20-08-2020, 01:10 PM
(This post was last modified: 20-08-2020, 01:19 PM by KEWekJON. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
এই গল্পটি মূলত ক্রসড্রেসিং এবং bi / pansexual রিলেটেড । যদি আপনি এসবে আগ্রহী না হন তবে গল্পটি এড়িয়ে চলুন ।
গল্পের লেখকের বেপারে কিছু বলা যাক । এটি একটি সংগৃহীত গল্প , গল্পের লেখক Sporshia । উনি ২০১২-১৭ সাল পর্যন্ত নিজের ব্লগে গল্প লিখে গেছেন । বাংলাতে এমনিতে ক্রস ড্রেসিং / ফেমবয় এই বিষয়ে উপর ভাল তেমন কাজ নেই । যা আছে তার মান ও তেমন ভাল না । Sporshia আমার মতে সেরা ক্রস ড্রেসিং গল্প লেখকদের একজন । এই গল্পটি এখানে দেয়ার উদ্দেশ্য কেও যদি তার গল্প না পড়ে থাকেন , তাদের এই গল্প গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া ।
????????????????????? সাগরকন্যা – ১ ?????????????????????
“এই চল আমরা সবাই ঘুরতে যাই !”
“কোথায় যাবি ?”
“আরেহ একজায়গায় গেলেই তো হল। কিন্তু দূরে কোথাও যাওয়াই ভালো, না কি বলিস ?”
“চল কক্সবাজার যাই !”
“এহ ! আব্বু আম্মু মনে হয় খুব দিবে ?”
“না দেওয়ার কি আছে ? আমরা মনে হয় এখনো বাচ্চা আছি ? স্পর্শ ছোট খালি, তাও ক্লাস ইলেভেন পড়া একটা ছেলে এমন কিছু ছোট না ! আর আমরা এতগুলো ইউনিভার্সিটিতে পড়া মেয়েরা একা একা যেতে পারব না এটা কোন কথা হল নাকি ?”
আমি বসে বসে শুনছিলাম এতক্ষণ। আমার আপুর ফ্রেন্ডরা সব আমাদের বাসায় বসে কাউকাউ করছে। আসলে আড্ডা দিচ্ছে কিন্তু ওরা একসাথে হলে আসলে কেউ কারোর কথাই শুনে না, সবাই যার যার মত বলতে থাকে। তাই আমি বলি ওরা কাউকাউ করছে। আমি নির্বিকার মুখে বসে চকলেট খাচ্ছিলাম…আমার নাম শুনে একটু নড়েচড়ে বসলাম। বললাম, “হুমম সেটাই। আমি মোটেও বাচ্চা না। কিন্তু কথা হচ্ছে আমাকে নিয়ে যাবা তোমরা ?”
৭টা মেয়ে একসাথে মাথা ঝাকাল মানে তারা আমাকে নিতে চায়। আপুর ফ্রেন্ডরা আমারও ফ্রেন্ড…বয়সে বড় হলে কেউ ফ্রেন্ড হতে পারে না এই কথাটা মোটেও সত্যি না। সবাই আমার এত ভালো বান্ধবী অথচ সবাই আমার চেয়ে প্রায় ৩-৪ বছরের বড়। আমি খুবই চুপচাপ ছেলে, সবাই আমার সাথে এত ক্লোজ কিভাবে কে জানে। তবে সবাই ফাজিলের শিরোমনি। আমি এদের থেকে বেশ সাবধানেই থাকি কারণ ওরা কখন কি করবে তার কোন ঠিক নাই !
আমাকে নিয়ে যাবে শুনে অবশ্য আমার একটু কেমন যেন লাগছিল…৭টা মেয়ের সাথে আমি যাবো, আমার সময় কাটবে কিভাবে ? একজন অবশ্য আমারই আপন আপু, তারপরেও মেয়েদের সাথে সময় কাটায় কিভাবে ? সাত পাঁচ ভাবতে বসলাম আমি, আর আপুরা তখনো কাউকাউ করেই যাচ্ছে।
এরপরে কয়েকদিন চলে গেল আর একদিন শুনলাম অবশেষে নাকি ওরা সমুদ্র দর্শনে যাচ্ছে। আর সেইসাথে আমাকেও জানিয়ে দেয়া হল আমিও যাচ্ছি। যাক, ভালোই হল। কলেজ ফাইনাল পরীক্ষা মাত্র শেষ হয়েছে আর ওদেরও সেমিস্টার শেষ, তাই এখন সবাই মিলে সমুদ্র দেখতে যাবো। সাতদিন থাকবো, আর ঘুরেফিরে দেখবো যতকিছু দেখা যায়। আরও খুশির ব্যাপার হচ্ছে থার্টি ফার্স্ট নাইটও পাবো ওখানেই। আমাদের খুশি দেখে কে ! বাস ট্রেন না, একেবারে প্লেনেরই টিকেট কেটে ফেলেছে ওরা যেন ঘোরাঘুরির সময় একদম নষ্ট না হয় ! আমি বেশ খুশি হয়ে গেলাম, যাক বহুদিন পরে আবার আকাশে ওড়া যাবে। শেষবার প্লেনে উঠেছি ক্লাস টু-তে থাকতে !
