14-08-2020, 03:37 PM
অভিনেত্রীর সঙ্গ (#০২)
শীতের পরশ মহানগরের আকাশে বাতাসে ধীরে ধীরে ভরে উঠছে। যদিও রাস্তায় কুয়াশা পড়েনি তবে একটা ধোয়াশে ভাব আছে নভেম্বরের সকালে। রাস্তা ঘাট জন মানব শুন্য, আকাশে ভোরের আলো তখন ঠিক ভাবে ফোটেনি, পাখীদের কিচিরমিচির আওয়াজে জানা পরে যে প্রভাত আসন্ন। অন্ধকার থাকতে থাকতে ভোর পাঁচটা নাগাদ দানা, নয়নার বাড়িতে পৌঁছে যায়। গাড়ি ধোয়ার লোক আগে থেকেই গাড়ি ধুয়ে মুছে তৈরি রেখেছিল। লিফটে উঠে কলিং বেল বাজাতেই কাজের মেয়ে এসে দরজা খুলে দেয়। কাজের মেয়েটা দানাকে সোফায় বসতে বলে এক কাপ চা দিয়ে চলে যায়। দানা ঘাড় ঘুরিয়ে সুন্দরী নায়িকার সুসজ্জিত ফ্লাট দেখে, একপাশে একটা সুসজ্জিত ঘর, দেখে মনে হল ওই ঘরে কেউ শোয় না। সব বড়লোকের বাড়িতে অতিথিদের জন্য এমন একটা ঘর থাকে। একপাশে ছোট একটা ঘর, দেখে মনে হল চাকর বাকরদের ঘর ওটা। বসার ঘরের সাথেই লাগোয়া খাবার ঘর, দুটোর মাঝে একটা পর্দা দেওয়া, পর্দাটা সরিয়ে দিলে হল ঘরটা বেশ বড় হয়ে যায়। এক পাশে লম্বা করিডোর, করিডোরের অন্যদিকে মনে হয় বাকি ঘর গুলো। নাম করা নায়িকা বলে কথা, বসার ঘরের কোনায় বেশ কয়েকটা টবে গাছ লাগানো, ছাদ থেকে একটা বড় কাঁচের ঝাড়বাতি ঝুলছে, দেয়ালে নয়নার বিভিন্ন ভঙ্গিমায় অজস্র ছবি টাঙ্গানো।
বেশ কিছু পরে পাঞ্জাবী আর জিন্স পরিহিত একজন মধ্য বয়স্ক ভদ্রলোক ভেতর থেকে বেড়িয়ে এলো। চেহারা দেখে মনে হল রাতে ভালো ঘুম হয়নি। লোকটা দানার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে জরিপ করে নিয়ে তারপরে খানিক দূরে একটা সোফায় বসে সিগারেট জ্বালিয়ে টানতে শুরু করে দেয়। আগন্তুক সামনে রাখা একটা সিনেমা পত্রিকার পাতা উলটাতে উলটাতে আড় চোখ বারেবারে করিডোরের দিকে তাকিয়ে দেখে। কিছু পরে একটা ঢিলে জামা আর একটা হাঁটু পর্যন্ত জিন্স পরে নয়না বেড়িয়ে আসে। ওর পেছন পেছন কাজের মেয়েটা একটা বড় ব্যাগ হাতে করে বেড়িয়ে আসে। দানাকে দেখে নয়না অল্প হেসে কাজের মেয়ের হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে নিচে গাড়িতে অপেক্ষা করতে বলে। দানা কাজের মেয়ের হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে নিচে নেমে যায়। ব্যাগটা বেশ ভারী, মনে হয় নয়নার পোশাক আশাক আছে।
বেশ কিছু পরে নয়না দরজা খুলে গাড়িতে বসে ওকে গাড়ি চালাতে নির্দেশ দেয়। মহানগর থেকে বাবুচক প্রায় দুই ঘন্টার পথ। গাড়িতে বসেই পেছনের সিটে গা ছেড়ে দিয়ে বসে পরে নয়না। ঢিলে শার্টের সামনের বেশ কয়েকটা বোতাম খোলা, ফর্সা স্তন জোড়া কালো ব্রার মধ্যে হাঁসফাঁস করছে। দুই চোখ ঢুলুঢুলু, মনে হয় রাতে ভালো ঘুম হয়নি। দানা আড় চোখে আয়নায় নয়নাকে দেখে নেয় একবার। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে ফোন করে কাউকে। মাথা চুল পেছনে চুড়ো করে বেঁধে, মোবাইল ফোনে কারুর সাথে কথা বলতে ব্যাস্ত হয়ে যায়। দানার জানতে ইচ্ছে করে ওই ভদ্রলোকের পরিচয়, নিশ্চয় নয়নার রাতের সঙ্গী, বাপ্পা নস্কর জিজ্ঞেস করলে জানাতে হবে। দানা হু হু করে গাড়ি হাঁকিয়ে দেয় গন্তব্য স্থলের দিকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই নির্জন রাস্তা আর খালি শহর ছাড়িয়ে বড় রাস্তা ধরে, ধানের খেতের মাঝখান চিড়ে গাড়ি ধেয়ে চলে। পুব আকাশে নবীন ঊষার ছটা লেগেছে, গাড়ির কাঁচ বন্ধ, এসি চালানো তাই ভোরের নির্মল বাতাসের আমজে ওদের গায়ে লাগেনা। কত কৃত্রিম এই পৃথিবী, এত নির্মল ভোরের মলয় ছেড়ে এসির হাওয়া খায় এই বড় লোকেরা।
নয়না ফোনে কথা সেরে দানাকে জিজ্ঞেস করে, "তুমি নাকি পিস্তল চালাতে জানো?"
দানা গাড়ি চালাতে চালাতে উত্তর দেয়, "হ্যাঁ ম্যাডাম।"
নয়না হেসে জিজ্ঞেস করে, "পিস্তল আছে কি তোমার কাছে?"
দানা মাথা নাড়ায়, "হ্যাঁ আছে।"
নয়না ওকে বলে, "বেশ বেশ, হয়ত লাগবে না, তবে বলা যায় না কখন কি লাগে। আর শোন, যখন বলব আমাকে আগলে রাখতে তখন যেন পাশ কাটিয়ে পালাবে না। মাঝে মাঝে লোকেরা অনেক জ্বালাতন করে বুঝলে, একটু আগলে রেখো আমাকে।"
দানা হেসে উত্তর দেয়, "অবশ্যই ম্যাডাম সেটা আর বলতে। আমি জানি আপনি অনেক নাম করা অভিনেত্রী।"
নয়না ওকে ইয়ার্কি মেরে জিজ্ঞেস করে, "আমার সিনেমা দেখেছ?"
দানা বেশ কয়েকটা সিনেমা দেখেছে বৈকি। বেশ কয়েকটা সিনেমায় ছোট চাপা হট প্যান্ট আর ছোট কাঁচুলি পরে লাস্যময়ী নাচ নেচেছে, সেই সাথে সমুদ্র সৈকতে ক্ষুদ্র বিকিনি পরেও বেশ কয়েকটা সিনেমাতে সিন করেছে। ফর্সা পুষ্ট দেহে লাল রঙের বিকিনিতে দারুন লেগেছে নয়নাকে। চোখের সামনে সেই সব দৃশ্য ভেসে উঠতেই দানা মিচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে জানায়, নয়নার বেশ কয়েকটা সিনেমা ও দেখেছে।
সিগারেট শেষ হওয়ার কিছুপরে নয়না দানাকে বলে, "রাতে ভালো ঘুম হয়নি বুঝলে। আমি একটু তন্দ্রা যাচ্ছি, বাবুচক এলে আমাকে উঠিয়ে দিও।"
পেছনের সিটের পেছন থেকে একটা ছোট বালিশ নিয়ে পেছনের সিটে পা গুটিয়ে কচি বাচ্চার মতন ঘুমিয়ে পড়ে নয়না। গাড়ির তালেতালে সার্টের ভেতরে, ব্রার বাঁধনে বেঁধে থাকা স্তন জোড়া দুলতে থাকে ধীরে ধীরে। ছোট হাঁটু পর্যন্ত জিন্স প্যান্ট নয়নার কোমরের নীচ থেকে চেপে বসা। দুই পুরুষ্টু ঊরু যুগল দেখে দানার লোভ লাগে। মানস চক্ষে নয়নাকে উলঙ্গ করে নেয়, অবশ্য বিকিনি পরা ছবি অনেকের চোখে আঁকা।
