Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.17 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
চোরাবালি (কালেক্টেড)
পর্ব পাঁচ। রাগ অনুরাগ (#6-#31)
অভিও হেসে ফেলে, “কি করবো সুনু।”
দিয়া অভির নাকের ওপর নাক ঘষে মিষ্টি করে বলে, “প্রেম একটু লুকিয়ে চুরিয়ে করতে হয়, বুঝলে বাবু।”
অভি নাক কুঁচকে হেসে বলে, “তোর রূপে তো পাগল হয়ে গেছি রে...” বলেই দিয়াকে টেনে কোলের ওপর বসিয়ে নেয়। মুখের মধ্যে দিয়ার কানের লতি নিয়ে আলতো চুষে মিহি কণ্ঠে বলে, “আজকে তোমার গ্রে সাইড আর দেখা হল না।”
“গ্রে সাইড” এর কথা কানে যেতেই অভির কঠিন বাহুপাশে ভীষণ ভাবে কেঁপে ওঠে দিয়া। ইসস ছেলেটা ওর কানের লতি যেভাবে চুষে দিল তাতেই দিয়ার অঙ্গে অঙ্গে কাঁপুনি দিয়ে এলো। প্রেমঘন মিহি কণ্ঠে বলে, “দুষ্টু শয়তান, একদম না...” বলতে বলতে প্রেমের আবেগে গলা মিহি হয়ে আসে।
বাহুডোর আরো শক্ত করে কোমল দিয়াকে আলিঙ্গনে আস্টেপিস্টে বেঁধে বলে, “কেন না, এই তো খোলা আকাশ আছে, এইখানে দেখাতে দোষ?”
নাআআহহহহহহ... কি ভীষণ দুষ্টু রে বাবা, বলে কি। দিয়া মিহি ধমক দিয়ে বলে, “ওরে শয়তান তোমার গ্রে সাইড তাহলে এটা নাকি?”
অভির কান গরম হয়ে যায়। ক্রমাগত দিয়ার নড়নের ফলে কোমল উষ্ণ নিতম্বের পেষনে শুয়ে থাকা অজগর ফণা তুলে দাঁড়িয়ে পরে। বারেবারে প্রেমিকার উষ্ণ নরম পাছার খাঁজে ঘষা খেয়ে দপদপানি শুরু করে দেয় কঠিন পুরুষাঙ্গ। ওর তীব্র কামঘন স্বপ্ন, নির্জন বালুচরে অথবা নির্জন মাঠে খোলা আকাশের নিচে একাকী প্রেমিকার সাথে কামঘন সঙ্গমে মেতে ওঠা।
নিতম্বের খাঁজে অভির কঠিন লিঙ্গের ধাক্কা বুঝতে পেরে কেঁপে ওঠে দিয়া। কামঘন কণ্ঠে বলে ওঠে দিয়া, “আহহহহহহ... প্লিজ এবারে ছাড়ো, এরপর আর... নাহহ খুব মারবো কিন্তু বুবু...”
কথাটা শেষ করতে দেয় না অভি, গলার ওপর হাত চেপে নিজের দিকে দিয়ার মাথা বেঁকিয়ে দিয়ে রসালো গোলাপি ঠোঁটে আবার ঠোঁট চেপে ধরে। কতক্ষন এইভাবে চুম্বনে আবদ্ধ ছিল তার আর খেয়াল থাকে না। পাগলের মতন একে ওপরের ঠোঁট চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দেয়।
বেশ কিছু পরে অভির তীব্র প্রেম দংশন থেকে নিজেকে মুক্ত করে লাজুক হেসে বলে, “ঠোঁট জোড়া খেয়ে ফেললে যে।”
দিয়াকে আলিঙ্গনপাশে বেঁধে বলে, “যা বাবা, যেটা আমার সেটা তো আমি খাবো।”
দিয়া, ইসসস করে ওঠে। হেসে ফেলে অভির কথা শুনে, “আচ্ছা বাবা, যখন ইচ্ছে তখন খেও।” ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে এবারে সত্যি অনেক রাত হয়ে গেছে। ন’টা প্রায় বাজে। অভিকে বলে, “এবারে কি?”
