07-09-2020, 11:18 AM
[[১৪]]
যথা সময়ে মৃত দেহের সৎকার হবে,তাই সেই প্রস্তুতি চলছে। আক্কেল আন্টিকে দেখার মত না কেঁদে কেঁদে চোখ দুটো জবা ফুলের মত লাল করে ফেলেছে।আর অনামিকার অবস্থা তো আরো খারাপ,কে ওর সাথে দুষ্টুমি করবে,কে ছুটকি বলে ডাকবে এসব প্রলাপ বকে কেঁদে চলেছে।আমাকে মিঠুর কাছে রেখে বাবা অরুর বাবার কাছে গেল।একটু পর আসলে জানতে পারলাম এখনই শ্মশানের উদ্দেশ্যে বের হবে।কিন্তু যে কথাটা শুনে আরো কষ্ট পেলাম সেটা হলো আমাদের আর ওদের একই শ্মশান,আর সেটা আমাদের এলাকার ভিতর অর্থাৎ যে অরুর বউ হয়ে আমার এলাকায় যাবার কথা ছিলো সে লাশ হয়ে যাবে আমার বাড়ির সামনে দিয়ে।
তারপর সবাই মিলে আমার অরুকে শ্মশানে নিয়ে গেলো। আমিও গেছিলাম সাথে সর্বক্ষণ বাবা আর মিঠু ছিলো,যদি আমি কিছু করে বসি সেই ভয়ে।আমি দূরে বসে আছি আর আমার ভালবাসা চিতার আগুনে জ্বলতেছে দাউ দাউ করে।সে আগুনে যেন আমার হ্নদয়টাও পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।একসময় সব শেষ হয়ে গেল পরে রইল শুধু ছাই।সবার অলক্ষ্যে আমি সেদিন এক মুঠো চিতা ভম্ম নিয়েছিলাম।
বাসায় ফিরতে বিকাল হয়ে গেল,এসে বাথরুমে ঢুকলাম শাওয়ারের জলে চোখের জল মিশিয়ে স্নান সারলাম।সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি খাওয়ার ইচ্ছাও নাই তবুও মা জোর করে মুখে তুলে অল্প খাইয়ে দিলো। আজকের দিনে আমাদের সাত জন্মের বাঁধনে বাঁধা পরার কথা ছিলো।অথচ কি থেকে কি হয়ে গেল।
আজ পূর্নিমা আকাশে চাঁদের উজ্জ্বল প্রকাশ,আমি ছাদে যেতে চাচ্ছি মা বাবা কিছুতেই যেতে দিবেনা।উনাদের ভয় যদি আমি কিছু করে বসি।অনেক বুঝিয়ে অরুর দেওয়া পাঞ্জাবিটা গায়ে দিয়ে আর শ্মশান থেকে আনা চিতা ভম্ম নিয়ে ছাদে গেলাম।ছাদে উঠে মনে হলো তারারা আজ যেন বেশি উজ্জ্বল হয়ত আমার অরু কে পেয়ে ওরা আনন্দে মেতেছে,অথচ আমার আলো সব নিভে গেছে।অরুর চিতা ভম্মটা কিছুটা পাঞ্জাবীতে মাখালাম তারপর বসে বসে চাঁদ দেখছি,পাঞ্জাবি আর ভম্ম থেকে অরুর শরীরের মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি। যেন অরু আমার সাথেই আছে।
কিছুদিন আর অফিস যাইনি,কোন কিছুতে আর ভালো লাগা কাজ করেনা।নিজেকে ঘর বন্দী করে ফেললাম,কিন্তু তাতে কষ্ট কমবার থেকে বাড়ছে।সবার পরামর্শে অফিসে যাওয়া শুরু করলাম,কাজে ডুবে থাকলে ভালো লাগবে এই ভেবে।মাঝে মাঝে শ্মশানে যাই,অরুর সাথে কথা বলি আপন মনে।না আর এখানে থাকা যায় না,অরুকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারিনা।ওর স্মৃতি আমার পিছু ছাড়েনা।অফিসের চুক্তি অনুসারে দু বছর জব করে।সব ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিলাম।
তারপরের সব ঘটনাই তো তুমি জানো সারা!!
