26-07-2020, 08:46 PM
পর্ব ৪৬ :
আমরা নীলাঞ্জনাদের এসউভিতে সবাই চেপে বসলাম আর অদিতি ড্রাইভিং জানে তাই ও বসলো ড্রাইভিং সিটে। গাড়ির ভেতরটা পাঁচ সুন্দরীর পারফিউমের সুবাসে পুরো আমোদিত হয়ে গেলো। আমার একপাশে নীলাঞ্জনা আর একপাশে রিঙ্কি বসে। ওদের দুজনের শরীরের হালকা কালকা স্পর্শ পেতে পেতে কিছুক্ষনের মধ্যেই আমার গঙ্গার ধরে মিলেনিয়াম পার্কএ পৌঁছে গেলাম।
ওখানে পৌঁছে পার্কে ঢোকার আগে আমরা গঙ্গার ধরে দাঁড়িয়ে নদীর অপরূপ শোভা দেখতে লাগলাম। নদীর বুক থেকে ভেসে আসা জোলো বাতাসে আমাদের সকলের মন ভালো হয়ে গেলো। দেখলাম গঙ্গার বুকে অসংখ্য ছোট বড় নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে। তাই দেখে প্রিয়াঙ্কা বায়না ধরলো, ও নৌকাতে চাপতে চায়। ওর দেখা দেখি বাকিরাও বলে উঠলো হ্যাঁ হ্যাঁ চলো সবাই মিলে নৌকায় চড়ি।
আমি আর কি করি , ওদের সবাইকে নিয়ে কাছেই বাবু ঘাটে এলাম।
তারপর একটা নৌকা ঠিক করে দরদাম করে সবাই মিলে উঠে পড়লাম। আমরা সবাই নৌকার সাইডএ পা ঝুলিয়ে বসলাম। নীলাঞ্জনা আমরা এক কাঁধে আর রিঙ্কি আর এক কাঁধে মাথা রেখে বসলো।
দেখতে দেখতে আমরা মাজ গঙ্গায় এসে পড়লাম। সকলেই দারুন খুশি এই ভাবে নৌকা করে নদীর বুকে ঘুরতে পেরে। এর মধ্যে রিঙ্কি ,প্রিয়াঙ্কা আর অদিতি তো এর আগে কোনদিন নৌকাতেই চড়েনি। সুতরাং ওরা তো আরো বেশি খুশি।গঙ্গার বুকের মৃদুমন্দ ঠান্ডা হওয়াতে সবার মন ফুরফুরে হয়ে গেলো।
এর মধ্যে সোহিনী আবার একটা গান ধরলো। ওর সুরেলা কণ্ঠে আর এই পরিবেশে গানটা একবারে যথাযথ লাগলো।গানটা একটা রবীন্দ্রসংগীত ছিল।
তোমার খোলা হাওয়া, লাগিয়ে পালে
তোমার খোলা হাওয়া।টুকরো করে কাছি
আমি ডুবতে রাজি আছি,
আমি ডুবতে রাজি আছি
তোমার খোলা হাওয়া, লাগিয়ে পালে
তোমার খোলা হাওয়া।
সকাল আমার গেল মিছে
বিকেল যে যায় তারি পিছে গো
রেখো না আর, বেঁধো না আর
কূলের কাছাকাছি
আমি ডুবতে রাজি আছি,
আমি ডুবতে রাজি আছি
তোমার খোলা হাওয়া, লাগিয়ে পালে
তোমার খোলা হাওয়া।
মাঝির লাগি আছি জাগি
সকল রাত্রিবেলা
ঢেউগুলো যে আমায় নিয়ে
করে কেবল খেলা
ঝড়কে আমি করব মিতে
ডরব না তার ভ্রূকুটিতে,
ঝড়কে আমি করব মিতে
ডরব না তার ভ্রূকুটিতে
দাও ছেড়ে দাও, ওগো
আমি তুফান পেলে বাঁচি
আমি ডুবতে রাজি আছি,
আমি ডুবতে রাজি আছি
তোমার খোলা হাওয়া, লাগিয়ে পালে
তোমার খোলা হাওয়া।..
গান শেষ হতেই আমরা সকলে হাততালি দিয়ে উঠলাম। সত্যিই দারুন গেয়েছে সোহিনী। এমনকি মাঝিভাইও বলে উঠলো - বাহ্ খুব সুন্দর গেয়েছো দিদিমনি , মনটা ভোরে গেলো। কি মিষ্টি তোমার গলা , ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুক।
নীলাঞ্জনা উঠে গিয়ে সোহিনীর গালে একটা চুমু দিয়ে ওর গানের প্রশংসা করলো। আমরা সকলেই ওর সাথে হ্যাঁ মিলালাম। এরপর আমরা কিছু ছবি তুললাম। গঙ্গার বুকে নৌকার মধ্যে দারুন ফোটফ্রেমে পটা পট যে যার মোবাইল এ ছবি তুলতে আরাম্ভ করলাম।
সবশেষে সেলফি মোডে গ্রুপ ফটোও তুললাম। 5 জন সুন্দরীর মাঝে নিজেকে দেখে আমার দারুন ফিলিংস হচ্ছিলো। রিঙ্কি আর অদিতি আবার দুই দিক থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিল।
আমাদের ছবিতোলা সারা হলে মাঝি ভাইকে বললাম নৌকাটা হাওড়া ব্রিজের নিচে নিয়ে যেতে। আমার কথা শুনে সকলেই বেশ উৎসাহিত হলো। নিচ থেকে হাওড়া ব্রিজ কেমন দেখতে লাগে সেটা জানার জন্য সকলেই উদগ্রীব হয়ে পড়লো। একুটপরেই আমার নির্দেশ মতো মাঝি ভাই নৌকাটা হাওড়া ব্রিজের একবারে নিচে নিয়ে গেলো।
ওখানে পৌঁছে অবাক হয়ে দেখতে লাগলাম ব্রিজটাকে নিচের দিক থেকে।ব্রিজের ওপর দিয়ে যখন স্পীডে যানবাহন ছুটে যাচ্ছে , নিচ থেকে কেমন একটা গুরুগম্ভীর শব্দ আমাদের কানে এসে লাগছে। কি অসাধারণ স্থাপত্য, সম্পূর্ণ ইস্পাতের কাঠামো । বিনা স্তম্ভে এতবড়ো একটা ব্রিজ এতো বছর ধরে কি ভাবে দাঁড়িয়ে আছে ভেবে কুল কিনারা পেলাম না। কত বছর আগের তৈরি , সেই দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে 1943 সালে তৈরি হয়েছিল। সেই তখন থেকে অবলীলায় মাথা উঁচু করে আজও দাঁড়িয়ে আছে কলকাতার এই গর্বের স্থাপত্যটি।
তখনকার দিনে টেকলোনজি এতো উন্নত ছিল না তা সত্ত্বেও বিনা স্তম্ভে প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা একটা ব্রিজ তৈরি করা সত্যিই বিস্ময়কর ছিল। হ্যাটস অফ ,যারা এই ব্রিজ তৈরি করেছিল।
এখন টেকনোলজি অনেক উন্নত তবুও দুদিন ছাড়াই শুনতে পাই তৈরি করতে করতেই কোনো ব্রিজ বা বিল্ডিং ভেঙে পড়ছে অথবা তৈরি হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে ড্যামেজ হয়ে যাচ্ছে।
