22-07-2020, 10:31 AM
"" ষোল""
এভাবেই দিন কাটছিলো। ওদিকে মিঠুর জন্য নাকি মেয়ে খুজতেছে মেশো মহাশয়। ছেলে বড় হয়েছে এমনিতেই অনেকটা বখে গেছে তারপরও এখনো বিয়ে না দিলে নাকি আরো বখে যাবে। উনাদের কথা ঘরে বউ আনলে নাকি ছেলেরা টাইট থাকে । কি জানি সত্যি কিনা, বাবা মা থাকলে আমার জন্যও হয়ত আজ পাএী খু্জতো। বুক থেকে এক দীর্ঘশ্বা বেড়িয়ে এল। না ভালো লাগছে না সিগারেট নিয়ে বারান্দায় গেলাম, বসে সিগারেট টানছি হঠাৎ দেখি ও বাড়ির বারান্দায় সেই মেয়েটি চোখাচোখি হয়ে গেল , নিজেকে লুকানোর আগেই হাতের ইশারায় কি জানি বললো , ভাবটা এমন কি সমস্যা ?? না আর এখানে থাকা যায়না। উফ আজ কলেজ নাই নাকি !? শালা নিজের ঘরেও আমি কেমন চোরের মত। বিকালের দিকে একটু হাঁটতে বের হলাম ভাবলাম যাই মিঠুর দোকানের দিকে। যেয়ে দেখি মেশো নাই মিঠু বললো ভিতরে আয়। ভিতরে যেয়ে দু জন গল্প করছি ,, আমি বললাম কিরে শালা তোর তো একটা হিল্লে হয়ে যাচ্ছে। পার্মানেন্টগুদ । ধুর বাজে বকিস না এখন দেখছে মাএ , এখন কার মেয়ের বাপেরা চাকরিজীবি ছাড়া বিয়েই দিতে চায়। আর আমি তো কোথাকার শালা.......!! দাদা আপনার দোকানে ভাল নুডলস হবে ??
একটা কোকিল কন্ঠের সুরেলা ডাকে দুজনের গল্প থেমে গেল , আমি সামনে তাকিয়ে দেখি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক অপরুপ সুন্দরী,সদ্য ফোটা পদ্মের মত মুখমন্ডল, মায়বী হরিণের ন্যায় চোখ,যেন স্বেত পাথরের মূতি, উন্নত বক্ষযুগল সগৌরবে দাড়িয়ে আছে যদি সবটাই কাপড়ে ঢাকা, সাপের মত এঁকে বেঁকে সরু কোমড় ছাড়িয়ে উন্নত পশ্চাৎদেশ ।মুখে একটা রক্তিম আভা, সব মিলিয়ে স্বগের অপস্বরা।
আমার চোখের পলক পরছে না ওদিকে ততক্ষ মিঠু উঠে সামনে চলে গেছে। ওহ দিদি কেমন আছেন? আবার সেই সুরেলা কনঠ হা দাদা ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? হা ভালো তো কি লাগবে বলছিলেন ? তারপর মিঠু মহিলার ফরমাস মতো জিনিস দিতে থাকে।এবার উনার সাথে চোখাচোখি হতেই আমি চোখ ফিরেছে নিই। ভদ্র মহিলার জিনিস কেনা শেষ হলে। আবার মুক্তার মত দাঁত বের করে এক ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে মিঠুকে বললো ,আচ্ছা দাদা তো ভাল থাকবেন। বলে তরুলতার মত দুলতে দুলতে চলে গেলেন।
উনি চলে যেতেই মিঠু বললো কি বন্ধু একেবারে ফিদা নাকি। ধ্যাত ! কিন্তু সত্যি আসাধণ দেখতে আর কি ভালো ব্যবহার। মিঠু বললো তাহলে আর কি কাজে লেগে পর। দেখ ভাই একই সেন্টিমেন্ট দিয়ে জীবন চলে না। আমি বললাম ওকে ভেবে দেখবো । এখন যাই রে বড্ড সিগারেটের নেশা লাগছে তোর দোকানে বসে তো আর সেটা হবেনা।
মিঠুর দোকান থেকে বের হয়ে সিগারেট টানতে টানতে বাড়ির পথে পা বাড়ালাম। মনে মনে ভাবছি ধুর উনার নাম টাও জানি না মিঠু জানে কিনা সেটা জানিনা। আবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো মৌয়ের স্মৃতি । কতো ভালবাসতাম ওকে । ইতিহাস সাক্ষী আছে প্রেম করে সব সময় ছেলেরাই মরেছে, সেটা শরৎচন্দের দেবদাস হোক কিংবা টাইটানিক মুভির জ্যাক।
পরদিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে হোটেলে নাস্তা করে হাঁটতে হাঁটতে পাড়ার রাস্তার মোড় তারপর রিক্সা নিয়ে বৈকালির মোড় তারপর অটো নিয়ে খুলনা মিনা বাজার. উদ্দেশ্য ব্যাংক। হাতের টাকা শেষের দিকে। ব্যাংকের কাজ সেরে ফিরে আসবো মেইন রাস্তায় এসে দেখি একটাও অটো নাই । কিছুক্ অপেক্ষা করারপর একটা অটো আসতে দেখে সিগন্যাল দিতেই দাঁড়িয়ে গেলো। আমি বৈকালির মোড় যাবো বলে উঠেই থ মেরে গেলাম অটোতে শুধু একজন যাএী বসে আছে,সে আর কেও না। সেই ভদ্র মহিলা।
আমি উনার পাশে না বসে উনার সামনের ছিটে উনার দিকে মুখ করে বসলাম। যেহেতু আগে দেখেছি আর একই পাড়ায় থাকছি তাই সাহস করে বলি, বাসায় যাচ্ছেন ?? উনি এবার আমার দিকে সরাসরি তাকিয়ে বললেন । হুম। আপনি ?? আমি বললাম আমিও । অহ। যদিও আমি জানি উনি কি করেন তবুও আমি আবার বললাম কোথা থেকে আসছেন ? উনি একই ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন কলেজ থেকে। অহ আপনি কলেজে পড়েন ? ছোট উত্তর না পড়াই । যদিও উনি শান্তভাবে থাকিয়ে কথা বলছে তবুও আমি ভিতরে ভিতরে কাঁপছি। আর সেটা আমার চোখে মুখে নিশ্চয় ফুটে উঠছে। তাই এবার প্রশ্নটা উনার দিক থেকে আসলো। আপনি তো লুকিয়ে লুকিয়ে রোজ আমাকে দেখেন তাহলে এখন সামনে পেয়েও ভালো করে না দেখে অমন কাঁপছেন কেন ?
আমার সত্যি এবার কাঁপুনির সাথে সাথে মনে হলো শরীরের এক কেজি রক্ত ও শুকিয়ে গেলো। তারমানে উনি আমাকে চিনে ফেলেছে। আর সেদিন মুদি দোকানেও চিনেছে তাহলে তখন কিছু বললো না কেন! এগুলো আমি মনে মনে ভাবছি। আর উনি বললেন আর সেদিন দোকানে আপনি একা ছিলেন না , একজনের সামনে আপনাকে একথা বলাটা আমার কাছে উচিত মনে হয়নি। আমি বললাম মানে?? একই রকম শান্ত ভাবে বললেন , আপনি তো মনে মনে এটাই ভাবছেন। এবার আমার আরো এক কেজি রক্ত শুকানোর পালা। কারণ পাঠকগণ নিশ্চয় জানেন যে আমি যার সামনে বসে আছি সে যদি আপনার মন পড়তে পারে তাহলে এর থেকে অসহায় অবস্থা আর কিছু হতে পারেনা।
রাস্তায় আর কোন কথা হলো না। অটো থেকে নেমে দুজন দুটা রিক্সা নিলাম , মোড়ে নেমে উনি আগে আগে হেঁটে চলে যাচ্ছে ,আমি পিছে কিছু বলবো কিনা ভাবছি। তারপর আপন মনে বলে উঠলাম,এই যে শুনুন ,ভদ্র মহিপিছ ফিরে তাকালো আমি একটু কাছে যেয়ে বললাম। সরি ওভাবে লুকিয়ে দেখার জন্য !কিন্তু আপনি আমার মনের কথা বুঝলেন কি করে?উনি বললেন দেখুন ওটা আমার অনুমান ।