Thread Rating:
  • 32 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
মহানগরের আলেয়া
রক্তের খেলা (#৫)

দানার লোকজনকে নিতাই ঠিক ভাবে চেনেই না, চেনার কথাও নয়। তাই ওর বেশ সুবিধে হয়। আকরাম নাসির শক্তি বলাই এমন আরও অনেক জনকে পালা করে নিতাইয়ের পেছনে লাগিয়ে দেয়। নিতাই যেহেতু সবসময়ে বাপ্পা নস্করের সাথে সাথে থাকে সুতরাং ওকে চিনতে কারুর কষ্ট হয় না। পানের দোকানে, চায়ের দোকানে মদের আড্ডায় নিতাইকে অনুসরন করতে নির্দেশ দেয় দানা। নিজেদের কথার ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মাঝে নয়না আর বিমানের গোপন সম্পর্কের ব্যাপারে বলতে নির্দেশ দেয়। ভুপেন দানাকে জানায় যে নিতাইয়ের কানে যে খবর পৌঁছাতে চেয়েছিল দানা সেটা শুধু মাত্র পৌঁছায়নি, একেবারে মজ্জাগত হয়ে গেছে, তবে নিতাই নিজে থেকেই নয়নার ওপরে নজর রেখে চলেছে। সত্যতা যাচাই না করে বাপ্পা নস্করকে খবর দিতে চাইছে না। বড় মুশকিল হয়ে গেল। বাপ্পা নস্করের কানে খবর না পৌঁছালে ওর মাথায় রক্ত কি করে চড়বে? দানার পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ভেস্তে যাবে। এইখানে ইন্দ্রনীল সাহায্য করতে পারে হয়তো।

মহুয়াকে বুঝিয়ে বলে যে একবার অন্তত নয়নার সাথে দেখা করতে হবে ওকে। দেখা করে নিজেদের কিছু একান্ত মিলনের সহবাসের ছবি তুলতে চায়। আর সেই ছবি ইন্দ্রনীলের সাহায্যে বাপ্পা নস্করের কাছে পৌঁছে দিতে চায়। মহুয়া একটু মনঃক্ষুণ্ণ হলেও জানে ওর ভালোবাসা ওর কাছেই ফিরে আসবে তাই গররাজী হয়েও সম্মতি দিয়ে দেয়।

বেশ ভুষা বদলে নার্সিং হোমে গিয়ে দেখে অবশেষে ফারহান চোখ খুলেছে। জারিনার খুশির জোয়ার দেখে কে, দানা মহুয়াকে দেখে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে। ফারহানের মা স্বস্তির শ্বাস নেয় অবশেষে। এমত অবস্থায় ওকে বলা যাবে না কে ওকে মারার চেষ্টা করেছে, কারন ফারহান এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেনি।

দানা ওর পাশে বসে কানেকানে বলে, "কি রে বোকাচোদা কতদিন এই ভাবে শুয়ে থাকবি তুই? বিয়ে করতে হবে না? জারিনাকে চুদতে হবে, লিঙ্গ চোষা শেখাতে হবে আরো কত কি বাকি আছে রে, শালা হারামি। ওঠ তাড়াতাড়ি ওঠ।"

কোনরকমে হেসে ফেলে ফারহান, "বাঁচিয়েই আনলি তাহলে বল।"

ওর ক্ষীণ কণ্ঠস্বর শুনে দানার চোখ ফেটে জল চলে আসে। কানেকানে বলে, "কুত্তা, তোর জন্য নয়, জারিনার জন্য তোকে ফিরিয়ে এনেছি, না হলে শালা আমি নিজে হাতে তোকে মেরে ফেলতাম।"

নারসিং হোমে একটা খুশির আমেজ। ডক্টর মানস সোম আর ডক্টর অভিজিৎ ভুঁইয়া জানিয়ে দিয়েছেন ফারহানের সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরো দিন দশেক লাগবে, তারপরে যদি স্বাস্থের উন্নতি হয় ছেড়ে দেবেন। দানা ডাক্তারদের অশেষ ধন্যবাদ জানায়।

এর মাঝে বিমান চন্দের সাথে অথবা মোহন খৈতানের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়নি দানার। কাজে যেতে পারেনি বেশ কয়েকদিন। নার্সিং হোম থেকে বেড়িয়ে সোজা কাজের জায়গায় চলে আসে। মহুয়া আর রুহি নার্সিং হোমে থাকে। মনা আর পিন্টুকে বারেবারে বলে দেয় যেন এক বিন্দুর জন্যেও মহুয়া আর রুহিকে চোখের আড়াল না করে। মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয় মনা আর পিন্টু, যদি একটা মশা পর্যন্ত কাছে আসে তাহলেও তাকে মৃত্যু বরন করতে হবে।