হটাৎ নীলাঞ্জনার কোথায় আমার ঘোর কাটলো। ও বললো - থ্যাংক ইউ রাজ্ এখানে নিয়ে আসার জন্য। গঙ্গার বুকে দাঁড়িয়ে নিচের দিক থেকে হাওড়া ব্রিজ দেখা সত্যিই এক বিরল অভিজ্ঞতা। বাকিরাও বলে উঠলো -ওদেরও দারুন লাগছে এই দৃশ্য দেখতে। ওখানে আরো কিছুক্ষন কাটিয়ে আমরা নৌকা ঘাটে ফিরে এলাম। তারপর হাত ধরে ধরে সবাইকে এক এক করে নৌকা থেকে নামালাম।
একটুপরেই আমরা পার্কে প্রবেশ করলাম। পার্কে ঢুকেই দেখি চার দিকে প্রেমিক প্রেমিকারা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে আছে। কেও কেও কিস করছে। আমরা সে সব দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম। আমর একহাত প্রিয়াঙ্কা আর একহাত নীলাঞ্জনা ধরে হাঁটছে। পাঁচ জন অসাধারণ সুন্দরী মেয়েকে একসাথে দেখে অনেকেই আমাদের দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছে । আর তখন ওদের সকলের মধ্যেমনি হয়ে আমার গর্বে বুকটা ফুলে ফুলে উঠছিলো।
আরো একটু যাওয়ার পর একটা দোলনা দেখতে পেয়ে প্রিয়াঙ্কা ছুটে গিয়ে দোলনায় উঠে দোল খেতে লাগলো। ও দিদিকে বললো - এই দিদি একটু দুলিয়ে দেনারে।
রিঙ্কি তখন ওকে দোলাতে লাগলো। তারপর একে একে সবাই দোলনায় উঠে মজা নিতে থাকলো । আমিও উঠলাম ,আমি উঠতেই প্রিয়াঙ্কা ছুটে এসে জোরে জোরে দোলাতে লাগলো।
রিঙ্কি ভয় পেয়ে বললো - আরে বোন কি করিস রাজ্ দা পরে যাবে তো।
- পড়বে কেন সবাই কি তোর মতো ভীতু নাকি , যে দোলনায় উঠতে ভয় পায়।
এবার সকলে রিঙ্কিকে নিয়ে পড়লো। কি দোলনায় উঠতে ভয় পাস তুই ? বলে সবাই হাসতে লাগলো। দেখলাম রিঙ্কি এমবারাস ফীল করছে। আমি তখন ওকে বললাম রিঙ্কি এসো কোনো ভয় নেই আমি ধরে থাকবো। তাতেও ও রাজি হলো না। এদিকে সবাই মিলে ওকে খেপিয়ে যাচ্ছে।
তখন আমি দোলনায় বসে ওকে বললাম - এসো আমরা কোলে বসো তাহলে তো আর ভয় পাওয়ার কথা নয়।
এবার দেখলাম ও নিমরাজি হলো আর আসতে আসতে এসে আমার কোলে বসলো। আমি প্রিয়াঙ্কাকে বললাম আসতে আসতে দোলাও। প্রিয়াঙ্কা সেটাই করলো।
দেখলাম রিঙ্কি ভয়ে চোখ বুজে আছে এখনো। আমি ওকে অভয় দিয়ে বললাম - ভয় নেই সোনা আমি আছি তো নাকি, চোখ খোলো। রিঙ্কি আসতে আসতে চোখ খুলে বললো- রাজদা আমাকে শক্ত করে ধরে রাখো।
আমি তাই করলাম ,ওর নরম স্তনের ওপর দিয়ে ওকে দুই হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে রইলাম আর এদিকে আমার বাড়া আর থাই কলকাতার সেরা সুন্দরীটির লোভনীয় পাছার স্পর্শসুখ পেতে পেতে আমি দোলনায় দুলতে লাগলাম। দেখলাম আমার আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে এখন রিঙ্কি অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। আমি চোখের ইশারায় প্রিয়াঙ্কাকে জোরে দোলাতে বললাম।
এখন দেখি জোরে দোলাতেও রিঙ্কি আর ভয় পাচ্ছে না। এদিকে আমার আমার বাড়া ওর সফ্ট পাছার চাপে হার্ড হতে শুরু করে দিয়েছে। আর হবে নাই বা কেন , এরকম অপ্সরাসমো কোনো মেয়ে যদি কারো কোলে বসে দোল খেতে থাকে তাহলে সে যেরকম পুরুষই হোক না কেন ,তার বাড়া দাঁড়িয়ে যাবেই। তাই এতে আমরা আর কি দোষ । আর আমার বাড়া যে ওর পিছনে গুতো মারছে সেটা যে রিঙ্কি ভালোই বুঝতে পারছে সে বিষয়ে আমরা কোনো সন্দেহ নেই, তবুও রিঙ্কি আমাকে কিছু না বলে আয়েসে করে আমরা কোলে বসে দোল খেতে লাগলো।
হটাৎ খেয়াল করলাম একটু দূরে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দুটি ছেলে রিঙ্কিকে দেখছে। অবশ্য এটা ব্যাতিক্রমি কিছু না, রিঙ্কির যা সৌন্দর্য্য তাতে মুহূর্তের মধ্যেই যেকোনো ছেলেকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা ওর আছে। তাই আমি ওদিকে বিশেষ নাজর না দিয়ে মনের সুখে অপরূপা রিঙ্কিকে কোলে নিয়ে দোল খেতে লালগাম।
একটু পর আমরা নামলাম দোলনা থেকে। রিঙ্কি আমার ঠোঁটে একটা চুমু দিয়ে আমাকে থ্যাংক ইউ বললো ওর ভয় কাটানোর জন্য।
তারপর পার্কের এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে আমরা একটা ভালো জায়গা দেখে ঘাসের ওপর সবাই বসলাম। অদিতি মাটিতে বসতে পারলো না কারণ ওর স্কার্টএর ঝুল বেশি লম্বা না তাই ও আমাদের পাশেই একটা লম্বা সিমেন্টের চেয়ারে বসলো। প্রিয়াঙ্কা আর সোহিনী প্রায় আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। ওদের স্তনের সফ্টনেস আমি ফীল করতে পারছি,এতটাই ওরা ক্লোজ হয়ে বসেছে আমার সাথে।
এরপর আমাদের নানারকম কথা বার্তা চলতে লাগলো। কথা বার্তার মাঝে আমাদের হাসির আওয়াজ আশেপাশের প্রেমিক যুগলদের দৃষ্টি আকৰ্ষণ করছিলো। হটাৎ সোহিনী বলে উঠলো সবাই এক এক করে বোলো এবার এখন পর্যন্ত কে কটা প্রেম প্রস্তাব পেয়েছো ?
