12-08-2020, 01:53 PM
(This post was last modified: 05-02-2021, 03:01 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ফান্দে পড়িয়া বগা
তদন্তের খবর এদিক-ওদিক হতে যতটা পেয়েছে তাতে সঙ্ঘমিত্রার বুঝতে বাকী থাকে না চাকরি ফিরে পাওয়া দূর শেষে জেল না খাটতে হয়।একবার ভাবে কালুয়াদের কথা সে জানিয়ে দেবে কিনা?পরমুহূর্তে খেয়াল হয় তাতে কালুয়ারারা ধরা পড়লেও সে বাচবে না।সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে একদিন মোবাইলের নম্বর টিপে কানে লাগালো।রিং হচ্ছে ভাবছে কেটে দেবে কিনা?এমন সময় ওপাশ হতে শোনা গেল,হ্যালো?
দুম করে বলে ফেলল,আপনি সিপিকে খোজ করছেন?
--আপনি কে বলছেন?আমার নম্বর কোথায় পেলেন?
--আমাকে চিনবেন না।সিপির এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট চান?
--রাবিশ।
--হ্যালো-হ্যালো--হ্যালো।ফোন কেটে দিয়েছে।
সঙ্ঘমিত্রা ফোন অফ করে বুঝতে পারে আর কোনো আশা নেই।তাছাড়া রাজী হলেও সুকুকে পাবে কোথায়।আর চেপে রাখা ঠিক হবে না পরিমলকে সব খুলে বলা দরকার।নিজেকে ভীষণ নিঃসঙ্গ মনে হয়।সুকুর সঙ্গে দেখা করার উপায় নেই পাড়ায় থাকে না। মনামী তার সিনিয়ার অফিসার সারাক্ষন আগলে আগলে রাখে।
বাড়ি ফিরে দেখল শালা বিধবা মাগীটা বারান্দায় দাঁড়িয়ে তাকে দেখছে।এরা যদি জানতে পারে এই পাড়ায় বাস করা মুষ্কিল হয়ে যাবে। যারা তাকে ভয় পেতো তাদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকতে হবে।
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর শুয়ে শুয়ে ভাবছে।পরিমল জিজ্ঞেস করল,তোমার শরীর খারাপ?
--কেন?
--অর্ধেক খেয়েই উঠে পড়লে?
--খেতে ইচ্ছে করল না।তুমি করবে?
--আজ থাক।
পরিমলের চোদার গরজ নেই।তারও তেমন ইচ্ছে নেই।এক সময় বলল,তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
পরিমল পাশ ফিরে অন্ধকারে বউয়ের দিকে তাকায়।
--আচ্ছা মনে কর তুমি একদিন জানতে পারলে তোমার বউ ঘুষ খায় তোমার খারাপ লাগবে না?
--খারাপ লাগবে কেন?পরিমল হেসে বলল।
--সত্যি তোমার খারাপ লাগবে না?
--সত্যি-মিথ্যের কি আছে।সবাই জানে পুলিশ ঘুষ খায়।
--আমি ঘুষ খাই তুমি জানতে?
--রাত হল ঘুমাও তো।যত আজেবাজে কথা।
ইন্সপেক্টার ঘোষ ঘুষ খেতো না তাই তাকে অকালে চলে যেতে হল।মনামীও ওর স্বামীর মত হয়েছে।সুকুকে পেয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে।কিছুদিন আগে স্বামী মারা গেছে দেখলে কে বলবে। ওর মাকেও নিয়ে গেছে।ওদের বাড়িতে এখন কেউ থাকে না।সুকুকে আমি নিয়ে না গেলে কোথায় পেতিস?
ঘুম ভাঙ্গতে দেখল পাশে পরিমল নেই।কোথায় গেল এত সকালে,আজ অফিস নেই নাকি?
পরিমল চা নিয়ে ঢুকে বলল,আজ আমার হাতে বানানো চা খাও।বিস্কিট দেব?
--ঠিক আছে।আজ অফিস নেই?
--কেন থাকবে না।
পরিমল তার জন্য চা করে নিয়ে এসেছে ভাল লাগে।একটা চিন্তা তাকে স্বস্তি দিচ্ছে না।চা শেষ করে চেঞ্জ করে রান্না ঘরে ঢুকল।পরিমল কাগজ নিয়ে বসেছে।
মনামীকে বেরোতে হবে তাই একটু তাড়াতাড়ি খেতে বসতে হয় শুকদেবকে।সুপ্রভা বলেছিলেন,বউমা আমি তো আছি।মনামী শুনবে না দুজনে একসঙ্গে খেতে বসবে।জিপে করে বাসস্ট্যাণ্ডে অবধি পৌছে দেয়।কোনোদিন ইউনিভার্সিটি অবধি নিয়ে যায়নি।সুকুর ভাল লাগে মনামী ক্ষমতা অপব্যহার করে না।মনামী আড়চোখে লক্ষ্য করে,কেমন নিরীহ দেখতে লাগছে।কাল রাতের কথা ভেবে মনে মনে হাসে।যেন সমুদ্র আছড়ে পড়ছে বেলাভূমিতে।
--কি হল একা একা পাগলের মত হাসছো?
