27-08-2020, 03:20 PM
(#০৪)
র্যান্ডলফ চলে যেতেই আমি যতটা সম্ভব জামা কাপড় ঠিক করে দ্রুত পায়ে হেঁটে বাড়ী পৌছলাম। বারান্দায় কেউ ছিল না, পা টিপে টিপে সিড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে গেলাম যাতে মিস ডীন বা মার্থা দেখতে না পায়, নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম।
নিজের দিকে খেয়াল করে দেখি ইস কি করুন অবস্থা আমার কাপড় চোপড়ের। ফ্রকটা হেমের কাছে ছিঁড়ে গেছে, পেছন দিকে ঘাস আর কাদার দাগ, পেটিকোটের ফিতে ছেড়া, সেমিজ আর ড্রয়ার্স দুটোই ছিড়েছে, আমার থাইয়ে কালশিটে পড়েছে, সারা শরীরে অসম্ভব ব্যাথা। জামা কাপড় পালটে বালিশে মাথা গুঁজে শুয়ে কাঁদতে লাগলাম, লজ্জার থেকেও নিজের ওপরে রাগ বেশী হচ্ছিল, র্যান্ডলফকে বিশ্বাস করে কি নির্বুদ্ধিতার পরিচয়ই না দিয়েছি? লোকটা যখন তখন মেয়েদের সম্বন্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করে, আমার বোঝা উচিত ছিল যে এইরকম মানুষকে বিশ্বাস করা যায় না। কি ভেবেছে আমাকে? আমি কি ঐ ধরনের মেয়ে যারা পুরুষ দেখলেই পা ফাঁক করে দেয়? সেই রকম কোন ইঙ্গিত কোনোদিন দিয়েছি কি? আবার বলছে দেখে নেবে, লোকটা যে খারাপ সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই, ঠিক পুলিশের কাছে খবর দেবে, কাঁদছি আর এইসব ভাবছি।
র্যান্ডলফ কি করতে পারে সেকথা ভেবে ভয়ও পাচ্ছিলাম, একবার মনে হল মিস ডীনকে বলি যে র্যান্ডলফ আমাদের আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন চালাবার কথা জানতে পেরেছে, তারপরেই মনে হল সে কি করে সম্ভব? মিস ডীন জানতে চাইবেন র্যান্ডলফ কে? আমার সাথে কি করে আলাপ হল? না না আজকের ঘটনার কথা আমি মরে গেলেও মিস ডীনকে বলতে পারব না, ইস সামান্য নির্বুদ্ধিতার জন্য কি বিপদেই না পড়লাম!
এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই, র্যান্ডলফ নির্ঘাত পুলিশে খবর দেবে আর পুলিশ আমাদের নিয়ে গিয়ে জেলে পুরে দেবে, মনঃশ্চক্ষে দেখতে পেলাম মিস ডীন আর আমি কয়েদীর পোশাক পরে জেলের ভেতরে ঘানি ঘোরাচ্ছি, আমাদের দুজনেরই চুল ছোট করে ছাঁটা।
মার্থা এসে দরজায় টোকা দিল, রাতের খাবার সময় হয়েছে। আমি নীচে বৈঠকখানায় গেলাম, খাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই, তবুও খেতে বসতে হল, মিস ডীন দেখেই বুঝতে পারলেন আমার একটা কিছু হয়েছে, ফ্যাকাশে চেহারা, চোখ লাল, কিছু খাচ্ছি না, জিগ্যেস করলেন কি হয়েছে ডলি? আমি বললাম ভীষন মাথা ধরেছে, কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না। মিস ডীন আমাকে সোফার ওপর শুইয়ে দিয়ে মাথায় ওডিকোলন লাগিয়ে দিলেন, বললেন তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়, ঘুমোলেই মাথা ব্যাথা কমে যাবে।
আমি নিজের ঘরে চলে গেলাম, কিন্তু ঘুমোতে পারলাম না, সারা রাত বিছানায় শুয়ে ছট ফট করলাম, মাঝে একবার তন্দ্রা মত এলো কিন্তু বীভৎস স্বপ্ন দেখে ঘেমে নেয়ে উঠে বসলাম। দেখলাম একটা কদাকার পুরুষ, বিশাল তার ধোন, সে জোর করে আমার কুমারীত্ব হরন করল। সকালবেলা জামা কাপড় পরতে পরতে মনে হল, আজই এই বাড়ীতে শেষ দিন, বিকেলের মধ্যে নিশ্চয় পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যাবে। সারাটা দিন এই শঙ্কার মধ্যেই কাটল, কোনো কাজে মন দিতে পারছি না, বার বার জানলা দিয়ে উঁকি দিচ্ছি, এই বুঝি পুলিশ এল।
পুলিশ এলো না, রাত ন’টার সময় এক পলাতক দাস এল। বেচারা বেশ কয়েকদিন অভুক্ত, আমি আর মিস ডীন ওর সেবা শুশ্রূষা করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম, অল্পক্ষনের জন্যে হলেও আমার মাথা থেকে র্যান্ডলফ আর পুলিশের দুশ্চিন্তা কাটল।
বেশ কয়েকদিন এই ভাবে কেটে গেল, কিছুই হল না, আমার মনে হল, র্যান্ডলফকে যতটা খারাপ ভেবেছিলাম ততটা খারাপ হয়তো সে নয়, এমনি ভয় দেখাচ্ছিল, সত্যি সে পুলিশে খবর দেবে না। কিন্তু ভার্জিনিয়ায় থাকার ইচ্ছে আমার উবে গেছে, আমি মিস ডীনকে বললাম দাসেদের জন্য আমরা অনেক তো করলাম, এইবারে চলুন ফিলাডেলফিয়া ফিরে যাওয়া যাক। মিস ডীন পাত্তাই দিলেন না, উলটে বললেন, আমাদের স্টেশনটা খুবই ভাল চলছে, এই সময় এটাকে বন্ধ করে দেওয়ার কোন মানে হয় না, আমাদের আরো কিছুদিন স্টেশনটা চালানো উচিত।
এইভাবেই দুই সপ্তাহ আরো কেটে গেল, এর মধ্যে তিনজন পলাতক দাস আমাদের স্টেশনে এল, দুজন পুরুষ আর একজন মহিলা, তাদেরকে খাইয়ে দাইয়ে পরবর্তী স্টেশনে পাঠিয়ে দিলাম। ধীরে ধীরে আমার মন থেকে ভয় দূর হল, আগের মতই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলাম। সেদিনের ঘটনার পর আর র্যান্ডলফের সাথে দেখা হয়নি, কিন্তু ঐ ঘটনার কথা কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছিলাম না। যখনই ভাবতাম রাগে দুঃখে শরীর রি রি করত, র্যান্ডলফকে ঘৃণা করতাম, তার মুখ দেখার কোন ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু মানুষ যা ভাবে তা তো হয় না, কয়েকদিনের পরেই আবার র্যান্ডলফের দেখা পেলাম।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ মিস ডীন আর আমি সামনের বারান্দায় বসে আছি, মিস ডীন একটা সুন্দর ছাই রঙের পোষাক পরেছেন, জামা সেলাই করছেন আর আমি ওর সামনে বসে নিজের টুপিটা রিফু করছি। একটু আগেই আমরা চা খেয়েছি, মার্থা রান্না ঘরে চায়ের বাসন ধুচ্ছে। আমার মন মেজাজ সেদিন খুব ভাল ছিল, টুপি সেলাই করতে করতে আমি খামারে কাজ করা কালো মানুষদের একটি গান গুন গুন করছিলাম, গানটির কথা ছিল, "আমাকে সাধের ভার্জিনিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যা"। এখন ভাবলে হাসি পায়, সেদিন ঐ গানটাই কেন গাইছিলাম? ভার্জিনিয়ায় থাকার কোন ইচ্ছেই আমার ছিল না, একবার সেখান থেকে বেরোতে পারলে দ্বিতীয়বার ওখানে যাওয়ার কথা ভাবতাম না, তবুও আমি ঐ গানটাই গাইছিলাম।
হঠাৎ বিকেলের নিস্তব্ধতা খান খান করে ঘোড়ার খুড়ের আওয়াজ আর সেই সাথে মানুষের গলার আওয়াজ কানে এল, তাকিয়ে দেখি আমাদের বাড়ীর রাস্তায় এক দঙ্গল মানুষ আসছে, কয়েকজন ঘোড়ায় চড়ে, বাকীরা পায়ে হেঁটে। মিস ডীন আর আমি অবাক হয়ে দেখছি আর ভাবছি ওরা এখানে কি করছে? আমাদের বাড়ীর রাস্তায় সাধরনতঃ কেউ আসে না? লোকগুলো দেখি আমাদের বাড়ীতেই এল, যারা ঘোড়ায় চড়েছিল, তারা ঘোড়া থেকে নেমে লাগাম বেড়ার সাথে বাঁধল, তারপর সবাই মিলে বারান্দায় উঠে এসে আমাদের দুজনকে ঘিরে দাঁড়াল। সব মিলিয়ে জনা পনের হবে, কাউকেই চিনি না, বেশীর ভাগই দাড়িওয়ালা রুক্ষ গরীব মানুষ, মোটা কাপড়ের পোষাক পরা, প্যান্টের তলাটা বুটজুতোর মধ্যে গোঁজা, মাথায় টুপি, দু একজন অবশ্য ভাল জামা কাপড় পরেছে, দেখে মনে হয় বাকীদের থেকে তাদের অবস্থা ভাল, সবাই মিস ডীন আর আমার দিকে কড়া নজরে তাকিয়ে আছে। অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে উঠল, তখনও জানতাম না লোকগুলো কেন এসেছে, কিন্তু ওদের উদ্দেশ্য যে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ নয় সেটা বুঝতেও অসুবিধা হল না।
মধ্যবয়স্ক একটা মানুষ, যাকে সবাই জ্যাক স্টিভেন্স বলে ডাকছিল, সেই মনে হল পালের গোদা, এগিয়ে এসে মিস ডীনের কাঁধে হাত রেখে বলল, "এই মাগীরা, উঠে দাঁড়া!"
