Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.17 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
চোরাবালি (কালেক্টেড)
পর্ব পাঁচ। রাগ অনুরাগ (#8-#33)
খাওয়া দাওয়া শেষ, বিছানায় গড়াতে গড়াতে রাত বারোটার মতন বেজে গেল। দেরি করে বাড়ি ফেরার জন্য বড়মায়ের কাছে মৃদু বকুনি শুনতে হল। ঠিক সময়ে বাড়ি ঢুকিস না, একবার ফোন করে বলতে পারতিস। সত্যি অভি, এটা অন্যায়, ভীষণ অন্যায়। বড়মা না খেয়ে ওর জন্যে বসে ছিল। বিছানায় শুয়ে একবার ফোন খুলে দেখল, দিয়ার ফোন এখন আসেনি। এতক্ষনে বার কতক ফোন করে নেয়, কি হল মেয়েটার, একটু চিন্তায় পরে গেল। একবার রিং করল দিয়াকে, কোন উত্তর এলো না। চোখ বুজে দিয়ার লালচে গালের লালিমার মাঝে হারিয়ে যায়, নরম রসালো ঠোঁটের মাঝে চিকচিক করা দাঁতের হাসিতে হারিয়ে যায়। মিনিট দশেক পরে আবার ফোন করে অভি, এবারেও ফোন তোলেনা দিয়া, ফোন এক নাগারে বেজে গেল। চোখে ঘুম আসেনা, মন ভীষণ ভাবেই উতলা হয়ে পরে। বাড়িতে নিশ্চয় বকা খেয়েছে, এতরাত করা সত্যি ঠিক হয়নি। অভি ছেলে হয়ে দেরি করে বাড়ি ফিরেছে তাতেই বড়মা বকা দিয়েছেন আর দিয়া এক মেয়ে, এদেশে মেয়েদের এখন অতটা স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি। আর থাকতে না পেরে ফোন নিয়েই বাইরে বেড়িয়ে গেল অভি, একটা সিগারেট খুব দরকার। দিয়ার ফোন না আসা পর্যন্ত ঘুমাতে পারবে না। রাত প্রায় সাড়ে বারোটা, আরো একবার ফোন করবে নাকি? না থাক, হয়ত বাড়িতে ঝামেলা হয়েছে, রাগ করে কিছু না খেয়েই হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছে। সিগারেটে কষে দুই তিনটে টান মারলো, একবার মনে হল জামা কাপড় পরে বারাসাত চলে যায়, বেশি দুর নয় এই রাতে মিনিট দশেক লাগবে দিয়ার বাড়িতে পৌঁছাতে। রাগ করলেও দিয়া একাই ঘুমায়, অন্তত একটা ফোন করতেই পারতো।
রাত প্রায় একটা, ফোন বেজে ওঠে, স্ক্রিনে দিয়ার নাম দেখতে পেয়েই লাফিয়ে ওঠে অভি, “কি ব্যাপার একটা ফোন করতে পারো না?”
ওইপাশে দিয়ার গলায় একটু উদ্ভিগ্ন, “আরে বাবা বাড়িতে ঝামেলা হয়েছে।”
অভি ঠিক আন্দাজ করেছিল, “আমি এটাই ভয় পাচ্ছিলাম জানো। তোমাকে বলি কিন্তু তুমি কিছুতেই...”
দিয়া ওইপাশ থেকে ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “কথা না শুনে একদম জ্ঞান মারতে যাবে না বুঝলে।”
অভি থেমে যায়, “আচ্ছা কি হয়েছে বলো।”
দিয়া রাগত কণ্ঠে বলে, “দাদার সাথে ঝামেলা আরকি হবে। ও রাত বারোটা পর্যন্ত প্রেম করে বেড়াতে পারে, আড্ডা মেরে বেড়াতে পারে তার বেলায় কোন দোষ নেই। যত দোষ আমার নাকি?”
