03-09-2020, 12:14 AM
কেনা বেচা নিয়ে আলোচনার শুরু মোহন করে, "মিস্টার মন্ডল। আপনি প্রায় পনেরোটা প্রকল্প একসাথে হাত দিয়েছেন তাই তো?"
দানা মৃদু হেসে মাথা দোলায়, "হ্যাঁ।"
মোহন জিজ্ঞেস করে, "কত টাকা বিনিয়োগ করেছেন?"
দানা উত্তর দেয়, "আড়াইশো কোটি টাকা।"
মোহন প্রশ্ন করে, "কি রকম অংশের শরিকানা আছে এই প্রকল্প গুলোতে?"
দানা উত্তর দেয়, "কোনটায় সত্তর তিরিশ, কোনটায় ষাট চল্লিশ। এইরকম ভাবেই আছে সব কয়টাতে।"
মোহন কিছুক্ষণ থেমে জিজ্ঞেস করে, "আমার কাছ থেকে কত চান সেটা বল।"
মদের গেলাসে চুমুক দিয়ে চোখে চোখ রেখে দানা উত্তর দেয়, "একশো শতাংশ চাই মিস্টার খৈতান।"
বিমান, সিমোন আর মোহন আঁতকে ওঠে, ছেলেটা বলে কি? মোহন হেসে ফেলে ওর কথা শুনে, "আপনার মাথা খারাপ হয়েছে নাকি মিস্টার মন্ডল। আমাদের সাথে আপনি মস্করা করতে এসেছেন নাকি?"
দানা বাঁকা হেসে বলে, "আপনার পথের কাঁটা বাপ্পা নস্কর, ভালো ভাবেই জানে আপনি আর বিমান চন্দ বাল্যবন্ধু। সুতরাং যতক্ষণ না বাপ্পা নস্কর বিশ্বাস করছে যে আমি আপনাদের সব কিছু হাতিয়ে নিয়েছি ততক্ষণ বাপ্পা নস্কর আমাকে কাজে নামতে দেবে না।"
বিমান চিবিয়ে চিবিয়ে দানাকে বলে, "তুমি বড় ধূর্ত, এইরকম চাল চালবে ভেবে পাইনি।"
দানা বাঁকা হেসে গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর দেয়, "আপনার সামনে আমার প্রস্তাব রাখলাম ভেবে দেখবেন কি করতে চান। সম্পূর্ণ প্রকল্প হাতে না আসলে আমি কাজ করবো না।"
নয়নার দিকে তাকিয়ে বলে, "তুমি কি আমার সাথেই বাড়ি ফিরতে চাও না অন্য কেউ তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসবে?"
এত তাড়াতাড়ি দানা নিজের পক্ষে অটল হয়ে যাবে সেটা বিমান অথবা মোহন চিন্তা করতে পারেনি। ভেবেছিল একটু দর কষাকষি চলবে দানার সাথে, কিন্তু দানা যে প্রস্থান করতে উদ্যত। নয়না দেখলো এতে হিতে বিপরিত হতে চলেছে, দানাকে হাতে না রাখলে ওদের চক্রান্ত সফল হবে না কিছুতেই।
দানার হাত ধরে বসিয়ে বিমানকে বলে, "তুমি কি চাও দানা এখান থেকে চলে যাক? ও চলে গেলে তোমার পরের নির্বাচনে জেতার আশা ভরসা সব ওর সাথে এই গেট থেকে বেড়িয়ে যাবে।" মোহন আর সিমোনের দিকে তাকিয়ে বলে, "গত এক বছর ধরে আপনাদের প্রকল্প শুধু মাত্র ভিত দাঁড় করিয়ে আছে, আগামী পাঁচ বছর ওই ভিতে শ্যাওলা পড়ুক এই চান?"
বিমান বাঁকা হেসে দানাকে প্রশ্ন করে, "তুমি ঠিক কোন পক্ষের মিস্টার মণ্ডল? বাপ্পা নস্করের না আমাদের?"