আমরা দুজনেই উঠে দাঁড়ালাম, মিস ডীন খুব শান্ত স্বরে বললেন, "আমি জানতে পারি কি আপনারা হঠাৎ করে আমাদের বাড়ীতে চড়াও হলেন কেন?"
- "ন্যাকা সাজবার দরকার নেই," লোকটি জোরে হেসে উঠল, "তোরা ভাল করেই জানিস আমরা কেন এসেছি?" একটা খুব নোংরা গালি দিয়ে বলল, "আমরা জানতে পেরেছি যে তোরা দুজনে এখানে আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন চালাচ্ছিস, প্রথম দিন থেকেই এই কাজ করছিস আর অনেকগুলো দাসকে পালাতে সাহায্য করেছিল। আমরা দক্ষিনের মানুষরা মোটেই পছন্দ করি না যে উত্তরের অ্যাবলিশনিস্টরা আমাদের দাসেদের ভাগিয়ে নিয়ে যাক। তাদের যদি আমরা ধরতে পারি, তাহলে এমন শাস্তি দিই যাতে আর কোনোদিন এই কাজ না করে।"
বিশ্রী একটা হাসি হেসে লোকটা বলল, "তোদেরও আমরা ধরেছি, এখন তোদের বিচার হবে জজ লিঞ্চের আদালতে। এই যে লোকগুলো আমার সাথে এসেছে, এরা সবাই জুরীর সদস্য, ওরাই ঠিক করবে তোদের কি শাস্তি হবে, কিরে ঠিক বলছি কিনা?" লোকটা তার সাথীদের জিগ্যেস করল।
"হ্যাঁ হ্যাঁ একদম ঠিক বলেছ," সবাই সমস্বরে বলে উঠল। আমি ভয় পেয়ে চেয়ারে বসে পড়লাম, কাল্পনিক এই জাজ লিঞ্চের নামে বীভৎস সব অত্যাচারের গল্প আমি শুনেছি।
মিস ডীন একই রকম শান্ত স্বরে বললেন, "আপনাদের যদি মনে হয় আমরা বেআইনী কাজ করেছি, তাহলে আপনারা পুলিশে খবর দিচ্ছেন না কেন? নিজেদের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে?"
- "চুপ কর মাগী", "আমরা যা ভাল বুঝব তাই করব, তুই বলবার কে?" "তোদের জন্য লিঞ্চের আদালতই ঠিক", "বাজে কথা বলে সময় নস্ট কোরো না স্টিভেন্স, কাজ শুরু কর", ভীড়ের মধ্যে থেকে এই রকম সব কথা ভেসে এল।
- "ঠিক আছে বন্ধুরা, চল বাগানে গিয়ে ঠিক করা যাক এদের নিয়ে কি করা হবে?" স্টিভেন্স বলল, "এরা যে অন্যায় করেছে সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই, আমাদের শুধু ঠিক করতে হবে, এদের কি শাস্তি দেওয়া হবে আর কি ভাবে?"
এই বলে আমাদের দুজনকে বারান্দায় দাঁড় করিয়ে লোকগুলো বাগানে গিয়ে জটলা করতে শুরু করল, ওরা কি বলছিল এত দূর থেকে শোনা যাচ্ছিল না, ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে, গলা শুকিয়ে আসছে, কোনরকমে মিস ডীনকে জিগ্যেস করলাম "ওরা আমাদের সাথে কি করবে, মিস ডীন?"
"আমি জানি না ডলি," মিস ডীন কাছে এসে আমার হাত ধরলেন, "নিজেকে নিয়ে আমি চিন্তিত নই, আমার খুব খারাপ লাগছে তোমার জন্য, তোমাকে এখানে আনাই উচিত হয়নি।"
মিস ডীনের কথা শুনে আমি চুপ করে বসে রইলাম, বাগানে লোকগুলো এখনো কথা বলছে, মনে হচ্ছে শাস্তির পরিমান নিয়ে এক মত হতে পারছে না, এক একটা মুহুর্ত মনে হচ্ছে এক একটা যুগ, শরীর অস্থির হচ্ছে, একবার ঠান্ডা একবার গরম লাগছে।
লোকগুলোর আলোচনা শেষ হল, ওরা বারান্দায় ফিরে এল, স্টিভেন্স লোকটা যেন আদালতের রায় পড়ছে, এই রকম ভঙ্গীতে বলল, "জুরীদের রায় হল তোদের দুজনকে প্রথমে উদোম পাছায় বেত মারা হবে, তারপর তোদের রেইলে* বসান হবে দু ঘন্টার জন্য। আর তোরা আগামী আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে ভার্জিনিয়া ছেড়ে চলে যাবি। আটচল্লিশ ঘন্টা পরেও যদি তোদের এখানে দেখা যায়, তাহলে জজ লিঞ্চ তোদের জন্য আরো কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করবে।"
রায় শুনে আমার মাথা ঘুরে গেল, চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই মনে হল পড়ে যাব, কোনরকমে চেয়ারের পেছনটা ধরে নিজেকে সামলাম, হাত জোড় করে লোকগুলোক বললাম, "আমাদের ক্ষমা করে দিন, দয়া করে বেত মারবেন, এই লজ্জাজনক শাস্তি দেবেন না, দয়া করুন,"
কিন্তু দয়া করবার মেজাজ ওদের কারোরই ছিল না। ভীড়ের মধ্যে থেকে একজন বলল, "চুপ কর মাগী, অ্যাবলিশনিস্টদের সাথে এইরকমই করা উচিত, উদোম পাছায় চাবকে নুন লঙ্কা ছিটিয়ে রেইলে বসিয়ে রাখতে হয়!"
লোকটার কথা শুনে বাকীরা খ্যাক খ্যাক করে হেসে উঠল, এদের কাছে দয়া ভিক্ষা করে কোন লাভ নেই, আমি কাঁদতে কাঁদতে আবার চেয়ারে বসে পড়লাম। মিস ডীনের চেহারাও ফ্যাকাশে হয়ে গেছে, কিন্তু ওর কথা শুনে মনে হল না উনি বিন্দুমাত্র ভয় পেয়েছেন, স্টিভেন্সকে শান্তভাবে বললেন, "আমি শুনেছিলাম দক্ষিনের পুরুষরা মহিলাদের সাথে সব সময় শালীন ব্যবহার করে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুল শুনেছিলাম, কোন শালীন পুরুষ মেয়েদের চাবকানোর কথা ভাবতে পারে না।"
- "শালীনতা ফালিনতা বুঝি না," স্টিভেন্স রুক্ষ স্বরে জবাব দিল, "মেয়ে হয়ে যখন পুরুষের কাজ করছিস, আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন চালাচ্ছিস, তখন পুরুষদের মত শাস্তিও তোদের পেতে হবে!"
