22-07-2020, 09:14 PM
(This post was last modified: 11-09-2020, 08:54 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
[২৩]
অনেক ভেবেছেন,কাল সারা রাত ভেবেছেন,চোখের জলে ভিজেছে বালিশ কিন্তু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি চায়না।নিজের স্বার্থ অপেক্ষা সন্তানের স্বার্থ মায়ের কাছে অনেক বড়। মঙ্গলার মা না থাকলেও লালু লিলি বড় হচ্ছে যদি জেনে ফেলে তাহলে মুখ দেখাবার জো থাকবেনা। দিলিপবাবু তাকে দেখেন খুব সম্মানের চোখে ভদ্রলোক জানতে পারলে কখনো কি তার সঙ্গে চোখে চোখ মিলিয়ে কথা বলতে পারবেন? কিন্তু মুখের উপর কিভাবে বলবে নীলকে কথাটা? enough is enough আর নয় আত্মসুখের মোহে কুযুক্তি খাড়া করে তার আড়ালে আশ্রয় নিতে চেয়েছিল।একেই বলে ভাবের ঘরে চুরি।নীলকে বুঝিয়ে বলবে,অনিতাকে বিয়ে করে সুখী হোক।তাতে সবার মঙ্গল। তাদের সম্পর্ক মহাদেববাবু মেনে নিতে পারবেন না। ভদ্রলোক প্রভাবশালী হেন কাজ নেই তার অসাধ্য।নীল আসলে বুঝিয়ে বলতে হবে।চিরকাল কেউ মাকে মনে রাখেনা,একসময় ভুলে যাবে মাতৃস্নেহের টান।সারাক্ষন একটা অস্থির অস্থির ভাব চায়নাকে স্বস্তি দিচ্ছেনা।
নীল কাগজ-পত্তর নিয়ে বেরিয়েছে,জেরক্স করতে হবে।জানিনা কি হবে শেষ অবধি,চেষ্টা করতে দোষ কি?মার্কশীট ইত্যাদি জেরক্স করে দোকানে গিয়ে দিতে ছেলেটি নীলকে একবার দেখল। নিরীহভাব করে নীল অপেক্ষা করে।ছেলেটি একটি প্যাকেট এগিয়ে দিল,দাম মিটিয়ে নীল পার্টি অফিসের দিকে পথ ধরে।আচমকা পল্টু সামনে এসে দাঁড়ায়।
–আপনাকে ম্যাডাম একবার বাড়িতে যেতে বললেন। বলে দ্রুত চলে গেল পল্টু।
ম্যাডাম মানে চায়না।যখন দোকানের কাছে গেছিল নিশ্চয়ই খেয়াল করেছে।কেন ডাকল এখন?কলিং বেল বাজাবার আগেই দরজা খুলে দিলেন চায়না।
–ভেতরে এসো,কথা আছে।
চায়নাকে বেশ গম্ভীর মনে হয়।অনুমান করার চেষ্টা করে কি এমন কথা?জরুরী কোন দরকার হলে ফোন করতে পারতো।সিড়ি বেয়ে উপরে ওঠে এল নীলু।
–কোথায় গেছিলে?
–কিছু জেরক্স করার দরকার ছিল।
চায়না লক্ষ্য করেন নীলের মধ্যে উচ্ছ্বাসের অভাব। কি আবার হল ইতিমধ্যে?
–তোমাকে কেমন অন্যমনস্ক লাগছে,কি ব্যাপার? চা খাবে তো?
নীলু জিজ্ঞেস করে,কেন ডেকেছো?
–বলছি।তোমার কি হয়েছে বলতো? কেমন উস্কোখুশকো ভাব।
–আমি হয়তো কলকাতায় চলে যাবো।মাথা নীচু করে মৃদুস্বরে বলে নীল।
চায়না স্বস্তি বোধ করেন।হঠাৎ কেন কলকাতায় যাবে,তাহলে কি নন্দপয়ালের ভয়ে মহাদেববাবু ছেলেকে সরিয়ে দিচ্ছেন?চায়না জিজ্ঞেস করেন,কেন কলকাতায় যেতে হবে কেন?
