10-08-2020, 12:25 PM
(This post was last modified: 05-02-2021, 02:58 PM by kumdev. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
শুভ বিবাহ
সুপ্রভা দুপুরে ঘুমান না।কোনো না কোনো কাজ খুজে বের করেন।এটা-ওটা করতে করতে বেলা গড়িয়ে যায়।বাসন গুছিয়ে উঠে দাড়াতে ফ্যাচ করে শব্দ হল।বুঝতে পারেন পরণের শাড়ীটা ফেসে গেল।শাড়ীর আর দোষ কি কম দিন ত হলনা।শাড়ীটা খুলে ঘুরিয়ে পরলেন।দরজায় কড়া নাড়া শব্দ শুনে এগিয়ে গেলেন।স্বামী মারা যাবার পর কেউ কোনো খোজ নেয়না।এখন আবার কে এল? দরজা খুলে অবাক,একজন মহিলা।বছর ত্রিশ-বত্রিশ হবে বলল,মাসীমা ভালো আছেন?
সুপ্রভা অবাক হয়ে স্মৃতি হাতড়ান আগে কখনো দেখেছেন মনে করতে পারেননা।বয়স হয়েছে সব মনেও থাকেনা।
একটা শাড়ি এগিয়ে দিয়ে বলল,তাড়াতাড়ি এটা পরে নিন।
শাড়ীটা হাতে নিয়ে দেখলেন গরদের শাড়ী,চোখ তুলে তাকাতে মহিলা হেসে বলল, ছেলের বিয়ে মা না গেলে হয়?
--ওতো বাড়ী নেই।
--সেসব আপনাকে ভাবতে হবেনা।তাড়াতাড়ি করুন সবাই আপনার জন্য বসে আছে।
ছেলেটা বিয়ের কথা বলছিল বটে কিন্তু সুপ্রভা ততটা আমল দেননি।সম্মোহিতের মতো শাড়ী পরে দরজায় তালা দিয়ে মহিলাকে অনুসরণ করে গলির মুখে গাড়ীতে উঠে বসলেন।
পরিমল অফিস হতে ফিরতে সঙ্ঘমিত্রা চা করে এগিয়ে দিল।পরিমল জিজ্ঞেস করে,ছুটী নিয়েছো তোমার কি শরীর খারাপ?
--না শরীর ঠিক আছে।অনেক ছুটি জমে গেছে তাই।
সাজগোজ দেখে দেখে বলল,তুমি কোথাও বেরচ্ছো নাকি?
-- হ্যাঁ একটা কাজ আছে,ফিরতে রাত হলে খাবার মাইক্রোওভেনে গরম করে নিও।
--তুমি?
--আমি খেয়ে আসবো।
বাইকে স্টার্ট দিয়ে ভাবলো একদিন পরিমল সব জানতে পারবে।ওকে একটু আভাস দিয়ে রাখা ভালো।বাইক বড় রাস্তায় পড়তে নজরে পড়ল সুকু মাথা নীচু করে পাড়ায় ঢূকছে।তারমানে ইউনিভার্সিটি গেছিল।ঘ্যাচ করে ঘেষে বাইকে ব্রেক কষতে চমকে দু-পা পিছিয়ে গিয়ে সুকু অবাক হয়ে বলল,আণ্টি তুমি?অফিস যাওনি?
--ওঠ।
--কেন কোথায় যাব?
--সামনের পার্কে,তোর সঙ্গে কথা আছে।
আণ্টি সাসপেণ্ড জানলেও শুকদেব না জানার ভাব করে।খুব খারাপ লাগে তার সঙ্গে কোনো খারাপ ব্যবহার করেনি।পুলিশে সবাই ঘুষ খায় আণ্টি হয়তো ধরা পড়ে গেছে।
বাসায় বেশি রাত হলে চিন্তা করবে মা।এখন সবে ছটা।সঙ্ঘমিত্রার পিছনে উঠে বসল।বাইকে স্টার্ট দিয়ে যেতে যেতে বলল,তোকে একটা কথা বলব কাউকে বলিস না।
--কারো কথা কাউকে আমি বলিনা।বিশ্বাস করো তোমার কথা কাউকে আমি বলিনি।
--সে আমি জানি বলেই তোকে বলছি।আমি অফিস যাইনি,কেন যাইনি জানিস?