দানা চোরা হেসে নয়নার দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়, "আমি আপনাদের মধ্যে কারুর পক্ষের নয় বিমান বাবু। আমি নয়নার পক্ষের।"
দানা ভালো ভাবেই জানে নয়নাকে মাথায় করে রাখলে এই ব্যাবসায়িক লেনদেন ঠিক ওর ঝুলিতে এনে ফেলবেই।
চৌষট্টি ছক (#০৮)
নয়নাকে বড় করে দেখাতেই বেশ খুশি হয়ে যায় তাই মোহনের দিকে তাকিয়ে বলে, "আপনি কি চান মিস্টার খৈতান? এই চাল কিন্তু আমাদের চক্রান্তের একটা খুব বড় অঙ্গ। যতক্ষণ না বাপ্পা নস্কর বিশ্বাস করছে যে দানা আমাদের বাগে ফেলেছে ততক্ষণ ও শান্তি পাবে না। যে মুহূর্তে ও বাপ্পা নস্করের অতি বিশ্বাসী হয়ে উঠবে ঠিক সেই মুহূর্তে আমরা চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেব।"
বিমান আর মোহন পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। দানা শ্বাস রুদ্ধ করে হাত মুঠি করে বসে থাকে। চাপা উৎকণ্ঠায় হৃদপিণ্ড ফেটে যাওয়ার যোগাড়।
সিমোন শেষ পর্যন্ত মুখ খোলে, "মিস্টার মন্ডলের শর্ত মানতে রাজি আছি তবে হ্যাঁ, তিনখানা ছোট প্রকল্প আছে সেইগুলো সব কুড়ি আশি করে দেওয়া হবে আর দুটো বড় আবাসন প্রকল্প আর একটা হোটেল প্রকল্প আছে সেই গুলো পঁয়তাল্লিশ পঞ্চান্ন করতে হবে। আপনি একটু ঝুঁকুন আমরাও একটু ঝুঁকি, ব্যাবসার তাই নিয়ম তাই না মিস্টার মন্ডল।"
সিমোনের ঠোঁটে মিস্টার মন্ডল শুনে দানা মনে মনে যারপরনাই আনন্দিত। একসময়ে এই নারী ওকে শুধু মাত্র পুরুষ বেশ্যা ভেবে যথেচ্ছ ভাবে সহবাসের পুতুল বানিয়েছিল আর আজকে দামী গাড়ি, দামী সুট পরা দেখে এক সন্মান দিয়ে সম্বোধন করছে।
দানা নিজের কথায় অটল থাকে, "আমি আড়াইশো কোটি টাকা নিয়ে ভালো আছি মিসেস খৈতান। বাপ্পা নস্কর পরের পাঁচ বছর থাকলে অচিরে ওই আড়াইশো কোটি টাকাকে এক হাজার কোটি টাকা করে নেব। বাকিটা আপনাদের হাতে ছেড়ে দিলাম আমি।"
নয়না বিমানের দিকে তাকিয়ে রাগত কণ্ঠে ফিসফিস করে বলে, "কতবার তোমাকে এক কথা বুঝাতে হবে?"
নয়নার হাতে আলতো চাপ দিয়ে শান্ত করিয়ে মোহনকে বলে বিমান, "দ্যাখ মনু, নয়নার বিশ্বাসী মানে বুঝতেই পারছিস তুই।"
সিমোনের ঠোঁটে বাঁকা হাসি খেলে যায় সেই সাথে দানার ঠোঁটেও বাঁকা হাসি খেলে যায়। বিমান বলে চলে, "তিনটে আবাসনের প্রকল্প আগে ওর নামে করে দে, বাকি গুলো না হয় পরে দেখা যাবে।" দানার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, "খুশি মিস্টার মন্ডল?"
