Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.17 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
চোরাবালি (কালেক্টেড)
পর্ব পাঁচ। রাগ অনুরাগ (#7-#32)
ওহ ক্যালক্যাটাতে শিতাভ্র আর দিদিভাই ওদের জন্য অপেক্ষা করছিল। দিয়াকে দেখতে পেয়েই মনামি হাত তুলে কাছে আসতে বলে।
মনামি দিয়াকে হেসে জিজ্ঞেস করে, “কিরে ডুবে ডুবে জল খেয়ে নিলি কেউ জানতে পারল না?”
দিয়ার গালে লাগে লজ্জার লালিমা, অভির পাশে দাঁড়িয়ে একটু হেসে বলে, “তোমার ভাই যা মুখচোরা আর কি বলবো।” দিয়ার সাথে মনামিও হেসে ফেলে।
শিতাভ্র মনামির পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল, অভিকে দেখে হেসে বলল, “তুমি বেশ ডুবে ডুবে জল খাও মনে হচ্ছে?”
অভি হেসে ফেলে, “না বেশি ডুবে ডুবে জল খেতে পারিনা, শ্বাস আটকে যায়।”
কথাটা শুনেই সবাই হেসে ফেলে। দিয়ার সাথে দিদিভাইয়ের মেলামেশা দেখে অভির বেশ ভালো লাগে। দিদিভাইয়ের সামনে দিয়ার সেই চঞ্চল ভাবটা নেই, সেটা দেখেও অভির বেশ ভালো লাগে। দিন তিনেকের মধ্যে সবার কাছে ওদের এই ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে যাবে সেটা আশা করেনি, তবে যদি সেই রাতে বড়মায়ের কাছে ধরা না পড়ত তাহলে কোনদিন দিয়াকে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারতো না। হয়ত এই আফশোশ সারা জীবন বুকের মধ্যে বয়ে বেড়াতে হত অভিকে। দিদির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে দেয় অভি। কথায় গল্পে ওদের খাওয়া দাওয়া হয়। অভির বাড়িতে বলা ছিল যে ঘুরতে বেরোবে, কিন্তু দিদিভাইয়ের সাথে দেখা করবে সেটা জানায়নি। বড়মায়ের আপত্তি ছিল যে দিল্লী যাওয়ার আগে যেন অভি আর ওর দিদির সাথে দেখা না করে। কিন্তু দিদিভাইয়ের আবদার, দিল্লী যাওয়ার আগে দিয়ার সাথে একবার দেখা করার সেটাও অমান্য করতে পারে না।
শিতাভ্র আর মনামি চলে যাওয়ার পরে, রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে রাস্তার পাশে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিল অভি আর দিয়া। অভির বাজু শক্ত করে ধরে গা ঘেঁসে দাঁড়িয়ে ছিল। দিয়ার গায়ের মিষ্টি গন্ধ আর উষ্ণ পরশে অভির বুকের মধ্যে এক অনাবিল আনন্দের সঞ্চার হয়। মনে হয় এখুনি একে কোথাও ভাসিয়ে নিয়ে যায়। রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়াতে বেড়াতে প্রায় রাত আট’টা বেজে গেল। অভির ইচ্ছে ছিল যদি তাড়াতাড়ি বের হওয়া যায় তাহলে দিয়াকে নিয়ে ওদের মাঠের ওখানে যেতে। কোলকাতায় প্রেম করার জন্য ফাঁকা জায়গা পাওয়া খুব বিরল ব্যাপার। ভিক্টোরিয়া অথবা সেন্ট্রাল পার্ক এই সব জায়গায় যেতে একদম ভালো লাগে না, প্রচন্ড ভিড়ে কেমন যেন নিঃশ্বাস আটকে যায় ওর। মনে হয় সবকিছুই এত খোলামেলা যে কাছের মানুষটাও দুরে চলে গেছে। দিয়ার ডান হাতের আঙ্গুল অভির হাতের আঙ্গুলের সাথে পেঁচিয়ে যায়। অভির হাতের থাবা গ্রাস করে নেয় দিয়ার নরম চাঁপার কলি আঙ্গুল গুলো। আঙ্গুলের সাথে আঙ্গুল পেঁচিয়ে, অন্যহাতে অভির বাজু শক্ত করে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তার পাশে।
অভির বুকের কাছে মাথা এনে নিচু গলায় জিজ্ঞেস করে, “তুমি এত চুপ ছিলে কেন?”