তাছাড়া কলেজে আমার বিষয় মনোবিজ্ঞান তাই একটু আধটু জ্ঞান তো আছেই। আর কিছু ?? না মানে আপনার নাম টা যদি ! হৃতম্ভরী ! বাবা এতো বড় নাম ! শুধু হৃতমআগে পিছে কিছুনাই ? ও বললো কেন আপনি কি আমার শ্রাদ শান্তি করবেন নাকি যে আমার বংশ পরিচয় ও দিতে হবে । এ কথা বলেই সাদা দাঁতের ঝিলিক দেখিয়ে ছোট করে হাসলেন। তারপর বললো হৃতম্ভরী ঘোষ। ছোট করে আপনি ঋতু বলতে পারেন। আমার মা আমাকে ওই নামেই ডাকে। ওহ সুন্দর নাম । আমি আবির সেইম কাষ্ট, কোন ছোট বড় নাম নাই। নাইস নেম ! আচ্ছা আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি আসি,বলে ছোট একটা হাঁসি দিয়ে আমাকে দংশন করে সাপের মত দুলতে দুলতে চলে গেল।
হঠাৎ মনটা খুশিতে ভরে গেল, আমি কি আবার প্রেমে পরতে যাচ্ছি। না এই খুশিতে আজ একটু গাঁজা না হলেই নয়। মিঠু কে ফোনে বললাম রাতে বাসায় আসতে। রাতে মিঠু আসলে দুজন গাঁজায় টান দিতে দিতে ওকে আজকের সব কথা বললাম। মিঠু বললো ওহ গুরু দারুন খেলছো , লেগে থাকো হয়ে যাবে।
পরদিন বিকাল ৩ টা আমি দাঁড়িয়ে আছি পাঁড়ার রাস্তার মোড়ে ,উদ্দেশ্য রতুকে দেখা , বৈকালি মোড়ে যেতে পারতাম কিন্তু সেখান থেকে তো আলাদাই আসতে হতো তাই এখানেই আছি। সময় যেন যায় না কলেজ কি এখনো শেষ হয়নি। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে এক সুখটান দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি ঋতু আসছে।
আমার কাছাকাছি আসতেই বললো কি ব্যাপার এই দুপুর বেলা আপনি এখানে ? আমি বললাম না এমনি একটু কাজ ছিলো তাই। শেষ হয়ে গেছে এখনি ফিরবো চলুন আপনার সাথেই যাই। দুজন হাঁটছি কারো মুখে কোন কথা নেই। এবার ঋতুই বলে উঠলো তো কতোক্ষন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ? আমি থতোমতো খেয়ে বললাম মানে ? ঋতু আবার মিষ্টি একটা হাঁসি দিয়ে বললো, আপনি তো আমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। কি তাই না ? উফ কি সাংঘাতিক মেয়ে সব বুঝে যায় । আমি বললাম না না না হা,,,,!!
এবার ঋতু বললো দেখুন আমি এখানে নতুন... আপনাকে ভালো মনে হয়েছে তাই কথা বলছি তাই বলে আপনি অন্য সবার সাথে আমাকে গুলিয়ে ফেলবেন না। বর্তমান সময়ে যতোই মেয়েদের সমান অধিকার কিংবা সব জায়গায় চাকরি করার সুযোগ পাক না কেন? মেয়েদের চাকরির ক্ষেএে অথবা বাইরে চলার ক্ষেএে সমস্যাটা একই রয়ে গেছে। তাই আপনি যে আমার জন্য ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেটা আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা। নানা জায়গায় নানান পুরুষকে পাশ কাঁটিয়েই আমাকে এখানে আসতে হয়েছে। তাই আপনার কিছু বলার থাকলে সরাসরি বলুন , কিন্তু রাস্তা ঘাটে আমার পিছু নিবেন না।
আমি বললাম হা আমার কিছু বলার আছে, ঋতু বললো ওকে কাল আপনি ৩ টার সময় বৈকালির মোড়ে থাকবেন । আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু আপনিটা কি তুমি করে! ঋতু আমাকে হাত উচু করে থামিয়ে দিলো ,,,বললো সেটা কাল ভেবে দেখা যাবে আমি এখন যাচ্ছি বলে গট গট করে চলে গেলো। একদিকে আনন্দ অন্য দিকে টেনশন ,না জানি কাল কি বলবো!
