25-07-2020, 07:49 PM
"" তিন""
ভগবান কিন্তু নিশিকান্তের জন্য হয়তো আরও অনেক কঠিন সময় সাজিয়ে রেখেছিলো,
নিশিকান্ত হয়তো সবে একটু গুছিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিলো,
অর্ণব আর ঋতুপর্ণার মৃত্যুকে, তখনই শুকনো আকাশে থেকে যেন একটা বাজই পরে নিশিকান্তের মাথায়, আর সেই বাজ ছিল আরও একটি দেহ।
এবার দেহটি পাওয়া যায় একটি নির্জন শ্মশানে, সেই মড়া নদীর খাত থেকে এই শ্মশানটা ঠিক চার কিলোমিটার দুরে আর এইবার দেহটি একটি মাঝবয়েসী পুরুষ মানুষের,
আর উনি কলকাতার এক কলেজ লেকচারার ছিলেন রসায়নের প্রফেসার ছিলেন, ওনার নাম ছিল ভৈরব হাজরা।
মৃত্যুর সময় ওনার পরনে ছিল দামী কোট, প্যান্ট আর ওনার পকেটেও ব্যাগ ভর্তি টাকা ছিল।
ভৈরব হাজরার পরিবার বলতে সেরকম কেউ ছিলনা, তিনি অকৃতদার ছিলেন ।
ওনার সংসার বলতে ওনার এক দূরসম্পর্কের ভাগ্নে ছাড়া কেউই ছিলনা।
সেই ভাগ্নের বাড়ীতেই এসেছিলেন ভৈরব বাবু আর তারপরেই এই ঘটনা।
নিশিকান্ত ওনার ভাগ্নে সুমিতের কাছে জানতে পারেন যে ভৈরব বাবু বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন,
আর উনি সামনের মাসেই ছুটিতে বাইরে চিকিৎসা করাতে যাবার কথা ভাবছিলেন আর তার আগে একটু ভাগ্নের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।
ভৈরব বাবু বরাবরই একটু প্রকৃতি প্রেমিক ছিলেন তাই সেই নদীর ধারে শ্মশানে প্রায় ঘুরতে যেতেন আর তারপরেই ওনার আচমকা মৃত্যু।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ভৈরব বাবুর মৃত্যুর কারন হিসাবে সেই হার্ট এট্যাক, তবে তা হটাত প্রেশার বেড়ে যাওয়ার জন্য।
এমনিতেই ভৈরববাবু হাই প্রেশারের রুগী ছিলেন আর নিয়মিত ওষুধও খেতেন,
তবে হয়তো সেই সময় তার সঙ্গে ওষুধ ছিলনা আর প্রেশার বেড়ে যাওয়াতে তার দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু।
নিশিকান্ত এবারও সুমিতবাবুকে একটা মামলা ঋজু করতে বললে, সুমিতবাবু নিশিকান্তের কাছে হাতজোড় করে বলেন
”সার মামা তো মারাই গেছেন ,এবার আর ওনাকে টানাহেঁচড়া না করে দয়া করে আমাকে ওনার শেষকৃত্য করতে দয়া করে অনুমতি দেন”।
এতদিন ধরে সহায় সাহেব চুপ করে ছিলেন, কারন ওনার ভরসা ছিল নিশিকান্তের ওপরে,
তাই দু দুটো অস্বাভাবিক মৃত্যু স্বত্তেও উনি নিশিকান্তকে কোনও চাপ দেননি,
তবে এইবার তিন নম্বর মৃত্যুর পরে সহায় সাহেব এক সকালে নিশিকান্তকে ফোন করেন আর খুব ক্যাসুয়ালি বলেন
” নিশি আভি মুড ক্যায়সা হ্যায় ? তুমহারে ইলাকা মে তিন তিন অজিব মৌত হও গ্যায়া ওর তুম ক্যায়া কর রহা হ্যায় ভাই?”
