08-07-2020, 08:59 PM
(ঝ) বিয়ের পর প্রথম স্বামীর ঘরে।
(Upload No. 121)
আমি মান্তুর কথার কোনো জবাব দিলাম না। একটু পর ও নিজেই আবার বলতে শুরু করলো, ‘সেদিন আপনি যা করেছেন সেসব ‘আপনি করেছেন’ না বলে ‘আমি সেধে আপনাকে দিয়েছি’ বললেই বরং সঠিক বলা হবে। ইন ফ্যাক্ট, আমিতো সেদিন আরো কিছু দেবার জন্যেও তৈরী ছিলাম। কিন্তু লজ্জা কাটিয়ে উঠে সেকথা বলতে পারিনি আপনাকে। আপনি যে নিজে থেকে কিছু করবেন না সেতো আমি আগে থেকেই জানি’। আমি একটু অবাক হয়ে বললাম, ‘কী আগে থেকে জানো তুমি’? মান্তুর মুখে আবার যেন সেই কষ্ট মিশ্রিত হাসি দেখতে পেলাম। ও বললো, ‘আপনার মনে আছে দীপদা, বছর খানেক আগে আমার বুকে হাত দেওয়া নিয়ে বাজি ধরে আমি হেরে গিয়েছিলাম। সেদিন আপনি বাজি জিতেও আমার বুকে হাত দ্যান নি। আর বাজির শর্ত হিসেবে যে কিছু একটা দিতে আমি বাধ্য ছিলাম আপনি আজ অব্দি তা কিছুই চান নি। ঠিক যে মুহূর্তে আমি হার স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলাম তখন আপনার হাতটা ঠিক কোন জায়গায় রাখা ছিলো, সেটা আপনি বলার পরেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম। আপনি চাইলে তখনই মুখে কিছু না বলে আমার মাই টিপে দিতে পারতেন। কিন্তু আপনি তা করেননি, শুধু আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে আপনি বাজিটা জিতে গিয়েছেন। অন্য যেকোনো ছেলে হলে সেদিন আমার বুক না টিপে ছাড়তো না। তাই আমি জানতাম আমি নিজে আগ্রহ না দেখালে আপনি কিছুই করবেন না। তাই সেদিন রাতে ও সব করতে গিয়েছিলাম। যদিও আমার মনের ইচ্ছেটা পুরোপুরি মেটেনি, তবুও যতোটুকু যা পেয়েছি আমি তাতেও খুশী হয়েছি’। আমি প্রশ্ন করলাম, ‘কিন্তু কেন মান্তু? কেন সেদিন রাতে তুমি অমন করে আমার নিজের কাছেই আমাকে ছোট করে দিলে’? মান্তু কয়েক সেকেণ্ড চুপ থেকে বললো, ‘ভালোবাসা কাউকে ছোটো করেনা দীপদা। আমি অনেক দিন আগে থেকেই আপনাকে মনে মনে ভালবাসতে শুরু করেছিলাম। আপনি হয়তো বোঝেন নি, বা বুঝেও না বোঝার ভাণ করেছেন সব সময়। আপনি বয়সে আমার থেকে বেশ বড়, আর এক সময় আমাকে পড়াতেন। তাই লজ্জার মাথা খেয়ে নিজেও মুখ ফুটিয়ে কিছু বলতে পারিনি। কিন্তু মুখে প্রকাশ করতে না পারলেও আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা প্রতি মুহূর্তে বেড়েই চলছে। আজ অব্দি, এখন অব্দি। আপনি আমাকে কোনোদিন কিছু না বললেও আপনার চোখের ভাষা আমায় জানিয়ে দিয়েছে যে আপনিও আমাকে একই সমান ভালোবাসেন। আমি জানি আমার মা বাবা আপনার জন্যে কতটুকু কী করেছেন। আর এটাও গোড়া থেকেই জানতাম যে আমাকে ভালোবেসে আপনি তাদের মনে কোনোদিন আঘাত দিতে পারবেন না। তাই আমি