এভাবেই দিন কাটছিলো। ওদিকে মিঠুর জন্য নাকি মেয়ে খুজতেছে মেশো মহাশয়। ছেলে বড় হয়েছে এমনিতেই অনেকটা বখে গেছে তারপরও এখনো বিয়ে না দিলে নাকি আরো বখে যাবে। উনাদের কথা ঘরে বউ আনলে নাকি ছেলেরা টাইট থাকে । কি জানি সত্যি কিনা, বাবা মা থাকলে আমার জন্যও হয়ত আজ পাএী খু্জতো। বুক থেকে এক দীর্ঘশ্বা বেড়িয়ে এল। না ভালো লাগছে না সিগারেট নিয়ে বারান্দায় গেলাম, বসে সিগারেট টানছি হঠাৎ দেখি ও বাড়ির বারান্দায় সেই মেয়েটি চোখাচোখি হয়ে গেল , নিজেকে লুকানোর আগেই হাতের ইশারায় কি জানি বললো , ভাবটা এমন কি সমস্যা ?? না আর এখানে থাকা যায়না। উফ আজ কলেজ নাই নাকি !? শালা নিজের ঘরেও আমি কেমন চোরের মত। বিকালের দিকে একটু হাঁটতে বের হলাম ভাবলাম যাই মিঠুর দোকানের দিকে। যেয়ে দেখি মেশো নাই মিঠু বললো ভিতরে আয়। ভিতরে যেয়ে দু জন গল্প করছি ,, আমি বললাম কিরে শালা তোর তো একটা হিল্লে হয়ে যাচ্ছে। পার্মানেন্টগুদ । ধুর বাজে বকিস না এখন দেখছে মাএ , এখন কার মেয়ের বাপেরা চাকরিজীবি ছাড়া বিয়েই দিতে চায়। আর আমি তো কোথাকার শালা.......!! দাদা আপনার দোকানে ভাল নুডলস হবে ??
একটা কোকিল কন্ঠের সুরেলা ডাকে দুজনের গল্প থেমে গেল , আমি সামনে তাকিয়ে দেখি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক অপরুপ সুন্দরী,সদ্য ফোটা পদ্মের মত মুখমন্ডল, মায়বী হরিণের ন্যায় চোখ,যেন স্বেত পাথরের মূতি, উন্নত বক্ষযুগল সগৌরবে দাড়িয়ে আছে যদি সবটাই কাপড়ে ঢাকা, সাপের মত এঁকে বেঁকে সরু কোমড় ছাড়িয়ে উন্নত পশ্চাৎদেশ ।মুখে একটা রক্তিম আভা, সব মিলিয়ে স্বগের অপস্বরা।
আমার চোখের পলক পরছে না ওদিকে ততক্ষ মিঠু উঠে সামনে চলে গেছে। ওহ দিদি কেমন আছেন? আবার সেই সুরেলা কনঠ হা দাদা ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? হা ভালো তো কি লাগবে বলছিলেন ? তারপর মিঠু মহিলার ফরমাস মতো জিনিস দিতে থাকে।এবার উনার সাথে চোখাচোখি হতেই আমি চোখ ফিরেছে নিই। ভদ্র মহিলার জিনিস কেনা শেষ হলে। আবার মুক্তার মত দাঁত বের করে এক ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে মিঠুকে বললো ,আচ্ছা দাদা তো ভাল থাকবেন। বলে তরুলতার মত দুলতে দুলতে চলে গেলেন।
উনি চলে যেতেই মিঠু বললো কি বন্ধু একেবারে ফিদা নাকি। ধ্যাত ! কিন্তু সত্যি আসাধণ দেখতে আর কি ভালো ব্যবহার। মিঠু বললো তাহলে আর কি কাজে লেগে পর। দেখ ভাই একই সেন্টিমেন্ট দিয়ে জীবন চলে না। আমি বললাম ওকে ভেবে দেখবো । এখন যাই রে বড্ড সিগারেটের নেশা লাগছে তোর দোকানে বসে তো আর সেটা হবেনা।
মিঠুর দোকান থেকে বের হয়ে সিগারেট টানতে টানতে বাড়ির পথে পা বাড়ালাম। মনে মনে ভাবছি ধুর উনার নাম টাও জানি না মিঠু জানে কিনা সেটা জানিনা। আবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো মৌয়ের স্মৃতি । কতো ভালবাসতাম ওকে । ইতিহাস সাক্ষী আছে প্রেম করে সব সময় ছেলেরাই মরেছে, সেটা শরৎচন্দের দেবদাস হোক কিংবা টাইটানিক মুভির জ্যাক।
পরদিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে হোটেলে নাস্তা করে হাঁটতে হাঁটতে পাড়ার রাস্তার মোড় তারপর রিক্সা নিয়ে বৈকালির মোড় তারপর অটো নিয়ে খুলনা মিনা বাজার. উদ্দেশ্য ব্যাংক। হাতের টাকা শেষের দিকে। ব্যাংকের কাজ সেরে ফিরে আসবো মেইন রাস্তায় এসে দেখি একটাও অটো নাই । কিছুক্ অপেক্ষা করারপর একটা অটো আসতে দেখে সিগন্যাল দিতেই দাঁড়িয়ে গেলো। আমি বৈকালির মোড় যাবো বলে উঠেই থ মেরে গেলাম অটোতে শুধু একজন যাএী বসে আছে,সে আর কেও না। সেই ভদ্র মহিলা।
আমি উনার পাশে না বসে উনার সামনের ছিটে উনার দিকে মুখ করে বসলাম। যেহেতু আগে দেখেছি আর একই পাড়ায় থাকছি তাই সাহস করে বলি, বাসায় যাচ্ছেন ?? উনি এবার আমার দিকে সরাসরি তাকিয়ে বললেন । হুম। আপনি ?? আমি বললাম আমিও । অহ। যদিও আমি জানি উনি কি করেন তবুও আমি আবার বললাম কোথা থেকে আসছেন ? উনি একই ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন কলেজ থেকে। অহ আপনি কলেজে পড়েন ? ছোট উত্তর না পড়াই । যদিও উনি শান্তভাবে থাকিয়ে কথা বলছে তবুও আমি ভিতরে ভিতরে কাঁপছি। আর সেটা আমার চোখে মুখে নিশ্চয় ফুটে উঠছে। তাই এবার প্রশ্নটা উনার দিক থেকে আসলো। আপনি তো লুকিয়ে লুকিয়ে রোজ আমাকে দেখেন তাহলে এখন সামনে পেয়েও ভালো করে না দেখে অমন কাঁপছেন কেন ?
আমার সত্যি এবার কাঁপুনির সাথে সাথে মনে হলো শরীরের এক কেজি রক্ত ও শুকিয়ে গেলো। তারমানে উনি আমাকে চিনে ফেলেছে। আর সেদিন মুদি দোকানেও চিনেছে তাহলে তখন কিছু বললো না কেন! এগুলো আমি মনে মনে ভাবছি। আর উনি বললেন আর সেদিন দোকানে আপনি একা ছিলেন না , একজনের সামনে আপনাকে একথা বলাটা আমার কাছে উচিত মনে হয়নি। আমি বললাম মানে?? একই রকম শান্ত ভাবে বললেন , আপনি তো মনে মনে এটাই ভাবছেন। এবার আমার আরো এক কেজি রক্ত শুকানোর পালা। কারণ পাঠকগণ নিশ্চয় জানেন যে আমি যার সামনে বসে আছি সে যদি আপনার মন পড়তে পারে তাহলে এর থেকে অসহায় অবস্থা আর কিছু হতে পারেনা।
রাস্তায় আর কোন কথা হলো না। অটো থেকে নেমে দুজন দুটা রিক্সা নিলাম , মোড়ে নেমে উনি আগে আগে হেঁটে চলে যাচ্ছে ,আমি পিছে কিছু বলবো কিনা ভাবছি। তারপর আপন মনে বলে উঠলাম,এই যে শুনুন ,ভদ্র মহিপিছ ফিরে তাকালো আমি একটু কাছে যেয়ে বললাম। সরি ওভাবে লুকিয়ে দেখার জন্য !কিন্তু আপনি আমার মনের কথা বুঝলেন কি করে?উনি বললেন দেখুন ওটা আমার অনুমান ।তাছাড়া কলেজে আমার বিষয় মনোবিজ্ঞান তাই একটু আধটু জ্ঞান তো আছেই। আর কিছু ?? না মানে আপনার নাম টা যদি ! হৃতম্ভরী ! বাবা এতো বড় নাম ! শুধু হৃতমআগে পিছে কিছুনাই ? ও বললো কেন আপনি কি আমার শ্রাদ শান্তি করবেন নাকি যে আমার বংশ পরিচয় ও দিতে হবে । এ কথা বলেই সাদা দাঁতের ঝিলিক দেখিয়ে ছোট করে হাসলেন। তারপর বললো হৃতম্ভরী ঘোষ। ছোট করে আপনি ঋতু বলতে পারেন। আমার মা আমাকে ওই নামেই ডাকে। ওহ সুন্দর নাম । আমি আবির সেইম কাষ্ট, কোন ছোট বড় নাম নাই। নাইস নেম ! আচ্ছা আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি আসি,বলে ছোট একটা হাঁসি দিয়ে আমাকে দংশন করে সাপের মত দুলতে দুলতে চলে গেল।