স্টীভেন্সের বক্তব্যের সমর্থনে ভীড়ের মধ্যে থেকে নানান নোংরা মন্তব্য শোনা গেল, মিস ডীন বিচলিত না হয়ে বললেন, "দেখুন এই বাড়ীর আমি কর্ত্রী, এখানে যা কিছু হয় আমার হুকুমেই হয়, এই মেয়েটা আমার বেতনভূক কর্মীমাত্র, ও যা কিছু করেছে আমার হুকুমেই করেছে, নিজের ইচ্ছেয় কিছুই করেনি, ওকে অনুগ্রহ করে ছেড়ে দিন।"
- "ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, এই মাগীকেও বেত খেতে হবে," অনেকগুলো মানুষ এক সাথে বলে উঠল। স্টিভেন্স ওদের থামিয়ে দিয়ে বলল, "চুপ কর, আমাকে কথা বলতে দে। দেখুন মিস ডীন আমরা জানি যে আপনিই এই বাড়ীর কর্ত্রী, কিন্তু এই মেয়েটা আপনাকে স্টেশন চালাতে সাহায্য করেছে, কাজেই ওকেও শাস্তি পেতে হবে, তবে হ্যাঁ ওর শাস্তির পরিমান আপনার থেকে কম হবে, কিরে ঠিক বলেছি তো?"
স্টিভেন্স ঘাড় ঘুরিয়ে সাথীদের জিগ্যেস করল।
- "হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক বলেছ", স্টীভেন্সের সাথীরা জবাব দিল, একজন বলে উঠল, "এদের কাজের মেয়েটিকে দেখছি না, সে মাগীরও শাস্তি পাওয়া উচিত!"
- "ঠিক বলেছিস, সেটারও পাছা চাবকানো উচিত," স্টিভেন্স বলল, "তোরা দুজন গিয়ে বাড়ীর ভেতরটা ভাল করে খুঁজে দেখ, মাগী নিশ্চয়ই কোথাও লুকিয়ে আছে।"
দুটো লোক বাড়ীর ভেতরে মার্থাকে খুঁজতে গেল, বাকীরা আমাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে নানা রকম নোংরা মন্তব্য করতে থাকল, শুনে আমার কান লাল হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু মিস ডীন দেখলাম বিকারহীন, হাত দুটো বুকের কাছে জড়ো করে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন, যেন সামনে কাউকেই দেখতে পাচ্ছেন না। পাঁচ মিনিট পরে লোকদুটো ফিরে এসে বলল, "মাগীটাকে পেলাম না, তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম, নিশ্চয়ই জঙ্গলে পালিয়েছে।"
- "বেঁচে গেল, কোই বাত নেহি, নাটকের দুই প্রধান চরিত্রকে পেয়েছি," স্টিভেন্স বলল, "এই দুটোকেই এমন শাস্তি দেব যে হাড়ে হাড়ে টের পাবে এই খেলায় কত মজা-"
- "এমন শাস্তি দাও যাতে বাপের জন্মে আর ভার্জিনিয়া আসার সাহস না পায়," ভীড়ের মধ্যে থেকে একজন বলল, "তাড়াতাড়ি শুরু কর, দেরী করে লাভ নেই", আর একজন বলল।
- "হ্যাঁ শুরু করা যাক," স্টিভেন্স বলল, "বিল তুই যা আস্তাবল থেকে মইটা নিয়ে আয়, আর পিট আর স্যাম তোরা যা, কয়েকটা পাতলা দেখে হিকোরী গাছের ডাল কেটে নিয়ে আয়, ভাল করে ছাল ছাড়িয়ে আনবি, বেশ লকলকে হয় যেন।" শয়তানের হাসি হেসে স্টিভেন্স বলল, "উত্তরের এই মাগীগুলো হিকোরীর বাদাম খেয়েছে নিশ্চয়, কিন্তু ল্যাংটো পাছায় হিকোরীর বেত খেয়েছে বলে মনে হয় না!"
স্টীভেন্সের কথা শুনে বাকীরা হেসে উঠল, আর আমার লজ্জায়, ভয়ে মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করল।
মই আর বেত আনা হল, লোকগুলো বাগানে নেমে গেল, মইটাকে বাইরের দিক থেকে বারান্দার রেলিংএ হেলান দিয়ে দাঁড় করাল। স্টিভেন্স নিজে মইটার পাশ দাঁড়াল, ওর হাতে একটা হিকোরীর বেত, বাকীরা সবাই গোল হয়ে সামনে দাঁড়াল যাতে ভাল করে দেখতে পায়।
"অপরাধীদের নিয়ে আয়," স্টিভেন্স হুকুম দিল।
কয়েকটা লোক আমাদের দুজনকে ধরে বারান্দা থেকে নামিয়ে মইটার কাছে নিয়ে গেল, আমি হাত পা ছুড়ছিলাম আর কাঁদছিলাম, মিস ডীন একবারে শান্ত। স্টিভেন্স মিস ডীনকে বলল, "তুই যখন কর্ত্রী, তোরই আগে শাস্তি হবে", ওকে মইয়ের সাথে বাঁধবার হুকুম দিল।
দুজন লোক মিস ডীনকে ধরে মইয়ের ওপর উপুড় করে শুইয়ে দিল, ওর দুই হাত মাথার ওপরে টেনে কব্জিদুটো মইয়ের সাথে দড়ি দিয়ে বাঁধল, একই ভাবে ওর পাও বেঁধে দেওয়া হল। মিস ডীন বাধা দিলেন না, শুধু হাত পা বাঁধা হয়ে যাওয়ার পর ঘাড় ঘুরিয়ে স্টিভেন্সকে বললেন, "বেত যখন মারবেই, অনুগ্রহ করে জামা কাপড়ের ওপর দিয়ে মারো।"
- "উঁহু তা হবে না", স্টিভেন্স জবাব দিল, "আদালতের হুকুম হয়েছে উদোম পাছায় বেত মারার, তাই হবে।"
যে দুটো লোক মিস ডীনকে বাঁধছিল তাদের বলল, "এই তোরা হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? মাগীর কাপড়গুলো গুটিয়ে ওপরে তোল"।
লোকদুটো মিস ডীনের ফ্রক, পেটিকোট আর সেমিজ গুটিয়ে কোমরের ওপর তুলে বেঁধে দিল। মিস ডীন তলায় আমাদের মতন ড্রয়ার্স পরতেন না, উনি পরতেন টাইট ট্রাউজার্সের মত গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকা একটি নরম কাপড়ের অন্তর্বাস, যাকে প্যান্টালেটস বলা হত। স্টিভেন্স এ জিনিষ দেখেনি, সে অবাক বিস্ময়ে বলে উঠল, "এ মাগী দেখি তলায় সাদা ট্রাউজার্স পরেছে, বাপের জন্মে মেয়েমানুষদের এসব পরতে দেখিনি।"
বাকী লোকগুলোও খুব অবাক হয়েছে, ওদের কথাবার্তা শুনে বুঝলাম ওদের বাড়ীর মেয়েরা ফ্রক আর পেটিকোটের তলায় কোনরকম অন্তর্বাস পরে না, মেয়েদের ড্রয়ার্সের সাথে ওরা পরিচিত নয়।
"দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ট্রাউজার্সটা খুলে দে", স্টিভেন্স হুকুম দিল। মিস ডীন আর একবার ঘাড় ঘুরিয়ে অনুনয়ের সুরে বললেন, "দয়া করে ওটা থাকতে দাও, ওটা আমাকে বাচাবে না, এই লোকগুলোর সামনে আমাকে উলঙ্গ কোরো না"। কিন্তু কে কার কথা শোনে, একটা লোক পেছন থেকে মিস ডীনের পেটের তলায় হাত ঢুকিয়ে প্যান্টালেটসের ফিতে খুলে ওটাকে টেনে নামিয়ে দিল পায়ের গোছ পর্যন্ত। দুটো লোক আমাকে ধরে রেখেছিল, মইটার বেশ কাছে, যাতে আমি সবকিছু দেখতে পাই। প্যান্টালেটসটা খুলে দিতেই মিস ডীনের গাল লজ্জায় লাল হয়ে গেল, উনি চোখ বন্ধ করে মাথা নীচু করলেন। আগেই বলেছি, মিস ডীন ছিলেন লম্বা আর রোগা পাতলা মানুষ, ওর কোমরটা খুবই সরু আর পাছা দুটোও ছোট, অনেকটা বাচ্চা ছেলের পাছার মত, থাই আর পা জোড়া রোগাটে কিন্তু গড়ন খুব সুন্দর, হাতীর দাঁতের মত গায়ের রঙ, মসৃন চামড়া। আশে পাশের লোকগুলোর জিভ দিয়ে নোলা ঝরছে, হাঁ করে দেখছে আর চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে মিস ডীনের অর্ধউলঙ্গ শরীর, স্টিভেন্স উচ্চৈস্বরে হেসে বলল, "যা শালা, মাগীর পাছা দেখ, এমন ছোট পাছা মেয়েমানুষের হয় নাকি? ছোট ছেলেদের পাছা এই রকম হয়। শালা এটা মাগী তো? না কি মরদ?"