--কেন?
--আমাকে চক্রান্ত করে ফাসিয়েছে।এখন ছুটীতে আছি।
--কে ফাসালো?
--পুলিশ লাইন খুব হারামী লাইন,কাউকে বিশ্বাস করা যায়না।
পার্কে ঢুকে বাইক স্ট্যাণ্ড করে ফাকা একটা বেঞ্চে বসলো।একটা ঝাল মুড়িওলাকে দেখে ডাকল।
--তোকে আটকে দিলাম,ঝাল মুড়ি খা।দু-জায়গায় ঝাল মুড়ি দাও।
বেশ কয়েকবার আণ্টিকে চুদেছে কথাও হয়েছে কিন্তু আজকের মতো আলাপ আগে হয়নি।ঝাল মুড়ী চিবোতে চিবোতে শুকদেব ভাবে,আণ্টি তাকে কেন পার্কে নিয়ে এল?
কথাটা কিভাবে পাড়বে সঙ্ঘমিত্রা মনে মনে নাড়াচাড়া করতে থাকে।আড়চোখে দেখে ব্যাটা মুড়ি চিবোচ্ছে নির্বিকার।আলো কমে এসেছে।বাতিস্তম্ভে জলে উঠেছে আলো।
--সুকু তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব,সত্যি বলবি?
সুকু ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো।
--আমাকে করে সুখ হয়নি?
সুকু ভাবে এতদিন পরে আজ একথা কেন?ঐসব কথা নিয়ে আলোচনা করতে ভালো লাগেনা।
--কিরে বললি না তো?
--কি বলবো?আর বললেই তুমি বিশ্বাস করবে?
--তুই বল আমি কিছু মনে করবো না।
--শোনো আণ্টি যখন করি অন্যকে সুখ-আনন্দ দেবার কথাই শুধু ভাবি।নিজের কথা মাথায় থাকে না।
--বুঝেছি।তাহলে আমার জন্য কিছু করতে বললে করবি?
--তুমি বলেছিলে সেদিনই শেষ আর বলবেনা।
--আগে কথাটা শোন,আমাকে করার কথা বলছিনা।প্রিয়া বলে কেউ ফোন করেছিল?
কিএকটা বলতে যাচ্ছিল তার আগেই ফোন বেজে উঠতে শুকদেব কানে দিয়ে বলল,হ্যা বলো....আচ্ছা-আচ্ছা আসছি।ফোণ কেটে বলল,এইরে বলেছিল আজ বিয়ে।একদম খেয়াল ছিলনা।আণ্টি ও খুব রেগে গেছে।তোমার সঙ্গে পরে কথা বলবো।
--দাড়া আমিও যাবো।নে ওঠ।
বাইক স্টার্ট দিল।সঙ্ঘমিত্রা বলল,তুই মনাকে এত ভয় পাস কেন?
সুকু হেসে বলল,ধুস ওকে ভয় পাবো কেন?তবে কি জানো ও আমার জন্য খুব ভাবে আমাকে সম্মান করে আমিও ওকে সম্মান করি।
সঙঘমিত্রার ঠোটে শ্লেষের হাসি বলল,ভেবেছিলাম বলব না আজ তোকে বলছি।ও বলেছিল করাবে তাই তোকে সেদিন নিয়ে গেছিলাম।
--কিন্তু সেদিন তো করায়নি।বলেছিল বিয়ের আগে ওসব নয়।দেখ আণ্টি কাণ্ডারীবিহীন নৌকার মতো ভেসে চলেছিলাম ঐ আমার বেহিসেবী জীবনকে পথ দেখিয়েছে।
--আমি কিছুই করিনি?
--তাতো বলিনি।তোমার জন্য ওকে পেয়েছি সেকথা অস্বীকার করিনা।
--এখন ও তোর সব চেয়ে আপন?
