13-09-2020, 12:04 PM
(ঠ) আমি মা হলাম
(Upload No. 178)
আমিও দীপের কথা মেনে নিলাম। যদিও আমার পোস্ট ডেলিভারি কোনো সমস্যা হয়নি, তবু ডাক্তারের পরামর্শে ডেলিভারির পর আরো দু’দিন থাকতে হয়েছিলো নার্সিংহোমে। ১৭ তারিখ বেলা এগারোটা নাগাদ বাড়ি ফিরলাম। বিদিশাদের গাড়ি করে আমি যখন মেয়েকে কোলে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলাম, তখন দাদা আর দীপ চুমকী বৌদিকে রিসিভ করতে ষ্টেশনে গেলো।
নার্সিংহোম থেকে বেড়োবার আগে দীপ সেখানকার সমস্ত স্টাফকেই কম বেশী বখশিস দিয়েছিলো। আমার হাতে ৫০০ টাকা দিলো সেই নার্সটাকে দেবার জন্যে। দীপ যখন আমাদের জিনিসপত্রগুলো গোছাচ্ছিলো, তখনই সেই নার্সটা আমার কেবিনে এলো। আমি তাকে ডেকে বললাম, “সিস্টার শুনুন। আমি সেদিন একটা ভুল করে ফেলেছিলাম। আপনি প্লীজ কিছু মনে করবেন না। আসলে আমার তো আগের কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না। আপনি প্লীজ এটা রাখুন। আমার বর খুশী হয়ে এটা আপনাকে দিয়েছে”।
নার্সটা বোধ হয় আমার থেকে বয়সে সামান্যই বড় হবে। মিষ্টি করে হেঁসে জবাব দিলো, “শুনুন ম্যাডাম। ডিউটি করতে গিয়ে আমাদের অনেক সময়ই এমন ধরণের পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। আমি কিন্তু শুধুই আমার ডিউটি করছিলাম। অবশ্য এটাও স্বীকার করছি যে আমার মতো এমন নার্স আরো অনেক আছে যারা ডিউটি করতে গিয়ে অনৈতিক অনেক কিছুই করে থাকে। কিন্তু ও নিয়ে আপনি একদম ভাববেন না। ওসব আমাদের গা সওয়া হয়ে গেছে। আপনারাও ভুলে যান সে কথা। আজ এখান থেকে ছুটি পেলেন। বাড়ি যান। ভালো ভাবে থাকুন। নিজের প্রতি আর বেবীর প্রতি কোনোরকম অবহেলা করবেন না। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি, আপনি স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে থাকুন। আর খুশী হয়ে আপনার বর যেটা দিতে চাইছেন সেটা আমার তরফ থেকে আপনার বেবীকে উপহার দিলাম। ওর জন্যেই সেটা রেখে দিন"।
আমি বুঝতে পারলাম সে কোনোভাবেই টাকাটা নেবে না। কিন্তু তার কথা শুনে আমার নিজেকে আরো একবার তার কাছে অপরাধী বলে মনে হলো। দীপ এবার নার্সটাকে বললো, “ঠিক আছে সিস্টার, আপনার কথা মেনে নিয়েই এ টাকাটাকে আমাদের মেয়ের জন্যে রেখে দিলাম। কিন্তু একটা অনুরোধ করছি, রাখবেন প্লীজ”?
নার্সটি জবাব দিলো, “বেশ তো বলুন না”।
দীপ বললো, “আমরা তো আর মিনিট পনেরোর মধ্যেই বেড়িয়ে যাবো এখান থেকে। তার আগে আপনি আরেকবার আসবেন এ কেবিনে”?