কথাটা ভীষণ ভাবেই সত্য, সেটাই বুঝাতে অভি বলে, “মানুষের মানসিকতা বদলাতে পারো না মিষ্টি।”
দিয়া ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “জ্ঞান দিতে এসো না একদম, আমার মাথা প্রচন্ড গরম আছে কিন্তু।”
অভি বুঝতে পারে যে দিয়া ভীষণ রেগে রয়েছে, কিছু একটা বলে শান্ত করতে না পারলে ভীষণ মুশকিল তাই নিজের বকা খাওয়ার কথা শুনায়, “মায়েদের চিন্তা হয় মিষ্টি, আমিও কিন্তু মায়ের কাছে বকা খেয়েছি।”
এই কথা শুনে দিয়াও হেসে ফেলে, “কি বলো, তুমিও বকা খেয়েছ?”
অভি হেসে উত্তর দেয়, “হুম...”
দিয়া, “কেন?”
অভি, “মায়ের মন, ফোন করিনি তাই।”
দিয়া, “ওহ, আমার কেস উলটো। দেরি করেছি বলে মা একটু বকাঝকা করেছিল, কিন্তু আসল ঝগড়া দাদাকে নিয়ে। রাত বারোটায় মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে তোরপার শুরু, আমিও কি আর থামার মেয়ে নাকি? আমিও কষে শুনিয়ে দিলাম। আমি ওর খাই না, নিজের খরচ খরচা নিজেই আয় করি, আমি কেন চুপ থাকবো বলো?”
দিয়া বেশ গরম হয়েই আছে, এই মেয়েকে শান্ত না করতে পারলে মুশকিল, হয়ত অভির ওপরেই রাগ ঝেড়ে দেবে, তাই কথা ঘুড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, “খেয়েছ কি?”
অভির অভিসন্ধি বুঝতে পেরে দিয়া হেসে ফেলে, “হ্যাঁ, খাওয়ার ব্যাপারে আমি একদম দেরি করি না।”
অভি মস্করা করে বলে, “জানা আছে, আজকে কতটা খেলে সেটা দেখেছি।”
দিয়া হেসে ফেলে, “ওটা এমনি।” দিয়া গলা নিচু করে আবদার করে বলে, “এই শোন না, কাল একবার আসতে পারবে?”
অভি, “কেন কাল কি আছে?”
দিয়া মুখ ফুলিয়ে বলে, “ওহ না ডাকলে বুঝি দেখা করতে নেই?”
বেগতিক দেখে অভি উত্তর দেয়, “আচ্ছা বাবা কাল আসবো।”
দিয়া মুচকি হেসে বলে, “কাল একটু শপিং করব।”
অভি জিজ্ঞেস করে, “তোমার আর ব্রাইডাল আসছে না?”
দিয়ার গলায় ব্যাথার সুর, “না গো, এই সিজেনে বেশি পাইনি। এই মাসের শেষের দিকে দুটো ব্রাইডাল আছে ব্যাস আর নেই। আসলে কি জানো, যাদের বিউটি পার্লার আছে তারা অনেক পেয়ে যায়। আমার তো শুধু এই ফেসবুক আর ইন্সটাগ্রামে আলাপ পরিচিতি তাই বেশি পাই না।”
অভি, “তুমি একটা পার্লার জয়েন করতে পারো তো।”
দিয়া হেসে ফেলে, “না গো, পার্লার জয়েন করলেও অনেক ঝামেলা। নিজের থেকে যে কটা কাজ পাই সেই গুলোও করা যাবে না তাহলে ... একটা বিউটিসিয়ান কোর্স করব ভাবছি কিন্তু অনেক টাকার দরকার গো।”
টাকার দরকার সবার, সবাই বলে অর্থ অনর্থের মূল, কিন্তু অর্থ ছাড়া কিছুই চলে না এমন কি পেট চলে না। যদি অর্থ ছাড়া পেট চালাতে হয় তাহলে সুন্দরবনের জঙ্গলে গিয়ে বসবাস করতে হয়। অভি ছোট এক উত্তর দেয়, “হুম বুঝলাম।”
দিয়া হেসে বলে, “আমি বললাম বলে তুমি আবার টেন্সান নিও না। তুমি তো আবার সব কিছুতেই ভাবতে বসে যাও।”
অভি হেসে ফেলে, “কেন, তোমার চিন্তা কি আর আমার চিন্তা নয়?”