--কিছু না এমনি।
--বুঝেছি আমাকে বলা যাবে না।
--একটা কথা মনে হল তাই।
--খুব হাসির কথা?
--রাগ করবে না বলো।
--হাসির কথায় রাগ করব কেন?
মনামী চেয়ার টেনে দেবের কাছ ঘেষে বসল।সুপ্রভা জিজ্ঞেস করলেন,বউমা আর কিছু দেব?
--না মা আপনি বসে পড়ুন।
সুপ্রভা টেবিল চেয়ারে বসেন না রান্না ঘরে মাটিতে বসে খান।
শাশুড়ী মা চলে যেতে মনামী নীচু গলায় জিজ্ঞেস করে,তুমি যখন করো তখন কি এরকম ভাবো ওকে একেবারে শেষ করে দিই?
শুকদেব লজ্জায় মাথা নীচু করে খেতে থাকে।মনামী জিজ্ঞেস করল,রাগ করলে?
--একেবারে উলটো।
--মানে?
--আমি নিজের কথা ভাবিনা।আমার একমাত্র উদ্দেশ্য থাকে তোমাকে আনন্দ দেওয়া,তুমি আনন্দ পেলেই আমার আনন্দ।
--মিত্রাদির বেলায়ও তাই?
--সে কথা আমি বলেছি?শুকদেবের গলায় উষ্মা।
--স্যরি--স্যরি।
পরিমল অফিস বেরিয়ে গেল।সঙ্ঘমিত্রা স্নান করে খেতে বসার উদ্যোগ করছে।মোবাইল বেজে উঠল।আননোন নম্বর কে হতে পারে?সুইচ টিপে কানে লাগিয়ে হ্যালো বলতেই শোনা গেল,আপনি সিপিকে চেনেন?
--কে বলছেন?
--আমি জয়ন্তী।
ঠোটে ঠোট চেপে কয়েক মুহূর্ত ভাবে তারপর জিজ্ঞেস করল,আমার নম্বর কোথায় পেলেন?
--কাল আপনি ফোন করেছিলেন?
--আপনাকে আমি ফোন করেছিলাম?
--না না আমার বান্ধবীকে।
মিসেস রঙ্গরাজন মনে পড়ল।এও কি সিপির ক্লায়েণ্ট?
--আপনার বান্ধবীকে ফোন করতে বলবেন।
--শুনুন ফোন রাখবেন না।আপনি বলেছিলেন সিপির এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট করিয়ে দেবেন।
--বললাম তো ওকেই ফোন করতে বলবেন।সঙঘমিত্রা ফোন কেটে দিল।
সঙ্ঘমিত্রা খেতে বসল।জয়ন্তীটা আবার কে?এর পিছনে রঙ্গরাজন নেইতো?ঘোষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের খবর সে জানতো কিন্তু ভয়ে কাউকে বলেনি।প্রত্যক্ষভাবে খুনের সঙ্গে তার যোগ নেই কথাটা বুঝিয়ে বললে রঙ্গরাজন নিশ্চয়ই বুঝবেন।মনামীর মারফত যোগাযোগ করা যেতে পারে।বিয়ের দিন যেভাবে দুজনে কথা বলছিল তাতে মনে হয়েছে মনামী যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারবে।
একটু গড়িয়ে নিয়ে বিকেলে বের হবে।সংঘমিত্রার মনে নতুন করে আরেকটা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছে নাতো?জয়ন্তী পুলিশের লোক নয়তো?সবে চোখের পাতা জড়িয়ে আসছে মোবাইল বেজে উঠল।একবার ভাবল বাজুক ধরবে না।ফোন এসেছে তাই ধরেছে এতে দোষের কি?কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো?
--মিসেস রঙ্গরাজন বলছি চিনতে পেরেছেন?
তড়াক করে উঠে বসে সঙ্ঘমিত্রা নিজেকে বোঝায় সাবধানে কথা বলতে হবে।বলল,হ্যা বলুন ম্যাম।
--সিপির এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট করিয়ে দিতে পারবেন?
বুকের কাছে ধুকপুক করে সঙ্ঘমিত্রা বলল,আমি তো আগেই বলেছিলাম।
--আপনাকে কিছু দিতে হবে?
--না ম্যাডাম তবে আমার একটা শর্ত আছে?
--বুঝলাম না লেট ইট বি ক্লিয়ার।
--স্যার মানে মি রঙ্গরাজন একটা তদন্ত করছেন সেটা আপনাকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
ও পাস থেকে কোনো কথা শোনা যায় না।কি হল কেটে দিলেন নাকি?
--ম্যাডাম আপনি আছেন--।
--মনে হচ্ছে আপনাকে চিনতে পেরেছি।আপনি একদিন আমার চেম্বারে এসেছিলেন না?
--ভেবে দেখুন।পরে জানালেও হবে।
--ফোন কাটবেন না।সিপি সিওর তো?