নিশিকান্ত তার জীবনে যত অফিসারের অধিনে কাজ করেছে তার মধ্য সে সব থেকে বেশী সম্মান এই সহায় সাহেবকেই করতো,
কারন সহায় সাহেব সারা জীবন নিজের পদন্নতির থেকে সবসময় তার জুনিয়ারদের সাফল্য বেশী খুশী হতেন,
তাই যেকোনো শক্ত কেসে উনি তার জুনিয়ারদের যথাসাধ্য হেল্প করলেও তার ক্রেডিট নিজে কক্ষনোই নিতে চাইতেন না,
তাই এই রকম একটা অফিসার যখন তাকে একটা ব্যাপারে দেখতে বলছে,
তখন সেটা নিশিকান্তের কাছে খুবই সম্মানে লাগলো কারন সহায় সাহেব কক্ষনোই তার জুনিয়ারদের প্রেশার দিতেন না।
নিশিকান্ত গম্ভীর গলায় সহায় সাহেবের প্রশ্নের জবাবে বলেন
” সার আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি, তবে একটা কথা আমি আপনাকে এখনই জানাতে পারি যে আমার এতদিনের অভিজ্ঞতা বলছে যে এই মৃত্যুগুলো কোনমতেই স্বাভাবিক নয়, হতেই পারেনা।
কারন পরপর তিনটে মৃত্যু আর সবগুলোর ধরন মোটামোটি একই।
তিনজনেই অসুস্থ ছিল, বাইরে চিকিৎসা করাতে যাবার কথা চলছিলো আর ঠিক বাইরে যাবার আগেই সবার মৃত্যু।
আরেকটা মিলও আছে সার এদের সবার মধ্য সেটা হল যে এরা সবাই কলেজে হয় পরে না হয় পড়ান আর সবাই বিজ্ঞানের কোন না কোন বিভাগের সঙ্গেই যুক্ত,
তবে সার এইসব তো কাকতালীয় হতে পারে কিন্তু দুটো পয়েন্ট আছে যেটা এই তিনটে মৃত্যুকে অন্তত একপয়েন্টে মিলিয়ে দিয়েছে,
সেটা হল সার এদের মৃত্যুর জায়গা সবই কিন্তু ওই নদীর ধারেই বা তার চার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্য,
আর সার যেটা আমার সব থেকে অদ্ভুত লেগেছে সেটা হল সবারই পরনে ভালো জামাকাপড় ছিল,
ব্যাগে টাঁকায় ভর্তি ছিল আর প্রত্যকের ব্যাগের মধ্যই সার আমি একটা অদ্ভুত জিনিষ খুজে পেয়েছে যেটা থেকেই আমার মনে হয়েছে যে এই তিনটে মৃত্যু কোনও না কোনও ভাবে অবশ্যই জড়িত”
সহায় সাহেব এতক্ষণ ধরে চুপচাপ নিশিকান্তের বিশ্লেষণ শুনে যাচ্ছিলেন, এবার নিশিকান্ত থামতেই তিনি আগ্রহের সঙ্গেই বলে উঠেন
”কি হলো এই ভাবে চুপ করে গেলে কেন? কি পেয়েছো বলই না!”
নিশিকান্ত এবার ফোনের ওপর প্রান্ত থেকে বলে উঠে
”সার আমি সত্যি করেই অদ্ভুত জিনিষ পেয়েছি, আমি তাদের প্রত্যাকের ব্যাগের মধ্যই একটা করে ”মিকি মাউসের” স্টিকার পেয়েছি সার”
এবার সহায় সাহেব শব্দ করে হেসে উঠে বলে
” নিশি তুমি কিছুদিন না হয় ছুটি নিয়েই নাও, একটু রিলাক্স করো কারন কেসটা মনে হয় তোমার মাথায় চেপে বসেছে ,
নাহলে তিনটে মিকি মাউসের স্টিকার পেয়ে তুমি ভাবলে কি না কি ক্লু পেলে?
