Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শূন্য খাঁচা / কলির কেষ্ট (সমাপ্ত)
#32
[[১৩]]


-সারা!! সারা!!হে আর ইউ ওকে??
-ওহ সরি স্যার!
-কি হলো তোমার?কোথায় হারিয়ে গেছিলে?
-কিছু মনে করবেন না স্যার,আপনাদের রোমান্টিক দৃশ্যর কথা শুনতে শুনতে আমি নিজেই যেন সেই রাতের পুকুর ঘাটে হারিয়ে গেছিলাম।হোয়াট এ মোনেন্ট স্যার।

হোয়াট দ্যা ফাক!শালা মাদার ফ্যাকার,হঠাৎই সারা নোংরা ভাষা ব্যবহার করলো। 
-হে,সারা হোয়াট হ্যাপেন্ড? এগুলা কি বলছো।
-এবার একটু লজ্জিত ভাবে সারা বললো,সরি স্যার আপনার সামনে এসব কথা বলে ফেললাম।আসলে আমার এক্স বয়ফ্রেন্ডের কথা মনে পরে গেছিলো,শালা রক্ত চোষা, নারীকে কিভাবে সম্মান করতে হয়,মনে হচ্ছে ওকে ডেকে এনে আপনার কাছ থেকে শেখাই।সত্যি স্যার ম্যাডাম ইজ ভেরি লাকী।তো স্যার তারপর কি হলো বলুন।আই এম ভেরি এক্সসাইটেড!!

কি আর শুনবে সারা,আমার সব কিছু যে শেষ এখান থেকেই।আমি আর একটা সিগারেট জ্বালিয়ে লম্বা একটা টান দিলাম।সারা ইফ ইউ ডোন্ড মাইন্ড,তোমার কাছে হালকা ড্রিংকস হবে?
আমার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকালো!! স্যার আপনি ড্রিংকস করবেন!! ওহ মাই গড!আই কান্ট বিলিভ দিস! 
হা খুব অল্প যদি দিতে পারো নিয়ে এসো,বাট প্লিজ আমি যেন সহ্য করতে পারি,জাষ্ট ওয়ান পেক!!ওকে আপনার ইচ্ছা। বলে সারা চলে গেল ওর রুমে।সত্যি আমি খাবো এটা।খেয়েই দেখি যদি কথা বলতে গিয়ে কষ্টটা কমে।

সারা একটু পর আসলো হাতে দু গ্লাসে তরল।স্যার নিন।আমি গন্ধ নিতে গেলাম,নো স্যার কোন খারাপ গন্ধ নেই।ব্রান্ডেড অরেন্স ফ্লেভার।আমি আর কিছু না ভেবে সারা কে চেয়ার্স বলে এক ঢোকে গলার নিচে পার করলাম। সত্যি কোন খারাপ গন্ধ নেই কিন্তু এই প্রথম পেটে মাল পরাতে একটু শরীরটা ঝাকুনি দিয়ে উঠলো।সেটা দেখে সারা নিজে থেকে একটা এগিয়ে দিয়ে বললো,স্যার এটা টানুন দারুন ফিলিংক্স আসবে।আমি ওর কথা মত সিগারেটে টান দিলাম, একটু পর খুব রিল্যাক্স অনুভব করলাম।


বাসায় এসে মা কে ডেকে বললাম আমাদের বিয়ের ব্যাপাটা নিয়ে কি ভাবলো।মা বললো অরুর সাথে কথা বলে জানলাম দিন দশেক পর ওর ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে তাই তোর বাবা বলছিলো।পরীক্ষাটা মিটে গেলেই কথা বলতে যাবে অরুর বাড়িতে।

