Thread Rating:
  • 34 Vote(s) - 3.35 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller মুখোশ - The Mask by Daily Passenger
#27
বুঝতে পারলাম যে ম্যাডামের আরও কিছু বলার আছে কিন্তু আমার সামনে বলতে পারছেন না। খুঁচিয়ে লাভ নেই। খাওয়ার সময় আমাদের দুজনের মধ্যে প্রায় কোনও রকম কথা হল না। খাওয়া শেষ হওয়ার পর ম্যাডাম একটা কাগজে বাড়ির ঠিকানাটা লিখে দিলেন। আর সেই সাথে সেই বিশাল বইয়ের র্যাকটা দেখিয়ে দিয়ে বললেন এখানে অনেক পড়ার বই পাবে। গল্পের বইও আছে।উনি র্যাকের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললেন তুমি যে বইটা থেকে জেরক্স করেছ সেটা…” দেখলাম উনি সারি সারি বইয়ের মাঝে ওই বইটা খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম এই যে। উনি হেসে বললেন হ্যাঁ। এই তো। বেকার পয়সা নষ্ট করলে একগাদা।বললাম কি আর করা যাবে!গুড নাইট জানিয়ে উপরে উঠে পড়লাম। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে ল্যাপটপ খুলে বসতেই ফোন বেজে উঠল। দোলন। ওর সাথে মিনিট পাঁচেক কথা বলে আবার কাজে মন দিলাম। বাড়ি এখন পুরো নিস্তব্ধ। প্রায় ঘণ্টা খানেক কাজ করার পর উঠে পড়লাম। ঘড়িতে সময় এখন প্রায় ১ টা। অ্যালার্ম সেট করে লাইট নিভিয়ে প্রানায়ামে বসলাম। আধ ঘণ্টার প্রানায়াম আর মেডিটেশন, তারপর ঘুম। বাইরে অঝোরে বৃষ্টি হয়েই চলেছে।
 
ঠিক ৩ তে বেজে ৪০ মিনিটে অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙল। উঠে পড়লাম। বাইরে ভয়ানক বৃষ্টি হচ্ছে। আর সেই সাথে ভয়ানক ঝড় বইছে। কিন্তু আমাকে বেরতেই হবে। এক্সারসাইজ করার সময় ড্রেস ঘামে ভিজুক বা বৃষ্টির জলে, কি এসে যায়। স্যারের ঘরের আলো নিভে গেছে। ঠিক বলতে পারব না উনি কখন শুতে গেছেন। চাবি খুলে বাইরে বেরিয়ে ই বুঝতে পারলাম যে ভাব গতিক সুবিধের নয়। হাঁটুর ওপর জল উঠে গেছে। এই অবস্থায় দৌড়ানো যাবে না। ইনফ্যাক্ট হাঁটাই দুষ্কর। গুড বয়ের মতন আবার চাবি লাগিয়ে ফিরে চলে এলাম নিজের ঘরে।
 
সমস্যা হল ঘরে হাত পা ছোড়ার তেমন জায়গা নেই। তাও যা করার আজ এখানেই করতে হবে। সাড়ে আটটার সময় দরজায় টোকা পড়ল। এখনও এক্সারসাইজ শেষ হয়নি আমার। মেডিটেশন করাও বাকি। জানলার পর্দা সরানো, বাইরেটা বৃষ্টির জন্য পুরো অন্ধকার হয়ে আছে। আকাশ মেঘে পুরো ঢেকে গেছে। দরজা খুলতেই দেখলাম ম্যাডাম। আমার হাত কাঁটা পাতলা গেঞ্জিটা ঘামে ভিজে আমার গায়ের সাথে একদম সেঁটে গেছে। জানি না কেমন দেখতে লাগছে আমাকে। ম্যাডাম হাসি মুখে কিছু একটা বলতে গিয়েই কেমন যেন থেমে গেলেন। ওনার মুখের হাসি মিলিয়ে গেল এক নিমেষে। বুঝতে পারলাম কথা বলতে পারছেন না। দুবার ঢোক গিললেন। ওনার চোখ আমার ঘামে ভেজা শরীরের ওপরে ঘোরা ফেরা করে চলেছে। বেশ কয়েক সেকন্ড চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে একটু দম নিয়ে উনি শুরু করলেন তুমি উঠে গেছ? ভেবেছিলাম যে তোমার উঠতে আজ অনেক বেলা হবে বাইরে যা অবস্থা।উনি কথা বলছেন ঠিকই কিন্তু ওনার চোখ এখনও আমার শরীরের মাংস পেশীগুলোর ওপর ঘোরা ফেরা করছে অবাধ্য ভাবে। বুঝতে পারছি উনি নিজেকে সংযত করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু পারছেন না। আগে কখনও এরকম সুঠাম ফিগার দেখেননি নাকি!
 