হঠাৎ মনটা খুশিতে ভরে গেল, আমি কি আবার প্রেমে পরতে যাচ্ছি। না এই খুশিতে আজ একটু গাঁজা না হলেই নয়। মিঠু কে ফোনে বললাম রাতে বাসায় আসতে। রাতে মিঠু আসলে দুজন গাঁজায় টান দিতে দিতে ওকে আজকের সব কথা বললাম। মিঠু বললো ওহ গুরু দারুন খেলছো , লেগে থাকো হয়ে যাবে।
পরদিন বিকাল ৩ টা আমি দাঁড়িয়ে আছি পাঁড়ার রাস্তার মোড়ে ,উদ্দেশ্য রতুকে দেখা , বৈকালি মোড়ে যেতে পারতাম কিন্তু সেখান থেকে তো আলাদাই আসতে হতো তাই এখানেই আছি। সময় যেন যায় না কলেজ কি এখনো শেষ হয়নি। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে এক সুখটান দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি ঋতু আসছে।
আমার কাছাকাছি আসতেই বললো কি ব্যাপার এই দুপুর বেলা আপনি এখানে ? আমি বললাম না এমনি একটু কাজ ছিলো তাই। শেষ হয়ে গেছে এখনি ফিরবো চলুন আপনার সাথেই যাই। দুজন হাঁটছি কারো মুখে কোন কথা নেই। এবার ঋতুই বলে উঠলো তো কতোক্ষন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ? আমি থতোমতো খেয়ে বললাম মানে ? ঋতু আবার মিষ্টি একটা হাঁসি দিয়ে বললো, আপনি তো আমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। কি তাই না ? উফ কি সাংঘাতিক মেয়ে সব বুঝে যায় । আমি বললাম না না না হা,,,,!!
এবার ঋতু বললো দেখুন আমি এখানে নতুন... আপনাকে ভালো মনে হয়েছে তাই কথা বলছি তাই বলে আপনি অন্য সবার সাথে আমাকে গুলিয়ে ফেলবেন না। বর্তমান সময়ে যতোই মেয়েদের সমান অধিকার কিংবা সব জায়গায় চাকরি করার সুযোগ পাক না কেন? মেয়েদের চাকরির ক্ষেএে অথবা বাইরে চলার ক্ষেএে সমস্যাটা একই রয়ে গেছে। তাই আপনি যে আমার জন্য ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেটা আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা। নানা জায়গায় নানান পুরুষকে পাশ কাঁটিয়েই আমাকে এখানে আসতে হয়েছে। তাই আপনার কিছু বলার থাকলে সরাসরি বলুন , কিন্তু রাস্তা ঘাটে আমার পিছু নিবেন না।
আমি বললাম হা আমার কিছু বলার আছে, ঋতু বললো ওকে কাল আপনি ৩ টার সময় বৈকালির মোড়ে থাকবেন । আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু আপনিটা কি তুমি করে! ঋতু আমাকে হাত উচু করে থামিয়ে দিলো ,,,বললো সেটা কাল ভেবে দেখা যাবে আমি এখন যাচ্ছি বলে গট গট করে চলে গেলো। একদিকে আনন্দ অন্য দিকে টেনশন ,না জানি কাল কি বলবো!
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!