অভি মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়, “এবারে আর কি। বাড়ি যেতে ইচ্ছুক।”
অভির বুকের কাছে এসে, বোতাম গুলো আঙ্গুল দিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে বলে, “বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে না সোনা।”
অভি হেসে বলে, “আচ্ছা, ঠিক আছে। চলো দেখি কোথায় নিয়ে যাওয়া যায়।”
অভির কথা শুনে দিয়া নেচে ওঠে, “কোথায় নিয়ে যাবে?”
অভি মুচকি হেসে বলে, “চলো না দেখি কোথায় যাওয়া যায়।”
দিয়ার ঠোঁটে দুষ্টুমির এক হাসি খেলে যায়, বুকের রক্তে চুড়ান্ত হিল্লোল দেখা দেয়। ইসস, ছেলেটা কোথায় নিয়ে যাবে? একা একা, নির্জন কোন এক কামরায়, একা অভি একা দিয়া। যেমন ভাবে এই খোলা জায়গায় ওর দেহপল্লব আদর করে ভাসিয়ে দিয়েছে, একা পেলে না জানি কি আর করবে। দিয়াকে নিয়ে বাইকে চড়ে বসল অভি। আসার সময়ে যেভাবে উলটো করে জ্যাকেট পড়েছিল, সেইভাবেই জ্যাকেটটা পরে নিল। দিয়া অভিকে দুই হাতে আস্টেপিস্টে পেছন থেকে জড়িয়ে নিজের কোমল দেহ, পীনোন্নত কোমল স্তন জোড়া অভির চওড়া পিঠের ওপর চেপে ধরে চুপচাপ বসে রইল।
অভির মাথায় অন্য মতলব। রাতের অন্ধকার কেটে মেঠো পথ ধরে এগিয়ে চলে বাইক। এবোড় খাবোড় রাস্তার দুলুনিতে দিয়ার কোমল উষ্ণ স্তন জোড়া আরো বেশি করে অভির পিঠের ওপর চেপে বসে। পিঠের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত দিয়ার দেহের ভার অভিকে পাগল করে তোলে। বড় রাস্তায় এসে বাইক চালিয়ে দেয় বারাসাতের দিকে।
বারাসাতের দিকে যেতেই দিয়া অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, “কোথায় যাচ্ছি?”
অভি মুচকি হেসে বলে, “আরে বাবা, যেখানেই যাবো সেই তো বারাসাত পেরিয়েই যেতে হবে।”
দিয়াও মাথা দুলায়, হ্যাঁ সেটা বটে। কোলকাতার দিকে যেতে হলে বারাসাত পেরিয়েই যেতে হবে। আবার অভিকে জাপটে ধরে প্রেমের আলিঙ্গনে নিজেকে ডুবিয়ে নেয়। দিয়ার হুঁশ নেই অভি কোথায় নিয়ে চলেছে, চোখ বুজে শুধু সেই রাতের স্বপ্নে মশগুল হয়ে যায়। দিয়ার বাড়ির গলির মুখে বাইক দাঁড় করায় অভি। শীতের রাতে গলিটা একটু নির্জন হয়ে গেছে।
দিয়ার বাড়ির গলির সামনে বাইক দাঁড় করিয়ে কাঁধ ঝাঁকিয়ে দিয়াকে বলে, “এই যে এসে গেছি।”
চোখ খুলে বাড়ির গলির সামনে বাইক দাঁড়াতে দেখে দিয়া রেগে যায়, অভির পিঠে দুমাদুম কয়েকটা কিল মেরে অভিমান করে বলে, “এই ছিল তোমার মনে?”
