23-07-2020, 10:01 PM
"" দুই""
পৃথার দু’কাধ তখনও হেমন্তর দুহাতে ধরা। ওর দুচোখ আবার টলটলিয়ে উঠল। ভাঙাস্বরে বলল, আমার নাম পৃথা কেন ? কে রেখেছিল আমার নাম ?
হেমন্ত পৃথার মাথায় হাত রেখে সস্নেহে বলল, “কেন, পৃথা নামটা তােমার পছন্দ নয় ? কুন্তীর-
একটা ঝটকা দিয়ে পিছিয়ে গেল পৃথা। সরােষে বলে উঠল, হ্যা, ওটা একটা বেশ্যারনাম!
হেমন্ত দু-এক মুহূর্ত থমকে থেকে বলল, সেটা তাে বিতর্কের বিষয়।
পৃথা অকপটে তৎক্ষণাৎ বলল, “কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা নয়। পাঁচটা পুরুসের মনােরঞ্জনের জন্য আমাকে যা করতে হয়— কথাটা শেষ করতে পারল না পৃথা। ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল।
হেমন্ত গম্ভীর হয়ে বলল, “কোনও নারী বেশ্যা হয়ে জন্মায় না। তার বদলে যাওয়া জীবনধারার পেছনে কোনও না কোনও কারণ থাকে। কুন্তীর জীবন যা ঘটেছিল—’
পৃথা কান্নারুদ্ধ স্বরে বলে উঠল, ‘আমার জীবনে তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।
হেমন্ত বলল, কী ঘটেছিল, আমি শুনতে চাই। তােমায় শপথ করে বলতে পারি তােমার সব কথা শােনার পরেও আমার ভালােবাসা এতটুকু ম্লান হবে না। শরীরি ভালােবাসার বাইরেও মানুষ অনেক কিছু দিতে পারে, অনেক কিছু নিতে পারে। বিশ্বাস আর অনুভূতিকে তাে আর অস্বীকার করা যায় না ! তুমি বল।
কান্না সামলে পৃথা বলল, ‘সেসব কথা আমার পক্ষে মুখে বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া কারও ভালােবাসার সঙ্গিনী হয়ে তাকে আমি ঠকাতে পারব না।
হেমন্ত যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলল, তুমি যদি বারবণিতাও হও, তাহলেও আমি তােমাকে বিয়ে করতে প্রস্তুত। তােমার জীবনের কোনও কথাই আমি আর শুনতে চাই না। কোনওদিন শুনতে চাইবও না।’
পৃথা নির্বিকারভাবে বলল, আমি তাে বারবণিতা নই ! আমি তার চেয়েও অধম।
হেমন্ত আহত বিস্ময়ে চেয়ে রইল পৃথার দিকে। একটি নারীর জীবনে বেশ্যাবৃত্তির চেয়েও অধম কী হতে পারে, তার কোনও কুলকিনারা করতে পারছে না ও।
কয়েক মুহূর্ত দুজনেই চুপচাপ। অবশেষে পৃথা বলল, ‘হেমন্ত, তােমার ভালােবাসায় কোনও ছলনা নেই, তােমার ভালােবাসা নিস্পাপ স্নিগ্ধ সরল—এটা আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু তােমার এই ভালােবাসা আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। প্রত্যাখ্যান করার সাহস বা যােগ্যতা কোনটাই আমার নেই। কিন্তু গ্রহণ করা সম্ভব নয় কেন, তা আমি তােমাকে লিখে জানাব। আমার জীবনে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের কথা জানতে পারলে তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে, আমি কত অসহায়, কত দুঃখে তোমার ভালোবাসাকে –
পৃথার স্বর ডুবে গেল।
পুবের আকাশ পুরােপুরি অন্ধকার। মাঝে মাঝে বিনতে চকে অন্ধকারকে চিরে দিচ্ছে হাওয়া এবং বৃষ্টির দাপট আবার বাড়তে শুরু করেছে। হেনস্ত পথৰু পায়ের কাছে হাঁটু মুড়ে বসে, মুখ তুলে অপলক তাকিয়ে রইল ওর বিধ্বস্ত ভেজা মখের দিকে।
দুদিন পরে পৃথার চিঠি পেল হেমন্ত। পৃথা লিখেছে
পৃথার দু’কাধ তখনও হেমন্তর দুহাতে ধরা। ওর দুচোখ আবার টলটলিয়ে উঠল। ভাঙাস্বরে বলল, আমার নাম পৃথা কেন ? কে রেখেছিল আমার নাম ?