তারপর ও নিজেই বললো - আমি মোটামুটি উনিশ - কুড়িটা পেয়েছি কলেজ লাইফ থেকে এখন পর্যন্ত। এবার অদিতি বললো সে প্রায় পঁচিশটার মতো প্রপোজাল পেয়েছে এখন পর্যন্ত। এবার রিঙ্কি বললো - সে ওতো গুনে রাখেনি , কিছুদিন ছাড়া কেও না কেও তাকে প্রেম নিবেদন করেই চলে । তও প্রায় 100 এর ওপর তো হবেই হবে।
রিঙ্কির কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে বললো - তুই কি করে হ্যান্ডেল করিস এই অত্যাচার ?
- হ্যাঁ একটু তো চাপের বাপ্যার। মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত লাগে বাট কি আর করা যাবে মেয়ে হয়ে জন্মেছি যখন এই হ্যাপা তো সইতে হবেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালোভাবে বুঝিয়ে শুনিয়ে নিরস্ত করতে পারি আমার পাণি প্রার্থীদের। তারপরেও কিছু তো নাছোড়বান্দা ছেলে জুটেই যায়, তখন আমার এক জেঠুর ছেলে আছে তাকে বলি। বিশাল ভীমাকাই চেহারা তার। তখন সেই বাপ্যারটা হ্যান্ডেল করে নেয়। এইভাবেই চলছে।
- হুম বুঝলাম বলে নীলাঞ্জনা এবার বললো আমি এইসব উটকো ঝামেলা এড়ানোর জন্য ইচ্ছা করেই একটু ছদ্দ গাম্ভীর্য নিয়ে থাকি তাই বেশি ছেলে আমার কাছে ঘেঁষে না , আর ঘেঁষলেও সাহস করে বলতে পারে না কিছু। তাই আমার সংখ্যাটা বেশি না। ওই কুড়ি বাইশ হবে।
হটাৎ আমি লক্ষ্য করলাম প্রিয়াঙ্কা আমার কোলে। আমাদের গল্পের মাঝে ও কখন আমার কোলে উঠে এসেছে খেয়ালই করিনি। ও এখন আমার কোলে বসে আমাকে জড়িয়ে ধরে দিদিদের প্রেম প্রস্তাবের গল্প শুনছে মন দিয়ে।
সোহিনী এবার আমার কাছে জানতে চাইলো আমি কটা প্রপোসাল পেয়েছি বা আমি কউকে ভালোবাসার কথা বলেছি নাকি নীলাঞ্জনার সাথে সম্পর্কের আগে। আমি বললাম না না , এর আগে না কেও আমাকে প্রপোজ করেছে না আমি কউকে করেছি।
সেকি অদিতি চোখ দুটো বড় বড় করে বললো - এতো হ্যান্ডসম চেহারা , গুড লুকিং গায়কে কেও প্রেমের প্রস্তাব দেয়নি , এটা ঠিক বিশ্বাসযোগ্য নয়।
অন্যরাও ওর সুরে সুর মেলালো। রিঙ্কি আবার বললো রাজদা বোধহয় নীলাদির ভয়ে আমাদের কাছে গোপন করছে বাপ্যারটা।
- আরে না না গোপনের কিছু নেই। একচুয়ালী কিবলোতো আমি ক্লাস টুয়েলভে পর্যন্ত বয়েজ কলেজে পড়েছি। সেকারণে মেয়েদের সাথে মেশার সুযোগই হয়নি। তারপর কলকাতা চলে আসি আর এখানে এসে কলেজে পার্টি ,ইউনিয়ন নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ি ।
তাই সেই অর্থে আমি মেয়েদের সাথে সেরকম মেলামেশা করিনি বলতে পারো এবং সেইজন্যই হয়তো মেয়েরা আমাকে আনরোমান্টিক ভেবে নিয়ে আমার থেকে দূরে থেকেছে। আর নীলাঞ্জনার সাথে আমার আলাপ কিন্তু উনিয়নের একটা অনুষ্ঠানেই হয়েছিল। তারপর আমাদের বন্ধুত্বটা থেকে গিয়েছিলো
এবার নীলাঞ্জনা রাগত স্বরে বললো - হ্যাঁ আমার ইচ্ছাতেই কিন্তু সম্পর্কটা টিকে ছিল। নয়তো প্রথম প্রথম তোমার বিশেষ আগ্রহ ছিল না সেটা আমি ভালোই বুঝতে পারতাম। আমিই যেচে যেচে তোমার সাথে কথা বলতে যেতাম। আর হ্যাঁ তার কিছুদিন পর থেকে অবশ্য তোমার মধ্যেও সেই আগ্রহটা আমি দেখতে পেয়েছিলাম।
নয়তো আমি তো ঠিক করেই নিয়েছিলাম , এতো নাক উঁচু ছেলের সাথে আর কথা বলবো না। আমরা জন্য কিনা সারা ইউনিভার্সিটি পাগল আর এ কথকার কে ,আমি যেচে কথা বললে তবে বলে নায়তো না । পাস্ দিয়ে চলে গেলেও হাই হ্যালো পর্যন্ত করে না।
- হ্যাঁ এই জন্যই আমি প্রথম প্রথম তোমাকে এড়িয়ে চলতাম। একচুয়ালী তুমি ছিলে উনিভার্সিটির সেরা সুন্দরী ,তাই তোমার সাথে বেশি কথা বলতে গেলে হয়তো ভাবতে গায়ে পরা ছেলে। এছাড়া তোমার সাথে বেশি মেলামেশা করলে যদি তোমার প্রেমে পরে যাই ,আর তোমার পিছনে ছেলেদের যা লম্বা লাইন ছিল ,সেখানে আমার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার কোনো চান্সই ছিল না।
তাই একটু এড়িয়ে চলতাম আর কি। প্রেমে পরে হৃদয় ভেঙে যাওয়ার থেকে তোমার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয় মনে করেছিলাম। কিন্তু তারপর দেখতাম প্রায় প্রতিদিন তুমি আমার কাছে নিজেই আসতে, আমার খোঁজ খবর নিতে। আমার সাথে কথা বলার সময় তোমার চোখে মুখে একটা আলাদা উজ্জ্বলতা খেলা করতো। আমার প্রতি তোমার এই আগ্রহ দেখে ধীরে ধীরে আমার সমস্ত বাঁধ ভেঙে যায়।
আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠলাম এবং যথারীতি আমি তোমার প্রেমে পরে গেলাম বাট তোমাকে হারানোর ভয়ে সে কথা আর কোনোদিন বলে উঠতে পারলামনা।