বাবুচকে পৌঁছাতে ওদের প্রায় ন’টা বেজে যায়। বাবুচকে পৌঁছানর আগেই দানা নয়নাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়। উঠে বসে আড়ামোড়া ভেঙ্গে একবার ঘড়ির দিকে দেখে। আড়ামোড়া ভাঙ্গার ফলে শার্টের বোতাম গুলো ছিঁড়ে যাবার পর্যায় চলে আসে, ভারী দুই স্তনের ওপরে শার্টের কাপড় টানটান হয়ে স্তনের আকার ফুটিয়ে তোলে। দুই চোখে ঘুমের আবেশ, মাথার চুল একটু উস্কখুস্ক, ভারী মিষ্টি দেখায় নয়নাকে। ঠিক তখনি একটা ফোন আসে নয়নার কাছে, আবার সেই ফোনে কথা বলতে শুরু করে দেয়। কিছু পরে একটা গাড়ি ওদের গাড়ির সামনে এসে দাঁড়াতেই নয়না দানাকে গাড়ি দাঁড় করাতে বলে। দ্বিতীয় গাড়ি থেকে একটা মেয়ে নেমে এসে ওদের গাড়িতে বসে পরে। ওই মেয়েটার সাথে নয়না দানার পরিচয় করিয়ে দেয়, নয়নার সেক্রেটারি, সুমিতা সাহা। সুমিতার ত্বক যদি ফর্সা হত, তাহলে নয়নার চেয়েও সুন্দরী দেখাত। সুমিতা একটু গোলগাল, মেদুর গঠন, তবে চোখ নাক খুব তীক্ষ্ণ। দানা সামনের গাড়িকে অনুসরন করে। নয়না সুমিতার সাথে কথাবার্তা বলে, কখন কোন শট, রাতের কি প্রোগ্রাম, টাকা পয়সা ঠিক ভাবে এসেছে কি না।
গাড়ি, সাইটে এসে দাঁড় করাতেই বেশ কিছু লোক ওদের গাড়ি ঘিরে ধরে, ম্যাডাম ম্যাডাম বলে তিতিবিরক্ত করে তোলে নয়নাকে। একজন এসে জানিয়ে দেয়, অভিনেতা তাপস তখন পর্যন্ত এসেই পৌঁছায়নি। নয়না আক্ষেপের সুরে সেই লোকটাকে বলে, দেরি করলে এর পর থেকে যেন আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। পাশেই একটা বড় বাসের মতন গাড়ি দাঁড় করানো। গাড়ির ডিকি খুলে একজন ছেলে নয়নার ব্যাগ হাতে তুলে নেয়। নয়না গাড়ি থেকে নেমে, সুমিতাকে নিয়ে সোজা ভ্যানিটি ভ্যানে ঢুকে পড়ে। পারকিংয়ের জায়গায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে শুটিংয়ের ব্যাবস্থা দেখে। এর আগে কখন শুটিং দেখার সুযোগ হয়নি ওর। চারপাশে অনেক লোকজন, সবাই সিনেমার লোক। নদীর পাড়ে একটা রেল লাইন পুঁতে তার ওপরে ক্যামেরা বসিয়ে রাখা। নদী থেকে ঠাণ্ডা কনকনে হাওয়া বয়ে আসছে, বেশ কয়েকজন জ্যাকেট সোয়েটার গায়ে চড়িয়ে নিয়েছে। কিছু পরেই অভিনেতা তাপসের আবির্ভাব হয়, সঙ্গে সঙ্গে লোকজন অভিনেতার তদারকি করতে ব্যাস্ত হয়ে ওঠে। দানা একটা সিগারেট জ্বালিয়ে ঘুরতে ঘুরতে শুটিঙের জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়। বেশ কিছুপরে, শুটিং শুরু হয়। নয়না পোশাক বদলে একটা খুব সাধারন দেখতে সালোয়ার কামিজ পরে নিয়েছে। মেকআপের জন্য চোখে মুখে ঘুমের ভাব আর নেই, ভুরু আঁকা, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক, মাথার চুল পেছনে একটা এলো খপায় বাঁধা। ভোরের সিন, সকাল বেলা প্রেমিক প্রেমিকা নদীর পাড়ে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলতে বলতে এগিয়ে আসে। সামনের ক্যামেরা ম্যান, রেলের ওপরে চেয়ারে বসে ওদের সামনে থেকে