নয়না নতুন সিনেমার কাজে বেশ ব্যাস্ত, কিন্তু ওর সাথে দেখা করা খুব জরুরি। দানা কোনোদিন নিজেদের একান্ত মুহূর্তের ছবি তোলেনি তবে এই বারে তুলতে হবে নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য।

নয়নাকে ফোন করে দানা, জানায় একবার দেখা করতে চায়। কারন জানতে চাইলে জানায়, এই বাপ্পা নস্করের ব্যাপারে একটু কথা বলতে চায়। নয়নাকে এই কয়দিনে মোহন খৈতান আর বিমান চন্দ সমানে কড়া কথা বলে তিতিবিরক্ত করে দিয়েছে। নয়নাকে প্রবোধ দিয়ে বলে, ওদের শান্ত করতে।

সন্ধ্যের পরে দানা, নয়নার বাড়িতে পৌঁছায়। এতো কিছু ঘটে যাওয়ার পরে নয়না ঠিক ভাবে দানাকে বিশ্বাস করতে পারে না, আর সেটা দানা বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পারে।

দানা ওর চোখের ওপরে চোখ রেখে মৃদু হেসে জিজ্ঞেস করে, "বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তাই না, নয়না?"

ধূর্ত নয়না মিচকি হেসে বলে, "হ্যাঁ, সেটা বটেই। তুমি কি চক্রান্ত করছ সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।"

দানা মাথা নাড়িয়ে চোখ টিপে বলে, "আমি আজকে একটু তোমাকে একা পেতে এসেছি।"

নয়না হাঁ করে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে, "কেন মিসেস কোথায়?"

দানা বাঁকা হেসে সিগারেট ধরিয়ে মাথা চেপে বলে, "ধুস শালা সব দিন এক ক্যাচাকেচি। আর ভালো লাগে না বুঝলে। বাড়িতে সিগারেট খাওয়া চলবে না, সাইট থেকে ঠিক সময়ে বাড়ি ফিরতে হবে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারা চলবে না..... ইত্যাদি ইত্যাদি। আর ঠিক তাল মেলাতে পারছি না নয়না।"

নয়না ওর পাশে এসে বসে বলে, "ভেতরে যাবে?"

নয়নার পাতলা কোমরে হাত রাখে দানা, কাছে টেনে বলে, "হুইস্কি আছে, না তুমি নেশা চড়াবে?"

নয়না ওর কাছে ঘন হয়ে এসে বলে, "কোন নেশা ঠিক চাও, আমাকে না হুইস্কি? সেদিন মোহনের বাগান বাড়ি থেকে আসার সময়ে ভাবলাম তুমি গাড়িতে কিছু করবে কিন্তু এত ঠাণ্ডা দেখে মনে হল তুমি অন্য দানা।"

ওর গালে টোকা দিয়ে বলে, "দানা সেই আগের মতন আছে নয়না শুধু সময় বদলে গেছে।"

নয়না হেসে বলে, "আচ্ছা তাই নাকি?"

দানা হেসে বলে, "হুম। জানো বাপ্পা নস্কর এখন আমার বাড়ির ওপরে নজরদারি রেখেছে।"

নয়না অবাক হয়ে যায়, "তোমার বাড়ির ওপরে, কেন?"

দানা দাঁতে দাঁত পিষে বলে, "শালাকে বলে দিলাম যে আমি ওর গোপন খবর জানি, কোথায় কি কি কুকর্ম করেছে সেটা সব জানি।" তারপরে সঙ্গে সঙ্গে হেসে বলে, "যদিও আমার কাছে কোন তথ্য প্রমান নেই তবুও ওর দিকে তেড়ে যেতে দোষ কি? তাই না বল। যেমনি বলা তেমনি কাজ, দেখ প্রথম দিনে কত তড়বড়িয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিল শালা মাদারচোদ আর তারপরে একদম চুপ মেরে গেছে।"

নয়না ওর কানেকানে ফিসফিস করে বলে, "চল তাহলে রাতে একটা ভালো হোটেলে যাই, ডিনার করব আর তারপরে কামরায় একসাথে....." চোখ টিপে বলে, "মিসেস কে কি বলবে?"
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মহানগরের আলেয়া - by Mr Fantastic - 09-09-2020, 11:31 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)