Thread Rating:
  • 26 Vote(s) - 3.12 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
চোরাবালি (কালেক্টেড)
#76
পর্ব চার। অনুভূতি (#4-#22)

বেশ কিছুক্ষনের মধ্যে গাড়ি গন্তব্য স্থানে পৌঁছে গেল। কনের বাড়ির লোক দেখে বিশেষ করে কনের ভাই এসেছে দেখে বেশ সমাদর করেই ভেতরে নিয়ে যাওয়া হল ওদের। মনামিকে ঘিরে শিতাভ্রর বাড়ির অনেকে একটা ঘরে বসে। তিতাস মাসিকে দেখেই খুব খুশি হয়ে লাফিয়ে চলে গেল। অভি দিদিভাইয়ের দিকে দেখে ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে, কি রে কেমন আছিস? সলজ্জ হাসি দেয় মনামি। আগে রাগে লাল হতে দেখেছে, সেখানে দিদিভাইয়ের গাল দুটো একটু লাজুক একটু অজানা অনুভূতিতে লালচে রঙ ধরেছে। দিদিভাইয়ের এই রূপ এর আগে কোনদিন দেখেনি।
দিদিভাইয়ের পাশে এসে কানে কানে জিজ্ঞেস করে, “কাল রাতে ঘুম হয়েছে?”
সলজ্জ হাসি দিয়ে অভির বাজুতে চাঁটি মেরে বলে, “মারব কিন্তু খুব।”
দিয়াকে দেখিয়ে বলে অভি, “এই নে, তোকে সাজানোর জন্য একদম পারসেল করে নিয়ে এসেছি।”
দিয়াও মনামির পাশ ঘেঁসে অভির দিকে তাকিয়ে সলজ্জ হেসে বলে, “জানো এতটা রাস্তা খালি পেটে নিয়ে এসেছে, কিছুই খাওয়ায়নি।”
মনামি বড় বড় চোখ করে ভাইয়ের দিকে দেখে বলে, “মাঝে কোথাও থামতে পারতিস?”
অভি হসে উত্তর দেয়, “পাঁচটা এইখানে বাজে, বুঝলি। দাঁড়ালে দেরি হত, তোকে কখন সাজাত? তার ওপর এখানে ত আর আমার কথা চলবে না।” বলে মাথা দোলায়। তিতাসকে নিয়ে দিয়াকে বলে, “তুমি শুরু করে দাও, না হলে সময়ে হবে না।”
দিয়া মুচকি হেসে বলে, “না না, বেশি সময় লাগবে না, ব্যাস ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে হয়ে যাবে।”
মনামিকে নিয়ে একটা ঘরে দিয়া চলে গেল সাজানোর জন্য, এদিকে শিতাভ্র ওকে এসে ডেকে নিয়ে গেল। অন্যপাশে, বাকিদের সাথে আলাপ পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। শীতকালে সন্ধ্যে একটু তাড়াতাড়ি এসে পরে কোলকাতায়। শিতাভ্র আর ওর বন্ধুদের সাথে গল্প করে সময় কাটিয়ে দেয়। এর মাঝে একবার বাড়িতে ফোন করে খবর নেয়। বড়দি ফোনেই বলে, যে বেড়িয়ে পড়েছে এবং দেবীর সাজ দেখে মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার যোগাড়। অভি প্রশ্ন করাতে উত্তর দেয় যে একেবারে চাক্ষুস দেখে বুঝতে পারবে। অভি হেসে ফেলে।
