26-08-2020, 03:35 PM
রিতু সাগ্নিকের ঘরে ঢুকলো। সাগ্নিক রিতুকে
চেয়ারে বসতে দিয়ে নিজে বিছানায় বসলো।
ছোট্টো এক কামরার ঘর।
সাগ্নিক- বলো বৌদি।
রিতু- কি বলি। আসলে তোমার ব্যবসা কিরকম
চলছে?
সাগ্নিক- চলছে তোমাদের কৃপাই ভালোই।
কেনো বলোতো?
রিতু- তুমি কি জানো পাশের মোড়ে একটা হোম
ডেলিভারি ব্যবসার দোকান খুলেছে কয়েকজন
মিলে?
সাগ্নিক- হমমম। দেখেছি। আমার সাথে
যোগাযোগও করেছিলো। কিন্তু আমি না করে
দিয়েছি। তুমি খুব ভালো রাঁধো বৌদি।
রিতু- আমি একলা মেয়েমানুষ। কতদুরই বা দৌঁড়াতে পারি
বলো। ওরা ছেলেমানুষ। সাইকেল/বাইক নিয়ে
দৌঁড়াচ্ছে। আমার কয়েকজন কাস্টমারও হাতছাড়া
হয়েছে। ফলে ব্যবসা বেশ মন্দা।
সাগ্নিক- এ বাবা! এটা তো জানতাম না৷
রিতু- কাল দুর্গাষষ্ঠী। এখনও ছেলেটাকে জামা
দিতে পারিনি।
সাগ্নিক- যাহ! এতো খারাপ অবস্থা চলছে? বলোনি
তো কখনও।
রিতু- কাকে বলবো বলো? আমার আপন তো
কেউই নেই। অনেক ভেবেচিন্তে
তোমাকে বললাম। কারণ তুমিও অভাগী ছেলে।
কষ্ট করে বড় হচ্ছো।
সাগ্নিক- নিশ্চিন্তে বৌদি। তুমি আমায় নিশ্চিন্তে সব
বলতে পারো। আমিও একজন কাছের মানুষ
পাবো। তোমার ছেলে, সমীর, সে
কোথায়?৷ একা আছে বাড়িতে?
রিতু- না। ওর কাকু এসে নিয়ে গেলো বিকেলে।
পূজোয় জামাকাপড় কিনে দেবে। দুমাস ভাড়া দিতে
পারিনি। এ-মাসে সব মিটিয়ে দিলাম। এখন একদম হাত
ফাঁকা। তাই বলছিলাম তোমার কাছে অন্য কোনো
কাজের খোঁজ আছে কি?
সাগ্নিক চুপ হয়ে গেলো। সত্যিই খুব কষ্টে
আছে রিতু বৌদি। একটু ভাবলো।
সাগ্নিক- সেরকম কিছু নেই। এবার তাহলে খোঁজ
করতে হবে বৌদি।
রিতু- আচ্ছা খোঁজ কোরো তো। উপকার হয়।
আজ আসি।
সাগ্নিক- দাঁড়াও বৌদি।
রিতু- কি?
সাগ্নিক- তুমি আমাকে আপন বললে, তারপরও চুপ
থাকা অমানুষিকতা। আমি সমীরের ড্রেসের টাকা
দিচ্ছি।
রিতু- না না। তা হয় না।
সাগ্নিক- বৌদি। কিচ্ছু হবে না। তুমি পরে শোধ করে
দিয়ো।
রিতু- কাজই নেই আমার সাগ্নিক আর আমি শোধ
করবো?
সাগ্নিক- আজ নেই। কাল তো হবে না কি? তাই
বলে বাচ্চাটা পূজোয় নতুন পোশাক পড়বে না?
