
ঝাপসা হয়ে যাওয়া চোখ...আর মুখে হাসি নিয়ে লিখছি।
আজ দিনটা খুব ভাল কেটেছে কিছু প্রিয়জনের সাথে। প্রায় সারাদিন তাদের সাথে কাটিয়ে ফিরছি, হাজরা মোড় দিয়ে, মেট্রো ধরব বলে। আমার কানে রোজকার মতোই হেডফোন গোঁজা ছিল।আমি সাধারণত খুব মৃদুসুরে গান শুনি। উচ্চগ্রামের শব্দতরঙ্গ আমার একদম নাপসন্দ।
কিন্তু সেই মৃদু গান আমার কান অবধি আর পৌঁছতে পারছিল না, কারন দুটি বাচ্চা - মানে, একজন একটু বড় একটি মেয়ে, তা প্রায় বছর বারো তেরো হবে...অন্যজন একদম ছোট্ট একটা ছেলে...চার পাঁচ হবে বড়জোর। নোংরা চিটকানি জামা পরা, দুজনের ই দুপায়ে দুরকমের চটি। মাথায় জটা পরা চুল আর ছেলেটার নাক বেয়ে সর্দি। দুজনের হাতেই দুটো মার্বেলের মতো একটু শক্ত পাথর। সে দুটো ঘষছিল দুজন। যেভাবে এরা বাসে বাসে গান গেয়ে ভিক্ষা চায়। আর এই মার্বেল ঘষার আওয়াজ টা খুব কর্কশ লাগে আমার।
যাই হোক...ওদের পাশ দিয়ে হনহন করে এগিয়ে গিয়ে মেট্রোর সিঁড়ি দিয়ে নামতে যাব, দেখি, সিঁড়ির সামনেই এক যুবক দাঁড়িয়ে। ভদ্র চেহারা, চোখে চশমা, হাতে ক্রাচ...পাশে একজন ভদ্রমহিলা। শাঁখা সিঁদুর পরা। মার্জিত, মৃদু কন্ঠে বলছেন 'শুনছেন? একটু সাহায্য করে যাবেন?' খুব খুব মৃদু কন্ঠে...কারন বেশি জোরে কথা বলার অভ্যাস নেই বোধহয়।
আমি সাধারণত এই ধরনের মানুষদের সাহায্য করিনা। কারন বেশিরভাগ ই তো ফেক হন, ঠকান আমাদের, তাই। কিন্তু, এই দুজনকে দেখেই মনে হচ্ছিল পার্ক স্ট্রিটের 'এক্সিউজ মি, আমার মানিব্যাগ হারিয়ে গেছে' বলার মতো লোক এঁরা নন। নিতান্তই অবস্থার বিপাকে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন একটু সাহায্যের আশায়। আমি একটু থমকে গেলাম। আসলে আজ আমার ওয়ালেটে তেমন খুচরো টাকা ছিল না, ছিল একটাই গোলাপী নোট। তাই ব্যাগের এদিক ওদিক খুঁজছি, যদি একটা পঞ্চাশ টাকাও পাওয়া যায়,হঠাৎ একটা 'ঠং' করে আওয়াজ শুনলাম। ভুল বললাম, ঠিক ঠং না...'ঝনঝন'...
পেছন ফিরে দেখি সেই বাচ্চা দুটো এক মুঠো খুচরো পয়সা ফেলে দিয়েছে অসুস্থ ছেলেটির সামনে রাখা পাত্রে। তার পাশে দাঁড়ানো ভদ্রমহিলা অবাক হয়ে 'এই তোরা দিলি কেন?' বলার আগেই দুজন হাত ধরাধরি করে দে ছুট চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের অন্ধকার রাস্তাটার দিকে...।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম সেদিকে।
রাস্তাটা আর অন্ধকার লাগছিল না...দু' দু'টো আলোকবিন্দু... গেছে ওখান দিয়ে...।
যে ছেলেটি অসুস্থ, তার নাম সৌমিক জানা। অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিল। নিম্নবিত্ত বাড়ির একমাত্র রোজগেরে। ছ' ছ'টা অপারেশান হয়ে গেছে...যেটুকু জমানো ছিল চলে গেছে তাতেই। এখন বাধ্য হয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে। আমি ফোন নাম্বার নিয়ে এসেছি...কেউ যদি পারেন, যদি ইচ্ছে করে..পৌঁছে দিতে পারেন সাহায্য ওদের কাছে। ওদের অনুমতি নিয়েই ছেলেটির ছবি ও নাম্বার টি পোস্টে দিলাম - 8583912764।
তবে, আমি জানি সৌমিক জানা সেরে উঠবেই, আবার কাজেও যাবে...কারন দুজন দেবশিশু...না না ভুল বললাম...দুজন 'মানুষের মতো মানুষ' আজ ওকে ভালবাসা পাঠিয়ে দিয়ে গেছে....আর এই ভালবাসা কক্ষনো মিথ্যা হতে পারে না...।।