এই কয়েদিনেই দিয়া অভিকে ভালো ভাবেই চিনে গেছে, মনে হয় যেন অনেক দিনের পরিচয় শুধু মাত্র চোখের দেখা হয়নি এতদিন। দিয়া মনে প্রানে জানে, অভির মনের মধ্যে ওর চাকরি নিয়ে একটা কষ্ট চলছে, সেখানে আঘাত দিতে অথবা ওর কাছে কিছু চেয়ে ওকে হীন করতে একদম চায় না। দিয়ার বেশির ভাগ বান্ধবীরা হয় তাদের ভালো ঘরে বিয়ে হয়ে গেছে অথবা তারা খুঁজে খুঁজে বড় লোক ছেলেদের প্রেম করছে। দিয়া মানুষ খুঁজেছিল আর সেই মানুষ পেয়ে গেছে। হয়ত দিয়া যদি টাকার অঙ্ক বলতো তাহলে অভি নিশ্চয় চিন্তায় পরে যেত, কিছু করতে পারছে না ভেবে হয়ত নিজেকে নিজের কাছেই ছোট হয়ে যেত। অভিকে কারুর সামনে ছোট করতে দিয়া একদম চায় না, এমন কি অভি যখন আয়নার সামনে দাঁড়াবে তখন যেন নিজেকে ছোট বলে মনে না করে।
দিয়া লজ্জিত হয়ে আদুরে গলায় অভিকে বলে, “না গো আমার বুবুসোনা, আমি সেই ভাবে ভেবে বলিনি।”
অভি হাসে, “হ্যাঁ বুঝেছি।”
এখন একটা চাকরি পায়নি, লোকের চোখে বেকার ছেলে অভিনন্দন। বড়দি কিছু টাকা দিয়ে গিয়েছিল, এত দিন দিদিভাই ছিল ওর লক্ষ্মী, মাঝে মাঝে বড়মায়ের কাছে হাত পাততে হয়, তবে এবারে কিছু না হলে একদম চলছে না, যেখানে যা পাবে ঢুকে যাবে। কেউ জিজ্ঞেস করলে তখন বলতে হয় যে চাকরি খুঁজছে। আজকাল কলেজের ছেলেরা বড়লোক মেয়েদের দিকে দেখে আর মেয়েরা দেখে উপার্জন করা না হয় বড়লোক ছেলেদের দিকে। বেকার ছেলেদের প্রেম করার রোজগেরে মেয়েদের তো কথাই নেই, তাদের হাইফাই ছেলে না হলে পাতেই দেয়না। জোকায় ওর ব্যাচে যতগুলো মেয়ে ছিল, অধিকাংশ এনআরআইকে বিয়ে করেছে না হয় নিজেরাই বিদেশ চলে গেছে, কেউই দেশে নেই। দিয়া না হয়ে অন্য মেয়ে হলে হয়ত ওর মতন ঘরে বসা ছেলেকে প্রেমও করত না। অভিও বুঝে গিয়েছিল কি কারনে দিয়া ওর প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছে, তাই চুপ করে যায়।
অভিকে একটু চুপ থাকতে দেখে দিয়া জিজ্ঞেস করে, “এই কি হয়েছে, চুপ করে গেলে কেন?”
অভি, “না কিছু না।”
দিয়া, “এই বাবু, এমন মন মরা হয়ে থাকে না। কি হয়েছে আমাকে বলবে না?”
অভি একটু হেসে বলে, “কিছু হয়নি তো।”
দিয়া, “আচ্ছা বাবা আর কিছু জিজ্ঞেস করব না।”
পরের দিন বিকেল চারটের আগেই দিয়ার বাড়ির গলির সামনে বাইক নিয়ে উপস্থিত হয়ে যায় অভি। যদিও জানে যে চারটেতে দিয়া বের হবে না। সকাল থেকে অন্তত দশবার ফোন করেছে, কখন আসবে কখন আসবে। অভি সিগারেট ধরিয়ে আপন মনেই হেসে ফেলে, চারটে থেকে সোয়া চারটে বেজে গেল এখন সুন্দরী ললনার দেখা নেই।
এমন সময়ে কাঁধে আলতো চাঁটি, “কটা সিগারেট খেলে?”