আমি বললাম আমি উঠেছি সেই ভোর ৩.৪০ এ। তারপর ফ্রেশ হয়ে বাইরে বেরোতে গিয়ে দেখি এক হাঁটু জল। এখন হয়ত জল আরও বেড়ে গেছে। তাই যা করার ঘরের মধ্যেই সারতে হচ্ছে। আজ মনে হয় কলেজ যাওয়া হবে না। উনি বললেন হ্যাঁ সেটাই জানাতে এসেছিলাম যে আজ কলেজ যেতে হবে না। কলেজ অফিসিয়ালি ছুটি দিচ্ছে না। তবে প্রায় কোনও প্রফেসর আসবেন বলে মনে হয় না। বললাম তাহলে আজ সারা দিন অনেকক্ষণ বই খাতা নিয়ে বসা যাবে। হেহে। তবে একটা সমস্যা হয়ে গেল। আমাকে আজ একবার বেরোতে হত। সে না হয় তখন দেখা যাবে।ম্যাডাম বললেন তুমি আজ এই বৃষ্টির মধ্যে কোমর অব্দি জল ভেঙে বেরোবে?” বললাম বেরোতে হবে। একবার দোলনের বাড়ি যাব। চার দিনের কাজটা বোধহয় দোলন করবে। আমাকে গতকাল ফোন করে বলেছিল যে একটু হেল্প করতে পারলে ভালো হয়, মানে কেনা কাঁটা ইত্যাদিতে। ঠিক ছিল কলেজ থেকে গিয়ে ওদের কিছু কিছু ব্যাপারে হেল্প করে দিয়ে আসব। কিন্তু এখন যা অবস্থা দেখছি তাতে কলেজ যাওয়ার প্রশ্ন উঠছে না।
 
ম্যাডাম বললেন ওদের বাড়িতে কেউ নেই যে এই সব ব্যাপারে হেল্প করতে পারবে?” বললাম ওদের বাড়িতে একবারই গেছি। যা দেখলাম প্রায় কেউ নেই। মা মেয়ের সংসার এখন। অবশ্য বাইরের রিলেটিভরা এসে পড়লে জানি না কি হবে। দোলন তাই আমাকে, রাকাকে, আর আরও দুই তিন জনকে বলেছে আজ আর কাল গিয়ে একটু হেল্প করে দিয়ে আসতে। কাল যে শহরের কি অবস্থা হবে সেটা ভেবে আরও ভয় পাচ্ছি। দেখি, যদি গিয়ে কিছু হেল্প করে দিয়ে আসতে পারি।ম্যাডাম বললেন ঠিক আছে। তবে গেলে সাবধানে যেও। একটু পরে ব্রেকফাস্টের জন্য ডাকছি। মেডিটেশনের মাঝেই ব্রেকফাস্টের জন্য ডাক পড়ল। অগত্যা উঠে তাড়াতাড়ি স্নান সেরে নিচে নামতে হল। স্যার উঠে পরে ছেন। টেবিলে বসে আছেন একটা পেপার মুখে সামনে ধরে। এত বৃষ্টির মধ্যেও পেপার এসেছে দেখে ভারী আশ্চর্য লাগল। পেপার সরিয়ে আমাকে সুপ্রভাত জানিয়ে আবার পেপারে ডুবে গেলেন। ডিম টোস্ট খেয়ে উপরে উঠে এসে ল্যাপটপ খুলে বসলাম। এই ছুটিটা দরকার ছিল। প্রায় ৩ ঘণ্টা এখন আনডিস্টার্বড কাজ করতে পারব। কানে অবশ্য হেড ফোন গোঁজা। দুই দিন বাড়িতে ফোন করা হয়নি। আজ করতে হবে।
 
ডাইরিটা খুলে গতকাল বানানো কাজের চেকলিস্টটা খুলে বসে পড়লাম। তিন ঘণ্টার আগেই অবশ্য কাজ হয়ে গেল। আজ রেডিও তে অনেক ভালো ভালো গান হচ্ছে, তাই মনটা বেশ ভালো। ছুটির দিনটা যে ভালোই কাটছে সেটা বলতে হবে। বেলা ১ টার কিছু আগে ম্যাডাম জানিয়ে দিয়ে গেলেন যে লাঞ্চ রেডি। উনি স্নান করে নেবেন, তারপর খেতে বসব সবাই। আজ ওনার কাজের লোক আসেননি। তাই যা করার ওনাকেই সব করতে হয়েছে। আমি বাইরের জামা কাপড় পরে রেডি হয়ে নিলাম। জিন্সের একটা হাফ প্যান্ট পরতে হয়েছে জলের জন্য। একটা সিগারেট ধরাতে যাব এমন সময় বাইরে শুনলাম ম্যাডাম আর স্যারের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে তর্ক হচ্ছে। কি ব্যাপার। ওনারা আমার ঘরের ঠিক বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। দরজায় কান লাগিয়ে বুঝতে পারলাম যে স্যারের একটা ফোন এসেছে তাই ওনাকে এই অদ্ভুত ওয়েদারের পরোয়া না করেই বেরিয়ে পড়তে হচ্ছে। ফিরতে ফিরতে তিন দিন হয়ে যাবে। ম্যাডামের কথা শুনে বুঝতে পারলাম যে উনি স্যারের এই ডিসিশন নিয়ে বেশ অখুশি। যাই হোক ওনাদের পারিবারিক ব্যাপারে বেশী নাক গলিয়ে লাভ নেই। তবে গাড়ি তো বাড়ি অব্দি আসতে পারবে না। উনি যাবেন কি করে! আমার মতন হাফ প্যান্ট পরে বেরবেন নাকি? এই সিনটা মিস করা যাবে না। সব শেষে শুনলাম ম্যাডাম ওনাকে বললেন জানি না... যা পারো করো গিয়ে। তুমি বেরিয়ে যাচ্ছ। সংকেতও বেরিয়ে যাবে। আমি আবার একা একা বসে থাকব। যাই হোক রেডি হয়ে নাও। তোমার ব্যাগ গুছিয়ে দিচ্ছি। অদ্ভুত একটা চাকরি করো বটে...বাকি কথা আর শুনতে পেলাম না।
 
