Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 2.78 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance কাজল নদী Written By Tumi_je_amar
#25
## ৪
স্বপন আর মানসী মাছ কাটে। বড়দা বলেন স্বপন এতো বড় মাছকে কি সুন্দর করে কাটল। মানসী বলে ভাল রাঁধুনি সব সময়েই নিজেই মাছ তরকারি নিজে কেটে নেয়। ভাপা ইলিশ রান্না করার পরে দুপুরে একটু বিশ্রাম নিয়ে সবাই বেড়াতে বেরোবে। সেদিন ওদের পাটনা চিড়িয়াখানা যাবার কথা। 
নিহারিকা বলে যে ওর রাঙা দিদির শরীর খারাপ করছে।

বড়দা – কি হল আবার ?

মানসী – কিছু না, একটু গা গুলোচ্ছে

বড়দা – তখনই বলেছিলাম ওত গুলো ইলিশ মাছ খাস না। স্বপন তোমার কাছে পুদিনহারা আছে ?

স্বপন – হ্যাঁ আছে
বড়দা – ওকে খাইয়ে দাও। আর আজকের বেড়ানো ক্যান্সেল।
সৃজা – না না তা হবে না। 

মানসী – তোমরা যাও, আমি এমনি শুয়ে থাকবো

বড়দা – তুই একা একা থাকবি ? সেটা ঠিক হবে না।

নিহারিকা – স্বপন থাকুক। আমি আপনাদের নিয়ে ঘুরে আসছি।

মানসী – না না তা হয় না।

নিহারিকা – ও অনেকবার চিড়িয়াখানা গিয়েছে। একবার না গেলে কিছু হবে না।

বড়দা – কত দুর চিড়িয়াখানা ?
স্বপন – পনের মিনিট লাগবে যেতে।

নিহারিকা – আমরা দু তিন ঘণ্টার মধ্যেই ফিরে আসবো

বড়দা – তবে তাড়াতাড়ি চল, আবার তাড়াতাড়িই ফিরতে হবে। কি যে করে এই মেয়েটা।

বড়দা যদি বুঝত মানসী কোথায় শরীর খারাপ হয়েছে ! যাই হোক ওরা বেড়াতে চলে যায়। মানসী শুয়ে থাকে। স্বপন এসে ওর মাথার কাছে বসে।

স্বপন – আমার বন্ধুর আজ সকাল থেকে কি হয়েছে ?

মানসী – কিছু হয়নি স্বপন। তুমি যদি রাগ না করো একটা কথা বলব ?

স্বপন – তোমার কথায় আমি রাগ করবো ? কখনোই তা হতে পারে না।

মানসী – আমাকে ১৫ মিনিট একা থাকতে দেবে ? প্লীজ !

স্বপন – সে আবার এমন কি। তুমি বিশ্রাম করো, আমি রাগ করবো না।

স্বপন বাইরের ঘরে গিয়ে বসে। আর ক্যাসেটে রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা শুনতে থাকে।

মানসী শুয়ে শুয়ে ভাবে। নেহা ওকে সুযোগ করে দিয়ে গেছে ওর স্বপনকে পুরোপুরি কাছে নেওয়ার জন্য। একবার ভাবে ছুটে যায় স্বপনের কাছে আর নিজেকে সমর্পণ করে দেয় ওর কাছে। তারপর ভাবে নেহা বললেও সেটা করলে ও ওর বোনকে মুখ দেখাতে পারবে না। আর স্বপনের সামনেই বা পরদিন সকালে দাঁড়াবে কি ভাবে। ও নিজের ক্ষনিক সুখের জন্য নিজের কাছে অনেক অনেক ছোটো হয়ে যাবে। স্বপন ওর সারা জীবনের বন্ধু সেই বন্ধুত্বকে এই ভাবে নষ্ট করতে পারবে না ও। তারপর ভাবে একবার, শুধু একবার সব কিছু করলে কিই বা এমন হবে। পৃথিবীতে নেহা ছাড়া কেউ জানতেই পারবে না। পরমুহূর্তেই ভাবে আর কেউ নাই বা জানল। ওর সব থেকে কাছের দুজন মানুষই জানবে। ও এই সংসারে স্বপনের ভাবনাকেই সব থেকে গুরুত্ব দেয়। সেই স্বপনের কাছে ছোটো হয়ে যাবে। একটা জঙ্গলের জন্তুর সাথে ওর কোন তফাৎ থাকবে না। 

একবার আবার ভাবে এই সুযোগ আর পাবে না। ভগবানও হয়তো এই চায়। আবার ভাবে ভগবান চাইলেই যে ওকে মেনে নিতে হবে তার কোন মানে নেই। আর সব থেকে বড় হল ও আয়নায় নিজের মুখ কি ভাবে দেখবে। ও এতদিন একটা মুল্য বোধ নিয়ে বেঁচে আছে। সেই মূল্যবোধ ও কোন কারনেই নষ্ট করতে পারবে না। ও সারা জীবন স্বপনের বন্ধু হয়েই থাকবে। 

এইসব ভাবতে ভাবতে মানসী কখন ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতেও পারেনি। প্রায় এক ঘণ্টা পরে স্বপন দেখতে আসে মানসী কি করছে। ও ঘুমিয়ে গেছে দেখে স্বপন ওর মাথার কাছে বসে। আস্তে করে মানসীর হাত নিজের হাতের মধ্যে নেয়। মানসী তাকিয়ে স্বপনকে দেখে।

মানসী – কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি
স্বপন – তোমার শরীর ঠিক আছে ?

মানসী – আমার শরীর খারাপই হয়নি
স্বপন – তবে নিহারিকা যে বলল

মানসী – ওর মাথায় অনেক কিছু আইডিয়া ঘোরে
স্বপন – মানে ?

মানসী – ছাড় ওইসব। আসলে তোমাকে আমার সাথে গল্প করার জন্য রেখে গেছে। বড়দার সামনে তো তোমার সাথে মন খুলে কথা বলতে পারি না তাই।

স্বপন – বল কি কথা বলবে আমার সাথে ?
মানসী – তুমি ভীষণ অসভ্য। কোন কথা বলব না যাও

স্বপন – এই বললে আমার সাথে কথা বলবে বলে থেকে গেলে। আবার এই বলছ আমার সাথে কথা বলবে না। সত্যি মেয়েদের বোঝা বড়ই শক্ত।

মানসী – আমি ভীষণ খারাপ মেয়ে স্বপন
স্বপন – তুমি কিসে খারাপ হলে

মানসী – কাল তোমাকে আর নেহাকে রাত্রে দেখেছি
স্বপন – আমি জানি

মানসী – তুমি জানো ? কি লজ্জা কি লজ্জা !
স্বপন – তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখলে কেন ? ইচ্ছা হলে আমাকে বলতে তোমার সামনে সব কিছু দেখাতাম। তুমি আমার সব থেকে প্রিয় বন্ধু তোমার কাছে কিছুই লুকাব না।

মানসী – নিজের বোন কে কেউ দেখে না।

স্বপন – তুমি তো আমাকে দেখছিলে।

মানসী – আমি বলেছি যে আমি খুব খারাপ মেয়ে

স্বপন – তুমি মোটেও খারাপ মেয়ে নও

""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

[+] 1 user Likes Kolir kesto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজল নদী Written By Tumi_je_amar - by Kolir kesto - 02-07-2020, 09:12 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)