হলো সে। তবে বুদ্ধি হারালো না। নিশ্চই ছোট কাকু বা অন্য কারো কোন বিপদ হয়েছে। সে তrক্ষণাত গাড়ি ঘুরিয়ে হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হলো। বাবা দেশে নেই। যেতে যেতে সে তার মা আর ছোট মা অর্থাr বিন্দু কে ফোন দিল। তবে কাউকেই সে ক্লিয়ার করে কিছু বলতে পারলো না। শুধু তার অনুমানের কথা জানালো। প্রত্যেকেই তাকে হাজারটা প্রশ্ন করলো। সে কারো প্রশ্নের জবাব দিতে পারলো না।
স্টিয়ারিঙএর উপর মাথা রেখেই জ্ঞান হারালো অমিত। তার পিছন পিছনেই ব্রেক করলো আর একটা ডার্ক-ব্লু গাড়ি। সেখান থেকে একজন মানুষ নামলো। অমিতকে বের করে নিয়ে গেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে। কর্তব্যরত ডাক্তার অমিতকে দেখেই চিনতে পারলো। দ্রুত তাকে ওটিতে নেয়া হলো। পেপারস সাইন করাতে এসে দেখা গেল অমিতকে যারা নিয়ে এসেছিল তারা নেই। তাতে সমস্যা হলো না। কয়েক মিনিটের মাঝেই প্রথমে বন্যা এবং প্রায় একই সাথে বিন্দু আর মঞ্জূ এসে হাজির হলো। অপারেশন চলার মাঝেই এল মনি শংকর । সাথে তার পি এস ম্যাগী। রোহিত খবর পেয়ে সাথে সাথেই দেশের পথে রওয়ানা দিল।
আঘাত বেশ গুরুতর। কাঁধ এবং বুক দুজায়গাতেই কম্পাউন্ড ফ্রাকচার হয়েছে। জীবনের আশংকা নেই। তবে সুস্থ হতে সময় লাগবে। মনি শংকর ম্যাগীকে মঞ্জূ আর বন্যার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। বিন্দু ওকে আগে থেকেই চেনে। মনি শংকর যখন ম্যাগীর পরিচয় দিল আমার পিএস, বিন্দু তখন মূখ বাঁকা করলো। যার অর্থ পিএস না রক্ষিতা সবই আমি জানি। মনি শংকর সেটা লক্ষ করলেও আর কেউ সেটা বুঝতে পারলো না। রাতে মঞ্জু থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু রোহিত ফিরে আসছে তার পক্ষে থাকা সম্ভব না। বন্যা কিছুতেই ছোট কাকুকে ছেড়ে যাবে না। বিন্দুও না। ঠিক হলো রাতে বন্যা আর বিন্দু অমিতকে এটেন্ড করবে। মঞ্জু, ম্যাগী খোঁজ খবর নেবে। ফিরে আসার আগে মনি শংকর ডাক্তারের সামনে দাড়ালো। “ডক্টর, অমিত আমার ভাই, আগামীকাল সকালে আমি তার সাথে কথা বলতে চাই।” কি ছিল তার কন্ঠে কে জানে। ডাক্তার কাচুমাচু হয়ে শুধু বললো, “আমি চেষ্টা করবো স্যার।”
সারা রাত দু চোখের পাতা এক করেনি বন্যা। ঠাই জেগে বসে রয়েছে অমিতের মাথার পাশে। বিন্দু বার বার করে বলেছে, “তুই একটু ঘুমিয়ে নে, আমি তো আছি, তোর শরীর খারাপ করবে।” কিন্তু বন্যা শুনেনি। বরং জোর করে বিন্দুকে ঘুমুতে পাঠিয়েছে। “তুমি যাও তো ছোট মা। এ বয়সে রাত জাগলে বরং তোমার ক্ষতি হবে।”
“ওরে আমার বুড়ি, কি এমন বয়স হয়েছে আমার? তোর ছোট কাকুর চেয়েও আমার বয়স কম।”
“ঠিক আছে বাবা ঠিক আছে। তুমি আমার ছোট্ট খুকী। এখন যাওতো! একটু ঘুমাও গে।”
সুইংডোর ঠেলে বিন্দু চলে গেল পাশের রুমে। বন্যা ঘরময় পায়চারী করছে আর খানিক পর পর অচেতন অমিতের যন্ত্রণাকাতর মূখের দিকে তাকাচ্ছে। সদ্য তরুণীর ছোট্ট বুকটাতে কি গভীর মায়া যে খেলা করছে তা বলে বুঝানো যাবে না। অচেতন অবস্থার মাঝেই অমিতের প্রতিটি মৃদু মুভমেনেন্টর সাথে বন্যার মূখের অভিব্যক্তি পাল্টে যাচ্ছে। ব্যাথাটা যেন অমিত নয় বন্যা নিজে অনুভব করছে। হঠাr মনে হলে দূর্ঘটনার খবরটা মাসিমনিকে জানানো হয়নি। রাত প্রায় দুটো বাজতে চলল । কিছু যায় আসে না। তার সুখ-দুঃখের সবচে প্রিয় সাথী হলো মাসিমনি। দুনিয়ার এমন কোন কথা নেই যা সে তার মাসিমনির সাথে শেয়ার করে না। তার সাথে তার সময়ের কোন বালাই নেই। দরজা খুলা রেখেই ক্যাবিনের বারান্দায় চলে এল সে।
ফোন করলো মাসিমনিকে। প্রথমবার রিং হতেই অঞ্জলী রিসিভ করলো। যেন রাত দুটো পর্যন্ত জেগে বসেছিল ফোন ধরার জন্য।
“কি হয়েছে বন্য মা?”