চেয়ারে হেলান দিয়ে পায়ের ওপরে পা তুলে ওদের দিকে তাকিয়ে বলে, "খুশি আমি আগেও ছিলাম এখন আছি। দরকার আমার নয় বিমান বাবু, দরকার আপনার। আমি আমার পক্ষ রেখেছি কিন্তু সুতরাং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আপনার হাতে।"
সিমোনে কিছুক্ষণ ভেবে বলে, "ঠিক আছে মিস্টার মন্ডল, পরশু দিনের মধ্যে কাগজ পত্র নিয়ে আমার উকিল আর সি এ আপনার অফিসে চলে আসবে। তিনখানা আবাসন প্রকল্প সম্পূর্ণ আপনার। বড় মাপের প্রকল্প গুলো পরে বিচার বিবেচনা করা যাবে।"
সিমোনে খৈতান, বিমান চন্দ এদের সবাইকে ধূলিসাৎ করতে চায় দানা। শুধু মাত্র কুড়ি কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে মাছি মেরে হাত গন্ধ করতে নারাজ। চোয়াল চেপে মৃদু হেসে সিমোনের দিকে তাকিয়ে বলে, "পনেরো কুড়ি কোটি টাকা দিয়ে মাছি মেরে হাত গন্ধ করতে রাজি নই মিসেস খৈতান। আপনার কাছে এক সপ্তাহ সময় আছে। দুই সপ্তাহ পরে বাপ্পা নস্করের নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হবে। আমাকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা দিতে হবে বাপ্পাকে। একবার ওই টাকা যদি আমি বাপ্পার খাতায় ঢালি তাহলে বুঝতেই পারছেন, পরের পাঁচ বছরে ওই টাকার বিশ গুন আমি উশুল করব।"
বিমান সিমোনে আর মোহন সবাই ভাবনায় পরে যায়। নয়না চুপচাপ বসে ওদের দেখে আর হাসে। দানা মনে মনে উৎফুল্ল, এইবারে সঠিক জায়গায় ঘা মেরেছে। এতে কাজ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ভাবা যাবে। মোহন আর বিমান ফিসফিস করে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা করে, কি করা যায়, দানা যে অটল।
শেষ পর্যন্ত মোহন মুখ খোলে, "আপনাকে কতটা বিশ্বাস করা যায়, মিস্টার মন্ডল?"
ওই কথা শুনে নয়না ঝাঁঝিয়ে ওঠে, "বিশ্বাস অবিশ্বাসের কথা কোথা থেকে আসছে এইখানে মিস্টার খৈতান?" বিমানের দিকে অভিমানী চাহনি দিয়ে বলে, "এখন ওকে বিশ্বাস করতে পারছ না? এতদিনে তোমাকে ছিন্নমূল করে ছেড়ে দিত বাপ্পা নস্কর বুঝলে।"
বিমান মৃদু হেসে মাথা চুলকিয়ে মোহনকে বলে, "নারে মনু, আর কিছু না হোক মিস্টার মন্ডলকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়। তোকে পরে বিস্তারে জানাবো সেই সব।" তারপরে দানার দিকে হাত বাড়িয়ে বলে, "পরশু দিনের মধ্যে উকিল আর সি এ তোমার অফিসে সব কাগজ পত্র নিয়ে পৌঁছে যাবে।"
দানা ওদের বলে, "একটা কথা আছে, ওই কাগজে এটা যেন লিখতে ভুলবেন না যে দুশো কোটি টাকার বিনিময়ে আমি আপনার কাছ থেকে এই প্রকল্প গুলো কিনে নিয়েছি। বুঝতেই পারছেন, আয়কর বিভাগ এটা কিছুতেই মানতে চাইবে না যে আপনি আমাকে বিনা পয়সায় এত গুলো প্রকল্প এমনি এমনি দিয়ে দিয়েছেন। আয়কর ইত্যাদির চোখে ধুলো দিতে হলে এমন কিছু একটা করতে হবে।"
মোহন হেসে ফেলে, "খেঁকশিয়ালের মাথা আপনার মিস্টার মন্ডল। আচ্ছা তাই হবে কিন্তু দুশো কোটির বদলে দশ কোটি অন্তত আমি পেতে পারি।"
দানা হেসে বলে, "দশ কোটি কেন মিস্টার খৈতান, একবার বাপ্পা নস্কর সরে যাক। দুশো কোটির জায়গায় দুই হাজার কোটি আমাদের হাতে আসবে, অর্ধেক আপনার অর্ধেক আমার। আপনি প্রকল্প আমার হাতে দিয়ে খালাস। আসল কাজ আসল টাকা আমাকেই খাটাতে হবে তাই না?"
