Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.35 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কলগার্ল -Written By Lekhak (লেখক)
#12
[[আট]]




 -- "আমি তোমরা আসার আগেই থেকেই এখানে ছিলাম। একটু দূরে ঐ টেবিলটায় বসে দেখছিলাম তোমরা দুজনে এসে ঢুকলে। লোকটা বেরিয়ে যাবার পর, ওখানে বসে বসেই তোমাকে মোবাইলে ধরলাম। ফোনটা করে দেখছিলাম, তুমি আমার ফোন ধরো কিনা? যখন ধরলে না তখন বাধ্য হয়েই আসতে হলো আমাকে। বিজলী ওয়াট ইজ ইওর প্রবলেম? তুমি তো কথা দিয়েছিলে আমাকে। আমি তোমাকে পে করলাম। অথচ তুমি আমার ফোন ধরছো না। কি অসুবিধে তোমার?"


 - "আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম রঞ্জিত।"


 -- "ওয়াট? ব্যস্ত? ঐ লোকটার সাথে? ও তোমাকে টাকা দিচ্ছে? বাট্ আই উইল অলসো পে। কি প্রবলেম তোমার?"


একটু যেন ধন্দে পড়ে যাচ্ছিল বিজলী। কি করবে, কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছে না। এক্ষুনি কবীর আবার অরুন ঝা কে চাবিটা দিয়ে ফিরে আসতে পারে। কোনরকমে রঞ্জিতকে সামাল দেবার জন্য বললো, "ঠিক আছে রঞ্জিত, আমি দু একদিনের মধ্যেই টাইম করছি তোমার সাথে। আমি একজনকে কথা দিয়েছি তো। সেটাও রাখতে হবে আমাকে। তারপরেই....."


বলতে বলতেই রঞ্জিত বললো, "তোমার সাথে লোকটা কে ছিল বিজলী?"


বিজলী এবার একটু চটে গেল, বললো, "কেন? দ্যাটস্ নন অফ ইওর বিজনেস। আমার সাথে কে রয়েছে সেটা জেনে তোমার লাভ কি?"


 -- "কে লোকটা বলোই না একবার?"


 - "ও খুব বড় বিজনেস ম্যান। তোমার মত পুচকে ছোড়া নয়।"


 -- "কিন্তু তুমি আমাকে একটা কথা দিয়েছিলে বিজলী।"


 - "সো ওয়াট? ওরকম কথা বিজলী অনেককেই দেয়। আমি বলছি তো, এখন আমাকে ডিস্টার্ব কোরো না। লিভ মি অ্যালোন।"


রঞ্জিত একেবারে নাছোড় বান্দার মত বিজলীকে বললো, "বিজলী আমারও কত টাকা আছে..... তুমি জানো নিশ্চই। আমার বাড়ী তুমি দেখে এসেছ। ওরকম ছোটখাটো ব্যাবসাদার আমি অনেক দেখেছি। তোমাকে টাকা দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে পারি আমি। যাস্ট আই নিড ইওর কোম্পানী। বিজলী আজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না।"


ও এবার বিজলীর সামনেই কবীরের চেয়ারটায় বসে পড়ল। দুহাত বাড়িয়ে খপ করে ধরে ফেললো বিজলীর দুটো হাত। যেন কলগার্লের কাছে সেক্স ভিক্ষা করছে।


 - "তোমাকে নিয়ে তো মহা বিপদে পড়া গেল দেখছি।"


বিজলীর তখন চিন্তা বাড়িয়ে দিচ্ছে কবীরের প্রত্যাবর্তন। হঠাৎই যদি পিটার ক্যাটে ফেরত এসে রঞ্জিতকে দেখে ফেলে ঝামেলা লেগে যেতে পারে।


রঞ্জিতের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলার আগেই ও দেখলো ওর ফোনটা আবার বাজছে। এবার ফোন করেছে মোহনলাল।


 - "ওফঃ এ যেন আবার একটা ঝামেলা।"


ফোন ধরতেই মোহনলাল বললো, "কি বিজলী রানী? মোহনলালকে তো ভুলেই গেলে? কাল যে মালদার পার্টিটাকে তোমার হাতে দিলাম, সেবা করতে। তাকে সেবা না করেই পালিয়ে গেলে?"


 - "ফেলে কেন আসব? সবই জানো অথচ রসিকতা করছো আমার সাথে? কাল তো সারারাতই ছিলাম আমি ওর সাথে।"


 -- "জানি জানি। সবই জানি। তোমাকে একটু বাজাচ্ছিলাম বিজলী। দেখলাম তুমি কি বলো? তা সাহেবের তো খুব মনে ধরেছে তোমাকে। এরপর সিটিং কবে হচ্ছে? এখন কি আমাকে বাদ দিয়েই? না মোহনলালের কথাটাও একটু মনে পড়বে তোমার?"