অভি হেসে উত্তর দেয়, “কোথায় চুপ ছিলাম?”
দিয়া হেসে ফেলে, “হ্যাঁ জানা আছে। একদিন তোমার মাথাটা ফাটিয়ে দেখতে ইচ্ছে করে যে কি চলছে।”
অভি হেসে গলা নামিয়ে বলে, “সুনু...”
ডাকটা শুনে দিয়া প্রায় গলে যায়, অভির পাশে আরো নিবিড় হয়ে এসে, “হুম...”
অভি দিয়ার চকচকে চোখের নীলচে মণির দিকে তাকিয়ে বলে, “মাথায় তো অনেক কিছুই থাকে। চাকরির চিন্তা, বাড়ির চিন্তা, তারপর...”
কথাটা মাঝখানেই আটকে দেয় দিয়া, “সেসব সবার থাকে, তুমি সত্যি করে বলতো কাকে নিয়ে এত ভাবো?”
দিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে যে সেই চোখে জোড়া একটু ছলছল। যদিও অভির প্রথম প্রেম তবুও এই চোখের এই ভাষা অভির অজানা নয়। দিয়ার কাঁধে হাত রেখে কাছে টেনে নেয়, “আমি চুপ থাকি বলে এই নয় যে সব সময়ে কারুর চিন্তা করি। মাথায় তো সানি লিওন থেকে সানিয়া মিরজা” বুকের বাঁ দিকে দিয়ার মাথা চেপে বলে বলে, “কিন্তু তাদের জায়গা তো আর বুকের বাম দিকে নয়, তাই না মিষ্টি।”
কথাটা শুনে ছলছল চোখে ঠোঁটে লাজুক মিষ্টি হাসি নিয়ে অভির দিকে তাকায়, “হ্যাঁ গো, এত ভালোবাসো আমাকে?”
গাড় বাদামী রসালো ঠোঁটের আড়ালে দুপাটি মুক্ত সাজানো দাঁতের হাসি দেখে অভির বুকে দোলা লাগে। মাথা দুলিয়ে বলে, “সঠিক ভাবে এর পরিমাপ জানি না গো...”
দিয়া একটু আদুরে গলায় আবদার করে, “এই শোনো না।”
ভীষণ ভাবেই ওই ঠোঁট জোড়া আহ্বান করছে অভিকে। দিয়ার ঘন উষ্ণ শ্বাসের ঢেউ, সেই সাথে ওই দুই চোখে প্রেমের তীব্র আহ্বান, একা পেলে দিয়াকে উড়িয়ে নিয়ে যেত। বহু কষ্টে সেই চুম্বনের আকর্ষণ দমিয়ে দিয়াকে জিজ্ঞেস করে, “কি?”
দিয়ার কণ্ঠে আদুরে সুর, “এইখানেই কত দেরি হয়ে গেলো।”
অভির মন খারাপ, সত্যি ওহ ক্যালক্যাটা থেকে বের হতে হতে আট’টা, দিয়াকে বারাসাতে পৌঁছাতেই দশ’টা বেজে যাবে। ক্ষুন্ন মনে অভি বলে, “আমি ভেবেছিলাম কোথাও একটু বসব।”
অভির হাত খুব জোরে জড়িয়ে ধরে বলে, “আজকে তোমাকে একদম ছাড়তে ইচ্ছে করছে না গো। মনে হচ্ছে তোমাকে জড়িয়ে ধরে সারা রাত এইভাবে কোথাও বসে থাকি। তোমার বুকে মাথা রেখে চোখ বুজে চুপচাপ পরে থাকি।”
ইচ্ছেটা অভির মধ্যেও প্রবল, কিন্তু ইচ্ছে থাকলেই সব কিছু করা সম্ভব হয় না। বুকের কাছে দিয়ার মাথা, বাজুর ওপর কোমল উষ্ণ পরশ অভির দেহে তরল প্রেমের বন্যা বইয়ে দেয়। দুষ্টু মিষ্টি চোখ জোড়া ভীষণ ভাবেই ওর মুখের দিকে তাকিয়ে। বাইক পারকিঙ্গের জায়গাটা একটু অন্ধকার। সেই আধো আলো আঁধারে দিয়ার দিকে নিস্পলক নয়নে তাকিয়ে থাকে অভি। ভীষণ নতুন লাগে মেয়েটাকে। বাঁকা কালো সরু ভুরু, ফোলা নরম গাল দুটো চকচক করছে, মনে হয় একটু আদর করে টিপে ধরে। রেস্টুরেন্ট থেকে বেরনোর আগে ওয়াসরুমে গিয়ে চুল আঁচরে আর সামান্য প্রসাধন করে নিয়েছিল মনে হয়, সব মেয়েরাই করে, মনে মনে হেসে ফেলে অভি। নাকের ডগাটা চকচক করছে, খুব ইচ্ছে করছে নাকের ডগায় একটা ছোট চুমু খায়। হাল্কা লালচে ঠোঁট জোড়া ভীষণ ভাবেই টেনে ধরে অভিকে। মসৃণ গ্রীবা, কানে লম্বা দুল, সব মিলিয়ে দিয়াকে অপূর্ব দেখায়।
অভির দৃষ্টিতে প্রেমের আগুন দেখে দিয়া লাজুক হেসে বলে, “এই একদম ওইভাবে আমার দিকে তাকাবে না।”
অভি জিজ্ঞেস করে, “কেন?”