নিজেই বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসার অকালমৃত্যু অবধারিত। এ ভালোবাসার ফুল কোনোদিন বিকশিত হতে পারবেনা। আমি জানি আমি আপনাকে কোনো দিনই নিজের করে পাবো না। এ না পাওয়ার যন্ত্রণা আমাকে সারা জীবন বয়ে যেতে হবে। আপনাকে না পেয়ে যে আমি সারা জীবন কুমারী থেকেই কাটিয়ে দেবো, তাও সম্ভব নয়। কারণ সেটা করলেও আমার মনে হয় আপনাকে অসম্মান করা হবে। আমাকেও কাউকে না কাউকে বিয়ে করে তার সাথে সংসার করতে হবে। কিন্তু সারাটা জীবন আপনাকে নিয়ে মনের মধ্যে একটা কষ্ট থেকেই যাবে আমার। তাই যখন শুনলাম আপনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, তখন মনকে শক্ত করে নিয়ে আমি এ ডিসিশানটা নিলাম। আমার জীবনের প্রথম প্রেমিককে বুকে জড়িয়ে ধরে তাকে প্রথম এবং শেষ বারের জন্যে চুমো খেয়ে আর অন্ততঃ একটি বারের জন্য হলেও আমার নারী সম্পদ আপনার হাতে তুলে দিতে মনস্থির করলাম। আপনার কাছে নিজের শরীরটা সম্পূর্ণ রূপে তুলে দিতে আমার কোনো ভয়, দ্বিধা বা সংশয়.. কিছুই ছিলো না। সেই বাজি খেলার দিন হতে আপনার ওপর আমার অগাধ বিশ্বাস তৈরী হয়ে গিয়েছিলো, যে আমাকে ভালোবাসার কথা মুখ ফুটে না বললেও আপনি কখনোই এমন কিছু করবেন না যাতে আমার কোনো ক্ষতি হতে পারে। তাই সে রাতে আপনার কাছে গিয়ে নির্ভয়ে শুতে আমার মন দ্বিধাবোধ করেনি। ছিলো শুধু অনেকটা লজ্জা আর সামান্য একটু সংশয়। কিন্তু কেন জানি আমার মনে হয়েছিলো সেটাই ছিলো আমার শেষ সুযোগ। আমার জীবনের প্রথম প্রেমিককে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করে চুমু খাবার সুযোগ আর কখনো পাবোনা আমি। মা, বাবা, ছোট বোন, ঠাকুমা, বড়দা এদের কাছে ধরা পড়ার চেয়েও আরেকটা বড় ঝুঁকি নিতে হয়েছিলো আমাকে সেদিন। আপনি জানেন না তখন আমার রিস্কি পিরিওড চলছিলো। সে রকম কিছু হলে হয়তো আমি কনসিভ করে ফেলতাম। কিন্তু আমি জানতাম, সে আমার দীপদা, সে আমাকে কখনোই বিপদে ফেলবে না। তাই সংশয়টুকু মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে দেরী হয়নি। ছিলো শুধু লজ্জা। এর আগেও মাঝে মাঝে ভেবেছিলাম লজ্জা ঝেড়ে ফেলে দু’হাতে আপনাকে বুকে জড়িয়ে ধরি। কিন্তু পারিনি। এদিকে দুমাস বাদেই আপনি বিয়ে করতে চলেছেন। তাই সমস্ত লাজ লজ্জা বিসর্জন দিয়ে সে রাতে অমন ভাবে এগিয়ে গিয়েছিলাম’।
