Thread Rating:
  • 11 Vote(s) - 3.36 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery নিষিদ্ধ পল্লী Written By Lekhak (লেখক)
#4
।। দুই ।।



সোমনাথদা সিঁড়ি দিয়ে আমাকে নিয়ে দ্বোতলায় উঠতে উঠতে বলল, "এখানে এরকম অনেক পুরী আছে। নীলপুরী, স্বপ্নপুরী, রূপপুরী আরও অনেক। স্বপ্নপুরীতে বেশির ভাগ অবাঙালী বেশ্যার ভীড়টাই বেশি। কলকাতার বাইরে থেকেও অনেক সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে আসে এই রেড লাইট এরিয়ায় জীবিকা নির্বাহ করতে। যে যেরকম পছন্দ করে।"

একটু থেমে মুখ ঘুরিয়ে রহস্যময় গলায় বললো, "তোমার যদি ওখানে মনের মতন কাউকে জুটে যায়, তাহলে তো কথাই নেই। সুদীপ বসুকে তখন আর পায় কে? দেখ আবার, ভাল মাল পেলে আবার এই অধমকে ভুলে যেও না যেন!"

আমি সোমনাথদার কথা উড়িয়ে দিয়ে বললাম, "কি যে বলো সোমনাথদা? তুমি ভীষন রসিকতা করো। তোমাকে ছাড়া নিষিদ্ধ পল্লীতে পা রাখা? আমি জীবনে কোনদিন চেষ্টাই করতাম না।"

রাখীর ঘরটা দ্বোতলায় একদম সামনের দিকেই। সোমনাথদা বলল, "আসবার সময় বাইরের দিকে যে বারান্দা গুলো দেখলে, ওর মধ্যে একটা বারান্দা রাখীর ঘরের সাথে লাগোয়া। মাঝে মাঝে সন্ধে হলেই রাখী ওখানটায় দাঁড়িয়ে থাকে।"

দ্বোতলায় উঠে সোমনাথদা বলল, "লোকগুলো আমাকে কেমন সন্মান করে দেখলে? ওদের চেহারা দানবের মত হলেও ওরা আমার সঙ্গে কখনও অভদ্রতা করে না। টাকা পয়সা নিয়ে তো নয়ই।"

আমি সোমনাথদার পিছু পিছু যাচ্ছি। বাঁদিকে করিডর। দু পা এগিয়েই রাখীর ঘর। দরজার সামনে এসে সোমনাথদা বলল, "যার ঘরে ঢ়ুকছি, এও কিন্তু কোনকিছুতে কম যায় না। আমি সকালেই ওকে ফোন করে বলে দিয়েছি, আসছি আজ তোমার ওখানে। সাথে একটা আনাড়ী থাকবে। বোধহয় গায়ে এখনও অবধি কোন মাদী মাছি বসেনি। তোমার মত একটা সুন্দরী পিস ওর জন্য ফিট করে দিয়ে আজ আমরা সোনাগাছিতেই সারারাত কাটাব দুজনে। আমি হব তোমার চিটেগুড়ের মাছি। আর ওকে লেপ্টে দেব অন্য কারুর সঙ্গে।"

রাখীর ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বেল বাজাল সোমনাথদা। দরজা খুলল রাখীই। আমার যেন চিনতে অসুবিধে হল না। এ মেয়ে অবধারিত রাখী ছাড়া আর কেউ নয়।

রাখী আমাদের ঘরের ভেতরে অভ্যর্থনা করল। সোমনাথদা ওকে বলল, "আমার নতুন শিষ্য। যার কথা তোমাকে ফোনে বলছিলাম। একে এখন আমি তৈরী করছি। একেবারে নতুন তো।"

রাখী দরজা বন্ধ করে আমাকে বলল, "নমস্কার"। সোফা দেখিয়ে বলল, "বসুন এখানে আরাম করে।"

রাখীর কথা শুনে আমি বসলাম। সোমনাথদাও আমার পাশে বসল। রাখী বসল ঠিক আমাদের উল্টোদিকে। ওর চেহারা লক্ষ্য করলাম। প্রকৃত অর্থে বেশ সুন্দরী। রঙটা চাপা কিন্তু শরীরে একটা ঝলক আছে। চুলের খোঁপাটি বেশ বড়। মনে হয় ছড়িয়ে দিলে পাছা ছড়াবে। পরণে নীলচে সবুজ সিল্কের শাড়ী। গায়ে ম্যাচিং নীল ব্লাউজ। শাড়ীটা টেনে পড়ায় শরীরের রেখাগুলো বেশ উদ্ধত।। যৌন আবেদন আছে স্নিগ্ধতার মোড়কে।

কিছুক্ষণ তাকিয়ে মুখটা নামিয়ে নিলাম আমি। বেশি তাকালে গা শিরশির করবে। কারন আমি জানি এ ঘরে বেশিক্ষণ আমি আর থাকতে পারব না। আমাকে হয়তো নীলপুরী ছেড়ে ঐ স্বপ্নপুরীতে যেতে হবে আর কিছুক্ষনের মধ্যেই।

রাখী মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়েই ছিল। যেন ভাব জমানোর চেষ্টা করছে এখন থেকেই। আমার অস্বস্তি হচ্ছিল। চাপা উত্তেজনা বোধ করছি, কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারছি না।

সোমনাথদা বলল, "অত দূরে না বসে থেকে, কাছে এসে ওকে একটু সাহস জোগাও তো রাখী। রতিক্রিয়ায় একটু পরে সক্রিয় অংশ নেবে কারুর সাথে। অত ভেরুয়া হয়ে বসে থাকলে কি চলবে?"

রাখী সোমনাথদাকে বলল, "কার কাছে পাঠাচ্ছো ওকে? কেউ কি ঠিক হয়েছে?"

সোমনাথদা বলল, "চিন্না আর বীরজুকে পাঠিয়েছি খোঁজ করতে। ততক্ষণ তোমার এখানে একটু বসি। ওকেও তাই নিয়ে এলাম তোমার সাথে আলাপ করাতে।"

রাখী আমার দিকে তাকিয়ে সোমনাথদাকে বলল, "বেশ করেছো। তা আপনাকে তো বেশ জড়সড় দেখছি। ইচ্ছাটা আছে তো আপনার? নাকি অনীহা? সোমনাথদা জোড় করে নিয়ে এসেছে?"