১ টা ৩০ মিনিটে ম্যাডাম আমাকে ডেকে গেলেন। নিচে গিয়ে দেখলাম স্যার রেডি। একটা গেঞ্জি পরেছেন আর একটা জিন্সের শর্টস, আমারই মতন। দুজনেই দুজনের ড্রেস দেখে না হেসে পারলাম না। ম্যাডাম আজও গতকালের মতনই একটা সাধারণ ঘরে পরার হাতকাটা নাইটি পরেছেন। আমাদের দুজনের ড্রেস দেখে ম্যাডাম বললেন যাও রাম আর হনুমান মিলে বেরিয়ে পড় লঙ্কা জয় করার জন্য। স্যারের একটা হ্যান্ড লাগেজ, আর দুটো অ্যাঁটাচি।আমি খুব অবাক হওয়ার ভান করে বললাম আপনিও এখন বেরবেন নাকি?” বললেন হ্যাঁ ডিউটি মাই ব্রাদার। ডিউটি কামস ফার্স্ট ইন আওয়ার লাইফ। আর ডিউটি আমাদের লাইফের থেকেও বেশী ইমপরট্যান্ট।ম্যাডাম টেবিলে খাবার গোছাতে গোছাতে বললেন ঘোড়ার ডিম ডিউটি। আর যেন কেউ চাকরি করে না। তোমার ডিপার্টমেন্টের বাকি লোক জনেরা তো দিব্যি দেখি আরামে আছে। শুধু তোমাকে নিয়েই এত টানা পোড়েন কেন?”
 
স্যার একটু হেসে বললেন সত্যি কথাটাই বলেছ এইবার। ওরা শুধু চাকরিই করে। ডিউটি আর চাকরি এক জিনিস নয়। আমি ডিউটি করি। ম্যাডামের রাগ পড়ার নয় সেটা অনেক আগেই বুঝতে পেরেছি। উনি বললেন তাহলে তোমাকে নিয়ে ওদের এত সমস্যা কেন? কাজও করাবে, আবার অপমানও করবে। আবার প্রয়োজন হলে ডাকবে। আর তুমিও…” স্যার একটা সিগারেট ধরিয়ে বললেন কাজ করি বলেই না ভুল বের করে। বাকিরা কাজ করে না। তাই ওদের কোনও ভুলও হয় না। আর কাজ করি বলেই বিপদে পড়লে আবার আমার ডাক পরে । ইট ইস অ্যাঁ গেম।এই সময় ওনাদের কথা থেমে গেল কারণ আমার মোবাইলটা বেজে উঠেছে। রাকা। ও আমাকে বলল যে ও কোনও মতে দোলনের বাড়ির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। প্রচুর টাকা দিয়ে একটা রিস্কা বুক করেছে। পৌঁছে ফোন করবে। আমিও জানিয়ে দিলাম যে আমিও বেরবো একটু পর। তবে কখন গিয়ে পৌছাব সেটা এখনই বলতে পারছি না। আরও একজন দুজন আসবে বলে শুনলাম। আমি মালিনীকে অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছিলাম যে এই প্রাকৃতিক গোলযোগের মধ্যে আজ আর ওর মোবাইল নিতে যেতে পারব না। ও অবশ্য নিজেই তারপর আমাকে একটা মেসেজ করে জানিয়ে দিয়েছিল যে আজ আমাকে আসতে হবে না। জলের জন্য ও নিজেও আজ হোটেলে আটকা পরে ছে। আমি ফোন রেখে স্যার কে বললাম স্যার আমরা একসাথেই বেরবো। কিছুটা এগিয়ে দেব আপনাকে। ম্যাডাম আমার দিকে এগিয়ে এসে বললেন তার আগে, এই রিং টোনের ভলিউম বাড়াও। এক্ষুনি বাড়াও। এইজন্য কল করলে তুমি কিছু শুনতে পাও না।
 
ভলিউম বাড়িয়ে স্যার কে বললাম আপনি যাবেন কোথায়?” উনি বললেন যাব এয়ার পোর্ট। তবে এখন যা অবস্থা দেখছি তাতে ট্রেনের বন্দবস্তও করে রাখতে হবে। কোথায় যে কি পাব কে জানে। অবশ্য হেঁটে অনেকটা যেতে হবে। সামনের চৌমাথার পর থেকে তেমন জল জমে নি। ওখান থেকে গিয়ে গাড়িতে উঠে যাব। বাই দা অয়ে তোমাকে কোথাও ড্রপ করতে হবে? “ বললাম না আপনার তাড়া থাকবে। আমি অন্য দিকে যাব।কথা এখানেই থেমে গেল। স্যারের শত বারণ সত্ত্বেও ম্যাডাম ওনার জন্য কিছু ব্রেড টোস্ট ইত্যাদি প্যাক করে দিলেন একটা টিফিন ক্যারিয়ারে। প্রায় মুখ বন্ধ করে তিনজনে লাঞ্চ শেষ করলাম। আমার সাথে শুধু একটা ল্যাপটপের ব্যাগ। ওইটা আর স্যারের একটা অ্যাঁটাচি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ইস্ট নাম জপ করতে করতে। স্যারও বেরিয়ে পড়লেন আমার সাথে। উনি যে চৌমাথার কথা বলেছিলেন সেই খানে পৌঁছাতে অন্য সাধারণ দিনে খুব বেশী হলে লাগত ১০ মিনিট। কিন্তু আজ এই প্রায় কোমর সমান কাঁদা জল ঠেলে সেখানে গিয়ে পৌঁছাতে লাগল তিরিশ মিনিটেরও বেশী। ওখানে একটা সাদা টাটা সুমো স্যারের জন্য অপেক্ষা করছিল। এদিকেও জল জমেছে, কিন্তু গাড়ি বসে যাবে এমন জল এখনও জমেনি। স্যার লাগেজ গাড়িতে রেখে ড্রাইভারের সাথে কোন রুট দিয়ে কোথায় যাবে এই নিয়ে ডিটেলে সব আলোচনা করে নিলেন।
 