আমি অবাক হয়ে মান্তুর কথা শুনে যাচ্ছিলাম। আমার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছিলো না। একটু সময় বাদে মান্তু আবার নিজে থেকেই বলতে লাগলো, ‘সেদিন যা করেছি তাতে আমি হয়তো আপনার চোখে ছোট হয়ে গেছি। কিন্তু বিশ্বাস করুন দীপদা, এতে আমার কোনো আফসোস নেই। আমার প্রথম ভালোবাসার লোকটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে পেরে আমি নিজের কাছেই নিজে কৃতজ্ঞ হয়ে গেছি। সারা জীবন ধরে এ সুখটুকু অন্ততঃ আমার মনে থাকবে যে আমি আমার প্রথম প্রিয়তমকে ভালোবেসে আদর করতে পেরেছি। ভবিষ্যৎ জীবন আমাকে কোথায় টেনে নিয়ে যাবে জানি না, কিন্তু জীবনের শেষ দিন অব্দি আমার মনে এ সুখটুকু অম্লান থাকবে যে আমার দীপদা আমার ভালোবাসায় সাড়া দিয়েছিলেন। সে আমার আবেদন রিজেক্ট করে দেয় নি। আর আমার কোনো দুঃখ নেই’।
আমার মুখে কোনো কথা সরছিলোনা। আমি অবাক চোখে শুধু মান্তুকে দেখে যাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম আমার প্রাক্তন ছাত্রী কার শিক্ষায় এতো পরিণত চিন্তা ধারা পেলো! খুব ইচ্ছে করছিলো ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে। মনে হচ্ছিলো দু’হাতে ওকে জাপটে ধরে চুমোয় চুমোয় ওকে ভরিয়ে দিই। কিন্তু প্রকাশ্য রাস্তায় রিক্সার মধ্যে সেটা একেবারেই সম্ভব ছিলোনা বলে কোনো রকমে সে লোভ সংবরণ করলাম। মান্তু আমার হাতটা একই ভাবে জড়িয়ে ধরে বসেছিলো তখনো। মুখ নিচু করে প্রায় অস্ফুট গলায় বললো, ‘কিছু বলবেন না আমাকে দীপদা’?
আমি ওর একটা হাত নিজের হাতে ধরে কিছু একটা বলতে যেতেই দেখলাম গলা দিয়ে শব্দ বেরোচ্ছে না আমার। কাশি আর গলা খাকড়ি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে বললাম, ‘নিজের সুখের জন্য কারুর মনে আঘাত দেওয়াটা আমি পাপ বলে মনে করি মান্তু। আজ অব্দি কোনো মেয়ে আমাকে তোমার মতো করে ভালোবাসেনি। আমিও কখনো তুমি ছাড়া আর কোনো মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখিনি। কিন্তু তোমাকে নিয়ে সুখী হতে গিয়ে আমি তোমার বাবা মাকে আঘাত দিয়ে দুখী করতে কিছুতেই পারবোনা। তাই তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই’।
মান্তু আমার হাত আঁকড়ে ধরে বললো, ‘ভালো হচ্ছেনা কিন্তু দীপদা। এসব ক্ষমা টমার কথা একেবারেই ওঠাবেন না। আমি কিন্তু তাহলে এই রাস্তার মধ্যেই কেঁদে ফেলবো’।
আমি আমার হাতে ধরা ওর হাতের ওপর অন্য হাতটা ধীরে ধীরে বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘আমাকে এর আগে আর কেউ এত ভালোবাসেনি। তোমাকে একবার খুব খুব আদর করতে ইচ্ছে করছে এখন মান্তু’।
মান্তু ওর স্বভাব সুলভ ভঙ্গীতে বললো, ‘একদম না। একেবারেই কোনো বদমাশি করা চলবে না। আদর করার সুযোগ আমি আপনাকে দেবো, তখন করবেন’।
আমি আর কোনো কথা না বলে চুপ করে গেলাম।
একটু পর মান্তু নিজেই বলে উঠলো, ‘আর মাত্র ৭০ দিন’।
আমি ওর কথার অর্থ বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কিসের ৭০ দিন’?