একটু ঢোক গিলে বললাম, "আসলে তা নয়। আগে তো কোনদিন আসিনি, তাই....."

রাখী মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, "জানি।" তারপর হেসে বলল, "প্রথম প্রথম একটু এরকম হয়। তারপর সব ঠিক হয়ে যায়। আপনাকে যে তুষ্ট করবে, সেই আপনাকে তার পূজারী করে নেবে। তাকে ছাড়া আপনি তখন চলতেই পারবেন না। মাঝে মাঝে তার মায়ায় আপনাকে তখন আসতে হবে এখানে। দেখছেন না আপনার সোমনাথদার কি অবস্থা হয়েছে এখন আমাকে পেয়ে।"

সোমনাথদা ফিক ফিক করে হাসছিল, আমার পাশে বসে বলল, "তাও তো আমি কতদিন বাদে এলাম রাখী। সেই কবে এসেছিলাম। আর এখন এলাম।"

আমার চোখে মুখে যেন আতঙ্কের ছাপ। রাখী বলল, "তোমার বন্ধু ঠিক সহজ হতে পারছে আমার কাছে। আমরা তো হাজার হোক প্রস্টিটিউট, তাই বোধহয় পছন্দ হচ্ছে না আমাকে।"

আমি একটু লজ্জা পেলাম। বললাম, "আসলে তা ঠিক নয়। আপনার কথা আমি সোমনাথদার মুখে অনেকবার শুনেছি। যার তারিফ শুনেছি, তার যদি আমার আচরণে কোন খারাপ লাগে তাহলে আমি খুবই দূঃখিত।"

আমার কথা শুনে, রাখী এবার উঠে এসে বসল আমার আর সোমনাথদার মাঝখানে। আমার পাশে বসেই সোমনাথদার গালে একটা চুমু খেল। আমাকে বলল, "আপনার এই দাদাটিকে আমি খুব পছন্দ করি। আপনার দাদাও পছন্দ করে আমাকে, তাই এখানে আসে। আর আপনি যখন তার সাথেই এসেছেন, তখন আপনাকেও পছন্দ না হওয়ার কোন কারন নেই। শুধু সাহসটা জোগাতে চাই আপনার মনে।"

সোমনাথদার অনুমতি নিয়ে আমার গালেও একটা চুমু খেল রাখী। দুহাতে আমার গালটা একটু টিপে দিয়ে বলল, "নিন, এবার আপনার জড়তা কেটে যাবে। আর কোন অসুবিধে হবে না।"

সোমনাথদা চেঁচিয়ে উঠে বলল, "ওফ পারি না। ধন্য হয়ে গেলে সুদীপ, ধন্য হলে। ব্রাভো ব্রাভো, আজ তোমাকে আর পায়ে কে?"

বিনোদন যেন একেই বলে। রাখি ভাগ্যিস আমাকে আর চুমু খায়েনি। নইলে সোমনাথদা আবার ভীমরী খেত। মেয়েটা দেখলাম বেশ ভাল। ঐ অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের অনেক খাতির যত্ন করল। আমি রাখীর কাস্টমার নই। আসল কাস্টমার সোমনাথদা। তাও মেয়েটার রুচী বোধ দেখে আমার বেশ ভাল লাগল।

এক হাত দিয়ে পাশ থেকে রাখীকে জড়িয়ে ধরেছে সোমনাথদা। নেশার ঘোরে রাখীর খোলা পিঠের ওপরে অল্প সল্প চুমু খাওয়ার চেষ্টা করছে সোমনাথদা।

আমার দিকে তাকিয়ে রাখী বলল, "শুনলাম আপনি নাকি বিয়ে করেন নি? কারনটা কি জানতে পারি? এ-যাবৎ কোন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক হয় নি কেন তাও তো বুঝতে পারছি না। কে কে আছেন আপনার বাড়ীতে?"

আমি বললাম, "বাড়ীতে মা ছাড়া আর কেউ নেই। অশান্তির ভয়ে বিয়ে করিনি। মায়ের কথা ভেবেই। আর মেয়েদের দিকে মুখ তুলে তাকাতেই পারিনি এতদিন। সম্পর্ক হবে কি করে?"

রাখী বলল, "বাঃ, বেশ তো এখন কথা বলছেন আমার সঙ্গে।"

আমি বললাম, "আগে আপনার সঙ্গে দেখা হলে হয়তো কোন সমস্যাই হত না। কোন নারীকে এত কাছ থেকে আমি কোনদিন দেখিনি। কারও সঙ্গে এত কথাও কোনদিন বলিনি।"

হঠাৎ রাখী আমাকে বলল, "আমাকে পছন্দ আপনার? কি মনে হচ্ছে সম্পর্ক পাতানো যাবে?"

ভীষন লজ্জায় পড়ে গেলাম। ওদিকে সোমনাথদা রাখীর পিঠে চুমু খেতে খেতে হঠাৎই মুখটা সরিয়ে নিয়েছে ওর ব্লাউজের ওপর থেকে।

সোমনাথদাকে দেখলাম একদম বিচলিত হয় নি রাখীর কথা শুনে। উল্টে আমাকে বলল, "আরে রাখী তোমাকে চাবুক করে দিচ্ছে। তুমি খুব ভাগ্যবান। যার ঘরে যাবে, সে এত সময় দেবে না তোমাকে রাখীর মতন। সবাই ঠিক ওর মতন নয়।"

সোমনাথদার কথাটাই ঠিক। মনে হল, এর সাথে শুতে না পারি, এমন একটা মেয়ে বন্ধু পেলেও মন্দ কিছু নেই। রাখীর ব্যবহার, আচার আচরণ সবই যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতন। মেয়েটার মধ্যে যেন আলাদা রকমের একটা জ্যোতি রয়েছে। খুব সহজেই লোকের সাথে মিশে যেতে পারে মেয়েটা। হয়তো পয়সার জন্যই এই জীবিকা বেছে নিয়েছে। নইলে বেশ্যা হলেও একেবারেই খারাপ নয় মেয়েটা।

রাখী এবার আমাদের দুজনকে ছেড়ে উঠে গেল কিছু খাবার দাবারের আয়োজন করতে। সোমনাথদা বাধা দিলেও ও শুনল না। বলল, "প্রথমবার তোমার বন্ধুকে নিয়ে এসেছ। কিছু অন্তত মুখে তুলে না দিলে আমিও ছাড়ব না।"

