16-08-2020, 08:06 AM
সাগ্নিক আইসাকে দুধ দিয়ে অলস শরীর
টানতে টানতে নীচে নামতে লাগলো।
আইসা একটুক্ষণ তাকিয়ে রইলো সাগ্নিকের
গমনপথের দিকে। ছেলেটাকে একটু বেশী
রুক্ষভাবে কথা বললো হয়তো। হাজার হোক
প্রতিদিন সকাল ৮ টায় দিয়ে তো যায়।
আইসা একটা প্রাইভেট কোম্পানির
শিলিগুড়ি শাখার প্রোডাকশন ম্যানেজার।
ভীষণ ব্যস্ত থাকে সবসময়। নিজে বাজার
করার সময় পর্যন্ত পায় না ঠিকঠাক।
কাঁচামাল থেকে গালামাল থেকে দুধ সবই
হোম ডেলিভারি নেয়।
আইসার ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে সাগ্নিকের
মনটা খারাপ হয়ে গেলো। এমনিতেই উৎসবের
দিনগুলোতে মানুষ পরিবারকে মিস করে।
তার ওপর কাস্টমারের ঝাড় খেতে কার
ভালো লাগে। ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে একটু
এগিয়ে একটা বড় অচেনা গাছ আছে।
চারপাশ বাঁধানো বসার জন্য। তাতেই বসলো
সাগ্নিক। একটা সিগারেট ধরালো।
আনমনে গাছে হেলান দিয়ে টানতে
লাগলো। সিগারেট শেষ করেও বসে আছে
সাগ্নিক। আকাশপানে চেয়ে। উদাস। আইসা
স্নান সেড়ে কাপড় মেলতে ব্যালকনিতে
আসলো। কাপড় মেলে দিয়ে দুরে ট্রেন
লাইনের দিকে চেয়ে রইলো। কালো ধোঁয়া
ছড়িয়ে ট্রেন চলছে। আইসার মনটাও খারাপ।
ছুটি নেই। সামনের সপ্তাহে একটা মিটিং
করে তারপর ছুটি। ইতিমধ্যে বুধবার বাড়িতে
অনুষ্ঠান। বাড়ি যেতে পারবে না। ঈদে তো
যেতেই পারেনি।
হঠাৎ গাছটার দিকে চোখ গেলো। গাছের
নীচে সাগ্নিক বসে আছে। উদাস, আনমনা।
হাত দিয়ে ইশারা করলো আইসা। সাগ্নিক
গভীর চিন্তায় মগ্ন। দেখলো না আইসাকে।
আইসার মন আরও খারাপ হয়ে গেলো।
ছেলেটাকে কড়া কথা শুনিয়েছে। কেমন
করে বসে আছে। যেন কেউ নেই ওর। মুখে
সবসময় কেমন একটা অনুভুতি লেগে থাকে।
যেন সব কিছু হারিয়ে গিয়েছে। আইসা দুই
তিন বার হাত নাড়লো। কিন্তু সাগ্নিক
দেখলো না। রুমে ঢুকে ডায়েরি বের করলো
আইসা। সাগ্নিকের ফোন নম্বরে রিং করলো
নম্বর বের করে। ব্যালকনিতে এলো আবার।
সাগ্নিক ফোন রিসিভ করলো।
সাগ্নিক- হ্যাঁ কে বলছেন?
আইসা- আমি আইসা পারভিন।
সাগ্নিক- হ্যাঁ ম্যাডাম বলুন।
আইসা- ওপর দিকে তাকাও। আমার
ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে।
সাগ্নিক তাকিয়ে দেখলো আইসা হাত
নাড়ছে।
সাগ্নিক- হম। কি ব্যাপার ম্যাডাম?
আইসা- একটু ফ্ল্যাটে এসো তো।
সাগ্নিক- এখন?
আইসা- ইয়েস, এখনই।
সাগ্নিক- ওকে।
ফোন কেটে সাগ্নিক সাইকেল নিয়ে
ফ্ল্যাটের দিকে এগোলো। নীচে সাইকেল
রেখে চারতলায় উঠলো। আইসা রেডি হয়েই
ছিলো। সাগ্নিক আসার আগেই দরজা খুলে
দাঁড়িয়ে ছিলো।
আইসা- এসো, ভেতরে এসো। চা নেবে না
কফি?
সাগ্নিক- কিছু না।
আইসা- রাগ করেছো? আসলে একটু বেশী
রুক্ষ হয়ে গিয়েছিলাম। ঈদেও ছুটি পাইনি।
বুধবার বাড়িতে অনুষ্ঠান। অথচ বাড়ি যেতে
পারছি না। শুধু কাজ আর কাজ। মাথাটা গরম
হয়ে ছিলো। স্যরি। তুমি এমনিতে ভীষণ
পাংচুয়াল। একদিন লেটের জন্য বকা দেওয়া
উচিত হয়নি আমার।
সাগ্নিক- আরে না, সেরকম কিছু নয়। আমি
সামান্য দুধওয়ালা। আমায় এক্সপ্ল্যানেশন
দেবার কোনো দরকার নেই ম্যাডাম। আপনি
বলুন ডাকলেন কেনো?