 - "এসব বেলাইনের কথাবার্তা কেন যে বলো, বুঝি না। আমি তোমাকে বাদ দিয়ে পার্টি কে ফিট্ করে নেব, তুমি ভাবলে কি করে?"


বিজলীর কথা শুনেও যেন বিশ্বাস করছিল না মোহনলাল। শুধু বললো, "তোমার টাকার প্রতি খুব লোভ বিজলী। আমি জানি ভাল মালদার পার্টি পেলে তুমি শেষ পর্যন্ত আমাকে ভুলে যাবে।"


শুধু বিরক্ত নয়। রাগের চোটে ওর সুন্দর চোখ মুখটাও লাল হয়ে যাচ্ছিল। শেষমেষ রেগেমেগে মোহনলালকে বললো, "ঠিক আছে। তোমাকে যদি ভুলে যাই, তখন বোলো। আমি এখন ফোন রাখছি

লাইনটা কেটে দিল বিজলী। রঞ্জিত ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "তুমি লোকটার সাথে কাল সারারাত ছিলে বিজলী?"


 - "কেন থাকতে পারি না? আমার পেশাটাই তো এই।"


 -- "তাহলে তোমার আমার সাথে রাত কাটাতে অসুবিধা কোথায়?"


 - "ওফ্ বাবা। বললাম তো, আমি তোমার কথা রাখব। আমাকে কেন বিশ্বাস করছো না তুমি? আই অ্যাম এ প্রফেশনাল গার্ল। ইউ হ্যাভ টু বিলিভ মি।"


দুজনের কথার মধ্যে যেন ইংরেজীর ফুলঝুড়ি ছুটছিল। রঞ্জিত বললো, "ঠিক আছে। তাহলে এখন চলো।"


 - "ইমপসিবল্। আমি এখন কি করে যাব তোমার সাথে? আমি এখন একজনকে কোম্পানী দিচ্ছি রঞ্জিত। তাকে ছেড়ে আমি যেতে পারি না তোমার সঙ্গে।"


একেবারে হাল ছাড়বে না রঞ্জিত। বিজলীকে বললো, "লোকটা তো বাইরে গেলো দেখলাম, চলো এই সুযোগে আমরা কেটে পড়ি এখান থেকে।"


 - "ও এক্ষুনি ফিরে আসবে আবার। এভাবে ওকে ছেড়ে আমি চলে যেতে পারি নাকি?"


কিছুতেই শুনবে না রঞ্জিত। ওদিকে বিজলীও চেয়ার ছেড়ে উঠবে না। কবীর ফিরে এলে ওকে কি বলবে, সেটাই মনে মনে চিন্তা করতে লাগল বিজলী। রঞ্জিতের ব্যাপারটা কবীরকে আগে ও জানিয়েছে। সুতরাং ওকে বোঝাতে অসুবিধে হবে না। কিন্তু এই নাছোড়বান্দাটাকে কি করে বোঝানো যায়? এতো বুঝতেই চাইছে না। শেষ পর্যন্ত এক কলগার্লকে নিয়ে ঝ্যামেলা পেকে যাবে নাকি পিটার ক্যাটে?


বিজলী একটা আশা নিয়েই বসে রইল, শেষ পর্যন্ত কবীর ফিরে এসে যদি কায়দা করে এই ছোঁড়াটাকে ভাগাতে পারে, নইলে চট করে রেহাই পাবে না এর হাত থেকে।


কিছুক্ষণ বসে থাকার পর এবার ও যা দেখল, তাতে ওর রক্ত এবার সত্যি গরম হয়ে গেল। পা থেকে মাথা অবধি দপদপ করছে। ঠোঁটদুটো কাঁপছে ঠকঠক করে। চোয়াল শক্ত হয়ে যাচ্ছে। মুখের ভেতরে জিভ আলজিভ সব যেন জড়িয়ে যাচ্ছে। কারন সামনে যা দেখছে, সেটাকে একেবারেই মনে মনে মেনে নিতে পারছে না ও। কারন কবীর পিটারক্যাটে ফিরে এসেছে অবশ্যই। কিন্তু সাথে নিয়ে এসেছে ওর ক্লায়েন্টকেও। অরুন ঝা নামক লোকটিকে। যেটা একেবারেই আশা করেনি বিজলী।


