12-08-2020, 08:27 PM
একটি না বলা কথা
বৌদি ,জানিনা তুমি আজ কোথায় আছ?বেঁচে আছ না মরে গেছ তা সঠিক করে কেউ বলতে পারেনা।শুধু লোক মুখে শুনেছি তুমি হারিয়ে গেছ। কোথায়, কিভাবে, কেমন করে কেউই তা বলতে পারেনা।
কেমন করেই বা বলবে ।নিউইয়র্ক এর মত এত বড় শহরে কে কার খবর রাখে। সবাই নিজেকে নিয়েই যে যার মতো ব্যস্ত।তোমাদের পরিচিত যারা ছিল তারাও তোমার সম্পর্কে কিছু বলতে পারেনা।তোমার নিরুদ্দেশ হওয়া বা তোমাকে নিয়ে কিছু ভাবাকে কেউই গুরুত্ব পুর্ণ বলে মনে করেনা।আসলে “পাষাণ” এই স্বার্থপর পৃথিবীতে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং স্বার্থ ফুরালে কেটে পড়ে। কেউ কাউকে ভালবাসেনা, মমতা দেয়না আদর করে বুকে টেনে নেয়না। বৌদি বহু দিন আগে বলা কথা গুলো আজ সত্যি বলে মনে হয়।সেদিন বিশ্বাস করতাম না , আজ করি। বৌদি সত্যি বলছি আজ করি। তোমার পরিচিত জনেরা আজ তোমার কথা মুখে আনতেও নারাজ, যেন তুমি মহা কোন পাতকি। কিন্তু ভগবান জানেন আর আমি জানি তুমি কত ভাল। যেদিন শুনলাম তুমি হারিয়ে গেছ। সেদিন দৌড়ে তোমার স্বামীর বাড়ি গেলাম সব কিছু জানার জন্য, কিন্তু গিয়ে দেখলাম তোমার ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসা না করলেই যেন তারা খুশী হয়, তাই কিছু জিজ্ঞেস না করেই ফিরে এলাম। ভাবলাম মানুষ কেমন করে এত অকৃতজ্ঞ হয়। যাদের তুমি এত ভালবাসতে আজ তারা তোমার কথা মুখে আনতেও নারাজ।তোমার আগের বলা কথা গুলো বার বার আমার কানে এসে বাজতে লাগল, “কেউ ভালবাসেনা”। আমার বুকের মধ্যে মনে হল বেদনার এক পাহাড় এসে চেপে ধরল। আমি যেন বড় কিছু হারিয়ে ফেলেছি। নিজের অবস্থা দেখে নিজেই চমকে উঠলাম। এক অপরাধ বোধ এসে চেপে ধরল। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আজ আমাকে এক চরম সত্য প্রকাশ করতেই হবে । তোমার সত্যবাদী এই আমাকে কত বড় মিথ্যার বোঝা চিরদিন বয়ে বেড়াতে হবে তা আমি নিজেই জানি না। আমি তো এত বড় মহাপুরুষ নই যে জীবনে কোন পাপ করিনি। এ সত্য প্রকাশ করলে সমাজ যদি আমাকে বাঁকা দৃষ্টিতে দেখে তাহলে তা আজ আমি পরোয়া করিনা। কিছু কলঙ্ক না হয় আমার ভালে অঙ্কিত হবে বিনিময়ে এত বড় এক সত্য প্রকাশের কারনে আমার অপরাধ বোধ কিছুটা হলেও লাঘব হবে। তাই হাতে কলম নিতে বাধ্য হলাম।
তোমার সাথে জীবনে হয়ত আর দেখা হবেনা। যদি বেঁচে থাক,আবার কোন দূর্বিপাকে আমার এ লেখা তোমার চোখে পড়ে, একটি সত্য জেনে তুমি মনকে শান্তনা দিতে পার,তাই তো এ লেখা।
বৌদি, কোন এক দৈব-দূর্বিপাকে পড়ে তোমার সাথে আমার পরিচয় । দূর্বিপাকেই বলতে হবে। সুউচ্চ পর্বত থেকে ঝর্ণাধারা যখন নিচে পতিত হয় তখন তাকে চলতে চলতে কোন এক স্থানে স্থির হওয়া না পযর্ন্ত অনেক নুড়ি,পাথর, পলি,এমন কি মূল্যবান ধাতুর সাথে পরিচিত হতে হয়। তোমার সাথে ও ঠিক তেমনি করেই আমার পরিচয়।তারপর জানা শোনা, তোমার জীবনের একান্ত কথা গুলো আমাকে বলা।
