Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.17 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
চোরাবালি (কালেক্টেড)
#63
পর্ব তিন। সানাইয়ের সুর (#6-#16)

বাড়িতে পা রাখা মাত্রই, ঝন্টুর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হল, “একটা আইল্যাস কিনতে এত দেরি লাগে নাকি?”
অভি কিছু উত্তর দেওয়ার আগেই, যে মেয়েটা মনামিকে সাজাতে এসেছিল, সে লেখার উদ্দেশ্যে বলে, “বাপরে বাপ, তোরা কি আইল্যাস একেবারে বানিয়ে আনলি নাকি রে?”
লেখা হেসে ফেলে মেয়েটার তাড়াহুড়ো দেখে, “পারি না বাবা, এই নে তোর আইল্যাস।”

মেয়েটার সাথে চোখাচুখি হতেই চোখ আটকে গেল অভির, ভীষণ উজ্জ্বল দুটো চোখ, চোখের মণি হাল্কা নীলচে রঙের। দেহের গড়ন একটু গোলগাল, তবে ভারিও বলা চলে না। পরনে একটা নীল রঙের চাপা শারট যার উপরের দুটো বোতাম খোলা, অনায়াসে বোঝা যায় যে জামার বাঁধনে হাঁসফাঁস করছে দুই নিটোল স্তন। কোমর একদম সরু না হলেও তবে দুই ভারি নিতম্বের তুলনায় একটু সরু। পেটের সাথে যেভাবে জামাটা লেপটে গেছে, তাতে নরম গোলাকার পেটের আকার অবয়াব ভালো ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছে। লেখা অথবা মনামির মতন অতটা ফরসা নয়, তবে উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ ত্বক। চুল মনে হয় খাটো, বুঝতে পারা গেল না কারন মাথার ওপরে চুড়ের মতন করে একটা রাবার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধা। পরনের কালো জিনস একদম স্কিন টাইট কোমর থেকে গোড়ালি, পুরো অঙ্গটাকেই ঢেকে রেখেছে ঠিকই কিন্তু অনেক কিছুই ফুটিয়েও তুলেছে সেই সাথে। যে ভাবে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছিল, অভির মনেই হয়েছিল সত্যি এক ঝড়, হাঁটার তালে এক তান্ডবের ছন্দ ছিল।

মেয়েটা লেখাকে নিয়ে একপ্রকার টানতে টানতে মনামির ঘরে ঢুকে যাওয়ার পর, ঝন্টু অভির দিকে দেখে ভুরু নাচিয়ে বলে, “ঝড় দেখলি?” বলেই হেসে ফেলে।
অভি জিজ্ঞেস করে, “এই ঝড়টা কে?”
ঝন্টু উত্তর দেয়, “আরে লেখার বান্ধবীরে আমার ভীষণ পেয়ারের শালি, দময়ন্তী।” অভির পাশে দাঁড়িয়ে কানেকানে বলে, “তিখি পিস, তোর টাইপের নয়।” বলেই হেসে ফেলে।
অভিও ভুরু নাচিয়ে হেসে ফেলে, “ও আচ্ছা বুঝলাম, তাহলে কি তোর টাইপের পিস নাকি?”
ঝন্টু চোখ টিপে হেসে বলে, “একদম ঠিক।”

