04-07-2020, 09:21 PM
(This post was last modified: 02-03-2021, 09:24 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
।।৪৬।।
বাগানের গাছগুলো পরিচর্যা হয়না আবার আগাছায় ভরে গেছে। সামান্য একজন কর্মচারী বলুর অনুপস্থিতি ভীষণভাবে বদলে দিয়েছে সমগ্র বাংলোটাকে। অফিসে ঢোকার আগে কয়েক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে দেখলেন জেনিফার আলম সিদ্দিকি। নিজের ঘরে ঢূকে চেয়ারে এলিয়ে দিলেন শরীরটাকে। ম্যাডামের পরিবর্তন নুসরত জাহানের নজর এড়ায় না। কয়েকটা ফাইলে সই করাতে হবে নুসরত জাহান উঠে ম্যাডামের কাছে গিয়ে বলল,ম্যাম আপনার শরীর খারাপ?
সোজা হয়ে বসে হাসলেন জেনিফার,জিজ্ঞেস করেন,তোমার বন্ধুর কি খবর? তার মনে কোনো ক্ষোভ নেইতো?
এতবছর পর এই প্রশ্ন? কিছুটা অবাক হলেও নুসরত হেসে বলল,বিয়ে করে ওরা ভালোই আছে।
তুমিও এবার একটা বিয়ে করো।
নুসরতের মুখ লাল হয়। ম্যাম আজ একটু অন্য মুডে।
বলু বলতো ভিতরে আছে বলেই বাইরে দেখতে পাই। আমিই যা ভাবছি সেটাই সত্য অন্য সব ভুল এই চিন্তাটাই ভুল। নুসরত একদিন ঘুরে এসো বাড়ীর থেকে।
ম্যাম কি বলতে চাইছে বুঝতে অসুবিধে হয়না। নুসরতের সব কথাই ম্যাম জানে। ঠোটে ঠোট চেপে কয়েক মুহূর্ত ভেবে বলল,হ্যা যাবো। শুনেছি আব্বু অনেক বদলে গিয়েছে। নেশাও নাকি ছেড়ে দিয়েছেন।
জেনিফার আলম ফাইল খুলে চোখ বোলাতে বোলাতে বলেন, সব ভালো করে তুমি দেখেছো তো?
হ্যা ম্যাম। যেখানে গোলমাল আছে পাশে নোট দেওয়া আছে।
বেশ কিছু ফাইলে সই সাবুদ করার পর জেনিফার কলম রেখে আড়মোড়া ভাঙ্গেন। একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে বললেন,বলু থাকলে এতক্ষন চা এসে যেতো।
হ্যা দেখছি। ত্রস্ত পায়ে নুসরত বেরিয়ে জমিলকে চায়ের ফরমাশ করে ফিরে আসে।
দেবকে ভুলতে পারেন নি ম্যাম। অবশ্য ম্যাম কেন সেও কি ভুলতে পেরেছে? নুসরত বলল,দেব চলে যাবার পর অফিসটা কেমন নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে।
জমিল দু-কাপ চা দিয়ে গেল।
চায়ে চুমুক দিয়ে জেনিফার বললেন, আমারও বদলির সময় হয়ে এল। বলুর কাজ করার মধ্যে নিছক কর্তব্য নয় কাউকে তোয়াজ তোষামোদ নয় থাকত সেবার মনোভাব। যেভাবে একজন মানুষ একজন আর্তের সেবা করে। একবার বলেছিলাম,তুমি তো * ? কি বলল জানো? আজ্ঞে তা বলতে পারেন।
নুসরতের ঠোটে স্মিত হাসি।
তুমি হাসছো? বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম,তা বলতে পারি মানে? আমি যদি বলি তুমি .?
সেইটা আপনার বিবেচনা।
তুমি কি নেমাজ করো?
আমি তো পুজোপাঠও করি না।
তুমি তা হলে কি?