স্টিভেন্সের কথায় সবাই হো হো করে হেসে উঠল, একজন বলল, "জ্যাক তুমি তো কাছেই দাঁড়িয়ে আছ, হাত বাড়িয়ে নিজেই যাচাই করে নাও না, মাগী না মরদ?"
"তা মন্দ বলিস নি," স্টিভেন্স যেন ভাজা মাছটি উলটে খেতে জানে না, "এ কথাটি তো আমার মাথায় আসেনি?" বলেই একটা হাত ঢুকিয়ে দিল মিস ডীনের দুই পায়ের ফাঁকে।
মিস ডীন সাথে সাথে চিৎকার করে উঠলেন, "এটা কি হচ্ছে? তোমার সাহস হয় কি করে আমার শরীরে হাত দেওয়ার?" ওর সারা শরীর রাগে লজ্জায় কাঁপছে, "এখুনি হাত সরাও, তোমার বেত মারার কথা, বেত মার আর আমাকে ছেড়ে দাও।"
স্টিভেন্স কোনো পাত্তাই দিল না, ওর হাত এখনো মিস ডীনের দুই পায়ের ফাঁকে, নির্লিপ্ত স্বরে বাকী লোকগুলোর দিকে ফিরে বলল, "না রে এটা একটা মাগী, আমি ওর গুদে হাত দিয়েছি"। তারপরে মিস ডীনকে বলল, "ওখানে হাত দিলে তোর ব্যাথা লাগবে না, আমি আর আমার সাথীরা নেহাতই ভাল মানুষ, না হলে হাতের বদলে ওখানে অন্য কিছু ঢুকত, আমরা সে রকম কিছু করছি না, শুধু জাজ লিঞ্চের আদেশ কার্যকরী করছি। এবারে তোকে বেতই মারব, আর অল্পক্ষনের মধ্যেই বুঝতে পারবি, বেত মারা কাকে বলে?"
এই বলে স্টিভেন্স হাত সরিয়ে নিল, মিস ডীন আবার চোখ বন্ধ করে মাথা নীচু করলেন, নিঃশব্দে শাস্তির অপেক্ষা করতে লাগলেন।
স্টিভেন্স সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাতের বেতটা হাওয়ার মধ্যে দুবার চালালো, সাই সাই আওয়াজ হল, তারপরেই শপাং করে খুব জোরে মিস ডীনের পাছার উপর দিকে বেতের এক ঘা বসিয়ে দিল। মিস ডীন কঁকিয়ে উঠলেন, পাছাটা থর থর করে কেঁপে উঠল, একটা লম্বা লাল দাগ ফুটে উঠল। স্টিভেন্স নিষ্ঠুর ভাবে মিস ডীনের পাছায় বেত মারতে শুরু করল, একটার পর একটা বেতের ঘা দিচ্ছে, উপর থেকে নীচে, দুটো ঘা এক জায়গায় পড়ছে না, শপাং শপাং আওয়াজ হচ্ছে, আর প্রত্যেকটি ঘায়ের সাথে পাছার ওপর লাল দাগ ফুটে উঠছে। মিস ডীন দাঁতে দাঁত চেপে বেতের ঘা সহ্য করছেন, প্রথমবার কঁকিয়ে উঠেছিলেন, তারপর থেকে একটিও আওয়াজ বেরোচ্ছে না, একটা করে ঘা পড়ছে আর তার আওয়াজে আমি কেঁপে কেঁপে উঠছি, অবাক হয়ে দেখছি মিস ডীন এই বীভৎস মার নিঃশব্দে সহ্য করছেন। স্টিভেন্স ধীরে সুস্থে মেরে চলেছে, প্রত্যেকটি ঘায়ের পর একটু সময় নিচ্ছে, তারপরে আর একটি ঘা, পাছার দাবনা দুটো লাল দাগে ভরে যাচ্ছে, একটা করে ঘা পড়ছে, মিস ডীনের শরীর কেঁপে উঠছে, যন্ত্রনায় মুখ বিকৃত হচ্ছে, দু চোখ দিয়ে জলের ধারা নামছে, ক্রমশঃ বেতের দাগগুলো আরো গভীর হচ্ছে, জায়গায় জায়গায় চামড়া ফেটে রক্ত বেরোচ্ছে, বেতের প্রতিটি ঘায়ে মিস ডীন গুঙিয়ে উঠছেন, কিন্ত একবারও চিৎকার করছেন না বা দয়া ভিক্ষা করছেন না।
অবশেষে স্টিভেন্স থামল, হাতের বেতটা ছুঁড়ে ফেলে দিল, আর মিস ডীনের পাছার ওপর ঝুঁকে পরল, যেন নিজের কারিগরি খুঁটিয়ে দেখছে। দেখবার মতই অবস্থা মিস ডীনের পাছার, কোমরের তলা থেকে থাইয়ের উপরিভাগ পর্যন্ত গাঢ় লাল লম্বা লম্বা দাগ, অনেক জায়গা থেকে রক্ত বেরোচ্ছে, কম করে হলেও চল্লিশ কি পঞ্চাশটি বেতের ঘা পড়েছে।
স্টিভেন্স সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নিজের সাথীদের উদ্দেশ্য বলল, "যথেষ্ট হয়েছে, আগামী দু তিন দিন মাগী সোজা হয়ে বসতে পারবে না, আর মনে হয় না বেতেরে দাগ কোনোদিন পুরোপুরি মেলাবে।"
এই বলে স্টিভেন্স মিস ডীনের ফ্রক আর পেটিকোট নামিয়ে দিল, ওর হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিল। মিস ডীন কোনোরকমে সোজা হয়ে দাঁড়ালেন, ওর দুচোখ দিয়ে জলের ধারা নেমেছে, যন্ত্রনায় মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে, হেঁচকি তুলে তুলে কাঁদছেন, প্যান্টালেটসটা গোড়ালির কাছে জড়ো হয়ে আছে। একটু পরে মিস ডীন চোখ মুছে অতি কস্টে নীচু হয়ে নিজের প্যান্টালেটসটা টেনে তুলে ফিতে বাঁধলেন, দুটো লোক ওনাকে ধরে রান্দায় নিয়ে গেল, উনি একটা কাউচ-এর ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন।
____________________________________
* এখানে একটি বেড়ার দুটো খুঁটির মাঝে যে আনুভুমিক আড়কাঠ থাকে তাকে রেইল বলা হচ্ছে। শাস্তি দেওয়ার জন্য নিম্নাঙ্গ অনাবৃত করে এই আড়কাঠের ওপর বসিয়ে রাখা হত। অনেক সময় দুজন মানুষের কাঁধে এইরকম একটা আড়কাঠ রেখে আসামীকে তার ওপর বসিয়ে শহরে ঘোরানো হত। উনবিংশ শতাব্দীর আমেরিকায় শাস্তি দেওয়ার এই পদ্ধতি Riding the rail নামে কুখ্যাত ছিল। ডলি আর মিস ডীনকে এই ভাবে রেইলের ওপর বসিয়ে রাখার বর্ননা পঞ্চম আর ষষ্ঠ কিস্তিতে আছে।
র্যান্ডলফ চলে যেতেই আমি যতটা সম্ভব জামা কাপড় ঠিক করে দ্রুত পায়ে হেঁটে বাড়ী পৌছলাম। বারান্দায় কেউ ছিল না, পা টিপে টিপে সিড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে গেলাম যাতে মিস ডীন বা মার্থা দেখতে না পায়, নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম।
নিজের দিকে খেয়াল করে দেখি ইস কি করুন অবস্থা আমার কাপড় চোপড়ের। ফ্রকটা হেমের কাছে ছিঁড়ে গেছে, পেছন দিকে ঘাস আর কাদার দাগ, পেটিকোটের ফিতে ছেড়া, সেমিজ আর ড্রয়ার্স দুটোই ছিড়েছে, আমার থাইয়ে কালশিটে পড়েছে, সারা শরীরে অসম্ভব ব্যাথা। জামা কাপড় পালটে বালিশে মাথা গুঁজে শুয়ে কাঁদতে লাগলাম, লজ্জার থেকেও নিজের ওপরে রাগ বেশী হচ্ছিল, র্যান্ডলফকে বিশ্বাস করে কি নির্বুদ্ধিতার পরিচয়ই না দিয়েছি? লোকটা যখন তখন মেয়েদের সম্বন্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করে, আমার বোঝা উচিত ছিল যে এইরকম মানুষকে বিশ্বাস করা যায় না। কি ভেবেছে আমাকে? আমি কি ঐ ধরনের মেয়ে যারা পুরুষ দেখলেই পা ফাঁক করে দেয়? সেই রকম কোন ইঙ্গিত কোনোদিন দিয়েছি কি? আবার বলছে দেখে নেবে, লোকটা যে খারাপ সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই, ঠিক পুলিশের কাছে খবর দেবে, কাঁদছি আর এইসব ভাবছি।