--যেদিন বলবেন সন্ধ্যেবেলা পৌছে যাবে।
--না না দুপুরে আসতে হবে।এক মিনিট--আচ্ছা আপনার নামটা না বললে অশোককে কি বলব?
--এস আই মিসেস জোয়ারদার।কবে সিপি যাবে এই নম্বরে জানিয়ে দেব।আপনার ওখানে?
--না না সল্ট লেক।আমি ঠিকানা টেক্স করে দিচ্ছি।
--কোনো চিন্তা করবেন না।
--শুনুন মিসেস জোয়ারদার আমরা কিন্তু সিপিকে চিনি উল্টোপাল্টা কিছু করার চেষ্টা করবেন না।
--নিশ্চিন্ত থাকুন অরিজিন্যাল সিপিই যাবে।
--থাঙ্ক ইউ।দেখবেন একটু তাড়াতাড়ি হলে ভাল হয়।
ফোন কেটে দিয়ে বড় করে শ্বাস ফেলে সঙ্ঘমিত্রা।গুদ মারানি সিপির গাদন খাবার জন্য অস্থির। কিন্তু সুকুকে কিভাবে ম্যানেজ করবে?মনামীর কড়া নজর সর্বক্ষণ।
সুকুর সঙ্গে সেই আলাপ করিয়ে দিয়েছে মনামী অবশ্য সেকথা অস্বীকার করেনি।তার এই বিপদে মনামী এটকু করবে না? সন্ধ্যের দিকে একবার যাবে।চেষ্টা করতে দোষ কি?তার আর কি ক্ষতি হবে?
করুণা মোবাইলের বাটন টিপে ফোন করার চেষ্টা করে।যতবার চেষ্টা করছে বলছে সুইচ অফ।ছায়াদেবীর নজরে পড়তে জিজ্ঞেস করে,ঠাকু-ঝি কাকে ফোন করছো?
--ব্যাটা ফোন সুইচ অফ করে রেখেছে।
--কার কথা বলছো?
--কার কথা আবার সুকুটার খুব ডাট হয়েছে।
--ওমা তুমি শোনোনি?ওতো বিয়ে করেছে।
--তোমার যেমন কথা, ওকে কে বিয়ে করবে?
--তোমার ভাই-পো বলছিল কে এক পুলিশ ওকে বিয়ে করেছে।ওরা এ পাড়ায় থাকে না।
--কে শচীন?করুণা পাশের ফ্লাটের দিকে এক নজর দেখে বলল,তাহলে এই মাগীটা কাউকে ফাসিয়েছে।
ক্লাস নেই শুকদেব এদিক-ওদিক ঘুরতে ঘুরতে ক্যাণ্টিনে ঢুকলো।এখানে বসে কিছুটা সময় কাটানো যাবে।মানুষের জীবনের কোনো স্থিরতা নেই।জীবনে ছিলনা কোনো শৃঙ্খলা,অনশ্চিত উঞ্ছবৃত্তি করে কাটছিল দিন।মনামীর সংস্পর্শে এসে একেবারে বদলে গেল।ওর টেনাসিটি আছে চাকরি করে বাসায় ফিরে বই নিয়ে বসে যায়।অনেক কিছু শিখছে ওর কাছে।বাইরে থেকে মনে হবে চপল প্রকৃতি কিন্তু আসলে অত্যন্ত সিরিয়াস।সব কিছু গভীরভাবে বুঝতে চায়।সকালে খাবার টেবিলে আচমকা প্রশ্নে কিছুটা অবাক হয়েছিল।পরে বুঝেছে পারস্পরিক সম্পর্কটা তুচ্ছ ঘটনার মধ্যে দিয়ে চিনতে চায়।বাস্তবিক শুকদেব সর্বতোভাবে চেষ্টা করে ওকে আনন্দ দিতে। ওর কথা ভেবে অধ্যাপক হবার ভাবনা মনে মনে লালিত হয়। ঘড়ি দেখল পরের ক্লাসের সময় হয়ে এসেছে।এরপর এসসির ক্লাস।এসসি মনে হয় ওকে চিনতে পারেন নি।স্বাভাবিক অনেক দিন আগের কথা। উনি স্বামী পরিত্যক্তা শুকদেবের জানার সুযোগ হয়েছিল।এখানে এসে জেনেছে এসসির পুরো নাম সুচন্দ্রা নয় সুমনা চ্যাটার্জি।সাহিত্যের ইতিহাস পড়ান,ভালই পড়ান। মোটা ফ্রেমের চশমায় বেশ ব্যক্তিত্বশালী মনে হয়।ঐ সময় সবাইকে অন্য রকম মনে হয়।মনে মনে হাসে শুকদেব।
ক্লাসে ঢুকে চশমা খুলে পড়াতে শুরু করেন এসসি।আপনা মাংসে হরিণা বৈরী অর্থাৎ হরিণ তার মাংসের জন্য মাংসাশী প্রাণীর শিকার।হাজার বছর আগে লেখা এই কথাটা আজও প্রাসঙ্গিক।নির্জন রাস্তা দিয়ে একাকী নিশ্চিন্তে হেটে যাও কিন্তু যদি তোমার সঙ্গে অর্থ থাকে তাহলে দস্যুর শিকার হতে হবে তেমনি নারী দেহৈশ্বর্যের জন্য বার বার লালসার দ্বারা আক্রান্ত--।
মুগ্ধ হয়ে শুনছি আর মনে মনে কথাগুলো ভাবার চেষ্টা করছি।পড়াতে পড়াতে আমার উপর এসসির নজর এসে পড়ছে মনে হল।এক সময় ক্লাস শেষ হয়।এসসি যাবার আগে বললেন,২০৩ পরে আমার সঙ্গে দেখা কোরো।
সুমনা ক্লাস থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে রুমাল দিয়ে মুখ মুছলেন।চেয়ারে বসে ব্যাগ খুলে একটা নোট বই ঘাটতে থাকেন।কিছুক্ষন পর একটা নম্বর নজরে পড়তে কি যেন ভাবেন।একটু ইতস্তত করে সেই নম্বর টিপে মোবাইল কানে লাগালেন।কয়েক বছর আগের কথা এই নম্বর কি সচল আছে?রিং হচ্ছে সোজা হয়ে বসলেন।
বাজতে বাজতে থেমে গেল।টেবিলে রাখা জলের গেলাস হতে কয়েক ঢোক জল খেলেন।কি ভেবে আবার সেই নম্বর টিপলেন,রিং হচ্ছে।
--হ্যালো?নারী কণ্ঠ শোনা গেল।
সুমনার কপালে ভাঁজ পড়ে।কি ভেবে বললেন,এটা সিপির নম্বর নয়?