নার্স তার কব্জি ঘড়ির দিকে দেখে বললো, “ঠিক আছে আমি পনেরো মিনিট বাদে এসে আপনাদের সাথে দেখা করবো”।
নার্স চলে যেতে দীপ বিদিশাকে ডেকে বললো, “বিদিশা, একটু হেল্প করবে প্লীজ। একজনকে একটা শাড়ি দিতে হবে, তুমি কি পছন্দ করে এনে দিতে পারবে? তুমি ফিরে এলে আমরা এখান থেকে বেড়োবো”।
বিদিশা কিছু একটা বলতে যেতেই আমি বললাম, “আরে ওই নার্সটা বখশিস নিতে রাজি হচ্ছে না। তাই দীপ ভাবছে ওকে একটা শাড়ি দিয়ে যাবে”।
বিদিশা দীপের হাত থেকে টাকা নিতে নিতে বললো, “ঠিক আছে, দাও, আমি তাড়াতাড়িই ফেরার চেষ্টা করবো” বলে বেড়িয়ে গেলো।
কেবিনের বাইরে দাদাকে দেখতে পেয়ে দীপ তাকে বললো, “দাদা একটু ট্রেনের খবরটা নিয়েছেন? চুমকী বৌদিকে তো ষ্টেশন থেকে আনতে হবে”।
দাদা জবাব দিলো, “হ্যা দীপ, এনকুয়ারীতে খবর নিয়েছি। বলেছে আধঘণ্টার মধ্যে ট্রেন পৌঁছে যাবে।
সুন্দর একখানা দামী তাঁতের শাড়ি প্রায় জোর করেই নার্সটার হাতে দিয়ে যখন আমরা নার্সিংহোম থেকে বেড়িয়ে এলাম তখন বাইরে এসে দাদা দীপকে বললো, “দীপ তুমি কি সতীর সাথেই বাড়ি যেতে চাইছো”?
দীপ দাদার প্রশ্ন শুনে বললো, “কেন বলুন তো দাদা”।
দাদা বললো, “না মানে, চুমকী বৌদির ট্রেন আসবার সময় হয়ে গেছে তো। তাই ভাবছিলাম এখানে তো দুখানা গাড়ি আছে। সতী তো বিদিশাদের গাড়িতেই উঠছে। জেঠীমাও ও গাড়িতেই যেতে পারবেন। আমি তাহলে এ গাড়িটা নিয়ে NJP চলে যাই। তুমি যেতে চাইলে তুমিও ওদের সাথে যেতে পারো বা আমার সাথে এ গাড়িতে বৌদিকে আনতেও যেতে পারো”।
দীপ আর দাদা বৌদিকে আনতে ষ্টেশনের দিকে রওনা হতে আমরা বিদিশাদের গাড়ি করে বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
চুমকী বৌদিকে নিয়ে দাদা আর দীপ যখন ঘরে ফিরে এলো বেলা তখন প্রায় বারোটা। চুমকী বৌদির পেছন পেছন দাদা আর দীপ অনেকগুলো লাগেজের প্যাকেট নিয়ে ঘরে ঢুকলো। চুমকী বৌদির জন্যে ওপর তলায় আমাদের গেস্ট রুমে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। চুমকী বৌদি আমার সাথে দেখা না করেই ওপরে চলে গেলো। আমি সেটা শুনে একটু অবাকই হলাম। আমাকে দেখবার জন্যে সে গৌহাটি থেকে শিলিগুড়ি চলে এলো, আর আমার সাথে দেখা না করেই ওপরে চলে গেলো! দাদা একবার আমার ঘরে ঢুকে আমরা ঠিক ঠাক আছি শুনে ওপরে চলে গেলো। দীপ আমার কাছে এসে বসতেই আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কি গো, বৌদির শরীর টরীর ঠিক আছে তো? আমার সাথে দেখা না করেই গেস্ট রুমে চলে গেলেন যে”?
দীপ আমাকে আশ্বস্ত করে বললো, “চুমকী বৌদি একদম ঠিক আছে মণি। সে স্নান টান সেরে তারপর তোমার কাছে আসবে বলেছে”।
আমি আশ্বস্ত হয়ে বললাম, “বৌদিকে সে ঘরের সব কিছু দেখিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছো তো? সে তো এর আগে ওপরের ঘরটা দেখে নি”।
দীপ হেঁসে বললো, “সে নিয়ে তোমাকে আর ভাবতে হবে না মণি। তুমি বোধ হয় ভুলে গেছো যে চুমকী বৌদির জা-ও এখন এ বাড়িতেই আছে। বিদিশা তার সাথে আছে”।
আমি একটু হেঁসে বললাম, “ওহ, হ্যা তো, আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। বিদিশা যখন আছে তখন আর চিন্তার কিছু নেই। আমার জন্যেও মেয়েটা যা করলো, বাপরে! এক মুহূর্তের জন্যেও আমাকে নার্সিংহোমে একা থাকতে দ্যায় নি। শুধু নাওয়া খাওয়ার জন্যেই বাড়ি এসেছে। দিনরাত আমার সাথেই বসেছিলো। বকাবকি করেও ওকে আমার কাছ থেকে সরাতে পারিনি”।
দীপ প্রায় স্বগতোক্তির মতো করে বলে উঠলো, “সত্যি মণি, তোমার মতো স্ত্রীর পাশাপাশি বিদিশার মতো একটা বন্ধুও যে আমি পাবো, এমনটা স্বপ্নেও ভাবিনি কখনো। আর দ্যাখো, সেই বিদিশার দৌলতেই আবার চুমকী বৌদিকেও পেয়ে গেলাম আমরা। ভাবতে পারো? যার সাথে মাত্র মাস দেড়েক আগে তোমার পরিচয় হয়েছে, তাও শুধু দুটো দিনের জন্যে, সে তোমার মা হবার কথা শুনে হাজার মাইল দূর থেকে ছুটে এসেছে! আমি তো ভাবতেই ইমোশনাল হয়ে পড়ছি”।
