Thread Rating:
  • 25 Vote(s) - 3.16 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব
।।৬৫।।


    নাদিয়া বেগম মেয়ের প্রতি বিরক্ত।এতকাল বাড়ি থাকতো না ভাল ছিল এখন বাড়ি থেকে সারাক্ষন জামাইয়ের উপর খবরদারি।জামাইয়ের খাওন কমাইয়া দিছে।কলজে যায় সেইটা কিছু না ছুটি হইলে বাড়ি আসব তানা তারে লইয়া বাইরে ঘুইরা বেড়ায়।এত ভালবাসা কই আছিল এতদিন।কে দেবের দেখাশুনা করছে।কোনো দরকার পড়লেই আম্মু আম্মু কইরা ছুইটা আসতো।
 কলেজে আজ বি.এসের পঞ্চম দিন। সকালেই একটা ফোন পেল। অভিনন্দন জানিয়েছেন মৌসম। প্রসঙ্গক্রমে অনুরোধ করলেন,সেদিনের ঘটনা যেন উভয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। দুর্ঘটনা মনে রাখতে নেই,বলদেব দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করল। ফোন রেখে নিজের মনে হাসল, অভিনন্দন আসলে অজুহাত।জাভেদ শামীম স্যার জিজ্ঞেস করছিলেন মিসেস নূরের সঙ্গে কিছু হয়েছে কিনা?মৌসমকে সেকথা বলেনি।
কলেজ নেই সময় কাটতে চায় না।ভোর বেলা রেওয়াজ করা ছাড়া কোনো কাজ নেই।  গুলনার নিজেই কাজ বেছে নিয়েছেন প্রতিদিন দেবকে আনতে যাওয়া। ঘড়ির দিকে তাকিয় দেখলেন ছুটির সময় হয়েছে। গাড়ী নিয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। আজ নতুন ড্রাইভার,মামুন চলে যাবে গাড়ীটা তাকে দিয়েছে। ছুটির সময় হয়ে এসেছে ক্যাম্পাসের একদিকে গাছের নীচে অপেক্ষা করতে লাগলেন।
ইতিমধ্যে বি.এস ছাত্রীমহলে বেশ জনপ্রিয়,সকলে বিশেষ করে পুরুষ শিক্ষকরা সেটা ভালভাবে নিতে পারেনি। শেষ ক্লাস শেষ করে সবে বেরিয়েছে একটি মেয়ে এসে বলল, স্যর একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
বিএস হেসে জিজ্ঞেস করে,কি নাম তোমার?
— জ্বি রাবেয়া।
— শোনো রাবেয়া ক্লাসের পর আমি কথা বলতে পছন্দ করি না।
— স্যরি স্যার।
— বলো তুমি কি জানতে চাইছিলে?
— না মানে আপনি পড়াতে পড়াতে ডিকনস্ট্রাকশন তত্ত্বের কথা বললেন…যদি আরেকটু ক্লিয়ার করে বলতেন– ।
— প্রসঙ্গক্রমে বলেছি,মুল বিষয়ের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্ব পুর্ণ নয়। কোন কিছুকে বিপরীত ভাবে দেখা বা ব্যাখ্যা করা। যেমন আমি তোমার কান ধরলাম– ।
লজ্জায় রাবেয়ার মুখ লাল হয়ে গেল। বিএস মৃদু হেসে বলল, না না আমি তোমার কান ধরছি না। মনে করো কান ধরা হল,তুমি লজ্জা পেলে। কার্য কান ধরা কারণ লজ্জা পাওয়া। এইটি সাধারণ ব্যাখ্যা। এবার বিপরীত ভাবে,কার্য তুমি লজ্জা পেলে কারণ তোমার কান ধরা হয়েছে।
রাবেয়া আচমকা পায়ে হাত প্রণাম করে বলল,আসি স্যর?
ছুটি হয়ে গেছে অঞ্জনা বাড়ির দিকে,সামনের দিক থেকে জমিলা হাপাতে হাপাতে এসে বলল,এ্যাই অঞ্জনা গেটের কাছে গাছ তলায় ঐ ভদ্রমহিলাকে দ্যাখ,কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে। সিনেমা আর্টিষ্ট নয়তো?
অঞ্জনা ভ্রু কুচকে ভদ্রমহিলাকে দেখে বলল,আমার চেনা। তারপর ছুটে কাছে গিয়ে বলল,অপা আপনি এখানে?
গুলনার মনে করতে পারেন না মেয়েটি কে?