দিয়া চোখ নামিয়ে বলে, “তোমার চোখের ধাঁধায় হারিয়ে যাই গো।” ওই নিস্পলক দৃষ্টির আগুনে গলতে শুরু করেছিল দিয়ার দেহ, দিয়ার বুকের গহীন কোনা।
দিয়ার দিকে একটু ঝুঁকে বলে, “ইসসস, এইভাবে লজ্জা পেলে, খুব করে একটা চুমু খেতে ইচ্ছে করছে।”
বাইকের পারকিং একটু অন্ধকার, চঞ্চলমতি দিয়া ঠোঁটের ডগায় একটা দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিয়ে অভির দিকে মুখ তুলে ঠোঁট গোল করে বলে, “খাও না, কে বারন করেছে।”
দিয়ার কপালে ঠোঁট ছুইয়ে বলে, “এই খানেই দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি? বাড়ি যাবে না?”
কপালে অভির ভিজে উষ্ণ ঠোঁটের পরশে দিয়া চোখ বন্ধ করে নেয়। যেন কতদিন, যেন এক অনন্ত কাল পরে অভির সাথে দেখা। অভি, দিয়ার কাঁধে হাত রেখে একটু ঘন করে নেয় নিজেদের। আশপাশের বেশ কয়েকজন ওদের দিকেই তাকিয়ে।
দিয়া চোখ মেলে অভির জ্যাকেট টেনে বলে, “চলো” মিচকি হেসে বলে, “আগে জ্যাকেটটা উলটো করে পরো না হলে...”
হেসে ফেলে অভি, “আচ্ছা বাবা”
বাইকে উঠে শরীরের সব শক্তি দিয়ে পেছন থেকে অভিকে দুই হাতে জাপটে ধরে। ইএম বাইপাস ধরে হুহু করে বাইক চালিয়ে দেয়। শীতকালের কনকনে ঠান্ডা হাওয়া আরো বেশি করে শীতল করে দেয় দুটি প্রান। দুই দিন পরে দেখা, তাও আবার বেশির ভাগ সময় এইখানে আসতে যেতে বাইকেই কেটে গেল, ভেবেছিল কোথাও বসবে, অভির কাঁধে মাথা রেখে হাত নিয়ে খেলা করবে, বুকের উষ্ণতা ছাপিয়ে একটু মিষ্টি করে চুমু খাবে ওই সিগারেট খাওয়া পোড়া পুরু ঠোঁটে। যদিও এতদিন সিগারেটের গন্ধ’টা সহ্য হত না দিয়ার, তবে এই একদিনেই কেমন যেন মানিয়ে নিতে শিখে গেছে। দিয়ার অনেক কথা বলার ছিল, ফোনে ঠিক ভাবে সব কিছু বলা যায় না। অভি ফোনের মধ্যে কেমন যেন ফরমাল হয়ে যায়, কেমন আছো, কি খেলে এই সব টুকিটাকি কথাবার্তা ছাড়া বিশেষ কোন কথা এই দুই দিনে হয়নি। ওর বান্ধবী গুলো ঘন্টার পর ঘন্টা নিজেদের বয়ফ্রেন্ডদের সাথে ফোনেই চুটিয়ে আড্ডা মেরে যায়। অভির পিঠের ওপর দিয়ার সুগোল নরম স্তনের উষ্ণ চাপ ধিরে ধিরে বাড়তে শুরু করে। চঞ্চল দিয়ার দুষ্টু কোমল আঙ্গুল গুলো অভির কোমরের কাছে, পেটের ওপর নড়াচড়া করে।
দিয়াকে অসম্ভব রকমের চুপ থাকতে দেখে অভি জিজ্ঞেস করে, “আমার মিষ্টি এত চুপ করে থাকলে একদম ভালো লাগে না।”
দিয়া এতক্ষন অভির পিঠের ওপর নিজের শরীরের ভার দিয়ে এক অনাবিল ভালোলাগার সমুদ্রে ভেসে গিয়েছিল। অভির গলার আওয়াজে সম্বিত ফিরে পেয়ে বলে, “না গো এমনি।”
অভি, “আমার মিষ্টি কথা বলবে, হাসবে তবেই ভালো লাগে।”
মিষ্টি হাসে দিয়া, “আচ্ছা তাই নাকি?” অভির কানেকানে আব্দারের সুরে বলে, “এই শোনো না, তুমি গোঁফ রাখবে?”