আমাকে বললেন আবারও জিজ্ঞেস করছি কোথাও ড্রপ করতে হবে?” বললাম না না তার দরকার নেই। আপনি বেরিয়ে পড়ুন।বলাই বাহুল্য যে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। আর সময়ের সাথে সাথে বৃষ্টির তেজ যেন বেড়েই চলেছে। আমরা দুটো ছাতা নিয়ে বেরিয়ে ছিলাম বটে। কিন্তু সেগুলো খুব একটা কাজে লাগেনি। আমরা দুজনেই এখন কাক ভেজা হয়ে গেছি। স্যারের গাড়িটা বেরিয়ে পড়তেই আমি পাশের একটা চায়ের দোকানের নিচে গিয়ে শেলটার নিলাম। দোকান থেকে প্রায় ১০ প্যাকেট সিগারেট কিনে ব্যাগে চালান করে দিলাম। এইবার একটা ট্যাক্সির খোঁজ করতে হবে। একটা ট্যাক্সি পাওয়াও গেল। কোথায় যেতে হবে শুনে বলল ৫০০ টাকা দিলে যাবে। কিন্তু পুরোটা যাবে না। কারণ অতদুর (মানে যেখানে যাচ্ছি সেখানে ) যেতে গেলে জলে গাড়ি বসে যেতে পারে। অগত্যা রাজি হলাম। এইদিকে বড় রাস্তায় তেমন জল নেই দেখে একটু আশ্বস্ত হলাম। স্যার না থাকলেও আমি বোধহয় এখানে এসেই গাড়ি ধরতাম।
 
ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে নেমে আরও কিছুটা হেঁটে গিয়ে আমার গন্তব্য স্থলে এসে পৌছালাম। এই দিকে গলির ভেতর ভালোই জল জমেছে। ড্রাইভার ঠিকই বলেছিল, এত গভীর জলে এলে গাড়ি বসে যেতে বাধ্য। কলিং বেল বাজাতেই সেদিনের বৃদ্ধা মহিলা এসে দরজা খুলে দিলেন। আমাকে দেখে একটু চমকে উঠলেও, পরের মুহূর্তেই নিজেকে সামলে নিয়ে দরজার মুখে থেকে সরে দাঁড়ালেন। আমি হেসে ভিতরে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে সোজা ওপরে উঠে গেলাম। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। নক করলাম। ভেতর থেকে আওয়াজ এলো খুলছি।দরজা খুলেই আমাকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে যেন ভূত দেখার মতন চমকে উঠেছে শিখাদি। ওকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে আমি নিজেও ভেতরে ঢুকে গেলাম। দরজা বন্ধ করে ছিটকিনি তুলে দিলাম। শিখাদির পরনে হাঁটু অব্দি লম্বা একটা ঢিলে স্কার্ট আর ওপরে একটা স্কিন টাইট হাত কাঁটা টপ। টপটা কোমরের কিছু ওপরে এসে শেষ হয়ে গেছে। স্কার্টের ওপরে সুগভীর গোল নাভিটা নগ্ন হয়ে আছে। টপ না বলে অবশ্য এটাকে স্যান্ডো গেঞ্জি বললে ঠিক বলা হবে। টপের ভেতরে যে ব্রা নেই সেটা এক ঝলক দেখেই বুঝতে পেরেছি। স্তনগুলো যেন টপের পাতলা কাপড়টাকে ফুঁড়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। মাগীর স্তনের সাইজ বেশ ভালোই। জানলা বন্ধ থাকায় ঘরের ভেতরটা গুমোট হয়ে আছে। শিখাদিও বেশ ঘেমে গেছে এই গুমোট পরিবেশে। টপের পাতলা কাপড়টা গলার কাছে ভিজে কালো হয়ে গেছে। স্তনের বোঁটাগুলো শক্ত হয়ে আছে, দুটো মোটা নুড়ি পাথর টপের সামনের দিকের পাতলা কাপড়ের নিচ থেকে ফুটে বেরিয়ে এসে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বোঁটা দুটোকে।
 
যাই হোক। ঘরের চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে বললাম জানলাটা খুলে দি? ঘরটা গাঁজার গন্ধে ভরে গেছে। আমি চলে যাওয়ার পর আবার জানলা বন্ধ করে নিও।ওর মতামতের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই গিয়ে জানলাটা খুলে দিলাম। বাইরে থেকে ঠাণ্ডা ঝড়ো বাতাস ঢুকে ঘরটা ভরিয়ে দিল। ওর দিকে ফিরে বললাম কাজের কথায় আসা যাক? “ ওর সেই ভূত দেখা ভাবটা এখনও পুরোপুরি কাটেনি। ওর উত্তরের জন্য অপেক্ষা না করে ওকে প্রায় আদেশের স্বরে বললাম এসো...এখানে বসে পড়ো।বিছানার ধারটা দেখিয়ে দিলাম ওকে। ও বসল না দাঁড়িয়েই রইল। আমি শুরু করলাম।
 