চলো কেসটা তাড়াতাড়ি শলভ করলে আমি তোমাকে তোমার একটা প্রিয় জিনিষ দেবো, বাই ”
বলে সহায় সাহেব ফোনটা কেটে দিলেও নিশিকান্ত কিন্তু চুপ করে, মাথার চুলে বিলি কাটতে কাটতে কি যেন ভাবতে লাগলো
ভগবান কিন্তু নিশিকান্তের জন্য হয়তো আরও অনেক কঠিন সময় সাজিয়ে রেখেছিলো,
নিশিকান্ত হয়তো সবে একটু গুছিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিলো,
অর্ণব আর ঋতুপর্ণার মৃত্যুকে, তখনই শুকনো আকাশে থেকে যেন একটা বাজই পরে নিশিকান্তের মাথায়, আর সেই বাজ ছিল আরও একটি দেহ।
এবার দেহটি পাওয়া যায় একটি নির্জন শ্মশানে, সেই মড়া নদীর খাত থেকে এই শ্মশানটা ঠিক চার কিলোমিটার দুরে আর এইবার দেহটি একটি মাঝবয়েসী পুরুষ মানুষের,
আর উনি কলকাতার এক কলেজ লেকচারার ছিলেন রসায়নের প্রফেসার ছিলেন, ওনার নাম ছিল ভৈরব হাজরা।
মৃত্যুর সময় ওনার পরনে ছিল দামী কোট, প্যান্ট আর ওনার পকেটেও ব্যাগ ভর্তি টাকা ছিল।
ভৈরব হাজরার পরিবার বলতে সেরকম কেউ ছিলনা, তিনি অকৃতদার ছিলেন ।
ওনার সংসার বলতে ওনার এক দূরসম্পর্কের ভাগ্নে ছাড়া কেউই ছিলনা।
সেই ভাগ্নের বাড়ীতেই এসেছিলেন ভৈরব বাবু আর তারপরেই এই ঘটনা।
নিশিকান্ত ওনার ভাগ্নে সুমিতের কাছে জানতে পারেন যে ভৈরব বাবু বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন,
আর উনি সামনের মাসেই ছুটিতে বাইরে চিকিৎসা করাতে যাবার কথা ভাবছিলেন আর তার আগে একটু ভাগ্নের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।
ভৈরব বাবু বরাবরই একটু প্রকৃতি প্রেমিক ছিলেন তাই সেই নদীর ধারে শ্মশানে প্রায় ঘুরতে যেতেন আর তারপরেই ওনার আচমকা মৃত্যু।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ভৈরব বাবুর মৃত্যুর কারন হিসাবে সেই হার্ট এট্যাক, তবে তা হটাত প্রেশার বেড়ে যাওয়ার জন্য।
এমনিতেই ভৈরববাবু হাই প্রেশারের রুগী ছিলেন আর নিয়মিত ওষুধও খেতেন,
তবে হয়তো সেই সময় তার সঙ্গে ওষুধ ছিলনা আর প্রেশার বেড়ে যাওয়াতে তার দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু।
নিশিকান্ত এবারও সুমিতবাবুকে একটা মামলা ঋজু করতে বললে, সুমিতবাবু নিশিকান্তের কাছে হাতজোড় করে বলেন
”সার মামা তো মারাই গেছেন ,এবার আর ওনাকে টানাহেঁচড়া না করে দয়া করে আমাকে ওনার শেষকৃত্য করতে দয়া করে অনুমতি দেন”।
এতদিন ধরে সহায় সাহেব চুপ করে ছিলেন, কারন ওনার ভরসা ছিল নিশিকান্তের ওপরে,
তাই দু দুটো অস্বাভাবিক মৃত্যু স্বত্তেও উনি নিশিকান্তকে কোনও চাপ দেননি,
তবে এইবার তিন নম্বর মৃত্যুর পরে সহায় সাহেব এক সকালে নিশিকান্তকে ফোন করেন আর খুব ক্যাসুয়ালি বলেন
” নিশি আভি মুড ক্যায়সা হ্যায় ? তুমহারে ইলাকা মে তিন তিন অজিব মৌত হও গ্যায়া ওর তুম ক্যায়া কর রহা হ্যায় ভাই?”
