Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শূন্য খাঁচা / কলির কেষ্ট (সমাপ্ত)
#25
[[১০]]


একদিন বিকাল বেলা অরুর সাথে মাকে ফোনে কথা বলিয়ে দিলাম,কিন্তু সত্যি বলছি পাঠকগণ ওদের দুজনের ভিতর কি কথা হয়েছে আমি জানিনা,সেদিন আমার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে ছাদে চলে গেছিলো,কথা শেষে জানতে চাইলেও আমাকে কিছু বলেনি,আর অরুর কাছ থেকেও কোন কথা উদ্ধার করতে পারিনি,ইদানিং লক্ষ্য করছিলাম মা ফোনে কার সাথে যেন কথা বলে,আসলে আমি তাতে খারাপ কিছু সন্দেহ করিনি,কিন্তু আমার মন বলছিলো মা এবং অরু দুজনেই আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছে।একদিন সুযোগ বুঝে মায়ের মোবাইলের কল লিষ্ট চেক করি,আর আমার সন্দেহ সত্যি হয় মা অরুর সাথেই কথা বলে অর্থাৎ দুয়ে দুয়ে চার মা আর অরুর সম্পর্কটা পাকাপোক্ত হয়ে গেছে।আমিও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।

এরপর কেঁটে গেছে অনেকটা সময় প্রতি সপ্তাহে একবার করে দেখা হয়।তেমন বলার মত বিশেষ কোন ঘটনা ঘটেনি।প্রতিদিনই আমাদের ফোনে কথা হয়,আমাদের বিয়ে করার সময়সীমা কমতে কমতে পাঁচ মাসে এসে ঠেকেছে এরই মধ্যে।দেখতে দেখতে ফাইনাল সেমিষ্টারের পরীক্ষা চলে এলো, আমার আর এখন আগের মত অসস্তি লাগেনা,অরু আসার পর যেন জীবনে গতি এসেছে প্রথম বর্ষে রেজাল্ট খারাপ হলেও দ্বিতীয় বর্ষে আমি আশানুতিক রেজাল্ট করি।কয়েকটা দিন খুব চাপ গেল পরীক্ষার জন্য।এই কয়দিন অরুর সাথেও সেভাবে কথা বলতে পারিনি।কথা বললেই অরুর সেই এক কথা আর ভালো লাগছেনা,কবে বিয়ে করবে।আমিও তো চাই কিন্তু মাএ পরীক্ষা শেষ হলো,এখন রেজাল্ট না বের হলে ভালো জবের চেষ্টাও করতে পারছিনা।

কপাল ভালো ছিলো প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার দিন ভার্সিটিতে ঘোষণা করা হলো, আগামীকাল কলেজে ফ্রি জব ক্যাম্পিং হবে।আগ্রহীরা তাতে সরাসরি অংশগ্রহন করতে পারবে।আসলে ভালো ভালো ভার্সিটি গুলোতে এমন হয় রেজাল্ট বের হবার আগেই এখানে কর্মী নিয়ে থাকে কিছু কোম্পানী কারণ এখানকার ৯০ শতাংশ ছাএ ছাএীই মেধাবী আর রেজাল্ট বের হবার আগেই জব এই জন্য সবাই চান্সটা নেয়।ঘোষণা শুনে খুশিই হলাম কারণ অরুর জন্য আমার জবটা ভীষণ ভাবে দরকার।পরদিন সেভাবে প্রিপারেশন নিয়ে পৌছে গেলাম,মোটামুটি ৩০০ জনের মত অংশ নিচ্ছে,কতজন নিবে সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।প্রথমে প্রাথমিক ভাবে একটা লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হলো সেখান থেকে অর্ধেকের বেশি বাদ দিয়ে সরাসরি ভাইভা নেওয়া শুরু করলো,সেখান থেকে কয়েকজনকে সরাসরি বাদ দেওয়া হলো আর কয়েকজনের সিভি রেখে দেওয়া হলো পরে কল করবে বলে।আমার সিভিটাও রাখা হলো। এখন আর কিছু করার নাই, উনাদের ফোন কলের অপেক্ষা করা ছাড়া।