“তুমি জেগে ছিলে?”
অঞ্জলী জবাব না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো, “কেন ফোন দিয়েছ বল?”
“ছোট কাকু গুরুতর আহত হয়েছেন।”
“এখন কেমন আছেন তিনি?”
“জানি না। সেন্ট্রাল হাসপাতালে রয়েছেন। আমি আর ছোট মা তাকে এটেন্ড করছি। ডাক্তার বলেছেন জীবনের আশংকা নেই। তবে সেরে উঠতে সময় লাগবে। কাকুর খুব কষ্ট হচ্ছে মাসিমনি।” ডুকরে কেঁদে উঠলো বন্যা। ক্যাবিনে যাতে শব্দ না যায় সে জন্য নিজেই মূখে হাতচাপা দিল। অঞ্জলীর ওপাশ থেকেও কি ফোপানোর শব্দ পাওয়া গেল একটা? নিজের কান্না চাপতে ব্যস্ত থাকায় বন্যা বিষয়টা বুঝতে পারলো না।
“তুমি সাবধানে থেকো মা। আর কাকুর দিকে খেয়াল রেখো। আমার ফোন খোলা আছে। যখন খুশী আমাকে রিং করে জানিও।”
রোহিত খুব চিন্তিত আর বিমর্ষ। ট্যুর অসমাপ্ত রেখে ব্যাংকক থেকে ফিরে এসেছে। বাসায় না গিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি হাসপাতালে এল সে। এক মাত্র কন্যা আর স্ত্রীকে নিয়ে রোহিত ভালই ছিল। নিজের অংশ থেকে আয় রোজগার মন্দ হচিছল না। আবার অমিতের মিল থেকে মূনাফা না হলেও এর একটা ফিনান্সিয়াল এক্সপোজার ছিল। কিছু অসr কর্মচারীর লোভের কারণে মিলটা মূনাফার মূখ দেখছে না। ওদের নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব নয়। এক দিকে ইউনিয়ন আর এক দিকে স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ মিলটাতে আস্তানা গেড়েছে। ওদের ম্যানেজ করেই চলে যাচ্ছিল কোন রকমে। কিন্তু অমিত আসার পর সব কেমন জানি গোলমাল হয়ে গেল।
রোহিত যখন হাসপাতালে এল তখনও ভোরের কুয়াশা কাটেনি। তার গাড়িটা মেইন গেইটে আসার আগে আগে সাঁ করে একটা ডার্ক-ব্লু বেরিয়ে গেল। সে লাউঞ্জে অপেক্ষা করছে। এখন তাকে ভিতরে যেতে দেবে না। বন্যাকে খবর দেয়া হয়েছে। বিন্দুকে অমিতের কাছে রেখে বন্যা এসেছে বাবার কাছে। রোহিতকে দেখতে পেয়েই কান্নায় ভেংগে পড়লো সে। “বাবা, ছোট কাকু….”কথা শেষ করতে পারল না। কান্নার দমকে গলার স্বর বুজে এল। রোহিত হাত বাড়িয়ে মেয়েকে বুকে টেনে নিল।
“ডোন্ট ওয়ারী ব্যাটা, এভরিথিং উইলবি রাইট।” মেয়ের পিঠে সান্ত্বনার চাপড় দিল রোহিত।
সাতটা নাগাদ জ্ঞান ফিরলো অমিতের । চোখ মেলে দেখল বিন্দু বসে আছে তার মাথার পাশে। শরীরটা ভীষণ ভারী। কাধঁ আর বুকে প্লাস্টার। প্রথমে বুঝতে পারলো না সে কোথায় আছে, কি করছে। সামান্য নড়াচড়ায় তীব্র ব্যাথা লাগলো তার। ব্যাথার চোটে চোখ দিয়ে পানি এসে গেল। সেই সাথে মনে পড়লো সব কিছু। বিন্দু সরাসরি তাকিয়েছিল তার দিকে। ব্যাথার ধরণটা দেখে কেঁপে উঠলো বুকের ভিতর। আঁচল দিয়ে অমিতের চোখের কোণ মুছে দিল।
“নড়াচড়া করো না ঠাকুর পো।”
“আমি এখন কোথায় মেজবৌদি?”
