Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সাগরকন্যা
#2
সাগরকন্যা – ২


আপু স্যুটকেস উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখতে থাকল, আমি অস্থির হয়ে বললাম, “তোমার সিম্পল কিছু নাই ? সারাদিন তো শার্ট প্যান্ট পড়েই ঘুরো, ওখান থেকেই কিছু একটা দাও না আমাকে !”

আপু বলল, “অস্থির হওয়ার কি আছে ? আর আমার শার্ট প্যান্ট কি তোর শার্ট প্যান্টের মত নাকি ? আর আমি তো তোকে শার্ট প্যান্ট দিব না, এত লম্বা সময়ের জন্য মেয়ে সাজানোর চান্স আর পাব নাকি ? যা দিব তাই পড়তে হবে…কিন্তু দাঁড়া, আমার জামা তোর ভালো ফিট করবে না তো। তোর কাছাকাছি সাইজের আছে রিন্তি…যাই ওদেরকে ডাক দিই !”

আমি “না না না !” বলে দরজা আটকাতে যাওয়ার আগেই আপু দৌড়ে চলে গেল। বুঝলাম কপালে দুঃখ আছে….সবগুলো এখন একসাথে আমার রুমে এসে আমাকে কি করবে কে জানে !



আমার চিন্তাও শেষ হল, আর হুড়মুড় করে সাতটা মেয়ে এসে ঢুকল রুমে। সবগুলো একসাথে চিৎকার দিল একটা, “স্পর্শওওওও !!!”



আপু কারেকশান করে দিল “স্পর্শ না। সাতদিনের জন্য স্পর্শিয়া” হাসির একটা রোল বয়ে গেল রুমের মধ্যে, আমি তখন ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া একটা হাসি দিলাম।



হাসি শেষ হলে জয়া আপু বলল, “আচ্ছা ! আমাদের স্পর্শিয়াকে কি পড়ানো যায় ?”



“সেটা নিয়েই তো এতক্ষণ চিন্তা করছিলাম। আমার কিছু ওর হবে না, লম্বা লম্বা হবে। তোরা তো ওর কাছাকাছি আছিস লম্বায়, তোরা তোদের কিছু জামাকাপড় ধার দে না ! বেচারা মেয়েটা কি জামা কাপড় ছাড়া থাকবে এতদিন ?”

সবাই মিলে বলে উঠল, “আরে আমরা আছি না ! আমরা সবাই তো প্রায় ওর সমান, এই ৭ দিন ও আমাদের ড্রেস পড়েই ঘুরতে পারবে !” তারপরে আবার হাসাহাসি শুরু হল।



হায়রে ! আমি চিন্তা করছি কোনমতে একটা দিন পার করার আর এরা একদম ৭দিনের প্ল্যান করে ফেলেছে ?

রিন্তি আপু বলল, “আমার সব ড্রেসই ওকে ফিট করবে, স্পেশালি ব্রা !…তোরা সবাই যার যার জামা কাপড় থেকে কয়েকটা করে নিয়ে আয় যা !”



আমার আপু চোখ টিপে বলল, “তুই স্পর্শিয়ার ব্রা’র সাইজ জানলি কিভাবে ?”



রিন্তি আপু বলল, “ভুলে যাইস কেন আমি ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়ি ? এই সাতদিন স্পর্শিয়া আমার মডেল হবে !”

আপুরা সব হুড়মুড় করে বের হয়ে গেল।



আমিও ভুলে গিয়েছিলাম ব্যাপারটা। আমি টের পেলাম লজ্জায় আমার গাল লাল হয়ে যাচ্ছে। এই আপুগুলোর সাথে একই রকম জামা কাপড় পড়ে আমাকে এখন ঘুরতে হবে ? আপুরা যেভাবে হাইহিল পড়ে টিকটিক শব্দ তুলে হাটে সেভাবে আমাকে হাটতে হবে ? আপুদের মত করে ঠোটে লিপস্টিক, চোখে কাজল, হাতে চুড়ি, কানে দুল পড়ে ঘুরতে হবে ? তাও আবার ৭ দিনের জন্য ? আমার কেন জানি লজ্জার সাথে সাথে একটা অদ্ভূত আনন্দেরও অনুভূতি হল।



রিন্তি আপু এসে হুড়মুড় করে ঢুকল রুমে। বাকিরা আসেনি এখনো। আপু আমার সামনে দাড়িয়েই বলল, “ঝটপট শার্টটা খুলে ফেল দেখি। নাহলে সবার সামনে টপলেস দাড়িয়ে থাকতে হবে কিন্তু !”



এই ভয়েই ছিলাম। এমনিতেই আমি কারো সামনে আমার টি শার্ট খুলতে পছন্দ করি না, কারণ আমার বুক ফোলা ফোলা, খুললেই সবাই মেয়ে মেয়ে বলে চিল্লাবে…কিন্তু এখন নিরূপায়, খুলতেই হবে। আস্তে করে খুলে ফেললাম।

রিন্তি আপু জোরে একটা সিটি বাজিয়ে বলল, “ওউফ স্পর্শিয়া, তুই যে একটা busty মডেল সেটা কি তুই জানিস ? ভাগ্যিস তোর ব্যাগটা হারিয়ে গেল, এখন আমি তোর ছবি তুলেই ভার্সিটির প্রজেক্ট ওয়ার্ক করে ফেলব। আমি কত লাকি !”



busty শব্দটার মানে আমি জানতাম। লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছি দেখে আপু তাড়াতাড়ি বলল, “ও মা এখন লজ্জা পেলে হবে ? সেক্সি মডেলরা কখনো লজ্জা পায় না। দেখি হাত উঁচু কর।”



ব্রা’র দিকে তাকিয়ে দেখি, ধবধবে সাদা রঙের একটা ব্রা, কাপগুলোর উপর দিয়ে কালো রঙের নেটের ডিজাইন করা। নিজের অজান্তেই মুখ দিয়ে বের হয়ে গেল, “বাহ ! সুন্দর তো !”