র্যান্ডলফ কি করতে পারে সেকথা ভেবে ভয়ও পাচ্ছিলাম, একবার মনে হল মিস ডীনকে বলি যে র্যান্ডলফ আমাদের আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন চালাবার কথা জানতে পেরেছে, তারপরেই মনে হল সে কি করে সম্ভব? মিস ডীন জানতে চাইবেন র্যান্ডলফ কে? আমার সাথে কি করে আলাপ হল? না না আজকের ঘটনার কথা আমি মরে গেলেও মিস ডীনকে বলতে পারব না, ইস সামান্য নির্বুদ্ধিতার জন্য কি বিপদেই না পড়লাম!
এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই, র্যান্ডলফ নির্ঘাত পুলিশে খবর দেবে আর পুলিশ আমাদের নিয়ে গিয়ে জেলে পুরে দেবে, মনঃশ্চক্ষে দেখতে পেলাম মিস ডীন আর আমি কয়েদীর পোশাক পরে জেলের ভেতরে ঘানি ঘোরাচ্ছি, আমাদের দুজনেরই চুল ছোট করে ছাঁটা।
মার্থা এসে দরজায় টোকা দিল, রাতের খাবার সময় হয়েছে। আমি নীচে বৈঠকখানায় গেলাম, খাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই, তবুও খেতে বসতে হল, মিস ডীন দেখেই বুঝতে পারলেন আমার একটা কিছু হয়েছে, ফ্যাকাশে চেহারা, চোখ লাল, কিছু খাচ্ছি না, জিগ্যেস করলেন কি হয়েছে ডলি? আমি বললাম ভীষন মাথা ধরেছে, কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না। মিস ডীন আমাকে সোফার ওপর শুইয়ে দিয়ে মাথায় ওডিকোলন লাগিয়ে দিলেন, বললেন তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়, ঘুমোলেই মাথা ব্যাথা কমে যাবে।
আমি নিজের ঘরে চলে গেলাম, কিন্তু ঘুমোতে পারলাম না, সারা রাত বিছানায় শুয়ে ছট ফট করলাম, মাঝে একবার তন্দ্রা মত এলো কিন্তু বীভৎস স্বপ্ন দেখে ঘেমে নেয়ে উঠে বসলাম। দেখলাম একটা কদাকার পুরুষ, বিশাল তার ধোন, সে জোর করে আমার কুমারীত্ব হরন করল। সকালবেলা জামা কাপড় পরতে পরতে মনে হল, আজই এই বাড়ীতে শেষ দিন, বিকেলের মধ্যে নিশ্চয় পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যাবে। সারাটা দিন এই শঙ্কার মধ্যেই কাটল, কোনো কাজে মন দিতে পারছি না, বার বার জানলা দিয়ে উঁকি দিচ্ছি, এই বুঝি পুলিশ এল।
পুলিশ এলো না, রাত ন’টার সময় এক পলাতক দাস এল। বেচারা বেশ কয়েকদিন অভুক্ত, আমি আর মিস ডীন ওর সেবা শুশ্রূষা করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম, অল্পক্ষনের জন্যে হলেও আমার মাথা থেকে র্যান্ডলফ আর পুলিশের দুশ্চিন্তা কাটল।
বেশ কয়েকদিন এই ভাবে কেটে গেল, কিছুই হল না, আমার মনে হল, র্যান্ডলফকে যতটা খারাপ ভেবেছিলাম ততটা খারাপ হয়তো সে নয়, এমনি ভয় দেখাচ্ছিল, সত্যি সে পুলিশে খবর দেবে না। কিন্তু ভার্জিনিয়ায় থাকার ইচ্ছে আমার উবে গেছে, আমি মিস ডীনকে বললাম দাসেদের জন্য আমরা অনেক তো করলাম, এইবারে চলুন ফিলাডেলফিয়া ফিরে যাওয়া যাক। মিস ডীন পাত্তাই দিলেন না, উলটে বললেন, আমাদের স্টেশনটা খুবই ভাল চলছে, এই সময় এটাকে বন্ধ করে দেওয়ার কোন মানে হয় না, আমাদের আরো কিছুদিন স্টেশনটা চালানো উচিত।
এইভাবেই দুই সপ্তাহ আরো কেটে গেল, এর মধ্যে তিনজন পলাতক দাস আমাদের স্টেশনে এল, দুজন পুরুষ আর একজন মহিলা, তাদেরকে খাইয়ে দাইয়ে পরবর্তী স্টেশনে পাঠিয়ে দিলাম। ধীরে ধীরে আমার মন থেকে ভয় দূর হল, আগের মতই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলাম। সেদিনের ঘটনার পর আর র্যান্ডলফের সাথে দেখা হয়নি, কিন্তু ঐ ঘটনার কথা কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছিলাম না। যখনই ভাবতাম রাগে দুঃখে শরীর রি রি করত, র্যান্ডলফকে ঘৃণা করতাম, তার মুখ দেখার কোন ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু মানুষ যা ভাবে তা তো হয় না, কয়েকদিনের পরেই আবার র্যান্ডলফের দেখা পেলাম।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ মিস ডীন আর আমি সামনের বারান্দায় বসে আছি, মিস ডীন একটা সুন্দর ছাই রঙের পোষাক পরেছেন, জামা সেলাই করছেন আর আমি ওর সামনে বসে নিজের টুপিটা রিফু করছি। একটু আগেই আমরা চা খেয়েছি, মার্থা রান্না ঘরে চায়ের বাসন ধুচ্ছে। আমার মন মেজাজ সেদিন খুব ভাল ছিল, টুপি সেলাই করতে করতে আমি খামারে কাজ করা কালো মানুষদের একটি গান গুন গুন করছিলাম, গানটির কথা ছিল, "আমাকে সাধের ভার্জিনিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যা"। এখন ভাবলে হাসি পায়, সেদিন ঐ গানটাই কেন গাইছিলাম? ভার্জিনিয়ায় থাকার কোন ইচ্ছেই আমার ছিল না, একবার সেখান থেকে বেরোতে পারলে দ্বিতীয়বার ওখানে যাওয়ার কথা ভাবতাম না, তবুও আমি ঐ গানটাই গাইছিলাম।
হঠাৎ বিকেলের নিস্তব্ধতা খান খান করে ঘোড়ার খুড়ের আওয়াজ আর সেই সাথে মানুষের গলার আওয়াজ কানে এল, তাকিয়ে দেখি আমাদের বাড়ীর রাস্তায় এক দঙ্গল মানুষ আসছে, কয়েকজন ঘোড়ায় চড়ে, বাকীরা পায়ে হেঁটে। মিস ডীন আর আমি অবাক হয়ে দেখছি আর ভাবছি ওরা এখানে কি করছে? আমাদের বাড়ীর রাস্তায় সাধরনতঃ কেউ আসে না? লোকগুলো দেখি আমাদের বাড়ীতেই এল, যারা ঘোড়ায় চড়েছিল, তারা ঘোড়া থেকে নেমে লাগাম বেড়ার সাথে বাঁধল, তারপর সবাই মিলে বারান্দায় উঠে এসে আমাদের দুজনকে ঘিরে দাঁড়াল। সব মিলিয়ে জনা পনের হবে, কাউকেই চিনি না, বেশীর ভাগই দাড়িওয়ালা রুক্ষ গরীব মানুষ, মোটা কাপড়ের পোষাক পরা, প্যান্টের তলাটা বুটজুতোর মধ্যে গোঁজা, মাথায় টুপি, দু একজন অবশ্য ভাল জামা কাপড় পরেছে, দেখে মনে হয় বাকীদের থেকে তাদের অবস্থা ভাল, সবাই মিস ডীন আর আমার দিকে কড়া নজরে তাকিয়ে আছে। অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে উঠল, তখনও জানতাম না লোকগুলো কেন এসেছে, কিন্তু ওদের উদ্দেশ্য যে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ নয় সেটা বুঝতেও অসুবিধা হল না।
মধ্যবয়স্ক একটা মানুষ, যাকে সবাই জ্যাক স্টিভেন্স বলে ডাকছিল, সেই মনে হল পালের গোদা, এগিয়ে এসে মিস ডীনের কাঁধে হাত রেখে বলল, "এই মাগীরা, উঠে দাঁড়া!"