--হ্যা আপনি কে বলছেন?
--আমি সুচন্দ্রা সিপি চিনবে।ওকে দেওয়া যাবে।
--ও একটু বাথরুমে গেছে।
--সিপি এখানেই থাকে?
--না না এটা আমার ফ্লাট,সিপি আমার বন্ধু।
সুমনা বুঝতে পারেন নিশ্চয়ই সার্ভিস দিতে গেছে।আচ্ছা একটা কথা বলব?
--হ্যা বলুন।
--সিপির নাম কি শুকদেব?
--আমি অত জানিনা--।
সুমনা ফোন কেটে দিলেন।সিপি ওখানে আছে তাহলে তারই ভুল হয়েছে।
২০৩ আমার রোল নম্বর।আমাকে দেখা করতে বললেন কেন?ধন্দ্বে পড়ে যাই ক্লাস শেষ হতে এসসির ঘরে উকি দিয়ে বললাম।ম্যাম আসতে পারি?
উনি কিছুক্ষন অবাক হয়ে আমাকে দেখে বললেন,এসো।
--পড়াশুনা কেমন হচ্ছে?বোসো।
আমি বসলাম বুঝলাম এসব মামুলি প্রশ্ন।
--তোমার নাম তো শুকদেব?
--হ্যা ম্যাম।
--তোমার আর কোনো নাম নেই?
--শুনেছি ছোটোবেলা আমাকে দেবেশ নাম দেওয়া হয়েছিল তারপর--।এসসি হাত দিয়ে থামতে বললেন।
--আচ্ছা তুমি পড়াশুনা ছাড়া আর অন্য কোনো কাজ করোনি।
--ম্যাম আমার বাড়ীর অবস্থা তেমন ভাল নয় তাই পড়াশুনা চালাবার জন্য কিছুদিন ট্যুইশনি করতাম।
--মন দিয়ে পড়াশুনা করো।পড়াশুনা শেষ করে কি করবে ঠিক করেছো?
লাজুক হেসে বললাম,ইচ্ছে আছে অধ্যাপনা করার দেখি কি হয়।ম্যাম আপনার পড়ানো আমার খুব ভাল লাগে।
ম্যাম হেসে বললেন,পড়াতে কেমন একটা স্ববিরোধীতা টের পাই।যা বলছি তাকি বিশ্বাস করি?এক্টু আগে পড়াচ্ছিলাম আপনা মাংসে হরিণা বৈরী।নারীদেহের প্রতি পুরুষের লালসা এর ব্যতিক্রমও আছে অনেক সময় নারীই চায় তাকে কেউ অত্যাচার করুক--।
শালা লাইন অন্যদিকে টার্ণ নিচ্ছে।মনামীর কথা মনে পড়ল বললাম,ম্যাম আমি আসি?
পরিমল অফিস থেকে ফিরতে সঙ্ঘমিত্রা চা করতে যায়।মনে হয় এতক্ষণে মনামী ফিরে এসেছে।
--হঠাৎ ছুটি নিলে কেন?চা খেতে খেতে জিজ্ঞেস করল পরিমল।
--বললাম তো ছুটি জমে গেছিল।বিরক্ত হয়ে উত্তর দিল সঙ্ঘমিত্রা।শোনো আমি এখন একটু বেরবো।
--সারাদিন গেল আমি এলাম এখন বেরোবে?
--এত বক বক করো কেন?বিকেলের কাজ সকালে করা যায়?
সঙ্ঘমিত্রা প্রস্তুত হয়ে বেরিয়ে গেল।বিধবা মাগীটা দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়।অযাত্রা এর মুখ দেখলে যে কাজে বেরোবে ভাল হবে না।
তদন্তের খবর এদিক-ওদিক হতে যতটা পেয়েছে তাতে সঙ্ঘমিত্রার বুঝতে বাকী থাকে না চাকরি ফিরে পাওয়া দূর শেষে জেল না খাটতে হয়।একবার ভাবে কালুয়াদের কথা সে জানিয়ে দেবে কিনা?পরমুহূর্তে খেয়াল হয় তাতে কালুয়ারারা ধরা পড়লেও সে বাচবে না।সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে একদিন মোবাইলের নম্বর টিপে কানে লাগালো।রিং হচ্ছে ভাবছে কেটে দেবে কিনা?এমন সময় ওপাশ হতে শোনা গেল,হ্যালো?
দুম করে বলে ফেলল,আপনি সিপিকে খোজ করছেন?
--আপনি কে বলছেন?আমার নম্বর কোথায় পেলেন?
--আমাকে চিনবেন না।সিপির এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট চান?
--রাবিশ।
--হ্যালো-হ্যালো--হ্যালো।ফোন কেটে দিয়েছে।
সঙ্ঘমিত্রা ফোন অফ করে বুঝতে পারে আর কোনো আশা নেই।তাছাড়া রাজী হলেও সুকুকে পাবে কোথায়।আর চেপে রাখা ঠিক হবে না পরিমলকে সব খুলে বলা দরকার।নিজেকে ভীষণ নিঃসঙ্গ মনে হয়।সুকুর সঙ্গে দেখা করার উপায় নেই পাড়ায় থাকে না। মনামী তার সিনিয়ার অফিসার সারাক্ষন আগলে আগলে রাখে।
বাড়ি ফিরে দেখল শালা বিধবা মাগীটা বারান্দায় দাঁড়িয়ে তাকে দেখছে।এরা যদি জানতে পারে এই পাড়ায় বাস করা মুষ্কিল হয়ে যাবে। যারা তাকে ভয় পেতো তাদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকতে হবে।
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর শুয়ে শুয়ে ভাবছে।পরিমল জিজ্ঞেস করল,তোমার শরীর খারাপ?
--কেন?
--অর্ধেক খেয়েই উঠে পড়লে?
--খেতে ইচ্ছে করল না।তুমি করবে?
--আজ থাক।
পরিমলের চোদার গরজ নেই।তারও তেমন ইচ্ছে নেই।এক সময় বলল,তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
পরিমল পাশ ফিরে অন্ধকারে বউয়ের দিকে তাকায়।
--আচ্ছা মনে কর তুমি একদিন জানতে পারলে তোমার বউ ঘুষ খায় তোমার খারাপ লাগবে না?
--খারাপ লাগবে কেন?পরিমল হেসে বলল।
--সত্যি তোমার খারাপ লাগবে না?
--সত্যি-মিথ্যের কি আছে।সবাই জানে পুলিশ ঘুষ খায়।
--আমি ঘুষ খাই তুমি জানতে?
--রাত হল ঘুমাও তো।যত আজেবাজে কথা।
ইন্সপেক্টার ঘোষ ঘুষ খেতো না তাই তাকে অকালে চলে যেতে হল।মনামীও ওর স্বামীর মত হয়েছে।সুকুকে পেয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে।কিছুদিন আগে স্বামী মারা গেছে দেখলে কে বলবে। ওর মাকেও নিয়ে গেছে।ওদের বাড়িতে এখন কেউ থাকে না।সুকুকে আমি নিয়ে না গেলে কোথায় পেতিস?
ঘুম ভাঙ্গতে দেখল পাশে পরিমল নেই।কোথায় গেল এত সকালে,আজ অফিস নেই নাকি?
পরিমল চা নিয়ে ঢুকে বলল,আজ আমার হাতে বানানো চা খাও।বিস্কিট দেব?
--ঠিক আছে।আজ অফিস নেই?
--কেন থাকবে না।
পরিমল তার জন্য চা করে নিয়ে এসেছে ভাল লাগে।একটা চিন্তা তাকে স্বস্তি দিচ্ছে না।চা শেষ করে চেঞ্জ করে রান্না ঘরে ঢুকল।পরিমল কাগজ নিয়ে বসেছে।
মনামীকে বেরোতে হবে তাই একটু তাড়াতাড়ি খেতে বসতে হয় শুকদেবকে।সুপ্রভা বলেছিলেন,বউমা আমি তো আছি।মনামী শুনবে না দুজনে একসঙ্গে খেতে বসবে।জিপে করে বাসস্ট্যাণ্ডে অবধি পৌছে দেয়।কোনোদিন ইউনিভার্সিটি অবধি নিয়ে যায়নি।সুকুর ভাল লাগে মনামী ক্ষমতা অপব্যহার করে না।মনামী আড়চোখে লক্ষ্য করে,কেমন নিরীহ দেখতে লাগছে।কাল রাতের কথা ভেবে মনে মনে হাসে।যেন সমুদ্র আছড়ে পড়ছে বেলাভূমিতে।
--কি হল একা একা পাগলের মত হাসছো?
--কিছু না এমনি।
--বুঝেছি আমাকে বলা যাবে না।
--একটা কথা মনে হল তাই।
--খুব হাসির কথা?
--রাগ করবে না বলো।
--হাসির কথায় রাগ করব কেন?
মনামী চেয়ার টেনে দেবের কাছ ঘেষে বসল।সুপ্রভা জিজ্ঞেস করলেন,বউমা আর কিছু দেব?
--না মা আপনি বসে পড়ুন।
সুপ্রভা টেবিল চেয়ারে বসেন না রান্না ঘরে মাটিতে বসে খান।
শাশুড়ী মা চলে যেতে মনামী নীচু গলায় জিজ্ঞেস করে,তুমি যখন করো তখন কি এরকম ভাবো ওকে একেবারে শেষ করে দিই?
শুকদেব লজ্জায় মাথা নীচু করে খেতে থাকে।মনামী জিজ্ঞেস করল,রাগ করলে?
--একেবারে উলটো।
--মানে?
--আমি নিজের কথা ভাবিনা।আমার একমাত্র উদ্দেশ্য থাকে তোমাকে আনন্দ দেওয়া,তুমি আনন্দ পেলেই আমার আনন্দ।
--মিত্রাদির বেলায়ও তাই?
--সে কথা আমি বলেছি?শুকদেবের গলায় উষ্মা।
--স্যরি--স্যরি।
পরিমল অফিস বেরিয়ে গেল।সঙ্ঘমিত্রা স্নান করে খেতে বসার উদ্যোগ করছে।মোবাইল বেজে উঠল।আননোন নম্বর কে হতে পারে?সুইচ টিপে কানে লাগিয়ে হ্যালো বলতেই শোনা গেল,আপনি সিপিকে চেনেন?
--কে বলছেন?
--আমি জয়ন্তী।
ঠোটে ঠোট চেপে কয়েক মুহূর্ত ভাবে তারপর জিজ্ঞেস করল,আমার নম্বর কোথায় পেলেন?
--কাল আপনি ফোন করেছিলেন?
--আপনাকে আমি ফোন করেছিলাম?
--না না আমার বান্ধবীকে।
মিসেস রঙ্গরাজন মনে পড়ল।এও কি সিপির ক্লায়েণ্ট?
--আপনার বান্ধবীকে ফোন করতে বলবেন।
--শুনুন ফোন রাখবেন না।আপনি বলেছিলেন সিপির এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট করিয়ে দেবেন।
--বললাম তো ওকেই ফোন করতে বলবেন।সঙঘমিত্রা ফোন কেটে দিল।
সঙ্ঘমিত্রা খেতে বসল।জয়ন্তীটা আবার কে?এর পিছনে রঙ্গরাজন নেইতো?ঘোষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের খবর সে জানতো কিন্তু ভয়ে কাউকে বলেনি।প্রত্যক্ষভাবে খুনের সঙ্গে তার যোগ নেই কথাটা বুঝিয়ে বললে রঙ্গরাজন নিশ্চয়ই বুঝবেন।মনামীর মারফত যোগাযোগ করা যেতে পারে।বিয়ের দিন যেভাবে দুজনে কথা বলছিল তাতে মনে হয়েছে মনামী যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারবে।
একটু গড়িয়ে নিয়ে বিকেলে বের হবে।সংঘমিত্রার মনে নতুন করে আরেকটা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছে নাতো?জয়ন্তী পুলিশের লোক নয়তো?সবে চোখের পাতা জড়িয়ে আসছে মোবাইল বেজে উঠল।একবার ভাবল বাজুক ধরবে না।ফোন এসেছে তাই ধরেছে এতে দোষের কি?কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো?
--মিসেস রঙ্গরাজন বলছি চিনতে পেরেছেন?
তড়াক করে উঠে বসে সঙ্ঘমিত্রা নিজেকে বোঝায় সাবধানে কথা বলতে হবে।বলল,হ্যা বলুন ম্যাম।
--সিপির এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট করিয়ে দিতে পারবেন?
বুকের কাছে ধুকপুক করে সঙ্ঘমিত্রা বলল,আমি তো আগেই বলেছিলাম।
--আপনাকে কিছু দিতে হবে?
--না ম্যাডাম তবে আমার একটা শর্ত আছে?
--বুঝলাম না লেট ইট বি ক্লিয়ার।
--স্যার মানে মি রঙ্গরাজন একটা তদন্ত করছেন সেটা আপনাকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
ও পাস থেকে কোনো কথা শোনা যায় না।কি হল কেটে দিলেন নাকি?
--ম্যাডাম আপনি আছেন--।
--মনে হচ্ছে আপনাকে চিনতে পেরেছি।আপনি একদিন আমার চেম্বারে এসেছিলেন না?
--ভেবে দেখুন।পরে জানালেও হবে।
--ফোন কাটবেন না।সিপি সিওর তো?
--যেদিন বলবেন সন্ধ্যেবেলা পৌছে যাবে।
--না না দুপুরে আসতে হবে।এক মিনিট--আচ্ছা আপনার নামটা না বললে অশোককে কি বলব?