অভি হেসে ফেলে, “মিষ্টি সোনা সাড়ে ন’টা বাজে। এমন কচি খুকির মতন বায়না করতে নেই।”
একটু অভিমান, একটু বিরহ বেদনা দিয়ার বুকের মধ্যে ভর করে আসে। বাইক থেকে নেমে দুম করে অভির হাতে হেলমেট ধরিয়ে দিয়ে বলে, “যাও তোমার সাথে আড়ি।”
অভি হেসে ফেলে, “যা বাবা, একদিনেই প্রেম করলে আর সেইদিনেই আড়ি?”
মুখ ফুলিয়ে রমণী বলে, “হ্যাঁ আড়ি, একশো বার আড়ি। এমন ধোকেবাজ ছেলের সাথে কি কেউ প্রেম করে নাকি?”
দিয়ার হাত ধরে কাছে টেনে বলে, “আচ্ছা বাবা, টুয়েন্টিফিফথ ডিসেম্বর না হয় থারটি ফার্স্ট ডিসেম্বরে সারা রাত পারটি করবো।”
অভির কথা শুনে দিয়া চোখ জোড়া চকচক করে ওঠে, “সত্যি বলছো?”
অভি মাথা দোলায়, “হ্যাঁ।”
ঠোঁট কুঁচকে হাওয়ায় চুমু ছুঁড়ে মিষ্টি হেসে বলে, “ইউ আর মাই সুইট সুইট বুবু সোনা।”
অভি দিয়ার হাত দুটো ধরে বলে, “রাতের বেলা বেশি দুষ্টুমি কর না যেন।”
কথাটা শুনে দিয়া ভীষণ লজ্জা পেয়ে যায়। এমন একটা ভান করে যেন কিছুই জানে না আর অভির কাছে এসে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, “কিসের দুষ্টুমি গো?”
অভি ভুরু কুঁচকে শয়তানি এক হাসি দিয়ে বলে, “আমি সব জানি, আমার লেপে...”
কথাটা কানে যেতেই লজ্জায় দিয়ার কান গাল লাল হয়ে যায়। অভির কাছ ঘেঁসে বুকের ওপর আলতো কিল মেরে বলে, “তুমি না, বড্ড শয়তান।” একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে অভির গালে ছোট একটা চুমু খেয়ে দৌড় লাগায় বাড়ির দিকে। যেতে যেতে অভির দিকে হাত নাড়িয়ে বলে, “ডিনারের পরে ফোন করব।”
দিয়া বাড়ির দরজা পর্যন্ত না যাওয়া পর্যন্ত অভি গলির মুখে দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর বাইক চালিয়ে বাড়ি ফেরে অভি। সারাটা রাস্তা ওর মনের মধ্যে শুধু দিয়া আর দিয়া। প্রথম প্রেমের জোয়ারে ভেসে চলে অভির হৃদয়। বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত দশ’টা বেজে যায়। বাড়ি ফিরে দেখে যে তখন বড়মা খায়নি, ওর জন্য বসে আছে।
অভিকে দেখে দীপাদেবী প্রশ্ন করেন, “এত রাত হয়ে গেল একটা ফোন করে দিতে পারতিস।”
বড়মাকে ফোন করার কথা একদম মনে ছিল না অভির তাই মাথা চুলকে অপরাধীর মতন এক হাসি হেসে বড়মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “সরি।”
দীপাদেবী ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে সস্নেহে জিজ্ঞেস করেন, “কিছু খেয়েছিস কি বাইরে?”
অভি মাথা নাড়ায়, “না।”
দীপাদেবী মাতৃসুলভ এক মিষ্টি ধমক দেন ছেলেকে, “কি যে করিস না। এতক্ষন না খেয়ে ছিলি?”