রাখীর আতিথেয়তায় সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমাদের দুজনের জন্য দু বোতল চীলড্ বীয়ার নিয়ে এল রাখী। সাথে চানাচুর, বাদাম ভাজা আর চিকেন পকোরা। আমরা আসার আগেই গীতা মাসিকে দিয়ে এগুলো আনিয়েছে রাখী। গীতা মাসি সবার ঘরে ফাইফরমাস খেটে বেড়ায়। সোমনাথদাও ওকে ভাল করে চেনে। আমাদের সামনে বোতল দুটো রেখে আলমারী থেকে দুটো কারুকার্য করা কাঁচের গ্লাস এনে রাখল সোফার সামনে টেবিলটার ওপর।

রাখী বলল, "নিন, খান। আপনাদের জন্য ফিশ ফ্রাই আর চিকেন কাটলেট এরও অর্ডার দিয়েছি। এক্ষুনি গীতা মাসি ওগুলো নিয়ে আসবে। ততক্ষণ বাদাম আর পাকোড়া দিয়ে শুরু করুন।"

বলতে বলতে দরজায় টোকা, সম্ভবত গীতা মাসি এসেছে। রাখী দরজা খুলে খাবারের প্যাকেট টা নিয়ে ফিরে এল। আলমারী থেকে প্লেট এনে গরম গরম ফিশ ফ্রাই আর চিকেন কাটলেট সাজিয়ে দিল। নাকে সুখাদ্যের ঘ্রাণ পেলাম। সোমনাথদা ইতিমধ্যেই বীয়ারের ছিপি খুলে গ্লাসে ঢালতে শুরু করে দিয়েছে। আমার কেন জানি না রাখীকে যত দেখছিলাম, ততই অবাক হচ্ছিলাম।

সোনাগাছির এই বারবণিতাকে যত দেখছি, ততই যেন কেমন বিস্মিত আর বেমানান লাগছে। কোনরকম উগ্র কটাক্ষ্য, লাস্যময়ীর ভাব নেই। এত সুন্দর মেয়ে অথচ এই পরিবেশে এমন জীবিকার সাথে মানিয়ে আছে কি করে? সেটাই ভেবে অবাক হচ্ছি। সোমনাথদার চয়েসের সত্যি তারিফ না করে পারছি না। মনে হল একে যেন কেউ জোড় করে বন্দী করে রেখেছে এখানে। এর থাকার জায়গা সত্যি এটা নয়।

পাছে আবার বেশি দূর্বলতা এসে যায়, আমি মুখটা নিচু করে নিলাম। সোমনাথদা বলল, "রাখীর খুব বই পড়ার অভ্যাস আছে জানতো সুদীপ। সমরেশ বসু, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই পড়তে ও খুব ভালবাসে। আমি কলেজ স্ট্রীট পাড়ায় গিয়ে মাঝে মধ্যে নতুন বই কিনে এনে ওকে উপহার দিই। ও খুব খুশি হয়।"

দেখলাম, একটা আলমারীতে বেশ কিছু বইও রাখা রয়েছে ঐ সমস্ত লেখকের। আমার সত্যি খুব অবাক লাগল।

অন্ধকারের পৃথিবীতে আমি এক অচেনা মানবীকে দেখছি, আমার দূর্বলতার বদলে ওর প্রতি শ্রদ্ধাটাই যেন বাড়তে লাগল আরও বেশি করে।

রাখী একটু দুরে চলে যেতে সোমনাথদা বলল, "ওর অনেক দায়বদ্ধতা। মাসে কম করে দশ হাজার টাকা পাঠাতে হয় রাখীকে ওর মায়ের কাছে সংসার চালানোর জন্য। এই জীবিকা কি এমনি এমনি বেছেছে? কে দেবে ওকে এই টাকা? নিজেকে স্বেচ্ছায় বন্দী করে রাখতে কে চায়?"

আমার মনের ফ্রেমে রাখীর ছবিটা থেকে গেল। অমন সুন্দরী একজন মহিলাকে পেয়ে এখান থেকে কিছুতেই উঠতে ইচ্ছে করছে না। তবু আমাকে যেতে হবে। বীরজু আর চিন্না খোঁজ নিয়ে এলেই আমাদের এখান থেকে বেরোতে হবে।

সোমনাথদা একটু ঠেস মেরে বলল, "কি গো রাখী, এ যে দেখি তোমারই প্রেমে পড়ে গেল। তাহলে আমার কি হবে?"

রাখী চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে একটু দূরে। সোমনাথদাকে আস্বস্ত করে বললাম, "আমি যে ওনার প্রেমে পড়েছি, তুমি বুঝলে কি করে? ওনাকে যতটুকু দেখলাম, ততটুকু খুবই ভাল লাগল। যেন একটা আলাদা আসনে বসানো যায়। নিশ্চই ওনার কিছু দায়বদ্ধতা আছে, নইলে ওনার মত এত রুচিশীল মেয়ের এই জীবিকার সাথে মানায় না।"

বিশ্বাস হচ্ছিল না টাকার জন্য মেয়েটা একগাদা পুরুষের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করে। বাজারী মেয়েমানুষ কখনও এমন হয় নাকি? একি সত্যিই শরীর দেয়, না শুধুই সঙ্গ করে পুরুষ মানুষের সঙ্গে। সোমনাথদা কি তাহলে শুধু গল্প করার জন্যই রাখীর কাছে আসে? তবে যে বলছিল বার দুয়েক শরীরি মিলন হয়েছে রাখীর সঙ্গে। সেটা কি সত্যি? না কি বানিয়ে বলা?

শারিরীক সম্পর্ক না হলে এমন ঠুনকো সম্পর্কের মানে কি? শরীরপাত নাই যদি হয়, তাহলে আবার গণিকাবৃত্তির মানে কি?