--এস আই মিসেস জোয়ারদার।কবে সিপি যাবে এই নম্বরে জানিয়ে দেব।আপনার ওখানে?
--না না সল্ট লেক।আমি ঠিকানা টেক্স করে দিচ্ছি।
--কোনো চিন্তা করবেন না।
--শুনুন মিসেস জোয়ারদার আমরা কিন্তু সিপিকে চিনি উল্টোপাল্টা কিছু করার চেষ্টা করবেন না।
--নিশ্চিন্ত থাকুন অরিজিন্যাল সিপিই যাবে।
--থাঙ্ক ইউ।দেখবেন একটু তাড়াতাড়ি হলে ভাল হয়।
ফোন কেটে দিয়ে বড় করে শ্বাস ফেলে সঙ্ঘমিত্রা।গুদ মারানি সিপির গাদন খাবার জন্য অস্থির। কিন্তু সুকুকে কিভাবে ম্যানেজ করবে?মনামীর কড়া নজর সর্বক্ষণ।
সুকুর সঙ্গে সেই আলাপ করিয়ে দিয়েছে মনামী অবশ্য সেকথা অস্বীকার করেনি।তার এই বিপদে মনামী এটকু করবে না? সন্ধ্যের দিকে একবার যাবে।চেষ্টা করতে দোষ কি?তার আর কি ক্ষতি হবে?
করুণা মোবাইলের বাটন টিপে ফোন করার চেষ্টা করে।যতবার চেষ্টা করছে বলছে সুইচ অফ।ছায়াদেবীর নজরে পড়তে জিজ্ঞেস করে,ঠাকু-ঝি কাকে ফোন করছো?
--ব্যাটা ফোন সুইচ অফ করে রেখেছে।
--কার কথা বলছো?
--কার কথা আবার সুকুটার খুব ডাট হয়েছে।
--ওমা তুমি শোনোনি?ওতো বিয়ে করেছে।
--তোমার যেমন কথা, ওকে কে বিয়ে করবে?
--তোমার ভাই-পো বলছিল কে এক পুলিশ ওকে বিয়ে করেছে।ওরা এ পাড়ায় থাকে না।
--কে শচীন?করুণা পাশের ফ্লাটের দিকে এক নজর দেখে বলল,তাহলে এই মাগীটা কাউকে ফাসিয়েছে।
ক্লাস নেই শুকদেব এদিক-ওদিক ঘুরতে ঘুরতে ক্যাণ্টিনে ঢুকলো।এখানে বসে কিছুটা সময় কাটানো যাবে।মানুষের জীবনের কোনো স্থিরতা নেই।জীবনে ছিলনা কোনো শৃঙ্খলা,অনশ্চিত উঞ্ছবৃত্তি করে কাটছিল দিন।মনামীর সংস্পর্শে এসে একেবারে বদলে গেল।ওর টেনাসিটি আছে চাকরি করে বাসায় ফিরে বই নিয়ে বসে যায়।অনেক কিছু শিখছে ওর কাছে।বাইরে থেকে মনে হবে চপল প্রকৃতি কিন্তু আসলে অত্যন্ত সিরিয়াস।সব কিছু গভীরভাবে বুঝতে চায়।সকালে খাবার টেবিলে আচমকা প্রশ্নে কিছুটা অবাক হয়েছিল।পরে বুঝেছে পারস্পরিক সম্পর্কটা তুচ্ছ ঘটনার মধ্যে দিয়ে চিনতে চায়।বাস্তবিক শুকদেব সর্বতোভাবে চেষ্টা করে ওকে আনন্দ দিতে। ওর কথা ভেবে অধ্যাপক হবার ভাবনা মনে মনে লালিত হয়। ঘড়ি দেখল পরের ক্লাসের সময় হয়ে এসেছে।এরপর এসসির ক্লাস।এসসি মনে হয় ওকে চিনতে পারেন নি।স্বাভাবিক অনেক দিন আগের কথা। উনি স্বামী পরিত্যক্তা শুকদেবের জানার সুযোগ হয়েছিল।এখানে এসে জেনেছে এসসির পুরো নাম সুচন্দ্রা নয় সুমনা চ্যাটার্জি।সাহিত্যের ইতিহাস পড়ান,ভালই পড়ান। মোটা ফ্রেমের চশমায় বেশ ব্যক্তিত্বশালী মনে হয়।ঐ সময় সবাইকে অন্য রকম মনে হয়।মনে মনে হাসে শুকদেব।
ক্লাসে ঢুকে চশমা খুলে পড়াতে শুরু করেন এসসি।আপনা মাংসে হরিণা বৈরী অর্থাৎ হরিণ তার মাংসের জন্য মাংসাশী প্রাণীর শিকার।হাজার বছর আগে লেখা এই কথাটা আজও প্রাসঙ্গিক।নির্জন রাস্তা দিয়ে একাকী নিশ্চিন্তে হেটে যাও কিন্তু যদি তোমার সঙ্গে অর্থ থাকে তাহলে দস্যুর শিকার হতে হবে তেমনি নারী দেহৈশ্বর্যের জন্য বার বার লালসার দ্বারা আক্রান্ত--।
মুগ্ধ হয়ে শুনছি আর মনে মনে কথাগুলো ভাবার চেষ্টা করছি।পড়াতে পড়াতে আমার উপর এসসির নজর এসে পড়ছে মনে হল।এক সময় ক্লাস শেষ হয়।এসসি যাবার আগে বললেন,২০৩ পরে আমার সঙ্গে দেখা কোরো।
সুমনা ক্লাস থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে রুমাল দিয়ে মুখ মুছলেন।চেয়ারে বসে ব্যাগ খুলে একটা নোট বই ঘাটতে থাকেন।কিছুক্ষন পর একটা নম্বর নজরে পড়তে কি যেন ভাবেন।একটু ইতস্তত করে সেই নম্বর টিপে মোবাইল কানে লাগালেন।কয়েক বছর আগের কথা এই নম্বর কি সচল আছে?রিং হচ্ছে সোজা হয়ে বসলেন।
বাজতে বাজতে থেমে গেল।টেবিলে রাখা জলের গেলাস হতে কয়েক ঢোক জল খেলেন।কি ভেবে আবার সেই নম্বর টিপলেন,রিং হচ্ছে।
--হ্যালো?নারী কণ্ঠ শোনা গেল।
সুমনার কপালে ভাঁজ পড়ে।কি ভেবে বললেন,এটা সিপির নম্বর নয়?