“তাই ? অনেক সুন্দর ? পড়লে দেখ আরও সুন্দর লাগবে ! হিহিহিহি”



বুঝতে পারলাম ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছি। আপু এখন এটা নিয়েই আগামী সাতদিন আমার জীবনটা নরক বানিয়ে ছাড়বে…আমি চুপচাপ হাত উঁচু করে দাড়িয়ে থাকলাম। এখন বেশি কথা না বাড়ানোই উত্তম।



প্যাডেড ব্রা, পড়ার আগেই ওটার দুটো কাপ ফুলে আছে। কাপগুলো খুব বেশি বড় নয়, ছোটই। আমার বাড়ানো হাতের মধ্য দিয়ে যখন আপু ফিতাগুলো ঢুকিয়ে দিচ্ছে তখন গায়ে ঘষা লাগার কারণে টের পেলাম, কি সফট ফিতাগুলো ! আমার মুগ্ধতা কাটার আগেই আপু তড়িঘড়ি করে পিছে হুক লাগিয়ে দিল, কাঁধের স্ট্র্যাপগুলো অ্যাডজাস্ট করে দিল। এতক্ষণ জিনিসটা গায়ের মধ্যে ঢলঢলে হয়ে ছিল, হঠাৎ করেই আমার মনে হল যেন কেউ আমার বুক দুটো আঁকড়ে ধরল ! আমি একটু চমকে উঠলাম অস্বস্তিতে। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি, ওমা ! ব্রা-টা এমনভাবে আমার বুকে আটকে আছে, দেখে মনে হচ্ছে কাপ দুটো আমার হালকা ফোলা বুক দুটোকে চেপে ধরে রেখেছে আর চাপ লেগে বুক দুটো আরও অনেক বেশি ফোলা লাগছে ! আমি টের পেলাম কাপের ফোমের ভিতরে বুকের সাথে ফোম ঠেসে আছে, কিন্তু আমার বুক যতখানি ফোলা, তারচেয়ে অনেক বড় লাগছে এই ফোমটার কারণেই ! আমার বুকটা…একদম একটা মেয়ের মত লাগছে !



রিন্তি আপু চওড়া একটা হাসি দিয়ে বলল, “এটাকে পুশআপ ব্রা বলে। যখন একটু বেশি সুন্দর লাগার দরকার হয় তখন এটা পড়ি আমি” আর কিছু বলল না, চোখ টিপল আমার দিকে তাকিয়ে। আমি তাকাতে পারলাম না, আমার তখন ভীষণ লজ্জা লাগছে।



আমার হাতে একটা প্যান্টি আর পায়জামার মত জিনিস ধরিয়ে বলল, তাড়াতাড়ি বাথরুমে গিয়ে এই দুটো পড়ে আসবি। ২ মিনিট সময়, দেরি করলে কিন্তু আমি ঢুকে যাবো।



আমি করুণ মুখে বললাম, “আপু না পড়লে হয় না ?”



“তাড়াতাড়ি যা নাহলে কিন্তু এভাবেই দরজার বাইরে দাড় করিয়ে ভিতর থেকে লক করে দিব !” হুমকিতে কাজ হল, আমি বাথরুমে চলে গেলাম।



প্যান্টিটা দেখতে অনেকটা আমার আন্ডারপ্যান্টগুলোর মতই, খালি ডিজাইনটা আলাদা। কেমন যেন একটু চিকন ধরনের। পিছন দিকে অনেকখানি বের হয়ে থাকে, আমারগুলো তো এত বের হয়ে থাকে না। সামনে একইভাবে কালো নেট দিয়ে ডিজাইন করা। ব্রা-প্যান্টি দুটোই নিশ্চয়ই একই সেটের। পা দিয়ে টেনে উঠিয়ে আনার সময় নেটের ঘষায় সুরসুরি লাগল, টের পেলাম আমার পায়ের মাঝের জিনিসটা দাঁড়িয়ে পড়বে পড়বে করছে…আমি তাড়াতাড়ি পায়ের ফাঁকে ওটাকে চেপে ধরে প্যান্টি তুলে আনলাম জায়গামত। পায়ের ফাঁকে আটকে রাখতে একটু অসুবিধা হলেও লাভ হল, আয়নায় তাকিয়ে দেখি জায়গাটা একদম সমান লাগছে। আর প্যান্টিটাও অনেক টাইট, একদম ঠেসে আছে, আমি আয়নায় একটা মেয়েকেই দেখতে পেলাম। পার্থক্য শুধু চুলে, আমার চুল বেশি বড় না, আবার আউলাঝাউলা হয়ে আছে। ওটাকে আঁচড়ে খুব বেশি হলে গালের একটু নিচ পর্যন্ত আনা যাবে। কিন্তু তাতে খুব একটা সমস্যা লাগছে না, দেখে মনে হচ্ছে যেন একটা মেয়ে চুলের যত্ন নেয় না কতদিন।



রিন্তি আপু বাইরে থেকে ডাক দিল, “এই তুই কি বের হবি নাকি আমাকে আসতে হবে ?”

আমি তাড়াতাড়ি বললাম “না না বের হচ্ছি। ঢুকতে হবে না” কথা বলতে বলতে আয়নার দিকে পিঠ ফিরিয়েছিলাম, হঠাৎ আয়নার দিকে চোখ গেল। ফর্সা পিঠের উপরে ধবধবে সাদা ব্রা’র ফিতা, আর নিচে প্যান্টির চাপে নিতম্ব ফুলে আছে। পিঠ, উরু সবকিছু প্রচন্ড মেয়েলি লাগছে, ভীষণ লজ্জায় আমি লাল হয়ে গেলাম।



দরজা খুলে বের হলাম। লজ্জায় মাথা উঁচু করতে পারছি না। দেখছিও না সামনে কে আছে। রিন্তি আপু আস্তে করে বলল, “স্পর্শিয়া একটু তাকা তো !”



আমি মুখটা উঁচু করলাম আর ক্যামেরার ফ্ল্যাশের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে গেল। এর মধ্যেও দেখতে পেলাম সাতটা মেয়ে সবগুলো দাঁত বের করে একটা চিৎকার দিল “স্পর্শিয়াআআআ !!!”