রিতু- দেবে তো ওর কাকু।
সাগ্নিক- দিক। তুমিও দাও। না দিতে পেরে তোমারও
মন খারাপ লাগছে বৌদি। আমি দিচ্ছি। তুমি পরে শোধ
দিও।
রিতু- কিন্তু।
সাগ্নিক- কোনো কিন্তু নয়। চলো। বাজারে যাই।
রিতু- তোমার সাথে? না লোকে নানা কথা বলবে।
সাগ্নিক- বৌদি, লোকের কথা চিন্তা করতে হবে না।
লোক তোমাকে খাওয়ায় না পড়ায় শুনি। নিজের
জীবন নিজের মতো করে বাঁচছো। তোমার
যা ইচ্ছে তুমি করবে।
বহু কথায় রিতুকে মানালো সাগ্নিক। তারপর দু’জনে
বাজারে গেলো। সমীরের জন্য তো
কিনলোই। সাথে রিতুকেও একটা শাড়ি কিনে
দিলো। নিজেও কিনলো সাগ্নিক। গরীবের
বাজার। তাও ২০০০ টাকা চলে গেলো। সাগ্নিকের
কাছে যে খুব বেশী টাকা আছে তা নয়। তবু
২০০০ টাকাও অনেক সাগ্নিকের। তবে ভালো
লাগলো। অনেকদিন পর একটু অন্যরকম ফিলিংস
হলো সাগ্নিকের। নয়তো কল দেওয়া
মেসিনের মতো হয়ে যাচ্ছিলো। রিতুকে ফুচকা
খাওয়ালো।
দু’জনে অনেক হাসলো, গল্প করলো। রিতুও
বেশ প্রাণবন্ত। চারদিকের উৎসবমুখর পরিবেশে
ওদের জীবনের দুঃখ, দুর্দশা, গ্লানিও যেন আজ
মলিন। এটাই তো উৎসবের পাওনা। সাগ্নিক
টোটো নিতে চাইলেও রিতু না করলো।
অনেক টাকা খরচ হয়েছে। হেঁটেই ফিরবে।
সাগ্নিকেরও আপত্তি নেই। দু’জনে হাঁটতে
হাঁটতে বাড়ি ফিরলো। সাগ্নিক রিতুকে তার ঘরে
পৌঁছে দিলো। রিতু সাগ্নিককে ঘরে ডাকলো।
ক্লান্ত বেশ দু’জনে। একটু সরবত বানালো রিতু।
দু’জনে ঢকঢক করে খেয়ে ফেললো
একবারে।
সাগ্নিক- তাহলে এবার আসি বৌদি।
রিতু- সাগ্নিক। অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাগ্নিক- কেনো?
রিতু- জীবনে বাঁচার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছিলাম।
মনে হতো আমাদের জন্য পৃথিবীটা নয়। কিন্তু
তুমি দেখিয়ে দিলে ছোটো ছোটো
আনন্দগুলোই অনেক।
সাগ্নিক- বৌদি। টাকা থাকলেই সব হয় না। আসল হলো
সঙ্গী। আজ আমারও ভীষণ ভালো
লেগেছে। আর নিজেকে গরীব ভাববে না।
শুধু ভাববে তুমি যেখানে ফুচকা খেয়েছো, লাখ
টাকার মালিকেরাও সেখানেই ফুচকা খায়!
রিতু- যাহ! এটা তো ভেবে দেখিনি।
সাগ্নিক- ভাবতে হবে। জীবনটাকে এভাবেই
ভাবতে হবে। আজ কি আমার কাছে প্রচুর টাকা
আছে? না। আমার কাছে হাজার তিনেক ছিলো। তাই
বলে কি আমি তোমার মতো করে ঘুরে
বেড়াই? আমি রাজার মতো ঘুরি। তোমার রাণীর
মতো ঘোরা উচিত।
রিতু- তাহলেই হয়েছে।
চেয়ারে বসতে দিয়ে নিজে বিছানায় বসলো।
ছোট্টো এক কামরার ঘর।
সাগ্নিক- বলো বৌদি।
রিতু- কি বলি। আসলে তোমার ব্যবসা কিরকম
চলছে?
সাগ্নিক- চলছে তোমাদের কৃপাই ভালোই।
কেনো বলোতো?
রিতু- তুমি কি জানো পাশের মোড়ে একটা হোম
ডেলিভারি ব্যবসার দোকান খুলেছে কয়েকজন
মিলে?
সাগ্নিক- হমমম। দেখেছি। আমার সাথে
যোগাযোগও করেছিলো। কিন্তু আমি না করে
দিয়েছি। তুমি খুব ভালো রাঁধো বৌদি।
রিতু- আমি একলা মেয়েমানুষ। কতদুরই বা দৌঁড়াতে পারি
বলো। ওরা ছেলেমানুষ। সাইকেল/বাইক নিয়ে
দৌঁড়াচ্ছে। আমার কয়েকজন কাস্টমারও হাতছাড়া
হয়েছে। ফলে ব্যবসা বেশ মন্দা।
সাগ্নিক- এ বাবা! এটা তো জানতাম না৷
রিতু- কাল দুর্গাষষ্ঠী। এখনও ছেলেটাকে জামা
দিতে পারিনি।
সাগ্নিক- যাহ! এতো খারাপ অবস্থা চলছে? বলোনি
তো কখনও।
রিতু- কাকে বলবো বলো? আমার আপন তো
কেউই নেই। অনেক ভেবেচিন্তে
তোমাকে বললাম। কারণ তুমিও অভাগী ছেলে।
কষ্ট করে বড় হচ্ছো।
সাগ্নিক- নিশ্চিন্তে বৌদি। তুমি আমায় নিশ্চিন্তে সব
বলতে পারো। আমিও একজন কাছের মানুষ
পাবো। তোমার ছেলে, সমীর, সে
কোথায়?৷ একা আছে বাড়িতে?
রিতু- না। ওর কাকু এসে নিয়ে গেলো বিকেলে।
পূজোয় জামাকাপড় কিনে দেবে। দুমাস ভাড়া দিতে
পারিনি। এ-মাসে সব মিটিয়ে দিলাম। এখন একদম হাত
ফাঁকা। তাই বলছিলাম তোমার কাছে অন্য কোনো
কাজের খোঁজ আছে কি?