মান্তু প্রায় স্বগতোক্তির মতো বললো, ‘আর ৭০ বাদেই আপনি বিয়ে করছেন। আমি কিন্তু আপনাকে ‘আপনি’ করে বললেও আপনার বউকে কিন্তু ‘বৌদি-তুমি’ করেই বলবো। বৌদির ছবি দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আপনি দেখবেন দীপদা বৌদিকে নিয়ে আপনি খুব সুখী হবেন। আমার মন বলছে। আর আমার একটা অনুরোধ আছে, যদি রাখতে পারেন তাহলে আমি দুরে থেকেও খুব সুখী হবো’।
আমি ওর মুখের দিকে চাইতেই ও বললো, ‘বৌদিকে কখনো দুঃখ দেবেন না। তাকে সব সময় ভালো বাসবেন, তাকে সব সময় খুশী করে রাখবেন। আর তার চাওয়া পাওয়ার গুরুত্ব দেবেন’। বলতে বলতে মান্তুর গলা ধরে এলো। বুঝতে পারলাম ওর বুকের ভেতরের কষ্টগুলো ওর কন্ঠনালীর ওপরে অবরোধ সৃষ্টি করেছে। আমিও কোনো কথা না বলে চুপচাপ ওর হাতের ওপর হাত বোলাতে লাগলাম।
একটু সময় বাদে মান্তু আবার বললো, ‘কী হলো দীপদা? আমায় কথা দিন’।
আমার গলা দিয়ে কথা বেরোচ্ছিলো না। মনে হচ্ছিলো আমার বুকের মধ্যে থেকে একটা কান্নার ঝড় উঠে আমার গলা দিয়ে বেরোতে চেয়েও বেরোতে পারছে না। গলার কাছটায় যেন আঁটকে গেছে সব কান্না... সব বেদনা। অনেক কষ্টে ধরা গলায় বলে উঠলাম, ‘চেষ্টা করবো, এ কথা দিচ্ছি তোমায়’।
মান্তু আমার অবস্থাটা বুঝতে পেরে পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্যেই হঠাৎ বলে উঠলো, ‘আপনি কিন্তু সেদিন রাতে আমায় খুব কষ্ট দিয়েছেন। আগে যদি জানতাম আপনি আমার ওপর এতোটা নিষ্ঠুর হতে পারেন তাহলে এগোবার আগে আরো কিছু ভাবতাম’।
আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমি তোমায় কষ্ট দিয়েছি? কী বলছো তুমি’?
মান্তু চটুল ভঙ্গীতে বলে উঠলো, ‘দিয়েছেনই তো। আপনি জানেন পরদিন থেকে আমার সারা শরীর কী ব্যথা করছিলো? তিন চার দিন পর্যন্ত আমি বুকে হাতই দিতে পারিনি, এতো অসহ্য ব্যথা ছিলো। আমার বুকের ও দুটোকে মনে হচ্ছিলো যেন দুটো বড় সর ফোঁড়া। আঙুলের ডগা ছোঁয়ালেও ব্যথা করতো। চার দিন পর ব্যথা কমেছিলো। আপনি পারলেন আমাকে এতো কষ্ট দিতে”?
আমি ওর দুষ্টুমি বুঝতে পেরে মুচকি মুচকি হেঁসে বললাম, ‘তুমি বোধ হয় ভুলে গেছো, সেদিন কিন্তু আমি নিজের ইচ্ছেয় কিছুই করি নি। তুমি যা করতে বলেছিলে আমি তাই করেছি। তুমিই বলেছো ‘এটা করুন’ ‘ওটা করুন’। আমি তো শুধু তোমার কথা রেখেছি। নিজের ইচ্ছে ছিলোনা বলে বলছি না। কিন্তু আমার নিজের যা করতে ইচ্ছে করছিলো তা তো আমি করিই নি’।
মান্তু দুষ্টুমির হাঁসি হেঁসে বললো, ‘ওমা, তাই না কি? তা আর কী করতে ইচ্ছে হচ্ছিলো শুনি’।
আমি হতাশ সুরে বললাম, ‘আর সে কথা বলে কি হবে? শুধু হতাশার কষ্টই ভোগ করতে হবে। তাছাড়া কে জানে তুমি হয়তো শুনে রেগেও যেতে পারো’।
মান্তু বললো, ‘না রাগবো না। বলুন না প্লীজ’।
আমি গলা নিচু করে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললাম, ‘সে রাতে তোমার কথা মতো এটা ওটা করবার পর আমার খুব ইচ্ছে করছিলো তোমার শরীরের ভেতর ঢুকে যেতে। শরীরের ভেতর ঢোকার মানে বুঝতে পারছো তো? না কি খুলে বলতে হবে’?
