Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 2.78 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance কাজল নদী Written By Tumi_je_amar
#56
(#০২)


তারপর ঠিক হয় ভাস্কর ওর বাড়ি থেকে খাট আর টেবিল চেয়ার নিয়ে আসতে পারবে। বাকি জিনিস পত্র মানসী কিনবে। আর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই সব রেডি করে ফেলবে।


এর মধ্যে ভাস্কর খবর নিয়ে জেনেছে মাসীর চায়ের দোকানও মাসীদের কেনা জায়গায় বানানো। মানসী বলে বিয়ের পরে ওখানে একটা ছোট হোটেল চালু করা যায়। স্বপন বলে সেটা করতে গেলে অনেক কিছু লিগ্যাল কাজ করতে হবে। বিয়ের পরে ধীরে সুস্থে বসে সেসব প্ল্যান করা যাবে। 


সেই রাতে ভাস্কর নিজের বাড়ি ফিরে যায়। মানসী স্বপনদের বাড়িতেই থেকে যায়। রাত্রে স্বপনের পাশে ঘুমায়।


স্বপন – আজকের পরে তোমার আর আমার সাথে ঘুমানো ঠিক হবে না


মানসী – কেন ?


স্বপন – ভাস্কর এটাকে ভাল ভাবে নাও নিতে পারে।


মানসী – ভাস্কর তোমার আর আমার সম্পর্ক ভাল ভাবেই জানে। আমি যে তোমাকে চুমু খাই সেটাও জানে।


নীহারিকা – ভাস্কর রাগ করে না


মানসী – তুই কি রাগ করিস ?


নীহারিকা – আমি তো স্বপন আর তোকে জানি। আর আমাদের মধ্যে সেক্স তো খোলামেলা।


মানসী – ভাস্কর আর আমার মধ্যে সেক্স নিয়ে কোন কথা হয় নি। কিন্তু ও আমার আর স্বপনের বন্ধুত্ব বেশ ভাল করেই বোঝে। 


নীহারিকা – এতদিনে তুই ভাস্করের সাথে কোন সেক্স করিসনি ?


মানসী – আমরা শুধু চুমু খাই।


নীহারিকা – আর ?


মানসী – আর হাত ধরে বসে কথা বলি


নীহারিকা – ভাস্করের নুনু দেখেছিস ?


মানসী – ছি, না না ওইসব করিনি


নীহারিকা – কেন ?


মানসী – আমরা এখনও একে অন্যের শরীর দেখিনি


নীহারিকা – কেন ?


মানসী – আমরা যা দেখার বা করার সব বিয়ের পরে করবো।


স্বপন – খুব ভাল।


এরপর ওরা একসাথে ঘুমিয়ে পড়ে। 


এর পরের মাস মানসী, ভাস্কর আর স্বপনের বেশ ব্যস্ততার মধ্যে কেটে যায়। ভাস্কর মাসীর বাড়ি পুরো পরিস্কার করে। আস্তে আস্তে ওর ঘরের যেটুকু ফার্নিচার আনতে পারে নিয়ে আসে। বাকি দু একটা জিনিস মানসীকে কিনতে হয়। 


স্বপনের অফিসের অনেক পার্টি বা মিটিং হোটেল কেনিলওয়ারথ – এ হত। সেই জন্যে ওর ওই হোটেলে বেশ জানাশোনা হয়ে গিয়েছিল। স্বপন মানসী আর ভাস্করের বিয়ের আয়োজন ওই হোটেলেই অবিশ্বাস্য রকমের কম খরচে করে। অভিনব বিয়ের কার্ড বানানো হয়। হাতে লেখা কার্ড, তাতে লেখা, 


আমরা দুজন আগামী ২২-শে এপ্রিল, রবিবার বিয়ে করছি। সেদিন সন্ধ্যেবেলা হোটেল কেনিলওয়ারথ – এ আমাদের বিয়ের সাক্ষী হিসাবে আসতে অনুরোধ করছি।