–তুমি কিছু মনে কোরনা মনা,আমাকে যেতেই হবে।তোমাকে আমি ভুলবো না।মাঝে মাঝে আসবো।
–দেখো আমি এত স্বার্থপর নই।তোমার ভাল হোক আমি চাই।মুস্কিল হচ্ছে মঙ্গলার মাকে নিয়ে। ভাব-গতিক একদম সুবিধের মনে হচ্ছেনা।তাছাড়া লালু বড় হচ্ছে,বুঝতেই পারছো–।
নীলু অবাক হয়ে চায়নাকে দেখে।তার মানে কলকাতায় যাওয়ার সংবাদে চায়নার খারাপ লাগছে না। স্নেহ প্রেম ভালবাসা সব মিথ্যে?নিজেকে নির্বোধ মনে হল।এই মহিলাকে কত সম্মান করতো,ঘুণাক্ষরে মনে হয়নি কোন দিন এমন কথা শুনতে হবে।উঠে দাঁড়ায় নীলু,চায়না জড়িয়ে ধরে চুমু খায়।গা ঘিন ঘিন করে,মনে হচ্ছে একটা মরা সাপ যেন কেউ গায়ে ছুড়ে দিয়েছে।
–হ্যা গো তুমি রাগ করলে?
–না না রাগ করার কি আছে?
–তুমি অনিতাকে বিয়ে করো।
–ধন্যবাদ।আমি আসি আণ্টি?
নীচে নেমে রান্না ঘরের দিকে নজর পড়তে মঙ্গলার বলল,চা হয়ে এল।
নীল কিছুক্ষন তাকিয়ে দেখল মঙ্গলার চোখে মুখে খুশি উপচে পড়ছে।মনে পড়ল বলেছিল তোমার জন্যি সব সময় খোলা।গ্যাসে জল ফুটছে মঙ্গলার মা ঝুকে দেখছে।নীলু পিছনে গিয়ে কাপড় উপরে তুলতে মঙ্গলার মা গাঁড় উচু করে ধরতে উরুর ফাকে ঠেলে উঠোল যোনী।নীলু বা হাত যোনীর উপর বোলায়।মঙ্গলার মা গ্যাসের টেবিলের উপর বা পা তুলে দিতে চেরা হা হয়ে গেল।মিট মিট করে হাসতে হাসতে জলে চা পাতা দিয়ে ঢেকে দিল।নীলুর সমস্ত রাগ মঙ্গলার মার উপর পড়ল।বাড়াটা বের করে পড়পড় করে গেথে দিল।সামনে দিকে ঝুকে চা বানাতে থাকে।নীলু ফচর-ফচর ঠাপিয়ে চলেছে।মঙ্গলার মা দুলে দুলে চা বানাতে থাকে।
--কিরে চা বানাতে বুড়ি হয়ে গেলে নাকি?উপর থেকে চায়নার গলা পাওয়া যায়।
--আসতেছি।মঙ্গলারমা টেবিল থেকে পা নামিয়ে এককাপ চা এগিয়ে দিয়ে বলল,মাস্টার সাব এক মিনিট যাব আর আসব।পাছার কাপড় নামিয়ে চায়ের কাপ নিয়ে উপরে চলে গেল।
চায়ের কাপ রেখে নীল দ্রুত বেরিয়ে গেল।নিজেকে কেমন নিঃস্ব একাকী মনে হয়। জানকি কলকাতায় পড়ার ব্যবস্থা করে দেবে বলায় উৎসাহিত হলেও মনে ছিল একটা দ্বিধার ভাব।মনাকে ছেড়ে কিভাবে থাকবে? মনার কথায় দ্বিধা কেটে গেলেও একটা বিষন্নতা গ্রাস করে নীলকে। মানুষের মন বড় বিচিত্র, প্রকৃতই কি চায় মন নিজেই তা জানে না।পার্টি অফিসের নীচে দলবল সহ দাঁড়িয়ে আছে নন্দপয়াল।নীল একমুহূর্ত ইতস্তত করে এগোতে যাবে একটি ছেলে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে,কোথায় যাবে নীলদা?
–আমাকে কমরেড জানকি পাণ্ডা আসতে বলেছিলেন।নীল বলে।
ওরা পরস্পর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে বলে,তুমি একটু দাড়াও।ছেলেটি সিড়ি বেয়ে উপরে চলে গেল। নীলেরর মনে হল দরকার নেই দেখা করার ফিরে যাবে।নন্দপয়াল অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে আছে। ছেলেটি এসে বলল, যাও,উপরে উঠে শেষ প্রান্তে বা-দিকের ঘরে ম্যাডাম বসেন।
সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে এল নীল।এর আগে কোনদিন পার্টি অফিসে আসেনি।হোটেলের মত সারি সারি কক্ষ।একেবারে শেষ দিকে বা-হাতি,পর্দা সরিয়ে উকি দিতে জানকি বললেন,এসো।
জানকির সামনে বসে হৃষিকেশ মাইতি।নীলকে দেখে বললেন,দাদা কি বাড়িতে?