অভি একটু হেসে উত্তর দেয়, “না মানে ওই জমির দিকে গেছিলাম তাই আর কোথাও খাওয়া হয়নি।”
দীপাদেবী রান্নাঘরে যেতে যেতে ছেলেকে বলেন তাড়াতাড়ি যেন জামা কাপড় ছেড়ে হাত মুখ ধুয়ে খেতে চলে আসে। খাওয়া দাওয়ার পর অভি ল্যাপটপ খুলে বসে পরে, এবারে চাকরি খোঁজা বড় দরকার, না হলে বড়মা কিছু করতে পারবেন না। চাকরির বিভিন্ন ওয়েবসাইট খুঁজে খুঁজে নিজের রিসিউম আপলোড করে দেয়, সেই সাথে বেশ কয়েকটা কোম্পানি খুঁজে এপ্লিকেসান ইমেল করে দেয়। রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে পারটির প্লান করে। সবার আগে দেবশিস বাবুকে ফোন করে জানতে হবে যে বাড়ি পাওয়া যাবে কি না, যদি দুই দিনের মধ্যে একদিনও ফ্লাট খালি না পায় তাহলে পারটি করতে পারবে না। ঝন্টুকে ডাকবে কি ডাকবে না সেই দ্বিধায় পরে যায়। ওদের কি এখনি জানানো উচিত? জানালে ক্ষতি নেই। অনিমেশ কে ডাকবে ভেবে রেখেছে, চাকরি পেয়ে অনিমেশ নতুন প্রেম করছে। অভির মন একটু পরে আনচান করে ওঠে, মোবাইল ফোন কেন বাজে না? বাড়ি গিয়ে দিয়ার কি হল? খাওয়ার পর একটা ফোন করতে পারে না নাকি? এপাশ ওপাশ খুঁজে পেতে ফোন খুলে দেখে যে ফোনে চারজ নেই, কখন চারজ চলে গেছে জানতেই পারেনি। মেরেছে রে, যদি দিয়া ফোন করে থাকে আর ফোন না পায় তাহলে কপালে দুঃখ আছে। ফোন চারজে লাগানোর মিনিট তিনেক পরেই দিয়ার ফোন এলো।
ফোন তুলেই গালাগালি শুরু, “কোথায় মরতে গিয়েছিলে? ফোনে চারজ দিতে পারো না?”
অভি হেসে ফেলে, “না মানে মনেই ছিল না ফোনের কথা।”
দিয়া, “হুম বুঝলাম। খাওয়া হল...”
অভি, “হ্যাঁ, তোমার?”
দিয়া, “আচ্ছা, আমরা কি সেদিন ডিস্কোথেক যাবো?”
বেশি ভিড় অভির একদম পছন্দ নয়, সেদিনে দিয়াকে শুধু নিজের মতন করেই পেতে চায় তাই উত্তর দেয়, “না দিয়া, ডিস্কোথেক নয়।”
দিয়া মুখ ব্যাজার করে বলে, “যা, তাহলে? আমি ভাবলাম ডিস্কো অথবা নাইটক্লাবে নিয়ে যাবে, সারারাত উদ্দোম নাচানাচি করব, খুব ড্রিঙ্ক করব আর মস্তি করব ভেবেছিলাম।”
অভি হেসে ফেলে, “আমার বেশি ভিড় পছন্দ নয়। তা তোমার ইচ্ছে হলে যেতে পারি।”
দিয়া মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, “সে ডিস্কো হোক আর ফাঁকা মাঠ হোক, তুমি পাশে থাকলে সব জায়গায় যেতে পারি।”
কথাটা শুনে এক ভীষণ ভালোলাগায় অভির বুক ভরে আসে, “আমি দেখছি কোন বন্ধুর খালি ফ্লাট পাওয়া যায় কি না, তাহলে বেস্ট হবে।”
কথাটা শুনে দিয়ার চোখ জোড়া চকচক করে ওঠে, “আচ্ছা, দুষ্টু ছেলে, খালি ফ্লাটে পারটি করবে? কে কে যাবে? লেখাকে ডাকবে?”
অভি একটু চিন্তা করে বলে, “ঝন্টুকে কি এখনি জানাবো, সেটাই একটা প্রশ্ন।”
দিয়া মিষ্টি হেসে বলে, “লেখা যদি কাল ফোন করে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করে তাহলে আমি কিন্তু কিছুই লুকিয়ে রাখতে পারবো না।”
অভি হেসে ফেলে, “আচ্ছা বাবা, তাহলে ঝন্টুকে ডেকে নেবো। আর দেখি আমার কয়েকজন বন্ধুরা হয়ত আসতে পারে।”
দিয়া প্রশ্ন করে, “আমি কি আমার এক বান্ধবীকে ডাকতে পারি?”