কবীরেকে এত করে বোঝানোর পরেও ও লোকটাকে জোড় করে নিয়ে এল? এর থেকে ও নিজেই পিটার ক্যাট ছেড়ে বেরিয়ে যেত, সেটাই বরং ভাল হতো। অরুন ঝা কে বগলদাবা করে আবার এই রেষ্টুরেন্টে ফিরে আসার মানে কি? তাহলে কি বিজলীর কোন কথাই বিশ্বাস হয় নি কবীরের? একটা বেশ্যার কথার ওপর ভরসা না করে দীর্ঘদিনের ক্লায়েন্ট এর ওপরই ভরসা করছে বেশি? হঠাৎ কবীরের এমন পরিবর্তন? কাল থেকে তো অনেক বড় বড় কথা বলছিল ও। বিজলীর জন্য নাকি নিজের বউকেও ত্যাগ করতে পারে। বিজলীর কাছ থেকে ও যা সুখ পেয়েছে, কোন কলগার্ল ওকে সেই সুখ দিতে পারেনি। তাহলে কি সেই একবাক্যে স্বীকারোক্তিগুলি সব গালভরা কথা হয়ে গেল? অরুন ঝা ওকে কিছু বলেছে? বিজলী যে এখানে রয়েছে অরুন ঝাই বা জানলো কি করে? কবীর ওকে বিজলীর সন্মন্ধে কিছু না বললে অরুনের তো কিছু জানবার কথা নয়। দুজনে যেন একদম পরিকল্পনা মাফিক ফিরে এসেছে পিটার ক্যাটে। এখন এর থেকে নিস্তার পাবার উপায়?

মাথার মধ্যে যেন শরীরের সব রাগগুলো এসে জমা হচ্ছে। জীবনে এর আগে কোনদিন এমন পরিস্থিতির মধ্যে ওকে কখনও পড়তে হয় নি।


কিছু চিন্তাভাবনা করার আগেই বিজলী দেখল কবীর একদম এগিয়ে এসেছে ওর টেবিলের খুব কাছে। আর পিছনে পিছনে অরুন ঝা। একেবারে বিজলীর চোখে চোখ রেখেই ওরা দুজনে মিলে তাকিয়েছে বিজলীর দিকে। কবীর কিছু বলতে যাবে, এমন সময় বিজলী রঞ্জিতকে বললো, "তুমি আমাকে নিয়ে যাবে বলছিলে না এখন?"


রঞ্জিত বললো, "হ্যাঁ তুমি যাবে?"


 - "যাব। লেটস্ গো।"


কবীরের সামনেই টেবিল ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে রঞ্জিতের বগলের তলায় হাতটা ঢুকিয়ে দিল বিজলী। এবার রঞ্জিত ওকে সুখ ভোগের জন্য নিয়ে যাবে!


কবীর থতমত খেয়ে গেছে বিজলীর এমন আচরণ দেখে। হঠাৎ এই ছেলেটি কোথাথেকে এল? ও কিছু ভেবে পাচ্ছে না। কবীরের সামনেই রঞ্জিতকে সাথে করে নিয়ে গটগট করে হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে গেল বিজলী। পেছনে দাড়িয়ে অরুন ঝা। ও অবাক হয়ে গেছে। বিজলী একবারের জন্যও ফিরে তাকালো না কবীরের দিকে। কবীর পেছন থেকে বিজলীকে চেঁচিয়ে বললো, "বিজলী ওয়ের আর ইউ গোয়িং? হঠাৎ চলে যাচ্ছ?

বিজলী তবু রেসপন্স করলো না। একেবারে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেরিয়ে গেল রেষ্টুরেন্ট ছেড়ে।


একটু দূরেই রঞ্জিতের গাড়ীটা পার্ক করা ছিল। বিজলীকে সঙ্গে নিয়ে রঞ্জিত গাড়ীতে বসলো। গাড়ীও স্টার্ট দিয়ে নিমেশে উধাও হয়ে গেল পার্কস্ট্রীট ছেড়ে।


 - "কি ব্যাপার বলতো? বিজলী হঠাৎ চলে গেল তোমাকে ফেলে?"


অরুন ঝা বলছিল কবীরকে।


 -- "তোমাকে তখন বললাম না? ওর আপত্তি ছিল, তোমাকে নিয়ে। তুমি শুনলে না। বললে বিজলীকে ঠিক ম্যানেজ করে নেবে। এখন দেখলে তো?"

 - "কিন্তু ওর সাথে ঐ ছেলেটা কে?"

 -- "বুঝতে পারছি না। আমি এখানে বিজলীকে নিয়ে ঢোকবার সময় তো ওকে খেয়াল করিনি।"

 - "স্ট্রেঞ্জ। আমারও অদ্ভুত লাগছে ব্যাপারটা। আমি তো বিজলীকে শুধু উইশ করার জন্য এলাম। আর ও....."

 -- "তোমাকে ও অ্যাভোয়েড করছে কেন অরুন?"

 - "আমি নিজেও জানি না।

""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

[+] 2 users Like Kolir kesto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কলগার্ল -Written By Lekhak (লেখক) - by Kolir kesto - 09-07-2020, 09:00 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)