আমি আমার কোলের পাশে শুইয়ে রাখা শ্রীজার দিকে একটু দেখে নিয়ে বললাম, “একেবারে ঠিক বলেছো সোনা। আমিও কিন্তু এতোটা আশা করিনি। বিদিশা কাছে আছে, সে আমার পাশে থাকবেই এটা তো জানতামই। কিন্তু গৌহাটি থেকে বৌদি এভাবে ছুটে আসবে, এটা আমিও ভাবিনি”।
“জানি জানি, আমি তো মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা একটা অদ্ভুত জীব। তোমরা পৃথিবীর মানুষেরা আমায় বুঝবে কেমন করে”? বলতে বলতে চুমকী বৌদি আমার ঘরে এসে ঢুকলো। গলা শুনে তার দিকে চাইতেই আরেক বিস্ময়। চুমকী বৌদির পেছন পেছন বিদিশাও এসে হাজির। আর তাদের দুজনার হাতেই ছোটো বড় নানা সাইজের পাঁচ ছটা করে প্যাকেট। তাদের দুজনকে ওভাবে ঘরে ঢুকতে দেখে আমি আর দীপ পরস্পরের মুখের দিকে চাইলাম অবাক হয়ে। প্যাকেটগুলো ঘরের কোনার দিকে নামিয়ে রেখে চুমকী বৌদি প্রায় লাফ মেরে আমার পাশে এসে ঝুঁকে আমার পাশে শোয়ানো শ্রীজার দিকে তাকিয়েই যেন থমকে গেলো। ঠিক তখনই শ্রীজাও হাত পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে ‘কুই কুই’ করে চোখ পিটপিট করে তাকালো।
______________________________
ss_sexy
(Upload No. 178)
আমিও দীপের কথা মেনে নিলাম। যদিও আমার পোস্ট ডেলিভারি কোনো সমস্যা হয়নি, তবু ডাক্তারের পরামর্শে ডেলিভারির পর আরো দু’দিন থাকতে হয়েছিলো নার্সিংহোমে। ১৭ তারিখ বেলা এগারোটা নাগাদ বাড়ি ফিরলাম। বিদিশাদের গাড়ি করে আমি যখন মেয়েকে কোলে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলাম, তখন দাদা আর দীপ চুমকী বৌদিকে রিসিভ করতে ষ্টেশনে গেলো।
নার্সিংহোম থেকে বেড়োবার আগে দীপ সেখানকার সমস্ত স্টাফকেই কম বেশী বখশিস দিয়েছিলো। আমার হাতে ৫০০ টাকা দিলো সেই নার্সটাকে দেবার জন্যে। দীপ যখন আমাদের জিনিসপত্রগুলো গোছাচ্ছিলো, তখনই সেই নার্সটা আমার কেবিনে এলো। আমি তাকে ডেকে বললাম, “সিস্টার শুনুন। আমি সেদিন একটা ভুল করে ফেলেছিলাম। আপনি প্লীজ কিছু মনে করবেন না। আসলে আমার তো আগের কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না। আপনি প্লীজ এটা রাখুন। আমার বর খুশী হয়ে এটা আপনাকে দিয়েছে”।
নার্সটা বোধ হয় আমার থেকে বয়সে সামান্যই বড় হবে। মিষ্টি করে হেঁসে জবাব দিলো, “শুনুন ম্যাডাম। ডিউটি করতে গিয়ে আমাদের অনেক সময়ই এমন ধরণের পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। আমি কিন্তু শুধুই আমার ডিউটি করছিলাম। অবশ্য এটাও স্বীকার করছি যে আমার মতো এমন নার্স আরো অনেক আছে যারা ডিউটি করতে গিয়ে অনৈতিক অনেক কিছুই করে থাকে। কিন্তু ও নিয়ে আপনি একদম ভাববেন না। ওসব আমাদের গা সওয়া হয়ে গেছে। আপনারাও ভুলে যান সে কথা। আজ এখান থেকে ছুটি পেলেন। বাড়ি যান। ভালো ভাবে থাকুন। নিজের প্রতি আর বেবীর প্রতি কোনোরকম অবহেলা করবেন না। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি, আপনি স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে থাকুন। আর খুশী হয়ে আপনার বর যেটা দিতে চাইছেন সেটা আমার তরফ থেকে আপনার বেবীকে উপহার দিলাম। ওর জন্যেই সেটা রেখে দিন"।
আমি বুঝতে পারলাম সে কোনোভাবেই টাকাটা নেবে না। কিন্তু তার কথা শুনে আমার নিজেকে আরো একবার তার কাছে অপরাধী বলে মনে হলো। দীপ এবার নার্সটাকে বললো, “ঠিক আছে সিস্টার, আপনার কথা মেনে নিয়েই এ টাকাটাকে আমাদের মেয়ের জন্যে রেখে দিলাম। কিন্তু একটা অনুরোধ করছি, রাখবেন প্লীজ”?