দীপক মারা যাওয়ার পর থেকে তোমার অবস্থা তো ভীষণ টাইট। একটু থেমে ওর হাবভাব দেখে নিয়ে বলে চললাম দীপক এখন আর নেই। সুতরাং ওর কথা ভুলে যাওয়াই ভালো। বাই দা অয়ে, যা বুঝতে পারছি...এই তিন দিন ধরে তোমার পার্টি ইত্যাদি কিছুই করা হয়নি। মদ খাওয়া হয়নি, গাঁজার খরচেও টান পরে ছে, আর তাছাড়া কি কি হয়েছে সেটা তুমি আমার থেকে ভালো জানো। ও তেড়ে এলো আমার দিকে, কিন্তু ওকে কোনও পাত্তা না দিয়ে আবার শুরু করলাম সময় যখন খারাপ যায় আর হাতে যখন সময় কম থাকে তখন কথা কম বলে অন্য লোকের কথা শোনা উচিৎ। সুতরাং এখন শুধু শুনে যাও। যা গেছে সেটা ফিরিয়ে আনতে পারবে না। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা কিছু চিন্তা করতে কি খুব ক্ষতি আছে? “ ও একটু অসহায় ভাবে বিছানার ধারে বসে পড়ল। বললাম বেশ, এইটা রাখো।ব্যাগ খুলে একটা এক লিটারের দামি ভোদকার বোতল বের করে ওর হাতে ধরিয়ে দিলাম। আর এইটাও রাখো। ১০ হাজার আছে এতে।ওর দিকে এক তাড়া নোট এগিয়ে ধরলাম। ও নোটগুলো আমার হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই আমি নোটগুলো আবার ওর হাতের সামনে থেকে সরিয়ে নিলাম। তার আগে আমার কথাগুলো মন দিয়ে শুনে ডিসাইড করো। অবশ্য মদের বোতলটা তোমার জন্যই এনেছি।মদের বোতলটা ও মাটিতে নামিয়ে রেখে আমার দিকে জিজ্ঞাসু মুখ নিয়ে চেয়ে আছে।
 
আমি হেসে বললাম ইঞ্জিনিয়ারিংটা কমপ্লিট করার ইচ্ছে আছে? এতদিন তো দীপকের নামে রাজনৈতিক চাপের ফলে পাশ করছিলে। রেজাল্ট যদিও ভয়ানক খারাপ। এই বাজারে চাকরি পাবে বলে তো মনে হয় না। এখন তো আবার দীপক নেই। সুতরাং রাজনৈতিক চাপ আর আসবে না। সুতরাং এর পর থেকে তো ফেল করা শুরু করবে। এটা তুমিও জানো যে তুমি নিজের চেষ্টায় পাশ করে বেরোতে পারবে না। গোটা ঘরে একটাও বই নেই। একটাও ক্লাস করেছ বলে তো শুনিনি। তো, কি করবে কিছু ভেবেছ? তাছাড়া কলেজ ফি দেওয়ার সময়ও এগিয়ে আসছে। সেটা আসবে কোথা থেকে? তোমার বাড়ির অবস্থা তো নেহাত ভালো নয়। এখানে এসেছিলে যার হাত ধরে সে তো এখন পটল তুলেছে। এইবার তোমার কি করণীয় সেটা নিয়ে এনি থট?” ও চুপ। আমি বললাম দেখো কেন আমি দীপকের কথাটা তোমাকে ভুলে যেতে বলছি তার কিছু কারণ আছে। দীপক নিজের ইনফ্লুয়েন্স খাটিয়ে তোমাকে এখানে নিয়ে এসে কলেজে ভর্তি করে দিয়েছিল। এত দিন ধরে ওর সেই ইনফ্লুয়েন্সের জন্যই তুমি কলেজে কোনও মতে টিকে আছ। কিন্তু তার বিনিময়ে তুমি ওকে কি দিয়েছ? সোজাসুজিই বলি? কিছু মনে করবে না প্লীজ। (একটু থেমে বললাম) এক কথায় তুমি ছিলে ওর বাধা রক্ষিতা, আরেকটু ভদ্র ভাবে বলতে গেলে বলতে হয় শয্যাসঙ্গিনী! ইট ইস সিম্পল গিভ অ্যাঁন্ড টেক রিলেশন। এইবার আরেকটা কথা চিন্তা করে দেখো। জখনি দীপক বেঁচেছিল তখনই হঠাত যদি রাজনৈতিক পার্টিতে কোনও রকম চেঞ্জ হত আর দীপকের জায়গায় অন্য কোনও গুন্ডা এসে ওর জায়গাটা নিয়ে নিত, তখন তোমার দীপকের আর সেই সাথে তোমার পজিশনটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াত? কিছু মনে করো না, এটা তোমারও অজানা নয় যে দীপক অয়াস জাস্ট অ্যাঁ গুন্ডা, নাথিং মোর দ্যান দ্যাট। যেমন তেমন হলে যেকোনো দিন হয়ত ওর এনকাউন্টার করে দিত সরকার। উপর মহলে ওর ইম্প্রেশন বেশ খারাপ, এটা তুমিও জানতে। বড্ড বেশী বাড়াবাড়ি শুরু করেছিল ও। এরকম বাড়াবাড়ি করলে ওর পেছনে যে বাঁশ দেওয়া হবে সেটা কি সত্যিই অজানা ছিল? অবশ্য মৃত্যু ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আকস্মিক। আত্মহত্যা করলে আর কি করা যায়। একটু থামলাম। একটা সিগারেট ধরিয়ে ওর দিকে সিগারেটের প্যাকেটটা এগিয়ে ধরলাম। ও একটা সিগারেট নিয়ে সেটা ধরিয়ে আমার হাতে প্যাকেটটা ফিরিয়ে দিল। আবার শুরু করলাম তুমি আমাকে মেসেজ না করলেও আমি তোমার কাছে আসতাম। কেন আসতাম সেটা এইবার বলা দরকার। অনেক ভুমিকা হয়েছে। এইবার সেন্টার কথাটায় আসব। আমি আসতাম কারণ আমার কাছে একটা প্রস্তাব আছে তোমার জন্য। কিন্তু তারও আগে কয়েকটা জিনিস একটু ক্লিয়ার করে নেওয়া দরকার। তোমার সম্পূর্ণ সম্মতি না পেলে এই সমঝোতা এক্সপ্রেস এগোতে পারবে না। ও মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিল যে আমি যেন বলে চলি আমার প্রস্তাবের ব্যাপারে।