আমি ফ্ল্যাশের ঝলকানি তে আধা-অন্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম, ব্রা প্যান্টি পড়ে। আমাকে নিয়ে আপুদের উল্লাস দেখে মনে হল কোন মেয়ে এলিয়েন এসে নেমেছে পৃথিবীতে। আপু আয়নার সামনে আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বলল, “দেখেছিস স্পর্শিয়া তোকে মেয়ে সাজালে কত সুন্দর লাগবে ? ” আমি কিছু বলতে পারলাম না লজ্জায়।



“আচ্ছা ওর বুকটা আরেকটু বড় হলে ভালো হত। কি করা যায় রে ?”



“রিন্তি ! তোর কাছে না ওই বাস্ট-জেল টা ছিল ? ওটা লাগিয়ে দিবি নাকি ?



“ওটা কি” আমি ইতঃস্তত করে বললাম।



“ওটা কি জানা লাগবে না তোর। একটু দাঁড়া, আমি দৌড় দিয়ে নিয়ে আসছি।”



সবাই আমার দিকে যেভাবে বদ চাহনী দিতে থাকল, আমি আর কিছু বলার সাহস পেলাম না।



আপু খুব তাড়াতাড়িই চলে আসল। হাতে একটা কিসের জানি কৌটা, পড়তে পারলাম না। চাইনিজ ভাষায় কিছু একটা লেখা। ওটা থেকে ক্রিমের মত একটা জিনিস হাতে লাগিয়ে নিয়ে আমার ব্রা’টা একটু উঁচু করে বুকে লাগিয়ে দিল। সামান্য ফোলা বুকটায় যখন সবার সামনে আপু কষে ক্রিম লাগালো আমার মনে হতে লাগল ধরণী দ্বিধা হও, আমি তার মাঝে লুকিয়ে পড়ি….



কিন্তু তাও বুঝলাম না কেন ওটা লাগাল আপু। শুধু সবাই মিলে আমাকে বলল অপেক্ষা করতে আর ভয় না পেতে। সব ঠিক হয়ে যাবে কয়েকদিনের মধ্যেই।

কিন্তু কি এমন হবে যে ঠিক হয়ে যাবে ?



চিন্তা করার সময় দিল না আমাকে। রিন্তি আপু আগে একটা শাটা ট্যাঙ্ক টপ পড়ালো আমাকে, একটা শার্ট নিল আমাকে পড়ানোর জন্য। মেয়েদের শার্ট, লম্বা একটু বেশি, কোমর পার হয়ে বেশ নিচ পর্যন্ত আসে ওটার ঝুল। শার্টটা অনেক স্বচ্ছ, ওটা পড়লে শার্টের চেয়ে বেশি চোখে পড়ে শার্টের নিচের ট্যাঙ্ক টপ টা, টপের চিকন ফিতার পাশ দিয়ে বেরিয়ে থাকা সাদা ব্রা’র চিকন ফিতা। তারচেয়েও বেশি চোখে পড়ে আমার ফর্সা দেহ টা, আর আমার সুন্দর স্বাস্থ্যবান হাত দুটো। বেশি মোটাও না আবার হাড্ডিসারও না, গোল একটা শেপ, সব মিলে আমার হাতটা অনেক মেয়েলী। শার্টের ছোট হাতার ভেতর দিয়ে বেরিয়ে থাকা হাতটা মোটেও খারাপ লাগল না দেখতে, বরং সব মিলে খুবই কিউট লাগল। আস্তে আস্তে শার্টের সামনের সবগুলো বাটন আটকে দিল রিন্তি আপু, আর শার্টটা টাইট হয়ে সেঁটে বসল আমার দেহের উপরে। নিতম্বের কাছে সেঁটে থাকা দেখে যে কারো চোখ আটকে যাবে।



কালো একটা লেগিং আমার হাতে দিল আপু, আমি বিছানায় বসে আস্তে করে ওটাতে পা ঢুকিয়ে দিলাম। লেগিংসগুলো এত স্কিন টাইট কেন হয় কে জানে ? অবশ্য মেয়েরা যখন পড়ে তখন সেটা দেখতে মোটেও খারাপ লাগে না। এখন যখন আমি পড়ছি তখন আমার অস্বস্তি লাগতে থাকল। আমার উরুগুলো মোটা মোটা, মেয়েদের মত। লেগিং পড়ার কারণে পা-টা কি ছেলে না মেয়ের আর বোঝা যাবে বলে মনে হয় না। তার উপরে পুরো জিনিসটাই ইলাস্টিকের মত, আর কোমরের কাছে একটা বেল্টের মত। পুরোটা কোমর পর্যন্ত তোলার পরে যখন বেল্টটা আটকে দিলাম, তখন বুঝতে পারলাম লেগিংসটা হাটুর একটু নিচ পর্যন্ত, পুরো পা ঢাকে না। অবশ্য নিচ দিয়ে আমার মেয়েলী শেপের পা যখন বের হয়ে থাকল তখন দেখতে মোটেও খারাপ লাগছিল না।



“আরে, এটাই ফ্যাশন। এভাবেই পড়তে হয়” পাশ থেকে রিন্তি বলল। আমি একটা লজ্জা লজ্জা হাসি দিলাম। “এই তুই সাজা, আমরা নিচে গেলাম। খিদায় আমাদের জান শেষ হয়ে গেল” বলে সব মেয়েগুলো বের হয়ে গেল। করুণ চোখে দেখলাম আমার আপুও বের হয়ে যাচ্ছে আমাকে রিন্তি আপুর পুতুল হওয়ার জন্য ফেলে রেখে। আপু বের হওয়ার আগে জোরে বলে গেল “রিন্তি ওকে ঠিকমত সাজিয়ে আনিস কিন্তু। আর একটু খেয়াল করিস”