______________________________
ss_sexy
(Upload No. 121)
আমি মান্তুর কথার কোনো জবাব দিলাম না। একটু পর ও নিজেই আবার বলতে শুরু করলো, ‘সেদিন আপনি যা করেছেন সেসব ‘আপনি করেছেন’ না বলে ‘আমি সেধে আপনাকে দিয়েছি’ বললেই বরং সঠিক বলা হবে। ইন ফ্যাক্ট, আমিতো সেদিন আরো কিছু দেবার জন্যেও তৈরী ছিলাম। কিন্তু লজ্জা কাটিয়ে উঠে সেকথা বলতে পারিনি আপনাকে। আপনি যে নিজে থেকে কিছু করবেন না সেতো আমি আগে থেকেই জানি’। আমি একটু অবাক হয়ে বললাম, ‘কী আগে থেকে জানো তুমি’? মান্তুর মুখে আবার যেন সেই কষ্ট মিশ্রিত হাসি দেখতে পেলাম। ও বললো, ‘আপনার মনে আছে দীপদা, বছর খানেক আগে আমার বুকে হাত দেওয়া নিয়ে বাজি ধরে আমি হেরে গিয়েছিলাম। সেদিন আপনি বাজি জিতেও আমার বুকে হাত দ্যান নি। আর বাজির শর্ত হিসেবে যে কিছু একটা দিতে আমি বাধ্য ছিলাম আপনি আজ অব্দি তা কিছুই চান নি। ঠিক যে মুহূর্তে আমি হার স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলাম তখন আপনার হাতটা ঠিক কোন জায়গায় রাখা ছিলো, সেটা আপনি বলার পরেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম। আপনি চাইলে তখনই মুখে কিছু না বলে আমার মাই টিপে দিতে পারতেন। কিন্তু আপনি তা করেননি, শুধু আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে আপনি বাজিটা জিতে গিয়েছেন। অন্য যেকোনো ছেলে হলে সেদিন আমার বুক না টিপে ছাড়তো না। তাই আমি জানতাম আমি নিজে আগ্রহ না দেখালে আপনি কিছুই করবেন না। তাই সেদিন রাতে ও সব করতে গিয়েছিলাম। যদিও আমার মনের ইচ্ছেটা পুরোপুরি মেটেনি, তবুও যতোটুকু যা পেয়েছি আমি তাতেও খুশী হয়েছি’। আমি প্রশ্ন করলাম, ‘কিন্তু কেন মান্তু? কেন সেদিন রাতে তুমি অমন করে আমার নিজের কাছেই আমাকে ছোট করে দিলে’? মান্তু কয়েক সেকেণ্ড চুপ থেকে বললো, ‘ভালোবাসা কাউকে ছোটো করেনা দীপদা। আমি অনেক দিন আগে থেকেই আপনাকে মনে মনে ভালবাসতে শুরু করেছিলাম। আপনি হয়তো বোঝেন নি, বা বুঝেও না বোঝার ভাণ করেছেন সব সময়। আপনি বয়সে আমার থেকে বেশ বড়, আর এক সময় আমাকে পড়াতেন। তাই লজ্জার মাথা খেয়ে নিজেও মুখ ফুটিয়ে কিছু বলতে পারিনি। কিন্তু মুখে প্রকাশ করতে না পারলেও আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা প্রতি মুহূর্তে বেড়েই চলছে। আজ অব্দি, এখন অব্দি। আপনি আমাকে কোনোদিন কিছু না বললেও আপনার চোখের ভাষা আমায় জানিয়ে দিয়েছে যে আপনিও আমাকে একই সমান ভালোবাসেন। আমি জানি আমার মা বাবা আপনার জন্যে কতটুকু কী করেছেন। আর এটাও গোড়া থেকেই জানতাম যে আমাকে ভালোবেসে আপনি তাদের মনে কোনোদিন আঘাত দিতে পারবেন না। তাই আমি নিজেই বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসার অকালমৃত্যু অবধারিত। এ ভালোবাসার ফুল কোনোদিন বিকশিত হতে পারবেনা। আমি জানি আমি আপনাকে কোনো দিনই নিজের করে পাবো না। এ না পাওয়ার যন্ত্রণা আমাকে সারা জীবন বয়ে যেতে হবে। আপনাকে না পেয়ে যে আমি সারা জীবন কুমারী থেকেই কাটিয়ে দেবো, তাও সম্ভব নয়। কারণ সেটা করলেও আমার মনে হয় আপনাকে অসম্মান করা হবে। আমাকেও কাউকে না কাউকে বিয়ে করে তার সাথে সংসার করতে হবে। কিন্তু সারাটা জীবন আপনাকে নিয়ে মনের মধ্যে একটা কষ্ট থেকেই যাবে আমার। তাই যখন শুনলাম আপনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, তখন মনকে শক্ত করে নিয়ে আমি এ ডিসিশানটা নিলাম। আমার জীবনের প্রথম প্রেমিককে বুকে জড়িয়ে ধরে তাকে প্রথম এবং শেষ বারের জন্যে চুমো খেয়ে আর অন্ততঃ একটি বারের জন্য হলেও আমার নারী সম্পদ আপনার হাতে তুলে দিতে মনস্থির করলাম। আপনার কাছে নিজের শরীরটা সম্পূর্ণ রূপে তুলে দিতে আমার কোনো ভয়, দ্বিধা বা সংশয়.. কিছুই ছিলো না। সেই বাজি খেলার দিন হতে আপনার ওপর আমার অগাধ বিশ্বাস তৈরী হয়ে গিয়েছিলো, যে আমাকে ভালোবাসার কথা মুখ ফুটে না বললেও আপনি কখনোই এমন কিছু করবেন না যাতে আমার কোনো ক্ষতি হতে পারে। তাই সে রাতে আপনার কাছে গিয়ে নির্ভয়ে শুতে আমার মন দ্বিধাবোধ করেনি। ছিলো শুধু অনেকটা লজ্জা আর সামান্য একটু সংশয়। কিন্তু কেন জানি আমার মনে হয়েছিলো সেটাই ছিলো আমার শেষ সুযোগ। আমার জীবনের প্রথম প্রেমিককে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করে চুমু খাবার সুযোগ আর কখনো পাবোনা আমি। মা, বাবা, ছোট বোন, ঠাকুমা, বড়দা এদের কাছে ধরা পড়ার চেয়েও আরেকটা বড় ঝুঁকি নিতে হয়েছিলো আমাকে সেদিন। আপনি জানেন না তখন আমার রিস্কি পিরিওড চলছিলো। সে রকম কিছু হলে হয়তো আমি কনসিভ করে ফেলতাম। কিন্তু আমি জানতাম, সে আমার দীপদা, সে আমাকে কখনোই বিপদে ফেলবে না। তাই সংশয়টুকু মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে দেরী হয়নি। ছিলো শুধু লজ্জা। এর আগেও মাঝে মাঝে ভেবেছিলাম লজ্জা ঝেড়ে ফেলে দু’হাতে আপনাকে বুকে জড়িয়ে ধরি। কিন্তু পারিনি। এদিকে দুমাস বাদেই আপনি বিয়ে করতে চলেছেন। তাই সমস্ত লাজ লজ্জা বিসর্জন দিয়ে সে রাতে অমন ভাবে এগিয়ে গিয়েছিলাম’।