মোহন স্মিত হেসে মাথা দোলায়, "হ্যাঁ।" দানা, বিমান আর মোহনের সাথে হাত মেলায়।
সিমোনে আর দানার চোখে চোখে কথা হয়, "তুমি কে দানা?" চোখের উত্তরে দানা বলে, "পরে বলবো।" সিমোনে জিজ্ঞেস করে, "খুব ধূর্ত।" দানা উত্তর দেয়, "তুমি কম নও।"
সিমোনে মৃদু হেসে নয়নাকে বলে, "মিস্টার মন্ডলের সাথে তোমার বেশ খাতির আছে মনে হচ্ছে?"
দানার পাশ ঘেঁসে বসে নয়না উত্তর দেয়, "সে রকম কিছু নয় তবে একটু চেনাজানা আছে এই ব্যাস।" দানার কাঁধে আলতো চাপ দিয়ে বলে, "তাই না মিস্টার মণ্ডল?"
বুক ভরে ঠাণ্ডা নদীর বাতাস নেয় দানা। চূড়ান্ত আঘাত হানার আগের মুহূর্ত, কবে এদের বাগে ফেলতে পারবে আর সঙ্গীতার চোখের জলের প্রতিশোধ নিতে পারবে সেই প্রহর গোনে। রমলা আর নয়না যখন মৈনাককে খুন করেনি তখন নির্ঘাত বিমান চন্দ আর সিমোনে খৈতান ওকে খুন করেছে। সঙ্গীতাকে খুন করতে চেয়েছিল কিন্তু ওর প্রেমিক বেঘোরে প্রান হারায়। মেয়েটার চোখের জল এখন শুকায়নি ঠিক ভাবে। বিমান বন্দরে দেখা পর্যন্ত করতে যেতে পারেনি পাছে ওদের একসাথে কেউ দেখে ফেলে। চোয়াল চেপে, সামনে বসা সবার দিকে রক্ত চক্ষু হেনে তাকিয়ে থাকে দানা। নয়নাকে ছেড়ে দেবে না দুটো কারনে, ইন্দ্রাণীর নাম নিয়ে হুমকি দিয়েছে আর সঙ্গীতাকে ;., করাতে চেয়েছে।
ওকে হারিয়ে যেতে দেখে নয়না আলতো ধাক্কা মেরে জিজ্ঞেস করে, "কি হলো, কোথায় হারিয়ে গেলে? মিসেসের কথা মনে পড়লো, না মেয়ের কথা?"
সিমোন অবাক হয়ে দানাকে জিজ্ঞেস করে, "আপনার মেয়ে আছে?"
ওর হয়ে নয়না হেসে উত্তর দেয়, "হ্যাঁ, একদম ফুলের মতন সুন্দরী ছোট্ট পরী, রুহি।"
কাজ শেষ, বুকের ভেতরে এক বিজয়ীর জোয়ার ওঠে দানার। হাতের নাগালের মধ্যে সব শত্রু, শুধু মাত্র যদি কেউ ওকে এইখানে আসতে না দেখতো তাহলে সবাইকে এইখানে খুন করে চলে যেত দানা। না, নিজের হাতে রক্ত মাখাতে চায় না দানা, ছোট্ট রুহির কি হবে? ওর "ডাডা" একজন খুনি? ওর সুন্দরী প্রেয়সীর চোখের জল কে মুছাবে? দানা ঘড়ির দিকে তাকায়, দীর্ঘ আলোচনা পর্ব শেষ হতে হতে রাত দশটা বেজে যায়। ওইদিকে বেয়ারারা আবার রাতের খাবারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একবার মহুয়াকে ফোন করতে হবে, এতখনে নিশ্চয় চাপা উত্তেজনায় বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছে। বিমান আর মোহন কিছু শলা পরামর্শ করার জন্য, মদের গেলাস হাতে নিয়ে উঠে চলে যায়। নয়না আর সিমোন গল্পে ব্যাস্ত হয়ে পরে।
এর মাঝে দানা মহুয়াকে ফোন করে, "কি গো ঘুমালে নাকি?"