যেদিন প্রথম তোমার স্বামীর বাড়িতে তোমার সাথে আমার দেখা হয় সেদিন তোমার সৌন্দর্য দেখে বিধাতাকে আমি এ বলে প্রনাম জানাই-বিধাতা এত সৌন্দর্যও তাহলে পৃথিবীতে আছে। তুমি সম্পূর্ণ অপরিচিত এ আমার সাথে যখন নিঃসঙ্কোচে কথা বলতে শুরু করলে তখন মনে হল তুমি আমার জন্ম জন্মান্তরের চেনা। তুমি যে কত ভাল আমি সেদিন’ই টের পেয়ে ছিলাম। আমার লজ্জা ও জড়তা দেখে তুমি তো হেসেই খুন। বললে পুরুষের এত লাজ-লজ্জা থাকতে পারে তা তোমার জানা ছিলনা। হয়ত আমার এ লজ্জা ও জড়তাই তোমার জন্য কাল হল। তুমি আগে পরে কোন কিছু না ভেবেই আমাকে ভালবেসে ফেললে। কিন্তু আমি কি জানতাম তোমার মত এক বিচক্ষন মেয়ে চাল চুলোহীন এক যাযাবরকে এমনি ভাবে ভালবেসে ফেলবে? তোমার জীবনে আমি এক ক্ষত হয়ে রব।
প্রথম পরিচয়ে তুমি আমাকে আপন করে নিলে। তোমার স্বামী নিউইয়র্ক প্রবাসী। বাড়ীতে তোমার শাশুড়ী, ছোট জা, দেওর, ননদরা। তুমি, তোমার জা , দেওর, ননদরা যে ভাবে আমাকে আপন করে নিলে তা দেখে ভগবানকে আমি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললাম, ভগবান,তোমার পৃথিবীতে এখনো দয়া-মায়া,ভালবাসা আছে। তোমাকে সবর্দা আমি হাসি খুশীর মধ্যে মেতে থাকতে দেখতাম। আমার অনেক সময় মনে হত তুমি বুঝি পৃথিবীর সব চেয়ে সুখী মানূষ। কিন্তূ আমি তখনও জানতাম না হিরের মাঝেও বিষ লুকিয়ে থাকে। তোমার ভিতরেও এত দুঃখ লুকায়িত!
জানিনা ,আমার কোন গুন তোমাকে আমার প্রতি নির্ভরতা ও বিশ্বাস এনে দিয়েছিল। আস্তে আস্তে তোমার জীবনের সব কথাই আমাকে বলতে শুরু করলে। তুমি সুখী নও, প্রথম যেদিন জানলাম সেদিন আবার পৃথিবীটাকে আমার কেমন যেন মনে হল। মনে হল সবই ভুল, এ জগত সংসার সবই ভুল।
তোমার জীবন কাহিনী শুনলাম; তুমি বড় ঘরের মেয়ে ছিলে। তোমরা চার বোন কিন্তু তোমাদের কোন ভাই ছিলনা। তোমার পিতা ছিল সহজ-সরল মানুষ, ফলে যা হবার তাই হল। অংশীদাররা সবাই ঠকাল, আস্তে আস্তে তোমাদের অবস্থার পরিবর্তন হল।
বড় তিন বোনকে বড় ঘরে বিয়ে দিতে গিয়ে তোমার পিতা সর্বশান্ত হয়ে গেল। তুমি ছিলে খুব সুন্দরী। তোমাকে বিয়ে করার জন্য লন্ডন,আমেরিকা প্রবাসী ছেলেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হল, কিন্তু তোমার দূর সম্পর্কের এক জ্ঞাতি কুটুম্বের মাধ্যমেই এখানে বিয়ে হয়। তোমার স্বামী দোজবর। প্রথম বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে স্ত্রী মারা যায়। তোমাকে বিয়ের আগে শর্ত করেছিল তোমার বৃদ্ধ মা বাবার ভার তোমার স্বামী বহন করবে। তোমাকে তোমার পরিবার সহ সকলে ধরে বসল এই পাত্রে বিয়ে বসলে সবচেয়ে ভাল হবে। ছেলের মাত্র তো একটি দোষ, ছেলে দোজবর। এই সামান্য কারনে এত বড় ঘর ফিরিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।