Thread Rating:
  • 25 Vote(s) - 3.16 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব
।।৫৬।।



মাস খানেক পর চিঠি আসে,গুলনার বেগমকে বছরে ছটা প্রোগ্রাম দেওয়া হবে।কথাটা  সরাসরি তাকে  না বললেও বলদেব খুব খুশি।মণ্টি টিভিতে গান গাইবে সারা দেশের লোক শুনবে ভেবে বেশ পুলকিত।মণ্টি তার বউ ভার্সিটিতে কেউ জানে না।সেও কাউকে বলেনি।যারা গান ভালবাসে তারা শুনবে।পাশে বসে অনেক শুনেছে টিভির পর্দায় কেমন লাগবে ভেবে রোমাঞ্চিত হয়।
ড এমবি বলদেবকে একটু প্রেফার করেন সেটা কারো নজর এড়ায় না। আড়ালে আবডালে ড.এমবিকে নিয়ে  চলে নানা গুজগুজ ফুস্ফুস।এসব বিষয় যতটুকু সত্য রঙের পোচ পড়তে পড়তে আরো ফুলে ফেপে ওঠে,এই বয়সে যা হয়।কেউ কেউ তার নাম দিয়েছে মৌ-সোম।রসালো খবর অম্ল স্বাদ জিভে জল চলে আসে। মুখে মুখে ছড়াতে ছড়াতে ভার্সিটির সীমানা ছাড়িয়ে বাইরেও চলে কানাঘুষা। গুলনারের কানেও পৌছায় বিষয়টা। গুলনার ইদানীং বাড়িতে আসেন কম। মুন্সিগঞ্জেই পড়ে থাকেন। আর অদ্ভুত অদ্ভুত কল্পনা করে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করেন। জিদ খারাপ নয় কিন্তু সব ক্ষেত্রে ভাল বলা যায়না।
বলদেবের পরীক্ষা হয়ে গেছে ফল প্রকাশের অপেক্ষা।এখন হাতে অঢেল সময়।বাসায় ফেরার টান নেই। উদ্দেশ্যহীন ঘুরে বেড়ায় এদিক-ওদিক।  ড.এমবির সঙ্গে দেখা হয় না আর। পাস করার পর ড.এমবির অধীনে থিসিস করবে বলদেব কথাবার্তা পাকা। ভার্সিটিতে থাকতে কয়েকবার তার বাড়িতে গেছে,নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উপকার হয়েছে বেশ। বলদেব লক্ষ্য করেছে ভদ্রমহিলার মধ্যে দিশাহীন এক ভাব। বলদেবের কথা মন দিয়ে শোনেন। অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা সেজন্য তাকে ঈর্ষা বশত নানা কুৎসা করে বলদেব জানে। পৃথিবী শব্দমুখর কিন্তু প্রয়োজনীয় শব্দ ছাড়া অন্য শব্দ উপেক্ষা করাই বাঞ্ছনীয়। বলদেব কুকথায় কান দেয় না।
বলদেব উপেক্ষা করতে পারে না মণ্টির আচরণ। কেন তার সঙ্গে এমন করছে ভেবে কষ্ট পায়। লাইব্রেরীতে কাটায় অধিকাংশ সময়।রাতে বই পড়ে ঘুম না আসা পর্যন্ত।  খবরের কাগজে একটা বিজ্ঞাপন চোখে পড়ল। রূপনগর কলেজে দর্শনের অধ্যাপক নেওয়া হবে। দেবকে অধ্যাপক করা মণ্টির বাসনা। এখানে আবেদন করবে ঠিক করলো। লাইব্রেরী থেকে বাসায় ফিরছে এই সব কথা মনে মনে আন্দোলন করতে করতে। আম্মু জিজ্ঞেস করেন, মণ্টি কবে  আসবে তোমারে কিছু বলছে? দেব কিছু বলতে পারে না। আচমকা পাশে একটা গাড়ি এসে থামে। গাড়ির চালক ড.এমবি।দরজা খুলে দিয়ে বল্লেন,ভিতরে এসো।
বলদেবের এই এক দোষ কারো মুখের উপর বিশেষ করে মেয়েদের মুখের উপর না বলার সাধ্য ঈশ্বর তাকে দেয়নি।  তা ছাড়া হাতে কোনো কাজ নেই একটু ইতস্তত করে গাড়িতে উঠে বসে। ড.এমবি নিজেই ড্রাইভ করেন।
— পরীক্ষার পর তোমার সঙ্গে প্রথম দেখা।তুমি কোনো কাজে যাচ্ছিলে?
--সেরকম কিছু না।
--আচ্ছা সোম আমাকে তোমার কেমন লাগে?
—  ম্যাম,আপনাকে আমার খুব ভাল লাগে,খুব ভাল পড়ান আপনি।
— শোনো তুমি এখন আর আমার ছাত্র নও,আমাকে মৌ বলবে কেমন?
— আপনি বলেছেন থিসিস করাবেন।
— করাবো একটা শর্তে।
— কি শর্ত বলুন ম্যাম?
মৌসম রিমঝিম বেজে উঠলেন। গিয়ার বদলে বলেন,আমাকে বিড়ালের মত ম্যাম ম্যাম বলতে পারবে না আর আপনি-আজ্ঞে করতে পারবে না। কি দার্শনিক রাজি?
— আমি তো এখনো পাস করিনি।
— শোনো সোম, পাস করে ডিগ্রী নিয়ে শিক্ষকতা করা যায় দার্শনিক হওয়া যায় না। দার্শনিকতা জন্মগত একটা ধাচ।
বলদেব হা করে চেয়ে থাকে। মৌসম বলেন,প্রতি বছর আর্ট কলেজ থেকে গাদা গাদা ছাত্র বের হচ্ছে কিন্তু সবাই নন্দলাল বসু জয়নাল আবেদীন হয়না। নজরুল রবীন্দ্রনাথের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কতটুকু?