--হ্যা আপনি কে বলছেন?
--আমি সুচন্দ্রা সিপি চিনবে।ওকে দেওয়া যাবে।
--ও একটু বাথরুমে গেছে।
--সিপি এখানেই থাকে?
--না না এটা আমার ফ্লাট,সিপি আমার বন্ধু।
সুমনা বুঝতে পারেন নিশ্চয়ই সার্ভিস দিতে গেছে।আচ্ছা একটা কথা বলব?
--হ্যা বলুন।
--সিপির নাম কি শুকদেব?
--আমি অত জানিনা--।
সুমনা ফোন কেটে দিলেন।সিপি ওখানে আছে তাহলে তারই ভুল হয়েছে।
২০৩ আমার রোল নম্বর।আমাকে দেখা করতে বললেন কেন?ধন্দ্বে পড়ে যাই ক্লাস শেষ হতে এসসির ঘরে উকি দিয়ে বললাম।ম্যাম আসতে পারি?
উনি কিছুক্ষন অবাক হয়ে আমাকে দেখে বললেন,এসো।
--পড়াশুনা কেমন হচ্ছে?বোসো।
আমি বসলাম বুঝলাম এসব মামুলি প্রশ্ন।
--তোমার নাম তো শুকদেব?
--হ্যা ম্যাম।
--তোমার আর কোনো নাম নেই?
--শুনেছি ছোটোবেলা আমাকে দেবেশ নাম দেওয়া হয়েছিল তারপর--।এসসি হাত দিয়ে থামতে বললেন।
--আচ্ছা তুমি পড়াশুনা ছাড়া আর অন্য কোনো কাজ করোনি।
--ম্যাম আমার বাড়ীর অবস্থা তেমন ভাল নয় তাই পড়াশুনা চালাবার জন্য কিছুদিন ট্যুইশনি করতাম।
--মন দিয়ে পড়াশুনা করো।পড়াশুনা শেষ করে কি করবে ঠিক করেছো?
লাজুক হেসে বললাম,ইচ্ছে আছে অধ্যাপনা করার দেখি কি হয়।ম্যাম আপনার পড়ানো আমার খুব ভাল লাগে।
ম্যাম হেসে বললেন,পড়াতে কেমন একটা স্ববিরোধীতা টের পাই।যা বলছি তাকি বিশ্বাস করি?এক্টু আগে পড়াচ্ছিলাম আপনা মাংসে হরিণা বৈরী।নারীদেহের প্রতি পুরুষের লালসা এর ব্যতিক্রমও আছে অনেক সময় নারীই চায় তাকে কেউ অত্যাচার করুক--।
শালা লাইন অন্যদিকে টার্ণ নিচ্ছে।মনামীর কথা মনে পড়ল বললাম,ম্যাম আমি আসি?
পরিমল অফিস থেকে ফিরতে সঙ্ঘমিত্রা চা করতে যায়।মনে হয় এতক্ষণে মনামী ফিরে এসেছে।
--হঠাৎ ছুটি নিলে কেন?চা খেতে খেতে জিজ্ঞেস করল পরিমল।
--বললাম তো ছুটি জমে গেছিল।বিরক্ত হয়ে উত্তর দিল সঙ্ঘমিত্রা।শোনো আমি এখন একটু বেরবো।
--সারাদিন গেল আমি এলাম এখন বেরোবে?
--এত বক বক করো কেন?বিকেলের কাজ সকালে করা যায়?
সঙ্ঘমিত্রা প্রস্তুত হয়ে বেরিয়ে গেল।বিধবা মাগীটা দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়।অযাত্রা এর মুখ দেখলে যে কাজে বেরোবে ভাল হবে না।