Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 2.78 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance কাজল নদী Written By Tumi_je_amar
#23
## ২
শ্রেয়সী – এই মানসী দেখ তোকে একটা কথা বলে দিচ্ছি

মানসী – কেন কি হল

শ্রেয়সী – তুই আমার বর কে স্বপনের মতো পটাবার চেষ্টা করবি না

মানসী – আমি কি করলাম 

শ্রেয়সী – তুই কি করলি বা করতে যাচ্ছিলি সেটা আমি বুঝেছি

শ্রেয়সী কোন উত্তরের অপেক্ষা না করে বেরিয়ে যায়। মানসী নিজের বিছানায় বসে ভেঙ্গে পড়ে। কিন্তু স্বপন বা নিহারিকা এটা দেখেনি বা জানতে পারেনি।
এর পর বাকি আত্মীয়রা বলে মানসীর বিয়ে দিতে। বড়দার মেয়ে তখন সেভেনে পড়ে। উনি নিজে লোকদেখানো সমাজ সেবায় ব্যস্ত। এই অবস্থায় মানসীর বিয়ে দিলে সংসার কি করে চলবে। ওনার মা একা এত লোকের সংসার কি ভাবে চালাবে। সবাইকে দেখানর জন্য অনেক ছেলে দেখলেন, কিন্তু কাউকেই পছন্দ করলেন না। সব ছেলের মধ্যেই কোন না কোন সমস্যা আবিস্কার করলেন।

এই ভাবে আরও বছর দুয়েক কেটে যায়। এর মধ্যে স্বপন আরও অনেকবার এসেছে। মানসীর মনে স্বপনের ওপর ভালবাসা থাকলেও তার আবেগ অনেক কমে গেছে। ওরা এখন শুধুই বন্ধু। স্বপনও অনেক চেষ্টা করেছে মানসীর বিয়ে নিয়ে বড়দাকে বোঝাবার কিন্তু বোঝাতে পারেনি। এর মধ্যে নিহারিকার একটা মেয়ে হয়েছে। সেটা ১৯৯৩ সাল, সৃজা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। সৃজা ওর স্বপন পিসেকে খুবই ভালবাসে। সারাক্ষন ওর রাঙ্গাপির কাছ থেকে স্বপনের গুনের কথা শুনে চলেছে। স্বপন সৃজার মা’কে ফেরত এনে দিতে না পারলেও ওর কাছে স্বপন পিসে সব সমস্যার সমাধান হিসাবেই ছিল। 
মাধ্যমিক পরীক্ষার পর সৃজা জেদ করে স্বপন পিসের বাড়ীতে বেড়াতে যাবে। স্বপন আর নিহারিকা তখন পাটনাতে থাকে। বড়দা রাজী হয়ে যান। কিন্তু সৃজা ওর রাঙ্গাপিকে ছাড়া কোথাও যাবে না। তাই একদিন বড়দা, সৃজা আর মানসী পাটনায় স্বপনের বাড়ি পৌঁছায়। সাতদিন থাকবে।

নিহারিকার খুব আনন্দ। ওর দাদা, দিদি এসেছে সাথে সৃজা। মানসীরও খুব আনন্দ, অনেকদিন পরে নিজের একঘেয়ে গতানুগতিক জীবন থেকে বেড়িয়ে আসতে পেড়েছে। বড়দা সাথে ছিল বলে একটু ভয়ে ভয়ে ছিল। কিন্তু সেটুকু বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ট্রেনে পাটনা পৌঁছানো পর্যন্ত। পাটনায় স্বপনের কাছে পৌঁছেই শান্তি। স্বপনের কাছে শান্তির দুটো কারন। প্রথম যে হিসাবেই হোক ও স্বপনকে খুব ভালবাসে। আর দ্বিতীয় ওর বড়দা পৃথিবীর সবার সাথে দাদাগিরি করলেও স্বপনের সাথে পারে না। সেইজন্য মানসী ওর মন খুলে থাকতে পারবে এই সাতদিন, সেই আনন্দে মাতোয়ারা। 