ঘাড় ঘুড়িয়ে দিয়ার দিকে তাকাতেই অভির চোখে তাক লেগে যায়। বৌভাতের রাতে দেবী একদম টকটকে লাল রঙ্গে সেজেছিল আর সেদিন দিয়া সেজেছে বারগ্যান্ডি লাল রঙ্গে। পরনে বারগ্যান্ডি রঙের চাপা জেগিন্স আর সেই রঙের ছোট হাতার একটা ফ্রিল শারট। কালো ভুরু জোড়া ভীষণ ভাবেই ধনুকের মতন বেঁকে, কানে দুটো পাথরের লম্বা দুল। রসালো মিষ্টি ঠোঁট জোড়া গাড় লাল রঙ্গে রাঙ্গানো, ভীষণ ভাবেই অভিকে উন্মাদ করে ডাক দেয়। চোখের তারায় ভাসমান দুষ্টু মিষ্টি হাসি। দিয়া চোখ দারুন আঁকে, চোখের কোনে কাজল একটু টেনে দিয়ে চোখ জোড়া আরো বেশি করে ফুটিয়ে তুলেছে। আঁটো জামাটা দিয়ার ঊর্ধ্বাঙ্গের ভাঁজে ভাঁজে ভীষণ ভাবেই খাপ খাইয়ে নিয়েছে। দেহের আঁকিবুঁকি ভীষণ ভাবেই স্পষ্ট। ভারী সুগোল স্তনের চাপের ফলে উপরের দুটো বোতাম হাঁসফাঁস করতে শুরু করে দিয়েছে। চাপা জামাটা নরম গোল পেটের আকার অবয়াব পরিস্কার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে অভির চোখের সামনে। জামার নিচে আঁটো ব্রার ছাপ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কাছ থেকে দেখলে ব্রার রঙ পর্যন্ত বোঝা যায়, টকটকে লাল রঙের ব্রা। ইচ্ছে করেই জামাটা জেগিন্সের মধ্যে গোঁজা। চাপা জেগিন্স দিয়ার কোমর থেকে গোড়ালি পর্যন্ত ঢেকে রেখেও যেন অনেক কিছু মেলে ধরেছে সবার সামনে। নরম গোল পেট ছাড়িয়ে গোল হয়ে ফুলে ওঠা কোমর, দুই মোটা সুগোল স্ফটিকের থামের মতন ঊরু জোড়ার মাঝের জায়গাটা ভীষণ ভাবেই উলটো ত্রিকোন আকার ধারন করে নিয়েছে। সেদিকে চোখ গেলেই ধক করে ওঠে অভির বুকের রক্ত। ইতরের মতন দিয়ার পায়ের মাঝের অঙ্গটাকে ফুটিয়ে তুলেছে জেগিন্সটা। ইসসস, একটু ফোলা মনে হল অভির, নাকি চোখের ভুল। দেহের অবয়াব আদিম যুগের বালির ঘড়ির মতন। দিয়াকে ঠিক মোটা একদম বলা চলে না, একটু বাড়ন্ত বললেই ঠিক। বাম হাতের গোল কব্জিতে বাঁধা একটা পাতলা ঘড়ি অন্য হাতের কব্জিতে একটা পাথরের চেন। কাঁধে ঝোলান চামড়ার ব্যাগটাও দিয়ার মতন সুন্দর। পায়ের দিকে নজর যেতেই বাঁ পায়ের গোড়ালিতে বাঁধা একটা খুব পাতলা কালো বিডের চেন দেখতে পেল। এটা আগে ছিল না, এটা আবার কি ধরনের নতুন সাজ। আপনমনেই অভি হেসে ফেলে দিয়ার পায়ের চেন দেখে। যত বার দিয়াকে দেখে ততবার যেন এক নতুন দিয়াকে খুঁজে পায় অভি। বিয়েতে এক অন্য সাজে সেজেছিল, বউভাতে সম্পূর্ণ ভিন্ন সাজ, প্রথম যেদিন দুইজনা একসাথে বেড়িয়েছিল সেদিনের সাজ ভিন্ন আর আজকের সাজ ভীষণ ভাবেই অন্য রকম।
নির্বাক অভির চোখের তারার চমক দেখে দিয়ার বুকের রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে। ইসসস, এইভাবেই এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেরে ফেলে দেবে। এত ইচ্ছে যখন তখন কোথাও নিয়ে কেন যায় না? ওই বলিষ্ঠ বাহুর মাঝে সেদিন যেভাবে মাঠের মাঝে জড়িয়ে ধরেছিল মনে হয়েছিল কুঁকড়ে ওই কোলের মধ্যে সেঁধিয়ে যায়।
চোখে একটু লাজুক লালিমা মাখিয়ে অভির বুকের কাছ ঘেঁসে এসে মিহি কণ্ঠে বলে, “এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গিলবে নাকি অন্য কোথাও যাবে?”