নিশিকান্ত তার জীবনে যত অফিসারের অধিনে কাজ করেছে তার মধ্য সে সব থেকে বেশী সম্মান এই সহায় সাহেবকেই করতো,
কারন সহায় সাহেব সারা জীবন নিজের পদন্নতির থেকে সবসময় তার জুনিয়ারদের সাফল্য বেশী খুশী হতেন,
তাই যেকোনো শক্ত কেসে উনি তার জুনিয়ারদের যথাসাধ্য হেল্প করলেও তার ক্রেডিট নিজে কক্ষনোই নিতে চাইতেন না,
তাই এই রকম একটা অফিসার যখন তাকে একটা ব্যাপারে দেখতে বলছে,
তখন সেটা নিশিকান্তের কাছে খুবই সম্মানে লাগলো কারন সহায় সাহেব কক্ষনোই তার জুনিয়ারদের প্রেশার দিতেন না।
নিশিকান্ত গম্ভীর গলায় সহায় সাহেবের প্রশ্নের জবাবে বলেন
” সার আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি, তবে একটা কথা আমি আপনাকে এখনই জানাতে পারি যে আমার এতদিনের অভিজ্ঞতা বলছে যে এই মৃত্যুগুলো কোনমতেই স্বাভাবিক নয়, হতেই পারেনা।
কারন পরপর তিনটে মৃত্যু আর সবগুলোর ধরন মোটামোটি একই।
তিনজনেই অসুস্থ ছিল, বাইরে চিকিৎসা করাতে যাবার কথা চলছিলো আর ঠিক বাইরে যাবার আগেই সবার মৃত্যু।
আরেকটা মিলও আছে সার এদের সবার মধ্য সেটা হল যে এরা সবাই কলেজে হয় পরে না হয় পড়ান আর সবাই বিজ্ঞানের কোন না কোন বিভাগের সঙ্গেই যুক্ত,
তবে সার এইসব তো কাকতালীয় হতে পারে কিন্তু দুটো পয়েন্ট আছে যেটা এই তিনটে মৃত্যুকে অন্তত একপয়েন্টে মিলিয়ে দিয়েছে,
সেটা হল সার এদের মৃত্যুর জায়গা সবই কিন্তু ওই নদীর ধারেই বা তার চার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্য,
আর সার যেটা আমার সব থেকে অদ্ভুত লেগেছে সেটা হল সবারই পরনে ভালো জামাকাপড় ছিল,
ব্যাগে টাঁকায় ভর্তি ছিল আর প্রত্যকের ব্যাগের মধ্যই সার আমি একটা অদ্ভুত জিনিষ খুজে পেয়েছে যেটা থেকেই আমার মনে হয়েছে যে এই তিনটে মৃত্যু কোনও না কোনও ভাবে অবশ্যই জড়িত”
সহায় সাহেব এতক্ষণ ধরে চুপচাপ নিশিকান্তের বিশ্লেষণ শুনে যাচ্ছিলেন, এবার নিশিকান্ত থামতেই তিনি আগ্রহের সঙ্গেই বলে উঠেন
”কি হলো এই ভাবে চুপ করে গেলে কেন? কি পেয়েছো বলই না!”
নিশিকান্ত এবার ফোনের ওপর প্রান্ত থেকে বলে উঠে
”সার আমি সত্যি করেই অদ্ভুত জিনিষ পেয়েছি, আমি তাদের প্রত্যাকের ব্যাগের মধ্যই একটা করে ”মিকি মাউসের” স্টিকার পেয়েছি সার”
এবার সহায় সাহেব শব্দ করে হেসে উঠে বলে
” নিশি তুমি কিছুদিন না হয় ছুটি নিয়েই নাও, একটু রিলাক্স করো কারন কেসটা মনে হয় তোমার মাথায় চেপে বসেছে ,
নাহলে তিনটে মিকি মাউসের স্টিকার পেয়ে তুমি ভাবলে কি না কি ক্লু পেলে?
চলো কেসটা তাড়াতাড়ি শলভ করলে আমি তোমাকে তোমার একটা প্রিয় জিনিষ দেবো, বাই ”
বলে সহায় সাহেব ফোনটা কেটে দিলেও নিশিকান্ত কিন্তু চুপ করে, মাথার চুলে বিলি কাটতে কাটতে কি যেন ভাবতে লাগলো
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!