আইসা- এমনিই। দেখলাম মন খারাপ করে
বসে আছো। তাই।
সাগ্নিক- ওহ।
আইসা- তোমার মন খারাপ কেনো? ব্যাবসা
ভালো চলছে না? না কি বাড়িতে সমস্যা?
তোমাদের পূজো তো এসে গিয়েছে। বাড়ির
সবার জামাকাপড় হয়েছে?
সাগ্নিক- ব্যাবসা ভালো চলছে না
ম্যাডাম। সবাই প্রায় ছুটিতে। তাই আর কি।
আইসা- তোমার বাড়িতে কে কে আছেন?
সাগ্নিক- কেউ নেই।
আইসা- তুমি একা?
সাগ্নিক- হমমমম।
আইসা- এ মা! কেনো কেনো?
সাগ্নিক আবার সেই তার পড়াশোনা, সৎ মা,
সম্পত্তি আর ত্যাজ্যপুত্র এর গল্প শোনালো।
সাগ্নিকের স্ট্রাগলিং জীবনের কাহিনী
শুনে আইসারও মন খারাপ হয়ে গেলো।
সহানুভূতি দেখানোর জন্য সাগ্নিকের হাত
চেপে ধরলো একটু। তারপর উঠে জানালার
কাছে গেলো।
আইসা- গাছের নীচে বসে আনমনে কি
ভাবছিলে?
সাগ্নিক- ভাগ্যের কথা! পরিবারের কথা।
আইসা- উৎসব অনুষ্ঠানে পরিবারের পাশে
না থাকতে পারার যন্ত্রণাটা আমি বুঝি।
সাগ্নিক- হমমমম। আসি তবে ম্যাডাম?
আইসা- তাড়া আছে?
সাগ্নিক- না সেরকম নেই। স্নান খাওয়া
দাওয়া করে ঘুমাবো একটু।
আইসা- ওহহহ। এসো তবে। বিকেলেও দুধ দাও?
সাগ্নিক- হমমম।
আইসা- আচ্ছা এসো। কিছু খেলে ভালো
লাগতো।
সাগ্নিক- অন্যদিন। আসি ম্যাডাম।
সাগ্নিক বেরিয়ে পড়লো।
চলবে……
টানতে টানতে নীচে নামতে লাগলো।
আইসা একটুক্ষণ তাকিয়ে রইলো সাগ্নিকের
গমনপথের দিকে। ছেলেটাকে একটু বেশী
রুক্ষভাবে কথা বললো হয়তো। হাজার হোক
প্রতিদিন সকাল ৮ টায় দিয়ে তো যায়।
আইসা একটা প্রাইভেট কোম্পানির
শিলিগুড়ি শাখার প্রোডাকশন ম্যানেজার।
ভীষণ ব্যস্ত থাকে সবসময়। নিজে বাজার
করার সময় পর্যন্ত পায় না ঠিকঠাক।
কাঁচামাল থেকে গালামাল থেকে দুধ সবই
হোম ডেলিভারি নেয়।
আইসার ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে সাগ্নিকের
মনটা খারাপ হয়ে গেলো। এমনিতেই উৎসবের
দিনগুলোতে মানুষ পরিবারকে মিস করে।
তার ওপর কাস্টমারের ঝাড় খেতে কার
ভালো লাগে। ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে একটু
এগিয়ে একটা বড় অচেনা গাছ আছে।
চারপাশ বাঁধানো বসার জন্য। তাতেই বসলো
সাগ্নিক। একটা সিগারেট ধরালো।
আনমনে গাছে হেলান দিয়ে টানতে
লাগলো। সিগারেট শেষ করেও বসে আছে
সাগ্নিক। আকাশপানে চেয়ে। উদাস। আইসা
স্নান সেড়ে কাপড় মেলতে ব্যালকনিতে
আসলো। কাপড় মেলে দিয়ে দুরে ট্রেন
লাইনের দিকে চেয়ে রইলো। কালো ধোঁয়া
ছড়িয়ে ট্রেন চলছে। আইসার মনটাও খারাপ।
ছুটি নেই। সামনের সপ্তাহে একটা মিটিং
করে তারপর ছুটি। ইতিমধ্যে বুধবার বাড়িতে
অনুষ্ঠান। বাড়ি যেতে পারবে না। ঈদে তো
যেতেই পারেনি।
হঠাৎ গাছটার দিকে চোখ গেলো। গাছের
নীচে সাগ্নিক বসে আছে। উদাস, আনমনা।
হাত দিয়ে ইশারা করলো আইসা। সাগ্নিক
গভীর চিন্তায় মগ্ন। দেখলো না আইসাকে।
আইসার মন আরও খারাপ হয়ে গেলো।
ছেলেটাকে কড়া কথা শুনিয়েছে। কেমন
করে বসে আছে। যেন কেউ নেই ওর। মুখে
সবসময় কেমন একটা অনুভুতি লেগে থাকে।
যেন সব কিছু হারিয়ে গিয়েছে। আইসা দুই
তিন বার হাত নাড়লো। কিন্তু সাগ্নিক
দেখলো না। রুমে ঢুকে ডায়েরি বের করলো
আইসা। সাগ্নিকের ফোন নম্বরে রিং করলো
নম্বর বের করে। ব্যালকনিতে এলো আবার।
সাগ্নিক ফোন রিসিভ করলো।
সাগ্নিক- হ্যাঁ কে বলছেন?