প্রায় সাড়ে সাতটা নাগাদ, দিদিভাইকে সাজিয়ে তৈরি করে দিল দিয়া। নিজেও সেজে গুজে তৈরি, ভীষণ ভাবেই ভিন্ন সাজ। ছোট ছোট গাড় বাদামী রঙের গুটি দেওয়া কাঁচা হলুদ রঙের একটা সম্বলপুরি সিল্কের শাড়ি, ছোট হাতার গাড় বাদামী রঙের ব্লাউজ, যার পিঠের দিকটা বেশ কাটা। লম্বা চুল, একটা আলতো খোঁপা করে বাঁধা, তাতে একটা কাঠের হেয়ার ক্লিপ গোঁজা। হেয়ার ক্লিপের চেয়েও যেটা বেশি আকর্ষণীয় লাগে সেটা হচ্ছে খোঁপায় গোঁজা একটা লম্বা ঘাস ফুল। কানে গলায় কাঠের এবং পোড়া মাটির গয়না, কপালে একটা বড় হলদে আর তার মাঝখানে একটা ছোট বাদামী রঙের টিপ। এমনকি কব্জির ঘড়িটা পর্যন্ত বেশ ভিন্ন। দুই চোখ, ভীষণ ভাবেই টানাটানা করে আঁকা। ঠোঁট দুটো চেরি লাল রঙের লিপস্টিকে রাঙ্গানো, বেশ চকচক করছে। চোখের তারায় হাজার প্রশ্ন, অভির দিকে তাকিয়ে ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে, কেমন লাগছে গো? এই রূপ দেখে অভি বাক্যহারা হয়ে যায়, এইসাজ ভীষণ ভাবেই ভিন্ন প্রকৃতির, এইসাজ ঠিক যেন বউভাতের সাজ নয়, এইসাজ শুধু মাত্র ওর জন্য সাজা। গাড়ি তৈরি, দিদিভাইকে নিয়ে বাড়ির অন্য মেয়েরা ভাড়া করা বাড়িতে যেতে প্রস্তুত হয়।
দিয়া হাতের ইশারা করে অভিকে কাছে ডাকে, “এই যে, শুনছেন।”
অভি মুচকি হেসে গুটি পায়ে দিয়ার পাশে এসে দাঁড়ায়। নাকে ভেসে আসে, মিষ্টি মাতাল করা সুবাস। আঙ্গুলের সাথে আঙ্গুলের স্পর্শ হতেই এক উষ্ণ অনুভূতি খেলে যায় অভির হাতের শিরার ভেতর দিয়ে, “বলুন ম্যাডাম, কি করতে পারি।”
“তুমি কিছুই করতে পারো না” দিয়া বলতে গিয়েও কথাটা বলে না, “ব্যাগ গুলো কি একটু গাড়িতে রেখে দেবেন, প্লিজ?” খুব ইচ্ছে করছিল ডান হাতটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
অভি মাথা নুইয়ে হেসে উত্তর দেয়, “জো হুকুম।”
তিতাসকে দিয়ার কাছে রেখে, ব্যাগ নিয়ে এলো। দিয়া তিতাসকে কোলে করে গাড়িতে উঠে গেল। শিতাভ্রর বাড়ি থেকে বিয়ের বাড়ি যেতে বেশি সময় লাগলো না। বাড়ির মধ্যে ঢুকতেই দেবাশিস বাবুর সাথে দেখা। অভি ইশারা করে দিয়াকে অন্যত্র যেতে অনুরোধ করে, “তুমি চলো, আমি এই আসছি।” দিয়া মাথা দুলিয়ে তিতাসকে নিয়ে ঢুকে পরে বাড়ির মধ্যে।
দেবাশিস বাবু অভিকে জিজ্ঞেস করেন, “কেমন আছো?”
অভি মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়, “ভালো, কখন এলে?”
দেবাশিস বাবু উত্তর দেন, “এই একটু আগে।”
অভি প্রশ্ন করে, “মিডিয়া হাউসে জয়েন করবে বলছিলে, হয়ে গেছে?”
দেবাশিস বাবু উত্তর দেন, “হ্যাঁ। তোমার কি খবর বল?”
অভি উত্তর দেয়, “এই ব্যাস চলে যাচ্ছে আর কি। এইবার কয়েক জায়গায় ফোরসড এপ্লিকেসান দেব, দেখি কোথাও না কোথাও থেকে কল এসে যাবে।”
দেবাশিস বাবু একটু হেসে উত্তর দেন, “হ্যাঁ হ্যাঁ, তোমার প্রোফাইল দেখে যে কেউ লুফে নেবে। এই কোয়ালিফিকেশানের কেউই কোলকাতায় থাকে না।”
অভিও হেসে উত্তর দেয়, “দেখা যাক।”
দেবাশিস বাবু বলেন, “চল ভেতরে চল, একবার মনামির সাথে দেখা করে আসি।”
অভি ঘড়ি দেখে জিজ্ঞেস করে, “তাড়া আছে নাকি?”
দেবাশিস বাবুও ঘড়ি দেখে উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ মানে একটু তাড়া আছে।”
অভি প্রশ্ন করে, “সবে সাড়ে সাত’টা বাজে, একটু পরেই বাড়ির সবাই চলে আসবে। একেবারে দেখা করেই যাবে।”
দেবাশিস বাবু স্মিত হেসে বলেন, “হ্যাঁ সেটা নিশ্চয় দেখা করেই যাবো। বউদি, দাদা কেমন আছেন?”
অভি উত্তর দেয়, “বাড়ির সবাই ভালো আছে। পাপা এই সেপ্টেম্বরে রিটায়ার করল, এখন বাগান নিয়ে পড়েছে। বাড়ির পেছনের আগাছা গুলো সাফ করে সেখানে বেগুন, টমেটো এই সব চাষ করবে।” বলেই হেসে ফেলে।
দেবাশিস বাবুও একটু হেসে বলেন, “হ্যাঁ, এই গাছ গাছালি নিয়ে দাদার সেই ছোটবেলা থেকেই বাতিক।”
অভি উত্তরে বলে, “হ্যাঁ, কাজের মানুষ, কিছু একটা নিয়ে থাকা ভালো।”
দেবাশিস বাবু জিজ্ঞেস করেন, “তোমার কোলে ওই ছোট বাচ্চাটা কে?”
অভি হেসে ফেলে, “আমার ভাগ্নে, তিতাস, বড়দির পুত্র। ওর মুখে ভাতে তোমরা কেউই এলে না।”
লজ্জা পেয়ে যান দেবাশিস বাবু, “না মানে, সেই সময়ে আমি একটু কাজের জন্য বাইরে গিয়েছিলাম।”
অভি বুঝতে পারল যে এই ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়াটাই ভালো। তাই আর কথা না বাড়িয়ে দেবাশিস বাবুকে নিয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুকে পরল।
হলের একদিকে একটা স্টেজের মতন তৈরি করে সেখানে দিদিভাইয়ের বসার জায়গা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু দিদিভাই সেখানে বসে নেই, বেশ দিব্যি তিতাসকে কোলে করে সবার সাথে ঘুরে ঘুরে আলাপ পরিচয় গল্প করে বেড়াচ্ছে। অভির এটা দেখে বেশ ভালো লাগলো, ওই ভাবে মাটির পুতুলের মতন সাজিয়ে কাউকে বসিয়ে রাখা অভি একদম পছন্দ করে না। মনে হয় যেন সবাই পুজো প্যান্ডালে প্রতিমা দেখতে এসেছে। দিয়া একদিকে দাঁড়িয়ে ফোনে ব্যাস্ত, মাঝে মাঝেই এদিকে ওদিকে তাকিয়ে কাউকে খুঁজে বেড়াচ্ছে ওর দুই চোখ। অভিকে দেখতে পেয়েই যেন ধড়ে প্রান ফিরে পেল। ছোট পায়ে ওর দিকে এগিয়ে আসতেই, আঙ্গুলের ইশারায় অভি বারন করে দেয়, কারন পাশেই দেবাশিস বাবু দাঁড়িয়ে। দিদিভাইকে কাছে ডেকে তিতাসকে কোলে তুলে নিল অভি। দেবাশিস বাবুও ভদ্রতার খাতিরে মনামির কুশল জিজ্ঞেস করলেন। কিছু পরেই শোরগোল একটু বেশি বেড়ে গেল বাড়িতে, কনের বাড়ি থেকে আত্মীয়রা এসে উপস্থিত।
অভি আর মনামির মাঝে চোখাচুখি হল। মিষ্টি হেসে ইশারায় দিদিভাইকে সাবধান করে দিল, মাকে দেখে কাঁদিস নে যেন।
ভাইয়ের বাজুতে চিমটি কেটে উত্তর দেয় মনামি, না না কাঁদব না। বলতে বলতেই চোখের কোল মুছে নেয়।
দিদিভাই চলে যেতেই পিঠের ওপর দড়াম করে একটা কিল। বত্রিশ পাটি দন্ত বিকশিত করে ঝন্টু জিজ্ঞেস করে, “ফুল্টু ব্যাটিং করেছিস নাকি রে?”
হেসে ফেলে অভি, একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা দিয়াকে দেখিয়ে বলে, “না রে, এখন পিচে নামার সময় পাইনি।”
ঝন্টু আর লেখাকে দেখে দিয়া এগিয়ে আসে ওদের দিকে। লেখা দিয়াকে আপাদমস্তক দেখে হেসে বলে, “একি রে তোকে ভীষণ সুন্দর লাগছে।”
দিয়াও লাজুক হেসে উত্তর দেয়, “তুইও ত বেশ লাগছিস রে।”
চওড়া লাল পাড়ের, ধুসর রঙের তসরের শাড়ি বাঙালি আটপৌরে কায়দায় স্বাতীলেখার অঙ্গে জড়ানো। দুই কালো বাঁকা ভুরুর মাঝে লাল টিপ বিরাজমান, সর্বাঙ্গে ভারী সোনার গয়নায় বনেদী বাড়ির বাঙালি বৌমার সাজে সজ্জিত। ঝন্টুও লেখার শাড়ির সাথে মিলিয়ে একটা পাঞ্জাবী পায়জামা পড়েছে। লেখার সাজে এক ঐতিহ্যগত বনেদিয়ানা আর পাশেই দিয়া যার সাজে সমকালীন কমনীয়তা। দিয়া অভির পাশ ঘেঁসে দাঁড়াতেই, লেখার চোখে এক দুষ্টুমিষ্টি হাসি খেলে যায়। অভির দৃষ্টির অগোচরে দুই বান্ধবীর মধ্যে চোখের ভাষায় অনেক কথা হয়ে যায়। বড়দিকে দেখতে পেয়েই তিতাস ও হাত ছেড়ে পালিয়ে যায়।
লেখাকে নিয়ে দিয়া একটু তফাত যেতেই ঝন্টু অভির কানে কানে ফিসফিস করে বলে, “দেবী কে দেখেছিস?”
অভি ভুরু কুঁচকে মাথা নাড়ায়, “না, কি হয়েছে বল’ত? বড়দিও বলছে, তুইও বলছিস? দেবী কি এমন করেছে?”
ঝন্টু মাথা চুলকে একটু হেসে উত্তর দেয়, “না না, কিছু করেনি। তবে সত্যি বলছি...” বলে দরজার দিকে তাকায়।
দরজার দিকে লোকজনের একটু ভিড় ছিল, হটাত করেই সেই ভিড় সরে গেল। দেবীকে ঢুকতে দেখে সবাই পথ ছেড়ে দাঁড়ায়, যেন কোন দেশের মহারানী প্রবেশ করছে। ফর্সা, টুকটুকে দেবী, পরনে হলদে আর লাল রঙের ঠিক যেন আগুনের মতন রঙ, বিশাল ঘেরের বেশ লম্বা একটা কাঁধ বিহীন ইভিং গাউন। গাউনের নিচের দিকে অসংখ্য ছোট ছোট রুপোলী তারা খচিত। দুই কানে লম্বা ক্রিস্টালের দুল, গলায় কন্ঠ চাপা ক্রিস্টাল পাথরের একটা হার যার মাঝখানে নীল মণির মতন একটা পাথর জ্বলজ্বল করছে। দুই ফর্সা কব্জিতে চওড়া সাদা চকচকে পাথরের ব্রেসলেট। মাথার চুল পরিপাটি করে একটা সুন্দর খোঁপা করে বাঁধা, চুলের এক পাতলা গুচ্ছ কপাল বেয়ে বাম গালের ওপরে দোল খেয়ে বেড়াচ্ছে। টানাটানা চোখ দুটো ভারী সুন্দর করে আঁকা, চোখের পাতার ওপরে লালচে আইশ্যাডো। পিঠের পেছন দিয়ে, দুই হাতের মধ্যে জড়িয়ে একটা আগুনে লাল রঙের পাতলা ওড়নার মতন একটা কাপড়। বাঁ হাতে একটা লাল রঙের ক্লাচ ব্যাগ। দুই হাতে, লম্বা ঘেরের গাউন একটু তুলে নরম ছোট পায়ে হলের মধ্যে প্রবেশ করে। সর্বাঙ্গে এক সুচারু মার্জিত ভাবে ফুটে উঠেছে। বেশির ভাগ মানুষের দৃষ্টি দেবীর দিকে নিবদ্ধ। যদিও বিয়েতে অনেকেই দেখেছে তাও বউভাতের এই অনন্যা সাজে সবাই বাকরুদ্ধ। বাঙালির বিয়ে অথবা বউভাতে এইসাজে এই বাড়ির কেউই কাউকে কোনদিন দেখেনি তাই সবার চোখে এক প্রশ্ন এই মেয়েটার পরিচয় কি।
দাদাকে দেখে, মিষ্টি হেসে ডান হাত একটু তুলে আঙ্গুল নাড়িয়ে অভিবাদন জানায়, “হাই।”
অভি স্মিত হেসে দেবীকে কাছে ডাকে বলে, “তুই সত্যি আগুন ধরিয়ে দিবি দেখছি।” দেবীর কাঁধে হাত রেখে কাছে টেনে, মাথায় ঠোঁট চেপে বলে, “তোকে ভারী মিষ্টি দেখাচ্ছে।”
দেবী দাদার বুকের মধ্যে কুঁকড়ে গিয়ে উত্তর দেয়, “থ্যাঙ্কস, গত বছর বারথডেতে ড্যাড এটা সাউথ আফ্রিকা থেকে এনে দিয়েছে।” পারলে যেন দাদার কোটের মধ্যে ঢুকে যাবে। মিষ্টি হেসে নরম গলায় দাদাকে প্রশ্ন করে, “তুমি কেন আগে এলে?”
অভি উত্তর দেয়, “দিদিভাই ডেকেছিল তাই আসতে হল।”
দাদার কাছে একটু অভিমান সুরে অনুযোগ করে, “সকালে ফোন পাওয়ার পর আর স্কুল যাইনি। বাড়িতেই ছিলাম, একবার বলতে পারতে।”
অভি ওর কাঁধে হাত রেখে আদর করে উত্তর দেয়, “আমি কি করে জানবো বল।”
অভিমানীর অনুযোগ যেন আর শেষ হয় না, “আমাকে ফোন করলেই পারতে।” একবার এদিক ওদিক তাকিয়ে প্রশ্ন করে, “ড্যাড, এসেছে নাকি?”
মাথা দোলায় অভি, “হুম।”
অভি, দিয়া আর লেখার দিকে দেখিয়ে দেবীকে বলে, “যা, ওদের সাথে কথা বল, গল্প কর।”
দাদার একদম কোল ঘেঁসে দাঁড়িয়ে নরম কণ্ঠে উত্তর দেয়, “না গো, কেমন অকোয়ারড ফিল (বেমানান মনে) হচ্ছে।”
দেবীকে বুঝিয়ে বলে অভি, “এমন করলে হবে, বল। তুই এইভাবে আমার পাশ না ছাড়লে সবাই ভাববে মেয়েটার কি নাক উঁচুরে বাবা।”
দেবী দাদার দিকে তাকিয়ে বলে, “আচ্ছা বাবা, কিন্তু আমি ড্যাডের সামনে যাবো না।”
অভি উত্তরে বলে, “ঠিক আছে, তুই দিয়া আর লেখার পাশে পাশেই থাকিস।” এই বলে বুঝিয়ে সুঝিয়ে দিয়া আর লেখার কাছে পাঠিয়ে দেয়।
আলতো মাথা দুলিয়ে ছোট পায়ে লেখা আর দিয়ার সাথে গল্প করতে চলে যায় দেবী। তিনজনের দিকে তাকিয়ে দেখে অভি, তিন জনেই তিন সাজে অনন্যা।

[Image: 117870953-3271163296271239-2155538677769151534-n.jpg]
photo uploader free
[+] 3 users Like pnigpong's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: চোরাবালি (কালেক্টেড) - by pnigpong - 25-08-2020, 01:21 PM



Users browsing this thread: 12 Guest(s)