ব্যাগ গুছিয়ে ফেললাম মনের খুশিতে। যার যার ব্যাকপ্যাক তার তার কাছে থাকবে। কেউ কারো বোঝা টানবে না। আপু ওরটা গুছিয়ে নিল, আমি খালি ব্যাগ বের করে বসে বসে পিএসথ্রিতে গেম খেলতে থাকলাম। এখনো অনেক সময় আছে, কালকে সকালে ফ্লাইট আর এখন মাত্র সকাল ১১টা বাজে ! কি দরকার এত তাড়াহুড়ো করার ?
“স্পর্শ, তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছা তোর ! কালকে দেখবি একটা তাড়াহুড়া লাগবে।”
“উহু আপু ডিস্টার্ব করো না তো। কোন সমস্যা হবে না। আমি একটু পরেই গুছিয়ে নিচ্ছি।”
“তুই তো আরও দুইদিন ধরেই গুছিয়ে নিচ্ছিস। ব্যাগটা তো ওই একই জায়গাতেই পড়ে আছে। দেখিস রাতে তাড়াহুড়া লাগবে।”
“উমমম আচ্ছা দাঁড়াও আমি গেমটা শেষ করে নিই”
আপু কিছুক্ষণ হতাশ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে চলে গেল। বোধহয় বুঝতে পেরেছে বলাই সার, আমার কান দিয়ে কিছুই আসলে মাথায় যাচ্ছে না, সব মনযোগ আমার এখন গেমসের পিছে টিভির দিকে। আপু চলে গেল।
সকালবেলা উঠে সত্যিকারের একটা তাড়াহুড়া লাগল। আমি এখনো ব্যাগ গুছাইনি ! আপুর ঝাড়ি একটাও মাটিতে পড়ল না, সব আমার উপরেই আসল ! শেষমেশ আম্মু বাচালো আমাকে, ব্যাগটা গুছিয়ে দিল। যদিও আসলে ব্যাগে এমন কিছুই নেই, শুধু জামা কাপড় কয়েকটা। হোটেল থেকে টুথপেস্ট টুথব্রাশ সবকিছুই দেয়, এগুলো আর কষ্ট করে বয়ে বেড়াতে হয় না। আর আমার পিএসপি তো সারাক্ষণ গলাতেই ঝুলে…সব মিলিয়ে বেশিক্ষণ লাগল না। ভাগ্য ভালো বাসা থেকে এয়ারপোর্ট খুব বেশি দূরে না, নাহলে আর আজকে প্লেন ধরা লাগত না। তাও ফ্লাইটের পৌনে একঘন্টা আগে গিয়ে পৌছালাম।
এতক্ষণ যে বকা খেতে খেতে এসেছি সেটা আর মনে থাকল না। কিছুক্ষণ যে বসতে হল এয়ারপোর্টে, তাতেই আবার পিএসপি’র মধ্যে প্রায় ঢুকে গেলাম। আমার ব্যাগ আমার কাঁধে আর থাকল না, আপুই টানতে থাকল। কখন আপু ব্যাগ চেক-ইন করিয়ে বোর্ডিং পাস নিয়ে এসেছে খেয়ালও করিনি।
তারপরে আমাদের প্লেনে উঠতে বলা হল। ধীরে সুস্থ্যে গিয়ে উঠলাম। খুশি হয়ে গেলাম দেখে, বড় একটা প্লেন। ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট দিয়েছে ঢাকা কক্সবাজার রুটে। এরকম একটা বড় প্লেনে ওঠার ইচ্ছে সবসময়ই ছিল, লাফাতে লাফাতে উঠে গেলাম। কক্সবাজারে যাত্রী নামিয়ে এটা আবার দুবাইয়ে যাবে, তাই বেশ খানিকক্ষণ বসে থাকতে হল। যারা দেশের বাইরে যাচ্ছে তাদের ইমিগ্রেশনের ফর্মালিটি চলছে। আমার তো বিরক্তি লাগার কোন কারণই নেই, আমি আমার গেমিং নিয়ে আছি, আপুরাও খুশি, তাদের স্বভাবমত কাউকাউ করছে।