গেলার কথাটা কান যেতেই লজ্জায় পরে যায় অভি, এতক্ষন হ্যাংলার মতন দিয়ার দিকে তাকিয়ে ছিল, যেন কতদিন কোন মেয়ে দেখেনি। দিয়ার গলা শুনে সম্বিত ফিরে পায় অভি, “না মানে...”
হেসে ফেলে দিয়া, অভির হাত থেকে হেলমেট নিয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে একটু ঘুরে নেচে জিজ্ঞেস করে, “কেমন লাগছে গো আমাকে?”
দিয়ার দুষ্টুমি ভরা চোখের তারায় দৃষ্টি নিবদ্ধ করে অভি বলে, “তোমাকে ভীষণ সুন্দরী লাগছে, সনু... মনে হচ্ছে” বলতে বলতে দিয়ার দিকে একটু ঝুঁকে যায় অভি।
দিয়া দু’কদম পেছনে সরে লজ্জা পেয়ে যায় বলে, “তুমি আমার দিকে ওইভাবে তাকাবে না, বুঝলে...”
বাইকে চড়ে দিয়াকে বলে, “তোমাকে ভীষণ ভাবে চটকে আদর করতে ইচ্ছে করছে দিয়া...”
কথাটা শুনে দিয়ার কমনীয় দেহলতায় কাঁপুনি ধরে যায়। ইসসস... সত্যি ওর ভীষণ ইচ্ছে করছে অভির কোলে ঝাঁপিয়ে পড়তে, লুকিয়ে যেতে ওই বুকের মধ্যে। লজ্জায় লাল হয়ে যায় দিয়া, “সত্যি বলছ?”
অভি কি আর উত্তর দেবে, ইচ্ছে করছে এখুনি দিয়াকে জড়িয়ে ধরে গালে মাথায় ঠোঁটে সব জায়গায় চুমু খায়, “ভীষণ ভাবে সত্যি, সনু...”
অভির গলার আওয়াজেই প্রেমের আবেগে অবশ হয়ে যায় দিয়ার কমনীয় দেহ। ওর দুই পা অবশ হয়ে যায় অভির প্রমাগুনে জ্বলে ওঠা দৃষ্টিতে। কাঁপা কণ্ঠে অভির নজর থেকে নিজেকে বাঁচাতে ওর পেছনে চলে যায়। অভির ঝলসানো দৃষ্টির সামনে বেশিক্ষন এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকা ওর পক্ষে একদম সম্ভব নয়। যেভাবে ওর দিকে তাকিয়েছিল, সেই তাকানোতেই দিয়ার মনে হয়েছিল যেন ওর সারা শরীরের রক্ত বুকের মধ্যে এসে জমা হয়ে গেছে। প্রতি বারের মতন বাইকের দুইপাশে পা দিয়ে অভির পেছনে উঠে বসে। বাইকে চেপে যেভাবে অভিকে পেছন থেকে জাপটে ধরেছিল দিয়া তাতে আশেপাশের লোকেও একটু তাকিয়েছিল ওদের দিকে। হেলমেট পরে অভির বগলের তলা দিয়ে হাত গলিয়ে দুই কাঁধ আঁকড়ে ধরে নিজেকে অভির পিঠের সাথে নিজেকে পিষে ধরে।