--আপন-পর বুঝিনা ওকে খুশি করার জন্য সব পারি।
ফ্লাটের নীচে বাইক থামতে শুকদেব নেমে পড়ল।মনে হচ্ছে অনেকে এসেছে।সত্যি তাহলে বিয়ে হবে।ঘরে ঢুকে দেখল কয়েকজন মহিলা পরিচিত কোনো মুখ নজরে পড়ল না।একটা সোফায় বসে রঙ্গরাজনের সঙ্গে কথা বলছে মনামী। উপরে উঠে এসপি সাহেবকে দেখে সঙ্ঘমিত্রা নিজেকে আড়ালে সরিয়ে নিল।মনামীর সঙ্গে কি কথা হচ্ছে?
মনামীর ইচ্ছে আইপিএস পরীক্ষা দেবে সেই ব্যাপারে স্যারের সঙ্গে আলাপ করছে।রঙ্গরাজন উৎসাহ দেন যতটা পারবেন সাহায্য করবেন।শুকদেব ঢুকেছে নজরে পড়তে মনামী বলল,স্যার এক মিনিট আমি আসছি।
--এত দেরী হল?তোমার কোনো দায়িত্ববোধ নেই।ওঘরে চলো।
শাড়ীতে দারুন লাগছে নিপাকে।ঘরে ঢুকে চমকে উঠল,গরদের শাড়ীতে কি সুন্দর জগদ্ধাত্রীর মতো লাগছে মাকে। মা যে এত সুন্দর মলিন পোশাকে এতদিন বুঝতে পারেনি।চোখে জল এসে গেল।সুপ্রভা এগিয়ে এসে বলল,বউমা আমাকে জোর করে সাজিয়েছে।
--মা পালাচ্ছে না।এবার এগুলো পরে এসো।মনামী এক সেট পোশাক এগিয়ে দিল।
সুপ্রভা মুখটিপে হেসে ভাবতে থাকেন,এবার ভালো মানুষের হাতে পড়েছে,বাউণ্ডূলেপনা বেরিয়ে যাবে।বয়সে একটু বড় নাহলে বউমাকে ভালোই লেগেছে।
পাশের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে প্যাকেট খুলে দেখল ধুতি পাঞ্জাবী।একা মেয়ে কখন এতসব করল?আবার মাকেও নিয়ে এসেছে।
মনামী অতিথিদের ঘরে গিয়ে সবাইকে আশ্বস্থ করে পাত্র এসে গেছে।রেজিষ্ট্রার এলেই অনুষ্ঠান শুরু হবে।সঙ্ঘমিত্রার দিকে নজর পড়তে বলল,মিত্রাদি তুমি এত দেরী করলে?
--মন তোর সঙ্গে আমার জরুরী কথা আছে।
--বিয়েটা মিটে যাক?সব শুনবো।এরা আমার অফিস কলিগ,এদের সঙ্গে আলাপ করো। ইনি সঙঘমিত্রা আমার হিতৈষি হিমানী তোরা কথা বল।
সঙঘমিত্রা দেখল আমন্ত্রিতরা সবাই মহিলা।কিন্তু কেউ শাড়ী পরেনি।
খেয়াল হয় দেবের সাড়াশব্দ নেই,কি করছে এতক্ষন ধরে?দরজা খুলে অবাক পরণে জাঙ্গিয়া খাটের উপর ধুতি পড়ে আছে।তলপেটের নীচে দৃষ্টি আটকে থাকে কয়েক মুহূর্ত,কি বিশাল!যোনীদ্বারে শিরশিরানি অনুভুত হয়।সম্বিত ফিরতে বিরক্তিতে কপালে ভাজ পড়ে মনামী বলল,এত বয়স হল ধুতিটাও পরতে শেখোনি?
--কোনো দিন পরিনি।
মনামী ধুতি নিয়ে পরাতে পরাতে বলল,যা করে বেড়াও তা কি কেউ তোমায় হাতে ধরে শিখিয়েছে?