প্লেনটা যখন ট্যাক্সিইং শেষ করে ফুল স্পীডে টেকঅফ করার জন্য দৌড় লাগালো তখন আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম দেখে, প্লেনটা কিভাবে ছুটে যাচ্ছে ! একসময় মাটির মায়া ছেড়ে লাফ দিয়ে উঠে গেল, দেখতে দেখতে সাদা পেজা তুলোর মত মেঘেরও উপরে উঠে আসল। প্লেনটা আকাশে ওঠার পরে বুঝলাম প্লেন জার্নি আসলে খুবই বোরিং। একটা সময় শুধু মেঘ ছাড়া আর কিছুই দেখার থাকে না…আর মেঘের সম্মোহনী ক্ষমতা কম। সমুদ্রের টানে মানুষ অনেকদিন সমুদ্রপাড়ে থেকে যেতে পারে কিন্তু মেঘের উপরে ২০ মিনিট থাকাও অনেক কষ্ট। আমি আকাশ পাতাল চিন্তা করতে বসলাম পাইলটদের দিন কিভাবে কাটে…পাইলট হওয়ার চিন্তাটা বাতিল করে দিলাম মাথা থেকে। এভাবে আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতেই একসময় চিটাগাং আসল…এখানেও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা লাগল। তারপরে আবার উড়ল আকাশে, তবে এবার মাত্র ১০ মিনিটের জন্য। শীঘ্রই পৌছে গেলাম কক্সবাজারে। ধীরেসুস্থে নেমে আসার পরে হাত নেড়ে টা-টা দিলাম প্লেনটাকে, তারপরে বাইরে বের হয়ে মাইক্রোতে উঠে বসলাম। কোথাও আমাদের লাগেজ গুলো দেখতে পেলাম না…আপু বলল প্লেনের ওরা হোটেলে পৌছে দিয়ে যাবে। আমি আর মাথা ঘামালাম না। তবে ঘামানো দরকার ছিল, কারণ এটার জন্যই আমার সমুদ্র ভ্রমণটা পুরো পাল্টে গেল !
হোটেলে গিয়ে পৌছলাম। সী গাল হোটেলের বিশাল নীল কাচের বিল্ডিংটা দেখে প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। তাড়াতাড়ি চলে গেলাম ভিতরে, আপুরা চেক ইন করল। ৪টা রুম নিল, একেকটায় দুজন করে থাকবে। আমি যেহেতু আপুর সাথে এসেছি কাজেই আমি আপুর রুমে তবে অন্য আপুরা বলল আমি যখন খুশি চাইলে ওদের রুমে গিয়ে থাকতে পারি চাইলে। সবাই যার যার রুমে চলে গেল, আমি হোটেলের নিচ থেকে উপরে ঘুরে বেড়াতে থাকলাম। হোটেল দেখা শেষ হলে আমি আর আপুরা সমুদ্রে চলে গেলাম….দাপাদাপি করে যখন উঠে আসলাম তখন বাজে ৩টা। মহা ক্লান্ত হয়ে আমি আর আপু রুমে আসার পরে খেয়াল হল আমাদের ব্যাগ কোথায় ?
রুম সার্ভিসে ফোন দেওয়ার পরে ওরা আমাদের ব্যাগগুলো দিয়ে গেল…প্লেন থেকে হোটেলের রিসেপশনে দিয়ে গিয়েছিল। আমি তখন শাওয়ারের নিচে, কাজেই আমি ব্যাগ দিয়ে যাওয়া দেখতে পারলাম না। শাওয়ার শেষে যখন সাদা টাওয়েল পেচিয়ে বের হয়ে আসলাম তখন প্রথমবারের মত খেয়াল করলাম….আমার ব্যাগ কোথায় ?
এই প্রথমবারের মত আমি আতঙ্কিত হয়ে গেলাম। “আপুউউ ! আমার ব্যাগ কই ?”