আমরা দুজনেই উঠে দাঁড়ালাম, মিস ডীন খুব শান্ত স্বরে বললেন, "আমি জানতে পারি কি আপনারা হঠাৎ করে আমাদের বাড়ীতে চড়াও হলেন কেন?"
- "ন্যাকা সাজবার দরকার নেই," লোকটি জোরে হেসে উঠল, "তোরা ভাল করেই জানিস আমরা কেন এসেছি?" একটা খুব নোংরা গালি দিয়ে বলল, "আমরা জানতে পেরেছি যে তোরা দুজনে এখানে আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন চালাচ্ছিস, প্রথম দিন থেকেই এই কাজ করছিস আর অনেকগুলো দাসকে পালাতে সাহায্য করেছিল। আমরা দক্ষিনের মানুষরা মোটেই পছন্দ করি না যে উত্তরের অ্যাবলিশনিস্টরা আমাদের দাসেদের ভাগিয়ে নিয়ে যাক। তাদের যদি আমরা ধরতে পারি, তাহলে এমন শাস্তি দিই যাতে আর কোনোদিন এই কাজ না করে।"
বিশ্রী একটা হাসি হেসে লোকটা বলল, "তোদেরও আমরা ধরেছি, এখন তোদের বিচার হবে জজ লিঞ্চের আদালতে। এই যে লোকগুলো আমার সাথে এসেছে, এরা সবাই জুরীর সদস্য, ওরাই ঠিক করবে তোদের কি শাস্তি হবে, কিরে ঠিক বলছি কিনা?" লোকটা তার সাথীদের জিগ্যেস করল।
"হ্যাঁ হ্যাঁ একদম ঠিক বলেছ," সবাই সমস্বরে বলে উঠল। আমি ভয় পেয়ে চেয়ারে বসে পড়লাম, কাল্পনিক এই জাজ লিঞ্চের নামে বীভৎস সব অত্যাচারের গল্প আমি শুনেছি।
মিস ডীন একই রকম শান্ত স্বরে বললেন, "আপনাদের যদি মনে হয় আমরা বেআইনী কাজ করেছি, তাহলে আপনারা পুলিশে খবর দিচ্ছেন না কেন? নিজেদের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে?"
- "চুপ কর মাগী", "আমরা যা ভাল বুঝব তাই করব, তুই বলবার কে?" "তোদের জন্য লিঞ্চের আদালতই ঠিক", "বাজে কথা বলে সময় নস্ট কোরো না স্টিভেন্স, কাজ শুরু কর", ভীড়ের মধ্যে থেকে এই রকম সব কথা ভেসে এল।
- "ঠিক আছে বন্ধুরা, চল বাগানে গিয়ে ঠিক করা যাক এদের নিয়ে কি করা হবে?" স্টিভেন্স বলল, "এরা যে অন্যায় করেছে সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই, আমাদের শুধু ঠিক করতে হবে, এদের কি শাস্তি দেওয়া হবে আর কি ভাবে?"
এই বলে আমাদের দুজনকে বারান্দায় দাঁড় করিয়ে লোকগুলো বাগানে গিয়ে জটলা করতে শুরু করল, ওরা কি বলছিল এত দূর থেকে শোনা যাচ্ছিল না, ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে, গলা শুকিয়ে আসছে, কোনরকমে মিস ডীনকে জিগ্যেস করলাম "ওরা আমাদের সাথে কি করবে, মিস ডীন?"
"আমি জানি না ডলি," মিস ডীন কাছে এসে আমার হাত ধরলেন, "নিজেকে নিয়ে আমি চিন্তিত নই, আমার খুব খারাপ লাগছে তোমার জন্য, তোমাকে এখানে আনাই উচিত হয়নি।"
মিস ডীনের কথা শুনে আমি চুপ করে বসে রইলাম, বাগানে লোকগুলো এখনো কথা বলছে, মনে হচ্ছে শাস্তির পরিমান নিয়ে এক মত হতে পারছে না, এক একটা মুহুর্ত মনে হচ্ছে এক একটা যুগ, শরীর অস্থির হচ্ছে, একবার ঠান্ডা একবার গরম লাগছে।
লোকগুলোর আলোচনা শেষ হল, ওরা বারান্দায় ফিরে এল, স্টিভেন্স লোকটা যেন আদালতের রায় পড়ছে, এই রকম ভঙ্গীতে বলল, "জুরীদের রায় হল তোদের দুজনকে প্রথমে উদোম পাছায় বেত মারা হবে, তারপর তোদের রেইলে* বসান হবে দু ঘন্টার জন্য। আর তোরা আগামী আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে ভার্জিনিয়া ছেড়ে চলে যাবি। আটচল্লিশ ঘন্টা পরেও যদি তোদের এখানে দেখা যায়, তাহলে জজ লিঞ্চ তোদের জন্য আরো কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করবে।"
রায় শুনে আমার মাথা ঘুরে গেল, চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই মনে হল পড়ে যাব, কোনরকমে চেয়ারের পেছনটা ধরে নিজেকে সামলাম, হাত জোড় করে লোকগুলোক বললাম, "আমাদের ক্ষমা করে দিন, দয়া করে বেত মারবেন, এই লজ্জাজনক শাস্তি দেবেন না, দয়া করুন,"
কিন্তু দয়া করবার মেজাজ ওদের কারোরই ছিল না। ভীড়ের মধ্যে থেকে একজন বলল, "চুপ কর মাগী, অ্যাবলিশনিস্টদের সাথে এইরকমই করা উচিত, উদোম পাছায় চাবকে নুন লঙ্কা ছিটিয়ে রেইলে বসিয়ে রাখতে হয়!"
লোকটার কথা শুনে বাকীরা খ্যাক খ্যাক করে হেসে উঠল, এদের কাছে দয়া ভিক্ষা করে কোন লাভ নেই, আমি কাঁদতে কাঁদতে আবার চেয়ারে বসে পড়লাম। মিস ডীনের চেহারাও ফ্যাকাশে হয়ে গেছে, কিন্তু ওর কথা শুনে মনে হল না উনি বিন্দুমাত্র ভয় পেয়েছেন, স্টিভেন্সকে শান্তভাবে বললেন, "আমি শুনেছিলাম দক্ষিনের পুরুষরা মহিলাদের সাথে সব সময় শালীন ব্যবহার করে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুল শুনেছিলাম, কোন শালীন পুরুষ মেয়েদের চাবকানোর কথা ভাবতে পারে না।"
- "শালীনতা ফালিনতা বুঝি না," স্টিভেন্স রুক্ষ স্বরে জবাব দিল, "মেয়ে হয়ে যখন পুরুষের কাজ করছিস, আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন চালাচ্ছিস, তখন পুরুষদের মত শাস্তিও তোদের পেতে হবে!"