শুটিং করে। দুইপাশে দুই জন লোক, মাঝে মাঝে প্রমোটিং করছে, একজন আবার এসে দেখিয়ে দিয়ে গেল কেমন ভাবে সিন করতে হবে। দানার কাছে এইসব নতুন, অনেকদিনের ইচ্ছে কি ভাবে এই শুটিং হয় সেটা দেখার। কোনবার তাপসের ভুল হয়ে যায়, কোন বার নয়নার ভুল হয়ে যায়, এই ভাবে শুটিং করতে করতে বেশ বেলা গড়িয়ে যায়। দানা ওইখানে বাকিদের সাথে প্রাতরাশ সেরে ফেলে। এর মাঝে সুমিতা এসে একবার ওকে দেখে যায় আর বলে যায়, কিছুক্ষণের মধ্যেই ওদের শুটিং শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু ম্যাড্যাম পরে বাড়ি যাবেন। দানা মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, ওর অপেক্ষা করা ছাড়া কোন কাজ নেই।
গতকাল মহুয়াকে ফোন করা হয়নি, হাতে প্রচুর ফাঁকা সময়। একবার ভাবে মহুয়াকে ফোন করবে আর ঠিক তখনি মহুয়ার ফোন আসে, "কি হল, নয়নার গাড়ি চালানো শুরু করে দিয়েছ?"
দানা উত্তর দেয়, "হ্যাঁ।"
মহুয়া ওইপাশ থেকে জিজ্ঞেস করে, "বিকেলে কি বাড়ি আসতে পারবে?"
দানা জানে না ওর ছুটি কখন হবে তাই মহুয়াকে জানায়, "জানি না, এই অভিনেতা অভিনেত্রীদের সময়ের কাজের কোন ঠিক ঠিকানা নেই, কখন ছুটি কখন ছুটি নয় সেটা বোঝা মুশকিল।"
মহুয়া ম্লান হেসে বলে, "আমাকে পাশ কাটানোর জন্য আসতে চাও না সেটা বলতে ক্ষতি কি।"
নদীর থেকে বয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাসে আর মহুয়ার এহেন বাক্যে দানার বুক হু হু করে ওঠে। মহুয়াকে এড়িয়ে চলাই উচিত, যে নারীর সাথে মিলন হওয়া কখন সম্ভব নয় সেই নারীর কাছে না যাওয়া ভালো, কিন্তু তাতে কি আর ওদের হৃদয় মানে। সেই ডাকে ওকে যে সাড়া দিতেই হয়। মহুয়ার বাড়ি থেকে ফেরার পথে ওর ম্লান হাসি আর ছলছল চোখ প্রতিবার ওকে বড় ব্যাথা দেয়।
দানা ওর মন রক্ষার্থে বলে, "না না, সত্যি বলছি। কাজের ঠিক নেই, তবে সময় হলেই আসব।"
মহুয়া মনমরা হয়ে বলে, "আচ্ছা ঠিক আছে, সময় পেলে দেখা করে যেও।" বলে ফোন রেখে দেয়।
দানা গাড়িতে বসে সিগারেটের পর সিগারেট জ্বালিয়ে শেষ করে দেয়। শুটিং শেষ হতে হতে দুপুর হয়ে যায়। শুটিং শেষে অভিনেতা তাপস একটা বড় ছাতার নিচে বেশ কয়েকজনের সাথে বসে গল্প মেতে ওঠে। অদুরে অন্য একটা ছাতার নিচে নয়না, সুমিতা আরেক জন বসে কিছু কথাবার্তায় ব্যাস্ত। বেশ কিছু পরে সুমিতা ওকে এসে জানায় যে নয়না এইবারে বাড়িতে ফিরবে। নয়না আবার ভ্যানিটি ভ্যানে ঢুকে পোশাক বদলে সুমিতার সাথে গাড়িতে চড়ে বসে। গাড়িতে বসতেই পেছনের সিটে এলিয়ে পড়ে নয়না। পাশে বসে সুমিতা, দানাকে সোজা বাড়িতে নিয়ে যেতে বলে।
পথে যেতে যেতে দানা, সুমিতা আর নয়নার কথাবার্তা শুনতে পায়।
নয়না, সুমিতাকে জিজ্ঞেস করে, "আজরাতে কার সাথে অ্যাপয়েনমেন্ট রেখেছিস?"