তোমাকে একদিন না দেখলে মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠতো। তাই ভাবতাম আমার ভালোবাসার কথা শুনে রেগে মেগে তুমি যদি আমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দাও। আর যেহেতু এই বিষয়ে অন্যান ছেলেদের প্রপোজাল পেয়ে তাদের সাথে কি করেছো সেই বিষয়ে তোমার মুখ থেকে অনেক গল্প আমি শুনেছি।
তাই ঠিক করলাম তার থেকে এই ভালো ,কমসে কম তোমার সানিধ্য তো পাচ্ছি। কাছ থেকে তোমাকে দেখার সুযোগ পাচ্ছি ,তোমার সাথে সময় কাটানোর সুযোগ পাচ্ছি। এটই বা কম কিসের।
আফ্টারাল ইউ আর দা মোস্ট বিউটিফুল গার্ল ইন আওয়ার ইউনিভার্সিটি। তোমার পিছনে কত ছেলে যে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ায় সেটা তো আমি ভালো করেই জানি। তাই আমি যেটুকু পাচ্ছি সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চেয়েছিলাম।
-হুম বুঝলাম , তুমি আমাকে ভালোবাসতে অথচ আমাকে হারানোর ভয়ে সাহস করে বলতে পারোনি , কিন্তু এরমধ্যে কোনো ছেলেকে যদি আমার ভালো লেগে যেত অথবা কোনো ছেলের ভালোবাসা একসেপ্ট করে যদি আমি তার সাথে প্রেমর সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে যেতাম, তখন তুমি কি করতে ?
-সেটা তখন আমার ভবিতব্য বলে মেনে নিতাম। যা চাই সবই কি পাওয়া যায় সব সময় ? এখন আমি যদি আকাশের চাঁদ চাই , সেটা পাওয়া কি সম্ভব ?। আর তুমি আমার কাছে আকাশের চাঁদের থেকে কোনো অংশে কম ছিলে না। তাই হৃদয়ে পাথর চাপা দিয়ে সেটা মেনে নিতাম। বাট এখন তুমি শুধুমাত্র আমার। তুমি নিজেই ধরা দিয়েছো আমার বাহুডোরে , এর জন্য ঈশ্বরকে শতকোটি প্রণাম।
-হাঁ কি আর করবো ?আমি তো অধীর আগহে অপেক্ষা করছিলাম ,তোমার মুখ থেকে কবে ওই তিনটে ম্যাজিক্যাল ওয়ার্ড শুনবো। কিন্তু হায় আমার পোড়া কপাল ,শুধু অপেক্ষায় সার তুমি আর বলে উঠতে পারলে না। তাই বাধ্য হয়ে লাজলজ্জার মাথা খেয়ে আমিই বলে ফেললাম।
-বেশ করেছো ,এতে ক্ষতি তো কিছু হয়নি।
-হু তোমার মুন্ডু। আরে বুদ্ধু আমি যেদিন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই তোমার প্রেমে পরে গিয়েছিলাম। সেদিনটার কথা আমার এখনো মনে আছে। সেদিন উনিয়নের কোনো একটা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে তুমি বক্তৃতা করছিলে ''ভারতের রাজনৈতিক ব্যাবস্থাপনায় ছাত্রদের ভূমিকা'' বিষয়ে। তোমার সেই উদ্দাত্ত কণ্ঠ আর হ্যান্ডসম লুকস দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।
তুমি একটা ব্লু ডেনিম আর সাথে হোয়াইট কটন শার্ট পড়েছিলে। শার্টের দুটো হাত কিছুটা করে গোটানো ছিল। বাঁ হাতের কব্জিতে একটা স্টাইলিশ ওয়াচ ছিল। তারপর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর বোধহয় আমিই সব থেকে বেশি হাততালি দিয়েছিলাম।
এরপর তুমি স্টেজ থেকে নেমে চোখে একটা সানগ্লাস পরে নিলে। কি লাগছিলো তোমায় সেদিন। আমি তো প্রথম দেখাতেই ফিদা হয়ে গেলাম ।
আমার হৃদয়ের এককোনায় তখন ভিয়োলিন বাজতে শুরু করে দিয়েছে। আমার ভেতর থেকে যেন কেও বলছে , নীলাঞ্জনা হি ইজ ইওর ম্যান,যার অপেক্ষায় তুই এতদিন ছিলি। একে তুই যেতে দিসনা। তোর জন্যই ভগবান ওকে পাঠিয়েছে।
তারপর আর কি ,আমি মনস্থির করে নিলাম এই ছেলেকেই আমি বয়ফ্রেইন্ড করবো। এরপর আমার এক সিনিয়র দাদার মাধ্যমে তোমার সাথে পরিচয় করে নিলাম।
তুমি তো একটা হাঁদারাম ছিলে , তুমি বুঝতেই পারলে না এতো ছেলেদের ছেড়ে দিয়ে আমি কেন বার বার তোমার কাছে আসতাম ,তোমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতাম। যাইহোক যখন দেখলাম তোমার দ্বারা আর প্রপোজ করা হয়ে উঠলো না ,তখন আমি নিজেই আসরে নামলাম। তারপর এখন আমরা প্রেমিক প্রেমিকা।
আমরা নীলাঞ্জনাদের এসউভিতে সবাই চেপে বসলাম আর অদিতি ড্রাইভিং জানে তাই ও বসলো ড্রাইভিং সিটে। গাড়ির ভেতরটা পাঁচ সুন্দরীর পারফিউমের সুবাসে পুরো আমোদিত হয়ে গেলো। আমার একপাশে নীলাঞ্জনা আর একপাশে রিঙ্কি বসে। ওদের দুজনের শরীরের হালকা কালকা স্পর্শ পেতে পেতে কিছুক্ষনের মধ্যেই আমার গঙ্গার ধরে মিলেনিয়াম পার্কএ পৌঁছে গেলাম।