শুকদেবকে নিয়ে রঙ্গরাজনের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল।পরস্পর কর মর্দন করে,রঙ্গরাজন বললেন,আজ আসি মিস বর্মন।
--চলুন স্যার।এত ব্যস্ততার মধ্যে আপনি এসেছেন আমি খুব খুশি।
মনামী নীচ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে এল।রেজিট্রার এসে গেছে।সই সাবুদ সারতে সারতে প্রায় নটা।তারপর প্যাকেট বিতরণ সবই পার্শেল।যে যার প্রয়োজন মতো পার্শেল চেয়ে চেয়ে নিল।এক সময় ফাকা হয়ে যায় বাড়ী। সুপ্রভাকে জিজ্ঞেস করল মনামী,মা আপনি থাকবেন?
--বাড়ী ফাকা রয়েছে আমি আজ আসি মা।
--আসি মানে আপনাকে পৌছে দেবে।দেব মা চলে যাচ্ছেন।
--আমিও আসি?শুকদেব এসে বলল।
সুপ্রভা হাসলেন বললেন,বউকে একা ফেলে চলে যাবি?তোর কবে বুদ্ধি হবে?
মনামী মনে মনে ভাবে এবার ওর মাথায় বুদ্ধি ভরে দেবে।বলে কিনা আমিও আসি।
মনামী নীচে নেমে সুপ্রভাকে গাড়ীতে তুলে দিয়ে উপরে এসে দেখল সঙঘমিত্রা যায়নি।
--হ্যাঁ বলো মিত্রাদি তুমি কি বলবে বলছিলে?
শুকদেবকে দেখে ইতস্তত করে।মনামী বলল,দেব তুমি ও ঘরে যাও।
শুকদেব কিছুটা অনুমান করতে পারে কি বলবে মিতা আণ্টি।পাশের বেড রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ল।মিত্রাদির মুখ দেখে বুঝতে অসুবিধে হয়না সিরিয়াস কিছু ব্যাপার।মিত্রাদির সামনা সামনি সোফায় বসল।একটাই আশঙ্কা এমন শুভ দিনে কোনো অমঙ্গল সূচক কিছু বলবেনা তো?দেবের ব্যাপারে কিছু কি?দেবের ব্যাপারে কিছু বললেই ঘর থেকে বের করে দেবে।দেব সম্পর্কে নতুন কিছুই জানার নেইও।আর জানতে হলে দেবের কাছ থেকেই জানবে।
সুপ্রভা দুপুরে ঘুমান না।কোনো না কোনো কাজ খুজে বের করেন।এটা-ওটা করতে করতে বেলা গড়িয়ে যায়।বাসন গুছিয়ে উঠে দাড়াতে ফ্যাচ করে শব্দ হল।বুঝতে পারেন পরণের শাড়ীটা ফেসে গেল।শাড়ীর আর দোষ কি কম দিন ত হলনা।শাড়ীটা খুলে ঘুরিয়ে পরলেন।দরজায় কড়া নাড়া শব্দ শুনে এগিয়ে গেলেন।স্বামী মারা যাবার পর কেউ কোনো খোজ নেয়না।এখন আবার কে এল? দরজা খুলে অবাক,একজন মহিলা।বছর ত্রিশ-বত্রিশ হবে বলল,মাসীমা ভালো আছেন?
সুপ্রভা অবাক হয়ে স্মৃতি হাতড়ান আগে কখনো দেখেছেন মনে করতে পারেননা।বয়স হয়েছে সব মনেও থাকেনা।
একটা শাড়ি এগিয়ে দিয়ে বলল,তাড়াতাড়ি এটা পরে নিন।
শাড়ীটা হাতে নিয়ে দেখলেন গরদের শাড়ী,চোখ তুলে তাকাতে মহিলা হেসে বলল, ছেলের বিয়ে মা না গেলে হয়?
--ওতো বাড়ী নেই।
--সেসব আপনাকে ভাবতে হবেনা।তাড়াতাড়ি করুন সবাই আপনার জন্য বসে আছে।
ছেলেটা বিয়ের কথা বলছিল বটে কিন্তু সুপ্রভা ততটা আমল দেননি।সম্মোহিতের মতো শাড়ী পরে দরজায় তালা দিয়ে মহিলাকে অনুসরণ করে গলির মুখে গাড়ীতে উঠে বসলেন।
পরিমল অফিস হতে ফিরতে সঙ্ঘমিত্রা চা করে এগিয়ে দিল।পরিমল জিজ্ঞেস করে,ছুটী নিয়েছো তোমার কি শরীর খারাপ?