হেমন্ত পৃথার মাথায় হাত রেখে সস্নেহে বলল, “কেন, পৃথা নামটা তােমার পছন্দ নয় ? কুন্তীর-
একটা ঝটকা দিয়ে পিছিয়ে গেল পৃথা। সরােষে বলে উঠল, হ্যা, ওটা একটা বেশ্যারনাম!
হেমন্ত দু-এক মুহূর্ত থমকে থেকে বলল, সেটা তাে বিতর্কের বিষয়।
পৃথা অকপটে তৎক্ষণাৎ বলল, “কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা নয়। পাঁচটা পুরুসের মনােরঞ্জনের জন্য আমাকে যা করতে হয়— কথাটা শেষ করতে পারল না পৃথা। ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল।
হেমন্ত গম্ভীর হয়ে বলল, “কোনও নারী বেশ্যা হয়ে জন্মায় না। তার বদলে যাওয়া জীবনধারার পেছনে কোনও না কোনও কারণ থাকে। কুন্তীর জীবন যা ঘটেছিল—’
পৃথা কান্নারুদ্ধ স্বরে বলে উঠল, ‘আমার জীবনে তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।
হেমন্ত বলল, কী ঘটেছিল, আমি শুনতে চাই। তােমায় শপথ করে বলতে পারি তােমার সব কথা শােনার পরেও আমার ভালােবাসা এতটুকু ম্লান হবে না। শরীরি ভালােবাসার বাইরেও মানুষ অনেক কিছু দিতে পারে, অনেক কিছু নিতে পারে। বিশ্বাস আর অনুভূতিকে তাে আর অস্বীকার করা যায় না ! তুমি বল।
কান্না সামলে পৃথা বলল, ‘সেসব কথা আমার পক্ষে মুখে বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া কারও ভালােবাসার সঙ্গিনী হয়ে তাকে আমি ঠকাতে পারব না।
হেমন্ত যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলল, তুমি যদি বারবণিতাও হও, তাহলেও আমি তােমাকে বিয়ে করতে প্রস্তুত। তােমার জীবনের কোনও কথাই আমি আর শুনতে চাই না। কোনওদিন শুনতে চাইবও না।’
পৃথা নির্বিকারভাবে বলল, আমি তাে বারবণিতা নই ! আমি তার চেয়েও অধম।
হেমন্ত আহত বিস্ময়ে চেয়ে রইল পৃথার দিকে। একটি নারীর জীবনে বেশ্যাবৃত্তির চেয়েও অধম কী হতে পারে, তার কোনও কুলকিনারা করতে পারছে না ও।
কয়েক মুহূর্ত দুজনেই চুপচাপ। অবশেষে পৃথা বলল, ‘হেমন্ত, তােমার ভালােবাসায় কোনও ছলনা নেই, তােমার ভালােবাসা নিস্পাপ স্নিগ্ধ সরল—এটা আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু তােমার এই ভালােবাসা আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। প্রত্যাখ্যান করার সাহস বা যােগ্যতা কোনটাই আমার নেই। কিন্তু গ্রহণ করা সম্ভব নয় কেন, তা আমি তােমাকে লিখে জানাব। আমার জীবনে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের কথা জানতে পারলে তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে, আমি কত অসহায়, কত দুঃখে তোমার ভালোবাসাকে –
পৃথার স্বর ডুবে গেল।
পুবের আকাশ পুরােপুরি অন্ধকার। মাঝে মাঝে বিনতে চকে অন্ধকারকে চিরে দিচ্ছে হাওয়া এবং বৃষ্টির দাপট আবার বাড়তে শুরু করেছে। হেনস্ত পথৰু পায়ের কাছে হাঁটু মুড়ে বসে, মুখ তুলে অপলক তাকিয়ে রইল ওর বিধ্বস্ত ভেজা মখের দিকে।
দুদিন পরে পৃথার চিঠি পেল হেমন্ত। পৃথা লিখেছে
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!