ওখানে পৌঁছে পার্কে ঢোকার আগে আমরা গঙ্গার ধরে দাঁড়িয়ে নদীর অপরূপ শোভা দেখতে লাগলাম। নদীর বুক থেকে ভেসে আসা জোলো বাতাসে আমাদের সকলের মন ভালো হয়ে গেলো। দেখলাম গঙ্গার বুকে অসংখ্য ছোট বড় নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে। তাই দেখে প্রিয়াঙ্কা বায়না ধরলো, ও নৌকাতে চাপতে চায়। ওর দেখা দেখি বাকিরাও বলে উঠলো হ্যাঁ হ্যাঁ চলো সবাই মিলে নৌকায় চড়ি।
আমি আর কি করি , ওদের সবাইকে নিয়ে কাছেই বাবু ঘাটে এলাম।
তারপর একটা নৌকা ঠিক করে দরদাম করে সবাই মিলে উঠে পড়লাম। আমরা সবাই নৌকার সাইডএ পা ঝুলিয়ে বসলাম। নীলাঞ্জনা আমরা এক কাঁধে আর রিঙ্কি আর এক কাঁধে মাথা রেখে বসলো।
দেখতে দেখতে আমরা মাজ গঙ্গায় এসে পড়লাম। সকলেই দারুন খুশি এই ভাবে নৌকা করে নদীর বুকে ঘুরতে পেরে। এর মধ্যে রিঙ্কি ,প্রিয়াঙ্কা আর অদিতি তো এর আগে কোনদিন নৌকাতেই চড়েনি। সুতরাং ওরা তো আরো বেশি খুশি।গঙ্গার বুকের মৃদুমন্দ ঠান্ডা হওয়াতে সবার মন ফুরফুরে হয়ে গেলো।
এর মধ্যে সোহিনী আবার একটা গান ধরলো। ওর সুরেলা কণ্ঠে আর এই পরিবেশে গানটা একবারে যথাযথ লাগলো।গানটা একটা রবীন্দ্রসংগীত ছিল।
তোমার খোলা হাওয়া, লাগিয়ে পালে
তোমার খোলা হাওয়া।টুকরো করে কাছি
আমি ডুবতে রাজি আছি,
আমি ডুবতে রাজি আছি
তোমার খোলা হাওয়া, লাগিয়ে পালে
তোমার খোলা হাওয়া।
সকাল আমার গেল মিছে
বিকেল যে যায় তারি পিছে গো
রেখো না আর, বেঁধো না আর
কূলের কাছাকাছি
আমি ডুবতে রাজি আছি,
আমি ডুবতে রাজি আছি
তোমার খোলা হাওয়া, লাগিয়ে পালে
তোমার খোলা হাওয়া।
মাঝির লাগি আছি জাগি
সকল রাত্রিবেলা
ঢেউগুলো যে আমায় নিয়ে
করে কেবল খেলা
ঝড়কে আমি করব মিতে
ডরব না তার ভ্রূকুটিতে,
ঝড়কে আমি করব মিতে
ডরব না তার ভ্রূকুটিতে
দাও ছেড়ে দাও, ওগো
আমি তুফান পেলে বাঁচি
আমি ডুবতে রাজি আছি,
আমি ডুবতে রাজি আছি
তোমার খোলা হাওয়া, লাগিয়ে পালে
তোমার খোলা হাওয়া।..
গান শেষ হতেই আমরা সকলে হাততালি দিয়ে উঠলাম। সত্যিই দারুন গেয়েছে সোহিনী। এমনকি মাঝিভাইও বলে উঠলো - বাহ্ খুব সুন্দর গেয়েছো দিদিমনি , মনটা ভোরে গেলো। কি মিষ্টি তোমার গলা , ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুক।
নীলাঞ্জনা উঠে গিয়ে সোহিনীর গালে একটা চুমু দিয়ে ওর গানের প্রশংসা করলো। আমরা সকলেই ওর সাথে হ্যাঁ মিলালাম। এরপর আমরা কিছু ছবি তুললাম। গঙ্গার বুকে নৌকার মধ্যে দারুন ফোটফ্রেমে পটা পট যে যার মোবাইল এ ছবি তুলতে আরাম্ভ করলাম।
সবশেষে সেলফি মোডে গ্রুপ ফটোও তুললাম। 5 জন সুন্দরীর মাঝে নিজেকে দেখে আমার দারুন ফিলিংস হচ্ছিলো। রিঙ্কি আর অদিতি আবার দুই দিক থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিল।
আমাদের ছবিতোলা সারা হলে মাঝি ভাইকে বললাম নৌকাটা হাওড়া ব্রিজের নিচে নিয়ে যেতে। আমার কথা শুনে সকলেই বেশ উৎসাহিত হলো। নিচ থেকে হাওড়া ব্রিজ কেমন দেখতে লাগে সেটা জানার জন্য সকলেই উদগ্রীব হয়ে পড়লো। একুটপরেই আমার নির্দেশ মতো মাঝি ভাই নৌকাটা হাওড়া ব্রিজের একবারে নিচে নিয়ে গেলো।
ওখানে পৌঁছে অবাক হয়ে দেখতে লাগলাম ব্রিজটাকে নিচের দিক থেকে।ব্রিজের ওপর দিয়ে যখন স্পীডে যানবাহন ছুটে যাচ্ছে , নিচ থেকে কেমন একটা গুরুগম্ভীর শব্দ আমাদের কানে এসে লাগছে। কি অসাধারণ স্থাপত্য, সম্পূর্ণ ইস্পাতের কাঠামো । বিনা স্তম্ভে এতবড়ো একটা ব্রিজ এতো বছর ধরে কি ভাবে দাঁড়িয়ে আছে ভেবে কুল কিনারা পেলাম না। কত বছর আগের তৈরি , সেই দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে 1943 সালে তৈরি হয়েছিল। সেই তখন থেকে অবলীলায় মাথা উঁচু করে আজও দাঁড়িয়ে আছে কলকাতার এই গর্বের স্থাপত্যটি।
তখনকার দিনে টেকলোনজি এতো উন্নত ছিল না তা সত্ত্বেও বিনা স্তম্ভে প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা একটা ব্রিজ তৈরি করা সত্যিই বিস্ময়কর ছিল। হ্যাটস অফ ,যারা এই ব্রিজ তৈরি করেছিল।
এখন টেকনোলজি অনেক উন্নত তবুও দুদিন ছাড়াই শুনতে পাই তৈরি করতে করতেই কোনো ব্রিজ বা বিল্ডিং ভেঙে পড়ছে অথবা তৈরি হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে ড্যামেজ হয়ে যাচ্ছে।
হটাৎ নীলাঞ্জনার কোথায় আমার ঘোর কাটলো। ও বললো - থ্যাংক ইউ রাজ্ এখানে নিয়ে আসার জন্য। গঙ্গার বুকে দাঁড়িয়ে নিচের দিক থেকে হাওড়া ব্রিজ দেখা সত্যিই এক বিরল অভিজ্ঞতা। বাকিরাও বলে উঠলো -ওদেরও দারুন লাগছে এই দৃশ্য দেখতে। ওখানে আরো কিছুক্ষন কাটিয়ে আমরা নৌকা ঘাটে ফিরে এলাম। তারপর হাত ধরে ধরে সবাইকে এক এক করে নৌকা থেকে নামালাম।