--না শরীর ঠিক আছে।অনেক ছুটি জমে গেছে তাই।
সাজগোজ দেখে দেখে বলল,তুমি কোথাও বেরচ্ছো নাকি?
-- হ্যাঁ একটা কাজ আছে,ফিরতে রাত হলে খাবার মাইক্রোওভেনে গরম করে নিও।
--তুমি?
--আমি খেয়ে আসবো।
বাইকে স্টার্ট দিয়ে ভাবলো একদিন পরিমল সব জানতে পারবে।ওকে একটু আভাস দিয়ে রাখা ভালো।বাইক বড় রাস্তায় পড়তে নজরে পড়ল সুকু মাথা নীচু করে পাড়ায় ঢূকছে।তারমানে ইউনিভার্সিটি গেছিল।ঘ্যাচ করে ঘেষে বাইকে ব্রেক কষতে চমকে দু-পা পিছিয়ে গিয়ে সুকু অবাক হয়ে বলল,আণ্টি তুমি?অফিস যাওনি?
--ওঠ।
--কেন কোথায় যাব?
--সামনের পার্কে,তোর সঙ্গে কথা আছে।
আণ্টি সাসপেণ্ড জানলেও শুকদেব না জানার ভাব করে।খুব খারাপ লাগে তার সঙ্গে কোনো খারাপ ব্যবহার করেনি।পুলিশে সবাই ঘুষ খায় আণ্টি হয়তো ধরা পড়ে গেছে।
বাসায় বেশি রাত হলে চিন্তা করবে মা।এখন সবে ছটা।সঙ্ঘমিত্রার পিছনে উঠে বসল।বাইকে স্টার্ট দিয়ে যেতে যেতে বলল,তোকে একটা কথা বলব কাউকে বলিস না।
--কারো কথা কাউকে আমি বলিনা।বিশ্বাস করো তোমার কথা কাউকে আমি বলিনি।
--সে আমি জানি বলেই তোকে বলছি।আমি অফিস যাইনি,কেন যাইনি জানিস?
--কেন?
--আমাকে চক্রান্ত করে ফাসিয়েছে।এখন ছুটীতে আছি।
--কে ফাসালো?
--পুলিশ লাইন খুব হারামী লাইন,কাউকে বিশ্বাস করা যায়না।
পার্কে ঢুকে বাইক স্ট্যাণ্ড করে ফাকা একটা বেঞ্চে বসলো।একটা ঝাল মুড়িওলাকে দেখে ডাকল।
--তোকে আটকে দিলাম,ঝাল মুড়ি খা।দু-জায়গায় ঝাল মুড়ি দাও।
বেশ কয়েকবার আণ্টিকে চুদেছে কথাও হয়েছে কিন্তু আজকের মতো আলাপ আগে হয়নি।ঝাল মুড়ী চিবোতে চিবোতে শুকদেব ভাবে,আণ্টি তাকে কেন পার্কে নিয়ে এল?
কথাটা কিভাবে পাড়বে সঙ্ঘমিত্রা মনে মনে নাড়াচাড়া করতে থাকে।আড়চোখে দেখে ব্যাটা মুড়ি চিবোচ্ছে নির্বিকার।আলো কমে এসেছে।বাতিস্তম্ভে জলে উঠেছে আলো।
--সুকু তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব,সত্যি বলবি?
সুকু ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো।
--আমাকে করে সুখ হয়নি?
সুকু ভাবে এতদিন পরে আজ একথা কেন?ঐসব কথা নিয়ে আলোচনা করতে ভালো লাগেনা।
--কিরে বললি না তো?
--কি বলবো?আর বললেই তুমি বিশ্বাস করবে?
--তুই বল আমি কিছু মনে করবো না।
--শোনো আণ্টি যখন করি অন্যকে সুখ-আনন্দ দেবার কথাই শুধু ভাবি।নিজের কথা মাথায় থাকে না।
--বুঝেছি।তাহলে আমার জন্য কিছু করতে বললে করবি?