তুমি মা বাবার কথা চিন্তা করে মত দিলে। বিবাহের পর কিছু দিন ভালো ভাবেই কেটে গেল। এর পর পরই দেখলে স্বামীর পরিবারের আসল রুপ। স্বামী পরিবারের সবাই তোমার স্বামীর উপার্জনের উপর নির্ভরশীল। কেউ এতটুকু কর্ম করেনা। সবাই তোমাকে বাঁকা চোখে দেখতে লাগল। স্বামীর সাথে পর্যন্ত যেতে দিলনা, যদি তাদের বিলাসী জীবনের প্রেরিত টাকা বন্ধ হয়ে যায়। তোমার মা বাবার প্রতি তারা ফিরেও তাকাল না। ভগবান হয়ত ভালই করেন, এক সময় তোমার মা বাবা দু-জনেই মারা গেলেন। তুমি প্রতিবাদী হলে। স্বামীকে কাছে পেয়ে দুঃখ ভুলতে চাইলে, কিন্তু তোমার স্বামী পরিবার কেউ তোমাকে নিঊইয়র্ক যেতে দিলনা। তোমার স্বামীও তার মা,ভাই বোনদের কথার বাইরে এক পা’ও ফেলতে রাজি হলনা। শেষ পযর্ন্ত ভাগ্য কেই মেনে নিলে।এছাড়া যে উপায় নেই। আমাদের সমাজে মেয়েরা যে অসহায়।
এর পরের সব কিছু যে আমার নিজেরই দেখা। স্বামীর সংসারে তুমি যে কত দুঃখী যেদিন প্রত্যক্ষ দেখলাম সেদিন আমার চোখে জল চলে এল। তোমাকে দেখে কে বুঝবে তুমি অসুখী? নিজের দুঃখকে বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখতে। তোমার রূপ যৌবন তোমার জন্য কাল হল। অনেক হিংস্র লোলুপ দৃষ্টি তোমার উপর পতিত হত। সাধু সেজে অনেকে ভাব জমাবার চেষ্টা করত। এসব হিংস্র লোলুপ দৃষ্টি থেকে কত কৌশল করে যে তুমি নিজেকে রক্ষা করতে তা দেখে শ্রদ্ধায় তোমার প্রতি আমার মাথা নত হয়ে আসত। তোমার স্বামীর প্রতি আমার ঘৃনা হত। কোন স্বামী এমন ভাল স্ত্রীকে কিভাবে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে তা আমার কল্পনায় আসতনা।
কথার ছলে একদিন তোমাকে বলেছিলাম বোদি, তোমার মত মেয়েকে কেউ দূরে সরিয়ে রাখতে পারে তা কেমন করে হয়? তুমি হেসে বললে ভাই; তোমার দাদা তো দূরেই রাখে; কাছে যেতে দেয়না। আর একদিন বলেছিলাম যে পুরুষ তোমাকে ভালবাসতে পারেনা সে তো মানুষই নয়।
আমার কথা শুনে সেদিন তুমি এক দৃষ্টিতে অনেক্ষন ধরে আমার দিকে চেয়ে রইলে। আমি দেখলাম তোমার চোখ থেকে বিন্দু বিন্দু জল গড়িয়ে মাটিতে পড়ছে। আমি তোমাকে আঘাত দিয়েছি মনে করে নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলাম। তুমি কিছু না বলে উঠে গেলে। ভাবলাম এ বুঝি শেষ যাওয়া আর কখনোই আমার সাথে কথা বলবেনা। কারন তুমি যে তখন পুরুষদের হিংস্র হায়েনা ছাড়া কিছুই ভাবতেনা। আমার ধারনা ভুল প্রমানিত হল, তুমি আগের চেয়ে আমাকে আরো বেশি মমতা করতে লাগলে। তুমি আমাকে প্রায় বলতে; তোর এত লজ্জা কেনরে? এত লজ্জা নিয়ে ছেলেদের কি পৃথিবীতে চলা যায়? আমি বললাম কোথায় লজ্জা? তুমি বললে তাহলে আমাকে দেখলে তুই লজ্জায় এত জড়সড় হয়ে যাস কেন?