আমার বলা শেষ হতেই কাঁন্নায় ভেঙ্গে পরলো সারা,আমারও নেশার ঘোর কেটে গেছে নিজেও অশ্রুসিক্ত!ওদিকে একই ভাবে কেঁদে চলেছে সারা।আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম শান্ত হও সারা।দেখো আমি নিজেই আর এখন কাঁদিনা।আমার সান্ত্বনাতে আরো জোরে কেঁদে উঠলো,আর কাঁদো কাঁদো কন্ঠেই বললো,স্যার আপনার মনে এতো কষ্ট এটা আগে কখনো বুঝতে পারিনি।আপনার মত এতো গভীর ভাবে ভালো বাসতেও কখনো কাউকে দেখিনি।যতো দিন বাঁচবো আপনি আর অরু ম্যাডামকে কখনো ভুলবো না।কিন্তু স্যার ম্যাডামের কি হয়েছিলো সেদিন??
সেটা আমি তখন জানতে পারিনি,পরে অরুর বোন অনামিকার কাছ থেকে জেনেছিলাম সেদিনের ঘটনা,এমনিতে তো অরু সেদিন সন্ধ্যাবেলা অসুস্থ ফিল করছিল তাই ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরে সেটা তোমাকে আগেই বলেছি।তারপর রাতে আমি কল করার আগে ওর ঘুম ভাঙ্গে তখন একটু ভালো ফিল করছিলো,অরুর মা অর্থাৎ আন্টি ভাবছিলো অরু অনেকদিন যাবত ভালোই আছে কিন্তু এই বিয়ের ব্যাপার গুলো নিয়ে ভাবতেই হয়ত টেনশনে শরীরটা আবার খারাপ করছে,সেদিন রাতেই আন্টি আক্কেল কে আমার আর অরুর ব্যাপারে বলে,সব শুনে আঙ্কেল একটু রাগারাগি করে তার মেয়ে এমন প্রেম করে বিয়ে করবে সেটা তার পছন্দ না,তার স্বভাব অনুযায়ী আন্টিকে একটু বকাবকি করে।ঠিক সেই সময় অরু ওয়াশরুমের দিকে আসে সাথে অনামিকাও ছিলো,আর বাবা মায়ের কথা তার কানে যায়।এসব শোনা মাএই অরু ছুটে নিজের রুমে চলে যায়। অনামিকা সাথে গেলেও অরু ওকে বলে বাইরে যেতে ও একটু রেস্ট নিবে।অনামিকা যখন বাইরে আসে আর মা বাবার পরবর্তী কথা শোনার জন্য দরজার বাইরে দাঁড়ায়।তখন ওর বাবা ডাঃ এর সাথে কথা বলছে ফোনে মেয়ের বার বার এমন হবার কারণ জানতে,ডাঃ ও অরুর বাবাকে বলে,দেখেন এমনিতে অরু মামনির শরীরে কোন সমস্যা নাই,জাষ্ট ওর খাবারের প্রতি ইন্টারেষ্টটা কম,সে জন্য আমি মেডিসিন দিতে পারি।কিন্তু আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি যে অরু যখন কোন কিছু নিয়ে উত্তেজিৎ অথবা টেনশন করে ওর এই সমস্যটা বেশি হয়।তাই আমি সাজেস্ট করবো,ওর মনের উপর বেশি চাপ না দিতে।আর ভালো ছেলে দেখে বিয়েও দিতে পারেন হয়ত ভালো সঙ্গী পেলে অনেক রিলিফ পাবে।অথবা আপনারা ওর সাথে খোলামেলা কথা বলুন যে ও কি চায়,ওর কোন গোপন সমস্যা কিংবা কোন এফেয়ার আছে কিনা।দেখুন ও যেটাই বলুক রাগ করবেন না,আজ কাল এ্যাফেয়ার থাকাটা দোষের কিছু না।আর যদি সেটা থাকে আর ছেলে ভালো হলে আমি বলবো যতো তাড়াতাড়ি পারেন ওদের সাহায্য করুন বাবা না বন্ধু হিসেবে।
ডাঃ এর সাথে কথা বলার পর আঙ্কেল আমার সম্পর্কে জানতে চায় আন্টির কাছে।আন্টি সব বলে,আর সব শুনে আঙ্কেল আমাদের বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায় কারণ যোগ্য পাএ হিসেবে আমি কোন অংশে কম না।এটা শোনার পর অনামিকা ছুটে যায় ওর দিদির কাছে এই সু-সংবাদ দেবার জন্য,কিন্ত গিয়ে কয়েকবার ডেকেও অরু সারা দেয়না,আর দেখে অরু কাঁপতেছে,ও তখন চিৎকার করে ওর বাবা মা কে ডাকে,তারপর হাসপাতাল, অরুর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো তাই অক্সিজেন দেওয়া হয় কিন্তু ভোরের দিকে ও সেটাও আর নিতে পারছিলো না।তারপর কি হলো সবটাই শুনলে তুমি সারা!!আমার ধারণা ও অতিরিক্ত টেনশন, সাথে নিজের অসুস্থার জন্য এমনটা হয়েছে।তাছাড়া অরু যদি আঙ্কেল আন্টির সম্পূন কথা শুনতো তাহলে হয়তো আজ আমি আর অরু একসাথে থাকতাম!!