প্রায় দশ দিন পর একটা অচেনা নম্বর থেকে কল এলো ফোন ধরতেই,,,
-হ্যালো!মিষ্টার শুভেন্দু রায় বলছেন??
-হা,বলছি!আপনি কে বলছেন??
-আমি স্টার আর্কিটেকচার এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিঃ থেকে বলছি।আপনি যে জব ক্যাম্পিং এ অংশ গ্রহন করেছিলেন।
-ওহ হা হা,বলুন!
-আমরা আপনাকে জব অফার করছি!আমরা আপনাকে বেসিক ৩০ হাজার টাকা মাসিক বেতন অফার করছি,আপনি জবটি করতে চাইলে আগামী রবিবার আমাদের অফিসে যোগাযোগ করবেন।কিন্তু শর্ত একটাই দুই বছরের ভিতর আপনি বেটার জব পেলেও এটা ছাড়তে পারবেন না।বলে ফোন রেখে দিলো।

আমি তো খুশি পাগল হওয়ার মত অবস্থা সব কিছু এতো ভালো ভাবে হয়ে যাবে ভাবিনি। যদিও দু বছরের শর্ত সেটাও সমস্যা না দু বছরের পর নাহয় বেটার কিছু দেখবো,আপাতত অরুর বাড়িতে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য একটা কিছু ব্যবস্থা তো হলো।বেসিক ৩০ তারমানে সব মিলিয়ে ৪০ পাবো।দৌড়ে গিয়ে মাকে জানালাম গিয়ে দেখি সেখানে বাবাও বসে আছে,আজ আর ভয় না দুজনের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম,
-কি রে কি হলো?মা বললো
-আমার চাকরি হয়ে গেছে মা ৪০ হাজার টাকা বেতন। 
লক্ষ্য করলাম মা বাবা দুজনেরই মুখটা খুশিতে ভরে উঠলো।আমি আর ওখানে না দাঁড়িয়ে রুমে এসে অরুকে ফোন দিলাম।অরু তো শুনে খুশিতে কেঁদেই ফেললো।

পরদিন যথা সময়ে অফিসে জয়েন করলাম,মোটামুটি ভালোই অফিসটা,সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছি,মাকে বলেছি বিয়ের কথা মা বলেছে বাবার সাথে কথা বলবে এই ব্যাপারে। ওদিকে অরুর মা আর ছোট বোন ছাড়া কেউ জানে না। একদিন অরু ফোন করে বললো বাড়িতে ওর জন্য বিয়ের সমন্ধ আসছে,কেউ ডাঃ কেউবা প্রফেসর,শুনে তো আমার মাথায় বাজ পরলো‌।আমি সেদিনই অফিস থেকে ফিরে আন্টিকে কল করলাম,আন্টি অরুর বাবার সাথে কথা বলে আমাকে জানাবে বলে ভরসা দিলেন ঠিকই কিন্তু আমার মন মানতে চাচ্ছিলো না। 

পরের শুক্রবার সকালে অরুর সাথে দেখা করে ফেরার পথে মিঠুকে কল করে ঢেকে নিলাম,
কি ব্যাপার বন্ধু খুব তো মজায় আছো নতুন চাকরি মারকাটারি গার্লফ্রেন্ড।
-ধুর মজা করিসনা,টেনশনে আছি তাই তোকে ডাকলাম।
-কি ব্যাপার বলতো?তোকে সত্যি অন্য রকম লাগছে।
-আমি মিঠুকে অরু আর আমার বিয়ের ব্যাপারের সব কথা খুলে বললাম।সবশুনে মিঠু বললো তো এতো চিন্তার কি আছে? তোর হবু শাশুরী তো রাজি আছে!
-দেখ ভাই,সমস্যা কিছুই না আবার অনেক কিছু,আমার যোগ্যতা নিয়ে তো কোন সমস্যা নাই কিন্তু তুই তো জানিস অনেক ফ্যামিলিই প্রেমের বিয়েতে সম্মতি দেয় না,সে ছেলে যতোই যোগ্য হোক না কেন!!
-সেটা তুই ঠিক বলেছিস।মিঠু সিগারেট টানতে টানতে বললো দিবি একটান??
-তুই জানিসনা আমি খাইনা।
-তো যাই হোক কি করতে চাচ্ছিস?
-দেখ আমি ভাবছি ওর পরিবারের মতের জন্য ওয়েট করবো কিছুদিন কিন্তু যদি দেখি বেচাল তাহলে কোর্টম্যারেজ করবো!তো সমস্যা হবেনা তো??
-আরে কিসের সমস্যা আমরা বন্ধুরা আছিনা।মিঠু ওর ৩৬ ইষ্ণি বুকের ছাতি ফুলিয়ে বললো।
মিঠুর সাথে আরো কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে বাসায় ফিরলাম।

""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

[+] 2 users Like Kolir kesto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: শূন্য খাঁচা / কলির কেষ্ট - by Kolir kesto - 06-09-2020, 09:31 AM



Users browsing this thread: