24-08-2020, 09:43 PM
(This post was last modified: 08-07-2022, 04:29 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আমি আজ একটুকরো ছেলেবেলা ফিরে পেলাম। সেই স্বপ্নের মতো ছেলেবেলা। স্বর্গের মতো ছেলেবেলা।
হয়েছে কী, শনিবাসরীয় অফিসবেলার পরে হাঁটি হাঁটি পা পা করে কোথায় যাব ভাবছি, হঠাৎ চোখ গেল একটি হোর্ডিং এর দিকে। হরিশ মুখার্জি পার্কে চলছে 'বিবেক মেলা'। একেই স্বামীজীর নামাঙ্কিত, তায় আবার মেলা, অতএব, পদব্রজেই 'চল পানসি' বলে রওনা হলাম সেদিকে। আর, কত্তদিন পরে একটা মেলা! মনের সুখে 'দশ টাকায় হরেক মাল' কিনে জিলিপির দোকানের দিকে পা বাড়ালাম। দেখি সবে কড়ায় জিলিপি ছাড়া হয়েছে। মেলার জিলিপি যেমনি হয়, একটু বেশিই মিষ্টি, কমলা, টুসটুসে...ভেবেচিন্তে একশো গ্রাম জিলিপি চাইলাম দোকানদার দাদার কাছে। আর বললাম 'দাদা, দেখবেন, গরম যেন হয়!'
তা দাদা বেশ খিঁচিয়ে বললেন 'দেরি হবে!'
মুখ গোমড়া করে তাকিয়ে আছি, দেখি, সদ্য কড়া থেকে নামানো জিলিপি গুলোর থেকে বেশ খানিকটা, তা ওই একশো গ্রাম মতোই হবে, একটা ঠোঙায় ভরলেন, ওজন টোজন না করেই। আমি আমার টা ভেবে হাত বাড়াতে যাব, দেখি ওই দোকানের একটু উঁচু পাটাতন থেকে লাফিয়ে নামলেন ওই দাদা। তারপর একটু এগিয়ে গেলেন, পার্কের এক কোনে, যেখানে দুজন বাচ্চা বাচ্চা ছেলে বসে...মাটি মাটি গায়ের রং, ভীতু ভীতু চোখ...জড়োসড়ো...।
সেই দাদা বাচ্চাগুলোর কাছে এগিয়ে গিয়ে বললেন 'এই যে খেয়ে নে। আর শোন, ঠোঙা টা যেখানে সেখানে ফেলবি না। আমার দোকানের নীচে বালতি রেখিচি, সেখেনে ফেলবি। আবার ক্ষিধে পেলে ওখানে গিয়ে দাঁড়াস...' হাত দেখিয়ে নিজের দোকানের দিকে দেখিয়ে এগিয়ে এলেন দাদা। তারপর, ফিরে এসে আমার অবাক হওয়া চোখের দিকে না তাকিয়েই বললেন 'দিদি, কতটা দেব? ওই বাচ্চাগুলোকে আগে দিয়ে এলাম...আসলে এই জিলিপি নামালাম তো... ওরা কি খেয়েছে কে জানে...'
আমার মনে যে প্রশ্ন টা ছিল সেটা করেই ফেললাম..'কিন্তু দাদা, বউনির সময় আপনার...এভাবে...আমি তো শুনেছিলাম বউনির সময়...'
ভদ্রলোক একটু হাসলেন...তারপর বললেন 'দিদি, যাঁর নামে মেলা...তিনিই যে বলতেন "জীবসেবাই শিবসেবা"...তাই আর কি...'
স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
জীবসেবাই শিবসেবা! বলেছিলেন বটে মানুষটি...মানুষের মতো, ধ্রুবতারার মতো মানুষটি...।
আরেকজন বললেন আজ, আমার সামনে।
সময়, পরিধি, পরিস্থিতির লক্ষ যোজন পার্থক্য, তবু...গায়ে কাঁটা দিল।
'কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর...
মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক... মানুষেতে সুরাসুর...'
হয়েছে কী, শনিবাসরীয় অফিসবেলার পরে হাঁটি হাঁটি পা পা করে কোথায় যাব ভাবছি, হঠাৎ চোখ গেল একটি হোর্ডিং এর দিকে। হরিশ মুখার্জি পার্কে চলছে 'বিবেক মেলা'। একেই স্বামীজীর নামাঙ্কিত, তায় আবার মেলা, অতএব, পদব্রজেই 'চল পানসি' বলে রওনা হলাম সেদিকে। আর, কত্তদিন পরে একটা মেলা! মনের সুখে 'দশ টাকায় হরেক মাল' কিনে জিলিপির দোকানের দিকে পা বাড়ালাম। দেখি সবে কড়ায় জিলিপি ছাড়া হয়েছে। মেলার জিলিপি যেমনি হয়, একটু বেশিই মিষ্টি, কমলা, টুসটুসে...ভেবেচিন্তে একশো গ্রাম জিলিপি চাইলাম দোকানদার দাদার কাছে। আর বললাম 'দাদা, দেখবেন, গরম যেন হয়!'
তা দাদা বেশ খিঁচিয়ে বললেন 'দেরি হবে!'
মুখ গোমড়া করে তাকিয়ে আছি, দেখি, সদ্য কড়া থেকে নামানো জিলিপি গুলোর থেকে বেশ খানিকটা, তা ওই একশো গ্রাম মতোই হবে, একটা ঠোঙায় ভরলেন, ওজন টোজন না করেই। আমি আমার টা ভেবে হাত বাড়াতে যাব, দেখি ওই দোকানের একটু উঁচু পাটাতন থেকে লাফিয়ে নামলেন ওই দাদা। তারপর একটু এগিয়ে গেলেন, পার্কের এক কোনে, যেখানে দুজন বাচ্চা বাচ্চা ছেলে বসে...মাটি মাটি গায়ের রং, ভীতু ভীতু চোখ...জড়োসড়ো...।
সেই দাদা বাচ্চাগুলোর কাছে এগিয়ে গিয়ে বললেন 'এই যে খেয়ে নে। আর শোন, ঠোঙা টা যেখানে সেখানে ফেলবি না। আমার দোকানের নীচে বালতি রেখিচি, সেখেনে ফেলবি। আবার ক্ষিধে পেলে ওখানে গিয়ে দাঁড়াস...' হাত দেখিয়ে নিজের দোকানের দিকে দেখিয়ে এগিয়ে এলেন দাদা। তারপর, ফিরে এসে আমার অবাক হওয়া চোখের দিকে না তাকিয়েই বললেন 'দিদি, কতটা দেব? ওই বাচ্চাগুলোকে আগে দিয়ে এলাম...আসলে এই জিলিপি নামালাম তো... ওরা কি খেয়েছে কে জানে...'
আমার মনে যে প্রশ্ন টা ছিল সেটা করেই ফেললাম..'কিন্তু দাদা, বউনির সময় আপনার...এভাবে...আমি তো শুনেছিলাম বউনির সময়...'
ভদ্রলোক একটু হাসলেন...তারপর বললেন 'দিদি, যাঁর নামে মেলা...তিনিই যে বলতেন "জীবসেবাই শিবসেবা"...তাই আর কি...'
স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
জীবসেবাই শিবসেবা! বলেছিলেন বটে মানুষটি...মানুষের মতো, ধ্রুবতারার মতো মানুষটি...।
আরেকজন বললেন আজ, আমার সামনে।
সময়, পরিধি, পরিস্থিতির লক্ষ যোজন পার্থক্য, তবু...গায়ে কাঁটা দিল।
'কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর...
মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক... মানুষেতে সুরাসুর...'