অভির পিটে নিজেকে মিশিয়ে দিয়ে বুঝতে পারলো যে ছেলেটা সেদিন আর গেঞ্জি পরে আসেনি। সেটা বুঝতে পেরেই দিয়া দুই হাতে আরো বেশি করে নিজেকে উজাড় করে চেপে ধরে পিঠের ওপরে। হাল্কা নীল রঙের শারট, কালো জিন্সে দারুন বেশ পুরুষালী দেখায় অভিকে। ওর কথা মতন দাড়ি কামালেও গোঁফ কামায়নি। দিয়ার নাকে ভেসে আসে ডেনিম আফটার শেভের সাথে সিগারটে মেশানো এক দামাল পুরুষালী মাতাল করে দেওয়া গন্ধ। এক গন্ধটা দিয়াকে প্রতিবার পাগল করে দেয়, তবে সেদিন অভির নাকের নিচের গজিয়ে ওঠা পুরু গোঁফ জোড়া আরো বেশি করে আকর্ষিত করে দিয়াকে। ছেলেটাকে দেখলে মনে হয় যেন ছাই চাপা আগুন, শুধু যেন দিয়ার ছোঁয়াতেই প্রকাশ পাবে।
গালের ওপর নরম গালের ছোঁয়া পেতেই অভির সারা দেহে এক অনির্বচনীয় শিহরণ বয়ে যায়। চোয়াল শক্ত করে দিয়াকে পিষে ফেলার ইচ্ছেটাকে দমন করে প্রশ্ন করে, “মহারানী কোথায় যেতে ইচ্ছুক।”
হেসে ফেলে দিয়া, “যেখানে তোমার ইচ্ছে...”
অভি, “তুমি নাকি শপিং করতে বেড়িয়েছিলে?”
দিয়া ফিক করে হেসে বলে, “ওটা তো বাহানা... আসল তো...”
অভি, “ওহ, তাই বুঝি।”
দিয়া, “হুম, আচ্ছা নাগের বাজার চলো।”
অভি, “অতদুর কেন? এখানেই তো শপিং করা যায়।”
দিয়া, “মাথা খারাপ নাকি? এখানে কে না কে দেখে নেবে, বাড়িতে কথা পৌঁছে যাবে।”
অভি বাইকে স্টারট দিয়ে বলে, “ওকে চলো।”
মিহি কণ্ঠে অভির কানে কানে বলে, “এই বুবু... তোমাকে আজকে ভীষণ হ্যান্ডু লাগছে জানো...” বলেই অভির গালে নিজের গাল আলতো করে ঘষে দেয়।
কানের কাছে উষ্ণ শ্বাস ঢেউ খেলে যেতেই অভির ঘাড় মাথা অবশ হয়ে যায়, “আমার মিষ্টি সুনু...” শুধু এইটুকু বের হতে পারল অভির ঠোঁট থেকে। ধমনীতে একটু উত্তপ্ত রক্তের দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়।
রিয়ারভিউ আয়নায় অভির চোখে চোখ রেখে মিষ্টি এক হাসি হেনেছিল। অভির ডান কাঁধের ওপরে থুঁতনি রেখে কানে কানে বলে, “এই শয়তান, সামনে দিকে তাকিয়ে বাইক চালাও।”
হেসে ফেলে অভি, “ওই ভাবে জড়িয়ে ধরলে বাইক চালাবো কি করে?”
সেই শুনে আরো বেশি করে নিজেকে উজাড় করে দেয় দিয়া। গেঞ্জি হীন পিঠের ওপর উষ্ণ কোমল স্তন জোড়ার উষ্ণ নরম স্পর্শে মাতাল হয়ে যায় অভি। পিঠের শিরদাঁড়া বেয়ে এক ঘন উত্তপ্ত লাভার শ্রোত বয়ে যায়। ওর পিঠের নিচের দিকে দিয়ার নরম গোল পেট চেপে গেছে, সারা পিঠে শুধু দিয়ার শরীরের কোমল উষ্ণ পরশ।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: চোরাবালি (কালেক্টেড) - by ddey333 - 12-09-2020, 09:47 AM



Users browsing this thread: Khan62645, 3 Guest(s)