আমি অবাক হয়ে মান্তুর কথা শুনে যাচ্ছিলাম। আমার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছিলো না। একটু সময় বাদে মান্তু আবার নিজে থেকেই বলতে লাগলো, ‘সেদিন যা করেছি তাতে আমি হয়তো আপনার চোখে ছোট হয়ে গেছি। কিন্তু বিশ্বাস করুন দীপদা, এতে আমার কোনো আফসোস নেই। আমার প্রথম ভালোবাসার লোকটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে পেরে আমি নিজের কাছেই নিজে কৃতজ্ঞ হয়ে গেছি। সারা জীবন ধরে এ সুখটুকু অন্ততঃ আমার মনে থাকবে যে আমি আমার প্রথম প্রিয়তমকে ভালোবেসে আদর করতে পেরেছি। ভবিষ্যৎ জীবন আমাকে কোথায় টেনে নিয়ে যাবে জানি না, কিন্তু জীবনের শেষ দিন অব্দি আমার মনে এ সুখটুকু অম্লান থাকবে যে আমার দীপদা আমার ভালোবাসায় সাড়া দিয়েছিলেন। সে আমার আবেদন রিজেক্ট করে দেয় নি। আর আমার কোনো দুঃখ নেই’।
আমার মুখে কোনো কথা সরছিলোনা। আমি অবাক চোখে শুধু মান্তুকে দেখে যাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম আমার প্রাক্তন ছাত্রী কার শিক্ষায় এতো পরিণত চিন্তা ধারা পেলো! খুব ইচ্ছে করছিলো ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে। মনে হচ্ছিলো দু’হাতে ওকে জাপটে ধরে চুমোয় চুমোয় ওকে ভরিয়ে দিই। কিন্তু প্রকাশ্য রাস্তায় রিক্সার মধ্যে সেটা একেবারেই সম্ভব ছিলোনা বলে কোনো রকমে সে লোভ সংবরণ করলাম। মান্তু আমার হাতটা একই ভাবে জড়িয়ে ধরে বসেছিলো তখনো। মুখ নিচু করে প্রায় অস্ফুট গলায় বললো, ‘কিছু বলবেন না আমাকে দীপদা’?
আমি ওর একটা হাত নিজের হাতে ধরে কিছু একটা বলতে যেতেই দেখলাম গলা দিয়ে শব্দ বেরোচ্ছে না আমার। কাশি আর গলা খাকড়ি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে বললাম, ‘নিজের সুখের জন্য কারুর মনে আঘাত দেওয়াটা আমি পাপ বলে মনে করি মান্তু। আজ অব্দি কোনো মেয়ে আমাকে তোমার মতো করে ভালোবাসেনি। আমিও কখনো তুমি ছাড়া আর কোনো মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখিনি। কিন্তু তোমাকে নিয়ে সুখী হতে গিয়ে আমি তোমার বাবা মাকে আঘাত দিয়ে দুখী করতে কিছুতেই পারবোনা। তাই তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই’।
মান্তু আমার হাত আঁকড়ে ধরে বললো, ‘ভালো হচ্ছেনা কিন্তু দীপদা। এসব ক্ষমা টমার কথা একেবারেই ওঠাবেন না। আমি কিন্তু তাহলে এই রাস্তার মধ্যেই কেঁদে ফেলবো’।
আমি আমার হাতে ধরা ওর হাতের ওপর অন্য হাতটা ধীরে ধীরে বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘আমাকে এর আগে আর কেউ এত ভালোবাসেনি। তোমাকে একবার খুব খুব আদর করতে ইচ্ছে করছে এখন মান্তু’।
মান্তু ওর স্বভাব সুলভ ভঙ্গীতে বললো, ‘একদম না। একেবারেই কোনো বদমাশি করা চলবে না। আদর করার সুযোগ আমি আপনাকে দেবো, তখন করবেন’।
আমি আর কোনো কথা না বলে চুপ করে গেলাম।
একটু পর মান্তু নিজেই বলে উঠলো, ‘আর মাত্র ৭০ দিন’।
আমি ওর কথার অর্থ বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কিসের ৭০ দিন’?