ম্যাগী রান দুটি একত্রে চেপে বার বার অমিতের বাড়ার সাইজ অনুভব করতে চাইছে। আর এমন মাইনকা চিপায় পড়ে অমিতের বাড়া যেন রাগে ফুসছে। তেড়ে ফুড়ে দুনিয়াটা একাকার করে দিতে চাইছে স্পেনিয়ার্ড ষাড়ের মত। ম্যাগীর পরনে এখনও প্যান্টিটা রয়েছে। ভিজে জবজবে হয়ে গেছে এটা। অমিতের চোষণ আর মর্দনে যোনীতে বান ডেকেছে ম্যাগীর। কান দুটি দপ দপ করে জ্বলছে। ইচ্ছে করছে আখাম্বা বাড়াটাকে গোগ্রাসে গিলে ফেলে। কিন্তু ম্যাগী পাকা খেলোয়াড়। সে জানে মাছকে কিভাবে খেলিয়ে বড়শিতে গাথতে হয়। অমিতের খোলা বুকে নিপলস দুটোকে খামছে ধরে ম্যাগী। এটা পুরুষদের বেশ উত্তেজিত করে।
অমিত শোয়া থেকে ম্যাগীকে বুকে নিয়েই উঠে বসলো। তার পর কোলের উপর তুলে নিয়ে সটান দাড়ালো মেঝের উপর। পলকা শরীরটা মাথার উপর তুলে শূণ্যে পাক খাওয়ালো। ম্যাগীর মনে হলো সে যেন শিশু পার্কের চড়কিতে চড়ে পাক খাচ্ছে। একটুও বাঁধা দিল না। শুধু দু হাতে গলা জড়িয়ে ধরে উপভোগ করলো অমিতের আদর। ঘোরানো শেষ হলে অমিত ম্যাগীকে দাড়ঁ করালো মেঝের উপর। রসে ভেজা প্যান্টিটার দুপাশে আংগুল ঢুকিয়ে নিতম্ব থেকে নামিয়ে দিল। পা গলিয়ে বের করে নিল।প্যান্টিটা ছুড়ে ফেলে খানিকটা পিছিয়ে গেল অমিত। যেন শিকারের আগে শিকারী তার শিকার জরীপ করছে। সম্পূর্ণ নিরাভরণ হতেই দু’হাতে চোখ ঢাকলো ম্যাগী। হাজার হলেও পুরুষের মুগ্ধ দৃষ্টির সামনে যে কোন মেয়ে লজ্জা পেতে বাধ্য। কাছে এসে আলতো করে চোখের উপর থেকে হাত দুটো সরিয়ে দিল। দুই হাতের তালু দিয়ে মূখটাকে দুপাশ থেকে ধরে সরাসরি তাকালো চোখের দিকে। আবেগ আর মায়াভরা চাহনী। ম্যাগীর বুক ভরে গেল সুখের আতিশয্যে। বছরের পর বছর ধরে এরকম আবেগময় আদরের অপেক্ষায় ছিল ম্যাগী। তার ঠোট দুটি তির তির করে কাঁপছে। অমিতের আগ্রাসী ঠোট নেমে এল ম্যাগীর কম্পমান ঠোটের উপর।
চুমোয় চুমোয় পাগল হয়ে যাবার দশা হলো ম্যাগীর। বুকটাকে এমন ভাবে দলাই মালাই করছে যে মনে হচ্ছে গোড়া থেকে না ছিড়ে যায়। শক্ত হাতের চাপে ব্যাথা ব্যাথা সুখ। দুই ঠোটের মাঝে নিপল নিয়ে মাথাটা বিদ্যুতের গতিতে এপাশ ওপাশ করতে থাকে অমিত। এমন আগ্রাসী সাকিং সহ্য করতে পারেনা ম্যাগী। উহ আহ চীrকার শুরু করে। অমিত থামে না। এক সময় সারা শরীর ঝাকুনি দিয়ে স্থির যায় ম্যাগী। তার জল খসে গেছে।
জোর করে অমিতের মূখটাকে বুক থেকে সরিয়ে দেয় ম্যাগী। তার কিছুটা বিরতি দরকার। সে দাড়ানো অবস্থাতেই কিছুক্ষণ অমিতের গায়ে হেলান দিয়ে বিশ্রাম নেয়। তার পর অমিতকে দাড় করিয়ে রেখে নিজে হাটু গেড়ে বসে তার সামনে। অমিতের ঠাটানো বাড়াটা একদম তার মূখের দিকে তাক করা। যেন কামান থেকে এখুনি গোলা ছুড়বে। উত্তেজিত বাড়াটাকে তার বিশাল মনে হয়। মাথার মুন্ডিটা এত সুন্দর যে তাকিয়ে থাকতেই ইচ্ছে করে। ম্যাগী প্রথমে গোড়ায় হাত চেপে ধরে। তার পর মুন্ডিটায় চুমু খায় আলতো করে। চার পাশে জিব বুলিয়ে ভিজিয়ে নেয়। তার পর পুরো মুন্ডিটা মূখের ভিতর নিয়ে দুই ঠোট খাজেঁর মাঝে চেপে ধরে। চাপ অক্ষুণ্ণ রেখে জিবের ডগা দিয়ে মুনডির ছিদ্রটা চাটতে থাকে। অমিত গো গো আওয়াজ তুলে। নাকের ফুটো বড় হয়ে যায়। নিঃশ্বাস ভারী আর দ্রুত হয়। চাটতে চাটতে বাড়াটাকে যথা সম্ভব গলার ভিতর নেবার চেষ্টা করে ম্যাগী। পুরোটা পেরে উঠে না। অমিতের মুন্ডি সরাসরি গলার পিছনে ধাক্কা খায়। বেইসটা চেপে ধরে দ্রুত মূখ উঠানামা করে ম্যাগী। ওকে মূখচোদা করতে অমিতের ভীষণ ভাল লাগে। এক সময় ঘরময় উমউম উমআম, হুমহুম শব্দ উঠে। অমিতের ক্লাইমেক্স চরমে উঠে। সে ম্যাগীকে সাবধান করে। মূখ সরিয়ে নিতে বলে। কিন্তু ম্যাগী সরায় না। দুই হাতে অমিতের কোমরের নীচটা ঝাপটে ধরে সে অমিত যাতে পিছিয়ে যেতে না পারে।