হুম অরুও বলেছিলো পরীক্ষার কথা।কিন্তু আগামী সপ্তাহে বিয়ে করবো এই কথা দেওয়ার সময় তো এটা ভাবিনি।তাছাড়া মা বাবা খারাপ ডিসিশন ও নেয়নি পরীক্ষার ভিতর এসব শুরু হলে,পরীক্ষাটাই খারাপ হবে। তাছাড়া আমার আর অরুর ফিলিংসের কথা তো আর মা বাবা কে বলা যায় না। যদি তাড়া রাজি না থাকতো সেটা আলাদা বিষয়।সব ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিলাম,যে পারিবারিক ভাবে যেদিন হয় হবে।আগামী সপ্তাহে আমরা কোর্টম্যারেস করবো,এতে অন্তত অরু কিছুটা চিন্তামুক্ত থাকবে।আর যদি আমাদের বিয়ের ব্যাপারে দু পরিবারের কারো অমত না থাকে তাহলে এই কোর্টম্যারেজের বিষয়টা চিরতরে গোপন থাকবে।আর যদি রাজি না হয় তখন এটা আমরা সবার সম্মুখে আনবো।

সব কিছু ঠিকঠাক চলছে,আমাদের কোর্টম্যারেজের দিন ঠিক করলাম,বুধবার ওই দিন অরুর কলেজে এ্যাডমিট আনতে পাবে।আজ শনিবার আর চারদিন বাকি,আমিও অফিস থেকে অগ্রীম তিন দিনের ছুটি নিয়ে রাখলাম,আর মিঠুকে কল করে দিনক্ষণ সব বললাম।মিঠু কথা দিলো বাকিটা ও ম্যানেজ করে নিবে।

এখন আমিও একটু টেনশন ফ্রি আছি সব প্লান করা হয়ে গেছে। প্লান মাফিক বিয়ের দিনের দুদিন আগে সন্ধ্যায় অরুর ফোনে কল দিলাম কিন্তু ওর বোন কল ধরলো,ওর কাছ থেকে জানতে পারলাম,আজ আবার একটু অরু অসুস্থ হয়ে পরেছে তাই এখন ওষুধ খেয়ে ঘুমাচ্ছে উঠলে ফোন দিবে বলছে।ফোন রাখার পর একটু টেনশন হচ্ছে কারণ অনেকদিন এই সমস্যাটা হয়নি আজ আবার হঠাৎ কেন এমন হলো।এদিকে প্লান মাফিক আর সময় আছে দুদিন।যাক সময় আরো পাওয়া যাবে আগে আমার অরু সুস্থ হোক,সেদিন রাতে আবার যখন অরুকে কল করলাম ওর বোন ধরলো।
-হ্যালো শুভ দা দিদির শরীর খুব খারাপ এই মাএ দিদিকে নিয়ে হাসপাতালে এলাম।তাড়া হুরোয় তোমাকে ফোন দিতে পারিনি।
-আচ্ছা ঠিক আছে।আমি আবার পরে কল করবো।কি হয় না হয় আমাকে জানিও প্লিজ!

না কিছু ভালো লাগছে না আর!! অজানা আশংকায় বুক কাঁপছে।রাতেও অরুর সাথে কথা বলতে পারলাম না।অনামিকাও আর কল করেনি।আমি কয়েকবার চেষ্টা করেও প্রথম দিকে কল গেলেও সেগুলা রিসিভ করেনি কেউ,তারপর ফোন সুইচ অফ বলেছে।রাতে খাবারও খেতে ইচ্ছা করলো না,মাকেও অরুর অসুস্থার কথাটা জানালাম।মা আমাকে চিন্তা করতে নিষেধ করলো,বললো সব ঠিক হয়ে যাবে,সারারাত ছটফট করতে করতে ভোরের দিকে একটু চোখটা বুজে এসেছে।খুব সকালে একটা অচেনা নম্বর থেকে কল আসার শব্দে ঘুম ভাংলো।আমি চোখ মুছতে মুছতে রিসিভ করতেই। 
-কান্না ভেজা কন্ঠে বললো শুভদা আমি অনামিকা।
-হা বলো!কাঁদছো কেন?কি হয়েছে?আমার কন্ঠে উদ্বেগ!
-শুভদা!! শুভদা,,,দিদি,,আর জোরে কান্নার আওয়াজ।শুভদা দি,,দিদি আর নেই!!!
-আমি চিৎকার করে উঠলাম,,নেই মানে??
-দিদি বিশ মিনিট আগে আমাদের ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে।।