আপু মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল…”ব্যাগ তো দিয়ে গেল। তোরটা গেল কোথায় ? দাঁড়া ওদের রুমে গিয়ে দেখে আসি।” বলে বান্ধবীদের রুমে চলে গেল। টাওয়েল পড়ে বের হওয়া সম্ভব না তাই আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম রুমেই। মেজাজ গরম হচ্ছে। আমার ব্যাগটাই কেন অন্যদের রুমে যেতে হবে ? আপু এতক্ষণ দেখল না কেন ? আপুটা যে কি !
একটু পরে আপু মুখ শুকনো করে ঘরে এসে বলল, “স্পর্শ তোর ব্যাগটা পাচ্ছি না”
“পাচ্ছো না মানে ? ব্যাগ কি উড়ে গেছে নাকি ?”
“না মানে…ওটা মনে হচ্ছে হোটেলেই আসেনি।”
“মানে কি !!!!!” আমার হঠাৎ করে মাথায় আসলো আমার পিএসপি ! পরে মনে পড়ল নাহ ওটা তো আমার সাথেই ছিল গলায়। আতঙ্ক কমল একটু…আপু তখন ফোন দিল হোটেলের রিসেপশনে। রিসেপশন থেকে বলল ব্যাগ ৭টাই ছিল।
তারপরে এয়ারপোর্টে ফোন দিল আপু। আমি তখনো টাওয়েল পেচিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমার জামা কাপড়গুলোও নেই, ওগুলো বালি লেগে – ভিজে একাকার। পড়ার কোনই উপায় নাই। আমি শুনছি আপুর কথাবার্তা…আপুর মুখ দেখে বোঝা গেল আশার কোনই খবর নাই। ফোন রেখে দিয়ে আপু তাকিয়ে থাকল আমার দিকে..আমি কিছু বলার আগেই হাসতে শুরু করল। আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না হচ্ছেটা কি।
“অ্যাই আপু কি হইসে এত হাসির কি হল ?”
“হিহি, স্পর্শ তোর ব্যাগ দুবাই চলে গেছে !”
“কি ! এটা এত হাসির কি হল ?”
“জানি না..দ্যাখ তোর ব্যাগ কত লাকি ! একা একা দুবাই চলে গেল !”
“তাহলে এখন কি হবে ? আমার ব্যাগ হারিয়ে গেল ?”
“না হারিয়ে যাবে না, ওটা দুই সপ্তাহ পরে ফেরত আসবে, ঢাকায় বাসার ঠিকানায় পৌছে দিবে ওরা”
“খুবই ভালো কথা। এখন তাহলে আমি কি করব ? টাওয়েল পেচিয়ে এক সপ্তাহ সমুদ্র দেখব ?”
এতক্ষণে আপু খেয়াল করল আমি টাওয়েল পেঁচিয়েই কথা বলছি। কিছুক্ষণ মাথা চুলকে বলল,
“ভালো সমস্যা হল। চল এভাবেই তোকে মার্কেটে নিয়ে গিয়ে কয়েকটা শার্ট প্যান্ট কিনে দেই !”
আমি সাথে সাথেই উড়িয়ে দিলাম। “এটা কোন প্ল্যান হল ? আর এখানে বার্মিজ মার্কেটে পাওয়া যায় খালি আচার…আমার শার্ট প্যান্ট পাওয়া যাবে না !”
“তুই বড় যন্ত্রণা করিস ! এখন তাহলে তোর জন্য কি যোগাড় করব আমি ? আমার স্কার্ট পড়ে থাক !”
“স্কার্ট পড়ে থাকব কেন ? আমি কি মেয়ে নাকি ? আর তুমি অনেক লম্বা…তোমার কিছুই আমার হবে না”
“তাহলে টাওয়েল পড়েই থাক। আমরা নিচে লাঞ্চ করতে যাব…তুই বসে থাক এখানে।”
আমার খিদেও পেয়েছে প্রচন্ড। হঠাৎ কি যেন হল, হতাশ গলায় আপুকে বললাম, “স্কার্ট না, তোমার একটা শার্ট আর প্যান্ট দাও। খিদে লেগেছে…এখানে বসে থাকলে মরেই যাবো। তারচেয়ে তোমার জামা পড়েই ঘুরি।”
“সত্যি তুই আমার জামা পড়বি ? ইইইইইই…কতদিন তোকে মেয়ে সাজাতে চেয়েছি, এবার তোকে সাজাতে পারব ! ভালোই তো হল, আমরা ছাড়া আর কেউ জানবে না। অনেক মজা হবে এই সাত দিন, তাই না ?”