কি খেয়াল রাখতে হবে বুঝলাম না কিছুই। আমাকে রিন্তি আপু চেপে বসিয়ে দিল একটা চেয়ারে। হোটেলে ড্রেসিং টেবিল নেই কাজেই আমি দেখতে পারলাম না আমার মুখে কি করছে। আমি বসে পড়লাম, আর টের পেলাম যে আমার বুকের কাছে একটু সুড়সুড়ি লাগছে। কেন এমন লাগছে বুঝতে পারলাম না, তবে তাকালামও না। নিশ্চয়ই ব্রা পড়ে থাকার জন্য এমন হচ্ছে, ব্রা তো আমি প্রতিদিন পড়ি না, অস্বস্তি না লাগার কোন কারণ নেই।



আপু হালকা করে ফেস পাউডার পাফ করে দিল, চোখের কোল ঘেষে অনেক গাড় করে কাজল লাগিয়ে দিল, উপরের পাতায় চিকন করে আইলাইনার আর পাঁপড়িতে দুই কোট মাশকারা লাগিয়ে দিল। তাতেও মনে হয় আপুর মন ভরল না, আরও দুই কোট লাগানোর পরে থামল। ততক্ষণে আমি টের পেলাম আমার চোখের পাতা একটু ভারী হয়ে গেছে, টের পাচ্ছি পাঁপড়িটা বড় হয়ে গেছে।



তারপরে একটা হালকা পিঙ্ক লিপস্টিক লাগিয়ে দিয়ে উপরে লিপগ্লস লাগিয়ে দিল। দুঠোট মিলিয়ে নিয়ে আমাকে কয়েকবার লিপস্টিক-লিপগ্লসটা ঠিক করে নিতে হল।

এতকিছুর মধ্যেও বুকের সুড়সুড়িটা গেল না। আমি অবশ্য বিশেষ পাত্তা দিলাম না। কিন্তু এমন লাগছে কেন ?



যাই হোক, আপু এরপরে চুল নিয়ে পড়ল। চুল অনেক বড় না কিন্তু যেটুকু আছে সেটুকুই আঁচড়ে আর ক্লিপ আটকে এমনভাবে সেট করে দিল, কেউ আর বুঝবে না আমি কি। এরপরে একটা কালো রঙের লো-হিল স্যান্ডেল দিল আমাকে। স্যান্ডেলটা অনেক সুন্দর, কালো রঙের চিকন চিকন স্ট্র্যাপ আছে, ফর্সা পায়ে ফুটে থাকল আবার লেগিংসের সাথেও ম্যাচ করল। আমি পা ঢুকিয়ে দিলাম আর আপু ফিতাগুলো আটকে দিল। ব্যস, ১৫ মিনিটেই আমার সাজ শেষ।



খিদে তো লেগেছিল অনেক আগেই, কিন্তু এখন আমাকে এভাবে মেয়ে সেজে নিচে হোটেলে নামতে হবে শুনেই আমার ভয় লাগতে শুরু করল। কেউ যদি বুঝে ফেলে আমি যে ছেলে, মেয়ে না এটা যদি কেউ বুঝে ফেলে ? রিন্তি আপু বলল, “এই খবরদার এখন না করবি না। আমার খিদে পেয়েছে অনেক, নামতেই হবে এখন। তুই কি খাওয়া দাওয়া করবি না ?”

“তা তো করবই। কিন্তু সবাই যদি বুঝে ফেলে ?”

“বুঝবে কেন ? তোকে এত কষ্ট করে সাজালাম কেন ? আর তুই কি আসলেই কিছু টের পাসনি এতক্ষণ ?”

“কিক..কিই্ টের পাব ?” আমি ভয় পেয়ে গেলাম।

“উঠে আয়” হাত ধরে আপু টান দিল। আমি দাঁড়িয়ে গেলাম টানের চোটে আর সাথে সাথে টের পেয়ে গেলাম এতক্ষণ কি ঘটেছে। কিন্তু তাও আয়নায় না দেখা পর্যন্ত বিশ্বাস হতে চাইল না। আপু আমাকে টেনে নিয়ে গেল আয়নার সামনে, আমি একবার দেখেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম।

আপু বলল, “কিরে কি হল ? আরে চোখ তো খোল…দ্যাখ দ্যাখ এই রূপ সবসময় থাকবে না তোর হিহিহিহি”

আমি আবার তাকালাম। একি ? আমার বুকগুলো বড় বড় হয়ে গেছে। না, আসলে বড় হয়নি, কোনভাবে ফুলে গেছে অনেক আর ফুলে যাওয়ার জন্য ব্রা’র মধ্যে একদম ঠেসে বসেছে, কিন্তু এবারেই্ আসলে ব্রা’র মধ্যে ঠিকমত ফিট করেছে। একটু একটু করে ফুলছিল আর ব্রা’র সাথে ঘষা লেগে সুড়সুড়ি লাগছিল। কিন্তু এতই নীরবে নিভৃতে ফুলে গেল যে আমি কিছুই টের পেলাম না ?

আমি বেশ স্পষ্টভাবেই দেখতে পেলাম ট্রান্সপারেন্ট শার্টটার নিচ দিয়ে ব্রা’র বুকের কাছে হালকা ক্লিভেজ দেখা যাচ্ছে…গভীর অংশটা ট্যাঙ্ক টপের নিচে আছে নিশ্চয়ই। ট্যাঙ্ক টপটা ঠেলে ফুলে উঠেছে, আর এতক্ষণ আমার মনে যে সংশয় ছিল যে কেউ যদি বুঝে ফেলে আমি আসলে কি ? এই সংশয়ের আর কোন কারণ দেখতে পেলাম না। আমাকে কেউ আর ছেলে ভুলেও বলবে না।



“হয়েছে এত আর দেখা লাগবে না। চল নিচে যাই। আমার পেট হজম হয়ে যাচ্ছে।”

“কিন্তু আপু ! এটা কি পারমানেন্ট নাকি ?”

“না না পারমানেন্ট হবে কেন…একবার দিলে ৩-৪ দিন থাকবে।”

“৩-৪ দিন ! এটা নিয়ে আমি ঘুরবো কিভাবে ?”