আমার কি কপাল দেখছো সারা,ছেলে মেয়ে রাজী পরিবারের সবাই রাজী কিন্তু একসাথে থাকাটা হলোনা। জানো সারা সেই ভম্ম মাখা নীল পাঞ্জাবিটা আমার কাছে এখনো আছে।আজ পর্যন্ত ওটা আমি পরিস্কার করিনি,কারণ তাতে আমার অরুর স্পর্শ যে ধুয়ে যাবে।রোজ পূর্নিমা রাতে ওটা আমি গায়ে দিয়ে একা একা অরুর সাথে কথা বলি।আমার কোন নেশা নেই সারা শুধু পূর্নিমা কবে আসবে সেই নেশায় বুদ হয়ে থাকি।
-থাক স্যার প্লিজ!!আর বলবেন না,আমি আর শুনতে পারছিনা!!
-আমিও এক দ্বীর্ঘশ্বাস ছেড়ে। একটা সিগারেট ধরলাম।সারা!!
-হা স্যার বলুন!??
-আমার একটা উপকার করবে??ওর উত্তরের আশা না করেই বললাম।আমি আর এখানে থাকবো না।একটু কষ্ট করে কালকেই একটা বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিবে। আর আমি কাল সকালেই অফিসে যেয়ে রিজাইন লেটার টা দিয়ে আসবো।
-একি কি বলছেন স্যার!আপনি সত্যি চলে যাবেন??তাহলে আমার যে খুব খারাপ লাগবে স্যার।
-তুমি খুব ভালো মেয়ে সারা! কিন্তু তুমি সবই শুনলে আমার বাধাটা কোথায়।সো প্লিজ আর কিছু বলোনা।কত বছর দেশে যায়নি,মা বাবা আর কি দোষ করেছে বলো!!??
-আমি জানি আমি আপনাকে আটকাতে পারবো না।কিন্তু যাবার আগে একটা জিনিস চাইবো দিবে শুভ!!
-সারার মুখে আমার নাম শুনে একটু অবাক হলাম।গত চার বছর ধরে অকে বলে আসছি বাসায় স্যার বলবে না।শুনলো না আজ নাম ধরছে,একটু বেশিই অবাক হলাম!!
-কি দিবে না শুভ??
-হুম বলো কি চাই।দেবার মত কি আছে আমার?যদি থাকে দিবো। কিন্তু প্লিজ এমন কিছু চেয়ো না যেটা অন্য কাউকে ভাগ দিতে পারবো না !!
-না তেমন কিছু চাইবো না।আর অরু ম্যাডামের মত ভাগ্যবতীও আমি না।আর আমি অরু ম্যাডামের ভালবাসায় ভাগও বসাতে চাইনা!!বলে একটু থামলো সারা,আমার কাছে একটু সরে এসে বললো, আমাকে একটা শুভ দিবে??
-আমি বুঝতে না পেরে।সারার দিকে তাকিয়ে থাকলাম!?
-বুঝলে না তাই তো??আমায় একটা বাচ্চা দিবে??করুণ ভাবে বললো সারা!!