নার্সটি জবাব দিলো, “বেশ তো বলুন না”।
দীপ বললো, “আমরা তো আর মিনিট পনেরোর মধ্যেই বেড়িয়ে যাবো এখান থেকে। তার আগে আপনি আরেকবার আসবেন এ কেবিনে”?
নার্স তার কব্জি ঘড়ির দিকে দেখে বললো, “ঠিক আছে আমি পনেরো মিনিট বাদে এসে আপনাদের সাথে দেখা করবো”।
নার্স চলে যেতে দীপ বিদিশাকে ডেকে বললো, “বিদিশা, একটু হেল্প করবে প্লীজ। একজনকে একটা শাড়ি দিতে হবে, তুমি কি পছন্দ করে এনে দিতে পারবে? তুমি ফিরে এলে আমরা এখান থেকে বেড়োবো”।
বিদিশা কিছু একটা বলতে যেতেই আমি বললাম, “আরে ওই নার্সটা বখশিস নিতে রাজি হচ্ছে না। তাই দীপ ভাবছে ওকে একটা শাড়ি দিয়ে যাবে”।
বিদিশা দীপের হাত থেকে টাকা নিতে নিতে বললো, “ঠিক আছে, দাও, আমি তাড়াতাড়িই ফেরার চেষ্টা করবো” বলে বেড়িয়ে গেলো।
কেবিনের বাইরে দাদাকে দেখতে পেয়ে দীপ তাকে বললো, “দাদা একটু ট্রেনের খবরটা নিয়েছেন? চুমকী বৌদিকে তো ষ্টেশন থেকে আনতে হবে”।
দাদা জবাব দিলো, “হ্যা দীপ, এনকুয়ারীতে খবর নিয়েছি। বলেছে আধঘণ্টার মধ্যে ট্রেন পৌঁছে যাবে।
সুন্দর একখানা দামী তাঁতের শাড়ি প্রায় জোর করেই নার্সটার হাতে দিয়ে যখন আমরা নার্সিংহোম থেকে বেড়িয়ে এলাম তখন বাইরে এসে দাদা দীপকে বললো, “দীপ তুমি কি সতীর সাথেই বাড়ি যেতে চাইছো”?
দীপ দাদার প্রশ্ন শুনে বললো, “কেন বলুন তো দাদা”।
দাদা বললো, “না মানে, চুমকী বৌদির ট্রেন আসবার সময় হয়ে গেছে তো। তাই ভাবছিলাম এখানে তো দুখানা গাড়ি আছে। সতী তো বিদিশাদের গাড়িতেই উঠছে। জেঠীমাও ও গাড়িতেই যেতে পারবেন। আমি তাহলে এ গাড়িটা নিয়ে NJP চলে যাই। তুমি যেতে চাইলে তুমিও ওদের সাথে যেতে পারো বা আমার সাথে এ গাড়িতে বৌদিকে আনতেও যেতে পারো”।
দীপ আর দাদা বৌদিকে আনতে ষ্টেশনের দিকে রওনা হতে আমরা বিদিশাদের গাড়ি করে বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
চুমকী বৌদিকে নিয়ে দাদা আর দীপ যখন ঘরে ফিরে এলো বেলা তখন প্রায় বারোটা। চুমকী বৌদির পেছন পেছন দাদা আর দীপ অনেকগুলো লাগেজের প্যাকেট নিয়ে ঘরে ঢুকলো। চুমকী বৌদির জন্যে ওপর তলায় আমাদের গেস্ট রুমে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। চুমকী বৌদি আমার সাথে দেখা না করেই ওপরে চলে গেলো। আমি সেটা শুনে একটু অবাকই হলাম। আমাকে দেখবার জন্যে সে গৌহাটি থেকে শিলিগুড়ি চলে এলো, আর আমার সাথে দেখা না করেই ওপরে চলে গেলো! দাদা একবার আমার ঘরে ঢুকে আমরা ঠিক ঠাক আছি শুনে ওপরে চলে গেলো। দীপ আমার কাছে এসে বসতেই আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কি গো, বৌদির শরীর টরীর ঠিক আছে তো? আমার সাথে দেখা না করেই গেস্ট রুমে চলে গেলেন যে”?