আমি কটমট করে তাকালাম আপুর দিকে। চেষ্টা করলাম ভস্ম করে দিতে, বৃথা চেষ্টাই সার। আপু লাফাতে লাফাতে সুটকেস খুলে জামাকাপড় বের করতে থাকল। আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।
গল্পের লেখকের বেপারে কিছু বলা যাক । এটি একটি সংগৃহীত গল্প , গল্পের লেখক Sporshia । উনি ২০১২-১৭ সাল পর্যন্ত নিজের ব্লগে গল্প লিখে গেছেন । বাংলাতে এমনিতে ক্রস ড্রেসিং / ফেমবয় এই বিষয়ে উপর ভাল তেমন কাজ নেই । যা আছে তার মান ও তেমন ভাল না । Sporshia আমার মতে সেরা ক্রস ড্রেসিং গল্প লেখকদের একজন । এই গল্পটি এখানে দেয়ার উদ্দেশ্য কেও যদি তার গল্প না পড়ে থাকেন , তাদের এই গল্প গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া ।
????????????????????? সাগরকন্যা – ১ ?????????????????????
“এই চল আমরা সবাই ঘুরতে যাই !”
“কোথায় যাবি ?”
“আরেহ একজায়গায় গেলেই তো হল। কিন্তু দূরে কোথাও যাওয়াই ভালো, না কি বলিস ?”
“চল কক্সবাজার যাই !”
“এহ ! আব্বু আম্মু মনে হয় খুব দিবে ?”
“না দেওয়ার কি আছে ? আমরা মনে হয় এখনো বাচ্চা আছি ? স্পর্শ ছোট খালি, তাও ক্লাস ইলেভেন পড়া একটা ছেলে এমন কিছু ছোট না ! আর আমরা এতগুলো ইউনিভার্সিটিতে পড়া মেয়েরা একা একা যেতে পারব না এটা কোন কথা হল নাকি ?”
আমি বসে বসে শুনছিলাম এতক্ষণ। আমার আপুর ফ্রেন্ডরা সব আমাদের বাসায় বসে কাউকাউ করছে। আসলে আড্ডা দিচ্ছে কিন্তু ওরা একসাথে হলে আসলে কেউ কারোর কথাই শুনে না, সবাই যার যার মত বলতে থাকে। তাই আমি বলি ওরা কাউকাউ করছে। আমি নির্বিকার মুখে বসে চকলেট খাচ্ছিলাম…আমার নাম শুনে একটু নড়েচড়ে বসলাম। বললাম, “হুমম সেটাই। আমি মোটেও বাচ্চা না। কিন্তু কথা হচ্ছে আমাকে নিয়ে যাবা তোমরা ?”
৭টা মেয়ে একসাথে মাথা ঝাকাল মানে তারা আমাকে নিতে চায়। আপুর ফ্রেন্ডরা আমারও ফ্রেন্ড…বয়সে বড় হলে কেউ ফ্রেন্ড হতে পারে না এই কথাটা মোটেও সত্যি না। সবাই আমার এত ভালো বান্ধবী অথচ সবাই আমার চেয়ে প্রায় ৩-৪ বছরের বড়। আমি খুবই চুপচাপ ছেলে, সবাই আমার সাথে এত ক্লোজ কিভাবে কে জানে। তবে সবাই ফাজিলের শিরোমনি। আমি এদের থেকে বেশ সাবধানেই থাকি কারণ ওরা কখন কি করবে তার কোন ঠিক নাই !
আমাকে নিয়ে যাবে শুনে অবশ্য আমার একটু কেমন যেন লাগছিল…৭টা মেয়ের সাথে আমি যাবো, আমার সময় কাটবে কিভাবে ? একজন অবশ্য আমারই আপন আপু, তারপরেও মেয়েদের সাথে সময় কাটায় কিভাবে ? সাত পাঁচ ভাবতে বসলাম আমি, আর আপুরা তখনো কাউকাউ করেই যাচ্ছে।
এরপরে কয়েকদিন চলে গেল আর একদিন শুনলাম অবশেষে নাকি ওরা সমুদ্র দর্শনে যাচ্ছে। আর সেইসাথে আমাকেও জানিয়ে দেয়া হল আমিও যাচ্ছি। যাক, ভালোই হল। কলেজ ফাইনাল পরীক্ষা মাত্র শেষ হয়েছে আর ওদেরও সেমিস্টার শেষ, তাই এখন সবাই মিলে সমুদ্র দেখতে যাবো। সাতদিন থাকবো, আর ঘুরেফিরে দেখবো যতকিছু দেখা যায়। আরও খুশির ব্যাপার হচ্ছে থার্টি ফার্স্ট নাইটও পাবো ওখানেই। আমাদের খুশি দেখে কে ! বাস ট্রেন না, একেবারে প্লেনেরই টিকেট কেটে ফেলেছে ওরা যেন ঘোরাঘুরির সময় একদম নষ্ট না হয় ! আমি বেশ খুশি হয়ে গেলাম, যাক বহুদিন পরে আবার আকাশে ওড়া যাবে। শেষবার প্লেনে উঠেছি ক্লাস টু-তে থাকতে !