এর মাঝে ফোন এলো যে, সোনারপুর থেকে শিতাভ্রের বাড়ির লোক বেড়িয়ে পড়েছে। তড়িঘড়ি করে ঝন্টু আর অভি বেড়িয়ে গেল। শিতাভ্রর বাড়ি থেকে লোকজন এসে গেল কয়েক ঘন্টার মধ্যেই, কিন্তু তখন মনামিকে সাজিয়ে আনা হয়নি। এই নিয়ে অভি ফোনে একবার দিদিকে ঝেড়ে দিল, এতক্ষন কি সাজ। শুধু ত আশীর্বাদ, এখন বিয়ে বৌভাত বাকি আছে। ওর বকাঝকার ফলে শেষ পর্যন্ত মনামিকে নিয়ে লেখা আর দিয়া চলে আসে। এর মাঝে যে দময়ন্তীকে চোখে পরেনি তা নয়, জিনস বদলে একটা তুঁতে রঙের শাড়ি পড়েছিল, শাড়িতে ভারি সুন্দরী লাগছিল ওকে। পিঠের ওপরে সাপের মতন দুলছে বেনুনিটা, কোমর ছাপিয়ে একদম নিতম্বের কাছে, তখন বুঝতে পারে যে সত্যি মেয়েটার মাথায় চুল আছে। চলনে ভীষণ এক মত্ততা, মুখে সব সময়ে যেন খই ফুটছে। বাড়ির সবার সাথেই বেশ ভালো ভাবেই মিশে গেছে দময়ন্তী যেন এই বাড়ির একজন। বরের বাড়ির লোকেদের আপ্যায়ন করা, মনামির পাশে পাশে থাকা, মাঝে মাঝে বড়মার কাজেও সাহায্য করা। হয়ত দময়ন্তী অনেক বেশি লোকজনের সাথে মেলামেশা করে তাই ওর স্বভাবটাই এই রকম। কাজের মাঝে মাঝে অভির সাথে চোখা চুখি হলে একটু হাসি ছাড়া বিশেষ কিছুই আদান প্রদান হয় না।  
ঝন্টুকে খাবারের দিকের তদারকি করতে দেওয়া হয়েছিল, তাও অভিকে মাঝে মাঝেই এদিক ওদিকে দৌড়াতে হয়। সারাদিন একটা ঝোড়ের মধ্যেই কেটে যায় অভির, দুই বাড়ির একসাথে আশীর্বাদ বলে কথা। আত্মীয় সজ্জন খেয়ে দেয়ে, সবাইকে বিদায় করতে করতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে যায়। ক্যাটারারের টাকা মেটান, যে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল তাদের টাকা মেটান ইত্যাদি। ভাড়া বাড়িটা প্রায় ফাঁকা হয়েই এসেছিল, অভি, ঝন্টু আর পাড়ার কয়েকজন ছেলেরা ছাড়া কেউ ছিল না। একটা সিগারেট ধরিয়ে টান দিয়ে একরাশ ধোঁয়া ছাড়তেই দিদির ডাক আসে। অভি জিজ্ঞেস করাতে বলে যে, দময়ন্তীকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে, ঝন্টুর দেখা নেই। অভি, ঝন্টুকে একথা বলতেই, সে তড়িঘড়ি করে কোনমতে সিগারেট শেষ করেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

বেশ কিছু পর আবার মনামির ফোন, “কি রে তোকে বাড়িতে আসতে বললাম, তুই এখন এলি না?”
অভি উত্তর দেয়, “কেন ঝন্টুকে পাঠালাম ত?”
মনামি একটু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, “আমি তোকে ডেকেছিলাম, ঝন্টুকে নয়।”

সিগারেট ফেলে দিয়ে বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেয় অভি। বাড়িতে ঢুকে দেখে যে ঝন্টু তখন মুখ কাচুমাচু করে একটা বালতির মধ্যে পা ডুবিয়ে বসে। সেই দেখে হেসে ফেলল অভি, জিজ্ঞেস করাতে জানতে পারল যে দৌড়ে আসতে গিয়ে পা মচকে গেছে, ভীষণ ব্যাথা। ঝন্টুর সাথে চোখেই কথা হয়ে গেল, আর দৌড়া ওই ভাবে, শালা একটু ধিরে সুস্থে আসতে কি হয়েছিল, কেউই ত আর পালিয়ে যাচ্ছিল না। মনামি অভিকে অনুরোধ করে দময়ন্তীকে বাড়ি পৌঁছে দিতে। অভি একবার দময়ন্তীর দিকে তাকিয়ে দেখল, শাড়ি পরিহিত, হাতে ব্যাগ নিয়ে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়। পারতপক্ষে বিকেলটা একাই থাকতে চাইছিল, একদম একা, দিদির দিকে একবার ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে দেখল।