সময় আসন্ন হয়ে এলে অমিতেরও আর করার কিছুই থাকে না। সে দুই হাতে ম্যাগীর মাথার পিছনটা চেপে ধরে । তার পর সেকেন্ডে একশবার গতিতে ঠাপাতে থাকে তার মূখের ভিতর। ঠোটের কষা, গলা ছিড়ে যাবার দশা হয় ম্যাগীর্ । সে এখন আর ঠোট দিয়ে চাপ দিচ্ছে না। শুধু ঠোটটা আটকে রেখেছে চার পাশে। সাকিং করতেও শক্তি ব্যয় করছে না। সব করছে অমিত। সে শুধু অমিতকে জড়িয়ে রেখেছে। এক সময় মনে হলো অমিতের পাছার দাবনা দুটো শক্ত হয়ে গেছে। বাড়াটা মনে হল লোহার পাইপের চেয়েও শক্ত। হঠাত স্থির হয়ে গেল অমিত। তার পর মাল ছেড়ে দিল। বলকে বলকে বীর্য বেরিয়ে এল। এত তীব্র অর্গাজম আর এত মাল ম্যাগী কখনও দেখেনি। সব চেটে পুটে খেয়ে নিল। তার পর দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো মেঝের উপর।
মনি শংকর হিরো না ভিলেইন? খুব ধাঁধায় পড়ে গেল ম্যাগী। তার সাথে কাজ করছে আজ প্রায় দু সপ্তাহ হয়ে গেল। অসম্ভব সুন্দর আচরণ তার। স্টাফদের সাথে, বন্ধুদের সাথে, সামাজিক ক্ষেত্রেও। বিপরীত লিংগের প্রতি তার আকর্ষণ সুতীব্র। কাউকে পছন্দ হলে আর কোন কথা নেই। ছলে বলে তাকে ভোগ করতে হবে। মদের নেশায় আকন্ঠ ডুবে থাকে। আর তখন সে হয়ে যায় অমানুষ। রেসের মাঠে একের পর এক সম্পদ খুইয়ে চলেছে। মাঝে মাঝে এক আধবার জিতে যায়। আর এ নেশাটাই তাকে বার বার টেনে নেয় মাঠে। ব্যবসায় কোন মন নেই। দু’হাতে টাকা উড়ায়। সত্যিকারের জমিদারী চালচলন। শুধু জমিদারীটা নেই।
রোহিতের সাথে মনি শংকরের ভিতরে ভিতরে তীব্র দ্বন্ধ। বাইরে থেকে বুঝার উপায় নেই। এ সংঘাত স্বার্থের সংঘাত। তবে অমিতের সাথে সম্পর্কটা বুঝা সত্যি দুষ্কর । সে চাইছে অমিতের মিলটা যেন রোহিত একা ভোগ না করে। আবার সেটা করতে গিয়ে যা করছে তাতে অমিতের ক্ষতি হচ্ছে। সে যে অমিতের শুভাকাংখী নয় সেটাও পরিষ্কার।
প্রশ্ন হলো অমিতকে মেরে ফেললে কার লাভ? তাকে গুলি করার উদ্দেশ্য কি ভয় দেখানো না হত্যা করা? অমিত যদি মারা যায় সকল ভাইবোন সম্পত্তিটা সমান হারে পাবে। বেশী লস হলো রোহিতের। আবার বেঁচে থাকলে লাভও বেশী হলো রোহিতের যতদিন মিল তার দায়িত্বে আছে। সে ক্ষেত্রে মনি শংকর ধীরে ধীরে মিলটাকে ধ্বংস করে দেবে। রোহিতের পক্ষে সেটা সামাল দেয়া সম্ভন না। যদি অমিত নিজে দায়িত্ব বুঝে নেয় তবে সকলেরই লোকসান। তার মানে অমিতের উপস্থিতি সকলের জন্যই অস্বস্তিকর।
সবচে ভাল হয় এখানকার সহায়-সম্পদ যদি সে বিক্রি করে দিয়ে আমেরিকা ফিরে যায়। কিন্তু অমিত তা করবে না। পৈত্রিক সম্পদ সে বিক্রি করবে না। এতে বাপ-ঠাকুর্দা আর বিশেষ করে ঠাকুরমার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা হয়। আবার নিজে সে ব্যবসায়ী নয়, শিল্পপতি নয়। সে একজন বিজ্ঞানী। তার কাজ পড়াশুনা আর গবেষণা। কাজেই মিল ফ্যাক্টরী সে সামলাতেও পারবে না।
এসব বিবেচনা করে ম্যাগী তাকে একবার বলেছিল, “এসব মাথা থেকে মুছে ফেলে চলো আমেরিকা ফিরে যাই।” অমিত রাজী হয় নি।
“আমি কাপুরুষ না। কেউ আমার জানালা দিয়ে দুটো গুলি করলো আর আমি ইদুরের মত লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালাবো, তা হয় না? আমাকে এর শেষ দেখতে হবে।”
সবচে বড় কথা আজও অঞ্জলী মনের কোন হদীস করতে পারেনি অমিত! তার সাথে একটা শেষ বুঝপড়া তো তাকে করতেই হবে।
যখন বিপদ এল তখন ম্যাগীর কোন বিচার বিশ্লেষণই কাজে এল না। অমিতের প্রাক্তন কলেজে বিজ্ঞান ভবনের উদ্বোধন হবে। দেশের নামকরা সব মানুষদের দাওয়াত করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রী নিজে ভবন উদ্বোধন করবেন। সে উপলক্ষ্যে প্রাক্তন কৃতি ছাত্রদের একটা সংবর্ধনাও দেয়া হবে। অমিত এ কলেজের সেরা ছাত্রদের একজন। শুধু তাই নয় কিছু দিন আগেই বিকল্প জ্বালানী উদ্ভাবন বিষয়ক তার ও তার সহযোগী ডেনিস বিজ্ঞানীর যৌথ লেখাটি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। পত্রিকা টিভিতে একাধিক সাক্ষাতকার দিয়েছে অমিত। বলতে গেলে এখন সে রীতিমতো বিখ্যাত মানুষ।
ম্যাগী বার বার বারণ করেছিল। “দেখ এটা এমন একটা অনুষ্ঠান যেখানে আমি তোমার সাথে যেতে পারবো না। একা একা বিপদ হতে পারে।” কথাটা অমিতের অহমে লাগলো। একটা জলজ্যান্ত পুরুষ মানুষ নিজের দেশে একটা বিদেশী মেয়ের সাহায্য ছাড়া ঘর থেকে বেরুতে পারবে না এটা কেমন কথা?