নীল বুঝতে পারে দাদা মানে বাবার কথা বলল,আমি খুব সকালে বের হয়েছি।তখন ছিল।
–কমরেড আপনি আর কিছু বলবেন? জানকি জিজ্ঞেস করেন।
হৃষিকেশবাবু উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,না আমি আসি।আপনি পরশু চলে যাবেন?
জানকি হাসলেন,নীলের দিকে তাকিয়ে বলেন,তুমি বোসো।
হৃষিকেশবাবু চলে যেতে জানকি বলেন,এনেছো দাও।
নীলু পকেটে হতে জেরক্স গুলো বের করে এগিয়ে দিল।সার্টিফিকেট গুলো দেখে বলেন,ও বাবা ফিজিক্স অনার্স?তুমি এম.এস.সি পড়ো?
ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন জানকি কিছুক্ষন পর ফিরে এসে বলেন,তোমাকে এরকম বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে কেন?শরীর ভাল তো?
–তোমাকে আমার অনেক কথা বলার আছে–আমি–আমি–।
কমরেড চপলা ঢুকতে কথা শেষ হয়না।সঙ্গে একজন মহিলা যাকে মঞ্চে দেখেছিল।মহিলাকে আদিবাসি মনে হলনা।
–বসুন কমরেড।
কমরেড চপলা জিজ্ঞেস করেন,ছেলেটি কে? মনে হচ্ছে বাঙালি?
–হ্যা বাঙালি কিন্তু ছেলেটি আমার অত্যন্ত প্রিয়?আপনি কলকাতায় গিয়ে ব্যবস্থা করে খবর দেবেন।
–খুব প্রিয়? চপলার কথায় রহস্যের আভাস।
নীলের বুকের মধ্যে শিহরণ খেলে যায়,মাথা নীচু করে বসে থাকে। লাজুক হেসে জানকি বলেন,প্লিজ অন্য কিছু সন্ধান করতে যাবেন না।চপলার সঙ্গী মহিলাকে জিজ্ঞেস করেন, রেশমা কেমন আছেন?
সঙ্গী মহিলা বলেন,ভাল।দিদি আপনি তো আর আমাদের ওখানে গেলেন না?
–হ্যা এবার যাবো।
কাগজ-পত্তর নিয়ে ওরা চলে যেতে গিয়ে ফিরে আসেন।কমরেড চপলা বলেন,আপনি আমার লিডার অনুমতি দিলে একটা কথা বলতে পারি।
–কি ব্যাপারে?
–কমরেড এবার আপনি একটা বিয়ে করুন,অনেকদিন তো হল,জীবনে একজন সাথী বড় প্রয়োজন।
কথাটা বলে ওরা বেরিয়ে গেল,জানকি উদাস ভাবে সেদিকে তাকিয়ে থাকেন।
–আচ্ছা ওই রেশমা কে?নীল জিজ্ঞেস করল।
–ওর একটা পরিচয় চপলার সেক্রেটারি।চপলা বাঁকুড়ার মেয়ে,ওর স্বামী থাকে বাঁকুড়ায়। কলকাতায় রেশমীর সঙ্গে থাকে।রেশমী খাতুনও বাঁকুড়ার মেয়ে।বিবাহিতে কিন্তু তালাক দিয়েছে ওকে?
–তালাক? মানে উনি '.?
–হ্যা রেশমী খাতুন গ্রাজুয়েট।চপলা মাধ্যমিক পাস,ভাল সংগঠক।
সব শুনে নীল বিস্ময়ের অবধি থাকেনা। জিজ্ঞেস করে,পার্টি এসব জানেনা?
–পার্টি কারো ব্যক্তিগত ব্যাপারে মাথা ঘামায় না।আচ্ছা তোমাকে এত আপসেট লাগছে কেন?