মনামি ওকে বলে, “ঝন্টুর পা মচকে গেছে, তুই দময়ন্তীকে বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে আয়।”
অভি উত্তর দেয়, “সকাল থেকে অনেক দৌড়ঝাপ করেছি আর পারছি না, অন্য কাউকে বল।”
মনামি অভ্যেস বশত অধিকারের জোরেই অভিকে বলে, “অন্য কেউ নেই, তুই যা।”
চোয়াল শক্ত করে দিদির দিকে তাকিয়ে নিচু গলায় বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, বুঝতেই পারছি, আমি’ত এখন ছাই ফেলতে ভাঙ্গা কুলো, তাই না।” বুক ভরে শ্বাস নিয়ে দময়ন্তীর দিকে দেখে ইশারায় আসতে অনুরোধ করে।

বাক্যের অন্তর্নিহিত অর্থ আশেপাশের কেউ বুঝতে না পারলেও মনামির কানে কথাটা খুব বেজেছিল। ছলছল চোখে ভাইয়ের দিকে এক ভাবে তাকিয়ে ছিল, যতক্ষণ না দময়ন্তী অভির বাইকের পেছনে উঠে বসে।

ওদের বিদায় জানাতে লেখা এগিয়ে আসে। দময়ন্তী মুখ চেপে মুচকি হেসে লেখাকে কানে কানে বলে, “হ্যাঁ রে তোর দেওরটা ত ভীষণ মুখচোরা মানুষ পরিচয়টা ত করিয়ে দিবি না হলে এতটা রাস্তা যাবো কি করে?”
অভি নিচু কণ্ঠে নিজের পরিচয়ে দিয়ে বলে, “লেখার দেওর, এর বেশি আর কি।”
উত্তরটা দময়ন্তীর খুব খারাপ লাগে, এতটা কাষ্ঠ উত্তর ঠিক আশা করেনি কারুর কাছে, “সেটা ত মিস্টার চ্যাটারজির পরিচয়, এখন কিন্তু অভিনন্দনের পরিচয় বাকি।”
বুক ভরে শ্বাস নিল অভি, “বাকিটা অন্য কোনদিন।”
অভি বাইকে স্টারট দিয়ে একবার পেছনে তাকিয়ে দেখে, মনামি তখন দাঁড়িয়ে দরজায়, ওকে দেখে আলতো হাত নাড়ায়।
দময়ন্তী আর সেটা দেখেনি। বাইক ছাড়তেই অভিকে বলে, “মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসাত, অন্তত এই টুকু পথের মধ্যে বাকিটার কিছুটা ত জানা যেতেই পারে।”
অভি বুঝতে পারল, মেয়েটা অনেক কথা বলতে পারে, “হ্যাঁ, তা সত্যি।” এই বলে নিজের পরিচয় দেয়, নামধাম, কোথায় পড়াশুনা করেছে ইত্যাদি।
দময়ন্তী খিলখিল করে হেসে ফেলে, “ইন্টারভিউ দিচ্ছ নাকি তুমি?”
অভি কিছুক্ষন চুপ থাকার পর উত্তর দেয়, “আর কি জানতে চাও?”
দময়ন্তী জিজ্ঞেস করে, “তুমি বরাবর এত চুপচাপ মানুষ নাকি?”
অভি চাপা কণ্ঠে উত্তর দেয়, “না মানে...” একটু থেমে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা ঝন্টুর হটাত পা মচকালো কি করে বলতে পারো?”
দময়ন্তী খিলখিল করে হেসে ফেলে, “ওর কথা আর বল না, বড্ড লাফালাফি করছিল ব্যাস আর কি পা মচকে গেল।”
অভি মনে মনে ব্যাঙ্গাত্মক এক হাসি হাসে। বিয়ে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় ঝন্টু খুব লাফালাফি করছিল যে দময়ন্তীকে নিয়ে পৌঁছে দেবে। বিশেষ কোন ভাব্ব্যাক্তি না দেখিয়ে দময়ন্তীকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার বান্ধবীর বর, তোমাকে ছেড়ে দিয়ে আসতে পারল না বলে তোমার মন খারাপ করল না?”
দময়ন্তী খানিক চুপ করে অভির কথাটা বুঝতে সচেষ্ট হয়, “ঠেস দিয়ে বলছ নাকি?”
অভি মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয়, “না না, ঠেস দিয়ে কেন বলতে যাবো, এমনি জিজ্ঞেস করছি।”
দময়ন্তী কিছু একটা বলতে গিয়ে থেমে যায়। খানিকক্ষণ চুপ থেকে প্রশ্ন করে, “তোমার কথা আগেও লেখার মুখে শুনছি, জানো।”