অভি, “হ্যাঁ নিশ্চয় ডাকতে পারো, তবে যারাই আসবে তাদের কিন্তু রাতে থাকার জায়গা দিতে পারবো না বলে দিলাম।”
দিয়া গলা নামিয়ে দুষ্টুমি ভরা কণ্ঠে বলে, “কেন কেন, আমার সাথে তুমি কি করবে?”
অভির কান লাল হয়ে যায় দিয়ার ফিস ফিস কন্ঠ শুনে, তাই দিয়াকে একটু খেপানোর জন্য বলে, “কেউই রাতে থাকবে না। পারটি শেষে যে যার বাড়ি ফিরে যাবে, তুমি তোমার বাড়ি আমি আমার বাড়ি।” বলেই হেসে ফেলে।
এইভাবেই ইত্যাদি মিষ্টি মধুর আলাপে বেশ কিছু সময় কেটে গেল।
সেদিন ডিনারে দিদিভাইয়ের সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা। এর মাঝে দিন দুই অভির আর দিয়ার সাথে দেখা করা হয়নি। অভির দেখা করার ইচ্ছে একদম ছিল না সেটা নয়, তবে তিন দিনের মধ্যে সবার কাছেই এইভাবে জানাজানি, যেন সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি ঘটে চলেছে এটা ভেবেই আর অভি দিয়ার সাথে দেখা করতে যায়নি। বাড়ির কাজ নিয়ে আর এই চাকরির কল নিয়েই ব্যাস্ত ছিল। যে কটা চাকরির কল আসে, সব বাইরের না হয় মারকেটিং এর। বেশ চিন্তায় পরে যায়, এইভাবে বেশি দিন বসে থাকতে একদম ভালো লাগে না, মনে হয় যেন অকর্মণ্য হয়ে পড়েছে। বড়মা হাল ছাড়েন না, ছেলের শুকনো মুখ দেখে ছেলেকে আস্বস্থ করে বলেন যে সব কিছুর একটা সময় হয় তখন হয়, অভি যে একদম না খুঁজে বসে আছে সেটা নয়।
সেদিন সকালে দিদিভাই ফোন করেছিল ডিনারের জন্য, আর সেই সাথেই অভি দিয়াকে জানিয়ে দিয়েছিল। দিয়া উভয়সঙ্কটে পরে যায়, অভির কথা অমান্য করলে অথবা ওর দিদিভাইয়ের সাথে দেখা না করলে খুব খারাপ হবে, কিন্তু সেই সাথে এইভাবে দেখা করাটা কি ঠিক হবে? কয়েকদিন আগেই অভির মা যেমন ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিলেন তাতে বেশ ভাবনায় পরে গিয়েছিল। অভির দিদি আবার কি জিজ্ঞাসা করবে সেটাই চিন্তা। তবে এই বিয়ের কয়দিনে ওর দিদিকে বেশ হাসিখুশি বলেই মনে হল। মনে তো হয় না ওদের বিপক্ষে কিছু বলবে। অনেকক্ষণ ভাবনা চিন্তা করার পরে দিয়া মেনে যায় অভির দিদির সাথে দেখা করার জন্য। অভি জানিয়ে দেয় বিকেল পাঁচটার মধ্যে ওকে নিতে আসবে। অভির ফোনের পর থেকেই দিয়া ব্যাস্ত হয়ে পরে। আগেরবারের মতন দিয়ার গলির বাইরে পৌঁছে দিয়াকে ফোন করার কিছুক্ষনের মধ্যে দিয়া বেড়িয়ে আসে। সেদিন আর বেশি দেরি করেনি তবে হলদে রঙের সালোয়ার কামিজে ভারী সুন্দর লাগছিল দিয়াকে।
বাইকে উঠে বসতেই প্রশ্নের ঝড়, “দুইদিনে কি দেখা করার সময় পাওনি? এত কি কাজ তোমার? আমার কথা একদম মনে পড়ে না তাই না?”