আজ দিনটা খুব ভাল কেটেছে কিছু প্রিয়জনের সাথে। প্রায় সারাদিন তাদের সাথে কাটিয়ে ফিরছি, হাজরা মোড় দিয়ে, মেট্রো ধরব বলে। আমার কানে রোজকার মতোই হেডফোন গোঁজা ছিল।আমি সাধারণত খুব মৃদুসুরে গান শুনি। উচ্চগ্রামের শব্দতরঙ্গ আমার একদম নাপসন্দ।
কিন্তু সেই মৃদু গান আমার কান অবধি আর পৌঁছতে পারছিল না, কারন দুটি বাচ্চা - মানে, একজন একটু বড় একটি মেয়ে, তা প্রায় বছর বারো তেরো হবে...অন্যজন একদম ছোট্ট একটা ছেলে...চার পাঁচ হবে বড়জোর। নোংরা চিটকানি জামা পরা, দুজনের ই দুপায়ে দুরকমের চটি। মাথায় জটা পরা চুল আর ছেলেটার নাক বেয়ে সর্দি। দুজনের হাতেই দুটো মার্বেলের মতো একটু শক্ত পাথর। সে দুটো ঘষছিল দুজন। যেভাবে এরা বাসে বাসে গান গেয়ে ভিক্ষা চায়। আর এই মার্বেল ঘষার আওয়াজ টা খুব কর্কশ লাগে আমার।
যাই হোক...ওদের পাশ দিয়ে হনহন করে এগিয়ে গিয়ে মেট্রোর সিঁড়ি দিয়ে নামতে যাব, দেখি, সিঁড়ির সামনেই এক যুবক দাঁড়িয়ে। ভদ্র চেহারা, চোখে চশমা, হাতে ক্রাচ...পাশে একজন ভদ্রমহিলা। শাঁখা সিঁদুর পরা। মার্জিত, মৃদু কন্ঠে বলছেন 'শুনছেন? একটু সাহায্য করে যাবেন?' খুব খুব মৃদু কন্ঠে...কারন বেশি জোরে কথা বলার অভ্যাস নেই বোধহয়।
আমি সাধারণত এই ধরনের মানুষদের সাহায্য করিনা। কারন বেশিরভাগ ই তো ফেক হন, ঠকান আমাদের, তাই। কিন্তু, এই দুজনকে দেখেই মনে হচ্ছিল পার্ক স্ট্রিটের 'এক্সিউজ মি, আমার মানিব্যাগ হারিয়ে গেছে' বলার মতো লোক এঁরা নন। নিতান্তই অবস্থার বিপাকে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন একটু সাহায্যের আশায়। আমি একটু থমকে গেলাম। আসলে আজ আমার ওয়ালেটে তেমন খুচরো টাকা ছিল না, ছিল একটাই গোলাপী নোট। তাই ব্যাগের এদিক ওদিক খুঁজছি, যদি একটা পঞ্চাশ টাকাও পাওয়া যায়,হঠাৎ একটা 'ঠং' করে আওয়াজ শুনলাম। ভুল বললাম, ঠিক ঠং না...'ঝনঝন'...
পেছন ফিরে দেখি সেই বাচ্চা দুটো এক মুঠো খুচরো পয়সা ফেলে দিয়েছে অসুস্থ ছেলেটির সামনে রাখা পাত্রে। তার পাশে দাঁড়ানো ভদ্রমহিলা অবাক হয়ে 'এই তোরা দিলি কেন?' বলার আগেই দুজন হাত ধরাধরি করে দে ছুট চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের অন্ধকার রাস্তাটার দিকে...।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম সেদিকে।
রাস্তাটা আর অন্ধকার লাগছিল না...দু' দু'টো আলোকবিন্দু... গেছে ওখান দিয়ে...।
যে ছেলেটি অসুস্থ, তার নাম সৌমিক জানা। অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিল। নিম্নবিত্ত বাড়ির একমাত্র রোজগেরে। ছ' ছ'টা অপারেশান হয়ে গেছে...যেটুকু জমানো ছিল চলে গেছে তাতেই। এখন বাধ্য হয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে। আমি ফোন নাম্বার নিয়ে এসেছি...কেউ যদি পারেন, যদি ইচ্ছে করে..পৌঁছে দিতে পারেন সাহায্য ওদের কাছে। ওদের অনুমতি নিয়েই ছেলেটির ছবি ও নাম্বার টি পোস্টে দিলাম - 8583912764।
তবে, আমি জানি সৌমিক জানা সেরে উঠবেই, আবার কাজেও যাবে...কারন দুজন দেবশিশু...না না ভুল বললাম...দুজন 'মানুষের মতো মানুষ' আজ ওকে ভালবাসা পাঠিয়ে দিয়ে গেছে....আর এই ভালবাসা কক্ষনো মিথ্যা হতে পারে না...।।