কথাটা শুনে ধাক্কা খায় অভি, “মানে?”
দময়ন্তী হেসে ফেলে, “অত চমকে যাওয়ার কিছু হয়নি, লেখা তোমার ব্যাপারে খুব একটা খারাপ কিছু বলেনি।” প্রমাদ গোনে অভি, বেশি কিছু খারাপ বলেনি অর্থাৎ, একটু কিছু নিশ্চয় বলেছে। দময়ন্তী হেসে বলে, “লেখা আর আমি সেই কলেজ থেকেই খুব ভালো বন্ধু। ওর বসিরহাটের বাড়িতে অনেকবার গেছি, আবার অনেকদিন ও আমার বাড়িতেই থেকে গেছে।”
অভি স্বস্তির শ্বাস নিয়ে ছোট একটা উত্তর দেয়, “আচ্ছা”
দময়ন্তী অভির কাঁধের ওপর ভর দিয়ে কানের পাশে এসে ফিসফিস করে বলে, “তুমি নাকি বড্ড শয়তানি কর লেখার সাথে।”
অভি প্রমাদ গোনে, বসিরহাটের সেই রাতের কথা কি লেখা বলে দিয়েছে নাকি? কোন মতে বাইক সামলে, ঢোক গিলে জিজ্ঞেস করে, “কি এমন বলেছে শুনি?”
আচমকা এই ভাবে বাইক টালমাটাল হতেই দময়ন্তী খিলখিল করে হেসে ফেলে, “আরে বাবা তুমি সব কথায় এত টেন্সান নাও কেন বুঝতে পারি না। বান্ধবীর দেওর একটু রঙ্গ রসিকতা করার অধিকার এমনি থেকেই চলে আসে বুঝলে।”
অভি বুঝে যায়, সেই রাতের কথা কেউই জানে না, কিন্তু তখন ওর কারুর সাথে রসিকতা করার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে ছিল না তাই চুপ করে যায়। কিছুক্ষন চুপচাপ থাকার পর জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা একটা কথা বল, তুমি কি বরাবর এত দুরন্ত নাকি?”
দময়ন্তী হেসে ফেলে, “যা বাবা, আমার দুরন্তপনার কি এমন দেখলে যে এই কথাটা বললে?”
অভি উত্তর দেয়, “সেই তুমি বাড়ি ঢোকার পর থেকেই দেখলাম বেশ উড়ে বেড়াচ্ছ। বাড়ির সবার সাথে দিব্বি মিশে গেলে, দেখে মনেই হচ্ছিল না যে তুমি এই বাড়ির কেউ নও।”
দময়ন্তী একটু অভিমান করে উত্তর দেয়, “ও আচ্ছা এই ব্যাপার। আচ্ছা বাবা এরপরে একদম চুপ থাকবো, একদম স্পিক-টি-নট।”
অভি মাথা নাড়ায়, “না না আমি সেটা বলিনি।”
অভিমানী দময়ন্তী মুখ গোমড়া করে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ জানা আছে, না বললেও বুঝতে পারি, আমার ওইভাবে সবার সাথে মেলামেশা তোমাদের ভালো লাগেনি এটাই বলতে চাইছ ত।”
কথাটা শুনে অভি ভীষণ বিব্রত বোধ করে, “না না আমি সেইভাবে বলতে চাইনি।”
একটুখানি অভিমানী গলায় বলে, “তাহলে কি বলতে চাইছ তুমি? আমি খুব বাচাল, গায়ে পরে আলাপ করতে যাই এই’ত?”
অভির বুঝতে বাকি রইল না যে ওর কথার ধরনটা ঠিক হয়নি, কিন্তু ঠিক কোথায় ভুল হল সেটাও বুঝতে পারল না। হয়ত বুকের মধ্যে কিছু একটা হারিয়ে যাওয়ার করুন সুরটা ভীষণ ভাবে ওর গলায় প্রকাশ পেয়ে গেছে। বেশ কিছুক্ষন দুইজনেই চুপ, শুধু বাইকের একটানা ভটভট আওয়াজ।
কিছুপর দময়ন্তী বলল, “লেখার ননদের বিয়ে তাই, না হলে অন্য কোথাও গেলে কি আর আমি ওইভাবে মেলা মেশা করি নাকি? বাকি জায়গায় ত যাও, সাজিয়ে দাও তারপর টাকা নিয়ে বেড়িয়ে এসো, কাজ শেষ।”
অভি ছোট একটা উত্তর দেয়, “আচ্ছা বেশ।”
দময়ন্তী কাঁধ দিয়ে আলতো করে অভির পিঠের ওপর ধাক্কা মেরে বলে, “তুমি সারাদিন এত চুপচাপ ছিলে কেন বলত? দিদির বিয়ে হয়ে যাবে তাই খারাপ লাগছে?”