“কেন আমরা ঘুরি না? কষ্ট হবে না, শুধু একটা ব্রা পড়তে হবে ” চোখ টিপে একটা হাসি দিল আমার দিকে তাকিয়ে।



আর কোন কথা হল না। আস্তে করে হেটে আমি দরজা দিয়ে বের হলাম, আপুও বের হল আমার সাথে। দরজা দিয়ে বের হয়েই আমি একটু কুঁকড়ে গেলাম, আপু ঝাড়ি দিল।

“এই ! মেয়েরা কখনো এভাবে কুঁজো হয়ে হাটে না ! বুক ফুলে থাকবে এটাই নিয়ম, সবাই তাকিয়ে থাকলে থাকবে ! আরেকবার কুঁজো হলে কিন্তু সবাইকে বলে দেব তোকে আমরা মেয়ে সাজিয়েছি”

এইটুকুই যথেষ্ট। পুরোটা শোনার আগে আমি সোজা হয়ে গেছি। উদ্ধত বুবস দুটো যে নিজের অস্তিত্ব স্পষ্টভাবে জানান দিচ্ছে সেটা বুঝতে পারছি। হিলের টক-টক শব্দ শুনছি, বুকের মধ্যে কাঁপুনি অনুভব করছি, আর আমি আর আপু হেটে যাচ্ছি লিফটের দিকে। লেগিং পড়লে অদ্ভূত একটা অনুভূতি হয়, মনে হয় কিছু না পড়েই হাটছি। সেই সাথে আমার প্রতিটি নড়াচড়া, নিম্নাংশের প্রতিটি ভাজও একদম স্পষ্ট দেখা যায়। আমার নিতম্বের প্রতিটি নড়াচড়া যে অনেকগুলো চোখ গিলছে সেটা বুঝতে পারলাম।



লিফটে করে নিচে রেস্টুরেন্টে নেমে আসলাম। আমাকে দেখে আপুরা একটা অস্ফুট গুঞ্জন করলেও এবার আর সবাই মিলে চেঁচিয়ে উঠল না। আমি বসলাম, টের পেলাম আমার বুক কিভাবে লাফিয়ে উঠল। টেবিলে হাত রাখলাম, তখন ট্রান্সপারেন্ট শার্টের নিচ দিয়ে আন্ডারআর্ম বের হয়ে থাকল আবার আমার নিজের উত্থিত বুকও আমি টের পেতে থাকলাম। চোখে না দেখেও আন্দাজ করতে পারছিলাম আমাকে কেমন সেক্সি লাগছে।



ওয়েটার কেমন করে যেন আড়চোখে তাকাচ্ছিল আমার বুকের দিকে সরাসরি কিন্তু আমি মোটেও পাত্তা দিলাম না। হঠাৎ করেই আমার যেন সাহস বেড়ে গেছে, অর্ডার দিচ্ছে আপুরা আর আমি উঠে এসে বিরাট পিকচার উইন্ডোর পাশে দাঁড়ালাম, সাগরের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কাছেই আরেকজন ওয়েটার, টের পাচ্ছি সে আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে আছে, আমার উরু আর বুকের প্রতিটি নড়াচড়া তার চোখে পড়ছে। আমি আরও ইচ্ছে করেই একটু বাঁকা হয়ে দাঁড়ালাম, তার মাথা খারাপ না হওয়ার আর কোন কারণ দেখতে পেলাম না। আমি এত সাহসী কিভাবে হয়ে গেলাম তা আমি নিজেও বুঝতে পারলাম না তবে এটা বেশ বুঝতে পারলাম যে মেয়ে সেজে থাকাটা আমি অনেক এনজয় করছি। নিজের আসল রূপ ঢেকে আরেক রূপে ঘুরে বেড়ানো….ব্যাপারটা মোটেও খারাপ না আসলে !



খাওয়ার সময় একটু অন্যভাবে খেতে হল, সেটা আমি আপুদেরটা দেখে শিখে ফেললাম। আমি আগে যেভাবে খেতাম সেভাবে খেলে সব লিপস্টিক উঠে যাবে, আর সেজন্য মেয়েরা একটু সাবধানে খায়। রিন্তি আপু সবকিছুতেই আমাকে হেল্প করেছে, এটাতেও করল কাজেই কোন অসুবিধাই হল না।



খাওয়া দাওয়া শেষে রুমে চলে আসলাম আর এবার আসার সময় ইচ্ছা করেই দেহের কাঁপুনি একটু বেশি দেখিয়ে আসলাম। মেয়ে সাজা তখন আমার খুবই পছন্দ হয়ে গেছে। আমার বুকটা যেভাবে ছটফট করছে সেটা আরো বেশি সিডাকটিভ একটা ব্যাপার। হিলের উপরে হাটা খুবই মজার মনে হল আমার কাছে। অনেকক্ষণ পড়ে আছি, তাই এখন আর আমার পা-ও ব্যথা করছে না আবার ব্যালান্স রাখতেও কোন সমস্যা হচ্ছে না। আর আপুরা আমাকে ক্ষ্যাপাচ্ছে কিন্তু আমি হাসিমুখে সব মেনে নিচ্ছি। আপুরা একটু অবাকই হল।



একটু কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আবার বের হওয়ার প্ল্যান করল আপুরা। এবার আপুরা আবার একটু সমস্যায় পড়ে গেল।



“আচ্ছা স্পর্শিয়াকে কি পড়ানো যায় ? ওই লেগিং আর টপ পড়ে তো সাগরে যাওয়া যাবে না।”

“অন্য কিছু পড়াই। আর সব আমাদের জামা দিয়েও তো এতদিন চালানো যাবে না। ওর নিজের জন্য কিছু একটা দরকার।”

“ছেলেদের জামা কিনবি ?”

“নাহ ! মাথা খারাপ নাকি ? ওর বুকের সাইজ দেখিস না ? এখন চাইলেও ছেলেদের জামা পড়ানো যাবে না। আর স্পর্শিয়াও এখন আর পড়তে চাইবে না। তাই না রে ?”