ধাঁধাটা ধাঁধাতেই থেকে গেল। রহস্যের উন্মোচন আর হল না। একটু পরেই বীরজু চলে এল ওপরে। দরজা খটখট করল। রাখীর ঘরে ঢুকে আমাদের দুজনকে বলল, "লাড়কী মিল গয়া বাবুসাব। বহূত আচ্ছা চীজ। আপ দোনো চলিয়ে। হাম লেকে যাতে হ্যায়।"

সোমনাথদা রাখীকে বলল, "রাখী আমি একটু পরেই আসছি আবার তোমার কাছে, আমার এই শিষ্যকে এবার সিদ্ধিলাভ করাতে হবে। অনেক তপস্যা করেছিল, তাই বোধহয় তোমার কাছে আসতে পারলো। একে শুভকামনা জানাও, যেন আমার মানটা শেষ পর্যন্ত রাখতে পারে।"

রাখী আমার দিকে তাকিয়ে হাসল। আমি রাখীকে বিদায় নমস্কার জানিয়ে বেরিয়ে এলাম ঘর থেকে। সোমনাথদার ওপর সত্যি তখন খুব রাগ হচ্ছিল। আমাকে এমন একজনের সাথে পরিচয় করালো যার সাথে আমার শরীরি মিলন কোনদিনই হবে না। মাঝখানে সোমনাথদা না থাকলে ব্যাপারটা অন্যরকম হত। আমি যদি সরাসরি কোনদিন চলে আসতাম রাখীর ঘরে? তাহলে.....

মনে মনে বললাম, "সোমনাথদা তুমি সত্যি খুব লাকি ম্যান। নইলে এ বয়সে এমন সখী জুটিয়েছ। তোমাকে দেখে হিংসে হচ্ছে। আজ তোমার কপাল ভাল। নইলে আমি হয়তো?....."

রাখীর ঘর থেকে বেরিয়ে আমি যেন কেমন অন্যরকম হতে লাগলাম। গাড়ীতে আসতে আসতে প্রথমে চারপেগ রাম তারপরে আবার বীয়ার খেয়েছি রাখীর ঘরে। পুরো ককটেল নেশা চড়েছে এবার মাথায়। নেশার ঘোরে উল্টোপাল্টা ভাবছি আর আপন মনে বকছি, আমি যেন আর আগের মতন নেই।

 - "কি ভেবেছে সোমনাথদা? আমাকে নিজের পটানো মাল দেখিয়ে বাহবা নিতে চাইছে? আমি আনাড়ী বলে কি আমার কপালে রাখীর মতন কেউ জুটবে না? এবার আমিও দেখাব এই সবজান্তাটাকে। সুদীপ বসুও কোন কিছুতে কম যায় না। রাখীর থেকেও ভাল বেশ্যাকে নিয়ে শোব আজকে। বুড়োটার জন্য রাখী আমাকে প্রত্যাখান করল কেন? আমার মধ্যে কি কোন খামতি আছে? কি পাবে ও সোমনাথদার কাছে? যেন সোনাগাছির নিষিদ্ধ পল্লীতে নিজের বাদী করে রেখেছে সোমনাথদা এই রাখী বলে মেয়েটাকে।"

রাগটা আরও বাড়ল আমার যখন সোমনাথদা বলল, "অনেকদিন পরে আজকের রাত্রিটা আমার ভালই কাটবে সুদীপ, বুঝেছ? রাখীর সঙ্গ আবার অনেক দিন পরে পাচ্ছি। আমার আনন্দের শেষ নেই। শুধু তো ওর জন্যই আমার এখানে আসা।"

 - "ন্যাকামির যেন শেষ নেই। মুখে শুধু রাখী রাখী আর রাখী। ও ছাড়া আর যেন কোন কথা নেই। থাকো তোমার পেয়ারের রাখীকে নিয়ে। আমিও অন্য রাখীকে জুটিয়ে নিচ্ছি এক্ষুনি!"

মানুষ যেন গিরগিটির মত রঙ পাল্টায়। মূহূর্তে আমার রঙটাও বদলে গেল নিমেষে। একটু আগে যে মেয়েটার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে তার প্রশংসা করছিলাম, এখন রাখীই হয়ে উঠল আমার দুচোখের বিদ্বেষ। সোমনাথদাকে বললাম, "অত সাদামাটা মেয়ে আমার পোষাবে না। আমি চাই উগ্র, সেক্সী, ভয়ঙ্করী। তবেই না জমবে খেলা।"

সোমনাথদাও অবাক হয়ে বলল, "তুমি ঠিক আছো তো সুদীপ? দেখো আবার শেষ পর্যন্ত কোন হতকুৎসিৎ বেশ্যাকে পছন্দ করে বোসো না। বীরজু আর চিন্না তোমার জন্য যা দেখেছে, ওটাকেই পছন্দ করে নিতে হবে। ওরা দালালি করে, জানে কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ।"

আমার কপালে শেষ পর্যন্ত যেটা জুটল তার ব্যাখ্যা খুব অল্প কথায় আমি বোঝাতে পারব না। তবে রাখীকে নিয়ে সোমনাথদার এত গর্ব আর এত অহংকার চূর্ণ করতে রীতিমত মন চেয়েছিল সেদিন। মনে হয়েছিল উপযুক্ত জবাব দেবার সুযোগ আমার কাছেও আছে। কে বলতে পারে ঐ স্বপ্ন পুরীতেই আমি এমন একজনকে পেয়ে যাব, যা ঐ নীলপুরীর রাখীর চেয়ে কিনা বহূ অংশে ভাল। সোমনাথদা যদি পছন্দের নারীকে বেছে নিতে কোন ভুল না করে, তাহলে আমি কেন পারব না? আমার কপালেও জুটবে নিশ্চয় কোন দ্বিতীয় রাখী।

মানুষ কি চায় আর কি পায়। জীবনটা কখনও কখনও রোশনাই এর আলোতে জ্বলে ওঠে। আবার দপ করে নিভেও যায়। মানুষ কখনও হয় রাজা আবার কখনও হয় ভিখারী। ওঠা নামার জীবন। আলো থেকে অন্ধকার। কিন্তু আবার পুনরায় আলোয় ফেরা? সেও কি সম্ভব এই নিষিদ্ধ পল্লীকে ঘিরেই? আমার জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে থাকবে সোনাগাছি, তখনও বুঝিনি। হঠাৎ ই আমার জীবনে কিছু একটা ঘটতে চলেছে যা আমি, তখনও জানি না। কি ঘটল এবার? তাহলে এখন দেখাই যাক।

নীলপুরী থেকে বেরিয়ে দুটো তিনটে বাড়ীর পরেই স্বপ্নপুরী। আমার স্বপ্নের বারবণিতাকে পাব এখানে। দূঃখ ভুলে নিজের মধ্যে এবার একটু জোশ আনার চেষ্টা করছি। পা দুটো একটু মাঝে মাঝে টলে যাচ্ছিল। সোমনাথদা আমার পাশে যেতে যেতেই আমাকে বলল, "তুমি ঠিক আছ তো সুদীপ? কোন অসুবিধা হচ্ছে না তো?"