তার উপরেও স্বপনের সাথে এক বাড়ীতে এক সাথে সাত দিন থাকা। যা ওর জীবনে কোনদিন হয়নি। ওর মনে ক্ষীন আশা ছিল যদি কিছু হয়। প্রথম দু দিন এমনি বিশ্রাম নেয়। স্বপন নিয়ম মতো অফিসে যায়। কিন্তু দু দিনই তাড়াতাড়ি ফিরে আসে। স্বপন অফিস থেকে ফিরেই মানসী আর সৃজার পছন্দ মতো খাবার রান্না করে খাওয়ায়। মানসী জানত যে স্বপন ভাল রান্না করে। কিন্তু এর আগে স্বপনের রান্না বেশী খায় নি। আর বাড়ীতে রান্না করা নিয়ে বড়দার অনেক রকম রেস্ট্রিক্সন থাকে। তাই সব কিছু রান্না করতে পারে না। 

নিহারিকা চাউমিন বানায়। স্বপন চিলি চিকেন, ভেজ মাঞ্চুরিয়ান, পিৎজা, লাসানিয়া আরও কি সব বানায় ওদের জন্য। মানসী স্বপনের কাছ থেকে কেক, প্যাস্ট্রি, আইসক্রিম বানানো শেখে। মানসীর সব থেকে ভাল লাগে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেয়ে বা বানিয়ে। সাধারন আলু ভাজা যে ওইভাবে অতো সুন্দর করে বানানো যায় আগে কোনদিন ভাবেনি। তৃতীয় দিন থেকে স্বপন অফিস ছুটি নিয়েছিল। 

স্বপন ওদের নিয়ে প্রথমে পাটলিপুত্র ঘুরতে নিয়ে যায়। সম্রাট অশোকের রাজধানী দেখে খুব আনন্দ হয়। আবার যে ভাবে অবহেলায় জায়গাটা রাখা হয়েছে সেই দেখে দুঃখও হয়। তারপর ওরা গান্ধী ময়দান, গোলঘর, হাজিপুর ব্রিজ এইসব আরও অনেক জায়গা ঘোরে। মানসী আর সৃজা হাওয়ায় উড়ছিল। ওরা দুজনেই জীবনে এতো আনন্দ কোনদিন পায় নি। 
স্বপনের বাড়ীতে দুটো বড় বেডরুম ছিল আর একটা ছোটো গেস্ট রুম ছিল। বড়দা গেস্ট রুমে ঘুমাতেন আর মানসী সৃজাকে নিয়ে আরেকটা বেডরুমে। চতুর্থ দিন রাতে মানসীর বাথরুমে যাবার ইচ্ছা হয়। বাথরুম স্বপন নিহারিকার বেডরুমের পাশে। রাত্রি দুটোর সময় মানসী বাথরুম থেকে বেড়িয়ে ভাবে দেখবে স্বপন কি করছে। ও আস্তে আস্তে স্বপনের ঘরের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর পর্দার ফাঁক দিয়ে ভেতরে দেখে। যা দেখে তাতে ওর মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে। দেখে স্বপন আর নিহারিকা দুজনেই সম্পূর্ণ উলঙ্গ। আর দুজনেই দুজনকে নিয়ে খেলা করে যাচ্ছে। মানসী জীবনে প্রথমবার কোন প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের যৌনাঙ্গ দেখে। মিনিট পাঁচেক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে, তারপর টলতে টলতে নিজের বিছানায় ফিরে যায়। ফেরার সময় ওর পা পর্দায় আটকে যায় কিন্তু তাড়াতাড়ি পর্দা ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায়।

""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

[+] 1 user Likes Kolir kesto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজল নদী Written By Tumi_je_amar - by Kolir kesto - 02-07-2020, 08:48 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)