আমি মানুষ হয়ে জন্মেছি। মনুষ্যত্বকে চোখের মণির মতো রক্ষা করতে চাই। ইচ্ছে করলে আমি . কিম্বা খ্রীষ্টান হয়ে যেতে পারি কিন্তু বাঘ হতে পারব না বাঘও চেষ্টা করলে মানুষ হতে পারবে না।
বেশী লেখাপড়া না করলেও কথা বলত জ্ঞানীর মতো।
ধর্মের এক নতুন তাৎপর্যের কথা বলুর কাছে শিখেছি। সব কিছুর নিজস্ব ধর্ম আছে,এক এক ঋতুতে এক একরকম ফুল ফল হয়। জীবের ধর্ম আছে,মানুষের মন অন্য মনের সংস্পর্শ নাহলে নিজেকে মনে হবে নিঃসঙ্গ।
মণ্টী অপা চলে যাবার পর নুসরত মর্মে মর্মে বুঝেছে,নিঃসঙ্গতা কাকে বলে?
জেনিফার বলতে থাকেন,শরীরও অন্য শরীরের স্পর্শ চায়।
নুসরতের কেমন একটা শিহরণ খেলে যায়,বিহবল চোখে ম্যামের দিকে তাকিয়ে থাকে।
নেও চাখেয়ে নেও ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।আমাকে এখন একবার বেরোতে হবে। ঐ অফিসে কিছু কাজ আছে।
ম্যাম একটা কথা বলবো?
হ্যা বলো,এত সঙ্কোচ করছো কেন?
আপনার কোথায় বদলি হচ্ছে?
দেখা যাক কোথায় হয়।
জেনিফার বেরিয়ে গেলেন।পিয়ন জমিলও সঙ্গে গেল।এ্যানেক্স বিল্ডিং-এ জিপ থামতে অফিসে খবর চলে যায়।শুরু হয় কর্ম তৎপরতা। ডিএম সাহেবা উপরে উঠে সোজা মোজাম্মেল হকের ঘরে ঢুকলেন।
তৈয়ব মিঞাকে বেশ খুশি খুশি লাগে।মিনু উসমানি ডাকতে কাছে গিয়ে তৈয়ব বলল,বলুন ম্যাম।
--কি ব্যাপার তোমাকে বেশ খুশি খুশি লাগছে?
--শোনেন নাই?
--কি শুনব?
--ডিএম বদলি হয়ে যাচ্ছে।
মিনু উসমানিকে খুব খুশি মনে হল না।ম্যাডাম একটু তেরিয়া টাইপ হলেও সৎ।উনি আসার পর অফিসের চেহারা বদলে দিয়েছেন।কে আসবে কে জানে।
বাগানের গাছগুলো পরিচর্যা হয়না আবার আগাছায় ভরে গেছে। সামান্য একজন কর্মচারী বলুর অনুপস্থিতি ভীষণভাবে বদলে দিয়েছে সমগ্র বাংলোটাকে। অফিসে ঢোকার আগে কয়েক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে দেখলেন জেনিফার আলম সিদ্দিকি। নিজের ঘরে ঢূকে চেয়ারে এলিয়ে দিলেন শরীরটাকে। ম্যাডামের পরিবর্তন নুসরত জাহানের নজর এড়ায় না। কয়েকটা ফাইলে সই করাতে হবে নুসরত জাহান উঠে ম্যাডামের কাছে গিয়ে বলল,ম্যাম আপনার শরীর খারাপ?
সোজা হয়ে বসে হাসলেন জেনিফার,জিজ্ঞেস করেন,তোমার বন্ধুর কি খবর? তার মনে কোনো ক্ষোভ নেইতো?
এতবছর পর এই প্রশ্ন? কিছুটা অবাক হলেও নুসরত হেসে বলল,বিয়ে করে ওরা ভালোই আছে।
তুমিও এবার একটা বিয়ে করো।
নুসরতের মুখ লাল হয়। ম্যাম আজ একটু অন্য মুডে।
বলু বলতো ভিতরে আছে বলেই বাইরে দেখতে পাই। আমিই যা ভাবছি সেটাই সত্য অন্য সব ভুল এই চিন্তাটাই ভুল। নুসরত একদিন ঘুরে এসো বাড়ীর থেকে।
ম্যাম কি বলতে চাইছে বুঝতে অসুবিধে হয়না। নুসরতের সব কথাই ম্যাম জানে। ঠোটে ঠোট চেপে কয়েক মুহূর্ত ভেবে বলল,হ্যা যাবো। শুনেছি আব্বু অনেক বদলে গিয়েছে। নেশাও নাকি ছেড়ে দিয়েছেন।
জেনিফার আলম ফাইল খুলে চোখ বোলাতে বোলাতে বলেন, সব ভালো করে তুমি দেখেছো তো?