“বিপদের ভয়ে আমি মূখে আংগুল দিয়ে চুপ করে ঘরে বসে থাকবো, এটা হয়? আর তুমি তো সারা জীবন আমার সাথে থাকবে না? তখন কি আমাকে চলতে হবে না? বাধা দিও না, আমাকে এখানে এটেন্ড করতেই হবে।”
অমিতের যুক্তি অকাট্য। অগত্যা কাঁধ ঝাকিয়ে চুপ করে গিয়েছিল ম্যাগী।
অমিতের শিক্ষকদের মাঝে মাত্র দুজন এখনও কলেজে আছেন। একজন বর্তমানে প্রিন্সিপাল। তিনি অমিতকে খুব সাদরে বরন করলেন। তার সাথে আরও দুজন প্রাক্তন ছাত্র অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। মন্ত্রী মহোদয় এলেন, ফিতা কাটলেন । তার পর স্বভাব সুলভ রাজনৈতিক বক্তৃতা দিয়ে বিদায় হলেন। অমিতও রওয়ানা হলো বড়দার শেভ্রোলে নিয়ে। সে নিজেই ড্রাইভ করছিলো। কলেজটা শহরের একেবারে শেষ প্রান্তে। মাঝ খানে কয়েক কিলোমিটার একদম ফাঁকা। দু পাশে গজারী বন। তার মাঝখান দিয়ে রাস্তা। কালো পীচ ঢালা আঁকাবাঁকা পথ। উপর থেকে দেখলে মনে হয় যেন একটা অলস অজগর শুয়ে আছে।
অমিত খুব সতর্ক হয়ে ড্রাইভ করছে। ম্যাগীর কথা মনে আছে তার। কিছুদূর আসতেই বুঝতে পারলো কেউ তাকে ফলো করছে। একটা ডার্ক-ব্লু গাড়ি। সে স্পীড বাড়ালো। পিছনের গাড়িও স্পীড বাড়ালো। সে আবার কমিয়ে দিল। পিছনের গাড়ি সাথে সাথে স্পীড কমিয়ে দিল। একটা ভদ্র দূরত্ব বজায় রাখছে সব সময়। এমন দূরত্ব যেখান থেকে অমিত গাড়ির ড্রাইভার বা প্যাসেন্জার কাউকে দেখতে পাচ্ছে না। একটু একটু নার্ভাস লাগছে তার। একবার ভাবলো ম্যাগীকে ফোন দেবে। কিন্তু অহমিকাবোধ তাকে থামিয়ে দিল। দেখতে দেখতে বন পথ পার হয়ে এল অমিত। একটু যেন হাপ ছাড়লো।
বন যেখানে শেষ হয়ে ঘন লোকালয় শুরু হয়েছে সেখানে রাস্তার উপর একটা জটলা দেখতে পেল অমিত। গাড়ির স্পীড কমাতে বাধ্য হলো। দূর থেকে হর্ন বাজাচ্ছে। কিন্তু লোক গুলির মাঝে সরে যাবার কোন লক্ষণ দেখলো না। তাদের পাশ কাটানোর জন্য গাড়িটাকে একদম রাস্তার কিনারায় নিয়ে এল সে। তাও বের হতে পারলো না। এক সময় বাধ্য হয়ে ব্রেক কষে থেমে গেল। মিররে তাকিয়ে দেখল পিছনের গাড়িটা উধাও। সামনের লোকগুলিকে স্থানীয় শ্রমিক মজুর টাইপের মনে হচ্ছে। কোন কিছু নিয়ে ঝগড়া করছে তারা। অমিতের দিকে কেউ ফিরেও তাকাচ্ছে না। তার পরও কোটের উপরের দুটো বোতাম খুলে দিল অমিত। শোল্ডার হোলস্টারে চাপ দিয়ে ল্যুগারটা স্পর্শ করলো। একটু যেন স্বস্তি পেল মনে।
লোকগুলি কিছুতেই রাস্তার উপর থেকে সরছে না। আবার তার দিকে কর্ণপাতও করছে না। ফলে বাধ্য হয়ে গাড়ির কাঁচ নামালো অমিত। কয়েকজন মূর্খ শ্রমিক এমন রাস্তা বন্ধ করে জটলা করছে এটা তার একটুও ভাল লাগলো না। বুঝতে পারলো নেমে ধমক দিতে হবে। হুইল লক করে বাম দিকের দরজা খুলে এক পা বাইরে দিয়েই বুঝলো চরম ভুল করেছে অমিত।
পা আর মাথা একই সাথে বের করেছিল সে। কেউ একজন ধাই করে একটা মুগুর চালালো মাথা লক্ষ্য করে। দূর্দান্ত রিফ্লেক্স এর কারণে মাথাটা সরিয়ে নিতে পারলেও কাধঁটা বাঁচাতে পারলো না। মনে হলো সব হাড় গুড়ো হয়ে গেছে। বাম হাতটা ঝুলছে কাধ থেকে যেন এখুনি খসে পড়বে। চোখে সরষে ফুল দেখল অমিত। ব্যাথায় নাক চোখ মূখ কুচকে গেল তার। পিস্তলের দিকে হাত বাড়াতে গিয়ে বুঝলো সময় নেই। মুগুরটা আবার নেমে আসছে। ততক্ষণে শরীরটা গাড়ি থেকে বের করে ফেলেছে সে। সাই করে সেধিয়ে গেল মুগুরধারীর বুকের সাথে। শূণ্যে বাতাস কেটে বেরিয়ে গেল মুগুর। ফলে ভারসাম্য হারালো মুগুরধারী। কাত হয়ে যাওয়া শরীরটাকে ডান হাত দিয়ে ধরলো। তারপর ছুড়ে মারলো গাড়ির উপর দিয়ে বনের ভিতর। একদম আক্ষরিক অর্থেই পাখির মত উড়ে গেল লোকটা। ততক্ষণে তাকে ঘিরে ফেলেছে জটলার লোকজন।