একটু বিরক্তির স্বরেই সোমনাথদাকে বললাম, "ঠিক আছে ঠিক আছে। অত দরদ দেখাতে হবে না। পারো যদি এখনই চলে যাও তোমার পেয়ারের রাখীর কাছে। যাও যাও, ও তো অপেক্ষা করছে তোমার জন্য। শুধু শুধু এলে তুমি। ঐ তো বীরজু রয়েছে আমার সঙ্গে। ও ঠিক পৌঁছে দেবে আমাকে খুবসুরত চীজের কাছে।"

সোমনাথদা বুঝতেই পারছিল, আমার নেশাটা হঠাৎই বেড়ে গেছে এবার। রাখীর জন্য মনে মনে একটু ক্ষোভও জন্মেছে বোধহয় মনে। হঠাৎই কোন না কোন একটা কান্ড বাধিয়ে বসি। আমার জন্য সোমনাথদা তাহলে একেবারই অস্বস্তিতে পড়ে যাবে।

আমার মন রাখার জন্য রাখীর কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে সোমনাথদা বলল, "আরে দূর, তুমিও পড়ে আছ এখনও রাখীকে নিয়ে। আমার কপালে কি রাখী ছাড়া আর কেউ জুটবে না? দেখ আমিও তোমার মত জুটিয়ে নিচ্ছি নতুন কাউকে। এই স্বপ্নপুরীতেই পেয়ে যাব বোধহয়।"

স্বপ্নপুরীতে সিঁড়ি দিয়ে দ্বোতলায় উঠছি। এই বাড়ীটাও অনেকটা ঠিক আগেরটার মতন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার মুখে দেখলাম, সিঁড়ির একপাশে দাঁড়িয়ে একটা মাঝবয়সী লোক একটা বেশ্যাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছে ঠোঁটে। সোহাগের কি রঙ। মেয়েটা লিপস্টিক মাখানো ঠোঁট দিয়ে রাঙিয়ে দিচ্ছে লোকটার ঠোঁট দুটোকে। পরণে শুধু শায়া আর ব্লাউজ। বুকের খাঁজের নির্লজ্জ প্রদর্শন। বীরজু বেশ্যাটার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল, "ইসকো ঘর মে লেকে জানা। ইধর খড়ে খড়ে ক্যায়া কর রহা হ্যায়?"

বেশ্যাটাও টিপ্পনি কেটে ওকে বলল, "তেরে কো ক্যায়া? তু আপনা কাম কর্।"

আমি ঐ দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছি। সোমনাথদা পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে বলল, "আরে চলো চলো। তোমারটা ওপরে আছে। এটা নয়।"

ঠেলা খেয়ে চলে এলাম দ্বোতলায়। সেই লম্বা করিডর। দুপাশে সারি সারি নিষিদ্ধ রানীদের ঘর। ঘরের সামনে তিন চারজন রাতপরী দাঁড়িয়ে আছে কোন নতুন খদ্দের পাবার আশায়। কেউ বক্ষ প্রদর্শন করছে, কেউ আবার ছুঁড়ে দিচ্ছে ফ্লাইং কিস, কেউ আপন মনে সিগারেট টেনে যাচ্ছে একনাগাড়ে। আমি নেশার ঘোরে ভুলে একজনের কাছে চলে যাওয়াতে সে প্রায় জোড় করেই ঢুকিয়ে নিচ্ছিল আমাকে তার নিজের ঘরে। সঙ্গে সঙ্গে বীরজু ধমক লাগালো তাকে। আমাকে প্রায় ছিনিয়ে নিল বেশ্যাটার কাছ থেকে।

থতমত খেয়ে গেছি আমিও। সোমনাথদা বলল, "কি করছ বলো তো সুদীপ? একটু ধৈর্য ধরো। অত তাড়াহূড়ো কোরো না। বীরজু ঠিক নিয়ে যাবে।"

কার কাছে যে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে আমি জানি না। মদের ঘোরে আমার তখন সব বেশ্যাগুলোকই এক রকম লাগছে।

আমি যার ঘরে আর একটু হলে ঢুকে পড়তে যাচ্ছিলাম, সেই বেশ্যাটা পেছন থেকে এবার গালাগালি দিতে লাগল বীরজুকে আর আমাদেরকে। চেঁচিয়ে বলল, "আরে মেরে য্যায়সা মিলেগি নেহী ইধর। কি গো বাবু, আমাকে পছন্দ হলো না? কার কাছে যাবে গো তোমরা? ট্যাঁকে জোড় আছে তো? শালা ঢং দেখা ইসকা। নখরা করতা হ্যায়।"

সন্ধে হয়ে রাত যত বাড়বে, এদের দাপটও তত বাড়বে সাথে সাথে। বীরজু লোকটা খুব ভাল। আমাকে আর সোমনাথদাকে বলল, "এসব বেকার চীজ হ্যায়। আসলি তো হ্যায় কামিনী। উসকো দেখেঙ্গে তো দিল খুশ হো জায়েগা।"

কামিনী নামটা শুনে, সোমনাথদা আর আমি পরষ্পর মুখ চাওয়া চাওয়ি করলাম। বুঝলাম এই কামিনীই তারমানে আজ রাতে আমার উৎকৃষ্ট যৌনসঙ্গী হতে যাচ্ছে।

কোন এক লেখকের লেখায় পড়েছিলাম, তিনি লিখেছেন, "তোমার স্নায়ুশিরা যখন লালসায় চঞ্চল হয়ে পড়বে, তখন পতিতালয়ের ওপরই তুমি বিশ্বাস রাখবে। যেখানে মেয়েরা তোমাকে সুখ দেবার জন্য অপেক্ষা করছে।"

 - "কামিনী আজ আমাকে নিষিদ্ধ সুখ দেবে। উফফফফ আমি যেন কত ভাগ্যবান!"