হঠাত একদিন বললে; তুই কি কাউকে ভালবাসিস? আমি বললাম না, তবে তোমার মত কাউকে পেলে না ভালবেসে পারতাম না। তুমি হেসে বললে - এত দূর এগিয়েছিস? তো আমাকে ভালবাসনা। আমি হেসে বললাম তোমাকে যদি ভালবাসতে পারতাম তা হলে জীবনে এই কাজটিই হবে সবচেয়ে বড় কাজ। তুমি প্রতি উত্তরে বলেছিলে আমি অতি সাধারণ, বরং তোকে যে নারী ভালবাসতে পারবে তার জীবন শুধু সার্থক নয়, শ্রেষ্ঠও। তোমার কথা শুনে সেদিন আমার নিজকে নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে হল। আমাকেও কোন নারী ভালবাসতে পারে, তা ভেবে নিজে নিজে রোমাঞ্চিত হলাম।
সেদিন ছিল বৃষ্টি, তুমি অনেক করে সাজলে। এমনি সাজ-সজ্জা অবস্থায় তোমাকে আমি প্রথম দেখলাম। কোনো নারী যে এত সুন্দর হয় তা আমার জানা ছিলনা। তুমি আমার ঘরে আসলে। আমি তোমার প্রতি এক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলাম, তুমি বললে সত্যি বলত ভাই, আমাকে কোন পুরুষ ভালবাসতে পারে? আমি বললাম নিশ্চয়।
তুমি চঞ্চল হয়ে উঠে বললে, তাহলে বল তুই আমাকে ভালবাসিস। আমি তোমার কথা শুনে প্রথমে ভাবলাম তুমি হয়ত তামশা করছো কিন্তু তোমার চোখ তা বললনা। আমি দেরী না করে বললাম; একি বলছো বৌদি ? তুমি বললে ,হ্যাঁ শুধু একটি বার বল ভালবাসিস ? আমি ভয় পেয়ে গিয়ে বললাম তা হয়না। তুমি দৃঢ় ভাবে বললে আমি যে তোকে ভালবেসে ফেলেছি। তোমার কথা যে সত্যি তোমার চোখ দেখেই সেদিন আমি বুঝেছিলাম। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। শুধু বললাম বৌদি তা হয়না , তুমি বিবাহিতা।
তুমি আমাকে আর কথা বলতে না দিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলে; বিবাহিত বলে কি আমি পচে গিয়েছি? আমার কি মন- প্রাণ বলতে কিছুই নেই, পৃথিবীতে অধিকার বলতে আমার কি কিছুই নেই? বৃষ্টি হচ্ছিল বলে তোমার কথা বাহির থেকে শোনা যাচ্ছিলনা। আমি তোমাকে বললাম, বৌদি আস্তে কথা বল,কেউ শুনবে? তুমি বললে, আস্তে কথা বলবো কেন, কেউ শুনলে জাত যাবে? তোর মত পুরুষ মানুষ গুলোই তো আমাকে লুটে পুটে খেতে চায়। অসহায় বলে যা ইচ্ছে তাই করতে চায়। আমাকে কত প্রলোভন দেখায় ? তুই তো ভবঘুরে মাত্র। আমি যখন ধৈর্য্যের পাহাড় ভেঙ্গে তোর সাথে ধরা দিলাম তখন তুই সাধু সেজে ভাল হয়ে গেলি? তাহলে আমাকে স্বপ্ন দেখালি কেন? আমি বললাম, বৌদি আমি তোমাকে স্বপ্ন দেখাইনি। আমার ঘর যে গাছ তলায়। তুমি আমার তামশা গুলোকে হয়ত সত্যি ধরে নিয়েছ। আমায় তুমি ক্ষমা কর। তখন আমাদের দু’জনার চোখের জলে একাকার।
তুমি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে। তিন দিন পযর্ন্ত অসুখের বাহনা ধরে খাবার পযর্ন্ত খেলেনা। আমি বুঝলাম তোমার চোখের সামনে আমার না থাকাটাই তোমার জন্য ভাল হবে, তাই সিদ্ধান্ত নিলাম তোমাদের কাছ থেকে চলে যাব। সিদ্ধান্ত মোতাবেক আসার সময় তুমি বললে; আমাকে তুই ক্ষমা করিস। পাগলামী করে তোকে কি বলেছি তা মনে রাখিসনা। সত্যিই তুই অনেক ভাল, বলেই ঘরের ভিতরে চলে গেলে। কিন্তু তোমার ভিতরের রক্তক্ষরণ আমি ঠিকই বুঝেছিলাম। আমি চলে এলাম। তোমার আমার এ কাহিনী তুমি আমি ও ভগবান ছাড়া আর কেউ জানলনা