--তুমি বলেছিলে সেদিনই শেষ আর বলবেনা।
--আগে কথাটা শোন,আমাকে করার কথা বলছিনা।প্রিয়া বলে কেউ ফোন করেছিল?
কিএকটা বলতে যাচ্ছিল তার আগেই ফোন বেজে উঠতে শুকদেব কানে দিয়ে বলল,হ্যা বলো....আচ্ছা-আচ্ছা আসছি।ফোণ কেটে বলল,এইরে বলেছিল আজ বিয়ে।একদম খেয়াল ছিলনা।আণ্টি ও খুব রেগে গেছে।তোমার সঙ্গে পরে কথা বলবো।
--দাড়া আমিও যাবো।নে ওঠ।
বাইক স্টার্ট দিল।সঙ্ঘমিত্রা বলল,তুই মনাকে এত ভয় পাস কেন?
সুকু হেসে বলল,ধুস ওকে ভয় পাবো কেন?তবে কি জানো ও আমার জন্য খুব ভাবে আমাকে সম্মান করে আমিও ওকে সম্মান করি।
সঙঘমিত্রার ঠোটে শ্লেষের হাসি বলল,ভেবেছিলাম বলব না আজ তোকে বলছি।ও বলেছিল করাবে তাই তোকে সেদিন নিয়ে গেছিলাম।
--কিন্তু সেদিন তো করায়নি।বলেছিল বিয়ের আগে ওসব নয়।দেখ আণ্টি কাণ্ডারীবিহীন নৌকার মতো ভেসে চলেছিলাম ঐ আমার বেহিসেবী জীবনকে পথ দেখিয়েছে।
--আমি কিছুই করিনি?
--তাতো বলিনি।তোমার জন্য ওকে পেয়েছি সেকথা অস্বীকার করিনা।
--এখন ও তোর সব চেয়ে আপন?
--আপন-পর বুঝিনা ওকে খুশি করার জন্য সব পারি।
ফ্লাটের নীচে বাইক থামতে শুকদেব নেমে পড়ল।মনে হচ্ছে অনেকে এসেছে।সত্যি তাহলে বিয়ে হবে।ঘরে ঢুকে দেখল কয়েকজন মহিলা পরিচিত কোনো মুখ নজরে পড়ল না।একটা সোফায় বসে রঙ্গরাজনের সঙ্গে কথা বলছে মনামী। উপরে উঠে এসপি সাহেবকে দেখে সঙ্ঘমিত্রা নিজেকে আড়ালে সরিয়ে নিল।মনামীর সঙ্গে কি কথা হচ্ছে?
মনামীর ইচ্ছে আইপিএস পরীক্ষা দেবে সেই ব্যাপারে স্যারের সঙ্গে আলাপ করছে।রঙ্গরাজন উৎসাহ দেন যতটা পারবেন সাহায্য করবেন।শুকদেব ঢুকেছে নজরে পড়তে মনামী বলল,স্যার এক মিনিট আমি আসছি।
--এত দেরী হল?তোমার কোনো দায়িত্ববোধ নেই।ওঘরে চলো।
শাড়ীতে দারুন লাগছে নিপাকে।ঘরে ঢুকে চমকে উঠল,গরদের শাড়ীতে কি সুন্দর জগদ্ধাত্রীর মতো লাগছে মাকে। মা যে এত সুন্দর মলিন পোশাকে এতদিন বুঝতে পারেনি।চোখে জল এসে গেল।সুপ্রভা এগিয়ে এসে বলল,বউমা আমাকে জোর করে সাজিয়েছে।
--মা পালাচ্ছে না।এবার এগুলো পরে এসো।মনামী এক সেট পোশাক এগিয়ে দিল।
সুপ্রভা মুখটিপে হেসে ভাবতে থাকেন,এবার ভালো মানুষের হাতে পড়েছে,বাউণ্ডূলেপনা বেরিয়ে যাবে।বয়সে একটু বড় নাহলে বউমাকে ভালোই লেগেছে।
পাশের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে প্যাকেট খুলে দেখল ধুতি পাঞ্জাবী।একা মেয়ে কখন এতসব করল?আবার মাকেও নিয়ে এসেছে।
মনামী অতিথিদের ঘরে গিয়ে সবাইকে আশ্বস্থ করে পাত্র এসে গেছে।রেজিষ্ট্রার এলেই অনুষ্ঠান শুরু হবে।সঙ্ঘমিত্রার দিকে নজর পড়তে বলল,মিত্রাদি তুমি এত দেরী করলে?