আধখাওয়া সিগারেটটা জানলা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বলে চললাম তুমি দোলনকে আমার ব্যাপারে কি বলতে গিয়েছিলে? “ ওর মুখে কোনও কথা নেই। আমি বলে চললাম ভগবান জানেন কে বা কারা ওর বাবা আর ওর দাদাকে হত্যা করেছে। কিন্তু তুমি ওর সামনে গিয়ে আমার নাম বললে! কারণ তুমি জানো এখনও দোলনদের কিছু ক্ষমতা আছে। অবশ্য রঞ্জন বাবুর পর এই ক্ষমতা আর কত দিন থাকবে সেটা নিয়ে কিছু ভেবে দেখেছ? আরে বোকা মেয়ে এখন দোলন আর দোলনের মায়ের ভ্যালু তোমার থেকে বেশী কিছু নয়। আরেকটা মাস কাটতে দাও, তারপর দেখবে যে ওদের দেমাক সব ভ্যানিশ। ওদের সব দেমাক ছিল রঞ্জন বাবুর জন্য। এখন তিনি আর নেই। ক্ষমতা এইভাবেই আসে এবং চলেও যায়। যেমন দীপক চলে যাওয়ার পর তোমার সব ক্ষমতা ভ্যানিশ। কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে এইবার বেশী দেমাক দেখাতে গেলে কি কি কথা তোমাকে শুনতে হবে সেটা হয়ত তুমি নিজেও জানো না। সবাই পিছনে তোমাকে রেন্ডি বলে ডাকে। রেন্ডি মানে জানো তো? রাস্তার বেশ্যা। এতদিন সবাই চুপ করেছিল যার ভয়ে এখন আর সে নেই। দোলনের অবস্থাও কিন্তু এক। ঠাণ্ডা মাথায় ভাবোঠিক বুঝতে পারবে। হ্যাঁ, একটা ফারাক আছে দোলন আর তোমার মধ্যে। ওদের অনেক টাকা। আবারও বলছি ওদের ক্ষমতা নেই, যেটা আছে সেটা হল শুধুই টাকা। কিন্তু তোমার তো শুধুই আছে বদনাম... না আছে টাকা, না আছে ক্ষমতা। আর তাই তুমি চাইলে প্রথমে দোলনের কাছে গিয়ে আমার ব্যাপারে কান ভাঙ্গাতে...যদি দোলন ওদের ইনফ্লুয়েন্স লাগিয়ে আমার কিছু ক্ষতি করতে পারে। যদিও তোমার হাতে তেমন কিছুই প্রমান নেই।
 
ও কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম সেদিন যে মেইলটা পেয়েছ সেটার কথা ভুলে যাও সোনা। ওটা আদালতে দেখাতে গেলে শুধুই হাসির খোরাক হতে হবে। এইবার শোনো, আমাকে এই খুনের মামলায় কোনও মতে ফাঁসাতে পারলে তোমার যদিও তেমন কোনও লাভ নেই, তবুও তুমি হয়ত কিছু মানসিক শান্তি পাবে। কি? তাই তো? বেকার এত টেনশন নিচ্ছ কেন বলো তো? মামলা শুরু হলে তুমি ঝোলা থেকে বের করবে আমার পাঠানো সেই মেইলটাকে। কি প্রমান করতে চাইছ তুমি? “ একটু থেমে বললাম আর মেইলেও কাজ না হলে তুমি বলবে যে আমি রেপিস্ট। কাকে রেপ করেছি? তোমাকে! আরে শালা, একটা রেন্ডিকে কে রেপ করবে? আদালতে এই কথা তুললে তোমার বিরুদ্ধে কতগুলো লোক এসে কত কত কথা বলবে সেটা কোনও দিনও ভেবে দেখেছ? এটা প্রমান করা খুব সহজ যে তুমি টাকার জন্য আমাকে সিডিউস করে আমাকে দিয়ে নিজের গুদ মারিয়েছ(ওর সামনে আর ভদ্র ভাবে কথা বলার কোনও মানে হয় না)। আর তারপর আমার অসহায়তার সুযোগ নিয়ে আরও টাকা হজম করার জন্য আমাকে রেপের অভিযোগে ফাঁসাতে চাইছ।
 