অভি মাথা দোলায়, দিদির আশীর্বাদ হয়ে গেল, কয়েকদিন পরেই বিয়ে করে অনেক দূরে চলে যাবে। যদিও সারাদিন কাজের ব্যাস্ততায় সেই ব্যাথা ঢাকতে সক্ষম হয়েছিল, কারুর চোখেই ওর এই ব্যাথা ধরাও পরেনি হয়ত। কিন্তু এই পেছনে বসা মেয়েটার চোখে সেই ব্যাথা কিভাবে ধরা পরে গেছে সেটাই বুঝে উঠতে পারল না। হটাত করেই দময়ন্তীকে খুব কাছের মানুষ বলে মনে হল অভির।

অভির পিঠের ওপর ঝুঁকে খুব আস্তে আস্তে কানে কানে বলে, “অভিনন্দন, মেয়েদের এটাই ব্যাথার জায়গা। চেয়েও অনেক সময়ে পুরানো সম্পর্ক গুলোকে ঠিক সেইভাবে রাখতে পারে না আবার না চেয়েও অনেক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়।”

অভি চুপ করে যায় কথাটা শুনে, বুঝতে পারে দিদির ব্যাথা, কিন্তু অবুঝ এই মন টাকে শান্ত করাবে কি বলে। বাকিটা রাস্তা দুইজনেই চুপ করে থাকে। যশোর রোডের মোড় আসতেই অভি দময়ন্তীকে বাড়ির রাস্তা জিজ্ঞেস করাতে উত্তর দেয় যে নবপল্লীতে নামিয়ে দিলেই হবে। দময়ন্তীকে ওর বাড়ির সামনেই নামিয়ে দেয়। বাড়ির ভেতর যেতে অনুরোধ করে কিন্তু কাজের আছিলায় সেদিন আর ওর বাড়িতে যায় না। বাইক নিয়ে বড় রাস্তায় পড়তেই মনে হল বাড়িটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা হয়ে যাবে। একদম ইচ্ছে করছিল বাড়িতে ফেরার, মনে হচ্ছিল একবার সোজা মছলন্দপুর চলে যায়। আম বাগান যদিও বিক্রি হয়ে গেছিল, তাও সেই আম বাগানে একবার ফিরে যায়।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: চোরাবালি (কালেক্টেড) - by pnigpong - 09-08-2020, 07:31 AM



Users browsing this thread: 14 Guest(s)