ইতি – ভাস্কর ও মানসী। 

সব শুদ্ধ আমন্ত্রিতের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ জন। মানসী ওর বন্ধুর মধ্যে শুধু কস্তূরীকে বলে। ভাস্কর ওর কোন আত্মিয়দের বলে না। শুধু দুজন বন্ধু, ভূষণ বাবু আর ওই দোকানের বাকি কর্মচারীদের বলে। মানসী বিয়ের কার্ড নিয়ে প্রথম যায় শ্রদ্ধা জামাইবাবুর কাছে।


শ্রদ্ধা – এ কি করেছ তুমি !


মানসী – কেন জামাইবাবু ?


শ্রদ্ধা – নিজের বিয়ের কার্ড নিজে লিখেছ ?


মানসী – সব কিছুই তো আমরা দুজনেই করছি


শ্রদ্ধা – বড়দা কিছু করছে না ?


মানসী – দাদা এখনও জানেই না যে আমার বিয়ে


শ্রদ্ধা – কে কে জানে ?


মানসী – স্বপন, নেহা আর দীপ্তি জানে। 


শ্রদ্ধা - কেনিলওয়ারথ তো বেশ দামী হোটেল !


মানসী – আমি জানি না, সেসব স্বপন ব্যবস্থা করেছে


শ্রদ্ধা – তোমার সাহস আছে বলতে হবে, বড়দাকে না জানিয়ে সব করছ।


মানসী – দাদা তো এতো বছরে আমার বিয়ে দিল না, তাই নিজে নিজেই সব করতে হচ্ছে।


শ্রদ্ধা – আমার আশীর্বাদ আর শুভেচ্ছা সব সময় তোমার জন্যে আছে। 


তারপর কার্ড সৃজা আর মানস কে দেয়। সব শুনে সৃজা খুব খুশী। দীপ্তি আর লেখাকে কার্ড দিলে ওরা দুজনেই বলে যে ওরা কি পর যে কার্ড দিয়ে নিমন্ত্রণ করছে।


মানসী – আমার বিয়ে তো আমি নিজে করছি, দাদারা তো দিচ্ছে না, তাই।


দীপ্তি - লেখা দিদি জানে না কিন্তু আমি তো তোমার সাথেই আছি


লেখা – তুই জানতিস 


দীপ্তি – আমি গত দু বছর ধরে জানি। ওর ঘরের সব ফার্নিচার আমার সাথেই কিনেছে


লেখা – তোমার আবার আলাদা ঘর হচ্ছে নাকি ?


মানসী – সব জানাবো সময় হলে।


লেখা – হ্যাঁ বুঝেছি, এই মুখপুড়িটাই তোমার আপন আর আমি তোমার পর।


মানসী – না বৌদি তা নয়। আসলে তুমি ঘরের কাজে থাকো, দীপ্তি আমার সাথে পার্লারে থাকে, তাই ওকে নিয়েই সব কিছু করেছি।


লেখা – কিন্তু আমি কার্ড নেবো না। তুমি যখন বড়দাকে কার্ড দেবে তখন বাকি দুই ভাইকেও দিও।


ভাস্কর যায় স্বপন কে কার্ড দিতে। 


ভাস্কর – দাদা, আপনিই সব কিছুর হোতা, তাও আপনাকেই নিমন্ত্রণ করছি।


স্বপন – আমি তোমাদের একটু গাইড করছি শুধু, সব কিছু তো তোমরাই করছ


এরপর মানসী গিয়ে ওর মাকে সব জানায়।


মা – তুই দাদাকে বলিস নি ?


মানসী – দাদা তো ওকে পছন্দই করে না


মা – দাদা যাকে পছন্দ করে না তাকে বিয়ে করার কি দরকার !


মানসী – মা দাদাকি আমার বিয়ে দেবে


মা – সে ঠিক, তুই যা ভাল বুঝিস কর। স্বপন জানে ?