--কমরেড আমার মন খুব খারাপ।
জানকি বুঝতে পারেন কিছু একটা হয়েছে।বললেন,এখন থাক পরে শুনব।
অনেক ভেবেছেন,কাল সারা রাত ভেবেছেন,চোখের জলে ভিজেছে বালিশ কিন্তু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি চায়না।নিজের স্বার্থ অপেক্ষা সন্তানের স্বার্থ মায়ের কাছে অনেক বড়। মঙ্গলার মা না থাকলেও লালু লিলি বড় হচ্ছে যদি জেনে ফেলে তাহলে মুখ দেখাবার জো থাকবেনা। দিলিপবাবু তাকে দেখেন খুব সম্মানের চোখে ভদ্রলোক জানতে পারলে কখনো কি তার সঙ্গে চোখে চোখ মিলিয়ে কথা বলতে পারবেন? কিন্তু মুখের উপর কিভাবে বলবে নীলকে কথাটা? enough is enough আর নয় আত্মসুখের মোহে কুযুক্তি খাড়া করে তার আড়ালে আশ্রয় নিতে চেয়েছিল।একেই বলে ভাবের ঘরে চুরি।নীলকে বুঝিয়ে বলবে,অনিতাকে বিয়ে করে সুখী হোক।তাতে সবার মঙ্গল। তাদের সম্পর্ক মহাদেববাবু মেনে নিতে পারবেন না। ভদ্রলোক প্রভাবশালী হেন কাজ নেই তার অসাধ্য।নীল আসলে বুঝিয়ে বলতে হবে।চিরকাল কেউ মাকে মনে রাখেনা,একসময় ভুলে যাবে মাতৃস্নেহের টান।সারাক্ষন একটা অস্থির অস্থির ভাব চায়নাকে স্বস্তি দিচ্ছেনা।
নীল কাগজ-পত্তর নিয়ে বেরিয়েছে,জেরক্স করতে হবে।জানিনা কি হবে শেষ অবধি,চেষ্টা করতে দোষ কি?মার্কশীট ইত্যাদি জেরক্স করে দোকানে গিয়ে দিতে ছেলেটি নীলকে একবার দেখল। নিরীহভাব করে নীল অপেক্ষা করে।ছেলেটি একটি প্যাকেট এগিয়ে দিল,দাম মিটিয়ে নীল পার্টি অফিসের দিকে পথ ধরে।আচমকা পল্টু সামনে এসে দাঁড়ায়।
–আপনাকে ম্যাডাম একবার বাড়িতে যেতে বললেন। বলে দ্রুত চলে গেল পল্টু।
ম্যাডাম মানে চায়না।যখন দোকানের কাছে গেছিল নিশ্চয়ই খেয়াল করেছে।কেন ডাকল এখন?কলিং বেল বাজাবার আগেই দরজা খুলে দিলেন চায়না।
–ভেতরে এসো,কথা আছে।
চায়নাকে বেশ গম্ভীর মনে হয়।অনুমান করার চেষ্টা করে কি এমন কথা?জরুরী কোন দরকার হলে ফোন করতে পারতো।সিড়ি বেয়ে উপরে ওঠে এল নীলু।
–কোথায় গেছিলে?
–কিছু জেরক্স করার দরকার ছিল।
চায়না লক্ষ্য করেন নীলের মধ্যে উচ্ছ্বাসের অভাব। কি আবার হল ইতিমধ্যে?
–তোমাকে কেমন অন্যমনস্ক লাগছে,কি ব্যাপার? চা খাবে তো?
নীলু জিজ্ঞেস করে,কেন ডেকেছো?
–বলছি।তোমার কি হয়েছে বলতো? কেমন উস্কোখুশকো ভাব।
–আমি হয়তো কলকাতায় চলে যাবো।মাথা নীচু করে মৃদুস্বরে বলে নীল।
চায়না স্বস্তি বোধ করেন।হঠাৎ কেন কলকাতায় যাবে,তাহলে কি নন্দপয়ালের ভয়ে মহাদেববাবু ছেলেকে সরিয়ে দিচ্ছেন?চায়না জিজ্ঞেস করেন,কেন কলকাতায় যেতে হবে কেন?