হেসে ফেলে অভি, “হটাত এমন আবদার কেন?”
দিয়া, “ম্যানলি লাগে বুঝলে...” বলে ওর কাঁধে একটা ছোট চাপড় মারে।
অভি মাথা দোলায়, “আচ্ছা রাখব, আর কিছু?”
ঘাড়ের ওপর নাক ঘষে বলে, “হ্যাঁ, আরো অনেক কিছু চাই।”
অভি প্রশ্ন করে, “আর কি চাই আমার মিষ্টির?”
দিয়া, “সব সময়ে এইভাবে জড়িয়ে ধরে থাকতে চাই।”
হেসে ফেলে অভি, “আচ্ছা, বেশ।” উষ্ণ রসিকতা করে বলে, “আর আমার কিছু আবদার আছে সেটা রাখবে?”
দিয়া জিজ্ঞেস করে, “কি?”
অভির মাথায় কিছু একটা দুষ্টু ইচ্ছে ছিল, কিন্তু সেটা না বলে বলল, “তুমি নাকে একটা নাকছাবি পড়বে?”
দিয়া হেসে ফেলে, “উম্মম্ম... এটা আমার অনেক দিনের শখ, তুমি বলেছ আমি নিশ্চয় পড়ব।”
রাস্তায় ভীষণ জ্যাম, আজকাল সব মানুষের কাছেই গাড়ি, রাস্তায় মানুষের চেয়ে গাড়ির সংখ্যা বেশি। যশোর রোড পৌঁছাতেই এক ঘন্টা লেগে গেল। বড় রাস্তায় একটা বড় হোটেল দেখে অভি জিজ্ঞেস করে, “কিছু খাবে?”
দিয়া মাথা দোলায়, “আইসক্রিম খাবো।”
অভি হেসে ফেলে, “কোন আইসক্রিম?”
দিয়া প্রথমে কথাটা ঠিক ধরতে পারে না তাই ভুরু কুঁচকে অভির দিকে দেখে বলে, “বাটারস্কচ কোন।”
অভি হেসে ফেলে, “আচ্ছা বেশ।”
দিয়া এবারে জিজ্ঞেস করে, “তুমি কি বলতে চাইছ বলতো?”
অভি চাপা হাসি দিয়ে মাথা নাড়ায়, “না না কিছু না এমনি।”
এবারে দিয়া অভির আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে পিঠের ওপর চাপড় মারতে মারতে বলে, “শয়তান ছেলে, খুব মারবো কিন্তু।”
অভিও হেসে ফেলে, “আরে বাবা, আমি তো এমনি এমনি জিজ্ঞেস করলাম।”
দিয়া, “হ্যাঁ জানি তুমি কি ভেবে জিজ্ঞেস করেছ।” আর দিন দশেক পরেই পঁচিশে ডিসেম্বর। দিয়া আইসক্রিম খেতে জিজ্ঞেস করে, “পারটির কথা কিছু চিন্তা করলে?”