যথা সময়ে মৃত দেহের সৎকার হবে,তাই সেই প্রস্তুতি চলছে। আক্কেল আন্টিকে দেখার মত না কেঁদে কেঁদে চোখ দুটো জবা ফুলের মত লাল করে ফেলেছে।আর অনামিকার অবস্থা তো আরো খারাপ,কে ওর সাথে দুষ্টুমি করবে,কে ছুটকি বলে ডাকবে এসব প্রলাপ বকে কেঁদে চলেছে।আমাকে মিঠুর কাছে রেখে বাবা অরুর বাবার কাছে গেল।একটু পর আসলে জানতে পারলাম এখনই শ্মশানের উদ্দেশ্যে বের হবে।কিন্তু যে কথাটা শুনে আরো কষ্ট পেলাম সেটা হলো আমাদের আর ওদের একই শ্মশান,আর সেটা আমাদের এলাকার ভিতর অর্থাৎ যে অরুর বউ হয়ে আমার এলাকায় যাবার কথা ছিলো সে লাশ হয়ে যাবে আমার বাড়ির সামনে দিয়ে।
তারপর সবাই মিলে আমার অরুকে শ্মশানে নিয়ে গেলো। আমিও গেছিলাম সাথে সর্বক্ষণ বাবা আর মিঠু ছিলো,যদি আমি কিছু করে বসি সেই ভয়ে।আমি দূরে বসে আছি আর আমার ভালবাসা চিতার আগুনে জ্বলতেছে দাউ দাউ করে।সে আগুনে যেন আমার হ্নদয়টাও পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।একসময় সব শেষ হয়ে গেল পরে রইল শুধু ছাই।সবার অলক্ষ্যে আমি সেদিন এক মুঠো চিতা ভম্ম নিয়েছিলাম।
বাসায় ফিরতে বিকাল হয়ে গেল,এসে বাথরুমে ঢুকলাম শাওয়ারের জলে চোখের জল মিশিয়ে স্নান সারলাম।সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি খাওয়ার ইচ্ছাও নাই তবুও মা জোর করে মুখে তুলে অল্প খাইয়ে দিলো। আজকের দিনে আমাদের সাত জন্মের বাঁধনে বাঁধা পরার কথা ছিলো।অথচ কি থেকে কি হয়ে গেল।
আজ পূর্নিমা আকাশে চাঁদের উজ্জ্বল প্রকাশ,আমি ছাদে যেতে চাচ্ছি মা বাবা কিছুতেই যেতে দিবেনা।উনাদের ভয় যদি আমি কিছু করে বসি।অনেক বুঝিয়ে অরুর দেওয়া পাঞ্জাবিটা গায়ে দিয়ে আর শ্মশান থেকে আনা চিতা ভম্ম নিয়ে ছাদে গেলাম।ছাদে উঠে মনে হলো তারারা আজ যেন বেশি উজ্জ্বল হয়ত আমার অরু কে পেয়ে ওরা আনন্দে মেতেছে,অথচ আমার আলো সব নিভে গেছে।অরুর চিতা ভম্মটা কিছুটা পাঞ্জাবীতে মাখালাম তারপর বসে বসে চাঁদ দেখছি,পাঞ্জাবি আর ভম্ম থেকে অরুর শরীরের মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি। যেন অরু আমার সাথেই আছে।
কিছুদিন আর অফিস যাইনি,কোন কিছুতে আর ভালো লাগা কাজ করেনা।নিজেকে ঘর বন্দী করে ফেললাম,কিন্তু তাতে কষ্ট কমবার থেকে বাড়ছে।সবার পরামর্শে অফিসে যাওয়া শুরু করলাম,কাজে ডুবে থাকলে ভালো লাগবে এই ভেবে।মাঝে মাঝে শ্মশানে যাই,অরুর সাথে কথা বলি আপন মনে।না আর এখানে থাকা যায় না,অরুকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারিনা।ওর স্মৃতি আমার পিছু ছাড়েনা।অফিসের চুক্তি অনুসারে দু বছর জব করে।সব ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিলাম।
তারপরের সব ঘটনাই তো তুমি জানো সারা!!