–তুমি কিছু মনে কোরনা মনা,আমাকে যেতেই হবে।তোমাকে আমি ভুলবো না।মাঝে মাঝে আসবো।
–দেখো আমি এত স্বার্থপর নই।তোমার ভাল হোক আমি চাই।মুস্কিল হচ্ছে মঙ্গলার মাকে নিয়ে। ভাব-গতিক একদম সুবিধের মনে হচ্ছেনা।তাছাড়া লালু বড় হচ্ছে,বুঝতেই পারছো–।
নীলু অবাক হয়ে চায়নাকে দেখে।তার মানে কলকাতায় যাওয়ার সংবাদে চায়নার খারাপ লাগছে না। স্নেহ প্রেম ভালবাসা সব মিথ্যে?নিজেকে নির্বোধ মনে হল।এই মহিলাকে কত সম্মান করতো,ঘুণাক্ষরে মনে হয়নি কোন দিন এমন কথা শুনতে হবে।উঠে দাঁড়ায় নীলু,চায়না জড়িয়ে ধরে চুমু খায়।গা ঘিন ঘিন করে,মনে হচ্ছে একটা মরা সাপ যেন কেউ গায়ে ছুড়ে দিয়েছে।
–হ্যা গো তুমি রাগ করলে?
–না না রাগ করার কি আছে?
–তুমি অনিতাকে বিয়ে করো।
–ধন্যবাদ।আমি আসি আণ্টি?
নীচে নেমে রান্না ঘরের দিকে নজর পড়তে মঙ্গলার বলল,চা হয়ে এল।
নীল কিছুক্ষন তাকিয়ে দেখল মঙ্গলার চোখে মুখে খুশি উপচে পড়ছে।মনে পড়ল বলেছিল তোমার জন্যি সব সময় খোলা।গ্যাসে জল ফুটছে মঙ্গলার মা ঝুকে দেখছে।নীলু পিছনে গিয়ে কাপড় উপরে তুলতে মঙ্গলার মা গাঁড় উচু করে ধরতে উরুর ফাকে ঠেলে উঠোল যোনী।নীলু বা হাত যোনীর উপর বোলায়।মঙ্গলার মা গ্যাসের টেবিলের উপর বা পা তুলে দিতে চেরা হা হয়ে গেল।মিট মিট করে হাসতে হাসতে জলে চা পাতা দিয়ে ঢেকে দিল।নীলুর সমস্ত রাগ মঙ্গলার মার উপর পড়ল।বাড়াটা বের করে পড়পড় করে গেথে দিল।সামনে দিকে ঝুকে চা বানাতে থাকে।নীলু ফচর-ফচর ঠাপিয়ে চলেছে।মঙ্গলার মা দুলে দুলে চা বানাতে থাকে।
--কিরে চা বানাতে বুড়ি হয়ে গেলে নাকি?উপর থেকে চায়নার গলা পাওয়া যায়।
--আসতেছি।মঙ্গলারমা টেবিল থেকে পা নামিয়ে এককাপ চা এগিয়ে দিয়ে বলল,মাস্টার সাব এক মিনিট যাব আর আসব।পাছার কাপড় নামিয়ে চায়ের কাপ নিয়ে উপরে চলে গেল।
চায়ের কাপ রেখে নীল দ্রুত বেরিয়ে গেল।নিজেকে কেমন নিঃস্ব একাকী মনে হয়। জানকি কলকাতায় পড়ার ব্যবস্থা করে দেবে বলায় উৎসাহিত হলেও মনে ছিল একটা দ্বিধার ভাব।মনাকে ছেড়ে কিভাবে থাকবে? মনার কথায় দ্বিধা কেটে গেলেও একটা বিষন্নতা গ্রাস করে নীলকে। মানুষের মন বড় বিচিত্র, প্রকৃতই কি চায় মন নিজেই তা জানে না।পার্টি অফিসের নীচে দলবল সহ দাঁড়িয়ে আছে নন্দপয়াল।নীল একমুহূর্ত ইতস্তত করে এগোতে যাবে একটি ছেলে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে,কোথায় যাবে নীলদা?
–আমাকে কমরেড জানকি পাণ্ডা আসতে বলেছিলেন।নীল বলে।
ওরা পরস্পর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে বলে,তুমি একটু দাড়াও।ছেলেটি সিড়ি বেয়ে উপরে চলে গেল। নীলেরর মনে হল দরকার নেই দেখা করার ফিরে যাবে।নন্দপয়াল অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে আছে। ছেলেটি এসে বলল, যাও,উপরে উঠে শেষ প্রান্তে বা-দিকের ঘরে ম্যাডাম বসেন।
সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে এল নীল।এর আগে কোনদিন পার্টি অফিসে আসেনি।হোটেলের মত সারি সারি কক্ষ।একেবারে শেষ দিকে বা-হাতি,পর্দা সরিয়ে উকি দিতে জানকি বললেন,এসো।
জানকির সামনে বসে হৃষিকেশ মাইতি।নীলকে দেখে বললেন,দাদা কি বাড়িতে?