সবচে কাছের লোকটার চুল খামচি দিয়ে ধরলো অমিত। তার মাথাটাকে বেইস করে লাফ দিল ডান দিকে। যেন পোল ভোল্টার বুবকা উড়াল দিল আকাশে। পড়লো গিয়ে সবচে দূরে দাড়ানো লোকটার বুকের উপর পা দিয়ে। শূণ্যে ভাসার আগ মূহুর্তে চুল ধরা লোকটার মাথাটা ঝাকি দিল নীচের দিকে। গাড়ির কিনারায় মূখ থুবড়ে পড়লো সে। যার বুকের উপর পা দিয়ে পড়েছিল অমিত সে আর উঠে দাড়ালো না। অমিত সোজা হতে যাবে এমন সময় একটা পাথরের টুকরা এসে আঘাত করলো সরাসরি বুকের মাঝে। হুস করে সব বাতাস বেরিয়ে গেল। এলোমেলো হয়ে গেল সে। টলতে টলতে এগিয়ে এল গাড়ির দিকে। যেন নতুন হাটতে শিখেছে কোন বাচ্চা শিশু। দুপাশ থেকে চারজন লোক এসে অমিতের দুই হাত মুচড়ে ধরলো। তার পর ঠেসে ধরলো গাড়ির সাখে। সামনে থেকে আর একটা লোক ধারালো চা পাতি নিয়ে তেড়ে এল। থামলো এসে অমিতের পায়ের রেঞ্জের বাইরে। বাম হাতটা মোটেই নাড়াতে পারছে না অমিত। ডান হাত অক্ষত থাকলেও মুচড়ানো হাত দুটিতে ব্যাথা পাওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারলো না অমিত। চা পাতিওয়ালা তার বাম দিকে চা পাতি তুললো। এক কোপে গলা কাটবে। চোখে চোখ রেখে বললো, “গুড বাই অমিত স্যার।”
চোখ বন্ধ করে ফেললো অমিত। মৃত্যু অনিবার্য। কাজেই হাত টানাটানি করে লাভ নেই। পেশীতে ঢিল দিল। চোখে ভাসলো ঠাকুরমার অনিন্দ সুন্দর মূখ, ম্যাগীর খুনসুটি, অঞ্জলীর অফুরান ভালবাসা আর বন্যার প্রগলভতা। মা-বাবার ঝাপসা স্মৃতিও খানিক উকি দিয়ে গেল মনে। শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য আর যৌবনের সকল সুখ স্মৃতিগুলিই তার মনে এল। কারো জন্য কিছু ফেলে রেখে গেল কি? না। কারো উপর কোন অভিমান অভিযোগ নেই। স্বর্গ অথবা নরক দেখা হলে বিধাতা পুরুষকে শুধু একটা কথাই জিজ্ঞেস করবে অমিত “সব কিছুই যদি দিলে তবে এমন অসহায় করে পৃথিবীতে পাঠালে কেন?” অমিত ভাবছে আর অপেক্ষা করছে কখন ঝপাত করে গলা কেটে মাথাটা লুটিয়ে পড়বে। কিন্তু ব্যাটা চাপাতি নিযে দাড়িয়ে আছে কেন? নাকি অমিত মরে গেছে আর মৃত্যুর পর এসব স্বপ্ন দেখছে!! হঠাrকরেই সময় যেন স্থির হয়ে গেছে। বিশ্ব চরাচরে কিছুই নড়ছে না সব স্থির। অমিতের মনে হলো সে যেন অনন্তকাল ধরে মৃত্যুর অপেক্ষা করে আছে।
তার পর এক সময় অনেক দূর থেকে একটা চীrকার ভেসে এলো। প্রথমে একজনের কন্ঠে তার পর অনেকের কন্ঠে। অমিত ভাবলো মৃত্যুর পর নিশ্চই আত্মীয়স্বজন কান্না কাটি করছে। সে চোখ মেললো্ । বাহ! পরজগত তো দেখি ইহ জগতের মতই। একই রকম গাছ পালা, মানুষজন, শব্দ আর কোলাহল। চাপাতিওয়ালার হাতে একটা ছিদ্র দেখা গেল। সেখান থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটছে। চাপাতি ছিটকে পড়েছে দূরে। দুই পাশের লোক গুলিকেও দেখা গেল অমিতের হাত ছেড়ে সবাই নিজ নিজ হাটুর নীচে হাত দিয়ে চীrকার করছে। ঘটনা কি ? যারা ওকে মেরেছে তারাই ওর জন্য কান্নাকাটি করছে? জগতের সব নিয়ম কানুন বদলে গেল নাকি? তারপর অনেক দূর থেকে ভেসে এল পুলিশের সাইরেনের শব্দ। সাথে সাথে লোকগুলি পড়িমড়ি করে ছুটে পালালো। আর তখনই তীব্র ব্যথায় ঝাকুনী খেল অমিতের শরীর। সম্বিত ফিরে এল তার।
নিশ্চই পিছন থেকে পুলিশ ওকে ফলো করছিল। দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণ করতে দেখে তাকে উদ্ধার করার জন্য গুলি করেছে। কিন্তু আশে পাশে তাকিয়ে কোন গাড়ি দেখতে পেল না অমিত। সাইরেনের শব্দটাও নেই। কাধ আর বুকে আগুন জ্বলছে। জ্ঞান হারাবার আগেই ওকে লোকালয়ে পৌছাতে হবে। গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হয়নি। কোন রকমে শরীরটাকে দরজা দিয়ে গলিয়ে স্টিয়ারিঙ হুইলে বসলো। লেফটহ্যান্ড ড্রাইভ। ডান হাত ভাল থাকায় কোন সমস্যা হলো না। কয়েক কিলো মিটার যেতেই প্রথম যে হাসপাতালটা পড়লো সেটার সামনে গাড়ি থামালো সে। গাড়ি থেকে নামতে নামতে বন্যাকে ফোন দিল। কেন দিল সে জানে না। হয়তো নাম্বারটা সামনে ছিল তাই। জ্ঞান হারাবার আগে মোবাইল মূখের সামনে নিয়ে শুধু হাসপাতালের নামটা উচ্চারণ করতে পারলো।