একটুপরেই আমরা পার্কে প্রবেশ করলাম। পার্কে ঢুকেই দেখি চার দিকে প্রেমিক প্রেমিকারা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে আছে। কেও কেও কিস করছে। আমরা সে সব দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম। আমর একহাত প্রিয়াঙ্কা আর একহাত নীলাঞ্জনা ধরে হাঁটছে। পাঁচ জন অসাধারণ সুন্দরী মেয়েকে একসাথে দেখে অনেকেই আমাদের দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছে । আর তখন ওদের সকলের মধ্যেমনি হয়ে আমার গর্বে বুকটা ফুলে ফুলে উঠছিলো।
আরো একটু যাওয়ার পর একটা দোলনা দেখতে পেয়ে প্রিয়াঙ্কা ছুটে গিয়ে দোলনায় উঠে দোল খেতে লাগলো। ও দিদিকে বললো - এই দিদি একটু দুলিয়ে দেনারে।
রিঙ্কি তখন ওকে দোলাতে লাগলো। তারপর একে একে সবাই দোলনায় উঠে মজা নিতে থাকলো । আমিও উঠলাম ,আমি উঠতেই প্রিয়াঙ্কা ছুটে এসে জোরে জোরে দোলাতে লাগলো।
রিঙ্কি ভয় পেয়ে বললো - আরে বোন কি করিস রাজ্ দা পরে যাবে তো।
- পড়বে কেন সবাই কি তোর মতো ভীতু নাকি , যে দোলনায় উঠতে ভয় পায়।
এবার সকলে রিঙ্কিকে নিয়ে পড়লো। কি দোলনায় উঠতে ভয় পাস তুই ? বলে সবাই হাসতে লাগলো। দেখলাম রিঙ্কি এমবারাস ফীল করছে। আমি তখন ওকে বললাম রিঙ্কি এসো কোনো ভয় নেই আমি ধরে থাকবো। তাতেও ও রাজি হলো না। এদিকে সবাই মিলে ওকে খেপিয়ে যাচ্ছে।
তখন আমি দোলনায় বসে ওকে বললাম - এসো আমরা কোলে বসো তাহলে তো আর ভয় পাওয়ার কথা নয়।
এবার দেখলাম ও নিমরাজি হলো আর আসতে আসতে এসে আমার কোলে বসলো। আমি প্রিয়াঙ্কাকে বললাম আসতে আসতে দোলাও। প্রিয়াঙ্কা সেটাই করলো।
দেখলাম রিঙ্কি ভয়ে চোখ বুজে আছে এখনো। আমি ওকে অভয় দিয়ে বললাম - ভয় নেই সোনা আমি আছি তো নাকি, চোখ খোলো। রিঙ্কি আসতে আসতে চোখ খুলে বললো- রাজদা আমাকে শক্ত করে ধরে রাখো।
আমি তাই করলাম ,ওর নরম স্তনের ওপর দিয়ে ওকে দুই হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে রইলাম আর এদিকে আমার বাড়া আর থাই কলকাতার সেরা সুন্দরীটির লোভনীয় পাছার স্পর্শসুখ পেতে পেতে আমি দোলনায় দুলতে লাগলাম। দেখলাম আমার আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে এখন রিঙ্কি অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। আমি চোখের ইশারায় প্রিয়াঙ্কাকে জোরে দোলাতে বললাম।
এখন দেখি জোরে দোলাতেও রিঙ্কি আর ভয় পাচ্ছে না। এদিকে আমার আমার বাড়া ওর সফ্ট পাছার চাপে হার্ড হতে শুরু করে দিয়েছে। আর হবে নাই বা কেন , এরকম অপ্সরাসমো কোনো মেয়ে যদি কারো কোলে বসে দোল খেতে থাকে তাহলে সে যেরকম পুরুষই হোক না কেন ,তার বাড়া দাঁড়িয়ে যাবেই। তাই এতে আমরা আর কি দোষ । আর আমার বাড়া যে ওর পিছনে গুতো মারছে সেটা যে রিঙ্কি ভালোই বুঝতে পারছে সে বিষয়ে আমরা কোনো সন্দেহ নেই, তবুও রিঙ্কি আমাকে কিছু না বলে আয়েসে করে আমরা কোলে বসে দোল খেতে লাগলো।
হটাৎ খেয়াল করলাম একটু দূরে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দুটি ছেলে রিঙ্কিকে দেখছে। অবশ্য এটা ব্যাতিক্রমি কিছু না, রিঙ্কির যা সৌন্দর্য্য তাতে মুহূর্তের মধ্যেই যেকোনো ছেলেকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা ওর আছে। তাই আমি ওদিকে বিশেষ নাজর না দিয়ে মনের সুখে অপরূপা রিঙ্কিকে কোলে নিয়ে দোল খেতে লালগাম।
একটু পর আমরা নামলাম দোলনা থেকে। রিঙ্কি আমার ঠোঁটে একটা চুমু দিয়ে আমাকে থ্যাংক ইউ বললো ওর ভয় কাটানোর জন্য।
তারপর পার্কের এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে আমরা একটা ভালো জায়গা দেখে ঘাসের ওপর সবাই বসলাম। অদিতি মাটিতে বসতে পারলো না কারণ ওর স্কার্টএর ঝুল বেশি লম্বা না তাই ও আমাদের পাশেই একটা লম্বা সিমেন্টের চেয়ারে বসলো। প্রিয়াঙ্কা আর সোহিনী প্রায় আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। ওদের স্তনের সফ্টনেস আমি ফীল করতে পারছি,এতটাই ওরা ক্লোজ হয়ে বসেছে আমার সাথে।
এরপর আমাদের নানারকম কথা বার্তা চলতে লাগলো। কথা বার্তার মাঝে আমাদের হাসির আওয়াজ আশেপাশের প্রেমিক যুগলদের দৃষ্টি আকৰ্ষণ করছিলো। হটাৎ সোহিনী বলে উঠলো সবাই এক এক করে বোলো এবার এখন পর্যন্ত কে কটা প্রেম প্রস্তাব পেয়েছো ?