একটু আগে রাখীর ঘরে যখন বসেছিলাম, তখন আমার মধ্যে একটা জড়তা ছিল। এখন সেটা নেই। পেটে মাল পরে যেন তেজ বেড়ে গেছে। আমার মধ্যে একটা পরিবর্তন এসেছে। নিষিদ্ধ পল্লীর নিষিদ্ধ ছোঁয়া লেগে মার্কেটিং এর কাজ করা সুদীপ বসু যেন আর আগের আর মত নেই।

নিজেকে আয়নায় দেখলে হয়তো চিন্তে পারতাম না। চোখ দুটো মদ খেলে লাল হয়ে গেছে আমার। কথা বলতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে জিভ। অথচ তখন আমি এক যৌনসুখের নেশায় টগবগ করে ফুটছি। ঐ রাখী মেয়েটাই আমাকে শক্তি জুগিয়ে দিয়েছে। চুম্বনের এত শক্তি আমি আগে জানতাম না।

সোমনাথদাকে একটু ঠেস মেরে বললাম, "জানি তুমি এ বয়সেও কামক্রীড়ায় অসীম বলবান। কিন্তু বিছানার খেলা খেলতে আমিও পারি। বলে দিও তোমার ঐ পেয়ারের রাখীকে। আর সেইসাথে ওকে আমার হয়ে ধন্যবাদটাও দিয়ে দিও, আমার গালে কিস টা করার জন্য।"

সোমনাথদা এতক্ষণ বাদে বলল, "বুঝেছি তোমার রাগ হয়েছে সুদীপ। আই অ্যাম ভেরী সরি। চলো তোমাকে রাখীর কাছেই আবার নিয়ে যাই আমি। কামিনীর কাছে যেতে হবে না তোমাকে।"

একটু হকচকিয়ে বীরজুও দাঁড়িয়ে পড়ল মাঝপথে। সোমনাথদা আমার হাত ধরে তখন টানাটানি করছে। হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, "থাক। কোন সহানুভূতির দরকার নেই। আমার কাউকে দরকার নেই। আই অ্যাম ওকে। আমি রাখীর কাছে যাব না। আমি কামিনীর কাছেই যাব।"

একটা ঘরের সামনে এসে আমাদের দুজনের দিকে ঘুরে তাকাল বীরজু। বলল, "এসে গেছি বাবুসাব। ইধার আইয়ে, কামিনী ব্যাইঠা হ্যায় ইয়াহাঁ। দেখ লিজিয়ে।"

একটা বেশ বড় ঘর। অনেকগুলো লোকের একসাথে বসার আয়োজন রয়েছে সেখানে। একাধিক হেলান দেওয়া সোফা। বসে আছে দুজন হোমরা চোমরা মার্কা লোক। নিষিদ্ধ পল্লীর নিষিদ্ধ আনন্দে ডুবতে এসেছে এরাও। আমাদেরকেও ওদের পাশে বসতে অনুরোধ করা হল। একজন রোগা মতন লোক আমাদের বসতে বলল। উল্টোদিকে বসে আছে তিনজন অতি আকর্ষনীয়া দেহপসারিনী। ওরা দুজন লোক মেয়ে তিনটিকে ভাল করে দেখছিল। মেয়েগুলোও সব তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। একজন তাদের মধ্যে একটু অন্যরকম। আমি আর সোমনাথদা দুজনেই ওকে দেখলাম। ঐ অবস্থায় বুঝতে অসুবিধা হল না এর মধ্যে কামিনী কে?

বীরজু, রোগা লোকটাকে কি যেন ইশারা করল। রোগা লোকটা ঘাড় নেড়ে বলল, "ঠিক আছে।" তারপর বীরজু সোমনাথদারও কানে কানে কি যেন বলে আবার চলে গেল।

আমি ঢুলু ঢুলু চোখে ওদের তিনজনের মধ্যে কামিনীকেই ভাল করে দেখার চেষ্টা করছি। চোখের সামনে একি দেখছি আমি। যেন এক তপ্ত যৌবন ভরা দেহ। এমন সৌন্দর্য তো কোন মুনিঋষির ব্রহ্মচর্যকেও জ্বালিয়ে দিতে পারে। ওর কাছে আমি যেন নিতান্তই শিশু, খেলনার মতন। যত আমি তাকিয়ে থাকব, বশীভুত হয়ে যাব। কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারব না।

পাশে বসে সোমনাথদা ফোড়ন কেটে আমার কানের কাছে মুখটা নিয়ে এসে আসতে আসতে বলল, "কি গো, কেমন দেখছ? তুমি তো নাক সিটকোচ্ছিলে এখানকার নাম শুনে। এখন কেমন? তুমি যাকে মুগ্ধ হয়ে দেখছ, আমিও তাকে দেখছি। এখন বলো, কে যাবে ওর কাছে? আমি না তুমি?"

হাতের কাছে এমন খাসা মাল পেয়েও নির্বুদ্ধিতায় তাকে হাতছাড়া করব এমন বোকা আমি আর নই। রাগ দেখিয়ে সোমনাথদাকে বললাম, "কেন, আর বুঝি রাখীকে তোমার মনে পড়ছে না? এটাকেই নিয়ে শুতে হবে? যাও না রাখী কাছে আবার। তোমার তো সঙ্গিনীর এখানে অভাব নেই।"

এক ঝলক কামিনীকে দেখেই বুঝলাম এই নিষিদ্ধ পল্লীতে যেন ওর মত আর দ্বিতীয়টি কেউ নেই। বাকীরা চারপাশে যারা ঘুরছে সবই সাদামাটা। কেউই পাতে দেবার মত নয়। এবার হয়তো সোমনাথদা এই মেয়েটিকেও গলায় ঝুলিয়ে আমাকে শেষ পর্যন্ত উপোস করে মারবে। সেক্সের মজা না পেয়ে আমাকে হয়তো খালি হাতেই ফিরে যেতে হবে এই নিষিদ্ধ পল্লী থেকে। রাখী, কামিনী সবই কি সোমনাথদার কপালেই জুটবে? আমার ভাগ্যে কিছুই নয়?