বৌদি, তুমি ধরে নিয়েছিলে আমি ভালবাসাহীন নিষ্ঠুর এক পাষান মানুষ। কিন্তু বৌদি পরিস্থিতি,সমাজ, সংসারের কথা ভেবে মানুষকে যে অনেক কিছু লুকিয়ে রাখতে বাধ্য করে। তুমি বিবাহিতা, পরস্ত্রী, বয়সে আমার চেয়ে বড়। এ সমাজ যে তোমার ভালবাসা মেনে নিতো না। পবিত্র প্রেম কে পরকীয়া আখ্যায়িত করে তোমার মুখে কলঙ্কের চিহ্ন এঁকে দিত।
তবে বৌদি শুনে রাখ; চলে আসার পর তোমাকে নিয়ে অনেক ভেবেছি। বিশ্বাস কর আমি মোটেও পাষাণ ছিলাম না এবং আমিও তোমাকে অনেক ভালবাসতাম। হয়ত ঐ ভালবাসা ছিল সম্পুর্ন অন্যরকম। যা এ ভালবাসার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তোমার প্রতি আমার এ ভালবাসা চিরকাল অটুট থাকবে।
( সমাপ্ত )
বৌদি ,জানিনা তুমি আজ কোথায় আছ?বেঁচে আছ না মরে গেছ তা সঠিক করে কেউ বলতে পারেনা।শুধু লোক মুখে শুনেছি তুমি হারিয়ে গেছ। কোথায়, কিভাবে, কেমন করে কেউই তা বলতে পারেনা।
কেমন করেই বা বলবে ।নিউইয়র্ক এর মত এত বড় শহরে কে কার খবর রাখে। সবাই নিজেকে নিয়েই যে যার মতো ব্যস্ত।তোমাদের পরিচিত যারা ছিল তারাও তোমার সম্পর্কে কিছু বলতে পারেনা।তোমার নিরুদ্দেশ হওয়া বা তোমাকে নিয়ে কিছু ভাবাকে কেউই গুরুত্ব পুর্ণ বলে মনে করেনা।আসলে “পাষাণ” এই স্বার্থপর পৃথিবীতে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং স্বার্থ ফুরালে কেটে পড়ে। কেউ কাউকে ভালবাসেনা, মমতা দেয়না আদর করে বুকে টেনে নেয়না। বৌদি বহু দিন আগে বলা কথা গুলো আজ সত্যি বলে মনে হয়।সেদিন বিশ্বাস করতাম না , আজ করি। বৌদি সত্যি বলছি আজ করি। তোমার পরিচিত জনেরা আজ তোমার কথা মুখে আনতেও নারাজ, যেন তুমি মহা কোন পাতকি। কিন্তু ভগবান জানেন আর আমি জানি তুমি কত ভাল। যেদিন শুনলাম তুমি হারিয়ে গেছ। সেদিন দৌড়ে তোমার স্বামীর বাড়ি গেলাম সব কিছু জানার জন্য, কিন্তু গিয়ে দেখলাম তোমার ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসা না করলেই যেন তারা খুশী হয়, তাই কিছু জিজ্ঞেস না করেই ফিরে এলাম। ভাবলাম মানুষ কেমন করে এত অকৃতজ্ঞ হয়। যাদের তুমি এত ভালবাসতে আজ তারা তোমার কথা মুখে আনতেও নারাজ।তোমার আগের বলা কথা গুলো বার বার আমার কানে এসে বাজতে লাগল, “কেউ ভালবাসেনা”। আমার বুকের মধ্যে মনে হল বেদনার এক পাহাড় এসে চেপে ধরল। আমি যেন বড় কিছু হারিয়ে ফেলেছি। নিজের অবস্থা দেখে নিজেই চমকে উঠলাম। এক অপরাধ বোধ এসে চেপে ধরল। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আজ আমাকে এক চরম সত্য প্রকাশ করতেই হবে । তোমার সত্যবাদী এই আমাকে কত বড় মিথ্যার বোঝা চিরদিন বয়ে বেড়াতে হবে তা আমি নিজেই জানি না। আমি তো এত বড় মহাপুরুষ নই যে জীবনে কোন পাপ করিনি। এ সত্য প্রকাশ করলে সমাজ যদি আমাকে বাঁকা দৃষ্টিতে দেখে তাহলে তা আজ আমি পরোয়া করিনা। কিছু কলঙ্ক না হয় আমার ভালে অঙ্কিত হবে বিনিময়ে এত বড় এক সত্য প্রকাশের কারনে আমার অপরাধ বোধ কিছুটা হলেও লাঘব হবে। তাই হাতে কলম নিতে বাধ্য হলাম।
তোমার সাথে জীবনে হয়ত আর দেখা হবেনা। যদি বেঁচে থাক,আবার কোন দূর্বিপাকে আমার এ লেখা তোমার চোখে পড়ে, একটি সত্য জেনে তুমি মনকে শান্তনা দিতে পার,তাই তো এ লেখা।
বৌদি, কোন এক দৈব-দূর্বিপাকে পড়ে তোমার সাথে আমার পরিচয় । দূর্বিপাকেই বলতে হবে। সুউচ্চ পর্বত থেকে ঝর্ণাধারা যখন নিচে পতিত হয় তখন তাকে চলতে চলতে কোন এক স্থানে স্থির হওয়া না পযর্ন্ত অনেক নুড়ি,পাথর, পলি,এমন কি মূল্যবান ধাতুর সাথে পরিচিত হতে হয়। তোমার সাথে ও ঠিক তেমনি করেই আমার পরিচয়।তারপর জানা শোনা, তোমার জীবনের একান্ত কথা গুলো আমাকে বলা।
যেদিন প্রথম তোমার স্বামীর বাড়িতে তোমার সাথে আমার দেখা হয় সেদিন তোমার সৌন্দর্য দেখে বিধাতাকে আমি এ বলে প্রনাম জানাই-বিধাতা এত সৌন্দর্যও তাহলে পৃথিবীতে আছে। তুমি সম্পূর্ণ অপরিচিত এ আমার সাথে যখন নিঃসঙ্কোচে কথা বলতে শুরু করলে তখন মনে হল তুমি আমার জন্ম জন্মান্তরের চেনা। তুমি যে কত ভাল আমি সেদিন’ই টের পেয়ে ছিলাম। আমার লজ্জা ও জড়তা দেখে তুমি তো হেসেই খুন। বললে পুরুষের এত লাজ-লজ্জা থাকতে পারে তা তোমার জানা ছিলনা। হয়ত আমার এ লজ্জা ও জড়তাই তোমার জন্য কাল হল। তুমি আগে পরে কোন কিছু না ভেবেই আমাকে ভালবেসে ফেললে। কিন্তু আমি কি জানতাম তোমার মত এক বিচক্ষন মেয়ে চাল চুলোহীন এক যাযাবরকে এমনি ভাবে ভালবেসে ফেলবে? তোমার জীবনে আমি এক ক্ষত হয়ে রব।
প্রথম পরিচয়ে তুমি আমাকে আপন করে নিলে। তোমার স্বামী নিউইয়র্ক প্রবাসী। বাড়ীতে তোমার শাশুড়ী, ছোট জা, দেওর, ননদরা। তুমি, তোমার জা , দেওর, ননদরা যে ভাবে আমাকে আপন করে নিলে তা দেখে ভগবানকে আমি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললাম, ভগবান,তোমার পৃথিবীতে এখনো দয়া-মায়া,ভালবাসা আছে। তোমাকে সবর্দা আমি হাসি খুশীর মধ্যে মেতে থাকতে দেখতাম। আমার অনেক সময় মনে হত তুমি বুঝি পৃথিবীর সব চেয়ে সুখী মানূষ। কিন্তূ আমি তখনও জানতাম না হিরের মাঝেও বিষ লুকিয়ে থাকে। তোমার ভিতরেও এত দুঃখ লুকায়িত!
জানিনা ,আমার কোন গুন তোমাকে আমার প্রতি নির্ভরতা ও বিশ্বাস এনে দিয়েছিল। আস্তে আস্তে তোমার জীবনের সব কথাই আমাকে বলতে শুরু করলে। তুমি সুখী নও, প্রথম যেদিন জানলাম সেদিন আবার পৃথিবীটাকে আমার কেমন যেন মনে হল। মনে হল সবই ভুল, এ জগত সংসার সবই ভুল।
তোমার জীবন কাহিনী শুনলাম; তুমি বড় ঘরের মেয়ে ছিলে। তোমরা চার বোন কিন্তু তোমাদের কোন ভাই ছিলনা। তোমার পিতা ছিল সহজ-সরল মানুষ, ফলে যা হবার তাই হল। অংশীদাররা সবাই ঠকাল, আস্তে আস্তে তোমাদের অবস্থার পরিবর্তন হল।