অভি বেমালুম ভুলেই গিয়েছিল তাই মাথা চুলকে বলে, “না সেসব পরে প্লান করা যাবে।”
দিয়া চাপা ধমক দেয়, “আর কিন্তু দশ দিন বাকি। আমি কোনদিন নাইটক্লাবে যাইনি, আমাকে কিন্তু নাইটক্লাবে নিয়ে যেতে হবে।”
দিয়ার উত্তেজনা দেখে অভি হেসে ফেলে, যদিও ভিড় বিশেষ পছন্দ নয় কিন্তু এর হাসিটা অনেক দামী। রাতের আঁধার, নারী পুরুষের উন্মত্ত নাচানাচি, এক নতুন অভিজ্ঞতা, এই সব ভেবেই সায় দিয়ে বলে, “আচ্ছা নিয়ে যাবো।”
অভির কথা শুনে দিয়া নেচে ওঠে, “সত্যি, আমি তো ভেবেছিলাম যে তুমি আবার না করে দেবে।”
দিয়ার চকচকে চোখের দিকে দেখে উত্তর দেয়, “তোমার নরম মিষ্টি ঠোঁটের হাসিটা আমার কাছে অনেক দামী তাই আর না করতে পারলাম না।”
দিয়া নাক কুঁচকে অভির গা ঘেঁসে দাঁড়িয়ে বলে, “অমূল্য, ইসসস, সেটা তো তোমার কাছে।”
গোলাপি জিব দিয়ে ধিরে ধিরে আইসক্রিম কোন চাটে আর বড় বড় ভাসা ভাসা নীলচে আয়ত চোখে একবার অভির দিকে তাকায়। অভির দৃষ্টি, দিয়ার জিবের দিকে নিবদ্ধ। মসৃণ মরালী গ্রীবাতে চকচক করছে একটা সরু সোনার চেন, কামিজের সামনে উঁচিয়ে উন্নত দুই ভারী স্তনের মাঝে এসে দোল খায় চেনের লকেট। কামিজের সামনের দিকটা একটু খানি কাটা, যদিও স্তনের খাঁজ অতটা ভালো ভাবে দেখা যায় না তবুও অভির চোখ যেন খুঁজে নেয় সেই স্তন বিভাজিকার সৌন্দর্য। গলার নিচ থেকে, মসৃণ উপরিবক্ষ অনাবৃত, কোমল ত্বকের ওপরে আলোর ঝলকানি দেখে হারিয়ে যায় অভি। দিয়ার চোখ অভির চোখের দৃষ্টি অনুসরন করতেই কেঁপে ওঠে অজানা উত্তেজনায়। ইসস, এইভাবে তখন থেকে কি দেখে যাচ্ছে? ইচ্ছে করছে, অভির বুকের কাছে দাঁড়িয়ে নিজেকে চেপে ধরতে।
ঠোঁটে দুষ্টু মিষ্টি হাসি মাখিয়ে অভিকে জিজ্ঞেস করে, “এই ভাবে কি দেখছ?”
এইভাবে দিয়া কাছে ধরা পরে যাওয়াতে একটু লজ্জায় পরে যায় অভি। দিয়ার স্তন বিভাজিকা থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে যায় নীলচে চোখের দিকে, “না কিছু না।”
আইসক্রিম খেতে খেতে অভির সামনা সামনি দাঁড়ায়। অভি বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছিল, দিয়া অভির সামনে দাঁড়িয়ে ওর দিকে ঝুঁকে পরে, “এইভাবে দেখো না প্লিজ...” গলাটা আবেগে ধরে আসে দিয়ার। প্রচন্ড কাতুরে হয়ে ওঠে হৃদয়। কেন তাড়াতাড়ি সময় পেরিয়ে যায়?