মেয়েটির জন্য সোমনাথদার পায়ে পড়ে ভিক্ষা প্রার্থনা করতে ইচ্ছা করছিল। মনে মনে বললাম, "প্লীজ, প্লীজ, একে তুমি ছেড়ে দাও সোমনাথদা। এখানে আসার আনন্দটাই নইলে মাটি হয়ে যাবে।"

মেয়েটি একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছে আমার দিকে। কি লাস্যময়ী। চোখের চাউনি ইতিমধ্যেই বশীভূত করে ফেলেছে আমাকে। সন্মোহনী শক্তি আমাকে যেন ঘায়েল করে দিচ্ছে। পাশের লোকদুটোর দিকে না তাকিয়ে ও আমার দিকেই বেশি করে তাকাচ্ছিল। মাথা খারাপ হবার জোগাড়। বশীভূত আমি আগেই হয়ে গেছি, এবার গায়ের লোমগুলোও সব খাঁড়া হতে লাগল এক একটা করে। দেখলাম ও একটা দামী সিগারেট ধরিয়েছে মুখে। জ্বলন্ত সিগারেটটা লিপস্টিক মাখা পুরু ঠোঁটের মধ্যে ধরে এমন সুখটান দিচ্ছে যা দেখে শিরশিরানি অনুভূতিতে একেবারে পিলে চমকে উঠতে হয়।

সোমনাথদা পাশ থেকে বলল, "মেয়েটাকে ভাল করে দেখছ তো সুদীপ? ভাল করে ওর শরীরটাকে দেখো।"

অনেকটা রাখীর মতই নীল রঙের একটা হাতকাটা ব্লাউজ আর ম্যাচিং করানো নীল রঙের শাড়ী পড়েছে মেয়েটা। শরীরের উপরিভাগে দুটি সুগঠিত বৃহৎ আকারের স্তন। পুরুষের যৌনকামনাকে চাগিয়ে তুলতে এমন অহংকারী স্তনই মোক্ষম কাজ করে। আমার চোখ দুটোকে ভালভাবেই টানছিল। কয়েক মূহূর্ত চোখদুটো আটকে রইল ওর ভরাট বুকদুটোর ওপরে। আমাকে দেখানোর জন্য শাড়ীর আঁচলটা সরিয়ে দিল মেয়েটা। গর্বিত বুকের গভীর খাঁজ ছটফট করে তুলছে অশান্ত মনকে। ঠিক যেন চুম্বকের তীব্র আকর্ষন।

শরীর ঘাঁটার লোভে কেন মানুষ সোনাগাছিতে আসে, এবার বুঝতে পারছি। লোভকে তখন আমিও সামলাতে পারছি না। দেখলাম ও দুটো স্তন তো নয় যেন দুটি ঠাসা বুক। বুকের ঢেউটা নিমেষের মধ্যে আরও প্রকট হয়ে গেল যখন মেয়েটা শাড়ীর আঁচলটা সরিয়ে ফেলল বুকের ওপর থেকে। খাঁজটা যেন শরীরের রক্ত গরম করে দেবার মতন। বুঝলাম শালীনতাবোধ এখানে দেখানোর কোন দরকার নেই। যেখানে এসেছি, সেখানে সবাই এসে নিয়ন্ত্রণ হারায়।

এমন বুকের ঔদ্ধত্য দেখলে এ মেয়েকে যে কেউ বুক করে নেবে আগাম টাকা দিয়ে। নিজেকে উৎসর্গ করবে ঐ অপার যৌবনে। সোমনাথদার পাল্লায় পড়ে সেক্স চরিতার্থ আর ফুর্তি লুটতে এসেছি বেশ্যাখানায়। এমন জম্পেশ হবে ব্যাপারটা আশা করিনি। আমি ক্রমশ মোহিত হয়ে দেখতে লাগলাম, মেয়েটার কি চোখ ধাঁধানো সেক্স। সোনাগাছির বারবণিতাকে দেখে যে এমন মাথা ঘুরে যাবে, ভাবতেই পারিনি।

সোমনাথদা বুঝতেই পারছিল আমি চোখ দিয়ে পুরো গিলছি কামিনীকে। আপন মনেই বলল, "এই হচ্ছে শালা নারীর জাদু শক্তি! শরীরি মায়ায় যে কোন পুরুষকে কত সহজে ঘায়েল করে দিতে পারে এরা। নাও এবার গলায় লটকে যাও। আর দেরী কেন?"

আমি যে এখানে এসে এর দিওয়ানা বনে যাব আগে জানতাম না। বোধহয় মাথাটা খারাপ হবার অপেক্ষায় ছিল। চোখের দেখা দেখতে পেলেই আগুন জ্বলতে শুরু করবে শরীরে আর জল গড়াতে শুরু করবে জিভ দিয়ে। আমার তো তেমনটাই এখন হচ্ছে।

সোমনাথদা আমাকে বলল, "বীরজু আমাকে বলে গেছে, এই চত্তরে এর মত চোখটাটানো বেশ্যা আর নাকি দ্বিতীয়টি নেই। খদ্দের রা সবাই এসে আগে এর খোঁজ করে। কপাল ভাল থাকলে জুটল, নইলে বাকীদের সাথে ঐ সাদামাটা।"

আমি সোমনাথদাকে বললাম, "ওর রেটটা এইজন্যই বুঝি বেশি? এত ঢেউ খেলানো যার শরীর। কম টাকায় হাতে পাওয়া বড়ই কঠিন। একবার জিজ্ঞেস করে দেখই না কত চায়?"

সোমনাথ বলল, "ও দরদাম করবে পরে। আগে খদ্দেরকে দেখে পছন্দ করবে। যাচাই করে নেবে ওর মন পসন্দ কিনা? তারপর করবে দরাদরি। যাকে তাকে নিজের ঘরে ও ঢোকায় না। তোমার কপাল ভাল মেয়েটা তোমাকে দেখছে।"

আমাকে একটু উস্কানি দিয়ে সোমনাথদা বলল, "আজ সত্যি তোমার পয়া দিন সুদীপ। দেখ কেমন একদৃষ্টে তোমাকে ওর মায়াবী চাউনি দিয়ে দেখছে। একটু পরেই তোমাকে ইশারা করে ডাকবে। মনে হচ্ছে পছন্দ হয়েছে তোমাকে। মনে যখন ধরেছে তখন কেল্লা এবার ফতে।"