ওর চোখ গুলো কেমন যেন ঘোলাটে হয়ে গেছে আমার কথা শুনতে শুনতে। আমি বলে চললাম ব্যাপারটা বুঝে নাও, আদালতে, তোমাকে ফাঁসাতে এক ফোঁটাও সময় লাগবে না। রতন ঝা এর কথা মনে আছে?” ও নড়ে চড়ে বসল। ছেলেটা নাকি তোমাকে রেপ করেছিল! এফ আই আর করলে। দীপকের ক্ষমতা তখন গগনচুম্বী। তুমিও ডানা মেলে উড়ে চলেছ। ওরে পাগল উকিল জাতটা খুব খারাপ। সেটার আভাষ তখন কিছুটা হলেও পেয়েছিলে। আচ্ছাসে ঠাপ খেতে হয়েছিল সেদিন তোমাদের দুজনকে। এত ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ওদের নোটিস আসা মাত্র রেপের অভিযোগ তুলে নিলে। আদালাত অব্দি যেতেও হল না কাউকে। যতদূর জানি একটা টাকাও পাওনি ওই রতন ঝার কাছ থেকে। এইবার আদালতে আমাকে নিয়ে এইসব কথা ওঠালে আমার উকিল শুধু একটাই প্রশ্ন করবে, সবাই কেন শুধু তোমাকেই রেপ করতে চায়? পৃথিবীতে কি আর কোনও সেক্সি মেয়ে নেই? হাহাহাহাহা। তার ওপর আগের বার তোমরাই কেস উঠিয়ে নিয়েছিলে। হাহাহাহাহাএইবার থামলাম।
 
ঘরের চার দেওয়াল কাঁপিয়ে পরের প্রশ্নটা করলাম তোমার কি মনে হয় দোলনের আর ওর মার ইনফ্লুয়েন্স লাগিয়ে আমাকে ফাঁসাতে পারবে? মূর্খের সর্গে বাস করছ তুমি। এক মাস পরে কেউ চিনতে পারবে না এই দোলন আর তার মাকে। সুতরাং দোলনের কান ভরিয়ে তোমার কোনও লাভ নেই। এখানে তুমি আরেকটা চাল চালার চেষ্টা করেছ। যদি দোলন তোমার কথায় তেমন আমল না দেয় তখন তুমি কি করবে? মানে এক কথায় দোলনকে দিয়ে আমাকে ফাঁসাতে না পারলে তখন কি করবে! এদিকে যেকোনো মূল্যে কিছু টাকার ব্যবস্থা তোমাকে করতেই হবে নইলে তোমার ফুর্তির কি হবে! প্ল্যান বি একটা রেডি রাখতেই হত তোমাকে কারণ আমার ঘাড় ভেঙে অন্তত কিছুটা টাকাও যদি বের করতে পারো তো ক্ষতি কিসের! আমাকে এক দিকে মেসেজ করলে ব্ল্যাক মেইল করার জন্য, উল্টো দিকে দোলনকে গিয়ে উস্কে দিলে। দোলনকে আরও কিছু হয়ত বলে দিতে , কিন্তু শেষ পর্যন্ত বললে না কারণ আগে বুঝে নিতে চাইলে যে আমার ঘাড় ভেঙে কতটা টাকা তুমি আদায় করতে পারবে। এছাড়া কেস ইত্যাদি উঠলে তোমার বিরুদ্ধেও যে অনেক কথা উঠতে পারে সেটাও বোধহয় কিছু আঁচ করতে পেরেছিলে আগে থেকে। (একটু হেসে বললাম) ব্ল্যাক মেইলের কথাটা কি ঠিক বললাম? মানে কেন তুমি দোলনের সামনে কিছু বলতে গিয়েও বললে না? (গলাটা একটু খাদে নামিয়ে নিয়ে বললাম) নাকি অন্য কোনও কারণে ভয় পেয়ে গিয়েছিলে বলেই যা বলতে গিয়েছিলে সেটা ওর সামনে বলতে পারলে না? মোট কথা... না বলে একদিক থেকে ভালোই করেছ! হাহা। আবারও বলছি, দোলন রাকা ইত্যাদি সবাই তোমার পিছনে তোমাকে রেন্ডি বলে ডাকে। রেডি হয়ে যাও। এর পর থেকে গোটা কলেজ তোমার সামনেই তোমাকে এই নামে ডাকবে। অবশ্য তুমি যদি সামলে থাকো তো তেমন কিছু হবে না হয়ত। কিন্তু...পাশ করতে পারো বা নাই পারো, তোমার যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেটা আমি দেখতে রাজি আছি। অবশ্য তার আগে তুমি আমাকে প্রতিশ্রুতি দেবে যে তুমি আর দোলনের কান ভাঙাতে যাবে না। আগে সেই প্রতিশ্রুতিটা দাও তারপর আমি আমার প্রস্তাবের কথায় আসছি।
 