আমার বলা শেষ হতেই কাঁন্নায় ভেঙ্গে পরলো সারা,আমারও নেশার ঘোর কেটে গেছে নিজেও অশ্রুসিক্ত!ওদিকে একই ভাবে কেঁদে চলেছে সারা।আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম শান্ত হও সারা।দেখো আমি নিজেই আর এখন কাঁদিনা।আমার সান্ত্বনাতে আরো জোরে কেঁদে উঠলো,আর কাঁদো কাঁদো কন্ঠেই বললো,স্যার আপনার মনে এতো কষ্ট এটা আগে কখনো বুঝতে পারিনি।আপনার মত এতো গভীর ভাবে ভালো বাসতেও কখনো কাউকে দেখিনি।যতো দিন বাঁচবো আপনি আর অরু ম্যাডামকে কখনো ভুলবো না।কিন্তু স্যার ম্যাডামের কি হয়েছিলো সেদিন??
সেটা আমি তখন জানতে পারিনি,পরে অরুর বোন অনামিকার কাছ থেকে জেনেছিলাম সেদিনের ঘটনা,এমনিতে তো অরু সেদিন সন্ধ্যাবেলা অসুস্থ ফিল করছিল তাই ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরে সেটা তোমাকে আগেই বলেছি।তারপর রাতে আমি কল করার আগে ওর ঘুম ভাঙ্গে তখন একটু ভালো ফিল করছিলো,অরুর মা অর্থাৎ আন্টি ভাবছিলো অরু অনেকদিন যাবত ভালোই আছে কিন্তু এই বিয়ের ব্যাপার গুলো নিয়ে ভাবতেই হয়ত টেনশনে শরীরটা আবার খারাপ করছে,সেদিন রাতেই আন্টি আক্কেল কে আমার আর অরুর ব্যাপারে বলে,সব শুনে আঙ্কেল একটু রাগারাগি করে তার মেয়ে এমন প্রেম করে বিয়ে করবে সেটা তার পছন্দ না,তার স্বভাব অনুযায়ী আন্টিকে একটু বকাবকি করে।ঠিক সেই সময় অরু ওয়াশরুমের দিকে আসে সাথে অনামিকাও ছিলো,আর বাবা মায়ের কথা তার কানে যায়।এসব শোনা মাএই অরু ছুটে নিজের রুমে চলে যায়। অনামিকা সাথে গেলেও অরু ওকে বলে বাইরে যেতে ও একটু রেস্ট নিবে।অনামিকা যখন বাইরে আসে আর মা বাবার পরবর্তী কথা শোনার জন্য দরজার বাইরে দাঁড়ায়।তখন ওর বাবা ডাঃ এর সাথে কথা বলছে ফোনে মেয়ের বার বার এমন হবার কারণ জানতে,ডাঃ ও অরুর বাবাকে বলে,দেখেন এমনিতে অরু মামনির শরীরে কোন সমস্যা নাই,জাষ্ট ওর খাবারের প্রতি ইন্টারেষ্টটা কম,সে জন্য আমি মেডিসিন দিতে পারি।কিন্তু আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি যে অরু যখন কোন কিছু নিয়ে উত্তেজিৎ অথবা টেনশন করে ওর এই সমস্যটা বেশি হয়।তাই আমি সাজেস্ট করবো,ওর মনের উপর বেশি চাপ না দিতে।আর ভালো ছেলে দেখে বিয়েও দিতে পারেন হয়ত ভালো সঙ্গী পেলে অনেক রিলিফ পাবে।অথবা আপনারা ওর সাথে খোলামেলা কথা বলুন যে ও কি চায়,ওর কোন গোপন সমস্যা কিংবা কোন এফেয়ার আছে কিনা।দেখুন ও যেটাই বলুক রাগ করবেন না,আজ কাল এ্যাফেয়ার থাকাটা দোষের কিছু না।আর যদি সেটা থাকে আর ছেলে ভালো হলে আমি বলবো যতো তাড়াতাড়ি পারেন ওদের সাহায্য করুন বাবা না বন্ধু হিসেবে।
ডাঃ এর সাথে কথা বলার পর আঙ্কেল আমার সম্পর্কে জানতে চায় আন্টির কাছে।আন্টি সব বলে,আর সব শুনে আঙ্কেল আমাদের বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায় কারণ যোগ্য পাএ হিসেবে আমি কোন অংশে কম না।এটা শোনার পর অনামিকা ছুটে যায় ওর দিদির কাছে এই সু-সংবাদ দেবার জন্য,কিন্ত গিয়ে কয়েকবার ডেকেও অরু সারা দেয়না,আর দেখে অরু কাঁপতেছে,ও তখন চিৎকার করে ওর বাবা মা কে ডাকে,তারপর হাসপাতাল, অরুর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো তাই অক্সিজেন দেওয়া হয় কিন্তু ভোরের দিকে ও সেটাও আর নিতে পারছিলো না।তারপর কি হলো সবটাই শুনলে তুমি সারা!!আমার ধারণা ও অতিরিক্ত টেনশন, সাথে নিজের অসুস্থার জন্য এমনটা হয়েছে।তাছাড়া অরু যদি আঙ্কেল আন্টির সম্পূন কথা শুনতো তাহলে হয়তো আজ আমি আর অরু একসাথে থাকতাম!!