মানসী – স্বপনই তো প্রথম থেকে আছে আমার সাথে


মা – স্বপন সাথে থাকলে কোন চিন্তা নেই। তুই ভাল থাকবি তো ?


মানসী – সেই আশাই তো করছি।


মা – আমার আশীর্বাদ থাকলো, তুই ঠিক সুখী হবি।


মানসী – মা আমি এখনই খুব সুখী।


বিয়ের আগের রবিবার মানে ১৫-ই এপ্রিল সকালে সবাই একসাথে বসলে মানসী গিয়ে বড়দাকে কার্ড দেয়। দীপ্তি আর লেখা ভয়ে ভেতরে আসে না, দরজার বাইরে থেকে উঁকি দিয়ে দেখে। দীপ্তি ফিসফিস করে লেখাকে বলে, “এতদিনে রাঙ্গাদির সাহস হয়েছে”।


বড়দা – কিসের কার্ড ! 


মানসী – আমার আর ভাস্করের বিয়ের


বড়দা – তুমি বিয়ে করবে ?


মানসী - হ্যাঁ


বড়দা – অনেক বড় হয়ে গেছ তো !


মানসী – দাদা আমার বয়েস ৪৯ হচ্ছে, আর সেটা মনে হয় নিজে সিদ্ধান্ত নেবার জন্যে যথেষ্ট। 


বড়দা – কিন্তু ভাস্কর ছাড়া আর কাউকে পেলে না ! আর সব ঠিক করার আগে আমার বা মায়ের অনুমতি নেবার দরকার মনে করলে না !


মানসী – আমি নিজে বিয়ে করছি, তাই তোমার অনুমতি নেবার দরকার আছে বলে মনে করিনি


বড়দা – এরপর কিছু হলে আমি কিছু জানিনা।


ব্রততী – রাঙ্গাদিদি তো তোমাকে কিছু জানতে বলে নি


বড়দা – তুমি এর মধ্যে কেন কথা বলছ ?


ব্রততী – তোমার বোন, আমারও কিছু হয়। আমিও রাঙ্গাদিদিকে ভালবাসি। 


বড়দা – এই রকম একটা অপদার্থ ছেলেকে বিয়ে করবে, সেটাকে সাপোর্ট করছ। এই তোমার ভালবাসা ?


ব্রততী – তোমার বোঝার কোন দরকার নেই আমার ভালবাসা কিরকম সেটা জানার


বড়দা – কিন্তু এই বিয়েতে আমার মত নেই


মানসী – দাদা আমি তোমার মত জানতে চাইনি, শুধু বিয়েতে এসে আশীর্বাদ করতে বলছি


বড়দা – আমার মত নেই, তাই আসবোও না আর আশীর্বাদ দেবার কোন প্রশ্নই নেই।


মানসী – কিন্তু সামনের রবিবার আমরা বিয়ে করছি।


বড়দা – আমি এই বিয়ে হতে দেবো না


মানসীর বাকি দুই ভাই কিছুই বলে না। বড়দা ওদের জিজ্ঞাসা করে ওদের মত। দুই ভাইই মানসীকে সাপোর্ট করে। ওরা দুজনেই বলে ওরা তো মানসীর ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনদিন চিন্তা করেনি, তাই ওর বর্তমানেও কোন বাধা দেওয়া উচিত নয়।


বড়দা – তোমরা বুঝতে পারছ না


মেজ ভাই – আমার বোঝার দরকারও নেই


ছোট ভাই – আমাদের কি করতে বল ?


বড়দা – আমি জানতে চাই না তোমরা এই বিয়ে সাপোর্ট করছ কি করছ না। তোমরা আমি যা বলবো তাই করবে। 


ছোট ভাই – তুমি যা বলবে আমাকে সেটা করতেই হবে।

""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজল নদী Written By Tumi_je_amar - by Kolir kesto - 07-07-2020, 11:42 AM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)