আমার হাত থেকে ফোন ছিটকে পরে গেছে।মাথার ভিতর বনবন করে ঘুরছে।চারপাশ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে আমার।সারা শরীরে কাঁপুনি দিয়ে গলা ফাটিয়ে অরু বলে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারালাম।যখন জ্ঞান ফিরলো আমি বিছানায় শুয়ে আছি পাশে মা বাবা বসে আছে।উনাদের চোখেও জল।আমি মাকে দেখেই আবার ডুকরে কেঁদে উঠলাম মা আমার সব শেষ হয়ে গেছে মা অরু,,অরু আমাকে ছেড়ে চলে গেছে মা!!চলে গেছে আমাকে ছেড়ে!!আমাকে কি সান্ত্বনা দিবে মা নিজেও কান্নায় ভেঙ্গে পরেছে।তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে মা বললো।
-যাওয়া আসার উপর তো কারো হাত নেই বাবা!একটু শান্ত হ!আমাদেরও কি কম কষ্ট হচ্ছে আমরাও তো ওকে নিজেদের মেয়েই ভেবে নিয়েছিলাম।এখন উঠ বাবা!একবার ভেবে দেখ ওর বাবা মায়ের এখন কি অবস্থা,এখন ভেঙ্গে পরলে চলবে।উনাদের পাশেও তো একটু দাঁড়াতে হবে।

ইতি মধ্যো খবর পেয়ে মিঠুও চলে এসেছে,মিঠু ও আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে চলেছে।আমি হঠাৎ এবনরমাল ব্যবহার করছি,কখনো হাসছি কখনো কাঁদছি,বাবা আর মিঠু মিলে আমাকে সামলাচ্ছে।আমি অরুর কাছে যাবো বলে জেদ করছি। তারপর বাবা আর মিঠু আমাকে নিয়ে অরুর বাসার দিকে রওনা দিলো।আমি এতো কেঁদেছি আমার চোখ দিয়ে আর জল বের হচ্ছেনা।গলার স্বরও ফ্যাকাসে হয়ে গেছে,কি বলছি নিজেই বুঝতে পারছিনা।

অরুর বাসায় গিয়ে দেখতে পেলাম লোক জনের ভীর,আর তার সামনে বাইরে খাটের উপর সাদা 
কাপড়ের নিচে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে আমার অরু আমার ভালবাসা কলিজার টুকরা।নিজেকে আর সামলাতে পারছিলাম না ছুটে যেতে চাচ্ছিলাম অরুর কাছে।আমার এ অবস্থা দেখে অনেক কষ্টে বাবা আর মিঠু আমাকে বাইরে বের করে আনলো।দেখ বাবা তুই অরু কে ভালবাসিস সেটা তুই অরু আর আমরা দুই পরিবার জানি কিন্তু প্রতিবেশীরা তো জানে না।ওদের একটা সম্মান আছে।তাছাড়া অরুও ভাল মেয়ে ছিলো,এখন তুই যদি পাগলামি করে ওর কাছে যাস তাহলে মানুষের মনে প্রশ্ন জাগবে।তখন আমার অরু মায়ের মত লক্ষী পবিত্র মেয়েটা মরে গিয়েও লোকের নানা বদনাম শুনতে হবে।তুই কি তাই চাস!!?লক্ষী ছেলে আমার পাগলামি করিস না।এসব বলে বাবা আমাকে শান্ত করতে লাগলো।বাবা যে এভাবেও কথা বলে যেন আজ জানতে পারলাম।অরু তুমি আমায় সব দিয়ে গেলে দেখিয়ে গেলে,শুধু নিজে ফাঁকি দিলে।


""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

[+] 3 users Like Kolir kesto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: শূন্য খাঁচা / কলির কেষ্ট - by Kolir kesto - 06-09-2020, 08:52 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)