ট্রেন্ড যৌন-কর্মীরা নাকি এমনটাই হয়। শরীরের প্রতিটি রোমকূপকে ওরা ব্যবহার করতে পারে যৌন-সুখ প্রদানের জন্য। একেবারে পোড় খাওয়া গণিকারা যেমন হয়, সেভাবেই ও ঝড় তুলতে লাগল আমার শরীরে। মদের নেশার সাথে শরীরি নেশাটাও জাঁকিয়ে বসেছে মনে। সোমনাথদাকে বললাম, "এ তো একেবারে দুর্লভ বস্তু গো। কোথায় ছিল এতদিন? আগে তো দেখিইনি কোনদিন এমন। আমাকে দেখছে অনেকক্ষন ধরে। মনে হচ্ছে মনে ধরেছে এবার।"

সোমনাথদাও বলল, "ঠিকই ধরেছ তুমি। এবার ও তোমাকে ডাকবে। দরাদরি যা করার এবার করে নাও।"

দেহ পসারিনী তার খদ্দেরকে বাজিয়ে দেখে নিচ্ছে শোবার উপযুক্ত কিনা? তারপর তাকে নিজের শরীর বেচবে, বেশ্যাখানায় যে এমনটা হয়, আগে কখনও শুনিনি। পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে পাশ করে গেছি, আমার বেশ আনন্দ হচ্ছিল।

স্বপ্নপুরীতে এই নাকি সবচেয়ে দামী বেশ্যা। অনেক স্বনামধন্য ব্যাক্তিরা ওর সাথে রাত কাটাতে আসে এখানে। সেদিক থেকে আমি খুবই লাকি ম্যান। এবার আমার পুরুষালি ক্ষমতাটা ওকে দেখিয়ে দিতে হবে। সোমনাথদা বলল, "এবার আর দেরী কোরো না সুদীপ, ফাক হার ইমিজিয়েটলি, নইলে অন্য কাউকে ও ঘরে ঢুকিয়ে নেবে।"

কিন্তু কামিনী আমাকে ইশারা না করলে আমি যাব কেমন করে? ও তো এখনও আমাকে ডাকেনি।

আমাকে ধমক দিয়ে সোমনাথদা বলল, "আস্ত গবেট তুমি একটা। এতোক্ষণ ধরে তোমাকে দেখছে, সেটাই কি যথেষ্ট নয়? যাও যাও শীগগীর এগিয়ে যাও। নইলে পাখী পালিয়ে যাবে।"

যেমন বলা তেমন কাজ। সোমনাথদার তাড়া খেয়ে আমি কামিনীর দিকে এগোতে যাচ্ছিলাম সোফা ছেড়ে। দেখলাম আমার দিকে তাকিয়ে এবার মুচকী মুচকী হাসছে কামিনী। রোগা প্যাটকা লোকটা এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল চুপচাপ, সে হঠাৎ এগিয়ে এসে আমাকে বলল, "আপনি বসুন। আমি নিয়ে যাব আপনাকে ওর ঘরে।"

কামিনী উঠে দাঁড়িয়ে কোমরটা দোলাতে দোলাতে আমাদের পাশ দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। চোখে সেই মায়াবী চাউনি। চোখ দুটো বড় বড় করে তাকানোটাই কেমন যেন অন্যরকম। বুঝলাম, তারমানে আমাকে সন্মতি জানিয়ে গেল। এবার আমাকে ঢুকতে হবে শয়নকক্ষে। ওফ কি যে হবে আজকের রাতটা ভাবতেই পারছি না।

সোমনাথদা পাশে বসে গালে হাত দিয়ে বলল, "আমার কি হবে সুদীপ? ও তো তোমায় পছন্দ করেছে, আমায় তো করেনি।"

রাগটা মনের মধ্যে রয়েছে, তবু বললাম, রসিকতা তো ভালই জানো তুমি। ওদিকে রাখীকে বলে এসেছ, "আমি আসছি একটু পরেই, আর এখানে এসে ঢং করছ? যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানো না। একটা কে যখন বাঁদী করে রেখেছ, তখন ওটাকেই সামলাও না। আবার পরের দেখে হিংসে কেন?"

আমার হঠাৎই কামসুখের প্রবৃত্তি তৈরী হয়েছে, ভোগের ইচ্ছাও বেড়েছে। সোমনাথদা এই প্রথম বুঝল, নিমেষে কেমন ভোল পাল্টে ফেলেছে ছেলেটা। একেবারে রসালো মাছ জুটেছে কপালে। বিড়াল এখন খাবার জন্য পুরোপুরি তৈরী।

কামিনীর এক রাতের দর হল পাঁচ হাজার টাকা। সোমনাথদা বলল, "ওর প্রচন্ড হাই রেট। তোমার কাছে টাকা আছে তো? আমি তিন হাজার টাকা পর্যন্ত তোমাকে দিতে পারি। তাই বলছিলাম....."

খালি হাতে বেশ্যপট্টিতে কেউ আসে না। আমিও আসিনি। সোমনাথদাকে বললাম, "তুমিই আমার জেদটা বাড়িয়ে দিলে সোমনাথদা। এই তো সব এখানকার ছিরি। যাও বা একটাকে মনে ধরল, টাকার জন্য পিছিয়ে যাব? সুদীপ বসু আজ লুটিয়ে দেবে পয়সা। তোমাকে এই নিয়ে একদম চিন্তা করতে হবে না।"

জীবনটা এখন নারীর নিষিদ্ধ সান্নিধ্যে প্রবেশ করতে চলেছে। কে কাকে জিতে নিল, যেন এই খেলা চলছে। আমার নেশার ঘোরে মনে হল, কামিনীকে জিতে নিয়েছি আমি। সোমনাথদাকে এবার উপযুক্ত জবাব আমি দিতে পেরেছি।

যার হাত ধরে এলাম, তাকেই অবজ্ঞা করে আমি গটগট করে হাঁটতে লাগলাম ঐ রোগা লোকটার পিছু পিছু। ও আমাকে কামিনীর ঘরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেন কামিনীর ঐ কটাক্ষ চাউনি আর পাগল করা শরীরটা আমাকে তখন টানছে। সোমনাথদাকে আমি ঘুরেও লক্ষ্য করলাম না ও কোথায় রয়েছে। আমাকে শুধু পেছন থেকে একবার বলল, "কাল সকালে কিন্তু একসাথে ফিরব সুদীপ। গাড়ী এখন এখানেই রয়েছে।"

""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

[+] 3 users Like Kolir kesto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নিষিদ্ধ পল্লী Written By Lekhak (লেখক) - by Kolir kesto - 26-08-2020, 11:46 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)