আইসা- আমি আইসা পারভিন।
সাগ্নিক- হ্যাঁ ম্যাডাম বলুন।
আইসা- ওপর দিকে তাকাও। আমার
ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে।
সাগ্নিক তাকিয়ে দেখলো আইসা হাত
নাড়ছে।
সাগ্নিক- হম। কি ব্যাপার ম্যাডাম?
আইসা- একটু ফ্ল্যাটে এসো তো।
সাগ্নিক- এখন?
আইসা- ইয়েস, এখনই।
সাগ্নিক- ওকে।
ফোন কেটে সাগ্নিক সাইকেল নিয়ে
ফ্ল্যাটের দিকে এগোলো। নীচে সাইকেল
রেখে চারতলায় উঠলো। আইসা রেডি হয়েই
ছিলো। সাগ্নিক আসার আগেই দরজা খুলে
দাঁড়িয়ে ছিলো।
আইসা- এসো, ভেতরে এসো। চা নেবে না
কফি?
সাগ্নিক- কিছু না।
আইসা- রাগ করেছো? আসলে একটু বেশী
রুক্ষ হয়ে গিয়েছিলাম। ঈদেও ছুটি পাইনি।
বুধবার বাড়িতে অনুষ্ঠান। অথচ বাড়ি যেতে
পারছি না। শুধু কাজ আর কাজ। মাথাটা গরম
হয়ে ছিলো। স্যরি। তুমি এমনিতে ভীষণ
পাংচুয়াল। একদিন লেটের জন্য বকা দেওয়া
উচিত হয়নি আমার।
সাগ্নিক- আরে না, সেরকম কিছু নয়। আমি
সামান্য দুধওয়ালা। আমায় এক্সপ্ল্যানেশন
দেবার কোনো দরকার নেই ম্যাডাম। আপনি
বলুন ডাকলেন কেনো?
আইসা- এমনিই। দেখলাম মন খারাপ করে
বসে আছো। তাই।
সাগ্নিক- ওহ।
আইসা- তোমার মন খারাপ কেনো? ব্যাবসা
ভালো চলছে না? না কি বাড়িতে সমস্যা?
তোমাদের পূজো তো এসে গিয়েছে। বাড়ির
সবার জামাকাপড় হয়েছে?
সাগ্নিক- ব্যাবসা ভালো চলছে না
ম্যাডাম। সবাই প্রায় ছুটিতে। তাই আর কি।
আইসা- তোমার বাড়িতে কে কে আছেন?
সাগ্নিক- কেউ নেই।
আইসা- তুমি একা?
সাগ্নিক- হমমমম।
আইসা- এ মা! কেনো কেনো?
সাগ্নিক আবার সেই তার পড়াশোনা, সৎ মা,
সম্পত্তি আর ত্যাজ্যপুত্র এর গল্প শোনালো।
সাগ্নিকের স্ট্রাগলিং জীবনের কাহিনী
শুনে আইসারও মন খারাপ হয়ে গেলো।
সহানুভূতি দেখানোর জন্য সাগ্নিকের হাত
চেপে ধরলো একটু। তারপর উঠে জানালার
কাছে গেলো।
আইসা- গাছের নীচে বসে আনমনে কি
ভাবছিলে?
সাগ্নিক- ভাগ্যের কথা! পরিবারের কথা।
আইসা- উৎসব অনুষ্ঠানে পরিবারের পাশে
না থাকতে পারার যন্ত্রণাটা আমি বুঝি।
সাগ্নিক- হমমমম। আসি তবে ম্যাডাম?
আইসা- তাড়া আছে?
সাগ্নিক- না সেরকম নেই। স্নান খাওয়া
দাওয়া করে ঘুমাবো একটু।
আইসা- ওহহহ। এসো তবে। বিকেলেও দুধ দাও?
সাগ্নিক- হমমম।
আইসা- আচ্ছা এসো। কিছু খেলে ভালো
লাগতো।
সাগ্নিক- অন্যদিন। আসি ম্যাডাম।
সাগ্নিক বেরিয়ে পড়লো।
চলবে……