অভি হেসে ফেলে, “আরে বাবা, কাজ ছিল।”
দিয়া ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “এমন কি কাজ? অফিসে এখন জয়েন করোনি। এরপর তো অফিস করলে আমাকে ভুলেই যাবে।”
অভি হেসে ফেলে, “না রে বাবা।”
পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা আমাকে কেমন লাগছে বললে না তো?”
অভি মুচকি হেসে বলে, “খুব সুন্দরী লাগছে।”
দিয়া মুখ বেঁকিয়ে বলে, “ওই আমি জিজ্ঞেস করলাম তাই বললে।”
অভি মহা মুশকিলে পরে যায়, “তুমি সবসময়ে সুন্দরী, সোনা।”
কথাটা শুনে দিয়ার একটু মন খারাপ হয়, মেয়েরা নিজেদের সৌন্দর্যের পরিমাপ যদি প্রেমিকের কাছে না শুনতে পারে তাহলে তাদের ঘুম আসে না। মুখ বেঁকিয়ে অভিকে আলতো ধাক্কা মেরে বলে, “যাও আর কথা বলবো না তোমার সাথে।”
অভি মনে মনে হেসে ফেলল, বুঝতে পারলো যে ললনার মান অভিমানের পালা এবার থেকে সামলাতে হবে, তৈরি থাকতে হবে অনেক কিছুর জন্য।
বেশ কিছু পরে দিয়া জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা তোমার দিদি আমাকে কি কি জিজ্ঞেস করবে?”
অভি উত্তর দেয়, “তুমি ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছও নাকি? দিদিভাই দিল্লী চলে যাবে তাই তার আগে একবার শুধু দেখা করতে চেয়েছে।”
দিয়া হেসে ফেলে, “না বাবা, বড্ড ভয় করে, যেভাবে সেদিন মাসিমা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দিয়েছিলেন কি বলব।”
অভি হেসে ফেলে, “আরে বাবা সেই সব একদম ভেবো না। দিদিভাই এমন কিছুই জিজ্ঞেস করবে না।”
দিয়া হাসে, “হ্যাঁ সেটা বুঝে গেছি যে তোমার দিদিভাই। তোমরা ভাই বোন দুইজনেই সমান, খুব কম কথার মানুষ।”
হ্যাঁ সেটা সত্যি, দিদিভাই চেনা জানা মানুষ ছাড়া বেশি কথা বলে না। অভি ছোট এক উত্তর দেয়, “হুম”
শীতকালে বাইকে বসে ঘুরতে যাওয়া একটা বড় সমস্যা, ঠান্ডা হাওয়ায় শরীর কাঁপিয়ে দেয়। আর ছেলেটা যেরকম ঠান্ডা স্বভাবের, ভাবতে ভাবতে দিয়া আপনমনে হেসে ফেলে। একবার হাতের নাগালে পেলে, এই ঠান্ডা বরফকেও গলিয়ে দেবে। দিয়াই চুপ করে বসে থাকার মেয়ে নয় তাই কথা শুরু করে, ওদের কলেজের গল্প, ছোট বেলার গল্প। বাইকে আওয়াজে আর মাথায় হেলমেট থাকার ফলে, অর্ধেক কথা অভির কানে যায়, অর্ধেক যায় না। তবে দিয়ার নরম উষ্ণ আঙ্গুল ওর পেটের ওপরে যেভাবে দুষ্টুমি করছে সেটা ভালো ভাবেই টের পেয়ে যায়। বাইকে ওঠার সময়েই দিয়ার আদেশে জ্যাকেট উলটো করে পরে নিয়েছিল, তাতে অভিকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরতে বেশ সুবিধে হয়েছিল দিয়ার।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: চোরাবালি (কালেক্টেড) - by ddey333 - 12-09-2020, 09:42 AM



Users browsing this thread: 17 Guest(s)