তারপর ও নিজেই বললো - আমি মোটামুটি উনিশ - কুড়িটা পেয়েছি কলেজ লাইফ থেকে এখন পর্যন্ত। এবার অদিতি বললো সে প্রায় পঁচিশটার মতো প্রপোজাল পেয়েছে এখন পর্যন্ত। এবার রিঙ্কি বললো - সে ওতো গুনে রাখেনি , কিছুদিন ছাড়া কেও না কেও তাকে প্রেম নিবেদন করেই চলে । তও প্রায় 100 এর ওপর তো হবেই হবে।
রিঙ্কির কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে বললো - তুই কি করে হ্যান্ডেল করিস এই অত্যাচার ?
- হ্যাঁ একটু তো চাপের বাপ্যার। মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত লাগে বাট কি আর করা যাবে মেয়ে হয়ে জন্মেছি যখন এই হ্যাপা তো সইতে হবেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালোভাবে বুঝিয়ে শুনিয়ে নিরস্ত করতে পারি আমার পাণি প্রার্থীদের। তারপরেও কিছু তো নাছোড়বান্দা ছেলে জুটেই যায়, তখন আমার এক জেঠুর ছেলে আছে তাকে বলি। বিশাল ভীমাকাই চেহারা তার। তখন সেই বাপ্যারটা হ্যান্ডেল করে নেয়। এইভাবেই চলছে।
- হুম বুঝলাম বলে নীলাঞ্জনা এবার বললো আমি এইসব উটকো ঝামেলা এড়ানোর জন্য ইচ্ছা করেই একটু ছদ্দ গাম্ভীর্য নিয়ে থাকি তাই বেশি ছেলে আমার কাছে ঘেঁষে না , আর ঘেঁষলেও সাহস করে বলতে পারে না কিছু। তাই আমার সংখ্যাটা বেশি না। ওই কুড়ি বাইশ হবে।
হটাৎ আমি লক্ষ্য করলাম প্রিয়াঙ্কা আমার কোলে। আমাদের গল্পের মাঝে ও কখন আমার কোলে উঠে এসেছে খেয়ালই করিনি। ও এখন আমার কোলে বসে আমাকে জড়িয়ে ধরে দিদিদের প্রেম প্রস্তাবের গল্প শুনছে মন দিয়ে।
সোহিনী এবার আমার কাছে জানতে চাইলো আমি কটা প্রপোসাল পেয়েছি বা আমি কউকে ভালোবাসার কথা বলেছি নাকি নীলাঞ্জনার সাথে সম্পর্কের আগে। আমি বললাম না না , এর আগে না কেও আমাকে প্রপোজ করেছে না আমি কউকে করেছি।
সেকি অদিতি চোখ দুটো বড় বড় করে বললো - এতো হ্যান্ডসম চেহারা , গুড লুকিং গায়কে কেও প্রেমের প্রস্তাব দেয়নি , এটা ঠিক বিশ্বাসযোগ্য নয়।
অন্যরাও ওর সুরে সুর মেলালো। রিঙ্কি আবার বললো রাজদা বোধহয় নীলাদির ভয়ে আমাদের কাছে গোপন করছে বাপ্যারটা।
- আরে না না গোপনের কিছু নেই। একচুয়ালী কিবলোতো আমি ক্লাস টুয়েলভে পর্যন্ত বয়েজ কলেজে পড়েছি। সেকারণে মেয়েদের সাথে মেশার সুযোগই হয়নি। তারপর কলকাতা চলে আসি আর এখানে এসে কলেজে পার্টি ,ইউনিয়ন নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ি ।
তাই সেই অর্থে আমি মেয়েদের সাথে সেরকম মেলামেশা করিনি বলতে পারো এবং সেইজন্যই হয়তো মেয়েরা আমাকে আনরোমান্টিক ভেবে নিয়ে আমার থেকে দূরে থেকেছে। আর নীলাঞ্জনার সাথে আমার আলাপ কিন্তু উনিয়নের একটা অনুষ্ঠানেই হয়েছিল। তারপর আমাদের বন্ধুত্বটা থেকে গিয়েছিলো
এবার নীলাঞ্জনা রাগত স্বরে বললো - হ্যাঁ আমার ইচ্ছাতেই কিন্তু সম্পর্কটা টিকে ছিল। নয়তো প্রথম প্রথম তোমার বিশেষ আগ্রহ ছিল না সেটা আমি ভালোই বুঝতে পারতাম। আমিই যেচে যেচে তোমার সাথে কথা বলতে যেতাম। আর হ্যাঁ তার কিছুদিন পর থেকে অবশ্য তোমার মধ্যেও সেই আগ্রহটা আমি দেখতে পেয়েছিলাম।
নয়তো আমি তো ঠিক করেই নিয়েছিলাম , এতো নাক উঁচু ছেলের সাথে আর কথা বলবো না। আমরা জন্য কিনা সারা ইউনিভার্সিটি পাগল আর এ কথকার কে ,আমি যেচে কথা বললে তবে বলে নায়তো না । পাস্ দিয়ে চলে গেলেও হাই হ্যালো পর্যন্ত করে না।
- হ্যাঁ এই জন্যই আমি প্রথম প্রথম তোমাকে এড়িয়ে চলতাম। একচুয়ালী তুমি ছিলে উনিভার্সিটির সেরা সুন্দরী ,তাই তোমার সাথে বেশি কথা বলতে গেলে হয়তো ভাবতে গায়ে পরা ছেলে। এছাড়া তোমার সাথে বেশি মেলামেশা করলে যদি তোমার প্রেমে পরে যাই ,আর তোমার পিছনে ছেলেদের যা লম্বা লাইন ছিল ,সেখানে আমার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার কোনো চান্সই ছিল না।
তাই একটু এড়িয়ে চলতাম আর কি। প্রেমে পরে হৃদয় ভেঙে যাওয়ার থেকে তোমার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয় মনে করেছিলাম। কিন্তু তারপর দেখতাম প্রায় প্রতিদিন তুমি আমার কাছে নিজেই আসতে, আমার খোঁজ খবর নিতে। আমার সাথে কথা বলার সময় তোমার চোখে মুখে একটা আলাদা উজ্জ্বলতা খেলা করতো। আমার প্রতি তোমার এই আগ্রহ দেখে ধীরে ধীরে আমার সমস্ত বাঁধ ভেঙে যায়।
আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠলাম এবং যথারীতি আমি তোমার প্রেমে পরে গেলাম বাট তোমাকে হারানোর ভয়ে সে কথা আর কোনোদিন বলে উঠতে পারলামনা।
তোমাকে একদিন না দেখলে মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠতো। তাই ভাবতাম আমার ভালোবাসার কথা শুনে রেগে মেগে তুমি যদি আমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দাও। আর যেহেতু এই বিষয়ে অন্যান ছেলেদের প্রপোজাল পেয়ে তাদের সাথে কি করেছো সেই বিষয়ে তোমার মুখ থেকে অনেক গল্প আমি শুনেছি।
তাই ঠিক করলাম তার থেকে এই ভালো ,কমসে কম তোমার সানিধ্য তো পাচ্ছি। কাছ থেকে তোমাকে দেখার সুযোগ পাচ্ছি ,তোমার সাথে সময় কাটানোর সুযোগ পাচ্ছি। এটই বা কম কিসের।
আফ্টারাল ইউ আর দা মোস্ট বিউটিফুল গার্ল ইন আওয়ার ইউনিভার্সিটি। তোমার পিছনে কত ছেলে যে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ায় সেটা তো আমি ভালো করেই জানি। তাই আমি যেটুকু পাচ্ছি সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চেয়েছিলাম।
-হুম বুঝলাম , তুমি আমাকে ভালোবাসতে অথচ আমাকে হারানোর ভয়ে সাহস করে বলতে পারোনি , কিন্তু এরমধ্যে কোনো ছেলেকে যদি আমার ভালো লেগে যেত অথবা কোনো ছেলের ভালোবাসা একসেপ্ট করে যদি আমি তার সাথে প্রেমর সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে যেতাম, তখন তুমি কি করতে ?
-সেটা তখন আমার ভবিতব্য বলে মেনে নিতাম। যা চাই সবই কি পাওয়া যায় সব সময় ? এখন আমি যদি আকাশের চাঁদ চাই , সেটা পাওয়া কি সম্ভব ?। আর তুমি আমার কাছে আকাশের চাঁদের থেকে কোনো অংশে কম ছিলে না। তাই হৃদয়ে পাথর চাপা দিয়ে সেটা মেনে নিতাম। বাট এখন তুমি শুধুমাত্র আমার। তুমি নিজেই ধরা দিয়েছো আমার বাহুডোরে , এর জন্য ঈশ্বরকে শতকোটি প্রণাম।
-হাঁ কি আর করবো ?আমি তো অধীর আগহে অপেক্ষা করছিলাম ,তোমার মুখ থেকে কবে ওই তিনটে ম্যাজিক্যাল ওয়ার্ড শুনবো। কিন্তু হায় আমার পোড়া কপাল ,শুধু অপেক্ষায় সার তুমি আর বলে উঠতে পারলে না। তাই বাধ্য হয়ে লাজলজ্জার মাথা খেয়ে আমিই বলে ফেললাম।
-বেশ করেছো ,এতে ক্ষতি তো কিছু হয়নি।
-হু তোমার মুন্ডু। আরে বুদ্ধু আমি যেদিন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই তোমার প্রেমে পরে গিয়েছিলাম। সেদিনটার কথা আমার এখনো মনে আছে। সেদিন উনিয়নের কোনো একটা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে তুমি বক্তৃতা করছিলে ''ভারতের রাজনৈতিক ব্যাবস্থাপনায় ছাত্রদের ভূমিকা'' বিষয়ে। তোমার সেই উদ্দাত্ত কণ্ঠ আর হ্যান্ডসম লুকস দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।
তুমি একটা ব্লু ডেনিম আর সাথে হোয়াইট কটন শার্ট পড়েছিলে। শার্টের দুটো হাত কিছুটা করে গোটানো ছিল। বাঁ হাতের কব্জিতে একটা স্টাইলিশ ওয়াচ ছিল। তারপর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর বোধহয় আমিই সব থেকে বেশি হাততালি দিয়েছিলাম।
এরপর তুমি স্টেজ থেকে নেমে চোখে একটা সানগ্লাস পরে নিলে। কি লাগছিলো তোমায় সেদিন। আমি তো প্রথম দেখাতেই ফিদা হয়ে গেলাম ।
আমার হৃদয়ের এককোনায় তখন ভিয়োলিন বাজতে শুরু করে দিয়েছে। আমার ভেতর থেকে যেন কেও বলছে , নীলাঞ্জনা হি ইজ ইওর ম্যান,যার অপেক্ষায় তুই এতদিন ছিলি। একে তুই যেতে দিসনা। তোর জন্যই ভগবান ওকে পাঠিয়েছে।
তারপর আর কি ,আমি মনস্থির করে নিলাম এই ছেলেকেই আমি বয়ফ্রেইন্ড করবো। এরপর আমার এক সিনিয়র দাদার মাধ্যমে তোমার সাথে পরিচয় করে নিলাম।
তুমি তো একটা হাঁদারাম ছিলে , তুমি বুঝতেই পারলে না এতো ছেলেদের ছেড়ে দিয়ে আমি কেন বার বার তোমার কাছে আসতাম ,তোমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতাম। যাইহোক যখন দেখলাম তোমার দ্বারা আর প্রপোজ করা হয়ে উঠলো না ,তখন আমি নিজেই আসরে নামলাম। তারপর এখন আমরা প্রেমিক প্রেমিকা।