হ্যা ম্যাম। যেখানে গোলমাল আছে পাশে নোট দেওয়া আছে।
বেশ কিছু ফাইলে সই সাবুদ করার পর জেনিফার কলম রেখে আড়মোড়া ভাঙ্গেন। একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে বললেন,বলু থাকলে এতক্ষন চা এসে যেতো।
হ্যা দেখছি। ত্রস্ত পায়ে নুসরত বেরিয়ে জমিলকে চায়ের ফরমাশ করে ফিরে আসে।
দেবকে ভুলতে পারেন নি ম্যাম। অবশ্য ম্যাম কেন সেও কি ভুলতে পেরেছে? নুসরত বলল,দেব চলে যাবার পর অফিসটা কেমন নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে।
জমিল দু-কাপ চা দিয়ে গেল।
চায়ে চুমুক দিয়ে জেনিফার বললেন, আমারও বদলির সময় হয়ে এল। বলুর কাজ করার মধ্যে নিছক কর্তব্য নয় কাউকে তোয়াজ তোষামোদ নয় থাকত সেবার মনোভাব। যেভাবে একজন মানুষ একজন আর্তের সেবা করে। একবার বলেছিলাম,তুমি তো * ? কি বলল জানো? আজ্ঞে তা বলতে পারেন।
নুসরতের ঠোটে স্মিত হাসি।
তুমি হাসছো? বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম,তা বলতে পারি মানে? আমি যদি বলি তুমি .?
সেইটা আপনার বিবেচনা।
তুমি কি নেমাজ করো?
আমি তো পুজোপাঠও করি না।
তুমি তা হলে কি?
আমি মানুষ হয়ে জন্মেছি। মনুষ্যত্বকে চোখের মণির মতো রক্ষা করতে চাই। ইচ্ছে করলে আমি . কিম্বা খ্রীষ্টান হয়ে যেতে পারি কিন্তু বাঘ হতে পারব না বাঘও চেষ্টা করলে মানুষ হতে পারবে না।
বেশী লেখাপড়া না করলেও কথা বলত জ্ঞানীর মতো।
ধর্মের এক নতুন তাৎপর্যের কথা বলুর কাছে শিখেছি। সব কিছুর নিজস্ব ধর্ম আছে,এক এক ঋতুতে এক একরকম ফুল ফল হয়। জীবের ধর্ম আছে,মানুষের মন অন্য মনের সংস্পর্শ নাহলে নিজেকে মনে হবে নিঃসঙ্গ।
মণ্টী অপা চলে যাবার পর নুসরত মর্মে মর্মে বুঝেছে,নিঃসঙ্গতা কাকে বলে?
জেনিফার বলতে থাকেন,শরীরও অন্য শরীরের স্পর্শ চায়।
নুসরতের কেমন একটা শিহরণ খেলে যায়,বিহবল চোখে ম্যামের দিকে তাকিয়ে থাকে।
নেও চাখেয়ে নেও ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।আমাকে এখন একবার বেরোতে হবে। ঐ অফিসে কিছু কাজ আছে।
ম্যাম একটা কথা বলবো?
হ্যা বলো,এত সঙ্কোচ করছো কেন?
আপনার কোথায় বদলি হচ্ছে?
দেখা যাক কোথায় হয়।
জেনিফার বেরিয়ে গেলেন।পিয়ন জমিলও সঙ্গে গেল।এ্যানেক্স বিল্ডিং-এ জিপ থামতে অফিসে খবর চলে যায়।শুরু হয় কর্ম তৎপরতা। ডিএম সাহেবা উপরে উঠে সোজা মোজাম্মেল হকের ঘরে ঢুকলেন।
তৈয়ব মিঞাকে বেশ খুশি খুশি লাগে।মিনু উসমানি ডাকতে কাছে গিয়ে তৈয়ব বলল,বলুন ম্যাম।
--কি ব্যাপার তোমাকে বেশ খুশি খুশি লাগছে?
--শোনেন নাই?
--কি শুনব?
--ডিএম বদলি হয়ে যাচ্ছে।
মিনু উসমানিকে খুব খুশি মনে হল না।ম্যাডাম একটু তেরিয়া টাইপ হলেও সৎ।উনি আসার পর অফিসের চেহারা বদলে দিয়েছেন।কে আসবে কে জানে।