আমি হাসি দিয়ে বললাম, “রিন্তি আপু তোমার একটা কালো সাটিনের কামিজ আছে না ? পিঠে চেইনওয়ালা স্লিভলেস একটা জামা ? ওটা নিয়ে আসছ ? তাহলে ওটা দাও, আমি ওটা পড়ব এখন”



সবাই একটু ভ্যাবাচ্যাক খেয়ে গেল। আমি নিজে থেকে জামার কথা বলছি ? আমি আবার বললাম, “দাও না আপু ! ওটা আমার অনেক পছন্দ।”



সবাই হইহই করে উঠল “ইয়েএএএ ! স্পর্শিয়া মেয়ে সাজা পছন্দ করেছে !”

আমি বললাম “হুমম আমাকে এখন মাঝে মাঝে তোমরা মেয়ে সাজিয়ে দিবা…ঢাকাতে গিয়েও !”

আপু বলল, “যাক ! একটা বোন তাহলে পেলাম। টেম্পরারি অবশ্য, তাই বা কম কিসে ?”



রিন্তি আপু ওর জামাটা আমার হাতে দিল, আমি আমার শার্টটা খুলে ফেললাম, তারপরে সবার সামনেই ট্যাঙ্ক টপটাও টান দিয়ে খুলে ফেললাম। শুধু ব্রা পড়ে আছি এখন। সবাই একটা “ওওও” শব্দ করল।



জয়া আপু বলল, “এই তোর ব্রা-টা ছোট হয়ে গেছে ! আরেকটু বড় একটা লাগবে। অসুবিধা হচ্ছে না তোর ?”

“আমি কি জানি কোনটা ছোট কোনটা বড়। যখন তোমরা ওই ক্রিম লাগাওনি, তখনও আমার ব্রা টাইট লাগছিল।”



আপু আমাকে অন্য একটা ব্রা দিল। এটা ওর নিজের আর এটা আমার ঠিকই হওয়ার কথা। এটাও প্যাডেড পুশআপ ব্রা। আমি অন্য দিকে ঘুরে আগেরটা খুলে এটা পড়ে ফেললাম। অসুবিধা হল একটু পিছে হুক আটকাতে, ওটা রিন্তি আপু আটকে দিল। অন্য আপুরা আবার নিচে নেমে সাগরপাড়ে চলে গেল…আমার সাজগোজ নিয়ে সবচেয়ে বেশী আগ্রহ আসলে রিন্তি আপুরই !



এটা পড়ার পরে একটু আরাম লাগল। এটা একটু ঢিলা বলেই বোধহয় ? এই ব্রা-টা একটু কেমন জানি, মনে হয় একটু বড় বলেই, আমার বুক বেশি লাফাতে থাকল। কালো লেগিং তো পড়াই আছে তাই ওটা আর চেঞ্জ করলাম না। কামিজটা পড়ে ফেললাম, স্লিভলেস হাতার বাহিরে আমার হাতটা এত সুন্দর লাগবে সেটা আমি নিজেও আগে আন্দাজ করতে পারিনি। কিন্তু তাও ঢিলা ঢিলাই থাকল, কারণ পিছের চেইন আটকানো হয়নি। রিন্তি আপু আটকে দিল আর চকচকে কালো সাটিন সামনে টাইট হয়ে বুকের উপরে সেঁটে গেল।



একদম পারফেক্ট ফিটিং। কোথাও কোন ভাঁজ নেই, কোন কুঁচকানো নেই, কোনখানে সাইজ বড় হয়নি। কামিজটা পাছার কাছে টাইট, কাজেই আমার নিতম্বটাও অনেক সেক্সি লাগল। পাশ দিয়ে ফাঁড়াটা অনেক বেশি, পুরো লেগিংস পার হয়ে উপরে আমার পেটের একটু পর্যন্ত পাশ দিয়ে দেখা যাচ্ছে। একটু হাটলেই বা বাতাসে কামিজ উড়ে গিয়ে গোল নিতম্বটা পুরোপুরি বের হয়ে যাচ্ছে। পিঠের দিকে ব্রা’র আগ পর্যন্ত বড় চারকোণা খোলা পিঠ। এত খোলামেলা একটা জামা পড়ে এসির ভিতরে আমার একটু ঠান্ডাই লাগল।



নিচে একটা শেমিজ দিয়ে পড়া উচিত ছিল কারণ কাপড়টা পাতলা, ব্রা’র আউটলাইনটা স্পষ্ট হয়ে ফুটে আছে বুকে আর পিঠে। আপু সেটা আমাকে বলতে গেল, আমি বাঁধা দিলাম। “থাক শেমিজ পড়তে হবে না। আমার কোন অসুবিধা নেই ব্রা দেখা গেলে।”



রিন্তি আপু বলল, “স্পর্শিয়া ! এই জামাটা তো আমারও এত সুন্দর ফিট করে না। দেখে মনে হচ্ছে তোর জন্যই মনে হয় বানানো। আচ্ছা যা, তোকে এই জামাটা দিয়েই দিলাম !”

“থ্যাঙ্কিউ আপু ! আমি ঢাকায় গেলে এরপর থেকে এটা পড়েই তোমার সাথে ঘুরতে যাব ঠিক আছে ?” আপুর মত করে খিলখিল করে হাসার চেষ্টা করলাম, খুব একটা খারাপ হল না !