স্টীভেন্সের বক্তব্যের সমর্থনে ভীড়ের মধ্যে থেকে নানান নোংরা মন্তব্য শোনা গেল, মিস ডীন বিচলিত না হয়ে বললেন, "দেখুন এই বাড়ীর আমি কর্ত্রী, এখানে যা কিছু হয় আমার হুকুমেই হয়, এই মেয়েটা আমার বেতনভূক কর্মীমাত্র, ও যা কিছু করেছে আমার হুকুমেই করেছে, নিজের ইচ্ছেয় কিছুই করেনি, ওকে অনুগ্রহ করে ছেড়ে দিন।"
- "ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, এই মাগীকেও বেত খেতে হবে," অনেকগুলো মানুষ এক সাথে বলে উঠল। স্টিভেন্স ওদের থামিয়ে দিয়ে বলল, "চুপ কর, আমাকে কথা বলতে দে। দেখুন মিস ডীন আমরা জানি যে আপনিই এই বাড়ীর কর্ত্রী, কিন্তু এই মেয়েটা আপনাকে স্টেশন চালাতে সাহায্য করেছে, কাজেই ওকেও শাস্তি পেতে হবে, তবে হ্যাঁ ওর শাস্তির পরিমান আপনার থেকে কম হবে, কিরে ঠিক বলেছি তো?"
স্টিভেন্স ঘাড় ঘুরিয়ে সাথীদের জিগ্যেস করল।
- "হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক বলেছ", স্টীভেন্সের সাথীরা জবাব দিল, একজন বলে উঠল, "এদের কাজের মেয়েটিকে দেখছি না, সে মাগীরও শাস্তি পাওয়া উচিত!"
- "ঠিক বলেছিস, সেটারও পাছা চাবকানো উচিত," স্টিভেন্স বলল, "তোরা দুজন গিয়ে বাড়ীর ভেতরটা ভাল করে খুঁজে দেখ, মাগী নিশ্চয়ই কোথাও লুকিয়ে আছে।"
দুটো লোক বাড়ীর ভেতরে মার্থাকে খুঁজতে গেল, বাকীরা আমাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে নানা রকম নোংরা মন্তব্য করতে থাকল, শুনে আমার কান লাল হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু মিস ডীন দেখলাম বিকারহীন, হাত দুটো বুকের কাছে জড়ো করে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন, যেন সামনে কাউকেই দেখতে পাচ্ছেন না। পাঁচ মিনিট পরে লোকদুটো ফিরে এসে বলল, "মাগীটাকে পেলাম না, তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম, নিশ্চয়ই জঙ্গলে পালিয়েছে।"
- "বেঁচে গেল, কোই বাত নেহি, নাটকের দুই প্রধান চরিত্রকে পেয়েছি," স্টিভেন্স বলল, "এই দুটোকেই এমন শাস্তি দেব যে হাড়ে হাড়ে টের পাবে এই খেলায় কত মজা-"
- "এমন শাস্তি দাও যাতে বাপের জন্মে আর ভার্জিনিয়া আসার সাহস না পায়," ভীড়ের মধ্যে থেকে একজন বলল, "তাড়াতাড়ি শুরু কর, দেরী করে লাভ নেই", আর একজন বলল।
- "হ্যাঁ শুরু করা যাক," স্টিভেন্স বলল, "বিল তুই যা আস্তাবল থেকে মইটা নিয়ে আয়, আর পিট আর স্যাম তোরা যা, কয়েকটা পাতলা দেখে হিকোরী গাছের ডাল কেটে নিয়ে আয়, ভাল করে ছাল ছাড়িয়ে আনবি, বেশ লকলকে হয় যেন।" শয়তানের হাসি হেসে স্টিভেন্স বলল, "উত্তরের এই মাগীগুলো হিকোরীর বাদাম খেয়েছে নিশ্চয়, কিন্তু ল্যাংটো পাছায় হিকোরীর বেত খেয়েছে বলে মনে হয় না!"
স্টীভেন্সের কথা শুনে বাকীরা হেসে উঠল, আর আমার লজ্জায়, ভয়ে মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করল।
মই আর বেত আনা হল, লোকগুলো বাগানে নেমে গেল, মইটাকে বাইরের দিক থেকে বারান্দার রেলিংএ হেলান দিয়ে দাঁড় করাল। স্টিভেন্স নিজে মইটার পাশ দাঁড়াল, ওর হাতে একটা হিকোরীর বেত, বাকীরা সবাই গোল হয়ে সামনে দাঁড়াল যাতে ভাল করে দেখতে পায়।
"অপরাধীদের নিয়ে আয়," স্টিভেন্স হুকুম দিল।
কয়েকটা লোক আমাদের দুজনকে ধরে বারান্দা থেকে নামিয়ে মইটার কাছে নিয়ে গেল, আমি হাত পা ছুড়ছিলাম আর কাঁদছিলাম, মিস ডীন একবারে শান্ত। স্টিভেন্স মিস ডীনকে বলল, "তুই যখন কর্ত্রী, তোরই আগে শাস্তি হবে", ওকে মইয়ের সাথে বাঁধবার হুকুম দিল।
দুজন লোক মিস ডীনকে ধরে মইয়ের ওপর উপুড় করে শুইয়ে দিল, ওর দুই হাত মাথার ওপরে টেনে কব্জিদুটো মইয়ের সাথে দড়ি দিয়ে বাঁধল, একই ভাবে ওর পাও বেঁধে দেওয়া হল। মিস ডীন বাধা দিলেন না, শুধু হাত পা বাঁধা হয়ে যাওয়ার পর ঘাড় ঘুরিয়ে স্টিভেন্সকে বললেন, "বেত যখন মারবেই, অনুগ্রহ করে জামা কাপড়ের ওপর দিয়ে মারো।"
- "উঁহু তা হবে না", স্টিভেন্স জবাব দিল, "আদালতের হুকুম হয়েছে উদোম পাছায় বেত মারার, তাই হবে।"
যে দুটো লোক মিস ডীনকে বাঁধছিল তাদের বলল, "এই তোরা হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? মাগীর কাপড়গুলো গুটিয়ে ওপরে তোল"।
লোকদুটো মিস ডীনের ফ্রক, পেটিকোট আর সেমিজ গুটিয়ে কোমরের ওপর তুলে বেঁধে দিল। মিস ডীন তলায় আমাদের মতন ড্রয়ার্স পরতেন না, উনি পরতেন টাইট ট্রাউজার্সের মত গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকা একটি নরম কাপড়ের অন্তর্বাস, যাকে প্যান্টালেটস বলা হত। স্টিভেন্স এ জিনিষ দেখেনি, সে অবাক বিস্ময়ে বলে উঠল, "এ মাগী দেখি তলায় সাদা ট্রাউজার্স পরেছে, বাপের জন্মে মেয়েমানুষদের এসব পরতে দেখিনি।"
বাকী লোকগুলোও খুব অবাক হয়েছে, ওদের কথাবার্তা শুনে বুঝলাম ওদের বাড়ীর মেয়েরা ফ্রক আর পেটিকোটের তলায় কোনরকম অন্তর্বাস পরে না, মেয়েদের ড্রয়ার্সের সাথে ওরা পরিচিত নয়।
"দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ট্রাউজার্সটা খুলে দে", স্টিভেন্স হুকুম দিল। মিস ডীন আর একবার ঘাড় ঘুরিয়ে অনুনয়ের সুরে বললেন, "দয়া করে ওটা থাকতে দাও, ওটা আমাকে বাচাবে না, এই লোকগুলোর সামনে আমাকে উলঙ্গ কোরো না"। কিন্তু কে কার কথা শোনে, একটা লোক পেছন থেকে মিস ডীনের পেটের তলায় হাত ঢুকিয়ে প্যান্টালেটসের ফিতে খুলে ওটাকে টেনে নামিয়ে দিল পায়ের গোছ পর্যন্ত। দুটো লোক আমাকে ধরে রেখেছিল, মইটার বেশ কাছে, যাতে আমি সবকিছু দেখতে পাই। প্যান্টালেটসটা খুলে দিতেই মিস ডীনের গাল লজ্জায় লাল হয়ে গেল, উনি চোখ বন্ধ করে মাথা নীচু করলেন। আগেই বলেছি, মিস ডীন ছিলেন লম্বা আর রোগা পাতলা মানুষ, ওর কোমরটা খুবই সরু আর পাছা দুটোও ছোট, অনেকটা বাচ্চা ছেলের পাছার মত, থাই আর পা জোড়া রোগাটে কিন্তু গড়ন খুব সুন্দর, হাতীর দাঁতের মত গায়ের রঙ, মসৃন চামড়া। আশে পাশের লোকগুলোর জিভ দিয়ে নোলা ঝরছে, হাঁ করে দেখছে আর চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে মিস ডীনের অর্ধউলঙ্গ শরীর, স্টিভেন্স উচ্চৈস্বরে হেসে বলল, "যা শালা, মাগীর পাছা দেখ, এমন ছোট পাছা মেয়েমানুষের হয় নাকি? ছোট ছেলেদের পাছা এই রকম হয়। শালা এটা মাগী তো? না কি মরদ?"