ব্যাগ গুছিয়ে ফেললাম মনের খুশিতে। যার যার ব্যাকপ্যাক তার তার কাছে থাকবে। কেউ কারো বোঝা টানবে না। আপু ওরটা গুছিয়ে নিল, আমি খালি ব্যাগ বের করে বসে বসে পিএসথ্রিতে গেম খেলতে থাকলাম। এখনো অনেক সময় আছে, কালকে সকালে ফ্লাইট আর এখন মাত্র সকাল ১১টা বাজে ! কি দরকার এত তাড়াহুড়ো করার ?
“স্পর্শ, তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছা তোর ! কালকে দেখবি একটা তাড়াহুড়া লাগবে।”
“উহু আপু ডিস্টার্ব করো না তো। কোন সমস্যা হবে না। আমি একটু পরেই গুছিয়ে নিচ্ছি।”
“তুই তো আরও দুইদিন ধরেই গুছিয়ে নিচ্ছিস। ব্যাগটা তো ওই একই জায়গাতেই পড়ে আছে। দেখিস রাতে তাড়াহুড়া লাগবে।”
“উমমম আচ্ছা দাঁড়াও আমি গেমটা শেষ করে নিই”
আপু কিছুক্ষণ হতাশ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে চলে গেল। বোধহয় বুঝতে পেরেছে বলাই সার, আমার কান দিয়ে কিছুই আসলে মাথায় যাচ্ছে না, সব মনযোগ আমার এখন গেমসের পিছে টিভির দিকে। আপু চলে গেল।
সকালবেলা উঠে সত্যিকারের একটা তাড়াহুড়া লাগল। আমি এখনো ব্যাগ গুছাইনি ! আপুর ঝাড়ি একটাও মাটিতে পড়ল না, সব আমার উপরেই আসল ! শেষমেশ আম্মু বাচালো আমাকে, ব্যাগটা গুছিয়ে দিল। যদিও আসলে ব্যাগে এমন কিছুই নেই, শুধু জামা কাপড় কয়েকটা। হোটেল থেকে টুথপেস্ট টুথব্রাশ সবকিছুই দেয়, এগুলো আর কষ্ট করে বয়ে বেড়াতে হয় না। আর আমার পিএসপি তো সারাক্ষণ গলাতেই ঝুলে…সব মিলিয়ে বেশিক্ষণ লাগল না। ভাগ্য ভালো বাসা থেকে এয়ারপোর্ট খুব বেশি দূরে না, নাহলে আর আজকে প্লেন ধরা লাগত না। তাও ফ্লাইটের পৌনে একঘন্টা আগে গিয়ে পৌছালাম।
এতক্ষণ যে বকা খেতে খেতে এসেছি সেটা আর মনে থাকল না। কিছুক্ষণ যে বসতে হল এয়ারপোর্টে, তাতেই আবার পিএসপি’র মধ্যে প্রায় ঢুকে গেলাম। আমার ব্যাগ আমার কাঁধে আর থাকল না, আপুই টানতে থাকল। কখন আপু ব্যাগ চেক-ইন করিয়ে বোর্ডিং পাস নিয়ে এসেছে খেয়ালও করিনি।
তারপরে আমাদের প্লেনে উঠতে বলা হল। ধীরে সুস্থ্যে গিয়ে উঠলাম। খুশি হয়ে গেলাম দেখে, বড় একটা প্লেন। ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট দিয়েছে ঢাকা কক্সবাজার রুটে। এরকম একটা বড় প্লেনে ওঠার ইচ্ছে সবসময়ই ছিল, লাফাতে লাফাতে উঠে গেলাম। কক্সবাজারে যাত্রী নামিয়ে এটা আবার দুবাইয়ে যাবে, তাই বেশ খানিকক্ষণ বসে থাকতে হল। যারা দেশের বাইরে যাচ্ছে তাদের ইমিগ্রেশনের ফর্মালিটি চলছে। আমার তো বিরক্তি লাগার কোন কারণই নেই, আমি আমার গেমিং নিয়ে আছি, আপুরাও খুশি, তাদের স্বভাবমত কাউকাউ করছে।