সুমিতা ফোনে কিছু একটা দেখে বলে, "বিদেশী পার্টি, গগন সান্যালের ক্লায়েন্ট, মিস্টার ব্রুস হিডেলস্টোন। রাত দশটা নাগাদ হোটেল কাজিরঙ্গা ইন্টারন্যাশানাল পৌঁছে যাবি, বুঝলি। মিস্টার হিডেলস্টোন কফি শপে তোর অপেক্ষা করবে।"
নয়না মৃদু মাথা ঝাঁকিয়ে ম্লান হেসে বলে, "পুরো পেমেন্ট পেয়ে গেছিস?"
সুমিতা উত্তরে বলে, "হ্যাঁ রে, এই একটু আগেই পুরো পেমেন্ট এসে গেছে।"
নয়না কিছুক্ষণ থেমে সুমিতাকে জিজ্ঞেস করে, "ওই মডেলিং প্রোজেক্টের ব্যাপারে কি সমুদ্রর সাথে কোন কথা হয়েছে?"
সুমিতা হেসে বলে, "হ্যাঁ হ্যাঁ, ওই শাড়ির অ্যাডের জন্য কোম্পানি মাথা খেয়ে ফেলছে।"
নয়না হেসে বলে, "ভালো ভালো, এই মাসে তাহলে ঠিকঠাক এসে যাবে কি বল।"
সুমিতা আরও একবার ফোনের মধ্যে কিছু একটা দেখে মিচকি হেসে বলে, "হ্যাঁ হ্যাঁ এসে যাবে। শীত কাল, বুঝতেই পারছিস..... এই কুকুর গুলো বিছানা গরম করার জন্য মেয়ে চায়! বেশ কয়েকটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইতিমধ্যে হয়ে গেছে।"
নয়না বাঁকা হেসে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বলে, "একাউন্টে টাকা এলেই হল, এর পরে কোন ছবি আর হাতে নেই। দেখি কি হয়।"
একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, "এই সিনেমা লাইনে সবাই ফ্রিল্যান্সে কাজ করে, কখন হাতে অনেক কাজ, কখন একদম ফাঁকা।"
সুমিতা মাথা দুলিয়ে আক্ষেপের সুরে বলে, "সেটা সত্যি রে। যতদিন এই রূপ যৌবন আছে ততদিন ভালো ভালো রোল পাওয়া যায়, আর তারপরেই মা কাকিমার রোল।"
দানা একমনে হুহু করে গাড়ি চালাতে মন দেয়। কয়েক ঘন্টার মধ্যে শহরে ঢুকে পড়ে। সুমিতা, দানাকে একটা বড় রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেতে বলে। নয়না আর সুমিতা ওই বড় রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাওয়া সেরে ফেলে। সুমিতা আর নয়নার মাঝে শুধু মাত্র এক অভিনেত্রী আর সেক্রেটারির সম্পর্ক নয় সেটা দানা ওদের কথাবার্তায় বুঝে গেল। দানা কাছে পিঠে একটা ছোট খাবারের দোকান থেকে শুকনো পাউরুটি আর কোল্ড ড্রিঙ্কস কিনে পেট ভরিয়ে নেয়। দানা মনে মনে হেসে ফেলে, এই রেস্টুরেন্টে দুই দিন আগেই মহুয়া আর রুহির সাথে এসে ডিনার করে গেছে। পকেটে পয়সাও নেই আর নিজেকে গাড়ির চালকের মতন দেখাচ্ছে বলে আর ঢুকতে ইচ্ছে করল না। সোনারডাঙ্গা পৌঁছানর আগে সুমিতাকে ওর বাড়িতে নামিয়ে দেয়।
বাড়িতে পৌঁছাতেই কাজের মেয়ে দুটো নিচে নেমে গাড়ির ডিকি থেকে নয়নার ব্যাগ হাতে নিয়ে নেয়। দানা দুটো কাজের মেয়েকে বেশ ভালো ভাবে এই প্রথম দেখে, দুটো মেয়ের বয়স বেশ কম, একটার মনে হয় উনিশ অন্যটা এই চব্বিশ কি পঁচিশ হবে। দুইজনেই বেশ ডাগর দেখতে, বড়টাকে দেখে ঠিক কাজের মেয়ে বলে মনে হয় না। নয়নার দৌলতে ওর পোশাক আশাকের ভোল আলাদা।