— আমি অঞ্জনা,সাহানা আমার বড় অপা।
— অহ অঞ্জনা? এবার মনে পড়েছে। তোমার দিদির নাম রঞ্জনা?
জমিলা এগিয়ে আসে। অঞ্জনা বলে,এর নাম জমিলা আমার বন্ধু বলে কিনা আপনাকে কোথায় দেখছে।
— আপনে টিভিতে গান গান? জমিলা যেন কি আবিস্কার করল।
— এক-আধ বার  প্রোগ্রাম করেছি। তোমার মেমারী খুব শার্প।
দূর থেকে বিএসকে আসতে দেখে ওদের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা যায়। গুলনার জিজ্ঞেস করেন,কি ব্যাপার?
— অপা ঐ যে আসছেন বিএস হেবভি পড়ায়,ওনার ক্লাস কেউ মিস করতে চায় না।
গুলনার তাকিয়ে দেখলেন,দেব আসছে। মেয়েগুলো এই বয়সে এতো ফক্কড় হয়ে গেছে। কথার কি ছিরি ‘হেবভি পড়ায়। ‘ সাদা পায়জামা গেরুয়া পাঞ্জাবি অবিন্যস্ত চুল হাওয়ায় উড়ছে,ব্যক্তিত্বশালী নায়কের ভঙ্গিতে কলেজ প্রাঙ্গন পেরিয়ে আসছে। একে বাচ্চা ছেলের মত স্নান করাচ্ছিলেন ভেবে হাসি পেল। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকেন গুলনার।  দেবের নজরে পড়তে কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,কতক্ষন? 
লজ্জায় অঞ্জনা জমিলা পালিয়ে গেল। তাদের দিকে দেখে জিজ্ঞেস করে দেব,কি বলছিল ওরা?
— কখন ঘণ্টা পড়েছে কি করছিলে এতক্ষন?
— ক্লাস থেকে বেরিয়েছি একটি মেয়ে এসে নানা প্রশ্ন– ।
— আর অমনি গলে গেলে? মেয়েরা তোমাকে খালি প্রশ্ন করে কেন?
— আচ্ছা আমি কি কেজি কলেজের ছাত্র? রোজ এভাবে নিতে আসো?
— আপত্তি করলে আসবো না।
— তোমার সঙ্গে কথা বলা যাবে না। তুমি আমার বউ না অভিভাবিকা?
গুলনার মৃদুস্বরে গান গায়,তোমা ছাড়া আর এ জগতে মোর কেহ নাই কিছু নাই গো। দেবের চোখ চলে যায় গুলনারের পেটের দিকে,তারপর বলে,ভিতরের মানুষটা আছে কেমন?
গুলনারকে একরাশ লজ্জা ঘিরে ফেলে। লজ্জা পেলে মেয়েদের দেখতে ভাল লাগে, তাইতো বলে লজ্জা নারীর ভুষণ।
— তোমার বডী ল্যাঙ্গুয়েজ মোড অফ স্পিকিং অনেক বদলে গেছে দেব।
— আগের মত চাষাড়েভাব নেই?
দূর থেকে অঞ্জনারা অবাক হয়ে দেখে মণ্টি অপার সঙ্গে বিএস কথা বলছেন। ওরা আলোচনা করে,মন্টি অপাকে কি আগে থেকে চিনতেন? মণ্টি অপা বিএসের প্রেমিকা নয়তো?
— আমি তা বলি নাই। খালি ব্যাকা ব্যাকা কথা। চলো গাড়িতে ওঠো। গুলনারের কথায় অবাক হয় বলদেব। জিজ্ঞেস করে, গাড়ি কোথায় পেলে?এটা মামুনের গাড়ী না?
— হ্যা মামুনের গাড়ী।
— মামুনের গাড়ি? মামুন আসছে নাকি?