বলদেব মনে মনে ভাবে সবার মধ্যেই একটা বিশেষভাব থাকে যা তাকে একটা আলাদা মাত্রা এনে দেয়। মৌয়ের সঙ্গে কথা বলতে এজন্য ভাল লাগে। হাওয়ায় ড.এমবির গায়ের গন্ধ ভেসে নাকে লাগে। মেয়েদের গায়ে একটা সুন্দর গন্ধ থাকে।
— আচ্ছা সোম,আমাকে তোমাকে নিয়ে আলোচনা হয় তুমি কি তা শুনেছো?
বলদেব মাথা নীচু করে হাসে। মৌসম বলেন,হাসছো কেন?
— আমি কি এমন কেউকেটা? আলোচনার পাত্র হবার মত কি যোগ্যতা আছে আমার? লাজুক গলায় বলে দেব। গাড়ি উত্তরা আবাসনের নীচে থামে। গাড়িতে চাবি দিয়ে মৌসম বলেন,নামো।
এখানে উচ্চবিত্ত অভিজাত মানুষের বাস ,কেউ কারো ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামায় না। লিফটে উঠে দুজনে মৌসমের ফ্লাটে পৌছালো। বলদেবকে একটা সোফায় বসিয়ে পাখা চালিয়ে দিলেন। একমিনিট বলে মৌসম অন্য একটা ঘরে ঢুকে গেলেন।
ঘরের নীরবতায় পাখার শনশন শব্দ আরো স্পষ্ট হয়। বলদেব এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখতে থাকে ড.এমবি এখানে স্বামীকে বিদেশে ফেলে একলা কিভাবে থাকে? অনেক্ষন গেছে এত দেরী করছে কেন? মনে হচ্ছে এখানে আসাটা ভুল হয়েছে।
এমন সময় একটা ট্রে হাতে মৌসম প্রবেশ করে। পোষাক বদলেছে। গায়ে কালো রঙের পাতলা কামিজ আর বাটিক ছাপা লুঙ্গি পরনে। ট্রেতে সম্ভবত ফিশ ফ্রাই। গেলাস বোতল দেখে অনুমান করে ওর পানাভ্যাস আছে। পশ্চিমী সভ্যতার প্রভাব। মৌসম বসতে বসতে বলেন,অনেক্ষন বসিয়ে রেখেছিলাম,স্যরি।
— তুমি এর মধ্যে এতসব করলে?
— ফ্রিজে করা ছিল,এখন মাইক্রোভেনে সেকে আনলাম। নাও খাও।
ক্ষুধাবোধ ছিল খাবার দেখে আরো তীব্র হল। ফ্রাই তুলে খেতে শুরু করে,ভগবান বলদেবকে এই ব্যাপারে ধৈর্য ধরতে শেখায়নি।
— তোমার পরীক্ষা কেমন হল?
— পরীক্ষা একক ব্যাপার না,আমি দিয়েছি আমার মত এবার যিনি পরীক্ষক তিনি মুল্যায়ন করবেন তার মত করে। বলদেব লক্ষ্য করে দুটি গেলাসে বোতল থেকে পানীয় ঢালছে মৌসম। মনোরম সন্ধ্যায় একটু পান করলে মন্দ হয়না,তবু বলে,আমি এইসব খাই না।
— আমার সম্মানে প্লিজ সোম?
উফস সেই মেয়েদের অনুরোধ? তার আচরণে কোন মহিলা বিষণ্ণ হয় বলদেবের ভাল লাগে না।মণ্টি এখন বাড়িতে আসছে না। অগত্যা বা-হাতে একটা গেলাস তুলে নিল। মৌসম আরেকটি গেলাস নিয়ে তার গেলাসে ছুইয়ে বলল,চিয়ারস।
বলদেব মৃদু হাসে,এইসব আদব কায়দায় সে অভ্যস্ত নয়। দুই-এক চুমুক দেবার পর তার আড়ষ্টভাব কেটে গেল। মৌসম তার দিকে তাকিয়ে আছে,ঠোটে মৃদু হাসি লেপটে। জামার উপরে বোতাম খোলা স্তনের বিভাজিকা স্পষ্ট দেখা যায়।
মৌসম বলে,পাস করার পর কি করতে চাও?
— আমার নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্য নেই। কেউ কেউ চায় আমি অধ্যাপনা করি।
— আমিও তাই চাই। মীরপুরে একটা কলেজ বিজ্ঞাপন দিয়েছে। তুমি চেষ্টা করতে পারো। কলেজে অ্যাটাচ থেকে থিসিস করতে তোমার অসুবিধে হবে না।
— গাছে কাঁঠাল গোফে তেল। আগে পাস করি আর পাস করলেও তারা আমাকে নেবে কিনা– তুমি লাফিয়ে লাফিয়ে চিন্তা করছো।
ফোন বেজে উঠোলো। এক্সকিউজ মি বলে মৌসম ফোন ধরতে গেল।ভারী শরীর কুর্তিটা গায়ে সেটে থাকায় শরীরের কাঠামো স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। দু-একবার রূপনগর কথাটা কানে এল।জানলায় ভারী পর্দা ঘরে আলো কম।মৌসম কথায় মশগুল মাঝে মাঝে খিল খিল করে হেসে উঠছে।মনে হচ্ছে ঘনিষ্ঠ কেউ হবে।
 
[+] 5 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব - by kumdev - 07-07-2020, 06:30 PM



Users browsing this thread: 15 Guest(s)