বাঁ হাতে দিয়ার কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে আনে অভি। বুকের ওপর কোমল স্তন চাপা পড়তেই উষ্ণ স্তন জোড়া কামিজের ভেতর থেকে ছলকে আসার যোগাড় হয়। রাত প্রায় সাড়ে ন’টা তাও এই জায়গায় মানুষের ভিড়। দুই শরীর ধিরে ধিরে এক হতে শুরু করে। দিয়া আইসক্রিম খাওয়া থামিয়ে অভির দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে থাকে। বড় রাস্তায় বাসের আওয়াজ, ট্রাকের আওয়াজ গাড়ির আওয়াজ, কিছুই আর যেন কানের মধ্যে যায় না। বাঁ হাতে খামচে ধরে অভির জামার সামনেটা, টেনে নামাতে চেষ্টা করে অভির মাথা। অভির চোয়াল কেঁপে ওঠে, উষ্ণ কমনীয় দেহপল্লব ওর দেহের সাথে একেবারে মিশে গেছে। বুকের ওপরে দিয়ার হৃদয়ের ধুকপুকানি বেশ বুঝতে পারে। নিজের স্তন জোড়া পিষে ধরে অভির প্রসস্থ ছাতির ওপরে। কঠিন ছাতির পরশে দিয়ার কোমল স্তন জোড়া একটু একটু করে গলতে শুরু করে দেয়, সেই সাথে বুকের রক্তে মাতন লাগে। চোখের তারায় ধিরে ধিরে প্রেমের রঙ লাগে। পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে অভির মুখের দিকে নিজেকে ঠেলে তুলে দেয় দিয়া। ওর পিঠ চেপে ধরে নিজের দিকে শক্ত করে টেনে ধরে অভি। নরম গোল পেট তলপেট সব কিছু মিশে যায় অভির দেহের সাথে। জামা কাপড় ভেদ করে দুই প্রেমঘন যুবক যুবতীর দেহের মাঝে উষ্ণ ধারার আদান প্রদান শুরু হয়ে যায়।
মিহি গলায় ডাক দেয় দিয়া, “অভি...”
গলার আওয়াজে হারিয়ে যায় অভি, “মিষ্টি... তুমি ভারী সুন্দরী গো...”
দিয়ার দেহ অবশ হয়ে আসে, আইসক্রিম কোনটা আলগা হয়ে যায় হাত থেকে। অভির ছোঁয়ায় অসম্ভব জাদু, অনির্বচনীয় আকর্ষণ, সেই টানে সারা না দিলে সারারাত ঘুম হবে না দিয়ার, কিন্তু আসেপাশে লোকের ভিড়। একটু দুরন্তপনা, একটু লজ্জা মিলিয়ে মিশিয়ে আলতো করে অভির গালে ঠোঁট ছুইয়ে দেয়। “উম্মম্ম...”
গালে নরম ভিজে ঠোঁটের পরশ পেতেই আরো বেশি করে দিয়াকে কাছে টেনে ধরে। জনবহুল এলাকা না হলে এতক্ষনে দিয়াকে কোলে তুলে ভিজে রসালো ঠোঁট জোড়া চুম্বনে চুম্বনে নাজেহাল করে দিত। অভি মাথা নিচু করে ছোট চুম্বনটাকে দীর্ঘায়িত করে নিয়ে। ততক্ষনে দিয়ার হাত থেকে আইসক্রিম কোন পরে গেছে, অভির জামা টেনে ধরে ঠোঁটের কোনা কামড়ে ধরে। দিয়ার দেহের শিরা উপশিরা মিলনিচ্ছায় উন্মুখ হয়ে ওঠে।
নিরুপায় অভি দিয়ার চুম্বনের সাড়া দিতে না পেরে কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে, “দুষ্টুমিটা করেই ফেললে...”
হেসে ফেলে দিয়া, “ওই ভাবে তাকিয়ে থাকলে কি আর সামলানো যায় বলো দেখি?”
অভি দিয়াকে নিজের সাথে পিষে ধরে বলে, “এইভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবে, বাড়ি যাবে না।”
এতক্ষন পরে কানের কাছে কেউ জোরে হর্ন মারতেই ওদের সম্বিত ফিরে আসে। দিয়া লাজুক হেসে বলে, “আচ্ছা চলো...”
বাকি রাস্তা কারুর মুখে কোন কথা নেই, নিস্তব্ধ রাতে, একাকী বাইকে জড়াজড়ি করে বসে থাকাতেই অনেক বেশি আনন্দ। দিয়াকে যখন বাড়ি পৌঁছে দেয় তখন রাত প্রায় সাড়ে দশ’টা। গলির সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েছিল অভি, কিছুতেই দিয়াকে ছেড়ে বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছিল না সেদিন। দিয়া গলির শেষ প্রান্তে গিয়ে নিজের বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল, একভাবে দেখে যায় অন্যপ্রান্তে দাঁড়ানো অভির দিকে। হাতের ইশারায় বলে, তুমি যাও। এদিকে অভিও বলে, আগে তুমি বাড়িতে ঢোক তারপর। দিয়া মাথা নাড়িয়ে মিষ্টি হেসে বলে, না আগে তুমি যাও তারপর। অগত্যা অভিকে চলে আসতে হয়।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: চোরাবালি (কালেক্টেড) - by ddey333 - 12-09-2020, 09:45 AM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)