দানার কণ্ঠ স্বর শুনে স্বস্তি পায় মহুয়া, বুকের মাঝে বাঁধা রুদ্ধশ্বাস ছেড়ে বলে, "তুমি যেখানে গেছ সেখান থেকে না ফেরা পর্যন্ত আমি ঘুমাতে পারি? কি হল? সব ঠিক ঠাক না গোলমাল?"
দানা মৃদু হেসে বলে, "সব জালে।"
মহুয়া হেসে বলে, "এই না হলে আমার জিত।" বলেই ফোনে একটা দীর্ঘ চুম্বন একে দেয়। "তাড়াতাড়ি বাড়ি আসো। রাত দশ’টা বাজে।"
দানা জানায় এখন রাতের খাবার বাকি তারপরে বাড়ির পথ ধরবে।
সেই শুনে মহুয়া ওকে উত্যক্ত করার জন্য বলে, "হ্যাঁ হ্যাঁ, জানি জানি। নয়নাকে সঙ্গে নিয়ে গেছ। তুমি এক বাঘ আর ও এক বাঘিনী।" দুষ্টুমির হাসি দিয়ে বলে, "দেখো বাবা তোমরা মারামারি খামচা খামচি কর তাতে আসে যায় না তবে আমার গাড়ির যেন কিছু না হয়। গত সপ্তাহে কিন্তু সার্ভিসিং আর ড্রাই ওয়াশ করিয়েছি। যা করার ফাঁকা মাঠে সেরে আসবে।"
দানাও ওকে ক্ষেপানোর জন্য বলে, "নয়নাকে আজকে একদম ফুলটুসি মাল দেখাচ্ছে, ভাবছি ফাঁকা রাস্তায় একটু চটকে আদর করবো।"
মহুয়া রেগে কাঁই, "যদি গায়ে মেয়ের গন্ধ পাই তাহলে ছাল ছাড়িয়ে নুন মাখিয়ে চিবিয়ে খাবো কিন্তু।"
দানা হেসে জিজ্ঞেস করে, "কি খাবে শসা? সবুজ না গাঢ় বাদামী।"
দানার কথার অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে মহুয়ার একবিন্দু কষ্ট হয় না, কপট অভিমানী কণ্ঠে বলে, "আমি আজকে এত কষ্ট করে পরিচর্যা করলাম আর তুমি..... রাতে কিন্তু গেস্ট রুমে শুতে হবে জেনে রেখো।"
ওকে শান্ত করিয়ে বলে, "আচ্ছা বাবা আচ্ছা, নয়নাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়েই তোমার কোলে ঝাঁপ দেব। রুহি কি করছে?"
রুহিকে ফোন ধরিয়ে দেয় মহুয়া। আদো আদো কণ্ঠে কিছুক্ষণ ডাডা আর রুহির বার্তালাপ হয়। অনেক পুতুল কিনেছে, "আইকিম" খেয়েছে, "আন্তেলের" সাথে নাচানাচি করেছে।
মহুয়া সাবধানে বাড়ি ফিরতে বলে। দানা ঘড়ির দিকে তাকায়, বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত একটা বেজে যাবে। এতটা পথ গাড়ি চালিয়ে ক্লান্তি বোধ করবে কিন্তু একবার মহুয়ার মিষ্টি চুমু পেলেই সব ক্লান্তি ভুলে মেতে উঠতে পারে। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বাকি সবার দিকে দেখে, কোথায় কে কি করছে। চোখের সামনে চার বিপক্ষকে একসাথে দেখে বেশ খুশি, সবাইকে মোটামুটি নিজের ফাঁসে আটকাতে পেরেছে। এইবারে জাল গুটিয়ে আনা বাকি। কিছুদিনের মধ্যে জাল গুটাতে শুরু করতে হবে। প্রথমে সিমোনে আর বিমান চন্দ, তারপরে নয়না।