বড় তিন বোনকে বড় ঘরে বিয়ে দিতে গিয়ে তোমার পিতা সর্বশান্ত হয়ে গেল। তুমি ছিলে খুব সুন্দরী। তোমাকে বিয়ে করার জন্য লন্ডন,আমেরিকা প্রবাসী ছেলেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হল, কিন্তু তোমার দূর সম্পর্কের এক জ্ঞাতি কুটুম্বের মাধ্যমেই এখানে বিয়ে হয়। তোমার স্বামী দোজবর। প্রথম বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে স্ত্রী মারা যায়। তোমাকে বিয়ের আগে শর্ত করেছিল তোমার বৃদ্ধ মা বাবার ভার তোমার স্বামী বহন করবে। তোমাকে তোমার পরিবার সহ সকলে ধরে বসল এই পাত্রে বিয়ে বসলে সবচেয়ে ভাল হবে। ছেলের মাত্র তো একটি দোষ, ছেলে দোজবর। এই সামান্য কারনে এত বড় ঘর ফিরিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।তুমি মা বাবার কথা চিন্তা করে মত দিলে। বিবাহের পর কিছু দিন ভালো ভাবেই কেটে গেল। এর পর পরই দেখলে স্বামীর পরিবারের আসল রুপ। স্বামী পরিবারের সবাই তোমার স্বামীর উপার্জনের উপর নির্ভরশীল। কেউ এতটুকু কর্ম করেনা। সবাই তোমাকে বাঁকা চোখে দেখতে লাগল। স্বামীর সাথে পর্যন্ত যেতে দিলনা, যদি তাদের বিলাসী জীবনের প্রেরিত টাকা বন্ধ হয়ে যায়। তোমার মা বাবার প্রতি তারা ফিরেও তাকাল না। ভগবান হয়ত ভালই করেন, এক সময় তোমার মা বাবা দু-জনেই মারা গেলেন। তুমি প্রতিবাদী হলে। স্বামীকে কাছে পেয়ে দুঃখ ভুলতে চাইলে, কিন্তু তোমার স্বামী পরিবার কেউ তোমাকে নিঊইয়র্ক যেতে দিলনা। তোমার স্বামীও তার মা,ভাই বোনদের কথার বাইরে এক পা’ও ফেলতে রাজি হলনা। শেষ পযর্ন্ত ভাগ্য কেই মেনে নিলে।এছাড়া যে উপায় নেই। আমাদের সমাজে মেয়েরা যে অসহায়।
এর পরের সব কিছু যে আমার নিজেরই দেখা। স্বামীর সংসারে তুমি যে কত দুঃখী যেদিন প্রত্যক্ষ দেখলাম সেদিন আমার চোখে জল চলে এল। তোমাকে দেখে কে বুঝবে তুমি অসুখী? নিজের দুঃখকে বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখতে। তোমার রূপ যৌবন তোমার জন্য কাল হল। অনেক হিংস্র লোলুপ দৃষ্টি তোমার উপর পতিত হত। সাধু সেজে অনেকে ভাব জমাবার চেষ্টা করত। এসব হিংস্র লোলুপ দৃষ্টি থেকে কত কৌশল করে যে তুমি নিজেকে রক্ষা করতে তা দেখে শ্রদ্ধায় তোমার প্রতি আমার মাথা নত হয়ে আসত। তোমার স্বামীর প্রতি আমার ঘৃনা হত। কোন স্বামী এমন ভাল স্ত্রীকে কিভাবে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে তা আমার কল্পনায় আসতনা।
কথার ছলে একদিন তোমাকে বলেছিলাম বোদি, তোমার মত মেয়েকে কেউ দূরে সরিয়ে রাখতে পারে তা কেমন করে হয়? তুমি হেসে বললে ভাই; তোমার দাদা তো দূরেই রাখে; কাছে যেতে দেয়না। আর একদিন বলেছিলাম যে পুরুষ তোমাকে ভালবাসতে পারেনা সে তো মানুষই নয়।
আমার কথা শুনে সেদিন তুমি এক দৃষ্টিতে অনেক্ষন ধরে আমার দিকে চেয়ে রইলে। আমি দেখলাম তোমার চোখ থেকে বিন্দু বিন্দু জল গড়িয়ে মাটিতে পড়ছে। আমি তোমাকে আঘাত দিয়েছি মনে করে নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলাম। তুমি কিছু না বলে উঠে গেলে। ভাবলাম এ বুঝি শেষ যাওয়া আর কখনোই আমার সাথে কথা বলবেনা। কারন তুমি যে তখন পুরুষদের হিংস্র হায়েনা ছাড়া কিছুই ভাবতেনা। আমার ধারনা ভুল প্রমানিত হল, তুমি আগের চেয়ে আমাকে আরো বেশি মমতা করতে লাগলে। তুমি আমাকে প্রায় বলতে; তোর এত লজ্জা কেনরে? এত লজ্জা নিয়ে ছেলেদের কি পৃথিবীতে চলা যায়? আমি বললাম কোথায় লজ্জা? তুমি বললে তাহলে আমাকে দেখলে তুই লজ্জায় এত জড়সড় হয়ে যাস কেন?