দীপ আমাকে আশ্বস্ত করে বললো, “চুমকী বৌদি একদম ঠিক আছে মণি। সে স্নান টান সেরে তারপর তোমার কাছে আসবে বলেছে”।
আমি আশ্বস্ত হয়ে বললাম, “বৌদিকে সে ঘরের সব কিছু দেখিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছো তো? সে তো এর আগে ওপরের ঘরটা দেখে নি”।
দীপ হেঁসে বললো, “সে নিয়ে তোমাকে আর ভাবতে হবে না মণি। তুমি বোধ হয় ভুলে গেছো যে চুমকী বৌদির জা-ও এখন এ বাড়িতেই আছে। বিদিশা তার সাথে আছে”।
আমি একটু হেঁসে বললাম, “ওহ, হ্যা তো, আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। বিদিশা যখন আছে তখন আর চিন্তার কিছু নেই। আমার জন্যেও মেয়েটা যা করলো, বাপরে! এক মুহূর্তের জন্যেও আমাকে নার্সিংহোমে একা থাকতে দ্যায় নি। শুধু নাওয়া খাওয়ার জন্যেই বাড়ি এসেছে। দিনরাত আমার সাথেই বসেছিলো। বকাবকি করেও ওকে আমার কাছ থেকে সরাতে পারিনি”।
দীপ প্রায় স্বগতোক্তির মতো করে বলে উঠলো, “সত্যি মণি, তোমার মতো স্ত্রীর পাশাপাশি বিদিশার মতো একটা বন্ধুও যে আমি পাবো, এমনটা স্বপ্নেও ভাবিনি কখনো। আর দ্যাখো, সেই বিদিশার দৌলতেই আবার চুমকী বৌদিকেও পেয়ে গেলাম আমরা। ভাবতে পারো? যার সাথে মাত্র মাস দেড়েক আগে তোমার পরিচয় হয়েছে, তাও শুধু দুটো দিনের জন্যে, সে তোমার মা হবার কথা শুনে হাজার মাইল দূর থেকে ছুটে এসেছে! আমি তো ভাবতেই ইমোশনাল হয়ে পড়ছি”।
আমি আমার কোলের পাশে শুইয়ে রাখা শ্রীজার দিকে একটু দেখে নিয়ে বললাম, “একেবারে ঠিক বলেছো সোনা। আমিও কিন্তু এতোটা আশা করিনি। বিদিশা কাছে আছে, সে আমার পাশে থাকবেই এটা তো জানতামই। কিন্তু গৌহাটি থেকে বৌদি এভাবে ছুটে আসবে, এটা আমিও ভাবিনি”।
“জানি জানি, আমি তো মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা একটা অদ্ভুত জীব। তোমরা পৃথিবীর মানুষেরা আমায় বুঝবে কেমন করে”? বলতে বলতে চুমকী বৌদি আমার ঘরে এসে ঢুকলো। গলা শুনে তার দিকে চাইতেই আরেক বিস্ময়। চুমকী বৌদির পেছন পেছন বিদিশাও এসে হাজির। আর তাদের দুজনার হাতেই ছোটো বড় নানা সাইজের পাঁচ ছটা করে প্যাকেট। তাদের দুজনকে ওভাবে ঘরে ঢুকতে দেখে আমি আর দীপ পরস্পরের মুখের দিকে চাইলাম অবাক হয়ে। প্যাকেটগুলো ঘরের কোনার দিকে নামিয়ে রেখে চুমকী বৌদি প্রায় লাফ মেরে আমার পাশে এসে ঝুঁকে আমার পাশে শোয়ানো শ্রীজার দিকে তাকিয়েই যেন থমকে গেলো। ঠিক তখনই শ্রীজাও হাত পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে ‘কুই কুই’ করে চোখ পিটপিট করে তাকালো।
______________________________
ss_sexy