প্লেনটা যখন ট্যাক্সিইং শেষ করে ফুল স্পীডে টেকঅফ করার জন্য দৌড় লাগালো তখন আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম দেখে, প্লেনটা কিভাবে ছুটে যাচ্ছে ! একসময় মাটির মায়া ছেড়ে লাফ দিয়ে উঠে গেল, দেখতে দেখতে সাদা পেজা তুলোর মত মেঘেরও উপরে উঠে আসল। প্লেনটা আকাশে ওঠার পরে বুঝলাম প্লেন জার্নি আসলে খুবই বোরিং। একটা সময় শুধু মেঘ ছাড়া আর কিছুই দেখার থাকে না…আর মেঘের সম্মোহনী ক্ষমতা কম। সমুদ্রের টানে মানুষ অনেকদিন সমুদ্রপাড়ে থেকে যেতে পারে কিন্তু মেঘের উপরে ২০ মিনিট থাকাও অনেক কষ্ট। আমি আকাশ পাতাল চিন্তা করতে বসলাম পাইলটদের দিন কিভাবে কাটে…পাইলট হওয়ার চিন্তাটা বাতিল করে দিলাম মাথা থেকে। এভাবে আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতেই একসময় চিটাগাং আসল…এখানেও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা লাগল। তারপরে আবার উড়ল আকাশে, তবে এবার মাত্র ১০ মিনিটের জন্য। শীঘ্রই পৌছে গেলাম কক্সবাজারে। ধীরেসুস্থে নেমে আসার পরে হাত নেড়ে টা-টা দিলাম প্লেনটাকে, তারপরে বাইরে বের হয়ে মাইক্রোতে উঠে বসলাম। কোথাও আমাদের লাগেজ গুলো দেখতে পেলাম না…আপু বলল প্লেনের ওরা হোটেলে পৌছে দিয়ে যাবে। আমি আর মাথা ঘামালাম না। তবে ঘামানো দরকার ছিল, কারণ এটার জন্যই আমার সমুদ্র ভ্রমণটা পুরো পাল্টে গেল !
হোটেলে গিয়ে পৌছলাম। সী গাল হোটেলের বিশাল নীল কাচের বিল্ডিংটা দেখে প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। তাড়াতাড়ি চলে গেলাম ভিতরে, আপুরা চেক ইন করল। ৪টা রুম নিল, একেকটায় দুজন করে থাকবে। আমি যেহেতু আপুর সাথে এসেছি কাজেই আমি আপুর রুমে তবে অন্য আপুরা বলল আমি যখন খুশি চাইলে ওদের রুমে গিয়ে থাকতে পারি চাইলে। সবাই যার যার রুমে চলে গেল, আমি হোটেলের নিচ থেকে উপরে ঘুরে বেড়াতে থাকলাম। হোটেল দেখা শেষ হলে আমি আর আপুরা সমুদ্রে চলে গেলাম….দাপাদাপি করে যখন উঠে আসলাম তখন বাজে ৩টা। মহা ক্লান্ত হয়ে আমি আর আপু রুমে আসার পরে খেয়াল হল আমাদের ব্যাগ কোথায় ?
রুম সার্ভিসে ফোন দেওয়ার পরে ওরা আমাদের ব্যাগগুলো দিয়ে গেল…প্লেন থেকে হোটেলের রিসেপশনে দিয়ে গিয়েছিল। আমি তখন শাওয়ারের নিচে, কাজেই আমি ব্যাগ দিয়ে যাওয়া দেখতে পারলাম না। শাওয়ার শেষে যখন সাদা টাওয়েল পেচিয়ে বের হয়ে আসলাম তখন প্রথমবারের মত খেয়াল করলাম….আমার ব্যাগ কোথায় ?
এই প্রথমবারের মত আমি আতঙ্কিত হয়ে গেলাম। “আপুউউ ! আমার ব্যাগ কই ?”
আপু মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল…”ব্যাগ তো দিয়ে গেল। তোরটা গেল কোথায় ? দাঁড়া ওদের রুমে গিয়ে দেখে আসি।” বলে বান্ধবীদের রুমে চলে গেল। টাওয়েল পড়ে বের হওয়া সম্ভব না তাই আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম রুমেই। মেজাজ গরম হচ্ছে। আমার ব্যাগটাই কেন অন্যদের রুমে যেতে হবে ? আপু এতক্ষণ দেখল না কেন ? আপুটা যে কি !