হঠাত একদিন বললে; তুই কি কাউকে ভালবাসিস? আমি বললাম না, তবে তোমার মত কাউকে পেলে না ভালবেসে পারতাম না। তুমি হেসে বললে - এত দূর এগিয়েছিস? তো আমাকে ভালবাসনা। আমি হেসে বললাম তোমাকে যদি ভালবাসতে পারতাম তা হলে জীবনে এই কাজটিই হবে সবচেয়ে বড় কাজ। তুমি প্রতি উত্তরে বলেছিলে আমি অতি সাধারণ, বরং তোকে যে নারী ভালবাসতে পারবে তার জীবন শুধু সার্থক নয়, শ্রেষ্ঠও। তোমার কথা শুনে সেদিন আমার নিজকে নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে হল। আমাকেও কোন নারী ভালবাসতে পারে, তা ভেবে নিজে নিজে রোমাঞ্চিত হলাম।
সেদিন ছিল বৃষ্টি, তুমি অনেক করে সাজলে। এমনি সাজ-সজ্জা অবস্থায় তোমাকে আমি প্রথম দেখলাম। কোনো নারী যে এত সুন্দর হয় তা আমার জানা ছিলনা। তুমি আমার ঘরে আসলে। আমি তোমার প্রতি এক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলাম, তুমি বললে সত্যি বলত ভাই, আমাকে কোন পুরুষ ভালবাসতে পারে? আমি বললাম নিশ্চয়।
তুমি চঞ্চল হয়ে উঠে বললে, তাহলে বল তুই আমাকে ভালবাসিস। আমি তোমার কথা শুনে প্রথমে ভাবলাম তুমি হয়ত তামশা করছো কিন্তু তোমার চোখ তা বললনা। আমি দেরী না করে বললাম; একি বলছো বৌদি ? তুমি বললে ,হ্যাঁ শুধু একটি বার বল ভালবাসিস ? আমি ভয় পেয়ে গিয়ে বললাম তা হয়না। তুমি দৃঢ় ভাবে বললে আমি যে তোকে ভালবেসে ফেলেছি। তোমার কথা যে সত্যি তোমার চোখ দেখেই সেদিন আমি বুঝেছিলাম। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। শুধু বললাম বৌদি তা হয়না , তুমি বিবাহিতা।
তুমি আমাকে আর কথা বলতে না দিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলে; বিবাহিত বলে কি আমি পচে গিয়েছি? আমার কি মন- প্রাণ বলতে কিছুই নেই, পৃথিবীতে অধিকার বলতে আমার কি কিছুই নেই? বৃষ্টি হচ্ছিল বলে তোমার কথা বাহির থেকে শোনা যাচ্ছিলনা। আমি তোমাকে বললাম, বৌদি আস্তে কথা বল,কেউ শুনবে? তুমি বললে, আস্তে কথা বলবো কেন, কেউ শুনলে জাত যাবে? তোর মত পুরুষ মানুষ গুলোই তো আমাকে লুটে পুটে খেতে চায়। অসহায় বলে যা ইচ্ছে তাই করতে চায়। আমাকে কত প্রলোভন দেখায় ? তুই তো ভবঘুরে মাত্র। আমি যখন ধৈর্য্যের পাহাড় ভেঙ্গে তোর সাথে ধরা দিলাম তখন তুই সাধু সেজে ভাল হয়ে গেলি? তাহলে আমাকে স্বপ্ন দেখালি কেন? আমি বললাম, বৌদি আমি তোমাকে স্বপ্ন দেখাইনি। আমার ঘর যে গাছ তলায়। তুমি আমার তামশা গুলোকে হয়ত সত্যি ধরে নিয়েছ। আমায় তুমি ক্ষমা কর। তখন আমাদের দু’জনার চোখের জলে একাকার।
তুমি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে। তিন দিন পযর্ন্ত অসুখের বাহনা ধরে খাবার পযর্ন্ত খেলেনা। আমি বুঝলাম তোমার চোখের সামনে আমার না থাকাটাই তোমার জন্য ভাল হবে, তাই সিদ্ধান্ত নিলাম তোমাদের কাছ থেকে চলে যাব। সিদ্ধান্ত মোতাবেক আসার সময় তুমি বললে; আমাকে তুই ক্ষমা করিস। পাগলামী করে তোকে কি বলেছি তা মনে রাখিসনা। সত্যিই তুই অনেক ভাল, বলেই ঘরের ভিতরে চলে গেলে। কিন্তু তোমার ভিতরের রক্তক্ষরণ আমি ঠিকই বুঝেছিলাম। আমি চলে এলাম। তোমার আমার এ কাহিনী তুমি আমি ও ভগবান ছাড়া আর কেউ জানলনা
বৌদি, তুমি ধরে নিয়েছিলে আমি ভালবাসাহীন নিষ্ঠুর এক পাষান মানুষ। কিন্তু বৌদি পরিস্থিতি,সমাজ, সংসারের কথা ভেবে মানুষকে যে অনেক কিছু লুকিয়ে রাখতে বাধ্য করে। তুমি বিবাহিতা, পরস্ত্রী, বয়সে আমার চেয়ে বড়। এ সমাজ যে তোমার ভালবাসা মেনে নিতো না। পবিত্র প্রেম কে পরকীয়া আখ্যায়িত করে তোমার মুখে কলঙ্কের চিহ্ন এঁকে দিত।
তবে বৌদি শুনে রাখ; চলে আসার পর তোমাকে নিয়ে অনেক ভেবেছি। বিশ্বাস কর আমি মোটেও পাষাণ ছিলাম না এবং আমিও তোমাকে অনেক ভালবাসতাম। হয়ত ঐ ভালবাসা ছিল সম্পুর্ন অন্যরকম। যা এ ভালবাসার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তোমার প্রতি আমার এ ভালবাসা চিরকাল অটুট থাকবে।
( সমাপ্ত )