সাগ্নিক চুপ হয়ে গেলো। সত্যিই খুব কষ্টে
আছে রিতু বৌদি। একটু ভাবলো।
সাগ্নিক- সেরকম কিছু নেই। এবার তাহলে খোঁজ
করতে হবে বৌদি।
রিতু- আচ্ছা খোঁজ কোরো তো। উপকার হয়।
আজ আসি।
সাগ্নিক- দাঁড়াও বৌদি।
রিতু- কি?
সাগ্নিক- তুমি আমাকে আপন বললে, তারপরও চুপ
থাকা অমানুষিকতা। আমি সমীরের ড্রেসের টাকা
দিচ্ছি।
রিতু- না না। তা হয় না।
সাগ্নিক- বৌদি। কিচ্ছু হবে না। তুমি পরে শোধ করে
দিয়ো।
রিতু- কাজই নেই আমার সাগ্নিক আর আমি শোধ
করবো?
সাগ্নিক- আজ নেই। কাল তো হবে না কি? তাই
বলে বাচ্চাটা পূজোয় নতুন পোশাক পড়বে না?
রিতু- দেবে তো ওর কাকু।
সাগ্নিক- দিক। তুমিও দাও। না দিতে পেরে তোমারও
মন খারাপ লাগছে বৌদি। আমি দিচ্ছি। তুমি পরে শোধ
দিও।
রিতু- কিন্তু।
সাগ্নিক- কোনো কিন্তু নয়। চলো। বাজারে যাই।
রিতু- তোমার সাথে? না লোকে নানা কথা বলবে।
সাগ্নিক- বৌদি, লোকের কথা চিন্তা করতে হবে না।
লোক তোমাকে খাওয়ায় না পড়ায় শুনি। নিজের
জীবন নিজের মতো করে বাঁচছো। তোমার
যা ইচ্ছে তুমি করবে।
বহু কথায় রিতুকে মানালো সাগ্নিক। তারপর দু’জনে
বাজারে গেলো। সমীরের জন্য তো
কিনলোই। সাথে রিতুকেও একটা শাড়ি কিনে
দিলো। নিজেও কিনলো সাগ্নিক। গরীবের
বাজার। তাও ২০০০ টাকা চলে গেলো। সাগ্নিকের
কাছে যে খুব বেশী টাকা আছে তা নয়। তবু
২০০০ টাকাও অনেক সাগ্নিকের। তবে ভালো
লাগলো। অনেকদিন পর একটু অন্যরকম ফিলিংস
হলো সাগ্নিকের। নয়তো কল দেওয়া
মেসিনের মতো হয়ে যাচ্ছিলো। রিতুকে ফুচকা
খাওয়ালো।
দু’জনে অনেক হাসলো, গল্প করলো। রিতুও
বেশ প্রাণবন্ত। চারদিকের উৎসবমুখর পরিবেশে
ওদের জীবনের দুঃখ, দুর্দশা, গ্লানিও যেন আজ
মলিন। এটাই তো উৎসবের পাওনা। সাগ্নিক
টোটো নিতে চাইলেও রিতু না করলো।
অনেক টাকা খরচ হয়েছে। হেঁটেই ফিরবে।
সাগ্নিকেরও আপত্তি নেই। দু’জনে হাঁটতে
হাঁটতে বাড়ি ফিরলো। সাগ্নিক রিতুকে তার ঘরে
পৌঁছে দিলো। রিতু সাগ্নিককে ঘরে ডাকলো।
ক্লান্ত বেশ দু’জনে। একটু সরবত বানালো রিতু।
দু’জনে ঢকঢক করে খেয়ে ফেললো
একবারে।
সাগ্নিক- তাহলে এবার আসি বৌদি।
রিতু- সাগ্নিক। অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাগ্নিক- কেনো?
রিতু- জীবনে বাঁচার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছিলাম।
মনে হতো আমাদের জন্য পৃথিবীটা নয়। কিন্তু
তুমি দেখিয়ে দিলে ছোটো ছোটো
আনন্দগুলোই অনেক।
সাগ্নিক- বৌদি। টাকা থাকলেই সব হয় না। আসল হলো
সঙ্গী। আজ আমারও ভীষণ ভালো
লেগেছে। আর নিজেকে গরীব ভাববে না।
শুধু ভাববে তুমি যেখানে ফুচকা খেয়েছো, লাখ
টাকার মালিকেরাও সেখানেই ফুচকা খায়!
রিতু- যাহ! এটা তো ভেবে দেখিনি।
সাগ্নিক- ভাবতে হবে। জীবনটাকে এভাবেই
ভাবতে হবে। আজ কি আমার কাছে প্রচুর টাকা
আছে? না। আমার কাছে হাজার তিনেক ছিলো। তাই
বলে কি আমি তোমার মতো করে ঘুরে
বেড়াই? আমি রাজার মতো ঘুরি। তোমার রাণীর
মতো ঘোরা উচিত।
রিতু- তাহলেই হয়েছে।