আমার কি কপাল দেখছো সারা,ছেলে মেয়ে রাজী পরিবারের সবাই রাজী কিন্তু একসাথে থাকাটা হলোনা। জানো সারা সেই ভম্ম মাখা নীল পাঞ্জাবিটা আমার কাছে এখনো আছে।আজ পর্যন্ত ওটা আমি পরিস্কার করিনি,কারণ তাতে আমার অরুর স্পর্শ যে ধুয়ে যাবে।রোজ পূর্নিমা রাতে ওটা আমি গায়ে দিয়ে একা একা অরুর সাথে কথা বলি।আমার কোন নেশা নেই সারা শুধু পূর্নিমা কবে আসবে সেই নেশায় বুদ হয়ে থাকি।
-থাক স্যার প্লিজ!!আর বলবেন না,আমি আর শুনতে পারছিনা!!
-আমিও এক দ্বীর্ঘশ্বাস ছেড়ে। একটা সিগারেট ধরলাম।সারা!!
-হা স্যার বলুন!??
-আমার একটা উপকার করবে??ওর উত্তরের আশা না করেই বললাম।আমি আর এখানে থাকবো না।একটু কষ্ট করে কালকেই একটা বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিবে। আর আমি কাল সকালেই অফিসে যেয়ে রিজাইন লেটার টা দিয়ে আসবো।
-একি কি বলছেন স্যার!আপনি সত্যি চলে যাবেন??তাহলে আমার যে খুব খারাপ লাগবে স্যার।
-তুমি খুব ভালো মেয়ে সারা! কিন্তু তুমি সবই শুনলে আমার বাধাটা কোথায়।সো প্লিজ আর কিছু বলোনা।কত বছর দেশে যায়নি,মা বাবা আর কি দোষ করেছে বলো!!??
-আমি জানি আমি আপনাকে আটকাতে পারবো না।কিন্তু যাবার আগে একটা জিনিস চাইবো দিবে শুভ!!
-সারার মুখে আমার নাম শুনে একটু অবাক হলাম।গত চার বছর ধরে অকে বলে আসছি বাসায় স্যার বলবে না।শুনলো না আজ নাম ধরছে,একটু বেশিই অবাক হলাম!!
-কি দিবে না শুভ??
-হুম বলো কি চাই।দেবার মত কি আছে আমার?যদি থাকে দিবো। কিন্তু প্লিজ এমন কিছু চেয়ো না যেটা অন্য কাউকে ভাগ দিতে পারবো না !!
-না তেমন কিছু চাইবো না।আর অরু ম্যাডামের মত ভাগ্যবতীও আমি না।আর আমি অরু ম্যাডামের ভালবাসায় ভাগও বসাতে চাইনা!!বলে একটু থামলো সারা,আমার কাছে একটু সরে এসে বললো, আমাকে একটা শুভ দিবে??
-আমি বুঝতে না পেরে।সারার দিকে তাকিয়ে থাকলাম!?
-বুঝলে না তাই তো??আমায় একটা বাচ্চা দিবে??করুণ ভাবে বললো সারা!!
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!