বন্যা কলেজ থেকে বাসায় ফিরছিলো । ছোট কাকুর একটা অসম্পূর্ণ কল পেয়ে যারপর নাই বিস্মিত হলো সে। তবে বুদ্ধি হারালো না। নিশ্চই ছোট কাকু বা অন্য কারো কোন বিপদ হয়েছে। সে তrক্ষণাত গাড়ি ঘুরিয়ে হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হলো। বাবা দেশে নেই। যেতে যেতে সে তার মা আর ছোট মা অর্থাr বিন্দু কে ফোন দিল। তবে কাউকেই সে ক্লিয়ার করে কিছু বলতে পারলো না। শুধু তার অনুমানের কথা জানালো। প্রত্যেকেই তাকে হাজারটা প্রশ্ন করলো। সে কারো প্রশ্নের জবাব দিতে পারলো না।
স্টিয়ারিঙএর উপর মাথা রেখেই জ্ঞান হারালো অমিত। তার পিছন পিছনেই ব্রেক করলো আর একটা ডার্ক-ব্লু গাড়ি। সেখান থেকে একজন মানুষ নামলো। অমিতকে বের করে নিয়ে গেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে। কর্তব্যরত ডাক্তার অমিতকে দেখেই চিনতে পারলো। দ্রুত তাকে ওটিতে নেয়া হলো। পেপারস সাইন করাতে এসে দেখা গেল অমিতকে যারা নিয়ে এসেছিল তারা নেই। তাতে সমস্যা হলো না। কয়েক মিনিটের মাঝেই প্রথমে বন্যা এবং প্রায় একই সাথে বিন্দু আর মঞ্জূ এসে হাজির হলো। অপারেশন চলার মাঝেই এল মনি শংকর । সাথে তার পি এস ম্যাগী। রোহিত খবর পেয়ে সাথে সাথেই দেশের পথে রওয়ানা দিল।
আঘাত বেশ গুরুতর। কাঁধ এবং বুক দুজায়গাতেই কম্পাউন্ড ফ্রাকচার হয়েছে। জীবনের আশংকা নেই। তবে সুস্থ হতে সময় লাগবে। মনি শংকর ম্যাগীকে মঞ্জূ আর বন্যার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। বিন্দু ওকে আগে থেকেই চেনে। মনি শংকর যখন ম্যাগীর পরিচয় দিল আমার পিএস, বিন্দু তখন মূখ বাঁকা করলো। যার অর্থ পিএস না রক্ষিতা সবই আমি জানি। মনি শংকর সেটা লক্ষ করলেও আর কেউ সেটা বুঝতে পারলো না। রাতে মঞ্জু থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু রোহিত ফিরে আসছে তার পক্ষে থাকা সম্ভব না। বন্যা কিছুতেই ছোট কাকুকে ছেড়ে যাবে না। বিন্দুও না। ঠিক হলো রাতে বন্যা আর বিন্দু অমিতকে এটেন্ড করবে। মঞ্জু, ম্যাগী খোঁজ খবর নেবে। ফিরে আসার আগে মনি শংকর ডাক্তারের সামনে দাড়ালো। “ডক্টর, অমিত আমার ভাই, আগামীকাল সকালে আমি তার সাথে কথা বলতে চাই।” কি ছিল তার কন্ঠে কে জানে। ডাক্তার কাচুমাচু হয়ে শুধু বললো, “আমি চেষ্টা করবো স্যার।”
সারা রাত দু চোখের পাতা এক করেনি বন্যা। ঠাই জেগে বসে রয়েছে অমিতের মাথার পাশে। বিন্দু বার বার করে বলেছে, “তুই একটু ঘুমিয়ে নে, আমি তো আছি, তোর শরীর খারাপ করবে।” কিন্তু বন্যা শুনেনি। বরং জোর করে বিন্দুকে ঘুমুতে পাঠিয়েছে। “তুমি যাও তো ছোট মা। এ বয়সে রাত জাগলে বরং তোমার ক্ষতি হবে।”
“ওরে আমার বুড়ি, কি এমন বয়স হয়েছে আমার? তোর ছোট কাকুর চেয়েও আমার বয়স কম।”
“ঠিক আছে বাবা ঠিক আছে। তুমি আমার ছোট্ট খুকী। এখন যাওতো! একটু ঘুমাও গে।”
সুইংডোর ঠেলে বিন্দু চলে গেল পাশের রুমে। বন্যা ঘরময় পায়চারী করছে আর খানিক পর পর অচেতন অমিতের যন্ত্রণাকাতর মূখের দিকে তাকাচ্ছে। সদ্য তরুণীর ছোট্ট বুকটাতে কি গভীর মায়া যে খেলা করছে তা বলে বুঝানো যাবে না। অচেতন অবস্থার মাঝেই অমিতের প্রতিটি মৃদু মুভমেনেন্টর সাথে বন্যার মূখের অভিব্যক্তি পাল্টে যাচ্ছে। ব্যাথাটা যেন অমিত নয় বন্যা নিজে অনুভব করছে। হঠাr মনে হলে দূর্ঘটনার খবরটা মাসিমনিকে জানানো হয়নি। রাত প্রায় দুটো বাজতে চলল । কিছু যায় আসে না। তার সুখ-দুঃখের সবচে প্রিয় সাথী হলো মাসিমনি। দুনিয়ার এমন কোন কথা নেই যা সে তার মাসিমনির সাথে শেয়ার করে না। তার সাথে তার সময়ের কোন বালাই নেই। দরজা খুলা রেখেই ক্যাবিনের বারান্দায় চলে এল সে।
ফোন করলো মাসিমনিকে। প্রথমবার রিং হতেই অঞ্জলী রিসিভ করলো। যেন রাত দুটো পর্যন্ত জেগে বসেছিল ফোন ধরার জন্য।
“কি হয়েছে বন্য মা?”