— মামুন বিদেশ যাইবো,গাড়িটা আমারে দিয়া যাবে। নতুন ড্রাইভার রাখছে আব্বু।
গাড়ির কাছে যেতে একটী বছর ত্রিশের ছেলে এসে সালাম করে দাড়ালো। গুলনার পরিচয় করিয়ে দিলেন,এর নাম মুস্তাক। আর ইনি ডাক্তার সাহেবের দামাদ।
মুস্তাক মুচকি হেসে স্টিয়ারিঙ্গে বসে। গাড়ি চলতে শুরু করে। দেবের হাত কোলে নিয়ে বসে থাকেন গুলনার। মনে মনে ভাবেন মেয়ে কলেজ না হয়ে ছেলেদের কলেজ হলে ভাল হতো।ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেব।মনে মনে ভাবে এই লোকটা অধ্যাপক কলেজে পড়ায় সবাই ওকে সমীহ করে।ভিতরে ভিতরে একেবারে ছেলেমানুষ।কিছু হলেই মণ্টী মণ্টি,মৃদু হাসি ফোটে। গাড়ি শহরের কাছাকাছি এসে গেছে। স্ট্যণ্ডে অটোর সারি। দেবের চোখ আটকে যায় অটো স্ট্যাণ্ডে একজনকে দেখে।
— মুস্তাকভাই গাড়ি থামাও। এ্যাই সায়েদ মিঞা– -সায়েদ মিঞা।
লোকটি অবাক হয়ে গাড়ির দিকে তাকায়। ততক্ষনে গাড়ি থেকে নেমে পড়েছে দেব। লোকটি এগিয়ে আসে।
— ছোটভাই আমারে চিনতে পারো নাই? তুমি তো সায়েদ?
— জ্বি। আপনি– ?
— আরে আমি বলদেব,ভুলে গেলে? আম্মু কেমন আছে?
— ওহ বলাভাই? তারপর মুখে ছায়া নেমে আসে বলে,আমুর শরীর ভাল না। হার্টের ব্যামো,ডাক্তার রিয়াজরে দেখাইতে আনছি। এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট পেয়েছি অনেক ধরাধরি করে পনেরো দিন পর। হোটেলে উঠেছি,মেলা খরচ। ভাবী আসছে সাথে।
— তুমি গাড়িতে ওঠো।
সায়েদ ড্রাইভারের পাশে বসল। দেব বলল,মুস্তাক ভাই ড.রিয়াজের চেম্বারে চলো।
গুলনার চুপচাপ বসে আছেন কোন কথা বলছেন না। এই প্রথম নিজে নিজে দেবকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে দেখলেন। চেম্বারে ঢুকতে বাধা পেল,একজন পথ আটকে বললেন, কোথায় যাবেন?
— আমি পেশেণ্ট না,ড.রিয়াজের সঙ্গে একটা কথা বলে চলে যাবো।
ভদ্রলোক একটী স্লিপ এগিয়ে দিয়ে বললেন,এইখানে নাম লিখে দিন। উনি একদিনে পনেরোটার বেশি রোগী দেখেন না।
গাড়িতে বসে গুলনার সব দেখছেন। বিরক্ত হয়ে দেব স্লিপে নিজের নাম লিখে দিল। কিছুক্ষন পরেই দেবের ডাক এলো। ভিতরে ঢুকতে ডাক্তার বললেন,বসুন।
দেব অবাক,আব্বু কি তারে চিনতে পারছেন না?
— বলুন আপনের জন্য কি করতে পারি?
— আব্বু একটা পেশেণ্ট দেখতে হবে।
— এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট আছে? এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট ছাড়া আমি রোগী দেখি না।
— মণ্টিরও এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট লাগবে? দেব উঠে দাঁড়ায়।
— মণ্টি কে?
— আমার বউ।
ডাক্তার রিয়াজ চশমার ফাক দিয়ে চোখ তুলে দেবকে দেখে বলেন,বসো বসো। অত রাগলে চলে? দেব আবার বসে।
— এই পেশেণ্ট তোমার কে?
— আব্বু আমি আগে যার আশ্রয়ে ছিলাম আম্মু বলতাম– ।
--কোথায় থাকেন?
--এইখানে একটা হোটেলে উঠেছেন।
— ঠিকানা লিখে রেখে যাও। ফেরার পথে দেখতে যাবো।
দেব গম্ভীরমুখে গাড়ীতে এসে বসল। সায়েদ সামনে। গুলনার জিজ্ঞেস করেন,ডাক্তার কি বললেন?
— কি বলবেন? যেমন মেয়ে তেমন তার বাপ। সায়েদ কোন হোটেলে উঠেছো,সেখানে নিয়ে চলো। মণ্টি তুমি যাবে তো?
কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললেন গুলনার,আর তোমারে একা ছাড়ি?
--তুমি কি একাই এসেছো?
--ভাবী আসছে।টুনিঅপা বাড়ীতে আসছে। 
মনু বড়ভাই সবার কথা মনে পড়ে।আম্মু তাকে প্রথম ছাত্র পড়ানোর দায়িত্ব দিয়েছিল আজ সেই শিক্ষকতা তার পেশা। 
[+] 7 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব - by kumdev - 11-07-2020, 12:33 PM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)