স্টিভেন্সের কথায় সবাই হো হো করে হেসে উঠল, একজন বলল, "জ্যাক তুমি তো কাছেই দাঁড়িয়ে আছ, হাত বাড়িয়ে নিজেই যাচাই করে নাও না, মাগী না মরদ?"
"তা মন্দ বলিস নি," স্টিভেন্স যেন ভাজা মাছটি উলটে খেতে জানে না, "এ কথাটি তো আমার মাথায় আসেনি?" বলেই একটা হাত ঢুকিয়ে দিল মিস ডীনের দুই পায়ের ফাঁকে।
মিস ডীন সাথে সাথে চিৎকার করে উঠলেন, "এটা কি হচ্ছে? তোমার সাহস হয় কি করে আমার শরীরে হাত দেওয়ার?" ওর সারা শরীর রাগে লজ্জায় কাঁপছে, "এখুনি হাত সরাও, তোমার বেত মারার কথা, বেত মার আর আমাকে ছেড়ে দাও।"
স্টিভেন্স কোনো পাত্তাই দিল না, ওর হাত এখনো মিস ডীনের দুই পায়ের ফাঁকে, নির্লিপ্ত স্বরে বাকী লোকগুলোর দিকে ফিরে বলল, "না রে এটা একটা মাগী, আমি ওর গুদে হাত দিয়েছি"। তারপরে মিস ডীনকে বলল, "ওখানে হাত দিলে তোর ব্যাথা লাগবে না, আমি আর আমার সাথীরা নেহাতই ভাল মানুষ, না হলে হাতের বদলে ওখানে অন্য কিছু ঢুকত, আমরা সে রকম কিছু করছি না, শুধু জাজ লিঞ্চের আদেশ কার্যকরী করছি। এবারে তোকে বেতই মারব, আর অল্পক্ষনের মধ্যেই বুঝতে পারবি, বেত মারা কাকে বলে?"
এই বলে স্টিভেন্স হাত সরিয়ে নিল, মিস ডীন আবার চোখ বন্ধ করে মাথা নীচু করলেন, নিঃশব্দে শাস্তির অপেক্ষা করতে লাগলেন।
স্টিভেন্স সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাতের বেতটা হাওয়ার মধ্যে দুবার চালালো, সাই সাই আওয়াজ হল, তারপরেই শপাং করে খুব জোরে মিস ডীনের পাছার উপর দিকে বেতের এক ঘা বসিয়ে দিল। মিস ডীন কঁকিয়ে উঠলেন, পাছাটা থর থর করে কেঁপে উঠল, একটা লম্বা লাল দাগ ফুটে উঠল। স্টিভেন্স নিষ্ঠুর ভাবে মিস ডীনের পাছায় বেত মারতে শুরু করল, একটার পর একটা বেতের ঘা দিচ্ছে, উপর থেকে নীচে, দুটো ঘা এক জায়গায় পড়ছে না, শপাং শপাং আওয়াজ হচ্ছে, আর প্রত্যেকটি ঘায়ের সাথে পাছার ওপর লাল দাগ ফুটে উঠছে। মিস ডীন দাঁতে দাঁত চেপে বেতের ঘা সহ্য করছেন, প্রথমবার কঁকিয়ে উঠেছিলেন, তারপর থেকে একটিও আওয়াজ বেরোচ্ছে না, একটা করে ঘা পড়ছে আর তার আওয়াজে আমি কেঁপে কেঁপে উঠছি, অবাক হয়ে দেখছি মিস ডীন এই বীভৎস মার নিঃশব্দে সহ্য করছেন। স্টিভেন্স ধীরে সুস্থে মেরে চলেছে, প্রত্যেকটি ঘায়ের পর একটু সময় নিচ্ছে, তারপরে আর একটি ঘা, পাছার দাবনা দুটো লাল দাগে ভরে যাচ্ছে, একটা করে ঘা পড়ছে, মিস ডীনের শরীর কেঁপে উঠছে, যন্ত্রনায় মুখ বিকৃত হচ্ছে, দু চোখ দিয়ে জলের ধারা নামছে, ক্রমশঃ বেতের দাগগুলো আরো গভীর হচ্ছে, জায়গায় জায়গায় চামড়া ফেটে রক্ত বেরোচ্ছে, বেতের প্রতিটি ঘায়ে মিস ডীন গুঙিয়ে উঠছেন, কিন্ত একবারও চিৎকার করছেন না বা দয়া ভিক্ষা করছেন না।
অবশেষে স্টিভেন্স থামল, হাতের বেতটা ছুঁড়ে ফেলে দিল, আর মিস ডীনের পাছার ওপর ঝুঁকে পরল, যেন নিজের কারিগরি খুঁটিয়ে দেখছে। দেখবার মতই অবস্থা মিস ডীনের পাছার, কোমরের তলা থেকে থাইয়ের উপরিভাগ পর্যন্ত গাঢ় লাল লম্বা লম্বা দাগ, অনেক জায়গা থেকে রক্ত বেরোচ্ছে, কম করে হলেও চল্লিশ কি পঞ্চাশটি বেতের ঘা পড়েছে।
স্টিভেন্স সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নিজের সাথীদের উদ্দেশ্য বলল, "যথেষ্ট হয়েছে, আগামী দু তিন দিন মাগী সোজা হয়ে বসতে পারবে না, আর মনে হয় না বেতেরে দাগ কোনোদিন পুরোপুরি মেলাবে।"
এই বলে স্টিভেন্স মিস ডীনের ফ্রক আর পেটিকোট নামিয়ে দিল, ওর হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিল। মিস ডীন কোনোরকমে সোজা হয়ে দাঁড়ালেন, ওর দুচোখ দিয়ে জলের ধারা নেমেছে, যন্ত্রনায় মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে, হেঁচকি তুলে তুলে কাঁদছেন, প্যান্টালেটসটা গোড়ালির কাছে জড়ো হয়ে আছে। একটু পরে মিস ডীন চোখ মুছে অতি কস্টে নীচু হয়ে নিজের প্যান্টালেটসটা টেনে তুলে ফিতে বাঁধলেন, দুটো লোক ওনাকে ধরে রান্দায় নিয়ে গেল, উনি একটা কাউচ-এর ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন।
____________________________________
* এখানে একটি বেড়ার দুটো খুঁটির মাঝে যে আনুভুমিক আড়কাঠ থাকে তাকে রেইল বলা হচ্ছে। শাস্তি দেওয়ার জন্য নিম্নাঙ্গ অনাবৃত করে এই আড়কাঠের ওপর বসিয়ে রাখা হত। অনেক সময় দুজন মানুষের কাঁধে এইরকম একটা আড়কাঠ রেখে আসামীকে তার ওপর বসিয়ে শহরে ঘোরানো হত। উনবিংশ শতাব্দীর আমেরিকায় শাস্তি দেওয়ার এই পদ্ধতি Riding the rail নামে কুখ্যাত ছিল। ডলি আর মিস ডীনকে এই ভাবে রেইলের ওপর বসিয়ে রাখার বর্ননা পঞ্চম আর ষষ্ঠ কিস্তিতে আছে।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!