ও একটু ভেবে নিয়ে বলল বেশ। আমি রাজি। আমার অবস্থা এখন খারাপ। কি বলবে বলে ফেলো। বললাম বেশ। সোজা কথায় আসছি। প্রথম কথা তুমি দোলনের সাথে কথা বলে আমার ব্যাপারে যে ড্যামেজটা করেছ সেটাকে মিটিয়ে নেবে। এবং আজই মিটিয়ে নেবে। আমার সামনে মিটিয়ে নেবে। ও মুখ নামিয়ে নিয়ে বলল বেশ মিটিয়ে নেব।বলে চললাম এছারা তোমার আর কোনও পথ নেই। এইবার প্রস্তাবের কথায় আসি। প্রত্যেকটা ছেলের শারীরিক চাহিদা থাকে। দীপকের ছিল। আমারও আছে। কাঁচা বাঙলায় বলি? আমি এই দশ হাজার টাকার বিনিময়ে তোমার কাছ থেকে তোমার ইজ্জত কিনে নিতে চাইছি। দীপকের পাশে তুমি ছিলে গ্ল্যামার গার্লের মতন। আমি তোমাকে নিয়ে পাবলিকলি ঘুরতে পারব না। কিন্তু এই ঘরে এই বিছানায় তুমি হবে আমার বাধা রক্ষিতা। অবশ্য তোমার খাওয়া দাওয়া , গাঁজা, ড্রিঙ্কস, গর্ভ নিরোধক ওষুধ...এই সব কিছুর খরচা আমার। আমার ইচ্ছের ওপর তোমার ওঠা বসা নির্ভর করবে এর পর থেকে। পরীক্ষায় পাশ করতে হলে নিজের চেষ্টায় করতে হবে। সেই ব্যাপারে আমি কোনও হেল্প করতে পারব না। কিন্তু এইটুকু প্রতিশ্রুতি আমিও দিচ্ছি যে তোমার থাকা খাওয়ায় কোনও অসুবিধা হবে না। যেমন থাকতে তেমনই থাকবে। তবে একটা কথা মনে রাখবে সব সময়। কোনও অবস্থাতে আমার পোঁদে লাগতে এসো না। পেছনে এমন বাঁশ দেব যে সেই বাঁশের ভাঙা টুকরো গুলো সব ডাক্তাররা মিলেও তোমার পেছন থেকে খুঁজে বের করতে পারবে না। এইবার তোমার মতামত জানাও। আদালতে গিয়ে ফালতু কারণে আমার পেছনে লাগবে? নাকি আমার তলায় শুয়ে আমাকে সুখ দিয়ে আর সেই সাথে নিজেও সুখ নিয়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে চাও। মাঝে মাঝে বাইরে বেড়াতেও নিয়ে যাব। ভালো জামা কাপড়ও কিনে দেব। নাউ ডিসিশন ইস ইয়োর্স।
 
ও হেসে উঠে দাঁড়াল। এই প্রথম মুখ খুলল ও। গ্লাস দুটো ধুয়ে নিয়ে আসছি। আজ কিন্তু তোমাকে তাড়াতাড়ি চলে যেতে দেব না। বাইরে যা বৃষ্টি হচ্ছে তাতে অবশ্য এখন যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। চাইলে সারা রাত এখানেই থাকতে পারো। আমি ওকে থামিয়ে বললাম এটা রেখে দাও। ও হাঁসতে হাঁসতে এগিয়ে এসে আমার হাত থেকে ১০ হাজার টাকার বাণ্ডিলটা তুলে নিয়ে চলে গেল। চলে যাওয়ার আগে আমার দিকে ঝুঁকে পরে আমার ঠোঁটের ওপর আলতো করে নিজের ঠোঁট জোড়া ছুঁইয়ে দিয়ে গেল। টাকার বাণ্ডিলটা একটা মরচে ধরা আলমারির মধ্যে রেখে দিয়ে গ্লাস দুটো ধুতে চলে গেল। বাথরুমের ভেতর থেকে আওয়াজ এলো, “ একটা সিগারেটের প্যাকেট আমার জন্য রেখে দিয়ে যাবে প্লীজ?” বললাম একটা কেন? দুটো প্যাকেট রেখে দাও। টেবিলে রেখে দিচ্ছি।আওয়াজ এলো থ্যাংকস।ও বেরিয়ে আসতেই আমি বললাম সব হবে, কিন্তু তার আগে নিজের প্রতিশ্রুতিটা…” বাকি কথাটা আর বলতে হল না। ও টেবিল থেকে মোবাইলটা উঠিয়ে নিয়ে দোলনকে কল করল। আমি ইশারায় ওকে কলটাকে স্পিকারে দিতে বললাম। ও তেমনটাই করল। ওদের মধ্যে কি কথাবার্তা হচ্ছে সব শোনা দরকার।
 
দোলনঃ হ্যালো।
শিখাঃ শোন তোকে একটা বিশেষ কারণে ফোন করলাম।
দোলনঃ আমি এখন খুব ব্যস্ত আছি যা বলার তাড়াতাড়ি বলে ফেলো। (আমি ইশারায় ওকে বললাম এইবার বুঝতে পেরেছ যে ওদের কাছে তোমার ভ্যালু কোথায় নেমে গেছে এই এক দিনের ভেতর?”)
শিখাঃ সংকেতের ব্যাপারে আমার একটু ভুল হয়ে গেছে।
দোলন (কথায় বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট)ঃ আমি সেটা জানি।
শিখাঃ আসলে আমার একটু ভুল হয়ে গিয়েছিল ওর ব্যাপারে। এখন বুঝতে পারছি যে অন্য কেউ
দোলন (ওকে বাকি কথাটা শেষ না করতে দিয়েই বলল) ঃ এই... তুমি বালের মতন আমার সময় নষ্ট করবে না তো একদম। এর পর ফোন করলে পুলিশে ফোন করে বলে দেব যে তুমি বাজে ডিস্টার্ব করছ। ইউ ক্যান গো টু হেল।
[+] 2 users Like pcirma's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মুখোশ - The Mask by Daily Passenger - by pcirma - 05-03-2019, 03:20 PM



Users browsing this thread: 7 Guest(s)