--মন তোর সঙ্গে আমার জরুরী কথা আছে।
--বিয়েটা মিটে যাক?সব শুনবো।এরা আমার অফিস কলিগ,এদের সঙ্গে আলাপ করো। ইনি সঙঘমিত্রা আমার হিতৈষি হিমানী তোরা কথা বল।
সঙঘমিত্রা দেখল আমন্ত্রিতরা সবাই মহিলা।কিন্তু কেউ শাড়ী পরেনি।
খেয়াল হয় দেবের সাড়াশব্দ নেই,কি করছে এতক্ষন ধরে?দরজা খুলে অবাক পরণে জাঙ্গিয়া খাটের উপর ধুতি পড়ে আছে।তলপেটের নীচে দৃষ্টি আটকে থাকে কয়েক মুহূর্ত,কি বিশাল!যোনীদ্বারে শিরশিরানি অনুভুত হয়।সম্বিত ফিরতে বিরক্তিতে কপালে ভাজ পড়ে মনামী বলল,এত বয়স হল ধুতিটাও পরতে শেখোনি?
--কোনো দিন পরিনি।
মনামী ধুতি নিয়ে পরাতে পরাতে বলল,যা করে বেড়াও তা কি কেউ তোমায় হাতে ধরে শিখিয়েছে?
শুকদেবকে নিয়ে রঙ্গরাজনের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল।পরস্পর কর মর্দন করে,রঙ্গরাজন বললেন,আজ আসি মিস বর্মন।
--চলুন স্যার।এত ব্যস্ততার মধ্যে আপনি এসেছেন আমি খুব খুশি।
মনামী নীচ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে এল।রেজিট্রার এসে গেছে।সই সাবুদ সারতে সারতে প্রায় নটা।তারপর প্যাকেট বিতরণ সবই পার্শেল।যে যার প্রয়োজন মতো পার্শেল চেয়ে চেয়ে নিল।এক সময় ফাকা হয়ে যায় বাড়ী। সুপ্রভাকে জিজ্ঞেস করল মনামী,মা আপনি থাকবেন?
--বাড়ী ফাকা রয়েছে আমি আজ আসি মা।
--আসি মানে আপনাকে পৌছে দেবে।দেব মা চলে যাচ্ছেন।
--আমিও আসি?শুকদেব এসে বলল।
সুপ্রভা হাসলেন বললেন,বউকে একা ফেলে চলে যাবি?তোর কবে বুদ্ধি হবে?
মনামী মনে মনে ভাবে এবার ওর মাথায় বুদ্ধি ভরে দেবে।বলে কিনা আমিও আসি।
মনামী নীচে নেমে সুপ্রভাকে গাড়ীতে তুলে দিয়ে উপরে এসে দেখল সঙঘমিত্রা যায়নি।
--হ্যাঁ বলো মিত্রাদি তুমি কি বলবে বলছিলে?
শুকদেবকে দেখে ইতস্তত করে।মনামী বলল,দেব তুমি ও ঘরে যাও।
শুকদেব কিছুটা অনুমান করতে পারে কি বলবে মিতা আণ্টি।পাশের বেড রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ল।মিত্রাদির মুখ দেখে বুঝতে অসুবিধে হয়না সিরিয়াস কিছু ব্যাপার।মিত্রাদির সামনা সামনি সোফায় বসল।একটাই আশঙ্কা এমন শুভ দিনে কোনো অমঙ্গল সূচক কিছু বলবেনা তো?দেবের ব্যাপারে কিছু কি?দেবের ব্যাপারে কিছু বললেই ঘর থেকে বের করে দেবে।দেব সম্পর্কে নতুন কিছুই জানার নেইও।আর জানতে হলে দেবের কাছ থেকেই জানবে।