একটা ওড়না দিল আপু, জর্জেটের একটা কালো ওড়না। ওটা আমি গলায় দিয়ে বাকিটা পিছে ফেলে রাখলাম। ওড়না দিয়ে দেহ আড়াল করার কোন মানে হয় না। আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে রিন্তি আপুর কথামত নিজে নিজেই মেকআপ শুরু করলাম। আপু বলল কিভাবে লাগাতে হবে, আমি শুনে শুনে লাগালাম। দুপুরের মেকআপটা তো ছিলই, কিন্তু এখন ওটার উপরেই আবার করা শুরু করলাম। লিপস্টিক দিলাম, লিপগ্লস লাগালাম, চোখের নিচটা কাজল লাগিয়ে একদম কালো করে ফেললাম, এমনকি উপরের পাতারও ভিতর দিকটায় কাজল লাগালাম। সুড়সুড়ি লাগল অনেক কিন্তু কাজটা শেষ হওয়ার পরে চোখটা অনেক সুন্দর লাগল। একটু আইশ্যাডো লাগালাম, চোখটা আরও বেশি সুন্দর লাগল তাতে। আইলাইনার দিলাম, মাশকারা দিলাম। ব্লাশারও লাগালাম ! মুখটা পুরো চেঞ্জ হয়ে গেল আমার, এখন আমাকে আপুদের বয়সী লাগছে।



এবারে উইগ ছাড়া হবে না। রিন্তি আপু ব্যাগে সবকিছুই থাকে, সাজগোজ নিজেও অনেক করে এজন্য মনে হয় রাখতেই হয় ! আগে একটা শাওয়ার ক্যাপের মত জিনিস পড়ালো, আমার নিজের চুল পুরোটা ওটার নিচে চাপা পড়ে গেল। তারপরে একটা লম্বা কালো চুলের উইগ আনলো, ওটা পড়িয়ে দিল ওই ক্যাপটার উপরে। কোন গ্লু বা কিছু আছে বোধহয় ক্যাপের সাথে উইগটা লাগানোর জন্য, বেশ টাইট হয়েই আটকে গেল উইগটা ! আপু বেশ জোরে জোরেই টেনে দেখল, খুলল না। টেনে দেখার দরকার ছিল, নাহলে সাগরপাড়ের বাতাসে উইগ উড়ে চলে যাবে ! সেটা অবশ্যই খুব ভালো কোন ব্যাপার হবে না।



আগের হিলটাও আর পড়তে দিল না আমাকে আপু। কালোই একটা দিল তবে এবারেরটা হাইহিল। অনেক উঁচু, ৬ ইঞ্চির মত ! জুতাটার সামনের দিকে পায়ের পাতার নিচে একটা মোটা প্ল্যাটফর্মের মত, ওটাই ব্যালান্স রাখে। নাহলে এত উঁচু জুতা পড়ে হাটা কষ্ট হয়ে যাবে। জুতাটা নিয়ে আমি ঝটপট দাঁড়িয়ে পড়লাম। দাঁড়ানোর পরে এক ধাক্কায় লম্বা হয়ে গেলাম অনেক, প্রায় ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ! আর এত উঁচু জুতা পড়ার জন্য আমার নিতম্ব একদম ঠেসে ফুলে উঠেছে ! সামনে হাটুটা সমান মনে হচ্ছে, নিজেকে কেমন যেন নায়িকা মনে হল। আর লেগিং পড়ার জন্য এগুলো সবকিছুই একদম স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আপুকে জিজ্ঞাসা করলাম,



“রিন্তিপু ! এত উঁচু জুতা পড়ে বালির মধ্যে হাটব কিভাবে ?”

“হাটতে পারবি অসুবিধা হবে না। বালির মধ্যে গেলে খুলে হাতে নিয়ে নিবি। আর বালির মধ্যে তো পরে যাব, হোটেলের মধ্যেই অনেক কাজ আছে।”

“কাজ ? এখানে আবার কি কাজ ?”

“ওমা ! তুই না আমার মডেল এখন ? এমনি এমনি এত সাজালাম নাকি ? হোটেলের ভেতরে এখন যত জায়গা পাব সবখানে তোকে দাঁড় করিয়ে ফটোগ্রাফি করব। তুই কোমরে হাত দিয়ে বাঁকা হয়ে দাঁড়াবি, বাতাসে ওড়না উড়িয়ে দিবি, বুক ফুলিয়ে দেখাবি…মজা হবে না ?”

“এই ছবি পরে কোথায় দিবা তুমি !”

“হিহিহি, ভার্সিটিতে প্রজেক্ট ওয়ার্কে দিব, পরে অন্য কোথায়ও দিতে পারি !”

“কিন্তু আপু ! সবাই তো জেনে যাবে তাহলে আমি মেয়ে সেজে মডেলিং করেছি” আমি ভয় পেয়ে গেলাম।

“এমনিতেও তোকে মেয়ে সেজেই ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে…আর সবাই জানবে না। স্পর্শিয়া নামে তোকে কেউ চিনে না। কথা না বাড়িয়ে বের হ এখন”



বের হয়ে রুমের সামনে দাঁড়ালাম। আপু রুম লক করছে আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি। কয়েকটা রুম পরের একটা রুমের দরজা খোলা হল, আমি মেয়ে সেজে তখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি তাই আর ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠলাম না। চুপচাপ দাঁড়িয়েই দেখতে থাকলাম কে বের হয়…একটা ছেলে বের হল। বেশি বড় না, ক্লাস টেনে পড়ে অথবা কলেজে। দুটো মেয়েকে দেখে একটু ধীরে হাটতে থাকল, এমন সাজগোজ দেওয়া মেয়ে দেখলে কে না আস্তে হাটবে ? একদম কাছে আসার পরে আমার দিকে তাকাল, আমিও তাকিয়ে মিষ্টি করে একটা হাসি দিলাম। ওমন লিপগ্লস মাখা হাসি দেখে নিশ্চয়ই বিমোহিত হয়ে গেল, আমার দিকে হাসিটা আবার ফেরত দিল। দৃষ্টি দেখে বুঝলাম যে আমার পরিচয় ফাঁস হয়নি…হবেও না। সাহস বাড়ল একটু।



রিন্তি আপু দরজা লক করে এসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “খুব তো প্রেম করে ফেললি। কেমন লাগল রে প্রেম করতে ?”

“যাও আপু ! প্রেম করলাম কোথায় ?”

“হ্যা যেভাবে হাসি দিলি…ওই ছেলে প্রেমেই পড়েছে তোর। দেখিস ! হিহিহি”

লজ্জা পাওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারলাম না। লিফটে নামার সময় কোন কথা হল না। নামার পরে আপু বলল, “চল তোর ফটোশুট শুরু করি।”

“কিন্তু আপু আমি তো জানি না কিভাবে অত পোজ দেয়।”

“আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। তুই শুধু আমি যা বলি সেটা করবি তাহলেই হবে। ঠিক আছে ?”