নীল বুঝতে পারে দাদা মানে বাবার কথা বলল,আমি খুব সকালে বের হয়েছি।তখন ছিল।
–কমরেড আপনি আর কিছু বলবেন? জানকি জিজ্ঞেস করেন।
হৃষিকেশবাবু উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,না আমি আসি।আপনি পরশু চলে যাবেন?
জানকি হাসলেন,নীলের দিকে তাকিয়ে বলেন,তুমি বোসো।
হৃষিকেশবাবু চলে যেতে জানকি বলেন,এনেছো দাও।
নীলু পকেটে হতে জেরক্স গুলো বের করে এগিয়ে দিল।সার্টিফিকেট গুলো দেখে বলেন,ও বাবা ফিজিক্স অনার্স?তুমি এম.এস.সি পড়ো?
ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন জানকি কিছুক্ষন পর ফিরে এসে বলেন,তোমাকে এরকম বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে কেন?শরীর ভাল তো?
–তোমাকে আমার অনেক কথা বলার আছে–আমি–আমি–।
কমরেড চপলা ঢুকতে কথা শেষ হয়না।সঙ্গে একজন মহিলা যাকে মঞ্চে দেখেছিল।মহিলাকে আদিবাসি মনে হলনা।
–বসুন কমরেড।
কমরেড চপলা জিজ্ঞেস করেন,ছেলেটি কে? মনে হচ্ছে বাঙালি?
–হ্যা বাঙালি কিন্তু ছেলেটি আমার অত্যন্ত প্রিয়?আপনি কলকাতায় গিয়ে ব্যবস্থা করে খবর দেবেন।
–খুব প্রিয়? চপলার কথায় রহস্যের আভাস।
নীলের বুকের মধ্যে শিহরণ খেলে যায়,মাথা নীচু করে বসে থাকে। লাজুক হেসে জানকি বলেন,প্লিজ অন্য কিছু সন্ধান করতে যাবেন না।চপলার সঙ্গী মহিলাকে জিজ্ঞেস করেন, রেশমা কেমন আছেন?
সঙ্গী মহিলা বলেন,ভাল।দিদি আপনি তো আর আমাদের ওখানে গেলেন না?
–হ্যা এবার যাবো।
কাগজ-পত্তর নিয়ে ওরা চলে যেতে গিয়ে ফিরে আসেন।কমরেড চপলা বলেন,আপনি আমার লিডার অনুমতি দিলে একটা কথা বলতে পারি।
–কি ব্যাপারে?
–কমরেড এবার আপনি একটা বিয়ে করুন,অনেকদিন তো হল,জীবনে একজন সাথী বড় প্রয়োজন।
কথাটা বলে ওরা বেরিয়ে গেল,জানকি উদাস ভাবে সেদিকে তাকিয়ে থাকেন।
–আচ্ছা ওই রেশমা কে?নীল জিজ্ঞেস করল।
–ওর একটা পরিচয় চপলার সেক্রেটারি।চপলা বাঁকুড়ার মেয়ে,ওর স্বামী থাকে বাঁকুড়ায়। কলকাতায় রেশমীর সঙ্গে থাকে।রেশমী খাতুনও বাঁকুড়ার মেয়ে।বিবাহিতে কিন্তু তালাক দিয়েছে ওকে?
–তালাক? মানে উনি '.?
–হ্যা রেশমী খাতুন গ্রাজুয়েট।চপলা মাধ্যমিক পাস,ভাল সংগঠক।
সব শুনে নীল বিস্ময়ের অবধি থাকেনা। জিজ্ঞেস করে,পার্টি এসব জানেনা?
–পার্টি কারো ব্যক্তিগত ব্যাপারে মাথা ঘামায় না।আচ্ছা তোমাকে এত আপসেট লাগছে কেন?
--কমরেড আমার মন খুব খারাপ।
জানকি বুঝতে পারেন কিছু একটা হয়েছে।বললেন,এখন থাক পরে শুনব।