মান্তু প্রায় স্বগতোক্তির মতো বললো, ‘আর ৭০ বাদেই আপনি বিয়ে করছেন। আমি কিন্তু আপনাকে ‘আপনি’ করে বললেও আপনার বউকে কিন্তু ‘বৌদি-তুমি’ করেই বলবো। বৌদির ছবি দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আপনি দেখবেন দীপদা বৌদিকে নিয়ে আপনি খুব সুখী হবেন। আমার মন বলছে। আর আমার একটা অনুরোধ আছে, যদি রাখতে পারেন তাহলে আমি দুরে থেকেও খুব সুখী হবো’।
আমি ওর মুখের দিকে চাইতেই ও বললো, ‘বৌদিকে কখনো দুঃখ দেবেন না। তাকে সব সময় ভালো বাসবেন, তাকে সব সময় খুশী করে রাখবেন। আর তার চাওয়া পাওয়ার গুরুত্ব দেবেন’। বলতে বলতে মান্তুর গলা ধরে এলো। বুঝতে পারলাম ওর বুকের ভেতরের কষ্টগুলো ওর কন্ঠনালীর ওপরে অবরোধ সৃষ্টি করেছে। আমিও কোনো কথা না বলে চুপচাপ ওর হাতের ওপর হাত বোলাতে লাগলাম।
একটু সময় বাদে মান্তু আবার বললো, ‘কী হলো দীপদা? আমায় কথা দিন’।
আমার গলা দিয়ে কথা বেরোচ্ছিলো না। মনে হচ্ছিলো আমার বুকের মধ্যে থেকে একটা কান্নার ঝড় উঠে আমার গলা দিয়ে বেরোতে চেয়েও বেরোতে পারছে না। গলার কাছটায় যেন আঁটকে গেছে সব কান্না... সব বেদনা। অনেক কষ্টে ধরা গলায় বলে উঠলাম, ‘চেষ্টা করবো, এ কথা দিচ্ছি তোমায়’।
মান্তু আমার অবস্থাটা বুঝতে পেরে পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্যেই হঠাৎ বলে উঠলো, ‘আপনি কিন্তু সেদিন রাতে আমায় খুব কষ্ট দিয়েছেন। আগে যদি জানতাম আপনি আমার ওপর এতোটা নিষ্ঠুর হতে পারেন তাহলে এগোবার আগে আরো কিছু ভাবতাম’।
আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমি তোমায় কষ্ট দিয়েছি? কী বলছো তুমি’?
মান্তু চটুল ভঙ্গীতে বলে উঠলো, ‘দিয়েছেনই তো। আপনি জানেন পরদিন থেকে আমার সারা শরীর কী ব্যথা করছিলো? তিন চার দিন পর্যন্ত আমি বুকে হাতই দিতে পারিনি, এতো অসহ্য ব্যথা ছিলো। আমার বুকের ও দুটোকে মনে হচ্ছিলো যেন দুটো বড় সর ফোঁড়া। আঙুলের ডগা ছোঁয়ালেও ব্যথা করতো। চার দিন পর ব্যথা কমেছিলো। আপনি পারলেন আমাকে এতো কষ্ট দিতে”?
আমি ওর দুষ্টুমি বুঝতে পেরে মুচকি মুচকি হেঁসে বললাম, ‘তুমি বোধ হয় ভুলে গেছো, সেদিন কিন্তু আমি নিজের ইচ্ছেয় কিছুই করি নি। তুমি যা করতে বলেছিলে আমি তাই করেছি। তুমিই বলেছো ‘এটা করুন’ ‘ওটা করুন’। আমি তো শুধু তোমার কথা রেখেছি। নিজের ইচ্ছে ছিলোনা বলে বলছি না। কিন্তু আমার নিজের যা করতে ইচ্ছে করছিলো তা তো আমি করিই নি’।
মান্তু দুষ্টুমির হাঁসি হেঁসে বললো, ‘ওমা, তাই না কি? তা আর কী করতে ইচ্ছে হচ্ছিলো শুনি’।
আমি হতাশ সুরে বললাম, ‘আর সে কথা বলে কি হবে? শুধু হতাশার কষ্টই ভোগ করতে হবে। তাছাড়া কে জানে তুমি হয়তো শুনে রেগেও যেতে পারো’।
মান্তু বললো, ‘না রাগবো না। বলুন না প্লীজ’।
আমি গলা নিচু করে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললাম, ‘সে রাতে তোমার কথা মতো এটা ওটা করবার পর আমার খুব ইচ্ছে করছিলো তোমার শরীরের ভেতর ঢুকে যেতে। শরীরের ভেতর ঢোকার মানে বুঝতে পারছো তো? না কি খুলে বলতে হবে’?
______________________________
ss_sexy