“তুমি জেগে ছিলে?”
অঞ্জলী জবাব না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো, “কেন ফোন দিয়েছ বল?”
“ছোট কাকু গুরুতর আহত হয়েছেন।”
“এখন কেমন আছেন তিনি?”
“জানি না। সেন্ট্রাল হাসপাতালে রয়েছেন। আমি আর ছোট মা তাকে এটেন্ড করছি। ডাক্তার বলেছেন জীবনের আশংকা নেই। তবে সেরে উঠতে সময় লাগবে। কাকুর খুব কষ্ট হচ্ছে মাসিমনি।” ডুকরে কেঁদে উঠলো বন্যা। ক্যাবিনে যাতে শব্দ না যায় সে জন্য নিজেই মূখে হাতচাপা দিল। অঞ্জলীর ওপাশ থেকেও কি ফোপানোর শব্দ পাওয়া গেল একটা? নিজের কান্না চাপতে ব্যস্ত থাকায় বন্যা বিষয়টা বুঝতে পারলো না।
“তুমি সাবধানে থেকো মা। আর কাকুর দিকে খেয়াল রেখো। আমার ফোন খোলা আছে। যখন খুশী আমাকে রিং করে জানিও।”
রোহিত খুব চিন্তিত আর বিমর্ষ। ট্যুর অসমাপ্ত রেখে ব্যাংকক থেকে ফিরে এসেছে। বাসায় না গিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি হাসপাতালে এল সে। এক মাত্র কন্যা আর স্ত্রীকে নিয়ে রোহিত ভালই ছিল। নিজের অংশ থেকে আয় রোজগার মন্দ হচিছল না। আবার অমিতের মিল থেকে মূনাফা না হলেও এর একটা ফিনান্সিয়াল এক্সপোজার ছিল। কিছু অসr কর্মচারীর লোভের কারণে মিলটা মূনাফার মূখ দেখছে না। ওদের নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব নয়। এক দিকে ইউনিয়ন আর এক দিকে স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ মিলটাতে আস্তানা গেড়েছে। ওদের ম্যানেজ করেই চলে যাচ্ছিল কোন রকমে। কিন্তু অমিত আসার পর সব কেমন জানি গোলমাল হয়ে গেল।
রোহিত যখন হাসপাতালে এল তখনও ভোরের কুয়াশা কাটেনি। তার গাড়িটা মেইন গেইটে আসার আগে আগে সাঁ করে একটা ডার্ক-ব্লু বেরিয়ে গেল। সে লাউঞ্জে অপেক্ষা করছে। এখন তাকে ভিতরে যেতে দেবে না। বন্যাকে খবর দেয়া হয়েছে। বিন্দুকে অমিতের কাছে রেখে বন্যা এসেছে বাবার কাছে। রোহিতকে দেখতে পেয়েই কান্নায় ভেংগে পড়লো সে। “বাবা, ছোট কাকু….”কথা শেষ করতে পারল না। কান্নার দমকে গলার স্বর বুজে এল। রোহিত হাত বাড়িয়ে মেয়েকে বুকে টেনে নিল।
“ডোন্ট ওয়ারী ব্যাটা, এভরিথিং উইলবি রাইট।” মেয়ের পিঠে সান্ত্বনার চাপড় দিল রোহিত।
সাতটা নাগাদ জ্ঞান ফিরলো অমিতের । চোখ মেলে দেখল বিন্দু বসে আছে তার মাথার পাশে। শরীরটা ভীষণ ভারী। কাধঁ আর বুকে প্লাস্টার। প্রথমে বুঝতে পারলো না সে কোথায় আছে, কি করছে। সামান্য নড়াচড়ায় তীব্র ব্যাথা লাগলো তার। ব্যাথার চোটে চোখ দিয়ে পানি এসে গেল। সেই সাথে মনে পড়লো সব কিছু। বিন্দু সরাসরি তাকিয়েছিল তার দিকে। ব্যাথার ধরণটা দেখে কেঁপে উঠলো বুকের ভিতর। আঁচল দিয়ে অমিতের চোখের কোণ মুছে দিল।
“নড়াচড়া করো না ঠাকুর পো।”
“আমি এখন কোথায় মেজবৌদি?”
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!