একটু পরে আপু মুখ শুকনো করে ঘরে এসে বলল, “স্পর্শ তোর ব্যাগটা পাচ্ছি না”
“পাচ্ছো না মানে ? ব্যাগ কি উড়ে গেছে নাকি ?”
“না মানে…ওটা মনে হচ্ছে হোটেলেই আসেনি।”
“মানে কি !!!!!” আমার হঠাৎ করে মাথায় আসলো আমার পিএসপি ! পরে মনে পড়ল নাহ ওটা তো আমার সাথেই ছিল গলায়। আতঙ্ক কমল একটু…আপু তখন ফোন দিল হোটেলের রিসেপশনে। রিসেপশন থেকে বলল ব্যাগ ৭টাই ছিল।
তারপরে এয়ারপোর্টে ফোন দিল আপু। আমি তখনো টাওয়েল পেচিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমার জামা কাপড়গুলোও নেই, ওগুলো বালি লেগে – ভিজে একাকার। পড়ার কোনই উপায় নাই। আমি শুনছি আপুর কথাবার্তা…আপুর মুখ দেখে বোঝা গেল আশার কোনই খবর নাই। ফোন রেখে দিয়ে আপু তাকিয়ে থাকল আমার দিকে..আমি কিছু বলার আগেই হাসতে শুরু করল। আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না হচ্ছেটা কি।
“অ্যাই আপু কি হইসে এত হাসির কি হল ?”
“হিহি, স্পর্শ তোর ব্যাগ দুবাই চলে গেছে !”
“কি ! এটা এত হাসির কি হল ?”
“জানি না..দ্যাখ তোর ব্যাগ কত লাকি ! একা একা দুবাই চলে গেল !”
“তাহলে এখন কি হবে ? আমার ব্যাগ হারিয়ে গেল ?”
“না হারিয়ে যাবে না, ওটা দুই সপ্তাহ পরে ফেরত আসবে, ঢাকায় বাসার ঠিকানায় পৌছে দিবে ওরা”
“খুবই ভালো কথা। এখন তাহলে আমি কি করব ? টাওয়েল পেচিয়ে এক সপ্তাহ সমুদ্র দেখব ?”
এতক্ষণে আপু খেয়াল করল আমি টাওয়েল পেঁচিয়েই কথা বলছি। কিছুক্ষণ মাথা চুলকে বলল,
“ভালো সমস্যা হল। চল এভাবেই তোকে মার্কেটে নিয়ে গিয়ে কয়েকটা শার্ট প্যান্ট কিনে দেই !”
আমি সাথে সাথেই উড়িয়ে দিলাম। “এটা কোন প্ল্যান হল ? আর এখানে বার্মিজ মার্কেটে পাওয়া যায় খালি আচার…আমার শার্ট প্যান্ট পাওয়া যাবে না !”
“তুই বড় যন্ত্রণা করিস ! এখন তাহলে তোর জন্য কি যোগাড় করব আমি ? আমার স্কার্ট পড়ে থাক !”
“স্কার্ট পড়ে থাকব কেন ? আমি কি মেয়ে নাকি ? আর তুমি অনেক লম্বা…তোমার কিছুই আমার হবে না”
“তাহলে টাওয়েল পড়েই থাক। আমরা নিচে লাঞ্চ করতে যাব…তুই বসে থাক এখানে।”
আমার খিদেও পেয়েছে প্রচন্ড। হঠাৎ কি যেন হল, হতাশ গলায় আপুকে বললাম, “স্কার্ট না, তোমার একটা শার্ট আর প্যান্ট দাও। খিদে লেগেছে…এখানে বসে থাকলে মরেই যাবো। তারচেয়ে তোমার জামা পড়েই ঘুরি।”
“সত্যি তুই আমার জামা পড়বি ? ইইইইইই…কতদিন তোকে মেয়ে সাজাতে চেয়েছি, এবার তোকে সাজাতে পারব ! ভালোই তো হল, আমরা ছাড়া আর কেউ জানবে না। অনেক মজা হবে এই সাত দিন, তাই না ?”
আমি কটমট করে তাকালাম আপুর দিকে। চেষ্টা করলাম ভস্ম করে দিতে, বৃথা চেষ্টাই সার। আপু লাফাতে লাফাতে সুটকেস খুলে জামাকাপড় বের করতে থাকল। আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।
my threads : Women in saree || Random pics of insta models || dusky girl