“আচ্ছা ঠিক আছে”



আমরা হোটেল লবিতে গিয়ে বসলাম। আপুর কথামত একটু বাঁকা হয়ে বসলাম, পাশ দিয়ে লেগিং, পা আর হিলটা দেখা যাবে এমনভাবে। বেশ কয়েকটা ছবি তোলা হল এই পোজ দিয়ে। অনেকেই খেয়াল করেছে আমাদেরকে, একবার দেখেই আর সেভাবে তাকায়নি। তাই খুব একটা অসুবিধা হল না।



এরপরে চলে গেলাম সুইমিং পুল এর পাশে। পুলের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় একটু ভয় লাগল, হিল পড়ে মনে হল যদি উল্টে পড়ি পুলের মধ্যেই ? ভয়টা অমূলক, কারণ পুল অনেক দূরে। হোচট খেলেও পানিতে পড়ব না। তাও মাথার মধ্যে এটা ঢুকে গেল। আপু আমাকে পুলের পাশেই দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলল, “ওড়নাটা খুলে হাতে নে”

“আচ্ছা সেটা নিলাম, কিন্তু কেন ?”

“আহ এত কথা বলিস কেন ? নে হাতে। হুমম এবার এটাকে এভাবে পাশে ধরে দাঁড়িয়ে থাক। হুমম হয়েছে।”

আপু আমাকে দাঁড় করিয়ে পোজ ঠিক করে দিতে দিতে নিজেই কথা বলছে আর আমি শুনে যাচ্ছি। তারপরে আপু যেভাবে দাঁড় করিয়ে দিল সেভাবে পোজ দিয়ে দাঁড়ালাম। পেপার ম্যাগাজিনে দেখি মডেলদেরকে এভাবে পোজ দিতে। বাহুর মধ্যে ওড়নাটা পেচিয়ে নিয়ে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ানো। নিতম্বটা প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশিই ফোলা দেখাচ্ছে আর পরিষ্কার বগলে যেহেতু ফুরফুরে হাওয়া লাগছে তারমানে এটাও দেখা যাচ্ছে। যাই হোক, এখানে আমি একই স্টাইলে বিভিন্নভাবে বাঁকা হয়ে দাঁড়ালাম আর আপু একের পর এক শাটার টিপতে থাকল। নির্ঘাত ২০-৩০টা ছবি তুলে ফেলেছে। আমি অবাক হয়ে গেলাম, আমি মডেলদের মত স্বাচ্ছন্দ্যে পোজ দিয়ে যাচ্ছি আশেপাশের সবার দৃষ্টি উপেক্ষা করেই !



আমি একটু দেখার চেষ্টা করলাম মানুষ আসলে কি দেখার চেষ্টা করছে। মেয়েরা দেখছে আমার জামা, মেকআপ, জুতা এগুলো আর ছেলেরা দেখছে আমার বুক। হঠাৎ মনে কুবুদ্ধি আসলো, মনে হল, দেখুক না ! ওড়নাটা একপাশে দিয়ে রাখলাম, কিন্তু এমনভাবে দিলাম যেন কোনকিছুই আসলে না ঢাকে। ঢাকলোও না, সবকিছু দেখা যেতে লাগল। ক্রিমের প্রভাব যে মোটেও কাটেনি সেটা আমি নিজের বুকের দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারলাম। একদম ডাসা দুটো স্তম্ভের মত, ওগুলোকে আমার অনেক আপন মনে হল।



অনেকক্ষণ ফটোশুটের পরে সী বীচে রাখা বীচবেড গুলোর একটাতে গিয়ে বসে পড়লাম। বালুর মধ্যে দিয়ে হেটে আসার সময় স্যান্ডেল খুলে নিয়েছিলাম, নাহলে এত উঁচু হিল পড়ে হাটা যায় না। যাই হোক… ওখানে বসেও কিছুক্ষণ ছবি তুলল আপু। আমি হাটুর উপরে থুতনি রেখে বসে থাকলাম, আপু পিছন থেকে আমার খোলা পিঠের ছবি তুলল। এখানে ছবি তোলার সময় আশেপাশ থেকে কেউ তাকিয়ে থাকল না…এই দিকটা বেশ নির্জন। কাউকে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। একটু দূরে দেখতে পেলাম আমার আপু আর বাকি ৬ জন পানির মধ্যে লাফালাফি করছে।



রিন্তি আপু বলল, “স্পর্শিয়া তুই বসে থাক। আমিও পানিতে নামলাম। ক্যামেরাটা দেখে রাখিস কিন্তু !”

আমি হু বলে চুপচাপ বসে থাকলাম ক্যামেরাটা কোলে নিয়ে। একা একা মনটা কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিল। সাগরপাড়ের পরিবেশটাই আসলে কেমন জানি। মন উদাস করে দেয়। আমি ওড়নাটা খুলে সরিয়ে রাখলাম পাশে।
Like Reply


Messages In This Thread
সাগরকন্যা - by KEWekJON - 20-08-2020, 01:10 PM
RE: সাগরকন্যা - by KEWekJON - 20-08-2020, 01:12 PM
RE: সাগরকন্যা - by KEWekJON - 20-08-2020, 01:14 PM
RE: সাগরকন্যা - by KEWekJON - 20-08-2020, 01:32 PM
RE: সাগরকন্যা - by Scared Cat - 20-08-2020, 08:55 PM
RE: সাগরকন্যা - by Scared Cat - 20-08-2020, 09:10 PM
RE: সাগরকন্যা - by fuhunk - 20-08-2020, 10:07 PM
RE: সাগরকন্যা - by KEWekJON - 20-08-2020, 10:31 PM
RE: সাগরকন্যা - by KEWekJON - 20-08-2020, 10:35 PM
RE: সাগরকন্যা - by KEWekJON - 20-08-2020, 10:36 PM
RE: সাগরকন্যা - by KEWekJON - 20-08-2020, 10:42 PM
RE: সাগরকন্যা - by Scared Cat - 21-08-2020, 07:23 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)